প্রথম লেগে বার্সেলোনা তিন গোল হজম করায় রক্ষণভাগ নিয়ে একটা চিন্তা ছিলই। ঘরের মাঠে উজ্জীবিত ইন্তার মিলান কাউন্টার এটাকে শুরুটা করল দুর্দান্ত। বিরতির আগেই দুই গোল খেয়ে কোনঠাসা হয়ে গেল হান্সি ফ্লিকের দল। দারুণ এক কামব্যাকে একে একে তিন গোল দিয়ে এক পর্যায়ে বার্সেলোনাই পাচ্ছিল জয়ের সুবাস। তবে এই ইন্তার যে হার মানার নয়। ইনজুরি ও অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে শেষ হাসি হাসল সিমোনে ইনজাগির দল।
সান সিরোতে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে ইন্তার। দুই লেগ মিলিয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটি জিতেছে ৭-৬ ব্যবধানে। ২০২৩ সালের পর আবারও দলটি খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ থাকবে আর্সেনাল বা পিএসজি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের ভালো একটি সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে গতিতে ইন্তার ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল, অপেক্ষায় ছিলেন ট্যাপ-ইনের। তবে পাস না বাড়িয়ে গোলের জন্য শট নিয়ে ব্যর্থ হন ফেররান তরেস।
আরও পড়ুন
পর্তুগাল দলে ডাক পেলেন ছেলে, ‘গর্বিত’ বাবা রোনালদো |
![]() |
ম্যাচের প্রথম দিকে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ এড়িয়ে আক্রমণে যেতে বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইন্তারকে। এই ম্যাচের আগে চলতি মৌসুমে এই ম্যাচের আগে ৭৪ বার প্রতিপক্ষকে অফসাইডে ফেলেছে দলটি।
১৭তম মিনিটে আলেসান্দ্রো বাস্তোনি ইন্তারের বক্স থেকে বলের দখল নিয়ে লম্ব ক্রস বাড়ান, বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্সকে বিপদে ফেলে বল নিয়ে ফেদেরিকো দিমার্কো পাস দেন লাউতারোকে। তবে তার শট লক্ষ্যে থাকেনি আর, এর আগে ক্লিয়ার হয়ে যায়।
মিনিট তিনেক বাদে ডান দিক থেকে কাট করে বক্সে প্রবেশ করে নিকোলা বারেল্লার নেওয়া জোরাল শট কোনোমতে সেভ করে ওয়েচেজ সেজনি। তবে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ পার করে শেষ পর্যন্ত ইন্তারের লিড নেওয়ায় ভূমিকা রাখেন প্রথম লেগে জোড়া গোল করা ডেনজেল ডামফ্রিস।
পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে তড়িৎ গতিতে বল পেয়ে ডান দিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করেন তিনি। বার্সেলোনার রক্ষণভাগের চেয়ে বক্সে ইন্তারের খেলোয়াড়ই বেশি। সেজনি এগিয়ে এসে ক্লিয়ার করতে গেলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ফাঁকায় থাকা লাউতারোকে পাস দেন ডামফ্রিস, যেখান থেকে জাল খুঁজে নিতে ভুল করেননি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩ ম্যাচে এটি লাউতারোর ৯ নম্বর গোল। এই গোলটি ইন্তারের জন্য গুরুত্বছিলপূর্ণ ছিল, কারণ এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগে গোল দিয়ে এই লড়াইয়ের আগে ১০ ম্যাচের একটিতেও হারেনি সেরি আর ক্লাবটি। আর সব মিলিয়ে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের শেষ ৪৯টি হোম ম্যাচে মাত্র একটিতে আগে গোল করে হারের রেকর্ড ছিল ইন্তারের।
আরও পড়ুন
মিলান কাব্যে ধরাশায়ী বার্সা, ফাইনালে ইন্তার |
![]() |
ওই গোলের খানিক বাদে ইন্তারের বক্সের ভেতর পেদ্রির শট প্রতিপক্ষের একজনের হাতে লাগলে ওঠে পেনাল্টির দাবি। তবে রেফারি তা নাকোচ করে দেন।
৩৬তম মিনিটে বিরতির আগে নিজেদের সেরা সুযোগটা পায় বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে থেকে ইন্তারের কয়েকজন খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে পেছনে ফেলে ডান দিক থেকে একটা শট নেন, যা শেষ চলে যায় অল্পের জন্য পোষ্টের বাইরে দিয়ে। অল্পের জন্য ট্যাপ-ইন করতে ব্যর্থ হন তরেস।
তবে একের পর এক আক্রমণে ইন্তারকে ব্যতিব্যস্ত রাখেন ইয়ামাল, যাকে নিয়ে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সতর্ক বার্তা দিয়েছিলেন দলটির কোচ সিমোনে ইনজাগি। ডাবল মার্কিং করে তার পরিকল্পনা ছিল ইয়ামালকে আটকানোর।
তবে কাজটা ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিন হয়ে ওঠে। ৩৯তম মিনিটে ফের গতি দিয়ে ডি-বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল। তবে ছয় গজের ভেতর শেষ সময়ে দুর্দান্ত এক স্লাইড ট্যাকেল করে সেযাত্রায় দলকে রক্ষা করেন বাস্তোনি।
এরই মাঝে ম্যাচের ধারার বিপরীতে পেনাল্টি হজম করে বসে বার্সেলোনা। লাউতারোকে আটকাতে বক্সের ভেতর ফাউল করেন পাউ কুবার্সি। ঠাণ্ডা মাথায় বাঁদিকে বল জালে পাঠান হাকান কালহানোগলু।
দুই গোল খেয়ে বেশ চাপে পড়ে যাওয়া বার্সেলোনা বিরতির আগে মাত্র ছয়টি শট থেকে একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৫১তম মিনিটে ফের ইন্তার বল জালে পাঠালেও এবার আর গোল মেলেনি অফসাইডের কারণে।
এর ঠিক দুই মিনিট পর বার্সেলোনার ক্যামব্যাকের সূচনা করেন এরিক গার্সিয়া। জটলার মধ্যে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক ভলিতে সান সিরোতে স্তব্ধতা নিয়ে আসেন তিনি। সেই গোলের রেশ না কাটতেই আরও একটি গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। তবে ছয় গজ থেকে নেওয়া তার শট পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ফিরিয়ে দেন ইয়ান সোমের।
তবে আরেকটি রেমোনটাডার স্বপ্নের বিভর বার্সেলোনা আক্রমণের ঢেউয়ে বেসামাল ইন্তার বেশিক্ষণ পারেনি সামাল দিতে। বাঁদিক থেকে জেরার্ড মার্তিনের দারুণ এক ক্রস থেকে ডাইভিং হেডে গোল করেন দানি ওলমো।
ছন্দহীন ইন্তার ৬৮তম মিনিটে বড় বিপদেই পড়তে যাচ্ছিল। আগুয়ান ইয়ামালকে ফাউল করে শুরুতে পেনাল্টি উপহার দিয়ে ফেলেছিলেন হেনরিখ মিখিতারিয়ান। তবে রেফারি পরে নিজের সিদ্ধান্ত বদলান ভিএআরে দেখে, যেখানে দেখা যায় ফাউলটি করা হয়েছিল ঠিক বক্সের বাইরে।
৭৯তম মিনিটে কাট করে বক্সের ভেতর থেকে গতিময় এক শট নেন ইয়ামাল, তবে পোষ্টের নিয়ে আস্থার পরিচয় দেন সোমের। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ স্কোরলাইনে লড়াই যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, তখনই চিত্রে হাজির পুরো ম্যাচে প্রায় অচেনা ছন্দে থাকা রাফিনিয়া।
৮৭তম মিনিটে মিলান শিবিরকে হতাশায় ভাসিয়ে বার্সেলোনাকে ফের এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে তার নেওয়া প্রথম শট ফিরিয়ে দেন সোমের, তবে ফিরতি বল পেয়ে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠাতে আর ভুল হয়নি তার।
আরও পড়ুন
অ্যানফিল্ড-রোম ‘ট্র্যাজেডি’ পেছনে ফেলতে পারবে বার্সেলোনা? |
![]() |
এই গোলের মধ্য দিয়ে দুর্দান্ত এক রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন রাফিনিয়া। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩টি গোলের সাথে তার নামের পাশে রয়েছে ৮টি অ্যাসিস্ট। এক মৌসুমে গোলে অবদান রাখার ক্ষেত্রে তার সমান (২১টি) রয়েছে কেবল সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর, ২০১৩-১৪ মৌসুমে।
এই গোলের পর বার্সেলোনার জয় যখন ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন মিলান শিবিরে আশার আলো নিয়ে আসেন ফ্রান্সেস্কো এসেরবি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় নিজের ২০তম মৌসুমে একটি গোলও না করা অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার প্রথম গোলের জন্য বেছে নেন সেরা উপলক্ষ্য।
ডান দিক থেকে স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে বক্সের ভেতর ক্রস বাড়ান ডামফ্রিস। রক্ষণ ছেড়ে স্ট্রাইকার বনে যাওয়া এসেরবি বল রিসিভ করে কিছুটা সময় নিয়ে জায়গা বানিয়ে কোনাকুনি এক শটে বল পাঠান জালে, যা চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না সেজনির।
ম্যাচের এমন সময়ে গোল, স্বাভাবিকভাবে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে দলের সাথে মেতে ওঠেন এসেরবিও। উদযাপন করার সময় তিনি জার্সি খুলে ফেলেন এবং এজন্য তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। তবে তাতে আর কীইবা আসে যায়!
এই গোলের মধ্য দিয়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে শালকের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রায়ান গিগসের পর এসেরবি (৩৭ বছর ৮৫ দিন) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে দ্বিতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় (৩৭ বছর ১৪৮ দিন) হিসেবে জালের দেখে পেয়েছেন।
জয়ের সুবাস পেতে পেতে এমন একটা গোল খেয়ে বসলে একটা দলের মানসিকতায় তাতে আসতে পারে বড়সড় আঘাত। বার্সেলোনার ক্ষেত্রেও হয় ঠিক তাই। তার ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে ফের গোল পেয়ে যায় ইন্তার।
ডান দিক থেকে উঠে মার্কাস থুরাম দাভিদ ফ্রাত্তেসিকে পাস বাড়ান। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার বক্সের ভেতরে মেহেদি তারেমির সাথে ওয়ান-টু খেলে এরপর প্লেসিং শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
এটি ছিল এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বার্সেলোনার হজম করা ২৪তম গোল, যা এক আসরে ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের জন্য মরিয়া বার্সেলোনা খেলে অল আউট ফুটবল। ইয়ামালের ক্রস থেকে বদলি নামা রবার্ট লেভানদভস্কির হেড অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।
পাল্টা আক্রমণ থেকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে ফ্রাত্তেসির শট ঠেকান সেজনি। ১১৪তম মিনিটে গোলের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন ইয়ামাল। অনেকটা নিচে নেমে বলের দখল নিয়ে লেভানদভস্কি পাস দেন ইয়ামালকে। গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে তরুণ এই উইঙ্গার নেন শট, যা এক হাতে কোনোমতে আটকে ইন্তার শিবিরে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন সমের।
বাকি সময়ে বার্সেলোনার একের পর আক্রমণ সামাল দেওয়ার মাঝে সুযোগ তৈরি করে ইন্তারও। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেনি শট কোনো দলই। তাতে দুই বছরে মধ্যে নিজেদের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইন্তার।
No posts available.
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭:৪৯ পিএম
পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিলেন 'স্পেশাল ওয়ান' খ্যাত জোসে মরিনহো। দুই যুগ পর আবারও নিজভূমের ক্লাবে ফিরলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে মরিনহোর নিয়োগের বিষয়টি জানায় বেনফিকা। ২০২৭ সাল পর্যন্ত পর্তুগিজ ক্লাবটির দায়িত্বে থাকবেন মরিনহো।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কারাবাখের বিপক্ষে ৩-২ হারার পর কোচ ব্রুনো লাগের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বেনফিকা। এরপর মরিনহোকে নিয়োগ দেয় তারা।
আরও পড়ুন
সাফে দলীয় নৈপুণ্যে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের বড় জয় |
![]() |
তুর্কি ক্লাব ফেনারবাহচেতে মরিনহো অধ্যায় শেষ হয়েছিল বেশ অপ্রত্যাশিতভাবে। তবে দলহীন থাকার সময়টা খুব দীর্ঘ হয়নি তার। যদিও বেনফিকার অফিসিয়াল ঘোষণায় চুক্তির মেয়াদ ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি।
এর আগে ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে মরিনহোকে খণ্ডকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল বেনফিকা। ১০ ম্যাচের দায়িত্ব পালনের পর সেই অধ্যায় শেষ হয়ে যায় ডিসেম্বরে।
খেলা শুরুর খানিকবাদে গোলের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হলেও আধাঘন্টার মাথায় প্রতিপক্ষের জাল কাঁপায় গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে আসে গোল; তাতেই নেপালের বিপক্ষে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
আজ বৃহস্পতিবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ৪-০ গোলে হারিয়ে প্রতিযোগিতায় শুভ সূচনা পেল বাংলাদেশ। দেশের হয়ে একটি করে গোল করেন মোহাম্মদ সাব্বির ইসলাম, অপু রহমান, মোহাম্মদ আরিফ ও মোহাম্মদ মানিক।
সাত দলের প্রতিযোগিতায় 'এ' গ্রুপে বাংলাদেশ ও নেপালের আরেক প্রতিপক্ষ স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। এ জয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে নাজমুল হুদা ফয়সালরা। সমান পয়েন্ট পেয়ে দুইয়ে নেপাল। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ আগামী ২১ সেপ্টেম্বর, স্বাগতিকদের বিপক্ষে।
কলোম্বোর রেসকোর্স স্টেডিয়ামে এদিন প্রথম মিনিটেই কর্নার পায় বাংলাদেশ। গোলের সুযোগ আসে পঞ্চম মিনিটে। কিন্তু শট লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন নাজমুল হুদা ফয়সাল। মোহাম্মদ আরিফের কাছ থেকে রক্ষণ চেড়া পাস পেয়ে বক্সে নেপালের গোলরক্ষক রাম বাহাদুর বোহারাকে পরাস্ত করেন, এরপর ডান দিকে মোড় নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক আড়াআড়ি নীচু শটে বল গড়িয়ে মারেন পোস্টের বাইরে।
ষষ্ঠ মিনিটে বক্সে একইরকম বল পান অপু রহমান। তবে বলের নাগাল পাওয়ার আগে নেপালের গোলরক্ষক বল গ্লাভসবন্দি করেন। ২৭ মিনিটে ছোট কর্নারের পর বক্সের সামনে থেকে ক্রস দেন ফয়সাল, বলে হেড নিলেও পোস্টে রাখতে পারেননি অপু।
তিন মিনিট পর সেই কর্নার থেকেই লিড নেয় বাংলাদেশ। ফয়সালের কর্নার কিক ফিস্ট করলেও পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি নেপালের গোলরক্ষক। উড়ে আসা বল মাটিতে পড়ার আগেই বুলেট গতির সোজা শটে লক্ষ্যভেদ করেন মোহাম্মদ সাব্বির ইসলাম। ৩৭ মিনিটে সাব্বিরের লং থ্রো বক্সে বাইসাইকেল কিক নেন মোহাম্মদ মানিক, বল যায় পোস্টের উপরে দিয়ে।
বিরতির পরপরই লিড দ্বিগুণ করেন অপু। ৪৯ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে আক্রমণের সুর বেঁধে দেন আজম খান। আরিফের পা ঘুরে কর্ণারের কাছে বল পান সাব্বির। তার বাড়ানো বল বক্সে পেয়ে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে কাটিকে আগন্তুক গোলরক্ষকের উপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন অপু।
৫০ মিনিটে মাঝমাঠে বল পায়ে নেপালের খেলোয়াড়দের নিয়ে এক প্রকার ছেলেখেলা করেন ফয়সাল, অপু, সাব্বিররা। শেষে পোস্টের প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে ডান পায়ের শটে জাল কাঁপান মোহাম্মদ আরিফ। ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লাল সবুজের ছেলেরা। ৬৫ মিনিটে মানিকের সৌজন্যে চতুর্থ গোলও পেয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৪-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে দুবারের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এই প্রতিযোগিতায় ৯ বার অংশগ্রহণ করে লাল সবুজেরা। সর্বোচ্চ ৬বারের শিরোপাধারী দল ভারত।
সন্তানদের ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগে ডগলাস কস্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ব্রাজিলের আদালত। প্রায় ৭৮ হাজার ইউরোর বেশি বকেয়া ভরণপোষণ পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছে ব্রাজিলের সাবেক এই ফরোয়ার্ডের বিরুদ্ধে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, পোর্তো আলেগ্রের ৬ষ্ঠ ফ্যামিলি কোর্ট এই পরোয়ানা জারি করেছেন। এতে তার ৩০ দিনের জেল সাজা ভোগ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন
সিটির মুখোমুখি ডি ব্রুইনা |
![]() |
গত বছর ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লামিনেন্স থেকে দুই বছরের চুক্তিতে সিডনি এফসিতে যোগ দেন কস্তা। কিন্তু চলমান সমস্যার কারণে সিডনি এফসি তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে। বর্তমানে ব্রাজিলে অবস্থান করছেন তিনি। আদালতের নির্দেশে দেশ ছাড়ায় নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
চুক্তি বাতিল হওয়ার পর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এক বিবৃতিতে কস্তা বলেন,
“আমি সিডনি এফসিকে ধন্যবাদ জানাই অস্ট্রেলিয়ায় খেলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। আকাশি-নীল জার্সিতে এক অবিশ্বাস্য সময় ছিল। আমি খুবই দুঃখিত, ব্যক্তিগত কারণে এখন আর ফিরতে পারছি না। এখানে কাটানো সময় সবসময় মনে রাখব। সদস্য ও সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সামনে খেলাটা খুবই বিশেষ ছিল। আমি কখনোই ভুলব না।”
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপে ব্রাজিলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে নেইমার: রোনালদো |
![]() |
পেশাদার ক্যারিয়ারে বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে ২৪টি শিরোপা জিতেছেন কস্তা। জুভেন্টাসের হয়ে তিনটি ইতালিয়ান সিরি আ লিগ শিরোপা জিতেছিলেন। ২০১৫ সালে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার পর জিতেছিলেন তিনটি বুন্দেসলিগা শিরোপা। এর মধ্যে রয়েছে বায়ার্নের হয়ে ২০২০ ক্লাব বিশ্বকাপ।
সিডনি এফসির প্রধান কোচ উফুক তালায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডগলাসের প্রতি।
‘‘ডগলাসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তার প্রচেষ্টার জন্য। তিনি সমর্থকদের বিনোদনমূলক কিছু পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে আমরা তাকে সমস্যার সমাধানে সহায়তা করেছি। তবে নতুন মৌসুম সামনে রেখে দলের ভবিষ্যতের স্বার্থে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
নাপোলির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ যাত্রা শুরু হচ্ছে ম্যানচেস্টার সিটির। বাংলাদেশ সময় রাত একটায় সিটির ঘরের মাঠ ইতিহাদে শুরু হবে হাইভোল্টেজ এই ম্যাচ। ম্যাচটিতে সাবেক ক্লাবের মুখোমুখি হচ্ছেন কেভিন ডি ব্রুইনা। যেখানে এক দশকের বেশি সময়জুড়ে মধ্যমাঠ মাতিয়ে জিতেছেন ১৬টি ট্রফি। জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন ৪২২ বার। গোল করেছেন ১০৮টি। সেই ব্রুইনা এবার সিটির মুখোমুখি।
গত জুনে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে ডি ব্রুইনার সঙ্গে চুক্তি করেনি ম্যানসিটি। নিজের অবেগ ও ভালোবাসার জায়গা ছেড়ে যাওয়ার সময় বেলজিয়ামের অভিজ্ঞ এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বলেছিলেন, অনেকটা বাধ্য হয়েই সিটি ছেড়েছেন তিনি। আর সেই ব্রুইনা কিনা এখন প্রাক্তনের হৃদয় ভাঙার জন্য প্রস্তুত।
আরও পড়ুন
হ্যাটট্রিকের পর শামসুন্নাহারের চোট |
![]() |
৩৪ বছর বয়সী ডি ব্রুইনা নাপোলিতে যোগ দেওয়ার পর বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। তার আগমনকে অনেকে ডিয়েগো ম্যারাডোনার আগমনের সঙ্গে তুলনা করছেন। নাপোলি ভিত্তিক সাংবাদিক ভিনচেঞ্জো ক্রেদেনদিনো বিবিসি স্পোর্টসকে জানিয়েছেন, ম্যারাডোনার বিদায়ের পর ডি ব্রুইনার মতো এতবড় তারকা ক্লাবে ভেড়ায়নি নাপোলি। ম্যারাডোনা তার ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল সময়ে ক্লাবটিতে পা রেখেছিলেন। আর ডি ব্রুইনা ৩৪ বছর বয়সে।
নাপোলির অধিনায়ক জিওভান্নি দি লোরেঞ্জো ডি ব্রুইনাকে একজন গ্রেট ক্যাপ্টেন হিসেবে বর্ণনা দিয়েছেন। আরও বলেছেন,
‘‘তিনি (ডি ব্রুইনা) কখনই তার অতীতের টিমমেটদের নিয়ে কথা বলেন না। আমি নিশ্চিত সে যখন ইতিহাদে ফিরবে বিষয়টি বেশ উপভোগ করবেন।’’
প্রথমার্ধে দল শেষ করল ১১-০ গোলের লিড নিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে যোগ হলো আরও ৭ গোল। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের শামসুন্নাহার জুনিয়র করলেন হ্যাটট্রিক। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর মাঠেই নামা হয়নি এই ফরোয়ার্ডের।
ভুটান নারী লিগে বৃহস্পতিবার শামসুন্নাহারের দল রয়েল থিম্পু কলেজ এফসি ১৮-০ গোলে হারিয়েছে জেলেফু সিটি উইমেন ফুটবল ক্লাবকে।
আরও পড়ুন
প্রীতি ফুটবল ম্যাচে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান |
![]() |
এই ম্যাচের শুরুর একাদশে ছিলেন না বিশ্রামে থাকা তহুরা খাতুন। তবে সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন বাংলাদেশের আরেক ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়র। প্রথমার্ধেই করেছেন তিন গোল। তবে এরপরই পায়ে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
ম্যাচ শেষে অবশ্য জানিয়েছেন ইনজুরি গুরুতর নয়।
ভুটান লিগে যাওয়ার পর থেকে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন শামসুন্নাহার। এই ফরোয়ার্ডের দেওয়া তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে করেছেন ১৮ গোল। শুধু গোলই নয়, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১৭ গোল।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপে ব্রাজিলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে নেইমার: রোনালদো |
![]() |
ভুটান লিগে এক ম্যাচে ৮ গোলের রেকর্ডও আছে শামসুন্নাহারের। মুঠোফানে টি-স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপে তাই উচ্ছ্বাসই প্রকাশ করলেন তিনি।
“গোল পাচ্ছি খুব ভাল লাগছে। এটা ধরে রাখতে চাই। তবে প্রতিপক্ষ আরও শক্তিশালী হলে তাদের বিপক্ষে গোল করে বেশি আনন্দ পাই। আগের ম্যাচেই যেমন মারিয়া মান্ডা ও সিনিয়র শামসুন্নাহারদের ক্লাব থিম্পু সিটি ক্লাবের বিপক্ষে ৫ গোল করেছি। ওই দলটা অনেক শক্তিশালী।”