ছয় বছর আগে ছেড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ। দুই ক্লাব বদলে এখন আছেন আল নাসরে। তবে স্প্যানিশ ক্লাবটির প্রতি বরাবরই আলাদা দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে তার কণ্ঠে। এখানেই যে কাটিয়েছেন ক্যারিয়ারের সেরা সময়। ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে জিতেছেন বেশ কিছু বড় খেতাব। স্পেন ও ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাব রিয়ালকে অনেকেই মানেন সেরাদের সেরা হিসেবে। এবার বড় স্বীকৃতি দিলেন রোনালদোও। তার চোখে মাদ্রিদের ক্লাবটিই ইতিহাসের সেরা ক্লাব।
২০০৯ সালে সেই সময়ের রেকর্ড ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আরেক ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়ালে নাম লেখান রোনালদো। নয় বছরের অধ্যায়ে হয়েছেন ক্লাবটির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সহ মোট চারবার জিতেছেন এই শিরোপা। সাথে রয়েছে লা লিগা সহ আরও বেশ কিছু শিরোপা। রোনালদো ক্লাব ছাড়ার পর এখন পর্যন্ত দুই বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা রিয়াল সব মিলিয়ে এই শিরোপা জিতেছেন রেকর্ড ১৫ বার।
আরও পড়ুন: ৯০০ গোল হিমালয়ে রোনালদো
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সাবেক ইংল্যান্ড ডিফেন্ডার রিও ফার্দিনান্দের সাথে এক আলাপচারিতায় রোনালদো তুলে ধরেন রিয়ালের সফলতার রহস্য। “আমি রিয়াল মাদ্রিদকে ভালোবাসি। রিয়াল মাদ্রিদ ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ক্লাব। লোকেরা বলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদ ভাগ্যবান, তবে এটা ভাগ্যের ব্যাপার নয়। এটা তাদের মানসিকতার ব্যাপার। তারা এসব বড় মুহুর্তগুলির জন্যই প্রস্তুত থাকে।”
রিয়ালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এত সাফল্যের পেছনে বারবার খাঁদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর অবিশ্বাস্য শক্তি। যার সবচেয়ে বেশি নজির দেখা যায় ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। অসংখ্য হারা ম্যাচ রিয়াল এখানে জিতেছে শেষ মুহূর্তের ঝলক দেখিয়ে। প্রতিপক্ষের জন্য তাই রিয়ালের মাঠ থেকে বিজয়ীর বেশে ফেরাটা হয়ে দাঁড়ায় প্রায় অসম্ভব কাজ।
নিজে সেখানে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে রোনালদো মনে করেন, এই স্টেডিয়ামেরই আলাদা একটা আবহ আছে, যা গড়ে দেয় পার্থক্য। “সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে অন্যরকম একটা আবহ থাকে। বার্নাব্যুতে আলাদা একটা শক্তি আছে। অন্য যেকোনো স্টেডিয়াম থেকে এটা একেবারেই ভিন্ন। এখানে যখন একটি দল ৮৫ বা ৯০ মিনিটে একটা গোল করে, তখনও তাদের ওপরই চাপ থাকে।”
রিয়ালের আক্রমণে এখন আছেন রোনালদোকে আদর্শ মেনে বেড়ে ওঠা কিলিয়ান এমবাপে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। দুজনই আছেন এবারের ব্যালন ডি’অর জেতার লড়াইয়ে। রোনালদো তাদের পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য বলেছেন আরও কিছু নামও। “কিলিয়ান এমবাপে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ব্যালন ডি'অর জিততে পারে, সম্ভবত (আর্লিং) হলান্ড, জুড বেলিংহাম, ভিনিসিয়ুস আর লামিন ইয়ামালও।”
রোনালদোর সাথে কিলিয়ান এমবাপের গল্পটা বহু আগের। পর্তুগাল অধিনায়ককে আইডল মেনেই তো ফুটবলে হাঁটা শুরু এমবাপের। তার দেখানো পথ ধরেই তো এমবাপে খুঁটি গেড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে। তবে ফরাসি অধিনায়ক রোনালদোর বিপক্ষে খেললেও কখনো খেলা হয়নি একসাথে। যা নিয়ে তার আছে কিছুটা আক্ষেপ।
পিএসজিতে লিওনেল মেসি নেইমারদের মতো তারকাদের সাথে ড্রেসিংরুম শেয়ার করেছেন এমবাপে। তবে রোনালদোর সাথে মেলেনি তেমন সুযোগ। বেশ কয়েকবার দুজন একে অপরের মুখোমুখি হলেও একসাথে খেলা হয়নি দুজনের। সম্প্রতি বেইন স্পোর্টসের সাথে সাক্ষাৎকারে রোনালদোর সাথে খেলতে না পারার আক্ষেপটাই তুলে ধরেছেন এমবাপে।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপের পর মেসিকে দেখেই মেজাজ হারিয়েছিলেন এমবাপে! |
“আমি অনেক বড় তারকাদের সাথে খেলেছি। সেই তালিকায় আছেন, লিওনেল মেসি, নেইমার, গ্রিজমান, পগবা, বেনজেমা। রোনালদোর সঙ্গে খেলতে পারলে ব্যাপারটা দারুণ হতো, যা এখন বেশ কঠিন। তবে আমার সৌভাগ্য যে আমি তার মতো একজন কিংবদন্তীর বিপক্ষে খেলতে পেরেছি।”
৩৯ বছর বয়সী রোনালদো বর্তমানে খেলছেন সৌদি ক্লাব আল নাসরে। অন্যদিকে চলতি মৌসুমে এমবাপে যোগ দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে। যেটা তার স্বপ্নের ক্লাব। বেইন স্পোর্টসের সাথে সাক্ষাৎকারে এমবাপে জানান দিয়েছেন রিয়ালের প্রতি তার ভালোবাসার কথা।
“আমি বিশ্বের সেরা ক্লাবে যোগ দিয়েছি। সবসময়ই বলেছি রিয়াল মাদ্রিদই একমাত্র ক্লাব যার জন্য আমি পিএসজি ছাড়তে পারি। রিয়ালে না আসলে হয়তো পুরো ক্যারিয়ার পিএসজিতেই কাটাতাম। আমার সবসময়ই স্বপ্ন ছিল এই ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করার এবং আমি খুবই খুশি এখানে আসতে পেরে।”
স্বপ্নের ক্লাবে যোগ দিলেও এমবাপের শুরুটা হয়েছে ভুলে যাওয়ার মতই। মাঠের পারফরম্যান্সে নিয়মিতই সমালোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে ২৬ বছর বয়সী এই তারকাকে। অবশ্য ধীরে ধীরে এমবাপে মানিয়ে নিচ্ছেন রিয়ালে। শেষ ম্যাচে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের ফাইনালে পাচুকার বিপক্ষেও পেয়েছেন গোলের দেখা। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে ২২ ম্যাচে ১২ গোলের পাশাপাশি করেছেন দুই অ্যাসিস্ট।
আরও পড়ুন
পিএসজি চ্যাম্পিয়ন লিগ জিতুক, তা আর দেখতে চান না এমবাপে |
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রান্সফার আপডেট দরকার? ঢু মেরে ফাব্রিজিও রোমানোর আইডিতে একটু ঘুরে আসলেই তো কাজ হয়ে যায়! ইতালিয়ান সাংবাদিক রীতিমত বিশ্বজুড়ে ফুটবল দলবদলের মাস্টার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। রোমানো অবশ্য এক ক্লাব থেকে অন্য ক্লাবে ফুটবলারদের দবদলের খবর নিশ্চিত করে বিখ্যাত। তবে এবার একটু ভিন্নরকমের ‘দলবদলের’ খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন রোমানো। হামজা চৌধুরির বাংলাদেশের হয়ে খেলার খবরটা পোস্ট করা হয়েছে তার পেইজ থেকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হামজা চৌধুরী ছাড়পত্র পেয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে খেলার। তারপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশি সমর্থকদের আগ্রহের কেন্দ্রে চলে গেছেন হামজা। শুধুমাত্র অবশ্য বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়েই খবর হয়েছে হামজার বাংলাদেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত। এবার সেই যাত্রায় যোগ হয়ে ইতালিয়ান সাংবাদিক ফাব্রিজিও রোমানো উন্মাদনা বাড়িয়ে দিয়েছেন আরও।
আরও পড়ুন
সমর্থকদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হামজা |
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের পতাকা হাতে হামজার ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন,
“ লেস্টার সিটি মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
লম্বা সময় ধরেই হামজাকে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। নানা জটিলতা কাটিয়ে সোমবার মিটেছে সব ঝামেলা। তাতে বাংলাদেশি সমর্থকরা যেন উৎফুল্ল, তেমন হামজা চৌধুরীও। এক ভিডিও বার্তায় লেস্টার সিটি মিডফিল্ডার বাংলাদেশি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন,
“আমার তর সইছে না বাংলাদেশের হয়ে খেলতে। সবার সাথে খুব শীঘ্রই দেখা হবে।”
রোমানোর পোস্টে বাংলাদেশের পতাকা হাতে হামজাকে দেখে বেশ আনন্দিতই হয়েছেন বাংলাদশের সমর্থকেরা। একের পর এক মন্তব্যও পড়ছে কমেন্ট বক্সে। আর সেই পোস্টের রিচ ক্রমেই বাড়ছে, ছাড়িয়ে যাচ্ছে রোমানোর নিয়মিত পোস্টগুলোর রিচও।
অবশ্য এর সঙ্গে দ্রুতই মানিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশি সমর্থকদের, বাংলাদেশের ফুটবল তো এখন হামজার কল্যাণে রাতারাতি অনেকেরই আগ্রহে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসকে কখনো হারাতে পারেনি আবাহনী। শুক্রবার সেই ধারাটা ভেঙেছে আবাহনী। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের ১-০ গোলে হারিয়েছি আবাহনী। অন্যদিকে দিনের অন্য ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ এফসির বিরুদ্ধে ৩-১ গোলের জয় তুলে নিয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
শুক্রবার ম্যাচের দুই মিনিটের মাথায়ই আবাহনীকে এগিয়ে দেন সাবেক কিংস ফুটবলার সুমন রেজা। যেখানে বড় কৃতিত্ব শাহরিয়ার ইমনের। লেফট উইং থেকে তার করা দারুণ এক ক্রস থেকে লাফিয়ে উঠে হেডে বল জালে জড়ান সুমন রেজা। ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়া কিংস এরপর বাড়ার আক্রমণের ধার। তাতে অবশ্য সফলতা মেলেনি। আবাহনীও সময়ে সময়ে উঠে এসেছে আক্রমণে, তবে গোলের দেখা মেলেনি কারোরই। তাতে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আবাহনী।
বিরতি থেকে ফিরেও বসুন্ধরা বলের দখল রেখে চাপ তৈরি করার চেষ্টা চালায়। ম্যাচের ৫১ মিনিটে তাদের সামনে আসে ম্যাচে ফেরার সুযোগ। ডি বক্সের ভেতর বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হাত ছুঁয়ে যায় আবাহনী অধিনায়ক মোহাম্মদ হৃদয়ের। রেফারি সাথে সাথেই বাজান পেনাল্টির বাঁশি। তবে স্পট কিক থেকে বল জালে জড়াতে পারেননি কিংস অধিনায়ক মিগেল দামাসিনো। মিতুল মারমা দারুণভাবে ঝাপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন তার নেওয়া পেনাল্টি।
আরও পড়ুন
ফেডারেশন কাপেও বসুন্ধরা কিংসের জয়, পয়েন্ট ভাগাভাগি ফর্টিস-পুলিসের |
শেষ পর্যন্ত দুই দল আক্রমণ-প্রতিআক্রমণ চালিয়ে গেলেও গোলের দেখা মেলেনি কারোরই। তাতে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে উঠে এসেছে আকাশী-নীলরা। ৪ ম্যাচে তিন জয় আর এক হারে আবাহনীর পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ৯।
দিনের অন্য ম্যাচে মোহামেডান পুলিশকে হারিয়েছে হেসে-খেলে। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে তারা জয় তুলে নিয়েছে ৩-১ গোলের ব্যবধানে। ম্যাচের ৩১ মিনিটে ইমানুয়েল টনির গোলে লিড পায় মোহামেডান। মিনিট দশেক বাদে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সানডে ইমানুয়েল। বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে পুলিশের হয়ে ব্যবধান কমান মোহাম্মদ আল আমিন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে পুলিশ আর পাত্তা পায়নি মোহামেডানের কাছে। ৭৩ মিনিটে তারা দেখা পায় তিন নম্বর গোলের। শেষ গোলটা আসে সোলাইমান দিয়াবাতের পা থেকে।
টানা চার জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটা মজবুত করেছে মোহামেডান।
লম্বা অপেক্ষার পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের হয়ে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছেন হামজা চৌধুরী। হামজার আগমণের বার্তায় দেশের ফুটবল যেন নতুন করে জেগে উঠেছে। সেই সাথে হামজার মতো বিভিন্ন লিগে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরও প্রবাসী ফুটবলারদের জাতীয় দলে অন্তুর্ভুক্ত করার কথাও উঠছে। সেটা যে এখন সম্ভব তা বেশ ভালোভাবেই বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল।
হামজার জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তি বেশ ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে বাংলাদেশি ফুটবল সমর্থকরা। ব্যতিক্রম নন বাফুফে সভাপতি। বলছেন অন্য প্রবাসী ফটবলারদের রাস্তাটা দেখিয়েছেন হামজা, “আশা করছি হামজা চৌধুরীর মতো অন্য প্রবাসী যারা খেলছেন, তাদের আরও চিহ্নিত করে বাংলাদেশ দলে খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করতে পারবো। এ ছাড়া বাফুফে চেষ্টা করবে খেলোয়াড়দের নিয়ে নানান তথ্য দিতে।”
হামজাকে বাফুফে সভাপতি দেখছেন সুযোগ হিসেবে। তার মাধ্যমে দেশের ফুটবলারদের বিদেশি লিগে খেলার সুযোগও দেখছেন তিনি,
“হামজার মতো বড় মাপের খেলোয়াড় যখন আসে তখন দেশি খেলোয়াড়দের বিদেশে খেলার সুযোগ তৈরি হতে পারে। হামজাকে আমরা আলাদা হিসেবে দেখতে চাচ্ছি না। হামজাকে আমরা দেখতে চাই বাংলাদেশের একটা সুযোগ হিসেবে। দেশের খেলোয়াড়রা বিদেশের ভালো ভালো লিগে খেলার সুযোগ পাবে।”
হামজার অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলেও বিশ্বাস বাফুফে সভাপতি, “আমরা অবশ্যই খুশি। হামজার মতো খেলোয়াড় কিংবা সামনে যারা খেলবেন দেশে, তারা মান বাড়াবেন। আপাতত ব্র্যান্ড ভ্যালু নিয়ে চিন্তা করছি না। উইনিং স্পিরিট নিয়ে ভাবছি। কম গোলে হারের চিন্তা থেকে জেতার মানসিকতায় যেতে চাই। খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। সবাইকে নিয়ে ব্র্যান্ডভ্যালু তৈরি করতে হবে। এই যেমন নারী দলের স্পন্সর নিয়ে কাজ চলছে। শিগগিরই তা আপনাদের জানাতে পারবো।”
আগামী ২৫ মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ খেলবে ভারতের সঙ্গে। সেই ম্যাচ দিয়েই হামজার বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশি সমর্থকরা লম্বা সময় ধরেই অপেক্ষা করছেন হামজা চৌধুরীকে লাল সবুজ জার্সিতে দেখতে। বৃস্পতিবার তাদের সেই অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। বাফুফে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আর বাধা নেই। তাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামজা বন্দনায় মেতেছেন সমর্থকরা।
বাংলাদেশে আশার আগেই যে এই দেশের কোটি ফুটবল প্রেমি হামজাকে আপন করে নিয়েছেন। দ্য আথলেটিকসকে তো জানিয়েছেন সমর্থকদের নানা ধরণের বার্তার কথা। যা তাকে বেশ আবেগী করেছে। বাংলাদেশের হয়ে খেলার অন্যতম কারণ হিসেবে সমর্থকদের এই ভালোবাসাকেও উল্লেখ করেছেন হামজা।
“বাংলাদেশের হয়ে খেলা, দেশের মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করার ব্যাপারটা সবসময়ই আমার মাথায় ছিল। বাংলাদেশের সমর্থকদের সাথে আমার আলাদা একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তাদের থেকে আমি প্রতিদিনই অনেক বার্তা পাই বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য। আমি বিশ্ব ফুটবলে বাংলাদেশকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে চাই।”
সব বিবেচনায় হামজা বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নাম। ইংল্যান্ডের শীর্ষ পর্যায়ে খেলেছেন লম্বা সময় ধরে। আর সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশের ফুটবলকে সাহায্য করতে চান বলেই দ্য আথলেটিকসকে জানিয়েছেন লেস্টার সিটি মিডফিল্ডার।
“তাদের অবকাঠামো এখনো অতটা উন্নতি হয়নি, যা দেশের ফুটবলারদের ইউরোপে খেলার সুযোগ করে দেবে। কিন্তু তারা ফুটবলের জন্য অনেক পাগল। আশাকরি আমি তাদের ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে কিংবা ইউরোপে খেলার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবো।”
অবশ্য বাংলাদেশের প্রতি টানটা হামজার জন্য নতুন না। ছোটো থেকেই দেশে আসা যাওয়া করতেন তিনি। তাতে বাংলাদেশ নিয়ে ধারণাও আছে বেশ,
“ নিয়মিতই আমরা বাংলায় কথা বলতাম, আমার মা বাংলাদেশি খাবার তৈরি করতেন যা বাংলাদেশের সাথে একটা আলাদা সম্পর্ক তৈরি করেছিল। লেস্টারে স্কলারশিপ পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি নিয়মিতই দেশে আসা যাওয়া করতাম।”
সব ঠিক থাকলে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের ম্যাচ দিয়ে হামাজার অভিষেক হতে পারে বাংলাদেশের জার্সিতে। ২৭ বছর বয়সী এই তারকা তাই আশা করছেন তার সতীর্থরা তাকে ভালোভাবেই স্বাগত জানাবেন,
“আশা করি তাদের ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা দারুণ হবে এবং তারা আমাকে সাদরে গ্রহণ করবে। আশা করছি তারা ইংরেজিতে কিছুটা কথা বলতে পারে, অবশ্য কথা বলার জন্য যতটা বাংলা জানার দরকার ততটা আমি বলতে পারি। তাদের সংস্কৃতি-ঐতিহ্য শিখতে আমি মুখিয়ে আছি।”