১১ মে ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হচ্ছিল, মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ভিন্ন ছন্দেই হাজির রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম দিকে এলেমেলো ফুটবল খেলা বার্সেলোনা খুব দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিল। বিরতির আগেই চার গোল খেয়ে বসা রিয়ালের হয়ে একাই লড়ে গেলেন কিলিয়ান এমবাপে, করলেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। তবে কার্লো আনচেলত্তির দলের রক্ষণভাগের ভুলে যাওয়ার মত এক ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ইয়ামাল-রাফিনিয়ারাই। আর তাতে চলে গেল লা লিগা জয়ের আরও কাছে।
লা লিগায় রোববারের এল ক্লাসিকোর মহারণে আরও একবার বার্সেলোনার কাছে হেরেছে রিয়াল। ৪-৩ গোলে দুর্দান্ত জয়ে মৌসুমে রিয়ালকে টানা চার ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ উপহার দিল ফ্লিকের দল।
আরও পড়ুন
| ‘ইয়ামাল বাচ্চা না, এমন পারফরম্যান্সই চায় বার্সা’ |
|
এই জয়ে বার্সেলোনার লিগ জয়ও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তিন ম্যাচ হাতে রেখে ৮২ পয়েন্ট কাতালান ক্লাবটির। আর দুইয়ে থাকা রিয়ালের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
লা লিগায় বড় ধরণের নাটকীয়তা না দেখা দিলে এই হারে নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়ালের শিরোপাহীন মৌসুম। দুই দফায় রিয়ালকে অসাধারণ সব সাফল্য এনে দেওয়া আনচেলত্তির জন্য শেষটা হতে যাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মতোই।
ম্যাচে রিয়ালের শুরুটা অবশ্য হয় স্বপ্নময়। পাউ কুবার্সির দুর্বল ব্যাকপাস থেকে বল পেয়ে গতিতে বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন এমবাপে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন গোলকিপার ওয়েজেচ সেজনি। পেনাল্টির বাঁশি সাথে সাথেই বাজিয়ে দেন রেফারি। ফরাসি তারকার বাঁদিকে নেওয়া নিচু শটে হাত লাগালেও আটকাতে পারেননি সেজনি।
এটি ছিল চলতি মৌসুমে লিগে এমবাপের ২৫তম গোল। লিড নিয়ে রিয়াল অব্যাহত রাখে ইতিবাচক ফুটবল। একের পর পর আক্রমণ শানায় দলটি। বিপরীতে ফ্লিকের দল গুছিয়ে নিতেই নষ্ট করে কিছুটা সময়।
নবম মিনিটে বলার মত প্রথম আক্রমণে বক্সের ভেতর কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নিয়েছিলেন এরিক গার্সিয়া, তবে রিয়ালের জন্য তা বিপদের কারণ হয়নি।
১৪তম মিনিটে ফের বার্সেলোনার জালে বল, আর এবারও স্কোরার সেই এমবাপেই। তবে বল বানিয়ে দেওয়ার একটা বড় কৃতিত্ব পাবেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। প্রায় মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ডিফেন্সচেড়া পাসে খুঁজে নেন ফ্রানের বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে। বল রিসিভ করে জায়গা বানিয়ে সেজনিকে পরাস্ত করে রিয়ালের লিড বড় করেন এমবাপে।
গোলের লক্ষ্যে প্রথম দুই শট থেকেই জালের দেখা পাওয়া রিয়ালের আক্রমণের সামনে সেই সময়ে বেকায়দায় ছিল বার্সেলোনা। ১৮তম মিনিটে বক্সের একটু বাইরে থেকে লামিন ইয়ামালের কার্লিং শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ব্লক করেন থিবো কোর্তোয়া।
পরের মিনিটে আরেকটি ভালো সেভ দিলেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয় কোর্তোয়াকে। ফেররান তরেসের কর্নার কিক থেকে হেডারে জাল খুঁজে নেন এরিক গার্সিয়া, যিনি কোপা দেল রের ফাইনালেও রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন।
আরও পড়ুন
| আবেগে ভেসে, চোখের জলে বায়ার্নকে বিদায় জানালেন কিংবদন্তি মুলার |
|
এক গোল শোধ দিয়ে ক্রমেই রিয়ালকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। খেই হারিয়ে ফেলা রিয়ালের খর্বশক্তির রক্ষণের জন্য গতিময় ইয়ামালকে সামলানো শুরু থেকেই ছিল কঠিন। ৩২তম মিনিটে তরেসের পাস থেকে কাট করে বক্সের ভেতর বাঁদিক থেকে বা পায়ের কোনাকুনি এক শটে গোল করেন স্প্যানিশ এই উইঙ্গার, লা লিগায় এটি এই মৌসুমে ইয়ামালের সপ্তম গোল।
পরপর দুই গোলের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল, যেখানে ফুটে ওঠে তাদের ছন্দপতন। বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন এমবাপে, তবে ঠিক তার সামনে দাঁড়িয়ে যান সতীর্থ লুকাস ভাজকেস। দুজনের ভুল বোঝাবুঝি থেকে পাল্টা আক্রমণে বল পেয়ে যান রাফিনিয়া। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে প্রথমবারের মত বার্সেলোনাকে লিড এনে দেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড।
শুরুতে ঝলক দেখানো রিয়াল এরপর আশা জাগিয়েছিল সমতা টানার। পেনাল্টি আদায় করেছিলেন এমবাপে। তবে তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা আর মেলেনি।
উল্টো ৪৫তম মিনিটে আরেক গোল খেয়ে বসে রিয়াল। এবারও কেন্দ্রবিন্দু সেই ভাজকেসই। রিয়াল অধিনায়কের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল কেড়ে রাফিনিয়াকে পাস বাড়ান তরেস, ফাঁকায় থাকা দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই উইঙ্গারের সমস্যা হয়নি জালের দেখা পেতে। লা লিগায় এটি মৌসুমে রাফিনিয়ার ১৮তম গোল ছিল।
অবিশ্বাস্য এক প্রথমার্ধে রিয়াল শুরুর দুই গোলের পর লক্ষ্যেই আর শটই রাখতে পারেনি। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে বার্সেলোনা।
বিরতির পরও একই ছন্দ ধরে রাখে বার্সেলোনা। রিয়ালের জোড়াতালি দেওয়া রক্ষণভাগকে আরও একবার বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাফিনিয়া। ৫৩তম মিনিটে বাঁদিক থেকে তার পাস থেকে ফাঁকায় দাঁড়ানো ইয়ামাল টোকা দিয়ে বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে আর মেলেনি গোল।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে এর তিন মিনিট পর একটা সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে, তবে শট উঁচিয়ে মেরে হতাশ করেন রিয়ালকে। পাল্টা আক্রমণ থেকে এরপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে ডান দিক থেকে ক্রস বাড়ানোর চেষ্টা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, তবে সেটা বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেনের ক্লিয়ারিংয়ে।
শেষ পর্যন্ত এই জুটির হাত ধরেই গোল পায় রিয়াল। আরও একটি কাউন্টার এটাক থেকে বল পেয়ে দুজন এগিয়ে যান বার্সেলোনার বক্সে। নিজের সামনে সুযোগ থাকলেও গোলের সামনে এমবাপেকে দিয়ে হ্যাটট্রিক করান ভিনিসিয়ুস। ২৭তম গোলের মাধ্যমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের তালিকায় রবার্ট লেভানদভস্কির চেয়ে দুই গোলে এগিয়ে যান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
৭৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৫-৩ করার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন রাফিনিয়া। তার সামনেও ছিল হ্যাটট্রিকের আশা। ইয়ামালের ক্রসে ছিলেনও ভালো পজিশনে, তবে ছয় গজের ভেতর থেকে বল পোস্টের ওপর দিয়ে মেরে টিকিয়ে রাখেন রিয়ালের ম্যাচে ফেরার আশা।
আরও পড়ুন
| ড্র করে সুযোগ মিসের হতাশায় গার্দিওলা |
|
জমে ওঠা ম্যাচের ৮২তম মিনিটে বার্সেলোনা শিবিরে জোর দাবি ওঠে পেনাল্টির। বক্সের ভেতর অহেলিয়া চুয়ামেনির সম্ভাব্য হ্যান্ডবল সময় নিয়ে স্ক্রিনে দেখে রেফারি নাকচ করেন পেনাল্টির আবেদন। হাফ ছেঁড়ে বাচে রিয়াল।
৮৮তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের বদলি হিসেবে নামা তরুণ ফরোয়ার্ড ভিক্টর মুনজ প্রথম টাচেই পেয়েছিলেন হিরো হওয়ার সুযোগ। তবে লক্ষ্যে শট রাখলেই গোল, এমন পজিশন থেকে তিনি বল মেরে দেন পোস্টের বাইরে।
গোলের জন্য মরিয়া রিয়ালকে আরও একবার পাল্টা আক্রমণে চমকে দেয় বার্সেলোনা। ৯৫তম মিনিটে কাট করে বক্সে ঢুকে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান ফেরমিন লোপেজ। তবে হ্যান্ডবল হওয়ায় বাতিল হয় সেই গোল। বাকি সময়ে কোনো দলই পারেনি বলার মত আর সুযোগ তৈরি করতে।
No posts available.
৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম

দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ। আগামী বছর জুনে বসছে বিশ্বফুটবলের সবচেয়ে বড় মহারণ। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ২৮টি দেশ। এর মধ্যে আজ একসাথে ২২টি দেশের জার্সি উন্মোচন করেছে অ্যাডিডাস। যেসব ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাদের জার্সি প্রকাশ করেছে বিশ্বের অন্যতম ক্রীড়া সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্বকাপের জন্য নতুন জার্সি উন্মোচনের তালিকায় রয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, জার্মানি। অতীতের গৌরব আর আধুনিকতার ছোঁয়া মিলিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে লিওনেল মেসিদের নতুন জার্সি।
নতুন এই জার্সিতে থাকছে আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী আকাশি ও সাদা রঙের মিশ্রণ। ক্লাসিক নীল ডোরাকাটার উপর রাখা হয়েছে গ্রেডিয়েন্ট ইফেক্ট, অর্থাৎ মোটা নীল স্ট্রাইপের মাঝামাঝি থাকবে হালকা রঙের মিশ্রণ। নকশাটি ১৯৭৮, ১৯৮৬ ও ২০২২ সালের তিনটি বিশ্বকাপজয়ী জার্সির রঙ থেকে অনুপ্রাণিত।
গলার পেছনে যোগ করা হয়েছে বিশেষ এক স্মারক চিহ্ন ‘১৮৯৬’। এটি আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) প্রতিষ্ঠাবর্ষের প্রতীক।
এএফএ জানিয়েছে, এই জার্সি কেবল পোশাক নয়, বরং আর্জেন্টাইন ফুটবলের ইতিহাস ও গর্বের প্রতিফলন।
আগামী বছরের ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত চলবে বিশ্বকাপের ২৩তম আসর। তবে এখনও বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত হয়নি। বাছাইপর্বের খেলা শেষে আগামী ৫ ডিসেম্বর ড্র অনুষ্ঠিত হবে ওয়াশিংটন ডিসিতে।

আগামী ১৫ ও ১৯ নভেম্বর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সুইজারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার মুখোমুখি হবে সুইডেন। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই ম্যাচের জন্য আজ দল ঘোষণা করেছেন কোচ গ্রাহাম পটার।
পটারের ঘোষিত দলে জায়গা পেয়েছেন আলেকজান্ডার ইসাক। তবে বাদ পড়েছেন আর্সেনাল স্ট্রাইকার ভিক্টর ইয়োকেরেস।
হ্যামস্ট্রিং চোটে ভুগছেন ইয়োকেরেস। গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নস লিগে সেভিয়ার বিপক্ষে বেঞ্চে বসেই খেলা দেখেছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, বেশ কিছুদিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। তাই ঝুঁকি নিতে চাননি কোচ পটার।
অন্যদিকে, কুঁচকির চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন ইসাক। সবশেষ ২২ অক্টোবর অল রেডসের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন তিনি। তবে সুইজারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই ফিরছেন এই তারকা স্ট্রাইকার।
টটেনহ্যামের মিডফিল্ডার লুকাস বার্গভাল মাথায় আঘাত থেকে সেরে উঠছেন। নিউক্যাসলের উইঙ্গার অ্যান্থনি এলাঙ্গাও দারুণ ফর্মে আছেন। দুইজনকেই দলে ডেকেছেন সাবেক ব্রাইটন, চেলসি ও ওয়েস্ট হ্যাম কোচ গ্রাহাম পটার।
মাঠের পরিস্থিতি খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয় সুইডেনের। গ্রুপ ‘বি’-এর সর্বনিম্ন স্থানে রয়েছে তারা। চার ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট দলটির।
তবুও আশা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি সুইডেনের। সর্বশেষ নেশনস লিগে ভালো পারফরম্যান্সের কারণে, এখনো বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা ধরে রেখেছে সুইডেন।
গোলকিপার:
ভিক্টর জোহানসন, ক্রিস্টোফার নর্ডফেল্ট, নোয়েল টর্নকভিস্ট, জ্যাকব উইডেল জেটারস্ট্রম
ডিফেন্ডার:
গ্যাব্রিয়েল গুডমুন্ডসন, ইসাক হিয়েন, এমিল হোল্ম, গুস্তাফ লাগারবিয়েলকে, ভিক্টর লিন্ডেলফ, কেন সেমা, কার্ল স্টারফেল্ট, ড্যানিয়েল স্বেনসন
মিডফিল্ডার ও ফরোয়ার্ড:
তাহা আলী, ইয়াসিন আয়ারি, রুনি বার্দগজি, লুকাস বার্গভাল, আলেকজান্ডার বার্নহার্ডসন, অ্যান্থনি এলাঙ্গা, আলেকজান্ডার ইসাক, জেসপার কার্লস্ট্রম, হুগো লারসন, ইসাক লিডবার্গ, গুস্তাভ লুন্ডগ্রেন, বেনজামিন নিয়গ্রেন, ম্যাটিয়াস স্বানবার্গ, বেসফোর্ট জেনেলি

নভেম্বরে মাঝামাঝিতে দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ফুটবল দল। ১৩ তারিখ জাতীয় স্টেডিয়ামে হামজা চৌধুরীদের প্রীতি ম্যাচে অতিথি নেপাল। ৫ দিন পর এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবেন তাঁরা।
এই দুই ম্যাচের জন্য আজ সন্ধ্যায় ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
আগে থেকেই জানা ছিল, এশিয়ান কাপের ম্যাচে থাকছেন না ফাহামিদুল ইসলাম। দুই হলুদ কার্ডের কারণে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় রয়েছেন তিনি। নেপাল ম্যাচের জন্য ফাহামিদুলকে উড়িয়ে আনা প্রয়োজন মনে করেননি কোচ হাভিয়ের কাবরেরা।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারত গত অক্টোবরে সিঙ্গাপুরের কাছে ১–২ গোলে হেরে ‘সি’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে নেমে গেছে। চার ম্যাচে তাদের পয়েন্ট দুই। বাংলাদেশও দুই পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে। গ্রুপের শীর্ষে অবস্থান করছে হংকং ও সিঙ্গাপুর, যারা আট পয়েন্ট নিয়ে মূল পর্বের দৌড়ে দারুণভাবে টিকে আছে।
বাংলাদেশ দল
গোলকিপার:
মিতুল মারমা, সুজন হোসেন, পাপ্পু হোসেন, মেহেদী হাসান।
ডিফেন্ডার:
তারিক কাজী, রহমত মিয়া, শাকিল আহাদ, আবদুল্লাহ ওমর, শাকিল হোসেন, জায়ান আহমেদ, তপু বর্মণ, তাজ উদ্দিন, সাদ উদ্দিন।
মিডফিল্ডার:
কাজেম শাহ, শেখ মোরছালিন, জামাল ভূঁইয়া, সোহেল রানা (সিনিয়র), সোহেল রানা (জুনিয়র), মোহাম্মদ হৃদয়, হামজা চৌধুরী, সমিত সোম।
ফরোয়ার্ড:
মোহাম্মদ ইব্রাহিম, আল আমিন, আরমান ফয়সাল, শাহরিয়ার ইমন, ফয়সাল আহমেদ, রাকিব হোসেন

সপ্তাহখানেক আগে সংবাদমাধ্যমে সয়লাভ লামিন ইয়ামাল আর নিকি নিকোলের প্রেমের বিচ্ছেদ। তবে সেই রেশ না কাটতেই নতুন করে আলোচনায় বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ডের বাবার বাগদান সম্পন্ন।
মার্কা, ডেইলি মেইল ও দ্য সানের প্রতিবেদন, ইয়ামালের ৩৫ বছর বয়সী বাবা মুনির নাসরাউই সম্প্রতি বাগদান সম্পন্ন করেছেন ২৩ বছর বয়সী নারী ক্রিস্টিনার সঙ্গে। যিনি ১৮ বছর বয়সী ইয়ামালের চেয়ে পাঁচ বছরের বড়।
নাসরাউই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় মুখ। বাগদানের খবর জানিয়েছেন এক আবেগঘন পোস্টে। বারান্দায় ক্রিস্টিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ছবি দিয়ে, ক্যাপশনে জুড়ে দিয়েছেন ‘ব্লাক লাভ ও আংটির’ ইমোজি—যা ভক্তদের মধ্যে বিয়ের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
নাসরাউই ও ক্রিস্টিনার সম্পর্ক কবে শুরু হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়। তবে গত কয়েক মাসে ক্রিস্টিনাকে একাধিকবার নাসরাউইয়ের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে দেখা গেছে।
অন্যদিকে ছেলে ইয়ামালের ব্যক্তিগত জীবনে চলছে উল্টো স্রোত। বার্সেলোনার এই তারকা ফরোয়ার্ড সম্প্রতি বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন তাঁর আর্জেন্টাইন গায়িকা প্রেমিকা নিকি নিকোলের সঙ্গে। ২৫ বছর বয়সী নিকি নাসরাউইয়ের হবু স্ত্রীর চেয়েও দুই বছর বড়।
নাসরাউইয়ের জীবনে এটি নতুন সুখের অধ্যায় হলেও কয়েক মাস আগেই তিনি পেরিয়েছেন এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। গত আগস্টে বার্সেলোনার উত্তরের শহর মাতারোতে নিজের কুকুর হাঁটাতে বেরিয়ে ছুরিকাহত হন তিনি। তর্কের জের ধরে কয়েকজনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন, এবং পরে তাঁকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে স্থানীয় পুলিশ।
ভাগ্য সহায় শেষ পর্যন্ত তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে নাসরাউই বলেন,
‘সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় এখন অনেকটা ভালো আছি। ভয় পেয়েছিলাম, মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু এখন শুধু চাই শান্তি আর ন্যায়বিচার।’
মুনির নাসরাউই দীর্ঘদিন ধরেই ছেলের সবচেয়ে বড় সমর্থক। ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে যখন স্পেন শিরোপা জেতে, তখনও ছেলের পাশে ছিলেন তিনি। সেই টুর্নামেন্টেই ইয়ামাল ছিলেন দলের উজ্জ্বলতম তারকা।
বাবা নাসরাউই বরাবরই বিশ্বাস করেন, তাঁর ছেলে একদিন হবেন বিশ্বের সেরা ফুটবলার। ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে বলেন, ‘লামিন ইয়ামাল এখনই বিশ্বের সেরা ফুটবলার। আগামী বছর এই পুরস্কার ওরই হবে।’ব্যালন ডি’অর না পেলেও ইয়ামাল পেয়েছেন কোপা ট্রফি—বছরের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
৫ নভেম্বর ২০২৫, ৭:৫৩ পিএম

আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভার প্লেটের হয়ে শুরু। এরপর ফ্রি ট্রান্সফারে যোগ দেন স্পেনের ক্লাব দেপোর্তিভো আলাভেসে। সেখান থেকে লোনে ক্লাব মিরান্দেসে। লোন শেষে ফেরেই স্ট্রাসবুর্গে পাড়ি জমান আর্জেন্টিনার ২৩ বছর বয়সি জোআকুইন পানিচেলি।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এবং ক্লাব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে নিজেকে আরও বেশি পরিণত করেছেন পানিচেলি। স্ট্রাসবুর্গের নতুন মৌসুমে প্রায় প্রতি ম্যাচেই গোল উপহার দিচ্ছেন, তৈরি করছেন সুযোগ। এখন পর্যন্ত লিগ ওয়ানে ১১ ম্যাচে মাঠে নেমে ৯ গোল করেছেন পানিচেলি। মোট ৮৬৮ মিনিট খেলেছেন। ১০ ম্যাচে ছিলেন শুরুর একাদশে।
২০২৪-২৫ মৌসুমে দেপোর্তিভো মিরান্দেসে থাকাকালীনও পানিচেলির পারফরম্যান্স ছিল বেশ উজ্জ্বল। ৪৪ ম্যাচে ২১ গোল করেছেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। অ্যাসিস্ট ছিল ৮টি। রেটিং ধরে রেখেছেন ৭.৩।
অথচ ২০২২-২৩ সালে গোল খরায় ছিলেন পানিচেলি। ছিলেন অবহেলিত। তবে স্ট্রাসবুর্গে লিয়াম রৌশনির ছায়ায় এসে বদলে যান। ফ্রান্সের ক্লাবের হয়ে মোট ৩১টি অন-টার্গেট শট ছিল পানিচেলির। যেখান থেকে লক্ষ্যভেদ করতে পারেন ৯টি।
শুধু গোল করেই স্ট্রাসবুর্গ কিংবা কোচ রৌশনি-কে সন্তুষ্ট করেননি তিনি। অ্যাকুরেট পাস, চান্স ক্রিয়েট করা, শট অ্যাটাম্পটস কিংবা এরিয়াল ডুয়েলে তার আধিক্যও চোখে পড়ার মতো। এসময় প্রায় ৯৫ শতাংশ এরিয়াল ডুয়েল জিতেছেন পানিচেলি। বল টাচেস ছিল ৭০ শতাংশ। চান্স ক্রিয়েট করেছেন ৬৯ শতাংশ। শট অ্যাটাম্পটস ৭৬ শতাংশ।
পানিচেলির আরও একটি বড় গুণ—এগ্রেসিভনেস। ২০২৫-২৬ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৮টি ফাউল করেছেন তিনি। তাকে রুখা কতটা কষ্টসাধ্য, সেটা এই সংখ্যা প্রমাণ করে। অথচ এই ফাউলগুলোর জন্য মাত্র একবার হলুদ কার্ড দেখেছেন তিনি।
গত ১৮ অক্টোবর প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের বিপক্ষে ম্যাচে আরও বেশি আলোচনায় আসেন পানিচেলি। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সে ৩-৩ গোলের ড্রয়ের দিনে দুটি গোল আসে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের পা থেকে। ফুটবলে তার রেটিং ছিল ৯.২। ম্যাচসেরাও ছিলেন তিনি।
পানিচেলির এমন উত্থান ও পারফরম্যান্সে যারপরনাই আনন্দিত কোচ রৌশনি। সে ম্যাচে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের হেডের দক্ষতা নিয়ে তিনি বলেছিলেন,
“আমার জীবদ্দশায় তার এই ম্যাচের হেডটি ছিল সবচেয়ে সেরা। শুধু তাই নয়, সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড হিসেবে তার পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ।”
মাঠের পারফরম্যান্সই নয়, রৌশনি মুগ্ধ পানিচেলির ব্যক্তিত্ব নিয়েও, “সে অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। তার জন্য আমার গর্ব হয়।”
এমন পারফরম্যান্সের কারণে নিশ্চয়ই শিগগিরই নতুন কোনো বড় ক্লাবের দরজা খুলে যাবে পানিচেলির। গুঞ্জন উঠেছে, লা লিগার ক্লাব বার্সেলোনা নজরে রেখেছে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারকে। রবার্ট লেভানডফস্কির বিদায়ে তাঁকে ভিড়াতে পারেন হ্যান্সি ফ্লিক। যদিও এক্ষেত্রে হুলিয়ান আলভারেজ ও ইংলিশ তারকা হ্যারি কেইন এগিয়ে।
ইতালির সিরি আ-তে সুযোগ মিলতে পারে পানিচেলির। বিশেষ করে এসি মিলানকে বারবারই হতাশ করছেন সান্তিয়াগো গিমেনেজ। সেখানেও ডাক পড়তে পারে তাঁর। দেখার বিষয়, পানিচেলির নতুন ক্লাব কোনটি। আপাতত অপেক্ষা করা যাক।