১১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল, মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ভিন্ন ছন্দেই হাজির রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম দিকে এলেমেলো ফুটবল খেলা বার্সেলোনা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিল। বিরতির আগেই চার গোল খেয়ে বসা রিয়ালের হয়ে একাই লড়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে, করলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণভাগের ভুলে যাওয়ার মত এক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইয়ামাল-রাফিনিয়ারাই। আর তাতে চলে গেল লা লিগা জয়ের আরও কাছে।
লা লিগায় রোববারের এল ক্লাসিকোর মহারণে আরও একবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। ৪-৩ গোলে দুর্দান্ত জয়ে মৌসুমে রিয়ালকে টানা চার ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিল ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন
‘ইয়ামাল বাচ্চা না, এমন পারফরম্যান্সই চায় বার্সা’ |
![]() |
এই জয়ে বার্সেলোনার লিগ জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তিন ম্যাচ হাতে রেখে ৮২ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
লা লিগায় বড় ধরণের নাটকীয়তা না দেখা দিলে এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের শিরোপাহীন মৌসুম। দুই দফায় রিয়ালকে অসাধারণ সব সাফল্য এনে দেওয়া আনচেলত্তির জন্য শেষটা হতে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মতোই।
ম্যাচে রিয়ালের শুরুটা অবশ্য হয় স্বপ্নময়। পাউ কুবার্সির দুর্বল ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গতিতে বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন এমবাপে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন গোলকিপার ওয়েজেচ সেজনি। পেনাল্টির বাঁশি সাথে সাথেই বাজিয়ে দেন রেফারি। ফরাসি তারকার বাঁদিকে নেওয়া নিচু শটে হাত লাগালেও আটকাতে পারেননি সেজনি।
এটি ছিল চলতি মৌসুমে লিগে এমবাপের ২৫তম গোল। লিড নিয়ে রিয়াল অব্যাহত রাখে ইতিবাচক ফুটবল। একের পর পর আক্রমণ শানায় দলটি। বিপরীতে ফ্লিকের দল গুছিয়ে নিতেই নষ্ট করে কিছুটা সময়।
নবম মিনিটে বলার মত প্রথম আক্রমণে বক্সের ভেতর কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নিয়েছিলেন এরিক গার্সিয়া, তবে রিয়ালের জন্য তা বিপদের কারণ হয়নি।
১৪তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার জালে বল, আর এবারও স্কোরার সেই এমবাপেই। তবে বল বানিয়ে দেওয়ার একটা বড় কৃতিত্ব পাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ডিফেন্সচেড়া পাসে খুঁজে নেন ফ্রানের বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। বল রিসিভ করে জায়গা বানিয়ে সেজনিকে পরাস্ত করে রিয়ালের লিড বড় করেন এমবাপে।
গোলের লক্ষ্যে প্রথম দুই শট থেকেই জালের দেখা পাওয়া রিয়ালের আক্রমণের সামনে সেই সময়ে বেকায়দায় ছিল বার্সেলোনা। ১৮তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে লামিন ইয়ামালের কার্লিং শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন থিবো কোর্তোয়া।
পরের মিনিটে আরেকটি ভালো সেভ দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় কোর্তোয়াকে। ফেররান তরেসের কর্নার কিক থেকে হেডারে জাল খুঁজে নেন এরিক গার্সিয়া, যিনি কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন
আবেগে ভেসে, চোখের জলে বায়ার্নকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি মুলার |
![]() |
এক গোল শোধ দিয়ে ক্রমেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। খেই হারিয়ে ফেলা রিয়ালের খর্বশক্তির রক্ষণের জন্য গতিময় ইয়ামালকে সামলানো শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৩২তম মিনিটে তরেসের পাস থেকে কাট করে বক্সের ভেতর বাঁদিক থেকে বা পায়ের কোনাকুনি এক শটে গোল করেন স্প্যানিশ এই উইঙ্গার, লা লিগায় এটি এই মৌসুমে ইয়ামালের সপ্তম গোল।
পরপর দুই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল, যেখানে ফুটে ওঠে তাদের ছন্দপতন। বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এমবাপে, তবে ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে যান সতীর্থ লুকাস ভাজকেস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে পাল্টা আক্রমণে বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে প্রথমবারের মত বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড।
শুরুতে ঝলক দেখানো রিয়াল এরপর আশা জাগিয়েছিল সমতা টানার। পেনাল্টি আদায় করেছিলেন এমবাপে। তবে তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা আর মেলেনি।
উল্টো ৪৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে রিয়াল। এবারও কেন্দ্রবিন্দু সেই ভাজকেসই। রিয়াল অধিনায়কের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল কেড়ে রাফিনিয়াকে পাস বাড়ান তরেস, ফাঁকায় থাকা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই উইঙ্গারের সমস্যা হয়নি জালের দেখা পেতে। লা লিগায় এটি মৌসুমে রাফিনিয়ার ১৮তম গোল ছিল।
অবিশ্বাস্য এক প্রথমার্ধে রিয়াল শুরুর দুই গোলের পর লক্ষ্যেই আর শটই রাখতে পারেনি। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা।
বিরতির পরও একই ছন্দ ধরে রাখে বার্সেলোনা। রিয়ালের জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগকে আরও একবার বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাফিনিয়া। ৫৩তম মিনিটে বাঁদিক থেকে তার পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইয়ামাল টোকা দিয়ে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আর মেলেনি গোল।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে এর তিন মিনিট পর একটা সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে, তবে শট উঁচিয়ে মেরে হতাশ করেন রিয়ালকে। পাল্টা আক্রমণ থেকে এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ানোর চেষ্টা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তবে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ক্লিয়ারিংয়ে।
শেষ পর্যন্ত এই জুটির হাত ধরেই গোল পায় রিয়াল। আরও একটি কাউন্টার এটাক থেকে বল পেয়ে দুজন এগিয়ে যান বার্সেলোনার বক্সে। নিজের সামনে সুযোগ থাকলেও গোলের সামনে এমবাপেকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করান ভিনিসিয়ুস। ২৭তম গোলের মাধ্যমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের তালিকায় রবার্ট লেভানদভস্কির চেয়ে দুই গোলে এগিয়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের আশা। ইয়ামালের ক্রসে ছিলেনও ভালো পজিশনে, তবে ছয় গজের ভেতর থেকে বল পোস্টের ওপর দিয়ে মেরে টিকিয়ে রাখেন রিয়ালের ম্যাচে ফেরার আশা।
আরও পড়ুন
ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
![]() |
জমে ওঠা ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বার্সেলোনা শিবিরে জোর দাবি ওঠে পেনাল্টির। বক্সের ভেতর অহেলিয়া চুয়ামেনির সম্ভাব্য হ্যান্ডবল সময় নিয়ে স্ক্রিনে দেখে রেফারি নাকচ করেন পেনাল্টির আবেদন। হাফ ছেঁড়ে বাচে রিয়াল।
৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে নামা তরুণ ফরোয়ার্ড ভিক্টর মুনজ প্রথম টাচেই পেয়েছিলেন হিরো হওয়ার সুযোগ। তবে লক্ষ্যে শট রাখলেই গোল, এমন পজিশন থেকে তিনি বল মেরে দেন পোস্টের বাইরে।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালকে আরও একবার পাল্টা আক্রমণে চমকে দেয় বার্সেলোনা। ৯৫তম মিনিটে কাট করে বক্সে ঢুকে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ায় বাতিল হয় সেই গোল। বাকি সময়ে কোনো দলই পারেনি বলার মত আর সুযোগ তৈরি করতে।
৩০ জুন ২০২৫, ২:১৫ পিএম
৩০ জুন ২০২৫, ১:৪২ পিএম
২৯ জুন ২০২৫, ৫:৫৯ পিএম
২৯ জুন ২০২৫, ৪:৩২ পিএম
ব্যস্ত একটি মৌসুম শেষের পর আন্তর্জাতিক বিরতি, ঠিক এরপরই ইউরোপের ক্লাবগুলোকে নেমে পড়তে হয়েছে চলমান ক্লাব বিশ্বকাপে। ফলে খেলোয়াড়দের থাকতে হচ্ছে বিশ্রামহীন, যা বাড়িয়ে দিতে পারে চোটের সম্ভাবনা। এসব নিয়ে সমালোচনায় আপত্তি নেই পেপ গার্দিওলার। তবে ম্যানচেস্টার সিটি কোচ এটাও মনে করেন, যারা এই টুর্নামেন্টে নেই, তারা অন্যদের নিয়ে ঈর্ষান্বিত।
৩২ দলের ক্লাব বিশ্বকাপ এবারই হচ্ছে প্রথমবার। সম্প্রতি এই প্রতিযোগিতা নিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন সাবেক লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ, যিনি এখন বর্তমানে রেড বুলের গ্লোবাল সকার প্রধানের দায়িত্বে আছেন। তিনি এই টুর্নামেন্টকে ‘অপ্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতা’ বলে উল্লেখ করেন, এবং এটির আয়োজনকে বলেন ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন
ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায়েও মায়ামির পারফরম্যান্সে গর্বিত মেসি |
![]() |
রোববার এক সংবাদ সম্মেলন ক্লপের সাথে সুর মেলান গার্দিওলা। এরপর অবশ্য দেন ভিন্নমতও।
“আমি জানি উনি (ক্লপ) কোন চিন্তা থেকে কথাটা বলছেন। আমি তাকে সম্মান করি। তবে সত্যি বলতে, অনেক ক্লাবই এই প্রতিযোগিতা নিয়ে অভিযোগ করছে, কারণ তারা এখানে খেলতে পারছে না। কিন্তু তারা যদি এখানে থাকত, তাহলে তারা হয়তো খুব খুশিই হতো। কারণ এখানে তাদের মিডিয়া থাকত, সমর্থক থাকত, টাকা-পয়সাও পেত।”
গত মৌসুমে শিরোপাহীন সিটি বেশ ভুগেছে চোটের সাথে। ক্লাব বিশ্বকাপে গার্দিওলার দল সোমবার আল হিলালের বিপক্ষে খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা পাওয়ার জন্য। এরই মধ্যে দুই সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা সিটি যদি ফাইনাল পর্যন্ত যায়, তাহলে তাদের পথচলা চলবে ১৩ জুলাই পর্যন্ত৷ অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগের আগামী মৌসুম শুরু হচ্ছে আগামী ১৫ আগস্ট। প্রস্তুতির জন্য সময় বলতে গেলে পাওয়াই যাবে না।
আরও পড়ুন
অবসর নিয়ে অনিশ্চয়তায় জোকোভিচ |
![]() |
গার্দিওলার আশঙ্কা, ক্লাব বিশ্বকাপের ধকল ভোগাতে পারে মৌসুমের যেকোনো সময়েই।
“এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোচ হিসেবে এটা মোটেও আদর্শ পরিস্থিতি নয়। আমি যদি পরের মৌসুমের জন্য দুই মাস প্রস্তুতির সময় পেতাম, সেটা তো দারুণ হতো। আমি ঠিক জানি না খেলোয়াড়দের ওপর এর কেমন প্রভাব পড়বে। এমন হতে পারে যে নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা শেষ হয়ে যাব। হতে পারে এই বিশ্বকাপই আমাদের ধ্বংস করে দেবে। আমরা সবাই প্রথমবার এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তাই এখনই কিছু বলা কঠিন।”
খুব একটা প্রত্যাশা ছিল না দলটির কাছে। সেটা মেনেই গ্রুপ পর্ব পার হওয়ার পর পিএসজির কাছে বড় পরাজয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের যাত্রা আগেভাগেই থেমেছে ইন্টার মায়ামির। এভাবে বিদায় নিলেও খুব একটা আক্ষেপ নেই দলটির সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসির। বরং দলের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত আর্জেন্টাইন এই ফরোয়ার্ড।
আল আহলির সাথে গোলশূন্য ড্র দিয়ে মায়ামি শুরু করেছিল ক্লাব বিশ্বকাপ মিশন। প্রথম ম্যাচে খুব একটা আশানুরূপ পারফরম্যান্স না দেখাতে পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে মেসির জাদুতে পোর্তোকে ২-১ গোলে হারিয়ে চমক দেখায় তারা। নিজেদের শেষ ম্যাচেও জয়ের পথে ছিল মায়ামি। তবে শেষ ১০ মিনিটে দুই গোল হজম করে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেসিরা। তাতে গ্রুপ রানার্সআপ হয়েই জায়গা করে নেয় শেষ ষোলোতে, যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা পায় ইউরোপ সেরা পিএসজিকে। হেসেখেলেই রোববারের ম্যাচে তারা জেতে ৪-০ গোলে।
নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে বর্তমান ক্লাবের এমন পারম্যান্সে আক্ষেপ নেই মেসির, বরং বাস্তবতা মেনে দলের পারফরম্যান্সকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
“বর্তমান চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে হেরে আজকে আমাদের ক্লাব বিশ্বকাপের যাত্রা থেমেছে। এই দলে অনেক ফুটবলার আছে, যাদের খেলা আমি উপভোগ করি, যাদেরকে দেখে আমার বেশ ভালো লেগেছে। আমরা গর্ব নিয়েই মাঠ ছেড়েছি, শেষ ষোলোতে খেলার যে লক্ষ্য ছিল, আমরা সেটা পূরণ করতে পেরেছি।”
ক্লাব বিশ্বকাপের হতাশা কাটিয়ে মেসির নজর এখন নতুন মৌসুমের দিকে। “এখন আমাদের সব নজর থাকবে এমএলএস ও অন্য প্রতিযোগিতায়।”
এমএলএসে গেল বার ইস্টার্ন কনফারেন্সে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মায়ামি। এবার অবশ্য বেশ পিছিয়ে আছে তারা, ১৬ ম্যাচে ৮ জয় আর ৫ ড্র তে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয় নম্বরে তারা।
স্কোরলাইন বলছে ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে ইন্টার মায়ামিকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে পিএসজি। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের সামনে খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি মায়ামি। দুই দলের মাঝে বিস্তর ফারাকটাই যেন মাঠে দেখিয়ে দিয়েছে লুইস এনরিকের দল। তবে স্কোরলাইন যেমনই হোক, ম্যাচটা জেতা ততটাও সহজ ছিল না বলে ম্যাচ শেষে দাবি করেছেন পিএসজি বস।
প্রথমার্ধেই চার গোল করে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি। জোড়া গোল করেন জোয়াও নাভেস, একটা গোল আসে আশরাফ হাকিমির কাছ থেকে, আত্মঘাতী থেকে আসে অন্য গোলটি। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য মায়ামি কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে। গোলের দেখা না পেলেও বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেন লিওনেল মেসিরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বড় হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
বড় জয় পেলেও পিএসজি কোচ লুইস এনরিকের পা আছে মাটিতে। মায়ামিকে দিয়েছেন পূর্ণ সম্মানই, “মেসির মত ফুটবলারের বিপক্ষে খেলা মোটেও সহজ কাজ না, তবে আমরা দল হিসেবে বেশ ভালো করেছি। প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে তারা নিজেদের খেলাটা খেলতে পেরেছে। তবে জয়টা আমাদেরই প্রাপ্য ছিল। অবশ্য স্কোরলাইন দেখে জয় পাওয়াটা যত সহজ মনে হচ্ছে, ততটাও সহজ ছিল না।”
ট্রেবল জিতে এরই মধ্যে মৌসুমটা রাঙিয়েছে পিএসজি। এবার ক্লাব বিশ্বকাপটা জিতে মৌসুমের ইতি টানার ইচ্ছের কথাও জানিয়েছেন এনরিকে, “নিশ্চিতভাবেই আমরা ক্লাব ইতিহাসের সেরা মৌসুমটা কাটাচ্ছি। এখানেও কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেছি এরই মধ্যে, আমাদের এখন লক্ষ্য যতটা সামনে আগানো যায়। লম্বা মৌসুম হলেও ফুটবলারদের লড়াই করার মানসিকতা আছে।”
চলমান ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো যুক্তরাষ্ট্রে যেসব ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, শুরু থেকেই মাঠ ও মাঠের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খেলোয়াড় ও কোচরা। পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে তো মাঠগুলোকে তুলনা করেছেন খরগোশের সাথে। এসব অভিযোগ মেনে নিয়েছেন ফিফার গ্লোবাল ফুটবল ডেভেলপমেন্ট প্রধান ও আর্সেনালের সাবেক কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারও। তবে আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী বছর ফুটবল বিশ্বকাপের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের মাঠের উন্নতি করা হবে।
৩২ দলের এবারের ক্লাব বিশ্বকাপ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন কিছু ভেন্যুতে, যেখানে আগে আয়োজন হত অন্য খেলাও। স্বাভাবিকভাবেই এই মাঠগুলোতে ফুটবল ম্যাচ যখন হচ্ছে, তখন সেটা শীর্ষ মানের হচ্ছে না। বেশ কিছু ম্যাচের সময়ই দেখা গেছে, মাঠ ছিল অনেক শুকনো এবং বিরতিতে সেটা পানি ছিটিয়ে ভেজানো হচ্ছিল। এতে বিঘ্ন হচ্ছে খেলার মান, যা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে বেশ।
আরও পড়ুন
নিজেদের ‘দুর্বল’ মানলেও পিএসজিকে মরণকামড় দিতে চান মেসিদের কোচ |
![]() |
এই বিষয়টি নিয়ে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়েঙ্গার বলেন, মাঠের মান নিয়ে অভিযোগগুলো তারা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন।
“আমি নিজে অরল্যান্ডোর মাঠে গিয়েছি। এটা আসলেই ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো যেসব মাঠে খেলে, সেসব মাঠের মানের সমান নয়। তবে এটা এখন নিখুঁত না হলেও, (২০২৬) বিশ্বকাপের সময় তা ঠিক করা হবে।”
মাঠ নিয়ে সবার আগে অভিযোগ করেন এনরিকে। আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয়ের পর তিনি রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
“ফিফার এটা গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। শুধু স্টেডিয়ামের মাঠই নয়, অনুশীলনের মাঠগুলোর চিত্রটা একই। ম্যাচের সময় বলটা খরগোশের মতো লাফাচ্ছিল। যে মাঠে খেলাটা হয়েছে, সেটা আগে কৃত্রিম ছিল, আর এখন এটার ওপরেই প্রাকৃতিক ঘাস বিছানো হয়েছে। ফলে হাতে হাতে পানি দিতে হয়। আর এটা আমাদের স্বাভাবিক খেলার জন্য বড় সমস্যা। আমি কল্পনাও করতে পারি না যে, এনবিএ খেলোয়াড়রা গর্ত ভরা কোর্টে খেলছে!”
এসব অভিযোগের কারণে অনেকেই শঙ্কিত ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে, যা যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও হবে কানাডা ও মেক্সিকোতে। ক্লাব বিশ্বকাপকে এই টুর্নামেন্টের রিহার্সেল দেখা হলেও এখন পর্যন্ত সেটা জন্ম দিচ্ছে নানা বিতর্কের। তবে ওয়েঙ্গার ও ফিফার বার্তা থেকে ধারণা করা যায়, বিশ্বকাপের মঞ্চে মাঠের মান নিয়ে কোনো আপস করবেন না তারা।
এক দল ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে ইউরোপ সেরা হয়ে, আর অন্য দল আমন্ত্রিত হয়ে। নামে-ভারে, অর্জনে বা অভিজ্ঞতায় ইউরোপিয়ান জায়ান্ট পিএসজির সাথে তাই কোনো তুলনাই চলে না ইন্টার মায়ামির। শেষ ১৬-এর ম্যাচের আগে সেই বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন মেসি-সুয়ারেজদের কোচ হাভিয়ের মাসচেরানোও। তবে এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, মাঠের লড়াইয়ে ছেড়ে কথা বলবে না মায়ামি।
পিএসজি ক্লাব বিশ্বকাপে এসেছে ট্রেবল জিতে, যেখানে রয়েছে প্রথমবারের মত জেতা চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়। লুইস এনরিকের দল এই টুর্নামেন্ট প্রথম ম্যাচে স্প্যানিশ ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদকে উড়িয়ে দেয় ৪-০ গোলে। পরের ম্যাচে ধাক্কা খেলেও নকআউট পর্বে এসেছে ফেভারিট হিসেবেই। বিপরীতে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) দল মায়ামি গ্রুপ পর্ব পার করেছে টেনেটুনে।
আরও পড়ুন
‘সৌদি প্রো লিগ বিশ্বের শীর্ষ ৫ লিগের একটি’, বিশ্বাস রোনালদোর |
![]() |
তবে রোববার রাতের ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে মাসচেরানো বলেছেন, তাদেরও জয়ের সমান সুযোগই আছে।
“বিষয়টা তো পরিষ্কার, আর এমনও না যে আমরা এই ব্যাপারে অবগত নই। আমরা জানি যে এই ম্যাচে আমরাই দুর্বল দল, এটা স্পষ্ট। তবে এর মানে এই নয় যে আমাদের আগেই ছিটকে দেবেন। আমরা লড়াই করব, এটাই আসল ব্যাপার।”
এই ম্যাচে মায়ামির প্রতিপক্ষ পিএসজির হয়ে দুই মৌসুম খেলার অভিজ্ঞতা আছে মেসির। তবে ক্লাব ছাড়ার পর প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন যে, প্যারিসে তার সময়টা তার ভালো কাটেনি। সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে খেলা তাই আর্জেন্টাইন তারকার জন্য বাড়তি অনুপ্রেরণা তৈরি করবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন
ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন সবচেয়ে বাজে সিদ্ধান্ত : ক্লপ |
![]() |
তবে মাসচেরানো মনে করেন, আর দশটা ম্যাচের মতোই পিএসজির বিপক্ষেও সেরাটাই দেবেন মেসি।
“লিও সবচেয়ে শক্তিশালী বার্তা মুখে নয়, বরং মাঠে তার পারফরম্যান্স দিয়েই দেয়। আর সেটা দিয়েই তিনি আমাদের এতদূর নিয়ে এসেছেন। (গ্রুপ পর্বের) শেষ ম্যাচে পালমেইরাসের বিপক্ষে তিনি শারীরিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন এবং ৯৫ মিনিটই দুর্দান্ত খেলেছেন। আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল লিও ভালো আছে এবং সে আমাদের দলের হয়ে খেলছে। দল হিসেবে এটা আমাদের অনেক স্বস্তি দেয়।”
৬ দিন আগে
৬ দিন আগে
৬ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২৯ দিন আগে
২৯ দিন আগে
২৯ দিন আগে
২৯ দিন আগে
২৯ দিন আগে