ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুব দ্রুতই এর প্রভাব পড়েছে দুই দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। একই সময়ে চলা পিএসএলের পর স্থগিত হয়ে গেছে আইপিএলও। এই দুই টুর্নামেন্টের মধ্যে পিএসএলে খেলছেন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ মনে করেন, বিকল্প ভেন্যুতে নিরাপদেই খেলতে পারবেন রিশাদ-নাহিদরা।
গত কয়েকদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও পাল্টাপাল্টি আক্রমণের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার কারনে শুক্রবার ঘোষণা আসে পিএসএল স্থগিতের। সাথে এও জানানো হয়, বাকি অংশ হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ফলে শুরুতে রিশাদ ও নাহিদরা দেশে ফিরতে চাইলেও তাদের এখন সেখানে গিয়ে খেলার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন
অবসরে যাওয়া রোহিতের কাছে টেস্ট খেলাটাই ‘সর্বোচ্চ সম্মান’ |
![]() |
শুক্রবার বিসিবির পক্ষ থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ফারুক জানালেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন তারা।
“গত মঙ্গলবার থেকে আমাদের প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক আমাদের বোর্ডের জন্যও। আপনারা জানেন আমাদের জাতীয় দলের দুজন ক্রিকেটার পাকিস্তানে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলছেন। সেখানে যখন থেকে পরিস্থিতি প্রতিকূল, তখন থেকেই ক্রিকেট বোর্ড, ক্রিকেট অপারেশনন্স থেকে শাহরিয়ার নাফীস নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আমি ব্যক্তিগত উদ্যেগে পিএসএলের সিএও-এর সাথে যোগাযোগ করেছি। আমি পিসিবি সভাপতিকেও বার্তা দিয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেছিলাম।”
গত বৃহস্পতিবার পিএসএলে করাচি কিংস এবং পেশোয়ার জালমি রাওয়ালপিন্ডিতে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। তবে স্টেডিয়ামের কাছে একটি ড্রোন পড়ার পর ম্যাচটি বাতিল করা হয়। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এরপর খেলোয়াড়দের ওপর হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ও বিদেশি ক্রিকেটারদের লক্ষ্য করে এটি ছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতের ইচ্ছাকৃত এক হামলা।
স্বাভাবিকভাবেই দুই দেশের চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিদেশী ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা নাকি এরই মধ্যে তাদের বোর্ডকে জানিয়েছে দেশে ফিরে যাওয়ার কথা। এমন অবস্থায় বিসিবিকে ভাবতে হচ্ছে পাকিস্তানে অবস্থান করা বাংলাদেশের দুই সাংবাদিকের নিরাপত্তার দিকটিও।
ফারুক জানিয়েছেন, তারা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দিকটিও দেখবেন।
“আপনারা জানেন তারা বাংলাদেশের দুজন সব সব বিদেশী খেলোয়াড়দেড় একত্র করেছিল এজন্য যাতে তারা তাদের নিরাপদে একটা জায়গায় সরিয়ে নিতে পারে। তার সাথে সাথে আমাদের বোর্ড থেকে পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের দুজন ক্রীড়া সাংবাদিক সেখানে আছে, আমি তাদের সাথে কথা বলেছি। আমরা তাদের বলেছি যাতে খেলোয়াড়দের সাথে এই দুজনের দিকটিও দেখা হয়। তারা পেশাগত দায়িতে পালনে সেখান গেছে। তাই আমরা মনে করি তাদের প্রতি আমাদের একটা দায়িত্ব আছে।”
গত কয়েকদিন ধরেই খবর আসছিল যে, নিরাপত্তার চিন্তায় বাংলাদেশে ফিরে আসতে চাচ্ছেন রিশাদ ও নাহিদ। সেই সাথে যোগ হয় বাংলাদেশের এই মাসের পাকিস্তানের সম্ভাব্য সাদা বলের সিরিজ নিয়েও, যেখানে দলের অনেকেই যেতে অনাগ্রহী নিরাপত্তা নিয়ে।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানে হচ্ছে না পিএসএল, ধোঁয়াশায় বাংলাদেশ সিরিজ |
![]() |
সেই সিরিজ নিয়ে কিছু না বললেও বিসিবি প্রধান বললেন, রিশাদ ও নাহিদ আপাতত দেশে ফিরেছেন না।
“গত তিন দিন ধরে আমরা সারাক্ষণ পিসিবি, পিএসএলের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। আশা করি তারা আজকে বিকালের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত নেবে। এরই মধ্যে টুর্নামেন্ট অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে তারা। আমি জানতে পেরেছি সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা খেলোয়াড়দের সেখানে নিয়ে যাবে। এই ব্যাপারটা বোর্ড সভাপতি হিসেবে প্রথম থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি আমি। আমি আশা করি এটার একটা সুন্দর সমাধান হবে।”
No posts available.
২১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৬ এম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৭ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৮ পিএম
জয়ের ৪ বলে প্রয়োজন ৯ রান। বড় শটের বিকল্প ছিল না নিগার সুলতানা জ্যোতির। মিড অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারলেনও বাংলাদেশ অধিনায়ক। কিন্তু সীমানা পার করতে পারলেন না। ধরা পড়ে গেলেন লং অফে। মাথা নিচু করে ধীরে পায়ে তিনি ফিরে গেলেন ডাগ আউটে।
সেখানে দাঁড়িয়ে দেখলেন বাকি ৩ বলে দলের অভাবনীয় এক পরাজয়। তীরে এসে তরী ডোবানোর গল্পে জ্যোতির দায়ও অনেক। তবে এর মাঝেই ব্যাট হাতে একটি রেকর্ডও গড়েছেন তিনি। ওয়ানডেতে রান তাড়ায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক এখন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
চামারি আতাপাত্তুর বলে ক্যাচ আউট হওয়া বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৬ চারে ৯৮ বলে ৭৭ রানের ইনিংস। দলকে জেতাতে না পারলেও, রুমানা আহমেদকে টপকে ওয়ানডে ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছেন জ্যোতি।
আহমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামে ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে ২৫৭ রানের লক্ষ্যে ৯৪ বলে ৭৫ রান করেছিলেন রুমানা। সেই ম্যাচটিও অবশ্য জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সেদিন ৯ উইকেট হারিয়ে ২১০ রানে থেমেছিল সালমা খাতুনের দল।
প্রায় এক যুগ পর রুমানাকে ছাড়িয়ে দলকে জেতানোরও সুযোগ ছিল জ্যোতির সামনে। শেষ ১২ বলে ৬ উইকেট হাতে রেখে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১২ রান। আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত ৯ বলের মধ্যে ২ বল স্ট্রাইকে ছিলেন জ্যোতি।
অথচ অধিনায়ক যদি দায়িত্ব নিয়ে শেষের দুই ওভারে বেশিরভাগ বল খেলতে পারতেন, তাহলে হয়তো ভিন্নও হতে পারত ম্যাচের ফল।
ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো গতকাল এক প্রতিবেদনে লিখেছিল, টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডের নেতৃত্বও হারাতে যাচ্ছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। সে প্রতিবেদনের ৪৮ ঘণ্টা না পেরোতেই কপাল পুড়ল পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের।
রিজওয়ানকে সরিয়ে পাকিস্তান ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদিকে। আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে একদিনের ক্রিকেটে অধিনায়ক পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড পিসিবি।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে আজ পিসিবির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাদা বলের কোচ মাইক হেসন, হাই পারফরম্যান্স ডিরেক্টর আকিব জাভেদ এবং নির্বাচক কমিটির সদস্যরা। সবার সম্মতিক্রমেই শাহীনকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়।
২০২৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শাহীন। পিএসএলেও তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় নিয়ে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে অধিনায়ক করা হলো ২৫ বছর বয়সী এই পেসারকে।
পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ফয়সালাবাদে, ৪ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের নামের পাশে মাত্র ১টি জয়। অথচ একটু এদিক-ওদিক হলেই তাদের জয়ের সংখ্যা হতে পারত ৪টি। ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুযোগ পেয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি তারা।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির কাছে, ৩টি ম্যাচে এমন হার হৃদয়বিদারক।
পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল তারা। মাত্র ৭৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েও শেষ পর্যন্ত চাপ ধরে রাখতে পারেনি জ্যোতির দল।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ৭৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নেয় তারা। কিন্তু এরপর একের পর এক ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে পরাজয়ই সঙ্গী হয় তাদের।
এবার মুম্বাইয়ে সবশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ ২ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে প্রয়োজন ছিল ১২ রান। কিন্তু ১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচটি হেরে যায় বাংলাদেশ।
তাই যেখানে ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যেতে পারত জ্যোতির দল, সেখানে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে তাদের।
লঙ্কানদের কাছে হারের পর অধিনায়ক বলেছেন, চাপের মুহূর্তে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি তারা।
“আমরা ৩টি ম্যাচ এমন হারলাম। এটি অবশ্যই হৃদয় বিদারক। কোনো কোনো মুহূর্তে, কোনো কোনো পরিস্থিতিতে আমরা নিজেদের পরিকল্পনায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। আমরা নিয়মিত উইকেট হারিয়েছি, স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারিনি।”
“এই ধরনের রান তাড়ায় আমরা টিভিতে দেখেছি, অন্য দলগুলো ক্রিজে নিজেদের ধরে রেখেছে। কিন্তু আমরা সেটি পারিনি। আমরা এই চাপ নিতে পারিনি। আমাদের এটি নিয়ে ভাবতে হবে।”
২০৪ রানের লক্ষ্যে ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এরপর শারমিন আক্তার সুপ্তাকে নিয়ে জুটি গড়েন জ্যোতি। তবে পেশিতে টান লাগায় ১০২ বলে ৬৪ রানে থাকা অবস্থায় মাঠ ছেড়ে উঠে যান সুপ্তা। ফলে ছেদ পড়ে ৮২ রানের জুটির।
জ্যোতির মতে, সুপ্তার ওই চোটই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
“যেভাবে ব্যাটিং করছিলাম, শুরু থেকেই এটি আমাদের ম্যাচ ছিল। আমি আর সুপ্তা খুব ভালো ব্যাটিং করছিলাম। সে যখন ক্র্যাম্পের কারণে বাইরে চলে গেল, মোমেন্টামও কিছুটা বদলে গেছে।”
“কারণ তখন স্বর্ণা এসেছে এবং আমাদের আবার জুটি গড়তে হয়েছে। ভালো যাচ্ছিল। তবে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট হারিয়েছি। এই রান তাড়ার করার মতো ছিল।”
নারী বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের প্রধান কোচ সারোয়ার ইমরান বলেছিলেন, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারাতে চান তারা। ফাতিমা সানাদের বিপক্ষে জয়ের পর চামারি আতাপাত্তুদের বিপক্ষে স্বপ্ন উঁকি দিয়েছিল। তবে শেষদিকে ১ রানে ৫ উইকেট হারানোতে সেমিফাইনালের আশা দেখিয়েও আসরে বিদায় ঘণ্টা বেজেছে বাংলাদেশের।
নাবি মুম্বইয়ে আজ প্রথমে ব্যাট করা শ্রীলঙ্কাকে ২০২ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। লঙ্কানরা টিকেছিল ৪৮.৪ ওভার। জবাব দিতে নেমে শারমিন আক্তার ও নিগার সুলতানার ফিফটিতে শেষ ওভার পর্যন্ত আশা বেঁচে ছিল লাল সবুজ দলের। তবে শেষ ওভারে চার উইকেট তুলে শ্রীলঙ্কাকে জয় উপহার দেন আতাপাত্তু।
এদিন আগে টসে হেরে বোলিং পাওয়া বাংলাদেশকে প্রথম বলেই উইকেট উপহার দেন পেসার মারুফা আক্তার। মারুফার বলটি অনেকটা ভেতরে ঢুকে বিস্মি গুনারত্নর প্যাডে আঘাত করে। আম্পায়ার আউট দেননি, রিভিউ নিয়েই উইকেটটি পেয়েছেন মারুফা।
দ্বিতীয় উইকেটের জন্য একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ক্রিজে অনেকটা থিতু হয়ে পড়েছিল আতাপাত্তু ও হাসিনি পেরেরা। ব্যাকফুটে থাকা দলকে খেলায় ফেরান রাবেয়া খান। এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে হাফসেঞ্চুরির চার রান আগে ফেরান লঙ্কান ক্যাপ্টেনকে।
আতাপাত্তুর বিদায়ের পর দলীয় ৮৭ রানে ফেরেন হারশিদি। মাত্র ১১ বল মোকাবিলা করতে পারেন তিনি। দলীয় সেঞ্চুরির ঘরে ফেরেন কাভিশা দিলহারি।
সমান্তরালে চলতে থাকা দলের একপ্রান্ত আগলে রাখেন হাসিনি পেরেরা। সতীর্থদের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়ে দলকে টেনে নিচ্ছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত স্বর্ণা আক্তারর বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন। হাসিনি ফেরার পর আরও ১৩.১ ওভারে টিকলেও ২০২ রান তুলতে পারে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন স্বর্ণা। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট তুলেছেন আতাপাত্তু। কোটার ১০ ওভারে হাত ঘোরান তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে রান করতে নেমে রানখাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন রাবেয়া হায়দার। দুই অঙ্কের রানের আগে ফেরেন অপর ওপেনার ফারজানা আক্তার। সোবহানা মোস্তারি সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে আজ ফারজানার থেকে এক রান বেশি (৮) করতে পারেন তিনি।
তাসের ঘরের মতো উইকেট পড়া থেকে দলকে উদ্ধার করেন শারমিন আক্তার ও নিগার সুলতানা। একটা পর্যায়ে ৬৪ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন শারমিন। মাঠ ছাড়ার আগে তিনি ১০৩ বলে ৬৪ রান করেন। এরপর স্বর্ণা ফেরেন দলীয় ১৭৬ রানে।
বাংলাদেশের মূল পতনটা ঘটে শেষ দুই ওভারে। ১২ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। উইকেটে ছিলেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। ৯৬ বলে ৭৬ রান নিয়ে ব্যাট করছিলেন তিনি।
৪৯তম ওভারে চতুর্থ বলে অলরাউন্ডার রিতু মনিকে হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এই ওভারে নিগাররা করতে পারেন কেবল তিন রান। শেষ দিকে ১ রান করতে গিয়ে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ৯ রান।
শেষ ওভারের (৫০তম ওভার) প্রথম বলে রাবেয়াকে ফেরান আতাপাত্তু, দ্বিতীয় বলে রান আউটে কাটা পড়েন নাহিদা আক্তার। তৃতীয় বলে নিগার আর চতুর্থ বল এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন পেসার মারুফা আক্তার। শেষ পর্যন্ত ৭ রান আগে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
২০২০ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন খারি পিয়েরে। সাড়ে পাঁচ বছর পর একদিনের ফরম্যাটে ফের ডাক পড়ে তার। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্পিন-সহায়ক কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখেই পিয়েরেকে স্কোয়াডে ভিড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ম্যাচে এক উইকেট নেওয়া এই স্পিনার দ্বিতীয় ম্যাচের আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।
হোম অব ক্রিকেটে বাংলাদেশ–ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু হবে আগামীকাল দুপুর দেড়টায়। প্রথম ম্যাচের মতোই দ্বিতীয়টিতেও স্পিনবান্ধব উইকেটের সম্ভাবনা বেশি। সে অনুযায়ী দুই দলই স্পিনে দিচ্ছে বাড়তি গুরুত্ব।
বাঁচা–মরার ম্যাচের আগে নিজের ও দলের লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়ে পিয়েরে প্রথমেই জানান, ক্রিকেটই তাঁর স্বপ্ন, ধ্যান-জ্ঞান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলতে পেরে তিনি গর্বিত। পিয়েরে বলেন, ‘আমি পরিশ্রমী। আমি জানি, দলে টিকে থাকা চ্যালেঞ্জিং। ভালো খেলতে সবসময় সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করি। এটা কঠিন পথ, তবে যতটা সম্ভব নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করি।’
মিরপুরের কালো মাটির পিচ নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে কথা বলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোচ ড্যারেন স্যামি, জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশের রিশাদ হোসেনও। সংবাদ সম্মেলনে উইকেট প্রসঙ্গ উঠলে মানিয়ে নেওয়ার কথাই বললেন পিয়েরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩৪ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘হ্যাঁ, যেমনটা বলেছি, পিচটা স্পিনারদের সহায়ক। তবে আমাদের যেকোনো উইকেটে খেলতে হবে, যেটা আমাদের জন্য নির্ধারিত হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই এখন উইকেট কেমন, সেটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ না। আসল বিষয় হলো খেলাটা ঠিকভাবে খেলা এবং কন্ডিশনের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া।’
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১০ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছিলেন পিয়েরে। তিনি জানালেন দেশে এমন উইকেটে আগেও খেলেছেন তিনি, ‘আমাদের দেশেও এমন উইকেট দেখা যায়। তবে, যেমনটা বললাম, আমাদের দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। এখানে এসে উইকেট দেখেই বোঝা গেছে, এটা স্পিনারদের সহায়ক। ঠিক জায়গায় বল ফেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে যেমনটা আপনি বললেন, এমন উইকেটে যদি ভালো করতে না পারেন, তাহলে চাপ অনেক বেশি থাকে।’