১০ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:০৭ পিএম
আল হিলালে নেইমারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঘুরেফিরে আলোচনায় আসছে তার ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা। সম্প্রতি সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেইমার নিজেও আভাস দিয়েছেন লিওনেল মেসির দলে যোগ দেওয়ার। যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাবটিতে গেলে তিনি আরও পাবেন পুরনো বন্ধু লুইস সুয়ারেজকেও। দুজনের সাথে আরও একবার খেলার ইচ্ছাটা যেমন তার রয়েছে, একই চাওয়া উরুগুয়ের অভিজ্ঞ স্ট্রাইকারেরও। তবে কাজটা মোটেও সহজ নয়, সেটাই মনে হচ্ছে মায়ামি কোচ হাভিয়ের মাসচেরানোর।
আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি পর্ব শুরু করবে মায়ামি। অন্যদিকে নেইমার আছে চোট কাটিয়ে আল হিলালের জার্সিতে ফেরার অপেক্ষায়। তবে চলতি মৌসুম শেষেই সৌদি ক্লাবটির সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে সাবেক বার্সেলোনা ফুটবলারের। তার মধ্যেই নেইমার ইঙ্গিত দিয়েছেন আবারও মেসি, সুয়ারেজদের সাথে একসঙ্গে খেলার।
আরও পড়ুন
ভিনি আরও বড় শাস্তি পাবেন, আশায় ছিলেন বার্সা ডিফেন্ডার |
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নেইমারের সুরে তাল মিলিয়েছেন সুয়ারেজও। “সবাই জানে আমরা যখন একসাথে ছিলাম তখন কী করেছিলাম। এখানে আসলে সে দলকে যা দিতে পারে, তাতে আমাদের উপর প্রত্যাশাটা আরও বাড়বে।”
নেইমারের সেই সাক্ষাৎকারের পর সমর্থকরাও নতুন করে স্বপ্ন দেখছে এমএসএন ত্রয়ীকে একসাথে দেখার। যদিও বাস্তবতার বিচারে সেটা যে সম্ভব না তাই মনে করিয়ে দিয়েছেন মায়ামি কোচ মাচেরানো। “নেইমার দুর্দান্ত একজন ফুটবলার, বিশ্বের যে কোনো কোচই তাকে দলে পাইতে চাইবে। তবে আমাদের বেতন কাঠামোর হিসেবটা মাথায় রাখতে হবে। সে হিসেবে তাকে দলে টানা এখন অসম্ভব। তাই এই নিয়ে কথা না বলাই ভালো।”
২০২৩ সালে অক্টোবরে চোটে পড়েছিলেন নেইমার। এক বছরের বেশি সময় পর গেল অক্টোবরে ফিরলেও দুই ম্যাচ খেলে আবারও ছিটকে গেছেন। আছেন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায়। তবে কবে নাগাদ মাঠে ফিরতে পারবেন, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫:০৩ পিএম
সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী দলের ফুটবলারদের একটা অংশ বর্তমান কোচ পিটার বাটলারের অধীনে খেলতে না চাওয়াকে কেন্দ্র করে একটা অচলাবস্থা এখনও বিদ্যামান। সাবিনা-সুমাইয়ারা নিজেদের গণ-অবসরের অবস্থানেই আছেন অনড়। সঙ্কট কাটাতে বাফুফে গড়েছে তদন্ত কমিটি। যার রিপোর্ট আসার কথা আগামী বৃহস্পতিবার। তার আগে বুধবার বাফুফেতে সংবাদ সম্মেলনে পাল্টা বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন বাটলার!
গত রোববার ও সোমবার নারী ফুটবলারদের সাথে বসে তদন্ত কমিটি। যেখানে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথাই তারা জানান। আর মঙ্গলবার কমিটি বসেছিল বাটলারের সাথে। ইংলিশ কোচ বদলাননি তার অবস্থান। বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে দল থেকে বাদ দেওয়ার তালিকাও নাকি কমিটিকে দিয়েছেন তিনি।
বুধবার বাফুফেতে সাংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন বাটলার। “কোনো সমঝোতা নয়। হয় ওই ফুটবলাররা থাকবেন, না হয় আমি। কয়েকজনের নাম দিয়েছি, সেই কয়েকজন থাকলে আমি কোচিং করাব না। নির্দিষ্ট কয়েকজন ফুটবলার অনুশীলনে যাচ্ছে না এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে এসব বন্ধ হওয়া দরকার।”
এরপর তিনি নারীদের শৃঙ্খলার ব্যাপারটাও তুলে ধরেন। “বাংলাদেশ দুইবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন। তবে কয়জন নারী বিদেশে লিগ খেলে? বিদেশি লিগে না থাকার কারণ শৃঙ্খলা। আমি ইংল্যান্ড থেকে এসেছি। তাই ফুটবল সংস্কৃতি কিভাবে চলে সে সম্পর্কে ধারণা আছে আমার। যেটা চলছে এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।”
গত সোমবার চাইনিজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় ডিপসিক চালু করার। তাতে যেন রাতারাতি ধসে পড়ে ওপেন এআইয়ে এতদিন ধরে একক আধিপত্য ধরে রাখা যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোম্পানি চ্যাটজিপিটিতে। তবে এর প্রভাবে ব্যবহারকারীরা উপকৃতই হচ্ছেন। ফুটবলের নানা তথ্য-উপাত্য পেতে দুটি ওয়েবসাইটই আপনাকে সাহায্য করার কথা। তবে ডিপসিক আসায় সবার সামনে একটা সুযোগ এসেছে দুটির মাঝে তুলনা টানার।
সর্বকালের সেরা ফুটবল একাদশ কোনটি, সেই প্রশ্ন করতে দুই ওয়েবসাইট থেকে মিলেছে প্রায় একই ধরনের উত্তর। সেরা একদশ বাছাইয়ে দুই ওয়েবসাইটে মিলেছে এক পরিবর্তন। তাও সেটা কেবল মিডফিল্ডে।
চ্যাটজিপিটি তাদের সেরা একাদশে মিডফিল্ডার হিসেবে জিনেদিন জিদান আর দিয়েগো ম্যারাডোনার পাশে রেখেছে ডাচ কিংবদন্তী ইয়োহান ক্রুইফকে। আর ডিপসিক তাদের অল টাইম গ্রেট একাদশে জিদান ও ম্যারাডোনার পাশে রেখেছেন স্পেন গ্রেট জাভি হার্নান্দেসকে।
এছাড়া দুই দলেই ফরোয়ার্ড লাইনটা রয়েছে একই রকম। রাইট উইংয়ে লিওনেল মেসি আর লেফট উইংয়ের জায়গাটা ক্রিস্তিয়ানোর রোনালদোর। সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড হিসেবে দুই জায়গায়ই রাখা হয়েছে কিংবদন্তি পেলেকে।
গোলপোস্টের জায়গাটা দুই ওয়েবসাইট বেছে নিয়েছে একমাত্র গোলকিপার হিসেবে ব্যালন ডি’অর জেতা লেভ ইয়াশিনকে। রাইট ব্যাক ও লেফট ব্যাকের জায়গাটা দুই ব্রাজিলিয়ানের। লেফট ব্যাক হিসেবে দুই ওয়েবসাইট বেছে নিয়েছে রবার্তো কার্লোসকে আর রাইট ব্যাক হিসেবে কাফুকে। সেন্টার ব্যাক হসেবে ইতালিয়ান ডিফেন্ডার পাওলো মালদিনি। তার সাথে অন্য ডিফেন্ডার জার্মান কিংবদন্তী ফ্রেঞ্জ বেকেনবেওয়ার।
চ্যাটজিপিটি সেরা একাদশ : ইয়াশিন, কাফু, বেকেনবেওয়ার, মালদিনি, রবের্তো কার্লোস, জিদান, ম্যারাডোনা, ক্রুইফ, মেসি, পেলে, (ক্রিস্তিয়ানো) রোনালদো।
ডিপসিক সেরা একাদশ : ইয়াশিন, কাফু, বেকেনবেওয়ার, মালদিনি, রবের্তো কার্লোস, জিদান, ম্যারাডোনা, জাভি, মেসি, পেলে, (ক্রিস্তিয়ানো) রোনালদো।
গত মৌসুম থেকে যেভাবে গুঞ্জন ভাসছিল বাতাসে, আগামী গ্রীষ্মেই রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেবেন বায়ার্ন মিউনিখ ডিফেন্ডার আলফোন্সো ডেভিস। আর সেটা ফ্রি এজেন্ট হিসেবে। তাতে স্প্যানিশ ক্লাবটির লেফট ব্যাক সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হবে বলেই আশায় ছিলেন সমর্থকরা। তবে তাদের সেই আশায় গুড়ে বালি দিয়ে কানাডিয়ান এই ডিফেন্ডার চুক্তি নবায়ন করেছেন বায়ার্নের সাথেই।
বুধবার বায়ার্নের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে ডেভিসের চুক্তি নবায়নের খবর। ২০৩০ পর্যন্ত বুন্দেসলিগার ক্লাবটির জার্সিতেই দেখা যাবে ডেভিসকে।
চুক্তি নিয়ে গেল এই মৌসুমের শুরু থেকেই দুই পক্ষের মাঝে চলছিল আলোচনা। বায়ার্নের পক্ষ থেকে বারবার প্রস্তাব দেওয়া হলেও ডেভিস সেটাকে সায় দেননি। তাতে গুঞ্জন চলছিল দল ছাড়ার দিকেই এগুচ্ছেন তিনি। ইএসপিএন সহ বেশ কিছু গণমাধ্যম জানিয়েছিল, পরবর্তী মৌসুমের ডেভিসের গন্তব্য হতে যাচ্ছে রিয়াল।
তবে জানুয়ারি মাস আসতেই বদলে যেতে থাকে চিত্র। লম্বা সময় ধরে প্রস্তাবে সায় না দেওয়া ডেভিসের মন গলতে শুরু করে। আর ফেব্রুয়ারিতে এসে তো রাজি হয়েছেন চুক্তি নবায়নে। তাতে ২৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডারকে দলে টানতে হলে রিয়ালকে এখন গুনতে হবে বড় অর্থই।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে ডেভিস যোগ দেন বায়ার্নে। তাই ক্লাবের প্রতি তার আছে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা।
“অসাধারণ এই ক্লাবের সাথে চুক্তি বাড়িয়ে নিতে পেরে আমি বেশ খুশি। ১৮ বছর বয়সে আমি এই ক্লাবে এসেছিলাম, শেখার জন্য, নিজের পজিশনে সেরা হবার জন্য। এখন আরও পাঁচ বছর একসাথে আমরা চলতে পারবো। অনেক কিছু ক্লাবের হয়ে জিতেছি, আরও অনেক কিছুই জেতার সুযোগ রয়েছে সামনে।”
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ডেভিস খেলেছেন ২৫ ম্যাচ। এক গোলের পাশাপাশি করেছেন তিন অ্যাসিস্ট।
বাবা হিমশিম খেতেন চার সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে। একবেলা পৌরসভায় মালির চাকরি, অন্যবেলায় এলাকার ক্লাবে কিট ম্যান। এতসবের মধ্যেও রোনালদোকে ফুটবলার বানাতে ছিল আপ্রাণ প্রয়াস। সেই বাবা আজকের রোনালদোকে দেখে যেতে পারেননি। যা নিয়ে দ্য গ্রেটের আক্ষেপের অন্ত নেই।
সালটা ১৯৮৫। মাদেইরাতে রোনালদো যখন মায়ের গর্ভে। ডাক্তার বলেছিলেন বাচ্চাটা রাখা মায়ের আর সন্তানের দুজনের জন্যেই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে মায়ের মন মানেনি কোন ভাবেই। হাজারো অনিশ্চয়তার ভীড়ে নিজের সন্তানকে জন্ম দেন ঠিকই। আর বিশ্ব পায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দস সান্তোস অ্যাভেইরোকে।
সেই দিনের একে একে কত বসন্ত পার হলো। আজকের ৫ ফেব্রুয়ারিতে সংখ্যাটা নাকি ৪০ হলো, রোনালদো? সত্যিই, এসব অবিশাস্য কিছুও বিশ্বাস করতে হয়? আমরা তো আজও সেই তরুণ রোনালদোকেই দেখি। যে গোল করে, গোল করায়। নিত্যনতুন উদযাপন করে দেখায়। আচ্ছা, সংখ্যাটাই স্রেফ বেড়েছে। নাহ বয়স কিন্তু আপনার বাড়ছে না রোনালদো। ওই বয়স নামক বস্তুটা আপনাকে ছুঁতেই পারেনা। তাইতো ওসব চল্লিশ টল্লিশ কেউ গোনে না, আপনার ১০০০ গোলের স্বপ্নে দিবারাত্রি বিভোর ভক্তরা।
মাদেইরায় সেদিন আপনার পরিবার আপনাকে পেয়ে কতটা খুশি হয়েছিল? পরিবারের সবচেয়ে ছোট্ট মেহমান হিসেবে তারা পেয়েছিল আপনাকে। ঘরে তো আরো সন্তান ছিল আপনি কি আলাদা ছিলেন তাদের থেকে? ছিলেন। আপনি তো আলাদাই, সেটা সেদিন কেউ না বুঝলেও আজ গোটা দুনিয়া জানে।
আমরা রোনালদোকে দেখি। রোনালদোর প্রাপ্তি দেখি। দেখি গোল, দেখি রেকর্ড। অথচ রোনালদোর অন্য একটা পাশ রয়েছে। যেখানে থাকে অপ্রাপ্তি নামক শব্দটাও। যেখানে থাকে বাবার সাথে মন খুলে কথা না বলতে পারার আফসোস।
বাবা মাঝে মাঝে স্কুল পরিষ্কারেরও কাজ করতেন। তার জন্য দিনের পর দিন বন্ধুদের থেকে শুনতে হতো খোঁটাও। রোনালদো সবই মনে রেখেছেন। পড়াশোনাটা যে তাকে দিয়ে হচ্ছে না তা বুঝে গিয়েছিলেন আগেই। তার ধ্যান জ্ঞ্যান ছিল ফুটবল, ঘুমোতেও জেতেন ফুটবল কোলে নিয়ে। তারপর একদিন সেই ফুটবলই তো দূর করল তার সব অভাব, দারিদ্র, দুঃখ, কষ্ট।
একদিন কি নিদারুণ অভাব-অনটন কাঁদিয়েছে আপনাকে। কষ্ট দিয়েছে, শিখিয়েছে শক্ত হতে। চার ভাই বোন মিলে বেড়ে উঠেছেন একটা কামরার মধ্যে। গাদাগাদি করে থাকা সেই রাতগুলো? আহ, কেউই দেখেনি সেই অন্ধকারে আপনার আলোয় ঝলমল করা চোখ জোড়াকে। মাদেইরার একটা ছোট্ট ঘর থেকে যে চোখ জোড়া স্বপ্ন দেখেছিল দুনিয়া শাসনের।
রোনালদো প্রায় অনেক ইন্টারভিউতেই আফসোস করে বলেন, নিজের পরিবারে তিনি হীরের টুকরো ছিলেন। বাবা অনেক প্রাউড ফিলও করতেন তাকে নিয়ে। তবে বাবার সাথে কখনও মন খুলে কথা বলা হয়নি। ২০০৫ এ চলে যাওয়া লোকটা এর পরের গল্পটা দেখেননি। তবে রোনালদোর বিশ্বাস, ওপার থেকে ঠিক দেখেন। দুনিয়া জয় করা রোনালদোর এ এক না শেষ হওয়া আক্ষেপের গল্প।
জন্মদিনে আমরা রোনালদোর রেকর্ড দেখি, গোল দেখি, সংখ্যার খেলায় মাতি। আজ নাহয় একটা ছোট্ট শহরের ছোট্ট ছেলের দুনিয়া জয়ের পর তার ভেতের থাকা আফসোসের উপাখ্যান জানলাম। রোনালদো আপনার সে আফসোস এ জগতের কেউই মেটাতে পারবে না। তবে জন্মদিনে একটা শুভেচ্ছাবার্তা রেখে বলতে চাই, আপনি আপনার পরিবারেরই না গোটা দুনিয়ার জলজল করা এক হীরের টুকরো। বয়সের ঘর কেউ মনে রাখবে না। আপনি রোনালদো। বয়স উপাখ্যানটা আপনার জন্য না।
ওই যে আপনি বলেন না, আপনার ভালোবাসা আমাকে শক্তিশালী করে, আপনার ঘৃণা আমাকে অপ্রতিরোধ্য করে।" এই কথার মতোই আপনি যেমন ওদের ঘৃণার কাছে অপ্রতিরোধ্য। তেমনি বয়সের কাছেও।
কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় আছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের ফুটবলাররা। তাদের মধ্যে অন্যতম সাফ জয়ী দলের সদস্য মাতসুশিমা সুমাইয়া এনেছেন গুরুতর অভিযোগ - সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি পাচ্ছেন হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি। এর প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। যারা এসব কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাবে দেশের ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা।
ঘটনার সুত্রপাত বাটলারের অধীনে আর খেলতে না চাওয়ার হুমকি দিয়ে জাতীয় দলের ১৮ ফুটবলারের দেওয়া এক চিঠিকে কেন্দ্র করে। ইংরেজিতে লেখা সেই চিঠিতে তারা বাফুফেকে সাফ জানিয়ে দেন, বাটলার কোচ থাকলে তারা আর জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন না। প্রয়োজনে নেবেন গণ অবসরও।
চিঠিটি ইংরেজিতে হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এটা কার লেখা বা কে খেলোয়াড়দের লিখে দিয়েছেন। সুমাইয়া জাপানে জন্ম নেওয়া ও সেখানেই বেড়ে ওঠায় ধারণা করা হচ্ছিল তিনিই লিখেছেন চিঠিটি। তিনি নিজেও পরে স্বীকার করেন যে, ওই চিঠিটি তারই লেখা।
পুরো বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মতের মাঝেই বিস্ফোরক এক খবর জানান সুমাইয়া। নিজের ফেসবুক পেজে বিশাল এক পোস্ট দিয়ে জানান, তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
“আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম মাতসুশিমা সুমাইয়া। আমি বাংলাদেশ মহিলা জাতীয় ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইন্টার স্কুলে খেলা থেকে শুরু করে মালদ্বীপে লীগ জেতা এবং বাংলাদেশের হয়ে সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ জেতা-এই যাত্রাটা আমার কাছে বিশ্রী ছিল। আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলাম ফুটবল খেলার জন্য, বিশ্বাস করেছিলাম যে আমার দেশ আমার পাশে থাকবে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কেউ সত্যিই চিন্তা করে না। আমার এবং দলের সহকর্মীদের জন্য আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়েছি, তা নিয়ে ইংরেজিতে চিঠি লেখার সর্বনিম্ন ক্ষমতা আমার আছে। কয়েকদিন ধরে, আমি অগণিত প্রাণহানি ও ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি শব্দগুলি আমাকে এমনভাবে ধ্বংস করেছে যা আমি কল্পনাও করিনি। আমি জানি না, এই আঘাত থেকে সারতে আমার কত সময় লাগবে, কিন্তু আমি জানি, যে কাউকে তাদের স্বপ্ন অনুসরণ করার জন্য এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে না।”
মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে বাফুফে এই ঘটনার নিন্দা জানায়। “বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাতসুশিমা সুমায়াকে লক্ষ্য করে হুমকি ও হয়রানির তীব্র নিন্দা জানায়। কোনও অ্যাথলেটেরই তার নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য এমন আচরণের মুখোমুখি হওয়া উচিত নয়। বাফুফে তার খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা দিতে এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে বাফুফে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার তাদের সেই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। চলমান এসব ঘটনার মধ্যেও বাটলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। অনুশীলনও করাচ্ছেন জুনিয়র ফুটবলারদের।