একটা টেস্ট ম্যাচের ৫ দিনের হিসেব করলে সেখানে থাকে ১৫টি সেশন। বাংলাদেশ ও ভারতের কানপুর টেস্টের পাঁচদিন মিলিয়ে শেষ হয়নি পাঁচ সেশনও, অথচ এর মধ্যেই বের হয়ে গেছে ফলাফলও। প্রায় নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া ম্যাচে পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ আরও একবার মুখ থুবড়ে পড়ল। তাতে যা হওয়ার তাই হয়েছে, দিনের প্রায় অর্ধেক খেলা বাকি থাকতেই নাটকীয়ভাবে ম্যাচ ও সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করল রোহিত শর্মার দল।
কানপুরের গ্রিন পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে বাংলাদেশ হেরে গেছে ৭ উইকেটে। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে ভারতকে টার্গেট দিয়েছিল মাত্র ৯৫, যা স্বাগতিকরা টপকে গেছে হেসেখেলেই। সিরিজে ভারত তাতে জিতেছে ২-০ ব্যবধানে।
প্রথম দিনের ৩৫ ওভারের পর এই টেস্টে ফের বল মাঠে গড়িয়েছিল চতুর্থ দিন। তাতে বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে গুটিয়ে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান করে ৫২ রানের লিডে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় ভারত। দ্বিতীয় দফায় ২ উইকেটে ৩৬ রান নিয়ে দিন শেষ করা বাংলাদেশের সামনে পঞ্চম দিনে লক্ষ্য ছিল একটাই, যতোটা সম্ভব ইনিংস লম্বা করা এবং সুযোগ বুঝে লিডটাও বাড়ানো, যাতে ম্যাচ ড্রয়ের একটা আশা বেঁচে থাকে।
তবে আগেরদিন দুই উইকেট নেওয়া রবিচন্দন অশ্বিন শুরুতেই আঘাত হানেন। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হককে মাত্র ২ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন অভিজ্ঞ এই স্পিনার। তবে বড় বিস্ময়ের জন্ম দিয়ে আউট হন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
ভারতের মাটিতে টেস্টে অন্যতম সেরা স্পিনার হিসেবে বিবেচিত রবীন্দ্র জাদেজাকে পঞ্চম দিনে সামাল দেওয়া এমনিতেই ভীষণ কঠিন কাজ, সেখানে বাংলাদেশ অধিনায়ক কিনা তাকে সেট না হয়েই খেলতে চাইলেন রিভার্স সুইপ। ফলাফল, ক্লিন বোল্ড।
একপ্রান্ত আগলে আশা ধরে রেখেছিলেন দারুণ এক ফিফটি করা ওপেনার সাদমান ইসলাম। তবে পঞ্চাশের পরপরই তিনিও ফেরেন্স সাকঘরে। বাংলাদেশের বিপদ বাড়িয়ে টানা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যর্থ হন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। ৯৪ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশের একমাত্র আশা তখন মুশফিকুর রহিম।
৭ চারে ৩৭ রানের ইনিংসে তিনি লিড একশ পার করান। তবে শেষের দিকের ব্যাটারদের কাছ থেকে পাননি সমর্থন। তবে নিজে শেষ ব্যাটার হিসেবে যেভাবে আউট হয়েছেন, সেটা ফুটিয়ে তোলে পুরো দলের ব্যাটিংয়ের ভঙ্গুর চিত্র। লাঞ্চের আগের শেষ বলে জাসপ্রিত বুমরাহকে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হন বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার।
দুই সেশনে ৯৫ রান ভারতের জন্য মামুলি ব্যাপারই। হয়েছেও তাই। রোহিত শর্মা ও শুবমান গিলকে মেহেদি হাসান মিরাজ অল্পেই ফেরালেও টানা দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি তুলে জয়ের কাজটা সহজ করে দেন ওপেনার ইয়াশাশভি জয়সওয়াল। ৫১ রানে তাকে যখন তাইজুল ইসলাম আউট করেন, ভারত জয় থেকে তখন মাত্র তিন রান দূরে। আনুষ্ঠানিকতা সারেন বিরাট কোহলি (২৯*) ও রিশাভ পন্ত (৪*)।