১২ অক্টোবর ২০২৪, ৫:৩০ পিএম
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগে তো বটেই, এরপরও একটা লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠে নামত স্রেফ লড়াই করার লক্ষ্যে। বিশেষ করে শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। বহুজাতিক টুর্নামেন্ট বা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে সব হারিয়ে শেষ ম্যাচে একটা জয়ের দিকে চোখ থাকত বাংলাদেশের। তবে এই ২০২৪ সালে এসে সেসব দিন ধূসর অতীত হয়ে গেছে বলেই মানেন অনেকেই। ভারত সফরে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের পারফরম্যান্স অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই দিনগুলোকে। সব ম্যাচে স্রেফ উড়ে গিয়ে শেষ ম্যাচটা জয় দিয়ে রাঙ্গানোর একটা প্রচেষ্টা চালাতেই যে সব মনোযোগ এখন বাংলাদেশের।
অথচ পাকিস্তানকে তাদেরই মাঠে টেস্ট সিরিজের ধবলধোলাই করে উড়ন্ত ফর্মে থেকেই ভারতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাটিতে ভারত সবার জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও অন্তত আশা ছিল, ছন্দ ধরে রেখে চোখে চোখ রেখে লড়াই করবে বাংলাদেশ, হারার আগে হার মেনে নেবে না। তবে টেস্ট সিরিজে প্রথম দিনের দুটি সেশন বাদে প্রতিটিতে রোহিত শর্মার দল দেখিয়ে দেয় বাংলাদেশের সাথে তাদের পার্থক্য। দ্বিতীয় টেস্টে তো দুই দিনেরও কম সময় নিয়েই ম্যাচ জিতে যায় স্বাগতিকরা।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারত দল সাজায় একঝাক তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে। সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হার্দিক পান্ডিয়া। প্রায় দ্বিতীয় সারির সেই দলের বিপক্ষেও লড়াই জমাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রথম ম্যাচে টেনেটুনে মাত্র ১২৭ রান করার পর হেরে যায় ৭ উইকেটে, যেই রান তাড়া করতে ভারতের দরকার হয় স্রেফ ১১.৫ ওভার।
দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে রান পাহাড়ে চড়ে ভারত দাঁড় করে ২২১ রান। সিরিজের প্রথম ম্যাচের পর অধিনায়ক শান্ত স্পষ্ট বলে দেন, ১৮০ রান কীভাবে করতে হয়ে সেটা তারা জানেন না। কাপ্তান যখন এমন স্বীকারোক্তি দেন, তার মানে পুরো দলের মনোভাবও একই। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। হারার আগেই হেরে যাওয়া বাংলাদেশ ঝুঁকে সম্মানজনক পরাজয়ের দিকে। যেখানে জেতার সামান্যতম চেষ্টা না করে শুরু থেকেই চলেছে হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা। সেই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়ে এই সিরিজ দিয়ে অবসরে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ খেলেন ৩৯ বলে ৪১ রানের এক ওয়ানডে ইনিংস, যা দলের কোনো কাজেই আসেনি।
প্রথম ম্যাচে নিজেদের ইনিংস শেষের পরই বাংলাদেশ দলের শারীরিক ভাষা ছিল ভীষণ দুর্বল। ১২৭ রান ডিফেন্ড করার আশা নেই যেন তারা বোলিং করতে নেমেছিলেন। আর দ্বিতীয় ম্যাচের চিত্রটাও তো একই। দুটি টেস্টের পর দুটি টি-টোয়েন্টিতে এমন বেহাল দশা হওয়ার পর সফরের শেষ ম্যাচে জয়ের আশা করাটা তাই বাড়াবাড়ি মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। সব হারিয়ে একটা ম্যাচ জিতে বাড়ি ফেরার উপলক্ষ্য হবে তখন একটা স্বান্তনার জয়। নাকি স্বস্তিরও?
এমনটা বলার কারণ সফর জুড়ে বাংলাদেশের ভঙ্গুর ক্রিকেট প্রদর্শনী। পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রবল যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভারতে পা রেখেছিল বাংলাদেশ, তখন নজর ছিল প্রতিটি ম্যাচে জয়ের দিকে। অথচ চারটি ম্যাচে খড়কুটোর মত উড়ে গিয়ে এখন দুই ফরম্যাটেই ধবলধোলাই হওয়ার পথে শান্তর দল। চারদিক থেকে তাই ধেয়ে আসছে সমালোচনা। ফলে শেষ ভালো যার, সব ভালো তার - এই রীতি মেনে একটা জয়ের যদি দেখা মেলে, কিছুটা হলেও ক্ষত প্রলেপ দেওয়া সম্ভব হবে।
তবে বাস্তবতা বলছে, এই বাংলাদেশ দলের পক্ষে জেতাটাও যে ভীষণ কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কিলের চেয়ে যা অনেক বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে মানসিকতার ব্যাপার, যেখানে আধুনিক সময়ে এসেও ১০-১৫ বছর আগের ২০ ওভারের ক্রিকেটের মানসিকতা নিয়ে খেলতে চান খেলোয়াড়রা। ভারত সফরের শেষ ম্যাচটা তাই হতে পারে নতুন শুরুর একটা বার্তা দেওয়ার। বাংলাদেশ কী সটা করতে পারবে? জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আর কয়েকটি ঘণ্টা।
বাংলাদেশ ও ভারতের তৃতীয় ম্যাচটি দেখতে চোখ রাখুন টি-স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
৫ দিন আগে
৮ দিন আগে
১৯ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২০ দিন আগে
২১ দিন আগে
২২ দিন আগে