৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৪৭ এম
ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুটা রাঙিয়েছেন যশভি জয়সওয়াল। টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই ব্যাটার। দিনের বাকিটা সময় ভারতের হয়ে নিজের সেরাটা দিয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। এই দুই ক্রিকেটারের কাঁধে চড়ে দ্বিতীয় দিন শেষে বেশ ভালো অবস্থানে ভারত।
জয়সওয়াল আগের দিন থেমেছিলেন নামের পাশে ১৭৯ রান নিয়ে। আজ সকালে বাকি কাজটাও করেছেন ঠিকঠাক। সকালেই তুলে নিয়েছেন নিজের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। অথচ ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটার খেলতে নেমেছেন নিজের ষষ্ঠ টেস্ট ম্যাচ।
আরও পড়ুন: জয়সওয়াল, এক মহাতারকার আগমণ
তার ব্যাটে অবশ্য সেই ছাপ নেই একটুও। প্রথম ইনিংসে ভারতকে রীতিমত একাই টেনেছেন। ২৯০ বল থেকে করেছেন ২০৯ রান। অথচ এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস এসেছে গিলের ব্যাট থেকে। তিনি করেছেন মাত্র ৩৪ রান।
ফলে জয়সওয়ালের ব্যাটে চড়েও প্রথম ইনিংসে ভারত করেছে ৩৯৬ রান। এরপর ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নামলে, তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিলেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
ইংল্যান্ডের ওপেনার জ্যাক ক্রলি অবশ্য শুরুটা ভালোই করেছিলেন। এই ব্যাটার মাত্র ৭৮ বল থেকে করেছেন ৭৬ রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস এসেছে বেন স্টোকসের ব্যাট থেকে।
ভারতের সেরা বোলার বুমরাহ একাই নিয়েছেন ইংল্যান্ডের ৬ উইকেট। এই পেসার ১৫.৫ ওভার বল করে খরচ করেছেন মাত্র ৪৫ রান। ইংল্যান্ডকে অল আউট করার জন্য তিনিই ছিলেন যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: ৩৩৬ রান করে দিন শেষ করেছে ভারত, ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায় জয়সওয়াল
বুমরাহর বোলিং এর সামনে পুরো দিন ব্যাটিং করতে পারেনি ইংল্যান্ড। অল আউট হয়েছে মাত্র ২৫৩ রান করে। ফলে দ্বিতীয় দিনেই আবার ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছে ভারতকে।
শেষ বেলায় ব্যাট করতে নেমে ভারত অবশ্য কোনো ভুল করেনি। দুই ওপেনার জয়সওয়াল ও রোহিত দিন শেষ করে এসেছেন। ৫ ওভার ব্যাটিং করে এই দুজন যোগ করেছেন ২৮ রান। ফলে ১৭১ রানের বোর লিড নিয়েই তৃতীয় দিন মাঠে নামবে ভারত।
৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৬ পিএম
৫ জানুয়ারি ২০২৫, ৫:২৯ পিএম
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ঢাকা পর্বের প্রথম ধাপ শেষে অপেক্ষা এখন সিলেট পর্ব শুরুর। বরাবরই সিলেট উপহার দিয়ে আসছে বিপিএলের সেরা সব মুহূর্তের। অনেকের কাছেই বিপিএল যেন ভিন্ন মাত্রা হয় সিলেট পর্বেই এসেই। স্টেডিয়ামের চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য, দর্শক উন্মাদনা, স্পোর্টিং উইকেট - সব মিলিয়ে সিলেটে বিপিএলে মানেই অন্যরকম একটি আবহ। রাত পোহালেই মাঠে গড়াবে এই পর্বের প্রথম ম্যাচ। তার আগে দেখে নেওয়া যাক, এখন পর্যন্ত পরিসংখ্যানে দল ও খেলোয়াড়দের কার কী অবস্থান।
একবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্স এবারের আসলে খেলতে এসেছে গ্লোবাল সুপার লিগে দুর্দান্ত সাফল্যকে সঙ্গী করে। পাঁচ দলের এই টুর্নামেন্টে শিরোপা ঘরে তুলে প্রস্তুতিটা দারুণ হয় দলটির। সেই ধারা বজায় রয়েছে বিপিএলেও। প্রথম তিন ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে সবার ওপরেই আছে নুরুল হাসান সোহানের দল। এর মধ্য উল্লেখযোগ্য শেষ ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে দাপুটে জয়। একপেশে লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসে ৮ উইকেটের জয়ে।
রংপুরের জন্য এই জয়ের ইতিবাচক দিল ছিল টপ অর্ডারের দুই ব্যাটার অ্যালেক্স হেলস ও সাইফ হাসানের ফর্মে ফেরা। প্রথমজন এক রানের জন্য ফিফটি মিস করলেও দ্বিতীয় জন হাঁকান ফিফটি। এর আগে প্রথম দুই ম্যাচে হাল ধরেন দুই পাকিস্তানি ব্যাটার খুশদিল শাহ, ইফতেখার আহমেদ ও অধিনায়ক সোহানরা। দলটির বোলাররাও আছেন ছন্দে।
স্পটলাইট অবশ্য একজনের দিকেই। তিনি গতিময় পেসার নাহিদ রানা। গতির ঝড় তুলে ঢাকা পর্ব মাতিয়েছেন তরুণ এই পেসার। এরই মধ্যে একবার চার উইকেট পেয়ে হয়েছেন প্রথমবার ম্যাচ সেরাও। সিলেট পর্বেও সবার চোখ থাকবে রংপুরের ম্যাচে নাহিদের দিকেই তাই।
নাহিদের মত গতি দিয়ে হয়ত আলোচনায় আসতে পারবেন না তাসকিন আহমেদ, তবে বল হাতে যে স্বপ্নের ফর্মে আছেন, সেটা এড়িয়ে যাওয়া আসলেই অসম্ভব। দুর্বার রাজশাহীর এই পেসার খেলেছেন তিন ম্যাচে। ওভার প্রতি মাত্র ৬ রান দিয়ে মাত্র ৬ গড়ে নিয়েছেন ১২ উইকেট। এর মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় স্পেল উপহার দেন ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে। মাত্র ১৯ রানে নেন ৭ উইকেট, যা এখন বিপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলিং ফিগার। এছাড়াও এটি স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা বোলিং ফিগারও এখন।
১২ উইকেট নিয়ে তাসকিন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীদের তালিকায় আছেন শীর্ষে। দুইয়ে ও তিনে আছেন রংপুরের দুজন খুশদিল (৭ উইকেট) ও নাহিদ (৬ উইকেট)। এছাড়াও ৬ উইকেট রয়েছে যৌথভাবে খুলনা টাইগার্সের আবু হায়দার রনিরও।
ব্যাটারদের মধ্যে ঢাকা পর্বে ধারাবাহিকভাবে আলো ছড়িয়েছেন এনামুল হক বিজয়। রাজশাহীর অধিনায়ক তিন ম্যাচে ১৩৭.৭৩ স্ট্রাইক রেট ও ৭৩ গড়ে করেছেন ১৪৬ রান। সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ৭৩। তার পরের চারটি অবস্থান যথাক্রমে চিটাগং কিংসের উসমান খান (২ ম্যাচে ১৪২), ঢাকার থিসারা পেরেরা (৩ ম্যাচে ১৪১) ও ইয়াসির আলি (৩ ম্যাচে ১৩২)।
সিলেটে রংপুর রাইডার্সের অনুশীলনে হাতে নেওয়া নতুন বলটার মতোই চকচকে নাহিদ রানার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার। ২০২৩ সালের ২৪ জানুয়ারি মিরপুরে শুরু। আরেকটি ২৪ জানুয়ারির প্রাক্কালে নতুন না বলে আর উপায় আছে?
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বল করেছেন মোটে ৮ ইনিংস। ২৯ ওভার আর ১০ উইকেটের একটা ছোট্ট ক্যারিয়ার। তাতেই এই বিপিএলের সবচেয়ে আলোচিত চরিত্রের একজন হয়ে গেছেন নাহিদ। তাসকিন আহমেদের মত ৭ উইকেট বা ফাইফার পাননি। তবে করেছেন তো অনেক কিছুই। সেটা স্রেফ গতি দিয়েই। দুই অক্ষর আর এক শব্দের গতিই চাঁপাই এক্সপ্রেসের প্রিয় শব্দ।
মিরপুরে আমির আমজার উইকেটে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের শুরু হয়েছিল নাহিদের। এরপর এই সিলেটেই দেখেন ক্রিকেটের নিষ্ঠুরতা। বিপিএলেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের লিটন দাস, মোহাম্মদ রিজওয়ানরা নাহিদকে বাধ্য করেন চার ওভারে ৪৯ রান দিতে। এরপর অবশ্য আর চল্লিশ স্পর্শ করেনি রানার বোলিং ফিগার।
ঘন্টায় নিয়মিত ১৪০ কিলোমিটার গতির বল ছুঁড়তে পারেন। এটাই রানার সবচেয়ে প্রিয় অভ্যাস। এই অভ্যাসেই বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে এখনই আলোচিত এক নাম তিনি। টেস্টে জাত চিনিয়েছেন, ওয়ানডে অভিষেকেও তাই। টি-টোয়েন্টিতে যদিও আছেন অপেক্ষায়।
নাহিদের গতিময় বোলিংয়ের ভক্ত ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও। এক্স প্ল্যাটফর্ম জুড়ে তার গতির প্রশংসা। নিজেও জানেন শক্তির জায়গা কিসে, বিপিএলেও করে যাচ্ছেন পারফর্ম। উইকেট শূন্য বিপিএলটা শুরু হলেও পরেরটায় ৪, এরপরে দুই। রংপুরে তিনে তিন, রানারও অবদান রয়েছে দারুণ। বরিশাল ম্যাচ কিংবা সিলেট। ভুগিয়েছেন নামি ব্যাটারদেরও।
এই বিপিএলে রানার চেয়ে বেশি উইকেট আছে দুজনের। ৬.৩৬ ভদ্রস্থ ইকোনমি, প্রতি ১১টা বলে নিয়েছেন একটা করে উইকেট। সেই সিলেট, যে সিলেট রানা শিখিয়েছিল ক্রিকেট বাস্তবতা। ৪৯ রান খরচের রানা সিলেটেই তো ফিরতে চাইবেন গতির ঝড় তুলতে।
নিজের ব্যাট উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রে বরাবরই উদার তামিম ইকবাল সিলেটে ফরচুন বরিশালের অনুশীলনে মোহাম্মদ নবীকে নিজের লাখ টাকার ব্যাট এগিয়ে দিয়ে বললেন, ‘নবী ভাই, এই ব্যাটে মেরে দেখুন’। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে দামী ব্যাট ব্যবহার করা অভিজ্ঞ এই ওপেনার দেখালেন তার নেতৃত্বের গুণ। অধিনায়কদের যেমন হতে হয় আরকি, তামিম হলেন ঠিক তেমনই, নিজের ব্যাটটাও দিয়ে দিলেন আফগান অলরাউন্ডারকে। পরে মনোযোগ দিয়ে দেখলেনও নবীর ব্যাটিংও।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট হাতের তালুর মতোই চেনেন তামিম। স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টিতে ২৬৯ ম্যাচ, নামের সাথে ৭ হাজার ৯০৫ রান, ৫১ ফিফটি আর ৪ সেঞ্চুরি করা ব্যাটারকে আর কীইবা বলা যায়? তবে বলা তো যায় অনেক কিছুই। চাইলে এই ফরম্যাটে তামিমকে আপনি দেশের ইতিহাসের সেরা ব্যাটারও বলতে পারেন। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবেই তো তামিম আছেন ৮ হাজার টি-টোয়েন্টি রানের কাছাকাছি।
এই সিলেটেই ডিসেম্বরে দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ডিসেম্বরে ফিরেছিলেন এনসিএল টি-টোয়েন্টি দিয়ে। ১৩, ৬৫, ২১* ও ৯১ রান ছিল চার ইনিংসে। তবে বিপিএলে এখনো সেরাটা দেখাতে রেখেছেন অপেক্ষায়। ৭, ২৮ ও ৩৫ রানের তিনটি ইনিংস ঠিক তামিমের সাথে যাচ্ছে না।
আগের বিপিএলেই বরিশালের জার্সিতে টুর্নামেন্ট সেরা, সর্বোচ্চ রান, শিরোপা জয়ী নেতা ছিলেন তামিম। এমন ক্রিকেটারকে আদতে অধিনায়ক না বলে আপনি নেতা বলতেই পারেন। ‘চট্টলার খানের’’ নেতৃত্ব গুণের কথা তো প্রায়শই স্বীকার করেন বরিশালের সব দেশি-বিদেশি ক্রিকেটাররাও। পাকিস্তান কিংবদন্তি শহিদ আফ্রিদিও সম্প্রতি বলেছেন, তার প্রিয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার তামিম।
তামিমের ফিটনেস ইস্যুতেও আলোচনা হয়েছে, হচ্ছে। তবে মাঠের অনুশীলনের নিবেদনের তালে দেখে কে বলবে তা? অনুশীলনে চেষ্টার নেই কমতি, আপাতত দূর করার চেষ্টায় রান কমতিও।
বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৮টি ফিফটি করেছেন কেবল বিপিএলেই। ৩ হাজার ৪৫৭ রানও সর্বোচ্চই। বিপিএলের একমাত্র ব্যাটার হিসেবে জয়ী ম্যাচে পেরিয়েছেন দুই হাজার রানও। বিপিএলে তামিমের বিকল্প কে? উত্তর, আপনার কাছেই থাক না।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ হওয়ায় দলের বড় প্রত্যাশা ছিল দুজনের ওপর। অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও তারকা ব্যাটার বিরাট কোহলি দুজনই সেই দায়িত্ব সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে পুরোপুরিভাবে। ব্যাট হাতে তাদের ছন্দহীনতা ভারতের সিরিজ হারে রেখেছে বড় অবদান। সমালোচনাও তাই ধেয়ে আসছে তাদের দিক বেশ। এর মাঝেও উঠছে প্রশ্ন, অবসর নেওয়ার কি এটাই সময় দুজনেরই? কোচ গৌতম গম্ভীর মনে করেন, এই সিদ্ধান্তটা নিতে হবে রোহিত ও কোহলির নিজেদেরকেই।
সেই বাংলাদেশ সিরিজ থেকেই রানের মধ্যে না থাকা রোহিত এই সিরিজ শুরুর আগে সমালোচনায় পড়েন ছুটি নিয়ে প্রথম টেস্ট মিস করে। তবে তার জায়গায় জাসপ্রিত বুমরাহর নেতৃত্বে ভারত সেই ম্যাচ জিতে যায়। পরের তিন টেস্ট অধিনায়ক হয়ে ফিরলেও ব্যাট হাতে অচেনা রোহিত নেতা হিসেবেও ছিলেন মলিণ। আর কোহলি সিরিজে একটি সেঞ্চুরি ও কয়েকটি ভালো ইনিংস খেললেও দৃষ্টিকটুভাবে বারবার আউট হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে। তরুণ প্রতিভাবানদের বসিয়ে এই দুজনকে বয়ে নেওয়া ঠিক কিনা, এই প্রশ্ন তাই জোরেশোরেই চলছে ভারতীয় ক্রিকেটে।
৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে গম্ভীর এই প্রসঙ্গে স্পষ্ট করে কিছু বলা থেকে বিরতই থেকেছেন। “আমি একজন খেলোয়াড়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে পারি না। এটা তাদের ব্যাপার। তবে হ্যাঁ, আমি যা বলতে পারি তা হল তাদের মাঝে সেই তাড়নাটা আছে। তাদের সেই নিবেদন আছে। তারা শক্ত মানসিকতার ব্যক্তি। আশা করি তারা ভারতীয় ক্রিকেটকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। তবে দিন শেষে, আমরা সবাই জানি যে তারা সেই পরিকল্পনাই করুন না কেন, সেটা ভারতের ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে ভালো কিছুই হবে।”
টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট হতে লম্বা সময় ধরে রোহিত গত আট টেস্টে রান করেছেন মাত্র ১০.৯৩ গড়ে। এই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে ফিরলেও ব্যাটিং করেছেন ওপেনিং ছেড়ে মিদল অর্ডারে। সেখানেও সুবিধা না করতে পেরে চতুর্থ টেস্টে ফেরেন ওপেন করতে। তবে মেলেনি সাফল্য। পঞ্চম টেস্টে তাই নিজেকে দল থেকেই সরিয়ে নেন। বিপরীতে পাঁচ টেস্টই খেলা কোহলি সিরিজে সাতবার আউট হয়েছেন ২০ বা তার কম রানে। মাত্র ২৩.৭৫ গড়ে ৯ ইনিংসে নামের পাশে রয়েছে মাত্র ১৯০ রান, যা তার মাপের একজন ব্যাটারের জন্য ভীষণ বেমানানই।
গম্ভীর মনে করেন, অভিজ্ঞতা ছাপিয়ে দল থাকতে দলে সবাইকে নিয়মিত অবদান রেখে নিজেকে প্রমাণ করতেই হবে। “এটা আপনি ভালো করার জন্য কতোটা ক্ষুধার্ত, কতোটা নিবেদন দেখাচ্ছেন এবং আপনাকে নিয়ে দল কতোটা উন্নতি করতে পারছে, সেটার ব্যাপার। কারণ, শেষ পর্যন্ত কিন্তু এটা আপনারও দল নয়, আমারও নয়। এটা দেশের দল। তাই আমার কাজ হল একটা খেলোয়াড় যার অভিষেক হয়নি এবং যে ১০০টা ম্যাচ খেলে ফেলেছে, সবার প্রতিই নিরপেক্ষ থাকা।”
আগামী জুনের আগ পর্যন্ত ভারতের আর টেস্ট ম্যাচ নেই। ইংল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের সেই সিরিজের দলে ৩৮ বছর বয়সী রোহিত ও ৩৭ বছর বয়সী কোহলি থাকবেন কিনা, সেটা সময়ই বলে দেবে।
একশ রানের মধ্যেই চলে গিয়েছিল ৬ উইকেট। সেখান থেকে খুলনা টাইগার্সের দেড়শর বেশি স্কোরের পেছনে বড় অবদান রাখেন টেল এন্ডাররা, বিশেষ করে আবু হায়দার রনি। ঢাকা ক্যাপিটালসের জন্য কাজটা কঠিন করে এরপর বল হাতেও আলো ছড়ালেন অভিজ্ঞ এই পেসার। সাথে মেহেদি হাসান মিরাজের স্পিন ঘূর্ণিতে শুরুতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল দলটি। অধিনায়ক থিসারা পেরেরার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি তাই কেবলই বাড়াল আক্ষেপ। আর টানা দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল খুলনা।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম ম্যাচে ২০ রানে জিতেছে খুলনা। মিরাজের দল আগে ব্যাটিং করে তুলেছিল ৮ উইকেটে ১৭৩ রান। রান তাড়ায় ঢাকা ২০ ওভারে করতে পারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান।
আরও পড়ুন
বিফলে গেল শামিম ঝড়, উড়ন্ত সূচনা খুলনার |
খুলনার ওপেনিং জুটি দলকে দেখিয়েছিল বড় আশাই। নাইম শেখ আর উইলিয়ান বোইসিস্টো মিলে পাওয়ার প্লেতে দলকে নিয়ে যান সুবিধাজনক অবস্থায়। নাইম শুরু থেকেই ছিলেন বেশ আগ্রাসী। সাত বাউন্ডারিতে সাজানো তার সম্ভাবনাময় ইনিংসের ইতি টানেন চতুরাঙ্গা ডি সিলভা। ১৭ বলে নাইম করেন ৩০ রান।
এরপরই ধস নামে খুলনার ইনিংসে। তিনে প্রমোশন পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন আফিফ হোসেন। মাত্র দুই বল টিকতে পারেন ক্রিজে। দুই বিদেশী ইব্রাহিম জাদরান ও মোহাম্মদ নাওয়াজের পাশাপাশি অধিনায়ক মিরাজও ফেরেম এক ডিজিটে। ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে খুলনার সামনে ১৩০ রান করাটাই তখন কঠিন চ্যালেঞ্জ।
তবে ত্রাতার ভূমিকায় হাজির হন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও জিয়াউর রহমান। গড়েন ৪৩ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ জুটি। অঙ্কন খেলেন ৩২ রানের কার্যকরী ইনিংস। সেরা সময় মনে করিয়ে দেওয়া অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার জিয়াউর দুই চার ও এক ছক্কায় করেন ২২ রান।
আর ক্যামিও ইনিংসে ঢাকাকে চমকে দেন আবু হায়দার। তিন ছক্কায় মাত্র ৮ বলে অপরাজিত থাকেন ২১ রানে। চতুরাঙ্গা ২ উইকেট নেন ২২ রান দিয়ে।
আসরের শুরু থেকেই ব্যাটারদের ফর্ম ভোগাচ্ছে ঢাকাকে। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। দলের বড় ভরসার নাম লিটন দাস আরও একবার দলকে হতাশ করে সাকঘরে ফেরেন স্রেফ ২ রানেই। আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। শুরুর সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ঢাকা।
দুই প্রান্ত থেকে মিরাজ ও আবু হায়দারের সাড়াশি আক্রমণে রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে যায় দলটি। রানের জন্য সংগ্রাম করার পাশাপাশি নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে এক পর্যায়ে স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৪১!
আরও পড়ুন
৫ ম্যাচ পর জয়ের দেখা পেল খুলনা |
সেখান থেকে তাই জয়ের আশা ছেড়ে দিয়ে অধিনায়ক থিসারা পেরেরা চেষ্টা করেন হারের ব্যবধান কমিয়ে নেট রান-রেটের বড় ক্ষতি না করার। অন্তত সেই কাজে তিনি ভালোই সফলতা পান। চতুরাঙ্গাকে একপ্রান্তে দর্শক বানিয়ে বেশ কয়েকটি বড় শট মেরে হাসি ফোটান ঢাকা সমর্থকদের মুখে। জিয়াউরকে চার মেরে ৩৯ বলে পেয়ে যান ফিফটির দেখাও।
এরপর আরও আগ্রাসন দেখান এই শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার। আবু হায়দারের এক ওভারে মারেন দুই ছক্কা ও এক চার। এরপর প্রতি ওভারেই বড় শট নিয়মিতই মেরে শেষ ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারির মাধ্যমে দেখা পান শতকের। বিপিএলে এটি থিসারার প্রথম সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন মাত্র ৬০ বলে, ১০৩ রানে।
চার ওভারে এক মেডেন সহ মাত্র ৬ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন মিরাজ। আর আবু হায়দার দুটি।