গত এক মাস ধরেই আলোচনা যেভাবে চলছিল দুই পক্ষকে ঘিরে, তাতে জাবি আলোনসোর লেভারকুসেনের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়াটা ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই জার্মান ক্লাবটি ছাড়ার ঘোষণা দিলেন স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ী এই মিডফিল্ডার।
শুক্রবার আলোনসো নিজেই নিশ্চিত করেছেন চলতি মৌসুম শেষে তার লেভারকুসেরন ছাড়ার বিষয়টি। চুক্তি ২০২৬ সাল পর্যন্ত থাকলেও দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে আগেভাগেই সরে যাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন
মান বাঁচাতে ইউরোপা লিগ জিততে চান আমোরিম |
![]() |
এর মধ্য দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে আলোনসোর ছোট কোচিং ক্যারিয়ারের সেরা অধ্যায়। ২০২২ সালে পথ হারানো অবস্থায় দলটির কোচ যখন হন, তখন তার ছিল না শীর্ষ পর্যায়ে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা। তবে পূর্ণ প্রথম মৌসুমেই করেন বাজিমাত। লেভারকুসেনকে জেতান তাদের ইতিহাসের প্রথম বুন্দেসলিগা৷ নিয়ে যান ইউরোপা লিগের ফাইনালেও।
এই মৌসুমটা অবশ্য খুব একটা ভালো যাচ্ছে না তার দলের। শিরোপাহীন কাটলেও এই দফায়ও প্রশংসিত হয়েছে আলোনসোর আধুনিক কোচিং স্টাইল, বেশ আগে থেকেই মনে ধরেছে তার সাবেক ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের।
এই কারণেই কার্লো আনচেলত্তির যখনই বিদায় নেবেন, তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ক্লাবটি তাকেই নজরে রেখেছে। চলতি মৌসুমের পর ইতালিয়ান চাকরি ছাড়া ও আলোনসোর কোচ হওয়ার তাই এখন কেবলই আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটাই বাকি।
মার্কার তো দাবি, ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড়ের সাথে তিন বছরের চুক্তিও নাকি সেরে ফেলেছে রিয়াল। তবে সেটা কার্যকর হবে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের পর, যা হবে আগামী জুনে।
আরও পড়ুন
৫ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পিএসজি |
![]() |
আলোনসো সাথে নিয়ে আসবেন তার সহকারী সেবাস পারিলাকে, যিনি রিয়াল মাদ্রিদের যুব একাডেমির কোচিংয়ে তার সময়ের সহকর্মী ছিলেন। তারা দুজন তখন থেকে একসাথে কাজ করছেন এবং আলোনসো তাকে তার কোচিং দর্শনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলেই মানেন।
১ জুন ২০২৫, ৪:২৪ পিএম
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের আগে যে তাকে নিয়ে আলোচনা ছিল না, তা নয়। তবে উসমান দেম্বেলে, ভিতিনিয়ারা যেভাবে আলো কাড়ছিলেন, তাতে অনেকটাই আড়ালে চলে গিয়েছিলেন ডেজিরে দুয়ে। তবে মোক্ষম সময়েই কেড়ে নিয়েছেন স্পটলাইট। ইন্তার মিলানের বিপক্ষে পিএসজির ইতিহাস গড়া জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গড়েছেন এমন এক কীর্তি, যা নেই ইতিহাসের গ্রেট সব ফুটবলারদেরও।
ফাইনালের আগেই অবশ্য নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রতিভার জানান দিয়েছিলেন দুয়ে। ১৫ ম্যাচে নামের পাশে ছিল ১৪ গোল আর ৩ অ্যাসিস্ট। তবে ফাইনালে যেন নিজেকে বিশ্বমঞ্চে মেলে ধরার বাড়তি তাগিদ ছিল তার।
আরও পড়ুন
আমাদের লক্ষ্য ছিল ইতিহাস গড়ার : এনরিকে |
![]() |
আশরাফ হাকিমিকে দিয়ে প্রথম গোল করানোর পর বিরতির আগে নিজেও পান জালের দেখা। এই গোলটি তাকে জায়গা করে অনন্য রেকর্ড বুকে। ১৯ বছর ৩৬২ দিন বয়সে দুয়ে হন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের ইতিহাসের চতুর্থ কনিষ্ঠ গোলস্কোরার। তার আগে এই কীর্তি ছিল কেবল প্যাট্রিক ক্লুভার্ট (১৯৯৫) ও কার্লোস আলবার্তোর (২০০৪)।
এই গোল ফরাসি সেনসেশনকে জায়গা করে দেয় রেকর্ডের এমন পাতায়, যেখানে নেই ফুটবল মেসি-রোনালদোরাও।। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে ফাইনালে গোল ও অ্যাসিস্ট উভয়ই করা সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় দুয়েই।
আর বিরতির পর আরেকটি গোল করে দুয়ে গড়েন নতুন ইতিহাস। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সরাসরি তিন গোলে সরাসরি অবদান (২ গোল, ১ অ্যাসিস্ট) রাখার রেকর্ড সঙ্গী হয় তার।
আরও পড়ুন
আবেগময় ম্যাচে মেয়ের হয়েও শিরোপা জিতলেন এনরিকে |
![]() |
২১ শতকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে দুই বা তার বেশি গোল করা খেলোয়াড়দের ছোট তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছেন দুয়ে। তার আগে এই কীর্তি ছিল কেবল ছয় জনের। তারা হলেন - হার্নান ক্রেসপো (ইন্তার মিলান, ২০০৪/০৫), ফিলিপ্পো ইনজাগি (এসি মিলান, ২০০৬/০৭), দিয়েগো মিলিতো (এসি মিলান, ২০০৯/১০) , ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো (রিয়াল মাদ্রিদ, ২০১৬/১৭) ও গ্যারেথ বেল (রিয়াল মাদ্রিদ, ২০১৭/১৮)।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্তার মিলানের বিপক্ষে পিএসজির জয় নিশ্চিতের আগে থেকেই ফ্রান্সে ছড়িয়ে পড়েছিল সহিংসতা। প্রথমবারের মত এই শিরোপা জয়ে আনন্দ উদযাপন এক পর্যায়ে দেশটিতে সীমা ছাড়িয়ে গেছে। উদযাপনের এই আবহে দেশজুড়ে অস্থিরতা দেখা দিলে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে দুজন নিহত হওয়ার খবর এসেছে।
আর নাশকতার দায়ে ৫৫৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে ইন্তারকে ৫-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপ সেরা হয়েছে পিএসজি। সেটা উদযাপন করতে গিয়ে প্যারিস সহ পুরো ফ্রান্সেই আতশবাজি, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থির হয়ে যায়। ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভিন্ন ভিন্ন দাঙ্গায় ২০০টিরও বেশি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
আমাদের লক্ষ্য ছিল ইতিহাস গড়ার : এনরিকে |
![]() |
দক্ষিণ ফ্রান্সের দেক্স শহরে ছুরিকাঘাতে ১৭ বছর বয়সী একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ফ্রান্সের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর গ্রেনোবলে মধ্যরাতের পর উদযাপনের সময় একটি পরিবারের চারজন সদস্য গুরুতর আহত হন। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মিউনিখের অ্যালিয়ান্জ অ্যারেনায় ফাইনাল শেষ হতেই রাজধানী প্যারিসের কেন্দ্রস্থলসহ বিভিন্ন শহরে উল্লাস করতে জনতা রাস্তায় নেমে আসে। উদযাপনের শুরুতে আতশবাজি ফুটিয়ে উল্লাস করা হলেও দ্রুতই তা রূপ নেয় বিশৃঙ্খলায়। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
পিএসজির ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলে ম্যাচের পর ভক্তদের প্রতি জানান আকুতি।
“আমাদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় অবশ্যই প্যারিসের জন্য একটা বিশেষ মুহূর্ত। তবে আমি বলতে চাই, আমরা উদযাপন করি, তবে প্যারিসকে যেন ধ্বংস না করি।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তার মাঝে ফেলে রাখা অসংখ্য বাইকে আগুন জ্বলছে, আবার আতশবাজি ছোঁড়া হচ্ছে ভীড়ের মাঝখানেই। এছাড়া প্যারিসের রিং রোডের সামনে পুলিশের সঙ্গে ভক্তদের সংঘর্ষের ঘটনাও ভিডিওতে ধরা পড়েছে।
আরও পড়ুন
হারলেও ইন্তারের নিবেদন নিয়ে গর্বিত ইনজাগি |
![]() |
ফ্রান্স সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্যারিস জুড়ে প্রায় ৫ হাজার ৪০০ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করেছে। দেশটির প্রশাসন সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং উদযাপনের নামে সব ধরণের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেছে।
তারকার হাট বসিয়েও বছরের পর বছর যার দেখা পায়নি, দায়িত্ব নিয়ে প্রথম মৌসুমেই পিএসজিকে সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েছেন লুইস এনরিকে। একটা তারকাহীন, তরুণ দল নিয়েই তিনি চমক দেখিয়ে করেছেন বাজিমাত। এর রহস্য কী? পিএসজি কোচ জানালেন, ইতিহাস গড়ার বাসনাই তাদের এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।
ইন্তার মিলানের সাথে ফাইনালের আগেও অবশ্য ইতিহাস গড়ার কথা বলেছিলেন এনরিকে। কারণ, তিনি আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ পেলেও পিএসজির জন্য তা এতদিন ছিল অধরাই। তবে যাদুর পরশে প্যারিসের ক্লাবটিকে বদলে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের সাথে রেকর্ড গড়েছেন ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম ট্রেবল জয়ের মধ্য দিয়েও।
আরও পড়ুন
আবেগময় ম্যাচে মেয়ের হয়েও শিরোপা জিতলেন এনরিকে |
![]() |
ফাইনালে ৫-০ গোলে জয়ের পর উচ্ছ্বসিত এনরিকে মনে করেন, চাপের মুহূর্তে ভেঙে না পড়াই তার দলের মূল শক্তির জায়গা।
“আমি মনে করি মৌসুমের শুরু থেকেই ইতিহাস গড়াই ছিল আমাদের লক্ষ্য। তখন থেকেই আমি খেলোয়াড় আর সমর্থকদের সাথে একটা গভীর সম্পর্ক অনুভব করেছিলাম। এটা ছিল খুব মজবুত একটা সম্পর্ক, যা পুরো মৌসুমজুড়েই ছিল আমাদের চলার পথের শক্তি। আমরা রোমাঞ্চকর মুহূর্ত এবং চাপকে সবচেয়ে ভালোভাবে সামলাতে পেরেছি বলেই ধরা দিয়েছে এই সাফল্য।”
ফাইনালে ইতিহাস গড়েছেন এনরিকেও। পেপ গার্দিওলার পর মাত্র দ্বিতীয় কোচ হিসেবে দুটি ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের হয়ে ট্রেবল জেতার কীর্তি এখন তার। এর আগে তিনি ২০১৫ সালে বার্সেলোনার হয়ে। আর এবার দায়িত্ব নিয়েই উঠলেন নতুন উচ্চতায়।
তারকা ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমির কাছে এনরিকে তাদের সাফল্যের সবচেয়ে বড় কারিগর।
“আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা সবাই মিলে একটা দারুণ পরিবার তৈরি করেছি। লুইস এনরিকে পিএসজিতে সবকিছু রাতারাতি বদলে দিয়েছেন। তিনি আসার পর থেকে আমাদের ফুটবল দেখার দৃষ্টিভঙ্গিই বদলে গেছে। তিনি একজন বিশ্বস্ত মানুষ, এই সাফল্য তারই সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য।”
বার্সেলোনাকে যে দলটি সেমিফাইনালে হারের দুয়ার থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে হারিয়ে দিতে পারে, ফাইনালে তাদের কাছ থেকে তো প্রত্যাশা বেশিই থাকবে। তবে বিস্ময়করভাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মৌসুমে নিজেদের সবচেয়ে বাজে ফুটবল খেলে পিএসজির কাছে স্রেফ উড়ে গেছে ইন্তার। হতাশ কোচ সিমোনে ইনজাগি বললেন, হারলেও খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্ব হচ্ছে তার।
২০২৩ সালেও ফাইনালে খেলেছিল। সেবার মাত্র ১-০ গোলে হেরেছিল ইন্তার, সাথে উপহার দিয়েছিল দারুণ লড়াই। তবে এবারের ফাইনালে পিএসজির সামনে পাত্তাই পায়নি ইতালিয়ান ক্লাবটি। ২০ মিনিটে ২ গোল হজমের পর শেষ পর্যন্ত হেরেছে ৫-০ গোলে। ভাগ্য খারাপ হলে ব্যবধান আরও বড় হতেও পারত।
আরও পড়ুন
পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর ফ্রান্সে সহিংসতা, নিহত ২ |
![]() |
ম্যাচের পর ইনজাগির কণ্ঠে ফুটে উঠল সেরা না খেলার আক্ষেপ।
“যোগ্য দল হিসেবেই পিএসজি এই ম্যাচ এবং ট্রফি জিতেছে। আমরা হতাশ, তবে এই পর্যন্ত আসার পথটাও দুর্দান্ত ছিল। আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত। ম্যাচে আমাদের পারফরম্যান্স ভালো ছিল না। প্যারিস বারবার বলের দখল নিয়েছিল। আমরা কোনো ট্রফি জিতিনি, কিন্তু এই দলের কোচ হতে পেরে আমি গর্বিত।”
ইন্তার এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৮টি ম্যাচ খেলেছে ইন্তার। সেরি আয় শেষ দিন পর্যন্ত লড়তে হয়েছে সেরা চারে থাকার জন্য। অন্যদিকে পিএসজি অনেক আগেই লিগ ওয়ান জিতে যাওয়ায় নিজেদের শেষের দিকে ম্যাচে খেলোয়াড়দের বাড়তি বিশ্রাম দিতে পেরেছিল।
ইনিজাগি মনে করেন, খেলোয়াড়দের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না তার দলের।
“আমরা এখানে আসার জন্য যা যা করার দরকার ছিল, তার সবটাই ঢেলে দিয়েছি। আমরা দুঃখিত, হতাশ। তবে খেলোয়াড়রা মাঠে নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে। আমাদের এই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও শক্তভাবে ফিরে আসতে হবে।”
১৬ ঘণ্টা আগে
১৬ ঘণ্টা আগে
২২ ঘণ্টা আগে
২৩ ঘণ্টা আগে
৫ দিন আগে
৭ দিন আগে
১২ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে