৩ নভেম্বর ২০২৪, ৭:৪০ পিএম

লোকে বলে, মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। আসলেই কী তাই? আপনার উত্তরটা যাই হোক, উইল ইয়ংয়ের কাছে পাবেন ইতিবাচক উত্তরই। স্বপ্ন দেখা ও সেটা পূরণেরও তো একটা সীমা থাকে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কিউই ব্যাটারের জীবনে যা যা ঘটেছে, সেটা স্রেফ রুপকথারই শামিল। ভারতের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের ঐতিহাসিক জয়ের পর সিরিজ সেরা নির্বাচিত হয়েছে ইয়ং। অথচ সব ঠিক থাকলে তারই কিনা এই সিরিজ খেলারই কথা ছিল না! নিয়তির খেল তো একেই বলে।
ভারত সফরে কীর্তির আগে যদি ইয়ংয়ের ক্যারিয়ারের দিকে একটু ফিরে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে তাকে ফেলা যায় ‘লেট ব্লুমার’-দের কাতারে। শুরুর দিক বা এমনকি এখনও তাকে প্রতিটি ম্যাচে লড়তে হয়ে দলে জায়গার জন্য, সংগ্রাম করে নিজেকে প্রমাণ করতে হয় বারবার। ভারতকে সিরিজ হারানোর পথে স্পিনের বিপক্ষে খেললেন দুর্দান্ত সব ইনিংস, অথচ কে বলবে এই ভারতেই সাত বছর আগে স্রেফ স্পিন খেলা রপ্ত করতে চেন্নাইয়ে একটি বিশেষ ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিলেন ইয়ং!
আরও পড়ুন
| জাদেজা-অশ্বিন ভারতকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন |
|
শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্টে ভীষণ বাজেভাবে হেরে ভারতে পা রেখেছিল নিউজিল্যান্ড। তখনও দেশের বাইরে কেন উইলিয়ামসন। চোট থেকে সেরে না ওঠায় প্রথমে ছিটকে যান প্রথম টেস্ট থেকে। দলে ডাক পান উইল ইয়ং। সোজা পেয়ে যান মহাগুরুত্বপূর্ণ তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশন। ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সিরিজের পরও যে ব্যাটারের গড় মোটে ৩০, তাকে নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সিরিজের প্রাক্কালে ছিল না বাড়তি প্রত্যাশা।
তবে নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের মাঝে একটা জিনিস বেশ লক্ষ্যনীয়, আর সেটা হল সুযোগ পেলে তা দুহাতে কাজে লাগানো। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতকে মাত্র ৪৬ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর নিউজিল্যান্ড পায় বিশাল স্কোর। ৩৩ রান আসে ইয়ংয়ের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য খেলেন ভালো একটি ইনিংস। রান তাড়ায় দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর ৪৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জেতান ৮ উইকেটে।
উইলিয়ামসনের ‘কভার’ হিসেবে দলে এসে এমন পারফরম্যান্সের পরও ইয়ংয়ের জানা ছিল না দ্বিতীয় টেস্টে খেলার ব্যাপারে। তবে উইলিয়ামসনের সেরে ওঠার প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যাওয়ায় ফের মেলে আরেক সুযোগ। টার্নিং উইকেটে এবার অবশ্য সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি এই ডানহাতি ব্যাটার। দুই ইনিংসে করেন যথাক্রমে ১৮ ও ২৩ রান। তবে একটি ম্যাচে দুই দলের পার্থক্য হয়ে দাঁড়ায় ১১৩ রান, সেখানে ইয়ংয়ের ৪১ রানও ভালোই অবদান রেখেছিল নিউজিল্যান্ডের জয়ে।
আরও পড়ুন
| স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে কুপোকাত ভারত, ইতিহাস গড়া সিরিজ জয় নিউজিল্যান্ডের |
|
উইলিয়ানসন শেষ পর্যন্ত ছিটকে যান শেষ টেস্ট থেকেও। পাশাপাশি এটাও নিশ্চিত করা হয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসছে টেস্ট সিরিজে খেলবেন প্রথম ম্যাচ থেকেই। ইয়ংয়ের সামনে তাই মুম্বাই টেস্ট হয়ে দাঁড়ায় নিজেকে মেলে ধরার এবং উইলিয়ামসন দলে ফিরলেও একাদশে জায়গা ধরে রাখার লড়াই।
প্রথম দিন থেকেই সাপের মত টার্ন নেওয়া উইকেটে দুই দলের জন্যই ব্যাটিং এবং রান করাটা ছিল ভীষণ কঠিন এক কাজ। এমন উইকেটে প্রতিটি রানই গুরুত্বপূর্ণ। আর সেখানেই নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য প্রমাণের চ্যালেঞ্জটা নেন ইয়ং। ভারতের স্পিন ত্রয়ীকে সামলান সুইপ, ‘হার্ড’ সুইপ, রিভার্স সুইপ, কাট এবং ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলা দারুণ সব শটে। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে করে ২৩৫ রান, যেখানে ইয়ংয়ের অবদান দলীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭১।
ভারত প্রথম ইনিংসে ২৮ রান নেওয়ার পর এটা একরকম স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, ম্যাচ জিততে মোটামুটি একটা টার্গেট ছুঁড়ে দিতেও ভালোই কাঠগড় পোড়াতে হবে নিউজিল্যান্ডকে। ভারত স্পিনারদের তোপের মুখে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছিল সফরকারীরা। তবে একপ্রান্ত আগলে বোলারদের লড়াকু পুঁজি এনে দিতে রান বের করে নেন ইয়ং। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে করেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি (৫১)।
দুই অফস্পিনার রবিচন্দন অশ্বিন, ওয়াশিংটন সুন্দর এবং বাঁহাতি রবীন্দ্র জাদেজার বিপক্ষে ইয়ং পরিচয় দেন তার স্পিন বোলিংয়ে তার চূড়ান্ত স্কিলের। ‘রাফ’ এরিয়াতে পিচ করা ডেলিভারি সামলেছেন ফরওয়ার্ড ডিফেন্সে। বাউন্ডারি বা বড় শট এড়িয়ে এই ইনিংসে মনোযোগ দেন সিঙ্গেলসের ওপর। দুই চার ও এক ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি পরিস্থিতির বিবেচনায় সিরিজে তার সেরাই বটে। যে উইকেটে টিকে থাকতেই দুই দলের ব্যাটারদের নাভিশ্বাস উঠে যাওয়ার দশা, সেখানে ১০১ বল খেলাটা বিশেষ স্কিলেরই প্রদর্শনী।
আরও পড়ুন
| ৩৬ বছর পর নিউজিল্যান্ডের জয় ভারতের মাটিতে |
|
ইয়ংয়ের সেই ইনিংস নিউজিল্যান্ডকে এনে দেয় ১৪৬ রানের লিড, যা শেষ পর্যন্ত দলটিকে এনে দেয় ২৫ রানের নাটকীয় জয়। সিরিজের ৬ ইনিংসে ২৪৪ রান করে তারকায় ঠাসা সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব ওঠে ইয়ংয়ের হাতে।
তিন ম্যাচ ধরে যে তিনটি ভিন্ন উইকেটে রানের জন্য সংগ্রাম করেছেন ভারতের দুই তারকা ব্যাটার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি, সেই একই সিরিজে প্রতিটি ইনিংসেই যেভাবে মূল্যবান রান করেছেন ইয়ং, সেটা বোধকরি তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারতেন না। সিরিজটি খেলার মানসিক প্রস্তুতিই যে ছিল না তার। সেখানে দেশের মাটিতে প্রায় অপরাজেয় হয়ে ওঠা একটি দলকে ধবলধোলাই করার অন্যতম নায়ক বনে যাওয়া রূপকথার গল্পই কেবল হতে পারেন।
ভারতবধের পর সবসময়ই একটু চুপচাপ স্বভাবের ইয়ং এমন পারফরম্যন্সের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “আমাকে আমার ডিফেন্সের ওপর আস্থা রাখতে হয়েছে। আর এটা নিশ্চিত করতে হয়েছে যে আমি কোথায় রান বের করতে চাই। চেয়েছি যতক্ষণ সম্ভব সেটা চালিয়ে যেতে। আমার যদি জানা থাকে যে আমি কোথায় রান করতে চাই এবং নিজের ডিফেন্সের ওপর বিশ্বাসটা রাখি, তাহলে সেটা মনকে অনেক পরিষ্কার করে দেয়।”
ইয়ং যতোটা নির্লিপ্তভাবে নিজের ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ভারতের বিপক্ষে সিরিজে তার ব্যাট মোটেও সেভাবে কথা বলেনি। স্কোয়াডের বাইরে থাকা একজন ব্যাটার দলে এসে তিন নম্বর পজিশনে নেমে ইনিংসের পর ইনিংস যেভাবে ব্যাট করে গেছেন, ব্যবধান গড়ে দেওয়া ইনিংস খেলেছেন, তা করাটা ভারতের মাটিতে টেস্টে একজন ‘বিদেশী’ ব্যাটারদের জন্য কেবল স্বপ্নই হতে পারে।
আরও পড়ুন
| যার ছিল না খেলারই কথা, সেই ইয়ংই হলেন ভারতের হন্তারক |
|
ইয়ং মুখে না বললেও সেই স্বপ্নটা নিশ্চয়ই এঁকেছিলেন। আর সেটা করেছিলেন বলেই প্রতিটি ম্যাচেই না খেলার অনিশ্চয়তা সঙ্গী করে মাঠে নেমেছেন, রান করেছেন এবং দলকে জিতিয়েছেন। তবে ইয়ংএর জন্য পুরো ব্যাপারটা একটা স্বপ্ন হয়ে থাকতে পারে। কারণ, ভারতের বিপক্ষে সিরিজ সেরা হওয়ার পরও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে যে তার খেলার নেই নিশ্চয়তা। একই চিত্র যে ছিল ভারত সিরিজের আগেও। মাঝের এই কয়েক সপ্তাহ তাই ইয়ংয়ের জন্য হয়ে থাকতে পারে ঘোরলাগা এক স্বপ্ন, যার পরদে পরদে মিশে থাকতে অবিশ্বাসের সুবাতাস।
No posts available.

আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ম্যাচের টেস্ট। ঘরের মাঠে লাল বলের ক্রিকেটের এই সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে ভারত। চোট কাটিয়ে ভারতের টেস্ট দলে ফিরছেন উইকেটকিপার ব্যাটার ঋষভ পন্ত।
আজ ভারতের নির্বাচক কমিটির বৈঠকে পন্তের ফেরার সিদ্ধান্ত হয়। গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরুতে বিসিসিআই সেন্টার অব এক্সিলেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রথম চার দিনের ম্যাচে ভারতের দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পান্ত। ২৭৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে গিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯০ রান করেছেন তিনি। এন জাগাদিসানের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পান্ত।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার টেস্টে পায়ের চোট পান পন্ত। এই চোটে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেও ছিলেন না তিনি।
তবে রঞ্জি ট্রফির প্রথম দুই ম্যাচে দারুণ বল করেও নির্বাচকদের মন জিততে পারেননি মোহাম্মদ শামি। উত্তরাখণ্ডের বিপক্ষে সাত উইকেট নেওয়ার পর গুজরাটের বিপক্ষে আট উইকেট নেন এই পেসার।
ভারতের টেস্ট অধিনায়ক শুবমান গিল, জসপ্রীত বুমরাহ, নিতিশ কুমার রেড্ডি, অক্ষর প্যাটেল ও ওয়াশিংটন সুন্দর এখন অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছেন। ৮ নভেম্বর পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজের পর টেস্ট দলে যোগ দেবেন তারা। এছাড়া গত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে জয়ী দলের প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার জয়গা নিয়েছেন আকাশ দীপ।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-২০২৭ এর পয়েন্ট টেবিলে ভারত তৃতীয় স্থানে আছে ৬১.৯০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা আছে পঞ্চম স্থানে, ৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে। প্রোটিয়ারা সবশেষ পাকিস্তানে সিরিজ ড্র করেছিল ১-১ ব্যবধানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের প্রথম টেস্টটি হবে কলকাতায় ১৪ নভেম্বর। গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ২২ নভেম্বর থেকে। এবারই প্রথমবারের মতো টেস্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া স্টেডিয়াম। সফরে দুটি টেস্ট ছাড়াও তিন ওয়ানডে ও পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।
ভারতের টেস্ট স্কোয়াড :
শুভমন গিল (অধিনায়ক), ঋষভ পন্ত (সহ-অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), যশস্বী জয়সওয়াল, কে এল রাহুল, সাই সুদর্শন, দেবদত্ত পাডিক্কল, ধ্রুব জুরেল, রবীন্দ্র জাদেজা, ওয়াশিংটন সুন্দর, জাসপ্রিত বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল, নিতিশ কুমার রেড্ডি, মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব, আকাশ দীপ।

প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ দিয়ে আসন্ন ঘরোয়া ক্লাব ক্রিকেট মৌসুম ২০২৫-২৬ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম) ক'দিন আগেই। ৫ এবং ৬ নভেম্বর প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদল এবং ১৮ নভেম্বর থেকে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সিসিডিএম। গত মৌসুমের চেয়ে ক্লাব অনুদান ৫০% বৃদ্ধির ঘোষণাও দিয়েছে সিসিডিএম। ৯ লাখ টাকা থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে তাদের অ্যাপিয়ারেন্স মানি। তবে বর্ধিত অনুদানেও বিরোধীরা ক্রিকেটারদের আয়-রুজির পথ রুদ্ধ করতে লিগ বর্জনের ডাক দিয়েছে। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দিণক্ষণ ঘোষণা করে বিরোধীতার মুখে পড়েছে সিসিডিএম।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ক্রিকেট লিগ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের একটি অংশ। বিসিবির নির্বাচনে অনিয়ম, বিসিবি সভাপতির স্বেচ্ছাচরিতার অভিযোগ এনে গত ৩ নভেম্বর বিসিবির পরিচালনা পরিষদের সভার প্রাক্কালে এই সংগঠক তাদের সেই সিদ্ধান্ত পুনরায় জানিয়ে দিয়েছে বিসিবিকে। বিসিবির পরিচালনা পরিষদ ভেঙ্গে না দিলে ঢাকা ক্রিকেট লিগে অংশ নিবে না, বিসিবির সিইও-কে দেয়া ৪২টি ক্লাবের৪৩ জন কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্লাব ক্রিকেট অর্গানাইজার্স এসোসিয়েশনের ওই চিঠিতে বিসিবি নমনীয় হয়নি। বরং কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে। লিগে অংশ না নিলে বাইলজ অনুযায়ী অবনমন হয়ে যাবে, বিসিবির পরিচালনা পরিষদের সভায় এই অবস্থান নিয়েছে।
বিরোধীতার মুখে বুধবার (৬ নভেম্বর) প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম)। বিসিবির পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন বর্জন করলেও লিগ বর্জনকারীদের পক্ষে অবস্থান নেননি তামিম ইকবাল। যে ক্লাব থেকে বিসিবির কাউন্সিলরশিপ পেয়েছেন তামিম, সেই ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাব দলবদলের প্রথম দিন ৭ ক্রিকেটারকে সাইন করিয়েছে। দলবদলের প্রথম দিন ৯ টি ক্লাবের ৪৭ জন ক্রিকেটার নতুন ঠিকানা খুঁজে নিয়েছেন। তার মধ্যে বিকেএসপিতে ৭ জন, ব্লুজ ক্রিকেটার্সে ৪ জন, বাংলাদেশ পুলিশ ক্রিকেট ক্লাবে ১ জন, তামিমের ক্লাব ওল্ড ডিওএইচএস-এ ৭ জন, প্রাইম দোলেশ্বরে ২ জন, শেখ জামাল ক্রিকেটার্সে ১ জন, খালেদ মাহমুদ সুজনের পরিচালনায় শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবে ১০ জন এবং উত্তরা ক্রিকেট ক্লাবে ১৩ ক্রিকেটার নাম লিখিয়েছেন।
৬ নভেম্বর দলবদলে অংশ নিবে অবশিষ্ট ক্লাবগুলো, এমন আশায় বুক বেধেছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দলবদলে অংশ নিবে না বলে যে ৮টি ক্লাব এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ়, সেই ৮টি ক্লাবের ২১ ক্রিকেটার টোকেন তুলেছেন বুধবার। ওই দলগুলো অবস্থান পরিবর্তন না করলে এই ২১ ক্রিকেটার অন্য দলগুলোতে যোগ দিবেন।
ইতোমধ্যে প্রথম বিভাগের ২০টি ক্লাবের মধ্যে ১০টি অনুদানের চেক ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে বুঝে নিয়েছে। বাকিরাও চেকগুলো নিয়ে লিগে অংশ নিবে বলে বলে আশা প্রকাশ করছেন সিসিডিএম চেয়ারম্যান।

আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। অবশ্য এ বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় বিসিবি। বরং অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত জানাবে দেশীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
বিসিবি আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সালাহউদ্দীনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফলে এক বছর পূর্তির আগেই জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানছেন এই সিনিয়র সহকারী কোচ।
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম বলেছেন,
“তিনি (সালাহউদ্দীন) আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করব। এ বিষয়ে এখন আর কোনো মন্তব্য করব না।”
এর আগে আজ সকালে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে সালাহউদ্দীনের পদত্যাগের খবর জানা যায়। যদিও এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ক্রিকবাজকে তিনি নিশ্চিত করেছেন চাকরি ছাড়ার বিষয়টি—“হ্যাঁ! আমি পদত্যাগ করছি।”
গত বছরের নভেম্বরে দেশের বরেণ্য কোচ সালাহউদ্দীনকে জাতীয় দলে যুক্ত করেছিল বিসিবি। সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে জাতীয় দলের সঙ্গে তার চুক্তি ছিল ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তবে তার অনেক আগেই শেষ হতে চলেছে সেই অধ্যায়।
ডেভিড হেম্পকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সালাহউদ্দীন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এরই মধ্যে আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ হিসেবে মোহাম্মদ আশরাফুলকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। দুই টেস্ট ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে আসবে আয়ারল্যান্ড। সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১১ নভেম্বর। এরপর ঢাকায় ১৯ তারিখ থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। পরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে চট্টগ্রাম যাবে দুই দল। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ২৭ ও ২৯ নভেম্বর এবং ২ ডিসেম্বর।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় যুব ওয়ানডেতে ১০২ রানের বড় ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ। ব্যাটিং ব্যর্থতার মাশুল দিয়ে মাত্র ১৭৩ রানে থেমে গেল যুবাদের ইনিংস। ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৭৫ রান করেছিল আফগানিস্তান।
টানা বৃষ্টির কারণে পরিবর্তিত সূচিতে বগুড়ার বদলে রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বুধবার তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতেছিল স্বাগতিক যুবারা। পরে ভেসে যায় দ্বিতীয় ওয়ানডে।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে তাই এখন ১-১ সমতা। একই মাঠে শুক্রবার হবে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডে।
বুধবারের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০০ রান করেন তিন নম্বরে নামা ফয়সাল খান শিনোজাদা। ১০৫ বলের ইনিংসে ১৪ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন তিনি।
এছাড়া পাঁচ নম্বরে নেমে ৫ চারে ৭৮ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মাহবুব খান।
বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন আজিজুল হাকিম তামিম ও আল ফাহাদ।
রান তাড়ায় হতাশ করেন জাওয়াদ আবরার (২৪ বলে ২৫), রিফাত বেগ (২ বলে ০) ও আজিজুল হাকিম তামিম (৩২ বলে ৯)।
চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন কালাম সিদ্দিকি এলিন ও রিজান হোসেন। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৯৩ রানের জুটি। ৩ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মেরে ৫০ বলে ৫২ রান করে আউট হন রিজান। কালামের ব্যাট থেকে আসে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৭৯ বলে ৭১ রান।
শেষ দিকে আর কেউ দায়িত্ব নিতে না পারায় ৭৬ বল বাকি থাকতেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।

‘হংকং সিক্সেসে’ সাত সদস্যের দল ঘোষণা করেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। এই টুর্নামেন্টে আফগানিস্তান দলকে নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব। দলে রয়েছে অভিজ্ঞ ও তরুণ্যের দারুণ মিশ্রণ।
নাইবের নেতৃত্বে দলে আছেন নূর রহমান (উইকেটকিপার), সেদিকউল্লাহ পাচা, ইজাজ আহমদজাই, ফরমানউল্লাহ সফি, শরফউদ্দিন আশরাফ ও করিম জানাত। করিম ও নাইম দুজনই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।
টুর্নামেন্টে আফগানিস্তান পড়েছে ‘পুল–এ’-তে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ নেপাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামী পরশু হংকংয়ের টিন কুং রোড রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ডে হবে ২০২৫ হংকং সিক্সেস। আফগানিস্তান তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে নেপালের বিপক্ষে।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম এই সংস্করণ খেলোয়াড়দের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জিং, তেমনি রোমাঞ্চকরও। আফগানিস্তানের জন্য এটি এক মূল্যবান সুযোগ—যেখানে নবীনরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের সামর্থ্য দেখানোর পাশাপাশি অভিজ্ঞরা টি–টোয়েন্টির দক্ষতা শানিয়ে নিতে পারবেন।
হংকং সিক্সেসে আফগানিস্তান দল:
গুলবাদিন নাইব (অধিনায়ক), নূর রহমান (উইকেটকিপার), সেদিকউল্লাহ পাচা, ইজাজ আহমদজাই, ফরমানউল্লাহ সফি, শরফউদ্দিন আশরাফ ও করিম জানাত।