
প্রথম লেগে বার্সেলোনা তিন গোল হজম করায় রক্ষণভাগ নিয়ে একটা চিন্তা ছিলই। ঘরের মাঠে উজ্জীবিত ইন্তার মিলান কাউন্টার এটাকে শুরুটা করল দুর্দান্ত। বিরতির আগেই দুই গোল খেয়ে কোনঠাসা হয়ে গেল হান্সি ফ্লিকের দল। দারুণ এক কামব্যাকে একে একে তিন গোল দিয়ে এক পর্যায়ে বার্সেলোনাই পাচ্ছিল জয়ের সুবাস। তবে এই ইন্তার যে হার মানার নয়। ইনজুরি ও অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে শেষ হাসি হাসল সিমোনে ইনজাগির দল।
সান সিরোতে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে ইন্তার। দুই লেগ মিলিয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটি জিতেছে ৭-৬ ব্যবধানে। ২০২৩ সালের পর আবারও দলটি খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ থাকবে আর্সেনাল বা পিএসজি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের ভালো একটি সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে গতিতে ইন্তার ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল, অপেক্ষায় ছিলেন ট্যাপ-ইনের। তবে পাস না বাড়িয়ে গোলের জন্য শট নিয়ে ব্যর্থ হন ফেররান তরেস।
আরও পড়ুন
| পর্তুগাল দলে ডাক পেলেন ছেলে, ‘গর্বিত’ বাবা রোনালদো |
|
ম্যাচের প্রথম দিকে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ এড়িয়ে আক্রমণে যেতে বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইন্তারকে। এই ম্যাচের আগে চলতি মৌসুমে এই ম্যাচের আগে ৭৪ বার প্রতিপক্ষকে অফসাইডে ফেলেছে দলটি।
১৭তম মিনিটে আলেসান্দ্রো বাস্তোনি ইন্তারের বক্স থেকে বলের দখল নিয়ে লম্ব ক্রস বাড়ান, বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্সকে বিপদে ফেলে বল নিয়ে ফেদেরিকো দিমার্কো পাস দেন লাউতারোকে। তবে তার শট লক্ষ্যে থাকেনি আর, এর আগে ক্লিয়ার হয়ে যায়।
মিনিট তিনেক বাদে ডান দিক থেকে কাট করে বক্সে প্রবেশ করে নিকোলা বারেল্লার নেওয়া জোরাল শট কোনোমতে সেভ করে ওয়েচেজ সেজনি। তবে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ পার করে শেষ পর্যন্ত ইন্তারের লিড নেওয়ায় ভূমিকা রাখেন প্রথম লেগে জোড়া গোল করা ডেনজেল ডামফ্রিস।
পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে তড়িৎ গতিতে বল পেয়ে ডান দিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করেন তিনি। বার্সেলোনার রক্ষণভাগের চেয়ে বক্সে ইন্তারের খেলোয়াড়ই বেশি। সেজনি এগিয়ে এসে ক্লিয়ার করতে গেলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ফাঁকায় থাকা লাউতারোকে পাস দেন ডামফ্রিস, যেখান থেকে জাল খুঁজে নিতে ভুল করেননি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩ ম্যাচে এটি লাউতারোর ৯ নম্বর গোল। এই গোলটি ইন্তারের জন্য গুরুত্বছিলপূর্ণ ছিল, কারণ এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগে গোল দিয়ে এই লড়াইয়ের আগে ১০ ম্যাচের একটিতেও হারেনি সেরি আর ক্লাবটি। আর সব মিলিয়ে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের শেষ ৪৯টি হোম ম্যাচে মাত্র একটিতে আগে গোল করে হারের রেকর্ড ছিল ইন্তারের।
আরও পড়ুন
| মিলান কাব্যে ধরাশায়ী বার্সা, ফাইনালে ইন্তার |
|
ওই গোলের খানিক বাদে ইন্তারের বক্সের ভেতর পেদ্রির শট প্রতিপক্ষের একজনের হাতে লাগলে ওঠে পেনাল্টির দাবি। তবে রেফারি তা নাকোচ করে দেন।
৩৬তম মিনিটে বিরতির আগে নিজেদের সেরা সুযোগটা পায় বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে থেকে ইন্তারের কয়েকজন খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে পেছনে ফেলে ডান দিক থেকে একটা শট নেন, যা শেষ চলে যায় অল্পের জন্য পোষ্টের বাইরে দিয়ে। অল্পের জন্য ট্যাপ-ইন করতে ব্যর্থ হন তরেস।
তবে একের পর এক আক্রমণে ইন্তারকে ব্যতিব্যস্ত রাখেন ইয়ামাল, যাকে নিয়ে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সতর্ক বার্তা দিয়েছিলেন দলটির কোচ সিমোনে ইনজাগি। ডাবল মার্কিং করে তার পরিকল্পনা ছিল ইয়ামালকে আটকানোর।
তবে কাজটা ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিন হয়ে ওঠে। ৩৯তম মিনিটে ফের গতি দিয়ে ডি-বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল। তবে ছয় গজের ভেতর শেষ সময়ে দুর্দান্ত এক স্লাইড ট্যাকেল করে সেযাত্রায় দলকে রক্ষা করেন বাস্তোনি।
এরই মাঝে ম্যাচের ধারার বিপরীতে পেনাল্টি হজম করে বসে বার্সেলোনা। লাউতারোকে আটকাতে বক্সের ভেতর ফাউল করেন পাউ কুবার্সি। ঠাণ্ডা মাথায় বাঁদিকে বল জালে পাঠান হাকান কালহানোগলু।
দুই গোল খেয়ে বেশ চাপে পড়ে যাওয়া বার্সেলোনা বিরতির আগে মাত্র ছয়টি শট থেকে একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৫১তম মিনিটে ফের ইন্তার বল জালে পাঠালেও এবার আর গোল মেলেনি অফসাইডের কারণে।
এর ঠিক দুই মিনিট পর বার্সেলোনার ক্যামব্যাকের সূচনা করেন এরিক গার্সিয়া। জটলার মধ্যে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক ভলিতে সান সিরোতে স্তব্ধতা নিয়ে আসেন তিনি। সেই গোলের রেশ না কাটতেই আরও একটি গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। তবে ছয় গজ থেকে নেওয়া তার শট পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ফিরিয়ে দেন ইয়ান সোমের।
তবে আরেকটি রেমোনটাডার স্বপ্নের বিভর বার্সেলোনা আক্রমণের ঢেউয়ে বেসামাল ইন্তার বেশিক্ষণ পারেনি সামাল দিতে। বাঁদিক থেকে জেরার্ড মার্তিনের দারুণ এক ক্রস থেকে ডাইভিং হেডে গোল করেন দানি ওলমো।
ছন্দহীন ইন্তার ৬৮তম মিনিটে বড় বিপদেই পড়তে যাচ্ছিল। আগুয়ান ইয়ামালকে ফাউল করে শুরুতে পেনাল্টি উপহার দিয়ে ফেলেছিলেন হেনরিখ মিখিতারিয়ান। তবে রেফারি পরে নিজের সিদ্ধান্ত বদলান ভিএআরে দেখে, যেখানে দেখা যায় ফাউলটি করা হয়েছিল ঠিক বক্সের বাইরে।
৭৯তম মিনিটে কাট করে বক্সের ভেতর থেকে গতিময় এক শট নেন ইয়ামাল, তবে পোষ্টের নিয়ে আস্থার পরিচয় দেন সোমের। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ স্কোরলাইনে লড়াই যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, তখনই চিত্রে হাজির পুরো ম্যাচে প্রায় অচেনা ছন্দে থাকা রাফিনিয়া।
৮৭তম মিনিটে মিলান শিবিরকে হতাশায় ভাসিয়ে বার্সেলোনাকে ফের এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে তার নেওয়া প্রথম শট ফিরিয়ে দেন সোমের, তবে ফিরতি বল পেয়ে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠাতে আর ভুল হয়নি তার।
আরও পড়ুন
| অ্যানফিল্ড-রোম ‘ট্র্যাজেডি’ পেছনে ফেলতে পারবে বার্সেলোনা? |
|
এই গোলের মধ্য দিয়ে দুর্দান্ত এক রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন রাফিনিয়া। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩টি গোলের সাথে তার নামের পাশে রয়েছে ৮টি অ্যাসিস্ট। এক মৌসুমে গোলে অবদান রাখার ক্ষেত্রে তার সমান (২১টি) রয়েছে কেবল সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর, ২০১৩-১৪ মৌসুমে।
এই গোলের পর বার্সেলোনার জয় যখন ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন মিলান শিবিরে আশার আলো নিয়ে আসেন ফ্রান্সেস্কো এসেরবি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় নিজের ২০তম মৌসুমে একটি গোলও না করা অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার প্রথম গোলের জন্য বেছে নেন সেরা উপলক্ষ্য।
ডান দিক থেকে স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে বক্সের ভেতর ক্রস বাড়ান ডামফ্রিস। রক্ষণ ছেড়ে স্ট্রাইকার বনে যাওয়া এসেরবি বল রিসিভ করে কিছুটা সময় নিয়ে জায়গা বানিয়ে কোনাকুনি এক শটে বল পাঠান জালে, যা চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না সেজনির।
ম্যাচের এমন সময়ে গোল, স্বাভাবিকভাবে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে দলের সাথে মেতে ওঠেন এসেরবিও। উদযাপন করার সময় তিনি জার্সি খুলে ফেলেন এবং এজন্য তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। তবে তাতে আর কীইবা আসে যায়!
এই গোলের মধ্য দিয়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে শালকের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রায়ান গিগসের পর এসেরবি (৩৭ বছর ৮৫ দিন) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে দ্বিতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় (৩৭ বছর ১৪৮ দিন) হিসেবে জালের দেখে পেয়েছেন।
জয়ের সুবাস পেতে পেতে এমন একটা গোল খেয়ে বসলে একটা দলের মানসিকতায় তাতে আসতে পারে বড়সড় আঘাত। বার্সেলোনার ক্ষেত্রেও হয় ঠিক তাই। তার ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে ফের গোল পেয়ে যায় ইন্তার।
ডান দিক থেকে উঠে মার্কাস থুরাম দাভিদ ফ্রাত্তেসিকে পাস বাড়ান। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার বক্সের ভেতরে মেহেদি তারেমির সাথে ওয়ান-টু খেলে এরপর প্লেসিং শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
এটি ছিল এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বার্সেলোনার হজম করা ২৪তম গোল, যা এক আসরে ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের জন্য মরিয়া বার্সেলোনা খেলে অল আউট ফুটবল। ইয়ামালের ক্রস থেকে বদলি নামা রবার্ট লেভানদভস্কির হেড অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।
পাল্টা আক্রমণ থেকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে ফ্রাত্তেসির শট ঠেকান সেজনি। ১১৪তম মিনিটে গোলের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন ইয়ামাল। অনেকটা নিচে নেমে বলের দখল নিয়ে লেভানদভস্কি পাস দেন ইয়ামালকে। গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে তরুণ এই উইঙ্গার নেন শট, যা এক হাতে কোনোমতে আটকে ইন্তার শিবিরে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন সমের।
বাকি সময়ে বার্সেলোনার একের পর আক্রমণ সামাল দেওয়ার মাঝে সুযোগ তৈরি করে ইন্তারও। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেনি শট কোনো দলই। তাতে দুই বছরে মধ্যে নিজেদের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইন্তার।
No posts available.
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯:১৩ পিএম
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮:২৫ পিএম

লিওনেল মেসির কলকাতা সফরের আনন্দের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন শাহরুখ খান। বলিউড বাদশাহ এক্সে লিখেছেন, মেসিকে স্বাগত জানাতে তিনি উপস্থিত থাকবেন কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে।
স্বভাবসুলভ রসিকতায় শাহরুখ লিখেছেন, “এবার কলকাতায় আসছি ঠিকই, তবে আমার নাইটদের জন্য নয়। আশা করছি, এই সফরটা হবে পুরোপুরি ‘মেসিময়’। দেখা হবে ১৩ ডিসেম্বর, সল্ট লেক স্টেডিয়ামে।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে—আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) অন্যতম মালিক শাহরুখ। সাধারণত কলকাতার মাটিতে তিনি আসেন দলের খেলার জন্য। এবার তিনি আসছেন আরেক তারকার জন্য। শাহরুখ কেবল ক্রিকেট নয়, ফুটবলের প্রতিও অনুরাগী। মুম্বাই ও কলকাতার অনেক ফুটবল ইভেন্টে শুভেচ্ছাদূতের ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে।
মেসি ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে অবস্থান করবেন। প্রথমে তিনি কলকাতা, এরপর মুম্বাই এবং সবশেষে দিল্লি যাবেন। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ১৩ ডিসেম্বর কলকাতায় পা রাখবেন।
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, মেসি শুক্রবার রাত দেড়টায় কলকাতায় নামবেন। বাইপাসের ধারে একটি পাঁচতারকা হোটেলে তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেসির ভোজের তালিকায় রয়েছে ইলিশ মাছের কয়েকটি পদ, মিষ্টি, ভেষজ চা–সহ আরও নানা ধরনের খাবার।

“জাবি আলোনসো চাকরি হারানোর কাছাকাছি—এ বিষয়ে আপনার কী মত?”—উপস্থিত সাংবাদিকের এমন প্রশ্ন বোধ হয় ভালো ঠেকেনি হান্সি ফ্লিকের কাছে। না হওয়াটাই স্বাভাবিক।
একে তো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল, তার ওপর দল-মালিকদের সাম্প্রতিক রেষারেষি চরমে। তাই তড়িৎভাবে প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে নিলেন কাতালানদের কোচ। সাফ জানিয়ে দিলেন—নিজেদের দিকেই ফোকাস দিতে পছন্দ তাঁর।
লা লিগার ২০২৫-২৬ মৌসুমে পিছিয়ে ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। শুরুর পর মৃদু ধাক্কা খেলেও লিগে গত এক মাসে কোনো ম্যাচে হারেনি ফ্লিকের দল। সবশেষ তিন ম্যাচে আতলেতিকো মাদ্রিদ, রিয়াল বেতিস ও আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টকে হারিয়েছে তারা।
বিপরীত অবস্থা রিয়াল মাদ্রিদের। লিগে শেষ ম্যাচে সেলতা ভিগোর বিপক্ষে হেরেছে লস ব্লাঙ্কোসরা। চার পয়েন্ট পিছিয়ে পড়েছে শীর্ষে থাকা বার্সা থেকে। ১৬ ম্যাচে ১৩ জয় ও ৩ ড্র কাতালানদের। সমান ম্যাচে ১১ জয় ও ৩ ড্র রিয়ালের।
দলের এমন খারাপ অবস্থায় গুঞ্জন উঠেছে—ছাঁটাই হতে পারেন জাবি আলোনসো। স্প্যানিশ কোচকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ফ্লিকের সংবাদ সম্মেলনেও। যদিও বিষয়টি দূরপাল্লার শটের মতো প্রতিপক্ষের কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন ফ্লিক।
তিনি বলেন, “আমাদের নিজেদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত, রিয়াল মাদ্রিদের দিকে নয়। শতভাগ বার্সার প্রতি মনোযোগ স্থাপন করা উচিত।”
ফ্লিক মনে করেন, তাঁর শিষ্যরা সঠিক পথেই আছে। তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাচ্ছে। এ সময় তিনি মার্কাস রাশফোর্ডের শুরুর একাদশে না থাকা নিয়েও কথা বলেন— “যখন আমি খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলি, আমি তাদের বুঝিয়ে দিই কেন তারা খেলেনি।”
তিনি আরও বলেন, “যখন আমি রাশফোর্ডকে বোঝানোর চেষ্টা করি কেন সে শুরুর একাদশে ছিল না, সে আমাকে বলে, ‘আমাকে ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। গুরুত্বপূর্ণ হলো দল যেন জেতে এবং আমরা তিন পয়েন্ট পাই। এর বাইরে কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়।’’
বার্সা কোচের মতে, “এটাই সঠিক মানসিকতা। তাকে আমাদের সঙ্গে পেয়ে আমি খুশি।”

ম্যাচ শুরু হতে ৪৮ ঘণ্টার কম সময় বাকি। এরই মধ্যে ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোচ আর্নে স্লটের কাছে এক সাংবাদিকের প্রশ্ন—মোহাম্মদ সালাহ যদি দলের প্রতি আরও আনুগত্যশীল হন, অতীত ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তবে কি তিনি দলে সুযোগ পাবেন?
প্রশ্নের উত্তরে রেডস ম্যানেজার সামান্য হাসলেও, ব্যাপারটা যে মোটেও মজার নয়—তা সবারই জানা। প্রিমিয়ার লিগের ২০২৪-২৫ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নরা এবার ধুঁকছে। প্রত্যাশার তুলনায় খারাপ খেলছে অ্যানফিল্ডের ক্লাব। এর পেছনে অনেক কারণ থাকলেও সবচেয়ে সহজ এবং দিবালোকের মতো স্পষ্ট—শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অভিজ্ঞদের অফফর্ম।
অনাকাঙ্ক্ষিত এই দুই সমস্যার মধ্যেই আগামীকাল প্রিমিয়ার লিগে ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে ব্রাইটনকে আতিথ্য দেবে লিভারপুল। লিগে শেষ দুই ম্যাচে ড্র করা দলটির লক্ষ্য জয়। অভিন্ন লক্ষ্য ব্রাইটনেরও। পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের আরও উচ্চতায় নিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্টের বিকল্প নেই ফ্যাবিয়ান হুর্জেলারদের।
ইংল্যান্ডভিত্তিক ক্লাব ব্রাইটনকে স্লটের দলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল মনে করা হলেও, পয়েন্ট টেবিলে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের উপরে অবস্থান তাদের। হুর্জেলারের দল এখন পর্যন্ত লিগে ১৫টি ম্যাচ খেলেছে—৬ জয় ও ৫ ড্র; পয়েন্ট ২৩। সমান ২৩ পয়েন্ট লিভারপুলের, তবে একটি জয় বেশি অ্যানফিল্ডের দলের। আবার ব্রাইটনের তুলনায় লিভারপুলের হার দুইটি বেশি।
যদিও প্রিমিয়ার লিগে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে লিভারপুল। এখন পর্যন্ত দুই দল ২০ বার মুখোমুখি হয়েছে—১২টি ম্যাচ জিতেছে অল রেডস, ৪টি জিতেছে ব্রাইটন, বাকি ৪টি ড্র।
অবশ্য ঘরের মাঠে সবসময় দাপট দেখিয়েছে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে দুই দলের ৯ ম্যাচের মধ্যে ৬ বার জিতেছে স্বাগতিকরা। ব্রাইটন জিতেছে মাত্র ১ বার; বাকি ২টি ড্র। অবশ্য গত মৌসুমের শেষ দেখায় অ্যানফিল্ডের ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। তার আগের ম্যাচে ব্রাইটনের মাঠে ৩-১ ব্যবধানে হেরেছিল সালাহরা।
ঘরের মাঠ, পরিচিত পরিবেশ—সবই লিভারপুলের পক্ষে। ব্রাইটনের জন্য বড় হুমকি হতে পারেন ডমিনিক সোবস্লাই। চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং প্রিমিয়ার লিগের শেষ দুই ম্যাচে গোল পেয়েছেন হাঙ্গেরির এই রাইট উইঙ্গার। সালাহর অনুপস্থিতি দারুণভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। হুগো একিতিকে লিগের শেষ ম্যাচে করেছেন জোড়া গোল; ফরাসি ফরোয়ার্ড আরও ভালো কিছু করতে মুখিয়ে আছেন। ফ্লোরিয়ান ভির্টজ এবং ম্যাক অ্যালিস্টারের জন্যও এটি গোলখরা কাটানোর দারুণ সুযোগ হতে পারে।
ব্রাইটন যে সহজ প্রতিপক্ষ নয় তা নিশ্চিত। লিগে গোলস্কোরারদের দৌড়ে এগিয়ে থাকা ড্যানি ওয়েলব্যাক খুব চাইবেন গোলের অ্যানফিল্ডে ডেডলক ভাঙতে। এখন পর্যন্ত ১৬ ম্যাচে ৭ গোল করা এই ইংলিশ স্ট্রাইকার হয়ে উঠতে পারেন ব্রাইটনের উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু।
রাইট উইঙ্গার ইয়ানকুবা মিনতেহ চেষ্টা করে যাচ্ছেন, কিন্তু গোল মুখ খুলতে পারছেন না। গাম্বিয়ান এই ফরোয়ার্ডের ওপর দলের যে আস্থা, সেটির প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা থাকবে তাঁর।
ইনজুরি আপডেট:
ছোটখাটো “হাসপাতাল” বলা যায় লিভারপুলকে। কনর ব্রাডলি লাল কার্ডের কারণে থাকতে পারবেন না আগামীকাল। আলেক্সান্ডার ইসাককে পাওয়া যাবে না—এটা নিশ্চিত। ফেদেরিকো চিয়েসা অসুস্থ। জেরেমি ফ্রিংপং কিংবা কোডি গাকপোকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর মধ্যে মোহাম্মদ সালাহর ব্যাপারটি স্পষ্ট—ব্রাইটনের বিপক্ষে তাকে দেখা যাবে না।
ইতোমধ্যে স্লট জানিয়েছেন, সালাহর ব্যাপারে দল এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আগামীকাল, অর্থাৎ ম্যাচের আগে মিশরীয় ফরোয়ার্ডের সঙ্গে বসবেন তিনি। এরপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
ব্রাইটনের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জেমস মিলনার চোটের সঙ্গে লড়ছেন। তবে সমর্থকদের জন্য সুখবর—কাওরু মিতোমা, জেমস মিলনার এবং টম ওয়াটসন পুরোপুরি ফিট।
দুই কোচের মন্তব্য:
বিভিন্ন সমস্যায় কিছুটা বিরক্ত স্লট। দলকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়—সেটিই এখন তাঁর মূল লক্ষ্য। ব্রাইটনের বিপক্ষে শুরুর একাদশ কেমন হবে তা নিয়ে এখনো কিছু জানাননি নেদারল্যান্ডস কোচ।
শুধু বলেছেন,
“আমি সবসময় তাদের (লিভারপুলের স্পোর্টিং ডিরেক্টর রিচার্ড হিউজেস ও প্রধান নির্বাহী মাইকেল এডওয়ার্ডস) সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। কিন্তু দলের একাদশ বা স্কোয়াড নির্বাচন করার সিদ্ধান্তের বিষয়টি সম্পূর্ণ আমার ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়।”
ব্রাইটন ম্যানেজারের চাওয়া—সালাহ যেন তাদের বিপক্ষে মাঠে থাকেন। তিনি বলেন,
“আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। আমরা চাইবো সালাহ আগামীকাল মাঠে থাকুন। আমরা সেরা খেলোয়াড়ের মুখোমুখি হতে ভালোবাসি।”
দলের অবস্থা সম্পর্কে হুর্জেলার বলেন,
“আমরা এই মৌসুমে উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গেছি। আমার মনে হয়, এই মুহূর্তে লিগে হয়তো মাত্র দুইটি ক্লাবই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পেরেছে।”
ব্রাইটন নিজেদের সবশেষ ম্যাচে ড্র করেছে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে। লিভারপুল টানা দুই ম্যাচ ড্র করেছে। দুই দলের সমান লক্ষ্য—জয়ে ফেরা। অ্যানফিল্ডে বাংলাদেশ সময় রাত দুইটার মহারণে নিশ্চিত হবে কাদের কপাল খুলছে।

বাংলাদেশ ফুটবল লিগে (বিএফএল) পুরোনো দ্বৈরথ মোহামেডান-আবাহনীর মধ্যে। দুই দলের সেই লড়াইয়ের ঝাঁঝ কিছুটা কমলেও ফুরিয়ে যায়নি। সেখানে নতুন করে যোগ হয়েছে বসুন্ধরা কিংস-মোহামেডান দ্বৈরথ। গত কয়েক বছর ধরেই এই দুই দলের লড়াই পৌঁছেছে অন্য মাত্রায়। সেটি সমর্থকেরা যেমন উপভোগ করেন তেমনি বসুন্ধরা কিংসের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসানও উপভোগ করেন। এই দ্বৈরথ আরও যত বেশি বাড়বে ততই ফুটবলের জন্য ইতিবাচক হবে, জানান পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান।
শুক্রবার কিংস অ্যারেনায় লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে মাঠে নামে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। খেলায় ২-০ গোলে জেতে পাঁচবারের লিগ চ্যাম্পিয়নরা। এই ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইমরুল হাসান। সেখানে প্রশ্ন রাখা হয় বসুন্ধরা কিংস-মোহামেডান দ্বৈরথ কতটা উপভোগ করেন। উত্তরে ইমরুল হাসান বলেন, ‘বসুন্ধরা কিংস এর বাইরে আমি আসলে মোহামেডানের সমর্থক। ছোটবেলা থেকে মোহামেডানকে সমর্থন করতাম। এই যে আবাহনী-মোহামেডানের দ্বৈরথ এখন কিছুটা বসুন্ধরা-মোহামেডানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এ রকম দ্বৈরথ যত বেশি বাড়বে আমাদের ফুটবলের জন্য সেটা ততবেশি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। আমি এটা খুব উপভোগ করি। মাঠের বাইরেও অনেক আলোচনা হয়। সব কিছুই আসলে আমি খুব উপভোগ করি।’

এই ম্যাচের আগে আলোচনায় ছিল কিংসের মোহামেডানকে মাঠ না দেওয়া নিয়ে। মোহামেডান অভিযোগ করে বসে ম্যাচের আগের তারা মাঠ চেয়ে পায়নি। আজ সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন বসুন্ধরা কিংস সভাপতি, ‘আসলে গতকাল (বৃহস্পতিবার) আপনারা জানেন আমাদের এখানে বাংলাদেশের সবচাইতে বড় একটা ইভেন্ট হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তর নিয়ে। একটা চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রায় ২০ হাজার লোকের সমাগম ছিল। সে কারণে মাঠ দেওয়ার মতো অবস্থা ছিল না। সেজন্য মাঠ দেওয়া হয়নি। এর বাইরে এখানে আর কিছু নেই।’
বসুন্ধরা কিংস এদিন মোহামেডানকে হারিয়ে মোট ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও পোক্ত করেছে। দুইয়ে থাকা ফর্টিস এফসির সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান ৫। প্রথম ম্যাচে পিডব্লিউডির বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্রয়ে শুরুর পর টানা ৫ ম্যাচ জিতেছে মারিও গোমেজের দল। দলের এমন পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট ক্লাব সভাপতি, ‘গতবছর আপনারা জানেন প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা ফলাফল পাইনি। তো চেষ্টা করেছি এ বছর দলটাকে গুছিয়ে নেয়ার জন্য এবং এখন পর্যন্ত যা হচ্ছে আমরা আমাদের প্রত্যাশামাফিক রেজাল্ট দেখতে পাচ্ছি। আসলে মাত্র ৬টা ম্যাচ গিয়েছে। এখনই কোনো কিছু বলা যাবে না, আপাতদৃষ্টিতে ভালো একটা অবস্থানে আছি। দল যেভাবে খেলছে এতে এখন পর্যন্ত আমরা তাদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট।’
চার দিন পর মাঠে গড়াবে আরও একটি কিংস-মোহামেডান বিগ ম্যাচ। আগামী ১৬ ডিসেম্বর ফেডারেশন কাপের ‘বি’ গ্রুপের খেলায় পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল। সংস্কারের পর এই প্রথম ঘরোয়া ফুটবলের কোনো ম্যাচ ফিরছে জাতীয় স্টেডিয়ামে। সামনে এই মাঠে আরও বেশি ঘরোয়া ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের পক্ষে ইমরুল হাসান, ‘ব্যক্তিগতভাবে মনে করি লিগের ম্যাচ না হোক অন্তত টুর্নামেন্টের কিছু বড় বড় খেলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আমি ব্যক্তিগতভাবে দেয়ার পক্ষে।’

ঘরের মাঠে শুরুতেই এগিয়ে গেল বসুন্ধরা কিংস। এরপর ম্যাচে ফরিতে মরিয়া হয়ে উঠল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। প্রথমার্ধে দাপট দেখালেও মিললো না গোলের দেখা। পরের অর্ধে স্বরুপে ফেরে লাল-সাদা ব্রিগেডরা। তার সঙ্গে আর পেরে উঠল না অতিথিরা; উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে শেষ হাসি হাসলো মারিও গোমেজের দল।
বাংলাদেশ ফুটবল লিগে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শুক্রবার মোহামেডানকে ২-০ গোলে হারায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। রাকিব হোসেন এগিয়ে দেওয়ার পর লিড দ্বিগুণ করেন দোরিয়েলতন গোমেজ নাসিমেন্তো।
এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। সেই সঙ্গে লিগ টেবিলে ৬ খেলায় ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান পোক্ত করল বর্তমান ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়নরা। সমান খেলায় ৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চারে আলফাজ আহমেদের দল। ১১ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে ফর্টিস এফসি। এক পয়েন্ট কম পেয়ে তিনে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি।
বসুন্ধরা কিংসের জন্য ম্যাচটি ছিল প্রতিশোধের। গত মৌসুমে লিগে দুবারই হারতে হয়েছে মোহামেডানের কাছে। এমনকি খোয়াতে হয়েছে শিরোপাও। ফুটবল লিগের চলতি মৌসুমে প্রথম দেখায় ঠিকই প্রতিশোধ নিল কিংস। ঘরের মাঠে মোহামেডানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে তারা।
এদিন১৫ মিনিটে রাকিব হোসেনের গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। বাঁ প্রান্ত দিয়ে শাকিল আহাদ তপুকে পেছনে ফেলে বক্সে ক্রস বাড়ান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ফাঁকায় থাকা রাকিব সেই ক্রসে প্রথম স্পর্শেই জালে পাঠান বল।
চার মিনিট পর ফাহিমের কর্নার থেকে ইমানুয়েল আগবাজি টনির হেড বারের উপর দিয়ে চলে যায়। ২১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ইমানুয়েল সানডের শট বারে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচের ২২ মিনিট না পেরোতেই হলুদ কার্ড পেয়ে বসেন বসুন্ধরা কিংসের ইউসুফ আলী ও তাজ উদ্দিন।
৩৩ মিনিটে গোলের ভালো সুযোগ হাতছাড়া করেন মোহামেডানের স্যামুয়েল বোয়াটেং। বা প্রান্ত দিয়ে দারুণ একটা ক্রস দেন মাহবুব; গোলমুখের সামনে পা ছোঁয়াতে পারলেই হতে পারতো গোল; কিন্তু বোয়াটেং পারলেন না বলে পা ছোঁয়াতে।
৪৩ মিনিটে পরপর দুটি সেভ করেন কিংসের গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো। প্রথমে মুজাফফরভের সরাসরি ফ্রি কিক শট ঠেকান কর্নারের বিনিময়ে। এরপর কর্নারে নিজেদের বক্সে জটলা তৈরি হয়। এলি কেকের হেড পেছনের পা দিয়ে টোকা দেন রহিম উদ্দিন, তবে সতর্ক ছিলেন জিকো।
বিরতির পর ধার বাড়াতে কিউবা মিচেলকে মাঠে নামায় কিংস। যদিও খুব একটা গোছাল আক্রমণ দেখা যায়নি। ৭৫ মিনিটেও গোলের ভাল সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিকেরা। তবে বক্সের ভেতর থেকে কিউবার শট খুঁজে পায়নি লক্ষ্য। ৮২ মিনিটে শাহরিয়ার ইমনকে গোলবঞ্চিত করেন মোহামেডান গোলকিপার সুজন হোসেন।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দোরিয়েলতন। সোহেল রানা সিনিয়রের লং পাসে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মোহামেডান অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিঠুকে গতিতে পেছনে ফেলেন তিনি। এরপর গোলরক্ষক সুজন হোসেনকে বোকা বানাতে কোনো অসুবিধা হয়নি ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের।
এর পরের মিনিটে হলো গোলমাল। সোহেল রানা সিনিয়রের মুখে মোহামেডানের মুজাফ্ফর মুজাফ্ফরভ হাত দিয়ে আঘাত করেন ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে যায় মাঠে। রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখালে উল্টো আরও মেজাজ হারিয়ে ফেলেন মুজাফ্ফর। এমনকি রেফারিকে দিকে তেড়ে যাওয়ার জন্য হম্বিতম্বি করতে থাকেন তিনি। সতীর্থরা কোনোমতে ঝাপটে ধরে তাঁকে মাঠের বাইরে পাঠান। রেফারি মো. আলমগীর সরকার অবশ্য আগে সোহেল রানাকে হলুদকার্ড দেখান।