
পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর প্রাক্তন ক্লাবের সঙ্গে একরকম যুদ্ধেই যেন জড়িয়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে। রিয়ালের ফরাসি তারকা ফরোয়ার্ড পিএসজির কাছে প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বকেয়া বেতন পাওয়ার দাবিতে ফ্রান্সের শ্রম আদালতে আইনি লড়াই যাচ্ছিলেন এতদিন। এবার দু পক্ষের আইনী লড়াই আরো তীব্র হলো। এবার পিএসজির কাছ থেকে প্রায় ৩৬০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবী করলেন এমবাপে।
এমবাপের সঙ্গে পিএসজির বকেয়া বেতনের বিষয় নিয়ে বিবাদ চলছে অনেক দিন ধরেই। সবশেষ আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হননি রিয়াল ফরোয়ার্ড। এমবাপ এর আগে প্রায় ৭৭০ কোটি টাকা দাবি করলেও এবার বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চাইলেন পিএসজির কাছ থেকে। অবৈধ বরখাস্ত, বকেয়া বেতন, বোনাস এবং ক্ষতিপূরণের অর্থ মিলিয়ে এই অঙ্ক দাবী করেছেন তিনি। এছাড়া নৈতিক হয়রানি, অঘোষিত কাজ এবং পিএসজির উপর সদিচ্ছা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব ভঙ্গের জন্যও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
এমবাপের আইনী পরামর্শকরা বলছেন, ‘কিলিয়ান এমবাপে এমন কিছু চাচ্ছেন না যা আইন অনুমোদন করে না। তিনি কেবল তার আইনি অধিকারের বাস্তবায়ন চাইছেন, যেভাবে যে কোনো কর্মী চাইবে।’
আরও পড়ুন
| ভিনিসিয়ুসকে ব্যালন ডি’অর জয়ের উপায় দেখালেন বেনজেমা |
|
অন্যদিকে এমবাপের কাছ থেকে মোট ৬০ কোটি ডলার বা ৭ হাজার ৩২০ কোটি টাকা চাইছে পিএসজি। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ‘সম্ভাব্য ট্রান্সফার সুযোগ হারানোর’ ক্ষতিপূরণ। কারণ, এমবাপ্পে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে চলে যাওয়ায় ২০২৩ সালের জুলাইয়ে সৌদি ক্লাব আল হিলালের ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব হারায় পিএসজি।
পিএসজি আরও বলেছে যে তারা চুক্তি আলোচনায় এবং চুক্তি কার্যকরকরণে সদিচ্ছা ভঙ্গ, খ্যাতি ও চিত্র ক্ষতির জন্যও ক্ষতিপূরণ চায়। আদালতের সামনে, ক্লাব প্রমাণ দেখিয়েছে যে এমবাপে প্রায় ১১ মাস ধরে তার চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত গোপন করেছিলেন, যা ক্লাবকে কোনো ট্রান্সফার ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ দেয়নি। আদালত থেকে সিদ্ধান্ত আসার কথা আগামী মাসে।
২০২৪-২৫ মৌসুমে পিএসজি ছাড়েন এমবাপে। সে সময় চুক্তি বাড়াতে অনীহা জানানোর পর এমবাপ্পেকে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক-মৌসুম সফর থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং তাকে রিজার্ভ খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনুশীলন করতে বাধ্য করা হয়। মৌসুমের প্রথম লিগ ম্যাচেও তাকে বাইরে রাখা হয়েছিল, তবে আলোচনার পর তিনি দ্রুতই দলে ফিরে আসেন।
পিএসজি হয়রানি বা চাপ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে এমবাপে ২০২৩-২৪ মৌসুমের ৯৪ শতাংশের বেশি সরকারি ম্যাচে অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রাক্তন ক্লাবের সঙ্গে অঘোষিত যুদ্ধেই জড়িয়ে গেলেন এমবাপে।
No posts available.
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৬:৪১ পিএম
১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪:২৭ পিএম

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বাড়ছে ভিড়। বিকেল ৪টার পর থেকে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করছেন দর্শকেরা। স্টেডিয়ামের বাইরেও লোকে লোকারণ্য।
পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচ শুরু আজ রাত ৮টায়। হাইভোল্টেজ ম্যাচ সামনে রেখে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্টেডিয়াম চত্বরে অনবরত টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনীর ৯টি গ্রুপ। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যরাও।
জাতীয় স্টেডিয়ামে এর আগে হওয়া ম্যাচগুলোতে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। গেট ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ছিল। এবার তাই সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
স্টেডিয়ামে ঢোকার গেটগুলো দিয়ে সহজেই মাঠে ঢুকতে পারছেন সমর্থকেরা। বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচটি শুরু হবে রাত ৮টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের একমাত্র বেসরকারি স্পোর্টস চ্যানেল টি-স্পোর্টস।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই ম্যাচটি এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের। ‘সি’ গ্রুপের প্রথম দেখায় গোলশূন্য ড্র করেছিল জামাল ভূঁইয়ারা। ভারতের শিলংয়ে হওয়া ওই ম্যাচে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় হামজা চৌধুরীর।

সমিত সোমকে নিয়ে ভারতের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। একাদশে ফিরেছেন চোট থেকে ফেরা মিডফিল্ডার শেখ মোরসালিনও। জায়গা হারিয়েছেন জামাল ভূঁইয়া ও জুনিয়র সোহেল রানা।
প্রত্যাশিতভাবেই খেলছেন হামজা চৌধুরী। দেশের জার্সিতে এটি তাঁর সপ্তম ম্যাচ। আগের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোল করেন তিনি। আজকের ম্যাচেও লেস্টার সিটি তারকার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ।
পল্টনের জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি শুরু হবে রাত ৮টায়। খেলা সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল টি-স্পোর্টস।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের এই ম্যাচটি এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের। 'সি' গ্রুপ থেকে প্রথম দেখায় গোলশূন্য ড্র করেছিল বাংলাদেশ। ভারতের শিলংয়ে হওয়া ওই ম্যাচে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় হামজা চৌধুরীর।
একাদশ:
গোলরক্ষক: মিতুল মারমা।
রক্ষণভাগ: তপু বর্মণ, তারিক কাজী, জায়ান আহমেদ ও সাদ উদ্দিন।
মধ্যমাঠ: হামজা চৌধুরী, সোহেল রানা, শমিত শোম ও শেখ মোরসালিন।
আক্রমণভাগ: রাকিব হোসেন ও ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।

গত রবিবার ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের টিকিট নিশ্চিত করে ৩২ দল। এদিন আর্মেনিয়াকে ৯-১ গোলে বিধ্বস্ত করে ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বমঞ্চে ওঠে পর্তুগাল। দেশের হয়ে বাছাইয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
চল্লিশেও চালসে থাকা রোনালদোর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড অ্যান্ডারসন তালিস্কা। আল নাসর তারকাকে ইতিহাসের সেরা আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
২০২১ সালে আল নাসরে যোগ দেন অ্যান্ডারসন। সৌদি ক্লাবে রোনালদোর সঙ্গে দুবছর খেলেছেন তিনি। ২০২৩ সালে রোনালদো-অ্যান্ডারসন-মানে ত্রয়ী জেতেন আরব ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ।
ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ব্যান্ড স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যান্ডারসন বলেন, “রোনালদোর সঙ্গে কাটানো দুটি বছর ছিল অবিশ্বাস্য। তিনি (রোনালদো) যখন এলেন, আমি সেখানে দুই বছর ধরে ছিলাম। চার বছর আল-নাসরে খেলেছি, অসাধারণ একটি যাত্রা। রোনালদোর সঙ্গে খেলা ছিল স্বপ্নের মতো। আমার কাছে তিনি (রোনালদো) ইতিহাসের সেরা।”
আরও পড়ুন
| ট্রাম্পের সঙ্গে বসবেন রোনালদো, কি নিয়ে কথা হবে জানালেন |
|
চলতি বছর শুরুতে তুরস্কের ক্লাব ফেনারবাচেতে যোগ দেন অ্যান্ডারসন। তবে আল নাসরে কাটানো সময়কে এখনো স্মরণ করেন তিনি। রোনালদোর সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা তাঁর পেশাদারিত্বকে আরও শাণিত করেছে বলেও জানান অ্যান্ডারসন। “আমরা একসঙ্গে অনুশীলন করতাম এবং দারুণ সব কাজ করেছি। রোনালদোর সঙ্গে কাজ করা মানে ছিল খেলোয়াড় হিসেবে নিজের সামর্থ্য আরও বাড়ানো, আরও পেশাদার হওয়া, নিজের প্রতি বেশি যত্নশীল হওয়া।”
বিশ্বকাপে উঠলেও অনাকাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছেন রোনালদো। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখেন তিনি। তিন ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে পর্তুগিজ অধিনায়ক। আর্মেনিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটিতে খেলতে পারেননি রোনালদো।
ক্লাব ফুটবলেও দারুণ ফর্মে রোনালদো। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১১ ম্যাচে করছেন ১০ গোল।

হোয়াইট হাউসে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা পর্তুগিজ মহাতারকার। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রে সফর করবেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানও।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘এমএস নাও’ এর বরাত দিয়ে তিনজন হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে রোনালদোর পরিকল্পিত সফরটি হবে। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর ওভাল অফিসে উপস্থিতির কয়েক ঘণ্টা পর অনুষ্ঠিত হতে ট্রাম্প-রোনালদোর সাক্ষাৎ।
এই ঘোষণার ঠিক এক সপ্তাহ আগেই রোনালদো জানিয়েছিলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে যদি কখনো দেখা হয়, তাঁর সঙ্গে কী আলোচনা করবেন সেটা জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
| পিএসজির কাছে ৩৬০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইল এমবাপে |
|
সম্প্রতি ব্রিটিশ সাংবাদকি পিয়ার্স মর্গানকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে একদিন ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ রোনালদো জানিয়েছেন, যে তার মূল লক্ষ্য হবে বিশ্ব শান্তি নিয়ে আলোচনা করা এবং কিছু বিষয় ‘যা আমাদের মধ্যে সাধারণ বিষয়’ – যা সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত জানাতে পারলেন না।
ট্রাম্পকে নিয়ে রোনালদো বলেন, ‘যদি পৃথিবী শান্তিতে থাকে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি এমন একজন মানুষ যিনি পৃথিবীকে বদলাতে বা পরিবর্তনে সাহায্য করতে পারেন। আর এটিই আমার মূল লক্ষ্য ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করা এবং বিশ্ব শান্তি নিয়ে কথা বলা। যদি এটা সম্ভব হয়, তিনি এমন একজন যাঁর সঙ্গে আমি সত্যিই বসে কথা বলতে চাই।
রোনালদো আরও যোগ করেন, ‘এখানে, যুক্তরাষ্ট্রে—যেখানে যা-ই ঘটুক না কেন, আমি তার সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমি জানি তিনি সৌদি আরবে গেছেন। আশা করি একদিন তার সঙ্গে বসে কথা বলার সুযোগ পাবো, কারণ তিনি এমন একজন যাকে আমি সত্যিই পছন্দ করি। আমি মনে করি, তিনি কাজ করতে পারেন, আর আমি এমন মানুষদের সম্মান করি।’
রোনালদোর পর্তুগাল ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে খানিকটা শঙ্কা তৈরি হলেও আর্মেনিয়াকে ৯-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করে রবার্তো মার্টিনেজের দল। তবে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকো বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে হয়তো দেখা যাবে না রোনালদোকে। আয়ারল্যান্ডের এক খেলোয়াড়কে কনুই দিয়ে গুঁতো মেরে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় আছেন ‘সিআর সেভেন’।

১৯৮৫ সালের সাফ গেমসের ফাইনাল। ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা মুহূর্তগুলোর একটির জন্ম দিয়েছিলেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম। ডি- বক্সের মাথা থেকে ভলিতে করা তাঁর সেই দৃষ্টিনন্দন গোলটি যেন অসাধারণ কোনো শিল্পকর্ম।
আজ রাত আটটায় ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। এএফসি এশিয়া কাপ বাছাইয়ে ‘ডার্বি’ ম্যাচের ক’দিন আগে থেকেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ক্রীড়াঙ্গনেই। দুই দলেরই এশিয়া কাপে কোয়ালিফাই করার সুযোগ শেষ। এরপরও ‘মর্যাদার লড়েইয়ের’ এই ম্যাচ নিয়ে সমর্থকদের আগ্রহ চরমে। প্রতিবেশী দুই দেশের ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সবসময়ই আবেগ, সম্মান আর ইতিহাসের মিশেলে তৈরি। সেই ইতিহাসের অন্যতম উজ্জ্বল অংশ বাংলাদেশের কিংবদন্তি ফরোয়ার্ড শেখ মোহাম্মদ আসলাম।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে চার দশক আগের মধূর স্মৃতি রোমন্থন করলেন আসলাম ১৯৮৫ সালের সাফ গেমসের এই কিংবদন্তির সেই গোল যেন এখনো চোখে লেগে আছে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম গোল করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখানোর আসলামের চোখে ভেসে উঠল সেই ক্ষণ।
ভারতের বিপক্ষে গোল করে কেমন অনুভূতি ছিল তখন সাবেক স্ট্রাইকার আসলামের ? শোনা যাক তাঁর আবেগভরা কণ্ঠেই, ‘সেটা একটা উত্তেজনাপূর্ণ খেলা ছিল। ভারতকে হারাতে হবে এই চিন্তায় আমি সারাক্ষণ বুদ হয়ে ছিলাম। আমার আব্বা আমাকে বলতা তুমি হাফ দ্যা ফিল্ড ক্রস করার সঙ্গে সঙ্গে গোলরক্ষকের দিকে তাকাবে। আমি বাবার কথা মত হাফ দ্যা ফিল্ড ক্রস করেই ভারতের গোলকিপারের দিকে তাকিয়ে দেখি তাদের গোলকিপার অতনু একটু এগিয়ে এসেছে। আমি ওখান থেকে ঘুরেই শট করেছি, ওখান থেকেই গোল।’
একটি গোল কিভাবে দেশের ফুটবলে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে পারে সেটাই স্বচক্ষে দেখেছিলেন আসলাম। ভারতের বিপক্ষে ওই গোল নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই গোলের পরে সারা বাংলাদেশের যে আনন্দ, সেই উত্ফুল্লতা দেখার মতো ছিল। ভারতকে যে হারানো যায়, সেটা সেদিন আমরা প্রমাণ করেছি।’তার চোখে তখন যেন আবার সেই স্টেডিয়ামের গ্যালারি ঢাকঢোল, পতাকা, আর লক্ষ মানুষের চিৎকার।
চার দশকেরও পরে ভিন্ন এক মঞ্চে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। যে ম্যাচে খালি চোখে দেখলে কেবলই নিয়মরক্ষার। তবে সম্প্রতি ক্রীড়ার যেকোনো বিভাগে ভারত-বাংলাদেশে নিরুত্তাপ ম্যাচের নজির নেই বললেই চলে। ঘরের মাঠের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ইতিবাচক ফল আনবে বলে বিশ্বাস আসলামের। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের নিজেদের মাঠে খেলা। নিজেদের মাঠের যে অ্যাডভান্টেজটা আছে, এটা প্রতিটা মুহূর্তে আমাদের ছেলেরা যেন আদায় করে নিতে পারে সেটাই আমার চাওয়া। প্রতিটা গোলের সুযোগ যেন তারা কাজে লাগাতে পারে।’
দর্শক আগ্রহ তলানীতে গিয়ে ঠেকা বাংলাদেশের ফুটবলে প্রাণ এনে দিয়েছেন একদল প্রবাসী ফুটবলার। দেশের ফুটবল বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়া হামজা চৌধুরী, সমিত সোম, জায়ান আহমেদ, কিউবা মিচেলদের নিয়ে সবার প্রত্যাশাই আকাশছোঁয়া। বিশেষ করে নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোল করা হামজার দিকে দৃষ্টি থাকবে আসলামেরও, ‘হামজা খুবই ভালো খেলোয়াড়। সবার নজর আজও হামজার দিকে থাকবে। আমারও আশা হামজাকে নিয়ে তিনি ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। তিনি ক্লাসিক্যাল একজন খেলোয়াড়। দলের বাকিদের সঙ্গে বোঝাপড়াটা ঠিক থাকলে এই ম্যাচে আমরা জিততে পারি।’
দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আর ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা আসলামের বিশ্বাস আজ ভারতকে হারাতে পারবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ জিতবে। ২-০ কিংবা ২-১ এ জিতবে এটাই আমার প্রত্যাশা। প্রবাসী ফুটবলার যারা এসেছেন, তাদের সঙ্গে তালটা ঠিকভাবে বসলে যে কেউ দলকে এগিয়ে দিতে পারবে। রাকিব খুবই ভালো ফুটবলার। ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলেন। এই মাঠে আগে থেকেই দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, তারও আজ ভালো সুযোগ থাকবে।’
সময় বদলেছে, তবে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের আবহ দেখে স্টেডিয়ামে দর্শকসারীর উন্মাদনা দেখে হয়তো আবার অতীতে ফিরে যাবেন আসলাম। আসলাম হয়ে কেউ হয়তো ভারতের জালে বল পাঠাবেন, আর গ্যালারি দেখা যাবে ভরা জোয়ার।