ক্রিকেটীয় লড়াইয়ে উত্তাপ ছড়াতে আরেকবার মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপ, ত্রিদেশীয় কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সর্বোচ্চ চূড়া দেখানো দুই দল এবার মাঠে নামছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। যাদের লড়াই এখন শুধুই ক্রিকেট মাঠ ছাপিয়ে ছড়িয়ে গেছে মাঠের বাইরে, দুই দেশের অসংখ্যা ক্রিকেট ভক্তদের আড্ডায়, চায়ের কাপে।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটিই বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। বলা যায়, সুপার এইটে খেলার সম্ভাবনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচও। শ্রীলঙ্কার জন্য এই সত্য আরও বেশি প্রকট। নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারের পর এটি তাদের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত কয়েক বছরে এই বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচে কম নাটকীয়তা হয়নি। নাগিন ড্যান্স থেকে শুরু করে টাইমড আউটও হয়ে উঠেছে এক উদযাপনের নাম। এই সবকিছুই মাঠের বাইরের দর্শকদের মধ্যে বাড়তি উত্তেজনা ছড়ায়। তবে শুধু ক্রিকেটীয় লড়াইয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলেও এই ম্যাচ দুই দলের জন্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। কিন্তু কেন?
আরও পড়ুন: বারেল্লাকে নিয়েই ইতালির ইউরোর স্কোয়াড ঘোষণা
তুলনামূলক কঠিন গ্রুপেই খেলতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা সহ তিনটা দেশই টেস্ট খেলুড়ে। এছাড়া গ্রুপের বাকি দুই দল নেদারল্যান্ডও ও নেপাল। আর সুপার এইটে খেলতে হলে তিনটা ম্যাচ জেতা নিরাপদ ধরা যেতে পারে।
ফলে শ্রীলঙ্কার সাথে প্রথম ম্যাচে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবতে চাইবেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এই ম্যাচ জিতলে নিজেদের হারিয়ে ফেলা আত্মবিশ্বাস যেমন খুঁজে পাওয়া যাবে, তেমনি সমীকরণের মারপ্যাঁচেও অনেকটাই এগিয়ে যাবেন শান্তরা।
এই ম্যাচের গুরুত্ব জানলে, মানলেও ম্যাচটাকে আলাদা ভাবে দেখতে চান না বাংলাদেশের অধিনায়ক। “ব্যক্তিগতভাবে ম্যাচটাকে আলাদাভাবে দেখতে চাই না। অবশ্যই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, আমরা সবাই সেটা জানি। তবে সেসব খুব বেশি না ভেবে আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, যে পরিকল্পনা করেছি সেদিকেই বেশি নজর দিতে চাই।“
এটাও ঠিক যে, শান্তদের এগিয়ে যেতে হবে ম্যাচ ধরে ধরে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ক্রিকেটে নেদারল্যান্ডস কিংবা নেপালকে সহজ প্রতিপক্ষ ভাবারও কোনো কারণ নেই। গতকাল রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাকিস্তানের হারও বলছে সেই কথাই। তবে ওই যে আত্মবিশ্বাস, যেটা হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে শ্রীলঙ্কাকে হারালেই।
সেটাই হয়তো কাজে লাগবে গ্রুপ পর্বের পরের তিন ম্যাচে। যার একটি খেলতে হবে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও। ফলে মুখে না বললেও, কাগজে কলমে না হলেও এই ম্যাচ যে বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই বাঁচা-মরার লড়াই সেটা বললে খুব বেশি ভুল হবে না।
এছাড়া বিশ্বকাপের আমেজটা আরেকটু বাড়াতেও ভূমিকা রাখতে পারে এশিয়ার দুই দলের এই লড়াই। কেননা বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা মাঠে নামা মানে তো আর শুধু ক্রিকেটের লড়াই নয়। এই লড়াই থাকবে মাঠের বাইরে, কোনো বিশেষ উদযাপনে, ক্রিকেটারদের শরীরি ভাষায় কিংবা ঢাকা-কলম্বোয় ভোর বেলায় ঘুম থেকে ওঠা চোখ গুলোতেও।
১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৬:৪৩ পিএম
ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২৯ রানে হেরেছে পাকিস্তান । ৭ ওভারের ম্যাচে প্রায় অলআউটই হয়ে যাচ্ছিল রিজওয়ানের দল। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৬৪ রানে থামে তারা।
বৃষ্টির কারণে ২০ ওভারের ম্যাচটি নেমে আসে ৭ ওভারে। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়া শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভারেই তোলে ১৬ রান। পরের ওভারে নাসিম শাহর ওভারে আরও ১৭। পুরোদমে ঝড়ো ইনিংস চলছিল দলটার। তবে ৩ ওভারের মাঝেই ২ ওপেনারকে ফেরান হারিস রউফ ও নাসিম শাহ।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে পাকিস্তান দলে বাবর-শাহিন-নাসিম |
এরপর কাজের কাজটা মূলত করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৫ টি চার ও ৩ টি ছক্কায় ১৯ বলে খেলেন ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। তাকে সঙ্গ মার্কাস স্টোইনিস। ৭ বলে করেন ২১। ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বোর্ডে ওঠে ৯৩ রান।
৪২ বলে ৯৪ রানের লক্ষ্যটা পাকিস্তানের জন্য হয়ে পড়ে কঠিন। একের পর এক উইকেট হারিয়ে রিজওয়ানরা পড়েন আরো চাপে। পাকিস্তানের ইনিংসে হাসিবুল্লাহ খানের ১২, আব্বাস আফ্রিদির ২০ ও শাহিন শাহ আফ্রিদির ১১ ছাড়া বাকি সবার রান এক অঙ্কের ঘরে।
৭ ওভারেই ৯ উইকেট হারিয়ে দল থামে ৬৪ রানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬টি উইকেট নেন দুই পেসার জাভিয়ের বার্টলেট ও নাথান এলিস। অ্যাডাম জ্যাম্পা ২ টি ও স্পেন্সার জনসন নেন ১ টি উইকেট।
আরও পড়ুন
শাহিন-নাসিম-রউফ তোপে উড়ে গেল অস্ট্রেলিয়া, সিরিজ জয় পাকিস্তানের |
২৯ রানের এই জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০–তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া বনাম পাকিস্তান
অস্ট্রেলিয়া: ৯৪/৪ (৭); (গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৪৩(১৯), মার্কাস স্টয়নিস ২১(৭)
আব্বাস আফ্রিদি ২/৯, হারিস রউফ ১/২১)
পাকিস্তান: ৬৪/৯ (৭); আব্বাস আফ্রিদি ২০*(১০), হাসিবউল্লাহ খান ১২(৮)
নাথান অ্যালিস ৩/৯, জাভিয়ের বার্টলেট ৩/১৩
পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এবছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের অধীনে এই ট্রফি ঘুরবে একাধিক দেশ। যেখানে থাকবে বাংলাদেশও।
এর আগে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় একাধিক ট্রফি এসেছে ক্রিকেট জনপ্রিয়তার বাংলাদেশে। এবারও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি আসবে বাংলাদেশে।
১০ ডিসেম্বর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আসবে ঢাকায়। থাকার কথা তিন দিন। ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বাংলাদেশে থেকে ঘুরবে ঢাকা আর কক্সবাজার। বিসিবি সূত্র নিশ্চিত করেছে টি-স্পোর্টসকে।
৮ বছর পর মাঠে গড়াবে চ্যাম্পিয়নস লিগ। এর আগে সবশেষ ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই টুর্নামেন্ট, যেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান।