কুড়িতেই বুড়ি - পুরনো এই প্রবাদ মিথ্যা হয়েছে অনেক আগেই। নারীরা এখন ৩৩ বছর বয়সে এসেও নতুন জীবন শুরু করে। ক্যারিয়ার গড়ে ভিন্ন ভিন্ন পেশায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকও এই সময়ে এসে। এই যেমন ভারতের নারী ক্রিকেট দলের আশা শোভানা, ৩৩ বছর বয়সে এসে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে। এক যুগের বেশি সাধনায় এসেছেন এই জায়গায়, সতীর্থদের কাছ থেকে বাহবা, উৎসাহ সবই তাই তিনি পাচ্ছেন সমানতালে। তিনি যে সবার কাছেই এক অনুপ্রেরণার গল্প।
শোভানা বয়স ক্যালেন্ডারে ৩৩ পার করেছেন ৫৩ দিন আগেই৷ ভারতীয় নারী দলের তার চেয়ে বেশি বয়সে আর কেউই খেলেননি। এমনকি ৩২ এর আশেপাশেও নেই কেউ। আর সেটা না হওয়াটাই স্বাভাবিক। খোদ ছেলেদের খেলাতেও তো এই বয়সটাকে দেখা হয় শেষের শুরু হিসেবে।
শোভানার ঘরোয়া ক্রিকেটে শুরু ২৪ বছর বয়সে, ২০০৬ সালে। ২০১২ সাল ভারতীয় ক্রিকেটের রাডারে আসা। তবুও এক যুগ পরে অভিষেক। মাঝে কেবলই সাধনা। ১৬ বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটে শুরু করলেও অভিষেক হতে হতে পার হয়ে গেল ত্রিশ বছর।
শোভানা কেরালার মানচিত্রও বেশ উপরে নিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেটে। তিনি সহ গেলো এক বছরে তিন কেরালা ক্রিকেটারের অভিষেক হয়েছে ভারতীয় নারী ক্রিকেটে। এর আগে ছিলনা এই তালিকায় ছিলেন না একজনও।
শোভানার অভিষেক হয়েছিল স্বপ্নের মতোই। সিলেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে চলমান সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে পাঁচ নম্বর বোলার হিসেবে আসেন আক্রমণে। নিজের প্রথম উইকেটের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে কেবল ছয় বল। ফিরিয়েছেন প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়ক ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার নিগার সুলতানা জ্যোতিকে।
পরে পেয়েছেন আরেক উইকেটও। ১৪ ওভারে নেমে আসে ম্যাচে ৩ ওভারে দিয়েছেন ৬ ইকোনমিতে ১৮ রান। সঙ্গে ১০ ডট বল।
সদ্য শেষ হওয়া নারী আইপিএলে নজর কাড়েন শোভানা। রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জেতেন শিরোপা। নারী আইপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও ছিলেন তিনি। নামের পাশে ছিল ১২ উইকেট। ইকোনমি মাত্র ৭.১১। প্রতি ১৩ বলে পেয়েছিলেন একটা করে উইকেট।
কেরালা হয়ে আজকের এই সিলেট। লড়ে গেছেন আশা, মিলে গেছে ফল। নামের মতো নিজেই হয়ে উঠছেন লেগ স্পিনে বড় এক আশা। সুনিল গঙ্গোপাধ্যায়কে ৩৩ বছর কাটিয়ে কেউ কথা না রাখলেও আশা কথা রেখেছেন। 'কখনো হাল ছেড়ে না...' বলে ৩৩ বছরে অভিষেকে নতুন শুরু। এ কি আর চাট্টিখানি কথা?