ভিসা জটিলতার কারণে স্কোয়াডের দুই বোলার দলের সাথে যোগ দিতে না পারায় রিশাদ হোসেনের খেলাটা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন এই তরুণ লেগ স্পিনার। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ৩০০তম ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফগানিস্তান।
বাংলাদেশ দল সবশেষ ওয়ানডে খেলেছিল ঘরের মাটিতে, গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ২–১ ব্যবধানে বিজয়ী সেই দল থেকে এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। অসুস্থতার কারণে এই সিরিজের দলে জায়গা হয়নি কিপার-ব্যাটার লিটন দাসের। আর এই সিরিজ না খেলার কথা বিসিবিকে জানিয়েছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ফলে স্কোয়াডে এসেছে পরিবর্তন।
তাতে লম্বা সময় পর ওয়ানডে দলে ডাক পান বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। তবে তিনি ও প্রথমবার ওয়ানডে দলে আসা নেসার নাহিদ রানা ভিসা হাতে না পাওয়ায় দলের সাথে প্রথম ম্যাচের আগে যোগ দিতে পারেননি।
ম্যাচটি সরাসরি দেখতে চোখ রাখুন টি-স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
বাংলাদেশ একাদশ : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।
১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ খেলা একজন বোলার যখন শীর্ষ গতির সেরা পাঁচটি ডেলিভারি একাই করেন, তখন বোঝাই যায় তিনি বিশেষ প্রতিভা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচে যথারীতি গতির ঝড় তুলছেন তরুণ এই পেসার। যা দেখে রোমাঞ্চিত ইয়ান বিশপ। ক্যারিবিয়ান এই গ্রেট মনে করেন, বাংলাদেশকে নাহিদদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।
চলতি বছরই টেস্টে অভিষেক হয়েছে নাহিদের। গতিময় পেস বোলিংয়ে খুব অল্প সময়েই এসেছেন আলোচনায়। চলমান ওয়ানডে সিরিজে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন সাদা বলের দলে। তৃতীয় ম্যাচে বল হাতে এখন পর্যন্ত চেনা ছন্দ ধরে রেখে ঘন্টায় ১৪৫ থেকে ১৫০ কি.মি গতিতে বোলিং করে যাচ্ছেন। সেদিকুল্লাহ আটালকে আউট করা ডেলিভারি ছিল ১৫১ কি.মি!
আরও পড়ুন
মাহমুদউল্লাহ ৯৮, মিরাজ ৬৬, বাংলাদেশ ২৪৪ |
এক্স প্ল্যাটফর্মে ম্যাচ চলাকালীন পোস্ট করে নাহিদের প্রশংসা করেছেন সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার বিশপ-
“বাংলাদেশকে সক্রিয় হতে হবে এবং তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেরা স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনিং বিশেষজ্ঞ এবং ডায়েটিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে আর তাদের বিশেষ করে যুক্ত করতে হবে নাহিদ রানার সাথে। সাথে তাদের ফাস্ট বোলিং গ্রুপকেও রাখতে হবে। (নাহিদ রানা) খুবই রোমাঞ্চকর একজন বোলার।”
এর আগে ম্যাচ চলাকালীন ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা বলেছেন, নাহিদ বাংলাদেশের ক্রিকেটের একজন সম্পদ এবং বিসিবিকে তাকে সব ফরম্যাট খেলিয়ে ক্লান্ত করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রথম দুই ম্যাচে অন্য ব্যাটাররা রানের জন্য সংগ্রাম করলেও নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন সাবলীল। চোটের কারণে অধিনায়ককে হারানো বাংলাদেশ তৃতীয় ম্যাচে একশর আগেই চার উইকেট হারিয়ে পড়ে গেল প্রবল চাপের মুখে। তবে বুক চিতিয়ে লড়ে দুর্দান্ত এক জুটিতে দলকে উদ্ধারে এগিয়ে এলেন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। দুজনের ফিফটিতে শুরুর চাপ কাটিয়ে বাংলাদেশ পেল লড়াই করার মত একটা পুঁজি।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের স্কোর ৮ উইকেটে ২৪৪।
ম্যাচের আগে বড় ধাক্কায় বাংলাদেশ। কুঁচকির চোটে এই ম্যাচ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে যান শান্ত, যিনি ছিলেন দারুণ ছন্দে। নিজের ১০০তম ওয়ানডেতে তাই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব বর্তায় মিরাজের কাঁধে।
আরও পড়ুন
আগে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, নাহিদ রানার অভিষেক |
তবে আগে ব্যাটিং নেওয়ার পর তার দলের চিত্রটা সুবিধার হয়নি প্রথম ২০ ওভারে। প্রথম দুই ম্যাচে ত্রিশের ঘরে দুটি ইনিংস খেলা সৌম্য সরকার এদিনও ভালো শুরু পান। তবে সেটা বড় করতে পারেননি। আজমতউল্লাহ ওমারজাইয়ের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিন চারে করেন ২৪ রান।
৫৩ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার চার রান বাদেই সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। পুরো সিরিজেই হতাশাজনক ব্যাটিং করা তাওহীদ হৃদয় আরও একবার ব্যর্থ হন। শুরু থেকেই নড়বরে থাকার পর আউট হন রশিদ খানের বলে।
মিরাজের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা জাকির হাসান। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে মাত্র ৭২।
আরও পড়ুন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকেও ছিটকে গেলেন শান্ত |
এরপরই শুরু হয় মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহর প্রতিরোধ। একজন ব্যাট হাতে ভালো ছন্দে থাকলেও অন্যজন এই ফরম্যাটে সাম্প্রতিক সময়ে ছিলেন না একেবারেই রানের মধ্যে। মাহমুদউল্লাহ সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে শুরু থেকেই করেন ইতিবাচক ব্যাটিং। আর জুটি গড়ায় মনোযোগ দেওয়া মিরাজ ব্যাটিং করেন কিছুটা ‘টেস্ট’ মেজাজে।
ফলে মাহমুদউল্লাহ যেখানে ব্যাট করেন প্রায় ৮০-৯০ স্ট্রাইক রেটে, সেখানে মিরাজ প্রায় পুরো ইনিংসেই স্ট্রাইক রেট রাখেন ৬০-এর মধ্যে। তবে উইকেটের আচরণ ও পরিস্থিতি বিবেচনায় একটা বড় জুটির ছিল ভীষণ প্রয়োজন। আর সেই কাজটা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে করেন দুজন।
তাদের ক্রমেই জমে ওঠা জুটি ধীরে ধীরে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। আফগান বোলারদের হতাশ করে দলকে এনে দেন শক্ত ভিত। একে একে দুজনই তুলে নেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রানের জুটির ইতি ঘটে মিরাজের বিদায়ে। তার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক ১১৯ বলে করেন ৬৬ রান।
আরও পড়ুন
নেই অধিনায়ক শান্ত, কেমন হবে বাংলাদেশে একাদশ? |
এরপর অন্য ব্যাটাররা কেউই পারেননি বলার মত অবদান রাখতে। একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান কেবল মাহমুদউল্লাহ। যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে শতকটা প্রাপ্যই ছিল তার। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে সেই সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। রান আউটে কাটা পড়েন ৯৮ রানে। সেঞ্চুরি মিস করলেও খুশি হতেই পারেন দলের বিপদে দারুণ এক ইনিংস খেলতে পেরে।
৬ ঘণ্টা আগে
৮ ঘণ্টা আগে
৮ ঘণ্টা আগে
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৫ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে