সাউথ আফ্রিকার পড়েছে পাঁচ উইকেট, আর পাঁচটিই শিকার করলেন তাইজুল ইসলাম। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালে ঢাকা টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান কাইল ভেরেইনেকে এলবিডাব্লিউ করে এই অর্জন বাঁহাতি স্পিনারের। যা তাঁর ক্যারিয়ারে ১৪তম। ম্যাচে দশ উইকেট আছে দু’বার, এই টেস্টে সাউথ আফ্রিকার সামনে চতুর্থ ইনিংসে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পারলে সুযোগ আসবে নিশ্চিত!
ভারত সফরে সুযোগ মিলেছিল শুধু কানপুর টেস্টে। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯০ রান খরচায় নিয়েছিলেন মাত্র একটি উইকেট। তবে সাকিবের অবর্তমানে মিরপুর টেস্টে পুরো দলের আক্রমণের পুরোধা বনে যান তিনি। ৭ উইকেটে হারা ম্যাচে তিনি নেন ৮ উইকেট। এরমাঝে প্রথম ইনিংসে ছিল ফাইফার। এই টেস্টেও পেলেন সেই ফাইফার, সবমিলে টানা দুই টেস্টে ঘটালেন এই কাণ্ড।
অথচ দলে আছেন আরও তিন স্বীকৃত বোলার। ফ্লাট উইকেটে দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা আঘাত হানতে পারেননি, মেহেদী মিরাজের অফস্পিন মিরপুরের মত চট্টগ্রামেও অকার্যকর। এমন অবস্থায় দলের বোলিং আক্রমণের পুরোধা বনে গেছেন তাইজুল। প্রথমদিন আউট করেছিলেন মার্করাম ও স্টাবসকে। আর দ্বিতীয়দিন সকালেও সব বোলার যখন ব্যর্থ তখন টানা তিন উইকেট তুলে নিলেন নাটোরের এই ক্রিকেটার। আউট করেছেন বেডিংহাম, ডি-জর্জি ও ভেরেইনাকে। এরমধ্যে ডি-জর্জির একমাত্র টেস্ট শতক থেমেছে ১৭৭ রানে।
ক্যারিয়ারে তাঁর ১৪ ফাইফারের মাঝে এটি সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয়বার। এরআগে পোর্ট এলিজাবেথ, আর ঠিক আগের টেস্টেই মিরপুরে পেয়েছিলেন পাঁচ উইকেট।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই চক্রে ৭ টেস্টে এই ফাইফার সহ তাইজুলের উইকেট সংখ্যা ৩২। ১০ টেস্টে মিরাজের শিকার ৩৪। দু’জনের মাঝে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ ৫৯ উইকেট অশ্বিনের, ২য় সর্বোচ্চ ৫১ উইকেট হ্যাজলউডের।
৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫০ পিএম
৩১ অক্টোবর ২০২৪, ৭:৩১ পিএম
বাংলাদেশের সাথে রেকর্ড ব্যবধানে জিতেছে সাউথ আফ্রিকা। এক ইনিংস আর ২৭৩ রান ব্যবধানে জয় দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় জয়। বাংলাদেশের সাথে ঢাকায় আর চট্টগ্রামে দুই ম্যাচেই দাপুটে ক্রিকেট খেলেছে সাউথ আফ্রিকা।
প্রোটিয়াসের এমন জয়ে দারুণ খুশি দলটার সাবেক অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্স। ওয়ানডের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান টুইট করে জানান, “প্রোটিয়াস দারুণ বার্তা দিয়েছে। দারুণ জয় এটা। ওখানে (বাংলাদেশ) জয় সহজ না। নজরকাড়া পারফরম্যান্স দলের।”
বাংলাদেশের সাথে প্রথম টেস্টে ৭ উইকেটে জয়ের পর আরেক বড় জয় প্রোটিয়াসের। ম্যাচ সেরা টনি ডি জর্জির ১৭৭ রানে আগে ব্যাট করে সাউথ আফ্রিকা চট্টগ্রামে তোলে ৫ উইকেটে ৫৭৫ রান। বোলিংয়ে সিরিজ সেরা কাগিসো রাবাদার দারুণ বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রানে অল-আউট হওয়া টাইগাররা দ্বিতীয় ইনিংসে থামে ১৪৩ রানে।
গেল কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় নাজমুল হাসান শান্তর অধিনায়কত্ব। আলোচনায় ছিল সাউথ আফ্রিকা সিরিজ শেষে শান্ত আর অধিনায়কত্ব করতে চান না। যদিও এই নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কিংবা শান্ত কেউই মুখ খুলেননি। দ্বিতীয় টেস্ট শেষে শান্ত জানিয়েছেন বোর্ড থেকেই খুব শীঘ্রই এই নিয়ে আসবে সিদ্ধান্ত।
এ বছরের শুরুতে তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে শান্তকে। তার অধীনে পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। তবে শেষ দুই সিরিজে সাউথ আফ্রিকা ও ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি টাইগাররা। শান্ত নিজেও নেই রানের মধ্যে। তাতেও পড়ছেন সমালোচনায়।
আরও পড়ুন
‘হঠাৎ করে স্টিভ ওয়াহ-ইমরান খান-ধোনি হওয়া যায় না’, অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে বললেন ফাহিম |
চটটগ্রাম টেস্ট শেষে সাংবাদ সম্মেলনে তাই ঘুরেফিরে এসেছে সেই প্রসঙ্গ। যার জবাবে শান্ত ছিলেন চুপ, “অধিনায়কত্বের ব্যাপারে সভাপতি কথা বলেছেন আপনাদের সঙ্গে। এ ব্যাপারে এখানে আমি আর কোনো মন্তব্য না করি। হয়তো ক্রিকেট বোর্ড থেকেই এই নিয়ে একটা কিছু জানতে পাবেন।”
বয়সভিত্তিক দল থেকেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলে আসছেন শান্ত। কাজটা যে তিনি উপভোগ করেন সেটাও জানিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার, “বয়সভিত্তিক থেকেই অনেক জায়গায় বলে আসছি, ক্যাপ্টেন্সি আমি সবসময় উপভোগ করি। গত কয়েকটা সিরিজও মাঠের ভেতরে আমি উপভোগ করেছি। এটা সবসময়ই আমার ভালো লাগার জায়গা।”
গেল কিছু দিন থেকে দলের ব্যর্থতার সাথে তার ব্যাটেও রান নেই। অধিনায়কত্বের চাপে এমনটা হচ্ছে কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে সংবাদ সম্মেলনে। তবে সেটা উড়িয়ে দিয়েছেন শান্ত, “আমার কাছে একবারও মনে হয়নি আমি ক্যাপ্টেন। ক্যাপ্টেন তাই সব আমাকে একা করতে হবে এমন মনে হয় না। বল দেখি ব্যাটিং করি, ব্যাটিং উপভোগ করি। ব্যাটিং করতে সবারই ভালো লাগে। চিন্তা থাকে একটাই কীভাবে বড় রান করতে পারব। এখন পর্যন্ত (চাপ) হয়নি আলহামদুলিল্লাহ।”