১১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল, মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ভিন্ন ছন্দেই হাজির রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম দিকে এলেমেলো ফুটবল খেলা বার্সেলোনা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিল। বিরতির আগেই চার গোল খেয়ে বসা রিয়ালের হয়ে একাই লড়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে, করলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণভাগের ভুলে যাওয়ার মত এক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইয়ামাল-রাফিনিয়ারাই। আর তাতে চলে গেল লা লিগা জয়ের আরও কাছে।
লা লিগায় রোববারের এল ক্লাসিকোর মহারণে আরও একবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। ৪-৩ গোলে দুর্দান্ত জয়ে মৌসুমে রিয়ালকে টানা চার ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিল ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন
‘ইয়ামাল বাচ্চা না, এমন পারফরম্যান্সই চায় বার্সা’ |
![]() |
এই জয়ে বার্সেলোনার লিগ জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তিন ম্যাচ হাতে রেখে ৮২ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
লা লিগায় বড় ধরণের নাটকীয়তা না দেখা দিলে এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের শিরোপাহীন মৌসুম। দুই দফায় রিয়ালকে অসাধারণ সব সাফল্য এনে দেওয়া আনচেলত্তির জন্য শেষটা হতে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মতোই।
ম্যাচে রিয়ালের শুরুটা অবশ্য হয় স্বপ্নময়। পাউ কুবার্সির দুর্বল ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গতিতে বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন এমবাপে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন গোলকিপার ওয়েজেচ সেজনি। পেনাল্টির বাঁশি সাথে সাথেই বাজিয়ে দেন রেফারি। ফরাসি তারকার বাঁদিকে নেওয়া নিচু শটে হাত লাগালেও আটকাতে পারেননি সেজনি।
এটি ছিল চলতি মৌসুমে লিগে এমবাপের ২৫তম গোল। লিড নিয়ে রিয়াল অব্যাহত রাখে ইতিবাচক ফুটবল। একের পর পর আক্রমণ শানায় দলটি। বিপরীতে ফ্লিকের দল গুছিয়ে নিতেই নষ্ট করে কিছুটা সময়।
নবম মিনিটে বলার মত প্রথম আক্রমণে বক্সের ভেতর কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নিয়েছিলেন এরিক গার্সিয়া, তবে রিয়ালের জন্য তা বিপদের কারণ হয়নি।
১৪তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার জালে বল, আর এবারও স্কোরার সেই এমবাপেই। তবে বল বানিয়ে দেওয়ার একটা বড় কৃতিত্ব পাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ডিফেন্সচেড়া পাসে খুঁজে নেন ফ্রানের বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। বল রিসিভ করে জায়গা বানিয়ে সেজনিকে পরাস্ত করে রিয়ালের লিড বড় করেন এমবাপে।
গোলের লক্ষ্যে প্রথম দুই শট থেকেই জালের দেখা পাওয়া রিয়ালের আক্রমণের সামনে সেই সময়ে বেকায়দায় ছিল বার্সেলোনা। ১৮তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে লামিন ইয়ামালের কার্লিং শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন থিবো কোর্তোয়া।
পরের মিনিটে আরেকটি ভালো সেভ দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় কোর্তোয়াকে। ফেররান তরেসের কর্নার কিক থেকে হেডারে জাল খুঁজে নেন এরিক গার্সিয়া, যিনি কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন
আবেগে ভেসে, চোখের জলে বায়ার্নকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি মুলার |
![]() |
এক গোল শোধ দিয়ে ক্রমেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। খেই হারিয়ে ফেলা রিয়ালের খর্বশক্তির রক্ষণের জন্য গতিময় ইয়ামালকে সামলানো শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৩২তম মিনিটে তরেসের পাস থেকে কাট করে বক্সের ভেতর বাঁদিক থেকে বা পায়ের কোনাকুনি এক শটে গোল করেন স্প্যানিশ এই উইঙ্গার, লা লিগায় এটি এই মৌসুমে ইয়ামালের সপ্তম গোল।
পরপর দুই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল, যেখানে ফুটে ওঠে তাদের ছন্দপতন। বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এমবাপে, তবে ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে যান সতীর্থ লুকাস ভাজকেস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে পাল্টা আক্রমণে বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে প্রথমবারের মত বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড।
শুরুতে ঝলক দেখানো রিয়াল এরপর আশা জাগিয়েছিল সমতা টানার। পেনাল্টি আদায় করেছিলেন এমবাপে। তবে তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা আর মেলেনি।
উল্টো ৪৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে রিয়াল। এবারও কেন্দ্রবিন্দু সেই ভাজকেসই। রিয়াল অধিনায়কের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল কেড়ে রাফিনিয়াকে পাস বাড়ান তরেস, ফাঁকায় থাকা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই উইঙ্গারের সমস্যা হয়নি জালের দেখা পেতে। লা লিগায় এটি মৌসুমে রাফিনিয়ার ১৮তম গোল ছিল।
অবিশ্বাস্য এক প্রথমার্ধে রিয়াল শুরুর দুই গোলের পর লক্ষ্যেই আর শটই রাখতে পারেনি। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা।
বিরতির পরও একই ছন্দ ধরে রাখে বার্সেলোনা। রিয়ালের জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগকে আরও একবার বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাফিনিয়া। ৫৩তম মিনিটে বাঁদিক থেকে তার পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইয়ামাল টোকা দিয়ে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আর মেলেনি গোল।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে এর তিন মিনিট পর একটা সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে, তবে শট উঁচিয়ে মেরে হতাশ করেন রিয়ালকে। পাল্টা আক্রমণ থেকে এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ানোর চেষ্টা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তবে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ক্লিয়ারিংয়ে।
শেষ পর্যন্ত এই জুটির হাত ধরেই গোল পায় রিয়াল। আরও একটি কাউন্টার এটাক থেকে বল পেয়ে দুজন এগিয়ে যান বার্সেলোনার বক্সে। নিজের সামনে সুযোগ থাকলেও গোলের সামনে এমবাপেকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করান ভিনিসিয়ুস। ২৭তম গোলের মাধ্যমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের তালিকায় রবার্ট লেভানদভস্কির চেয়ে দুই গোলে এগিয়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের আশা। ইয়ামালের ক্রসে ছিলেনও ভালো পজিশনে, তবে ছয় গজের ভেতর থেকে বল পোস্টের ওপর দিয়ে মেরে টিকিয়ে রাখেন রিয়ালের ম্যাচে ফেরার আশা।
আরও পড়ুন
ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
![]() |
জমে ওঠা ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বার্সেলোনা শিবিরে জোর দাবি ওঠে পেনাল্টির। বক্সের ভেতর অহেলিয়া চুয়ামেনির সম্ভাব্য হ্যান্ডবল সময় নিয়ে স্ক্রিনে দেখে রেফারি নাকচ করেন পেনাল্টির আবেদন। হাফ ছেঁড়ে বাচে রিয়াল।
৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে নামা তরুণ ফরোয়ার্ড ভিক্টর মুনজ প্রথম টাচেই পেয়েছিলেন হিরো হওয়ার সুযোগ। তবে লক্ষ্যে শট রাখলেই গোল, এমন পজিশন থেকে তিনি বল মেরে দেন পোস্টের বাইরে।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালকে আরও একবার পাল্টা আক্রমণে চমকে দেয় বার্সেলোনা। ৯৫তম মিনিটে কাট করে বক্সে ঢুকে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ায় বাতিল হয় সেই গোল। বাকি সময়ে কোনো দলই পারেনি বলার মত আর সুযোগ তৈরি করতে।
১৫ জুন ২০২৫, ২:৪৭ পিএম
১৩ জুন ২০২৫, ৭:৪১ পিএম
লুসিয়ানো স্পালেত্তিকে ছাঁটাইয়ের পর নতুন কোচ খুঁজে নিতে বেশি সময় নিচ্ছে না ইতালীয় ফুটবল ফেডারেশন (এফআইজিসি)। ইতালি জাতীয় ফুটবল দলের নতুন কোচ হিসেবে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন দেশটির সাবেক মিডফিল্ডার জেনারো গাত্তুসো, যা নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির প্রধান প্রতিনিধি জানলুইজি বুফন।
সবশেষ আন্তর্জাতিক বিরতিতে নরওয়ের কাছে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে হারের পর স্পালেত্তিকে বরখাস্ত করে এফআইজিসি। এরপর তার অধীনে শেষ ম্যাচে মোলডোভার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পায় ইতালি। এরপর অবশ্য পরবর্তী কোচ হিসেবে বেশি আলোচনায় এসেছিল ক্লাউদিও রানিয়েরির নাম। শেষ পর্যন্ত দায়িত্বটা পেতে যাচ্ছেন আরেক ইতালিয়ান কোচ গাত্তুসো।
সম্প্রতি ইতালির স্টেট ব্রডকাস্টার রাই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইতালির বিশ্বকাপ জয়ী গোলকিপার বুফন জানান গাত্তুরসোর নিয়োগের বিষয়টি। “আমরা এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা। প্রেসিডেন্ট আর পুরো ফেডারেশন বিষয়টি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। আমাদের বিশ্বাস, শেষ পর্যন্ত আমরা সেরা সিদ্ধান্তই নিয়েছি।”
৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ইতালি জাতীয় দলের হয়ে ৭৩টি ম্যাচ খেলেছেন। ছিলেন ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও। সবশেষ কোচ হিসেবে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ান ক্লাব হাজদুক স্প্লিটের দায়িত্বে। পারস্পরিক সমঝোতায় সেখান থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
আর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে, সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিয়নে খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে ভুমিকার মাধ্যমে। এরপর এসি মিলান, নাপোলি, ভ্যালেন্সিয়া, মার্সেইসহ বিভিন্ন ক্লাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তার কোচিং ক্যারিয়ারের একমাত্র শিরোপা আসে ২০২০ সালে, নাপোলির হয়ে জেতেন কোপা ইতালিয়া। এরপর ২০২১ সালে ফিওরেন্তিনায় দায়িত্ব নেওয়ার ২২ দিনের মাথায় বাতিল করেন চুক্তি।
ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে এখন থাকার কথা ছিল ইন্তার মিলান স্কোয়াডের সাথে। তবে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তেহরানে আটকে পড়েছেন দলটির ইরানিয়ান ফরোয়ার্ড মেহদী তারেমি। ইরান-ইসরায়েল চলমান উত্তেজনার কারণে তিনি সময়মতো ক্লাবে ফিরতে পারছেন না। ফলে মিস করতে যাচ্ছেন ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শুরুটা।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইন্তারের ক্লাবের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সেরি আ দলটির ক্লাব বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সময় এটা বড় এক ধাক্কাই।
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বিরতিতে দেশের হয়ে খেলতে ইরানে যান তারেমি। সেখানে গিয়ে তিনি উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে খেলেন। ওই ম্যাচে তিনি একটি গোল করেন, আর ইরাম ম্যাচটি জেতে ৩-০ ব্যবধানে।
আরও পড়ুন
বার্সেলোনায় ‘যোগ দিচ্ছেন’ স্প্যানিশ গোলরক্ষক গার্সিয়া |
![]() |
তবে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতির ঘটায় ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় ভ্রমণ জটিলতায় পড়ে গেছেন তারেমি। মিস করেছেন নির্ধারিত ফ্লাইট। কবে যোগ দিতে পারবেন ইন্তারের সাথে, তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চিয়তা। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইতালিতে না ফেরায় তাকে ছাড়াই ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাড়ি জমাচ্ছে ইন্তার।
এখন পর্যন্ত ৩২ বছর বয়সী তারেমির ব্যাপারে ইন্তার বা ইরান ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে শনিবার ইতালির শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়া দৈনিক লা গাজ্জেত্তা দেল্লো স্পোর্ত জানিয়েছে,
“ইরানিয়ান স্ট্রাইকার তারেমি ইন্টার মিলানের সাথে যোগ দিচ্ছেন না। প্রথম ম্যাচে না, এমনকি পরবর্তী কোনোটিতেও না।”
ইন্তার তাদের ক্লাব বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করবে আগামী মঙ্গলবার, মেক্সিকোর ক্লাব মনতের্রের বিপক্ষে। লা গাজ্জেত্তা দেল্লো স্পোর্তের দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে এই ম্যাচের পাশাপাশি পুরো আসরেও তারেমির খেলার সম্ভাবনা আর নেই।
গুঞ্জনটা বাতাসে ভাসছিল কয়েকদিন ধরেই। গত মৌসুমে লা লিগার অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হোয়ান গার্সিয়াকে দলে নিতে প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করে ফেলেছে বার্সেলোনা, খবর স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের। সব ঠিক থাকলে খুব দ্রুতই নাকি আসতে যাচ্ছে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
ইএসপিএন সূত্রের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করেছে, গার্সিয়াকে দলে টানার জন্য এস্পানিওলের সাথে তার চুক্তিতে থাকা ২৫ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করেছে বার্সেলোনা। কাতালান ক্লাবটি শুক্রবার এই অর্থ লা লিগার অ্যাকাউন্টে জমা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে। আশা করা হচ্ছে, দলবদলের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন
ক্লাব ফুটবলে ফ্রান্সেই প্রত্যাবর্তন পগবার? |
![]() |
২৪ বছর বয়সী গার্সিয়া বার্সার সঙ্গে ছয় বছরের জন্য চুক্তি করতে যাচ্ছেন, যা ২০৩১ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। গ্রীষ্মে যোগ দেওয়া হলেও মূল গোলরক্ষক হওয়াটা তার জন্য হবে কঠিন কাজই। কারণ, তাকে লড়তে হবে মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন, ভয়েচেখ শেজনি ও ইনাকি পেনিয়ার সাথে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কয়েকটি ক্লাবও নাকি গার্সিয়ার প্রতি আগ্রহী ছিল। গত গ্রীষ্মেও আর্সেনাল তাকে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আর এই বছর তাকে দলে পেতে যোগাযোগ করে ম্যানচেস্টার সিটি, অ্যাস্টন ভিলা, নিউক্যাসল ইউনাইটেড ও বোর্নমাউথও। তবে সব ক্লাবকে পেছনে ফেলে গার্সিয়াকে পরবর্তী ঠিকানা হিসেবে বেছে নিয়েছেন বার্সেলোনাকেই।
এস্পানিওল অবশ্য নিজেদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে গার্সিয়াকে হারাতে চায়নি। কিন্তু চুক্তিতে থাকা নির্ধারিত রিলিজ ক্লজের কারণে ও স্প্যানিশ এই গোলরক্ষকের ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার কারণে তারা কিছুই করতে পারেনি শেষ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন
রিয়ালে নাম লেখালেন আর্জেন্টিনার প্রতিভাবান মিডফিল্ডার মাস্তান্তুয়ানো |
![]() |
গত মৌসুমে লা লিগা সহ তিনটি ঘরোয়া শিরোপা জেতে বার্সেলোনা। মৌসুমের শুরুতে টের স্টেগেন চোটে পড়লে ক্লাবটিতে যোগ দেন শেজনি। এরপর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে এখন তিনি আছেন স্থায়ী চুক্তির খুব কাছাকাছি অবস্থানে।
দেড় বছরের বেশি মাঠের বাইরে থাকার পর আবারও প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ফেরার দ্বারপ্রান্তে পল পগবা। ইএসপিএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিগ ওয়ানের ক্লাব মোনাকোর সঙ্গে চুক্তির আলোচনায় রয়েছেন এই ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী এই মিডফিল্ডার।
পগবা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে টেস্টোস্টেরনের অতিরিক্ত মাত্রা ধরা পড়ায় চার বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন। আপিলের পর সেই নিষেধাজ্ঞা ১৮ মাসে নেমে আসে। তবে তার মাঠে ফেরাটা কঠিন হয়ে যায় সেই সময়ের ক্লাব য়্যুভেন্তাস গত নভেম্বরে চুক্তি বাতিল করায়। এরপর আর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি পগবা।
৩২ বছর বয়সী পগবা তাই এখন ফ্রি এজেন্ট। বিভিন্ন সময়ে সৌদি প্রো লিগ ও আসছে ক্লাব বিশ্বকাপে অংশ দলগুলোর তাকে নিয়ে আগ্রহের খবর এসেছে। তবে কোনোটাই পায়নি গতি। আর সবশেষ সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানিয়েছে, মোনাকোর সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে ফ্রান্সের ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী এই মিডফিল্ডারের।
পগবার ক্লাব ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ফ্রান্সেই। ২০০৯ সালে লে আভর ছেড়ে ১৬ বছর বয়সে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন। এরপর আর কখনই ফরাসি দলের হয়ে খেলেননি তিনি। ২০১১ সালে ইউনাইটেডের সিনিয়র দলে অভিষেক হলেও সেভাবে ম্যাচ খেলতে না পারায় ২০১২ সালে নাম লেখান য়্যুভেন্তুসে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সেখানে প্রথম দফায় জেতেন ৪টি সেরি আ শিরোপা।
এরপর ২০১৬ সালে তৎকালীন রেকর্ড ট্রান্সফার ফি-তে (৮৯ মিলিয়ন ইউরা) ইউনাইটেডে ফেরেন। জেতেন ইউরোপা লিগ ও লিগ কাপ। ২০১৮ সালে ফ্রান্সের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ২০২২ সালে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আবার ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ফেরেন য়্যুভেন্তুসে।
তবে চোটের কারণে সেভাবে খেলতেই পারেননি আর। উল্টো এসবের প্রভাবে মিস করেন ২০২২ বিশ্বকাপও। এরপর আসে বড় ধাক্কাটা। ডোপিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় ৪ বছরের নিষেধাজ্ঞা পান, যা পরে কমে আসায় টিকে যায় ক্যারিয়ার।
গুঞ্জনই শেষ পর্যন্ত হল সত্যি। আর্জেন্টিনার সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান ফুটবলার ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুয়ানোকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে টানার ঘোষণা দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। এর মধ্য দিয়ে স্প্যানিশ ক্লাবটি তরুণ এই ফুটবলারকে পাওয়ার ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পিএসজিকে।
রিয়াল শুক্রবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, মাস্তান্তুয়ানোর সাথে তাদের ছয় মৌসুমের চুক্তি হয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামী ১৪ আগস্ট থেকে ২০৩১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই রিভার প্লেটের জার্সিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিহে আলোচনায় জন্ম দিয়েছেন মাস্তান্তুয়ানো। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আর্জেন্টাইন ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে গোলদাতা হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়ে লিভারপুলে যোগ দিচ্ছেন ভির্টস |
![]() |
মাস্তান্তুয়ানো রিভার প্লেটের একাডেমিতে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খেলেছেন। তাকে ক্লাবটির ভবিষ্যৎ তারকা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। ফলে ২০২৪-২৫ মৌসুমে জায়গা করে নেন রিভার প্লেটের সিনিয়র দলের সদস্য। দলটির হয়ে জিতেছেন আর্জেন্টাইন সুপার কাপ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্জনের মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেকের।
এই কারণেই রিয়ালের বেশ আগে থেকেই তাকে দলে পাওয়ার লড়াইয়ে ছিল পিএসজি। আলোচনা এগিয়ে গিয়েছিল অনেকদূরও। তবে গেল দুই সপ্তাহে রিয়াল আগ্রহ দেখানোর পরই বদলে যায় চিত্র। আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথেই সম্মতি জানান মাস্তান্তুয়ানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে দলে পাওয়ার জন্য কয়েক কিস্তিতে ৪৫ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করবে রিয়াল।
১ দিন আগে
৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২১ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে
২৮ দিন আগে