বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এখন পর্যন্ত হওয়া তিনটি ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করা দল গড়েছে বিশাল স্কোর। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের বিধ্বংসী ফিফটিতে সেই ধারা বজায় রাখল খুলনা টাইগার্স। দুইশ ছড়ানো স্কোর পাড়ি দিতে সামান্যতম লড়াইও জমাতে ব্যর্থ হল চিটাগং কিংসের টপ অর্ডার। তবে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে নিভু নিভু জয়ের আশা জাগিয়ে তুললেন শামিম হোসেন। একাই শেষ পর্যন্ত লড়লেন মারমুখী এক ফিফটিতে, তবে সেটা যথেষ্ট হলো না জয়ের জন্য। বড় জয় দিয়েই আসর শুরু করল খুলনা।
মিরপুর বিপিএলের তৃতীয় ম্যাচে মেহেদি হাসান মিরাজের দল জিতেছে ৩৭ রানে। খুলনার দেওয়া ২০৪ রানের টার্গেটে চিটাগং ১৮.৫ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে করতে পারে মোটে ১৬৬ রান।
বড় স্কোর ডিফেন্ড করতে নেমে বল হাতে খুলনার শুরুটা ছিল একটু অন্যরকমই। পাঁচটি নো বল ও দুই ওয়াইড সহ প্রথম ওভার করতে ওশানে থমাস করেন ১২টি বল! ১৮ রানের সেই ওভারেই অবশ্য নাইম ইসলামকেও ফেরান এই ক্যারিবিয়ান পেসার।
ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলা পারভেজ হোসেন ইমন বিপদ ডেকে আনেন অতি আগ্রাসী হতে গিয়েই। আবু হায়দার রনির প্রথম শিকার হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান। পাওয়ার প্লেতে ৫৬ রান তুলতেই আরও দুই উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় চিটাগং।
ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ক্রমেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় দলটি। ইনিংসের মাঝের সময়ে খুলনার স্পিনারদের সামনে সংগ্রাম করতে হয়ে তাদের। তাতে ৭৪ রান তুলতেই চলে যায় ৮ উইকেট।
আর সেখান থেকেই শুরু হয় শামিমের একক লড়াই। ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই খেলতে থাকেন বড় শট। নাসুম আহমেদের এক ওভারে চার বলের মধ্যে মারেন দুটি করে চার ও ছক্কা।
এরপর শামিমের আক্রমণের মুখে পড়েন আবু হায়দার। ১৫তম ওভারের প্রথম বলটি বোলারের মাথার ওপর দিয়ে সীমানা পার করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। মাত্র ২৩ বলে করে ফেলেন ফিফটি।
শেষ পর্যন্ত আবু হায়দারের বলেই সাজঘরে ফিরতে হয় শামিমকে। তবে তার আগে খেলেন স্মরণীয় এক ইনিংস, যা কিছুটা হলেও তার দলকে যুগিয়েছিল জয়ের আশা। মাত্র ৩৮ বলে শামিম ৭৮ রান করেন ৫টি ছক্কা ও ৭টি চারের মারে। ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার আবু হায়দার।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার নাইম শেখ প্রথম ওভারেই ছক্কা হাকিয়ে আভাস দেন আগ্রাসনের। অন্যপ্রান্তে উইলিয়াম বোসিস্টোও শুরুটা করেন ইতিবাচকভাবে। খালেদ আহমেদের প্রথম ওভারে টানা দুই ছক্কার পাশাপাশি একটি চারও মারেন নাইম।
শেষ পর্যন্ত আলিস আল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে নাইমের ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২৬ রান। খালেদকে চার ও ছয় মেরে শুরুটা ভালো পান মিরাজ। তবে এরপর আর সেভাবে এগিয়ে যেতে পারেননি খুলনা অধিনায়ক। ১০০ স্ট্রাইক রেটে করতে পারেন ১৮ রান।
৩৬ বলে পঞ্চাশে পা রাখা বোসিস্টো রানের চাকা কিছুটা সচল রাখার চেষ্টা করেন। তবে অন্যপ্রান্তে সেভাবে পাচ্ছিলেন না সমর্থন। শেষ পর্যন্ত কাজের কাজটা করে দেন অঙ্কন। ১৬তম ওভারে শামিম হোসেনকে টানা দুই ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করেন তরুণ এই ব্যাটার।
স্রেফ চার-ছক্কায় রান বের করা অঙ্কন এরপর শরিফুল ইসলামের এক ওভারেই হাঁকান তিন ছক্কা। ১৯তম ওভারে তুলে নেন ফিফটি মাত্র ১৮ বলে, যা বিপিএলের ইতিহাসে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম বলে অর্ধশতকের রেকর্ড। আর সব মিলিয়ে অঙ্কনের ফিফটি এখন বিপিএলের চতুর্থ দ্রুততম।
অঙ্কন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে। ১৮ বলের ইনিংস সাজান ৮টি চার ও ৩ ছক্কায়। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে বোসিস্টো খেলেন ৫০ বলে ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। খুলনা ইনিংস শেষ করে ৪ উইকেটে ২০৩ রানে, যা শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হয় দলের জয়ের জন্য।
৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯:৫৫ পিএম
৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৮:৫৬ পিএম
৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৪:২৩ পিএম
৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৪ এম
জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে লিটন এখন পর্যন্ত কয়েকবার দায়িত্ব সামলেছেন অস্থায়ীভাবে। সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তার নেতৃত্বেই ক্যারিবিয়ানদের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। তবে পুরো সিরিজেই রানের মধ্যে ছিলেন না অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। এটা কী তার স্থায়ী অধিনায়ক হওয়াটা কঠিন করে তুলতে পারে? বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ অবশ্য তা মানতে নারাজ।
অধিনায়ক হিসেবে লিটন বরাবরই ভালো করেন। নাজমুল হোসেন শান্ত চোটে সফর মিস করায় পান টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব। ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই বাংলাদেশ দল রাতারাতি বদলে যায় তার অধিনায়কত্বে। প্রথমবারের মত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ ওভারের সিরিজে হারায় ৩-০ ব্যবধানে। তবে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যাট হাতে নিজের ছায়া হয়েই ছিলেন তিনি।
শান্ত আর টি-টোয়েন্টি অধিনায়ত্ব না করতে চাওয়া নতুন কাউকে বেছে নিতে হবে বিসিবি। লিটনকে বিবেচনার ক্ষেত্রে ফারুক তার ফর্মে না থাকার বিষয়টি মেলাতে চান না বলেই জানিয়েছেন শুক্রবার।
“আমি সবসময় মনে করি ক্রিকেটিং ব্রেন, মেধা, অধিনায়কত্ব করার সাথে ফর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। একজন ব্যাটারের ফর্ম ভালো যাবে না, এটা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। আপনি যদি বিরাট কোহলিও রান করতে পারছে না। রোহিত শর্মার মত ব্যাটসম্যান রান করতে পারছে না।”
অধিনায়ক নিজেই ফর্মে না থাকলে প্রায়ই সেটা প্রভাব ফেলে তার ব্যাটিং বা বোলিংয়ে। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব না দিতে পারায় আত্মবিশ্বাস হয়ে যায় নড়বড়ে। আর লিটন ২০২৪ সালের পুরোটা জুড়েই সাদা বলের ক্রিকেটে ভীষণভাবে রানখরায় ভুগেছেন। এসব পেছনে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তিনি যেভাবে নেতা হিসেবে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন, তা ছিল চোখে পড়ার মত।
ফারুকের কাছে ফর্মহীনতা ছাপিয়ে এটাই তাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
“আমি মনে করেছিলাম এবং বোর্ডের অন্যদের সাথে আলোচনাও করেছি যে, অনেক সময় একটা খেলোয়াড়কে দুইভাবে সাহায্য করা যায়। যেহেতু সে ওয়ানডে রান করছিল না, অধিনায়কত্ব ছিল তার বাড়তি দায়িত্ব, তাই মনে হচ্ছিল সে অধিনায়কত্ব পেয়ে ফর্মে ফিরে আসতে পারে। তবে ফর্ম না পেলেও সে খুব ভালো নেতৃত্ব দিয়েছে। এটা খুব ভালো একটা গুণ। ব্যক্তিগত ফর্ম যদি একজন খেলোয়াড়কে প্রভাবিত না করে, এটা একজন অধিনায়কের খুব ভালো দিক। আমি আশা করি ও ফর্মে ফিরবে খুব শীঘ্রই। আমরা যখন টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক নিয়ে আলোচনা করব, অবশ্যই সে সেখানে এগিয়ে থাকবে।”
বাংলাদেশ দলের পরবর্তী সিরিজ ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ত্ব ছাড়লেও নাজমুল হোসেন শান্ত বাকি দুই ফরম্যাটে দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।
গত কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন সাকিব আল হাসান। তিনি জাতীয় দলের হয়ে বা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে পারবেন কিনা, এটা নিয়ে এখনও রয়ে গেছে ধোঁয়াশা। মাঠের বাইরের জটিলতায় মিস করছেন চলমান বিপিএলও। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আরও একবার, সাকিবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই তাদের।
গত আগস্টে বাংলাদেশে সরকার পতনের পর দ্রুতই বদলে যায় সাকিবের জাতীয় দলে খেলার সমীকরণ। দেশের মাটিতে টেস্ট অবসর নিতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত সেটা আর সম্ভব হয়নি। বিসিবি তাকে দলে রাখলেও শেষ সময়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সাকিবকে দেশে আসতে না করা হয়।
ফিট থাকলেও এরপর খেলেননি ক্যারিবিয়ান সফরে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কী সাবেক অধিনায়ককে দলে রাখা হবে? মিরপুরে শুক্রবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় এই ব্যাপারে ফারুক স্পষ্ট করেন তাদের অবস্থান।
“একটা ব্যাপার হল সাকিবের এখনও অবসর হয়নি। চেষ্টা করা বলতে কী, ও যদি অবসর নিয়ে ফেলত তাহলে বলতাম যে এখন আর নেই। ওর যেসব ইস্যু আছে, সেটা নিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সাথে মাঝে মাঝে কথা হয় যে এটা নিয়ে কী করা যায়। ওর যে ইস্যুটা, এটা আমাদের কল নয়। এটা আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি। এটা যদি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা আসে, ওর যেসব সমস্যা আছে, সেটা যদি ঠিক করা যায়, তাহলে কিছু হতে পারে। এরপর আছে ফিটনেস, মানসিক অবস্থা, ফর্ম - এসব দেখে নির্বাচকরা সিদ্ধান নেবে।”
আগের সরকারের পতনের পর ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি সিরিজ খেলেছিলেন সাকিব। সেই কারণেই তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের টেস্ট দলে রেখেছিল বিসিবি। তবে সাকিবের দেশে আশাকে কেন্দ্র করে পক্ষে-বিপক্ষের সংঘর্ষের কারণে নিরাপত্তার বিবেচনায় মাঝপথ থেকে ফিরে যেতে বলা হয় সাকিবকে।
ফারুক তাই এবারও বল ঠেলে দিয়েছেন সরকারের কোর্টে।
“সাকিবের ব্যাপারটা, আসলে আমি এটা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনায় বলেছিলাম। আমাদের যে ক্রীড়া উপদেষ্টা আছেন, তিনি বলেছিলেন সাকিবের ব্যাপারটা সে আসবে, খেলবে এটা সরকার দেখবে। তারপর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে শেষ মুহূর্তে সেটা আর সম্ভব হয়নি।”
তবে এক্ষেত্রে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে পাকিস্তান ও দুবাইয়ে। ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকছে না সাকিবের সেখানে। ফারুক দ্রুতই তাই সিদ্ধান্ত নিতে চান এই ব্যাপারে। “আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দেশের বাইরে, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আমরা বিপিএলের মাঝেই এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসব।”
নির্বাচকদের সাকিবকে নেওয়ার চাওয়া আছে কিনা, এমন প্রশ্নে সপাটে ব্যাট চালিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।
“চাহিদা থাকলেই তো হয় না, কারণ এটা একটা জাতীয় ইস্যু।”
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চিটাগং কিংসের ইনিংস একপ্রান্ত আগলে একাই টানলেন উসমান খান। মারমুখী ব্যাটিংয়ের দুরন্ত এক প্রদর্শনীতে তুলে নিলেন সেঞ্চুরি। সাথে অন্য ব্যাটারদের অবদানে দলটি চড়ল রান পাহাড়ে। উসমান হারিস বাদে দুর্বার রাজশাহীর কেউই পারলেন না লড়াই করতে। আলিস-আরাফাতদের স্পিন ঘূর্ণিতে পথ হারিয়ে বড় হারই বরণ করতে হল দলটিকে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসরের সপ্তম ম্যাচে ১০৫ রানের বিশাল জয় পেয়েছে চিটাগং। দলটির করা ৫ উইকেটে ২১৯ রানের জবাবে স্রেফ ১১৪ রান তুলতেই গুটিয়ে গেছে রাজশাহী।
আগেরদিন বিপিএলের ইতিহাসের সেরা বোলিং ফিগারের মালিক হওয়া তাসকিন আহমেদের শুরুটা এদিনও হয় স্বপ্নময়। দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দেন পারভেজ হোসেন ইমনকে। রাজশাহীর হাসি মিলিয়ে যেতে এরপর আর বেশি সময় লাগেনি। গ্রাহাম ক্লার্ককে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন উসমান।
হাসান মুরাদের এক ওভারে তিন চার ও এক ছক্কায় ১৯ রান নেওয়ার পর মোহর শেখের এক ওভারেও তিনটি চার মারেন উসমান। শুরুটা ধীরগতিতে করা গ্রাহাম এরপর হাত খোলেন। অভিজ্ঞ শফিউল ইসলামের এক ওভারে চারটি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কায় আদায় করেন ২২ রান। ছয় ওভারেই বোর্ডে জমা হয় ৭২ রান।
মাত্র ২১ বলে ফিফটি তুলে নেন উসমান। এরপর রানের গতিতে আরও বাড়িয়ে দেন পাকিস্তান ব্যাটার। ক্রমেই ছন্দ খুঁজে পাওয়া গ্রাহাম অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে সোহাগ গাজির বলে আউট হন। তার আগে ৫ চার ও দুই ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান।
চারে নামা মোহাম্মদ মিঠুন পরিস্থিতির চাহিদা মিটিয়ে খেলেন কয়েকটি বড় শট। তবে দর্শকদের বিনোদনের খোরাক যোগানো এক ইনিংস খেলা উসমান কেড়ে নেন সব স্পটলাইট। মাত্র ৪৮ বলেই পূর্ণ হয়ে যায় সেঞ্চুরি। বিপিএলে ১৪তম ইনিংসে এটি তার দ্বিতীয় শতক।
রাজশাহীর বোলিং লাইনআপকে এলোমেলো করার পর উসমান ১৯তম ওভারে যখন আউট হন, তখন তার নামের পাশে ১২৩ রান। মাত্র ৬২ বলের ইনিংস ছিল ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কার মার। শেষের দিকে হায়দার আলির ১৯ রানের ক্যামিওতে আসরের সর্বোচ্চ স্কোর পেয়ে যায় চিটাগং।
এমন একটা রান তাড়ায় শুরুটা যেমন প্রয়োজন, সেটা পায়নি রাজশাহী। প্রথম ওভারেই হারাতে হয় সাব্বির হোসেনের উইকেট। একপ্রান্তে এরপর হারিস ইতিবাচক ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও তাল মেলাতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। ফলে রান বের করার চাপে শেষ পর্যন্ত পাওয়ার প্লেতেই আউট হয়ে যান হারিস। মোহাম্মস ওয়াসিমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে মাত্র ১৫ বলে করেন ৩২ রান।
ক্রিজে গিয়েই কয়েকটি বড় শট খেলে ভালো কিছুর আভাস দেন ইয়াসির আলি ও আকবর আলি। তবে দুজনের কেউই পারেননি ইনিংস বড় করতে। এরপর রহস্য স্পিনার আলিস আল ইসলামের দারুণ এক স্পেল দিশেহারা করে ফেলে রাজশাহীকে। মাত্র ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানির ঝুলিতেও যায় তিন উইকেট, তিনি গুনেন ২৩ রান।
প্রায় প্রতিটি দেশেরই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের সেরাদের তালিকায় দেখা যায় দেশি খেলোয়াড়দের আধিপত্য। তবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সেঞ্চুরিয়ানদের তালিকায় বরাবরই দাপট দেখাচ্ছেন বিদেশী খেলোয়াড়রা। উসমান খানই যেমন, চিটাগং কিংসের এই পাকিস্তানি ব্যাটার এই বিপিএলে শতক দিয়ে চলে এসেছেন টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করা ব্যাটারদের তালিকায়।
দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে শুক্রবারের প্রথম ম্যাচে উসমান ব্যাট হাতে রীতিমত ঝড়ই তোলেন। ১৯তম ওভারে যখন আউট হন, তখন নামের পাশে ১২৩ রান। মাত্র ৬২ বলের ইনিংস সাজান ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা দিয়ে। বিপিএলে এটি ১৪ ইনিংসে ডানহাতি এই ব্যাটারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
ফলে বিপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির তালিকায় যৌথভাবে এখন জায়গা করে নিয়েছেন উসমানও। তিনি ছাড়া দুটি করে শতক করেছেন তিন ক্যারিবিয়ান ব্যাটার জনসন চার্লস (৩৩ ইনিংস), এভিন লুইস (৩৯ ইনিংস), আন্দ্রে ফ্লেচার (৪০ ইনিংস) ও বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল (১০৫ ইনিংস)।
সবার ওপরেও আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই একজন। সাবেক এই বিধ্বংসী এই ব্যাটার কয়েক আসর আগেও ছিলেন বিপিএলের নিয়মিত মুখ। সব মিলিয়ে খেলা মাত্র ৫২ ইনিংসেই তিনি সেঞ্চুরি করেছেন পাঁচটি। অর্থাৎ, গড়ে প্রায় ১০টি ম্যাচে একবার করে বিপিএলে তিন অঙ্কের ঘরে পা রেখেছেন গেইল।
উসমান যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাতে বিপিএলে আগামীতে নিয়মিত খেলতে পারলে হয়ত গেইলকে সরিয়ে তিনিই হয়ে যাবেন এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির মালিক।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরের শুরু থেকেই দর্শকদের মাঝে দেখা যাচ্ছে তুমুল আগ্রহ। টিকিটের জন্য বিশাল লম্বা লাইনের পাশাপাশি অফলাইনে টিকিট সংগ্রহ নিয়ে তাই জোর দাবি ছিল তাদের। তাতে সাড়া দিয়ে ছুটির দিন শুক্রবারের দুটি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) স্টেডিয়ামে রেখেছে টিকিট বুথ।
এর ফলে অনলাইন ছাড়াও, মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোর ট্রেনিং সেন্টার সংলগ্ন, ন্যাশনাল সুইমিং কমপ্লেক্সে টিকিট বুথ খোলা থাকবে৷ দর্শকরা টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন সকাল ৯টা থেকে।
আরও পড়ুন
মাহমুদউল্লাহ-ফাহিম তান্ডবে দুর্দান্ত জয়ে বিপিএল শুরু বরিশালের |
বিসিবি বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে, অফলাইনে টিকিট পাওয়া যাবে কেবল এই একটি বুথ থেকেই।
শুক্রবারের প্রথম ম্যাচে দুপুর ২টায় মাঠে নামবে দুর্বার রাজশাহী ও চিটাগং কিংস। রাত ৭টায় খেলবে ঢাকা ক্যাপিটালস ও খুলনা টাইগার্স।
৩ দিন আগে
৪ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৮ দিন আগে