
মেসির জন্ম আর্জেন্টিনায়। তবে ১১ বছর বয়সে স্পেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন ফুটবলের এই মহাতারকা। বার্সেলোনার একাডেমি লা মাসিয়ায় বেড়ে উঠে কাতালান ক্লাবটির ইতিহাসের সেরা ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে মেসির বার্সা সতীর্থদের অনেকেই স্পেন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। চাইলেই তো স্পেন জাতীয় দলের জার্সি বেছে নিতে পারতেন। সুযোগও এসেছিল, এমনকি ‘লা রোজাদের’ হয়ে খেলার দ্বারপ্রান্তেই নাকি ছিলেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মেসি।
আর্জেন্টিনার হয়ে সবধরনের শিরোপা জয়ের স্বাদই পেয়েছেন মেসি। কোপা আমেরিকা-বিশ্বকাপ-কোপা আমেরিকা, এভাবেই সিরিজ পূর্ণ করেন ইন্টার মায়ামির তারকা। তবে এই গল্পের শুরু তো ২০২১ সাল থেকে। এর আগে আর্জেন্টিনার জার্সিতে কঠিন থেকে কঠিনতর সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে মেসিকে। বিশ্বকাপের ফাইনাল হারের পর টানা দুই কোপা আমেরিকার ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফেরার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতে হয়েছে অনেকদিন।
অবশ্য এসব অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়াই হতো না মেসির। যদি স্পেন জাতীয় দলের হয়ে খেলতেন রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী। বার্সেলোনায় পাড়ি জমানোর পর মেসির মতো অনন্য প্রতিভাকে ছিনিয়ে নেওয়ার দারুণ সুযোগ এসেছিল স্পেনের।
সম্প্রতি আর্জেন্টিনায় ‘ওলে সামিট-২০২৫’-এ মেসিকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন আর্জেন্টিনার সাবেক কোচ হোসে পেকারমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ফিনল্যান্ডে একটি অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্ট থেকে মেসি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। সেখানে স্প্যানিশ কোচরা স্পষ্টভাবে বলেছিলেন—যদি এই প্রতিভা তাদের পুরোপুরি হাতে থাকত, তারা টুর্নামেন্ট জিতত।’
২০০৩ সালের সেই ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে যায়। তবে স্প্যানিশ কোচের এই কথা আর্জেন্টাইন কোচদের মনে গেঁথে যায়। কিছুদিন পর, পেকারম্যান স্পেন সফরে গিয়ে লেগানেস বনাম আলকোরকন ম্যাচে মেসিকে সরাসরি দেখেন এবং নিশ্চিত হন—স্পেন যে কোনো সময় মেসিকে জাতীয় দলে ডাকতে পারে।
পেকারম্যান দ্রুত বুঝতে পারেন, ফিফার নিয়ম অনুযায়ী মেসিকে আর্জেন্টিনা না খেলালে তিনি স্পেনের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে যাবেন। তাই ২০০৪ সালের ২৯ জুন আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে এক প্রীতি ম্যাচে মেসিকে নামানো হয়।
পেকারম্যান যোগ করেন, ‘আমি তার বিশাল সম্ভাবনা বুঝতে পেরেছিলাম। সে আর্জেন্টাইন ফুটবলে বিপ্লব ঘটানোর মতো একজন, সত্যিকারের আশীর্বাদ। কিন্তু তখনই স্পেন তার জন্য অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে খেলানোর নথি-পত্র তৈরি করে রেখেছিল। তখনকার ফিফা বিধিমালা অনুযায়ী, একজন খেলোয়াড় একবার কোনো দেশের যুব দলে খেললে, অন্য দেশের হয়ে সিনিয়র দলে খেলার যোগ্যতা হারাতেন। আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হতো।’
পেকারমান এরপর আর্জেন্টিনার জন্য একটি কৌশলগত পরিকল্পনা করেন। তিনি অনূর্ধ্ব-২০ দলের তখনকার কোচ হুগো টোকাল্লিকে ফোন করে পরিস্থিতি ব্যাখা করেন, ‘আমি তাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম—যদি একান্ত বাধ্য না হও, তাহলে মেসিকে শুধু একটি প্রীতি ম্যাচে খেলাও। ম্যাচশিটে তার সই নাও এবং তা ফিফায় জমা দাও। এই একটি কাজই স্পেনকে স্থায়ীভাবে তাকে দাবি করা থেকে বিরত রাখবে।’
শেষ পর্যন্ত মেসির নিয়তি লিখ ছিল আর্জেন্টিনাতেই। আকাশি-সাদা জার্সিতে অনেক হৃদয়ভাঙ্গার গল্প লিখেছেন। তবে গল্পের শেষটা যে মধূরই হয়েছে।
No posts available.
২১ নভেম্বর ২০২৫, ৭:১৫ পিএম
২১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১১ পিএম

৩০ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলা ফুটবল দলের ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। আগামীকাল শনিবার সিরাজগঞ্জ ও দিনাজপুর জেলা ফুটবল দলের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে পর্দা নামবে প্রতিযোগিতার। প্রথমবারের মতো এই প্রতিযোগিতায় উঠেছে দল দুটি। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে গড়াবে ফাইনাল। শুরু হবে বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে।
১১ নভেম্বর প্রথম সেমিফাইনালে দিনাজপুর ৩-২ গোলে চট্টগ্রামকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। পরের দিন দ্বিতীয় সেমিফাইনালে যশোরকে ২-০ গোলে হারায় সিরাজগঞ্জ। এবার ফাইনালে মুখোমুখি দেশের উত্তরের দুটি জেলা।
আরও পড়ুন
| স্পেনের হয়ে খেলার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন মেসি |
|
ফাইনাল উপলক্ষে আজ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে হয় সংবাদ সম্মেলন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি। এছাড়াও ছিলেন বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য কামরুল হাসান হিল্টন ও শাখাওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহিন এবং ফাইনালিস্ট দুই দলে কোচ, অধিনায়ক।
নিজের প্রাথমিক বক্তব্যে দিনাজপুর দলের কোচ শামিম আহমেদ বলেন,
'আমার লক্ষ্য ছিল শুধু সদর না, গ্রাম থেকেও খেলোয়াড় বাছাই করা এবং তাদের নিয়ে দল গঠন করা। আমরা সেই দল নিয়ে ফাইনালে উঠেছি। অবশ্যই সিরাজগঞ্জ আমাদের সামনে শক্ত প্রতিপক্ষ। তবে আমরা শিরোপা জিততে আশাবাদী।'
আরও পড়ুন
| ফুটবলকে বিদায় বললেন ব্রাজিলিয়ান তারকা ফার্নান্দিনহো |
|
এবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ আট পর্যন্ত খেলাগুলো হয়েছে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে। তাতে সুফল দেখেন দিনাজপুর কোচ,
'এটি খুব ভাল দিক ছিল। স্বাগতিক হলে সুবিধা পাওয়া যায়। আবার অ্যাওয়ে গেলে চাপে পড়ে যাই। সেটা ওভারকাম করতে কি করতে হয় তা আমরা শিখেছি। যাইহোক হোম অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলা হলে ভাল হয়।'
দিনাজপুর দলের অধিনায়ক মাসুদ রানা বলেন,
'আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আয়োজন ছিল। বিশেষকরে হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলায় আমরা অনেক কিছু শিখেছি।'
নিজ দলের শক্তিমত্তা জানাতে গিয়ে মাসুদ,
'টার্ফে খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমাদের দলের। আর ফাইনাল হবে টার্ফে, এটা আমাদের এগিয়ে দেবে।'
আরও পড়ুন
| মেসির ম্যাচ দিয়েই খুলছে ইন্টার মায়ামির স্বপ্নের স্টেডিয়াম |
|
আবার এতদূর এসে শিরোপা ছাড়া ঘরে ফিরতে চায় না সিরাজগঞ্জ। দলের কোচ মাহবুব আলম পিয়াল এদিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন,
'৩৯ বছর পর এই প্রথম আমাদের জেলা ফাইনালে উঠেছে। আপনারা জানেন যমুনাঘেষা জেলা আমরা। অনেক কাঠখোড় পুড়িয়ে এসেছি। এখান থেকে শিরোপা হাতে ফিরতে চাই।'
সিরাজগঞ্জ দলে সিনিয়র প্লেয়ার কম। বেশিরভাগই তরুণ। তবে যারা আছে তাঁরা ৯০ মিনিট খেলতে পারবে এবং লড়াই করতে পারবে বিশ্বাস মাহবুব আলমের।
অধিনায়ক মিলন জানান,
'আমাদের টিমে অনেক জুনিয়র খেলোয়াড়। হোম-অ্যাওয়ে ম্যাচ ছিল, জানতাম চ্যালেঞ্জ থাকবে। এখন আমরা ফাইনালে। সবার কাছে দোয়া প্রার্থী। ৮-১০ টা বাস আসবে খেলা দেখার জন্য, সিরাজগঞ্জকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য।'
এই ম্যাচের উন্মাদনায় সিরাজগঞ্জে বড় পর্দায় খেলা দেখাবে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন
| ২৬ মাস পর ফিরছেন পল পগবা |
|
টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হ্যাপি বলেছেন,
'দীর্ঘ তিন মাসের জার্নি শেষে আগামীকাল শুরু হচ্ছে ফাইনাল। খেলাটার উদ্দেশ্য ছিল তৃনমুল থেকে খেলোয়াড় সংগ্রহ করা। সুপার সিক্সটিন থেকে এখন পর্যন্ত ৪৩ জন ফুটবলার নজরে রেখেছি। কাল ফাইনাল, এখান থেকে হয়ত আরও কয়েকজন পাবো। এলিট একাডেমির মাধ্যমে তাদের পরিচর্যা করব। দেশের জন্য প্রস্তুত করব।’
ফাইনালে প্রধান অতিথি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া, বিশেষ অতিধি থাকবেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) নির্বাহী পরিচালক কাজী নজরুল ইসলাম এবং সভাপতিত্ব করবেন বাফুফে প্রেসিডেন্ট তাবিথ আউয়াল।

ব্রাজিলের ক্লাব অ্যাটলেটিকো এমজির বিপক্ষে ম্যাচটি হয়ে থাকল ফার্নান্দিনহোর ফুটবল ক্যারিয়ারের শেষ অফিসিয়াল ম্যাচ। অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ৪০ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলকে বিদায় বললেন ম্যানচেস্টার সিটির এই কিংবদন্তি।
ব্রাজিলের কুরিটিবাতে বুধবার সন্ধায় একটি চ্যারিটি ম্যাচ খেলার অবসরের ঘোষণা দেন ফার্নান্দিনহো। সিটির এই সাবেক ফুটবলার ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবোকে’ বলেছেন, ‘আজ (বুধবার) ৩০ মিনিটের জন্য দৌড়ায়েই আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। ফুটবলে থেকে আর প্রেরণা খুঁজে পাচ্ছি না। যা চেয়েছিলাম তার সবই অর্জন করেছি আমি। এখন পরিবারের সঙ্গে মুহূর্তগুলো উপভোগ করার সময়।’
ফার্নান্দিনহো পেশাদার লিগ ক্যারিয়ারে সেরা সময় কাটিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটিতে। ২০১৩ সালে ইংলিশ ক্লাবটিতে যোগ দেন তিনি। এরপর এক দশক সিটির হয়ে খেলে অনেক সাফল্য কুড়িয়েছেন ফার্নান্দিনহো। সিটির মাঝমাঠে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পাঁচটি প্রিমিয়ার লিগ জিতেছেন, যার মধ্যে চারটি ছিল পেপ গার্দিওলার কোচিংয়ে।
আরও পড়ুন
| ২৬ মাস পর ফিরছেন পল পগবা |
|
গার্দিওলার সিটির অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন ফার্নান্দিনহো। সিটির এই কোচ ব্রাজিলিয়ান তারকাকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে সবসময় দলের পাশে থাকার চেষ্টা করে। যারা খেলছে না, আমার জন্য, এবং স্টাফদের জন্যেও। সে সত্যিই উদার। সে সবসময় শুধু দলের ভালো জন্যই ভাবে।’
ফার্নান্দিনহোর ২৩ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৩ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব আতলেতিকো প্যারানেনসে যোগ দিয়ে। এরপর ইউক্রেনের ক্লাব শাখতার দোনেৎস্কতে আট মৌসুম খেলে ছয়টি শিরোপা জিতেছেন।
২০১৩ সালে সিটিতে নাম লেখান ফার্নান্দিনহো। ইংলিশ ক্লাবটিকে ৩৮৬ ম্যাচ খেলে ২৬ গোল করেছেন এই মিডফিল্ডার। সিটিতে নয় মৌসুমে ১২টি ট্রফি জিতেছেন। অনেকেই কাছেই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সেরা ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় ফার্নান্দিনহো।
২০২২ সালের জুনে ক্যারিয়ারের শুরু যেখান থেকে করেছিলেন, সেই আতলেতিকো প্যারানেনসে ফিরে যান ফার্নান্দিনহো। সবশেষ মৌসুমে ক্লাবটিতে ৪৬টি ম্যাচ খেলে, ৮টি গোল এবং ৭টি অ্যাসিস্ট করেন তিনি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ক্লাব ছাড়ার পর ফুটবল থেকে এতদিন দূরে থাকার পর অবসরের ঘোষণা দেন ফার্নান্দিনহো।
ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ২০০৩ সালে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জেতেন ফার্নান্দিনহো। ফাইনালে গোলও করেছিলেন এই মিডফিল্ডার। সেলেসাওদের হয়ে ৫৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ব্রাজিল সিনিয়র দলের হয়ে তাঁর সর্বোচ্চ অর্জন ২০১৯ সালে কোপা আমেরিকা জয়।

মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) নতুন মৌসুমে নিজেদের নিজেদের মাঠেই নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি। আগামী ৪ এপ্রিল অস্টিনের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে উদ্বোধন হবে ক্লাবটির নতুন স্টেডিয়াম ‘মায়ামি ফ্রিডম পার্ক’। বৃহস্পতিবার ঘোষিত ২০২৬ এমএলএস সূচিতে নিশ্চিত করা হয়েছে বিষয়টি।
আগামী বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে ৫১০ ম্যাচের নিয়মিত এমএলএস মৌসুম। প্রতিটি দল খেলবে ৩৪টি করে ম্যাচ। সূচি অনুযায়ী, ৭ নভেম্বর শেষ হবে লিগ পর্ব। এর মাঝেই থাকবে ২৫ মে থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত বিরতি। মেক্সিকো, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া বিশ্বকাপের জন্যই এ বিরতির সিদ্ধান্ত। বিশ্বকাপ ফাইনাল ১৯ জুলাই হওয়ার ঠিক আগে লিগ পুনরায় মাঠে গড়াবে।
প্রথম দিনের ম্যাচের সংখ্যা ১৩। উদ্বোধনী দিনেই মাঠে নামবে মেসির দল। সন হিউং-মিনের লস অ্যাঞ্জেলেস এফসির মুখোমুখি হবে ইন্টার মায়ামি, লস অ্যাঞ্জেলেস মেমোরিয়াল কলিজিয়ামে।
আরও পড়ুন
| শৈশবের ক্লাবে প্রথম ট্রফি জিতে ইতিহাস ডি মারিয়ার |
|
মার্চে ইন্টার মায়াম সফর করবে অরল্যান্ডো, ডিসি ইউনাইটেড, শার্লট ও নিউইয়র্ক সিটি। তারপরই নিজেদের মাঠে প্রথমবারের মতো ২৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার নতুন স্টেডিয়ামে খেলবে।
বিশ্বকাপ বিরতি শেষে ১৬ জুলাই চারটি ম্যাচ দিয়ে আবার মাঠে গড়াবে লিগ। সেদিন মন্ট্রিয়াল–টরন্টো, শিকাগো–ভ্যানকুভার, সেন্ট লুইস–কানসাস সিটি ও সিয়াটল–পোর্টল্যান্ড মুখোমুখি হবে। পরদিন ন্যাশভিল–আটলান্টা এবং লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি–লস অ্যাঞ্জেলেস গ্যালাকির ম্যাচও রয়েছে সূচিতে।
২৯ জুলাই শার্লটে হবে এবারের এমএলএস অল-স্টার ম্যাচ। নিয়মিত মৌসুম শেষে নভেম্বরে ফিফা উইন্ডোর সময় কোনো ম্যাচ রাখা হয়নি। এর পরই শুরু হবে এমএলএস প্লে-অফ পর্ব।

৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩। জুভেন্টাসের হয়ে এম্পোলির বিপক্ষে ২৮ মিনিট খেললেন। এরপর দীর্ঘ বিরতি। ২৬ মাস পর শেষ পর্যন্ত আবার মাঠে ফিরছেন পল পগবা। আগামিকাল লিগ আঁ’তে রেন-এর বিপক্ষে ম্যাচে দেখা যেতে পারে এএস মোনাকোর ফরাসি ফুটবলারকে।
ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সব ধরনের ফুটবল থেক সাময়িক নিষিদ্ধ হন পল পগবা। সে সময় তিনি খেলতেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। তদন্ত শেষে নিষিদ্ধ দ্রব্য সেবনের সত্যতা মেলায় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে ৪ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। পগবা অবশ্য সবসময়ই দাবি করেছেন যে ডোপ টেস্টের ঘটনা একটি ভুল ছিল। তিনি দাবি করে এসেছেন, তাঁর খাবারে কোনো অবৈধ উপাদান মেশানো হয়।
আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আপিলের প্রেক্ষিতে পগবার নিষেধাজ্ঞা ৪ বছর থেকে নেমে আসে ১৮ মাসে। তাতে ফুটবল ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন ৩২ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। কিন্তু গত নভেম্বরে পারস্পরিক সমঝোতায় পগবার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে জুভেন্টাস। পেশাদার ক্যারিয়ার ক্যারিয়ারে আবারও অনিশ্চতার মুখে পড়েন।
আরও পড়ুন
| এই তারকাদের দেখা যাবে না ২০২৬ বিশ্বকাপে |
|
শেষ পর্যন্ত এএস মোনাকো পগবাকে দুই বছরের জন্য নিজেদের করে নেওয়ায় নতুন পথচলা হয় তাঁর। ফরাসি ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তিতে সই করার সময়ে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় পগবাকে।
ফের ফুটবলে ফেরার মধ্য দিয়ে ফ্রান্স জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার স্বপ্নও দেখেন পগবা। মাঠে নিয়মিতই অনুশীলন করছেন বিশ্বকাপ জয়ী এই ফরাসি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ইএসপিএন জানিয়েছে, মোনাকোর পরের ম্যাচে শেষ সময়ে কয়েক মিনিট মাঠে নামার সুযোগ পেতে পারেন পগবা। তাকে আগামী কয়েক সপ্তাহে ধীরে ধীরে মাঠে সময় দেওয়াও পরিকল্পনা আছে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করার পর ২০১২-১৩ মৌসুমে জুভেন্টাসে যোগ দেন পগবা। চার বছর পর আবার ইংলিশ ক্লাবটিতে ফেরেন তিনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় দফায় ফের জুভেন্টাসেই পাড়ি জমান ২০২২-২৩ মৌসুমে। ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে ৯১ ম্যাচ খেলে ১১ গোল করেছেন তিনি।

ঘরের ছেলে ফেরাতেই কিনা কে জানে আর্জেন্টিনার লিগের সিস্টেমই পাল্টে গেল। আর তাতে শৈশবের ক্লাবে ফিরে ইতিহাস লিখলেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াও। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশেন (এএফএ) রোসারিও সেন্ট্রালকে লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছে।
১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের পর এই প্রথম লিগ জিতল ডি মারিয়ার ক্লাব রোসারিও সেন্ট্রাল। ৩৯ বছর পর ঘরের ছেলের প্রত্যাবর্তন রাঙাল তাঁরা লিগ শিরোপা জিতে।
আর্জেন্টিনার লিগে এবার পাল্টে গেছে চ্যাম্পিয়ন দল নির্ধারণের নিয়ম। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির ঘরোয়া ফুটবল লিগের সিস্টেম কিছুটা জটিলই মনে হতে পারে অনেকের কাছে। মূলত তাদের প্রধান টুর্নামেন্ট হচ্ছে অপার্তুরা এবং ক্লাউসুরা।
আরও পড়ুন
| এই তারকাদের দেখা যাবে না ২০২৬ বিশ্বকাপে |
|
আর্জেন্টিনার সাধারণ সিস্টেমে প্রতি বছর দুটি আলাদা টুর্নামেন্ট হয়, অপার্তুরা (যা বছরের প্রথম অংশে হয়) এবং ক্লাউসুরা (যা বছরের দ্বিতীয় অংশে হয়)। প্রতিটি টুর্নামেন্টের পর প্লে-অফ হয় এবং ওই টুর্নামেন্টের আলাদা চ্যাম্পিয়ন নির্ধারিত হয়।
অপার্তুরা চ্যাম্পিয়ন দলের বিপক্ষে ক্লাউসুরা চ্যাম্পিয়নের মধ্যে একটি সুপার ফাইনাল ম্যাচ হয়। যেটি সবচেয়ে বড় শিরোপা ধরা হয়ে থাকে। তবে এবার একটু পরিবর্তন হয়েছে। আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন নতুন নিয়ম অনুযায়ী দুটি টুর্নামেন্টের পয়েন্ট যোগ করে হিসাব করা হয়েছে। অর্থাৎ, অপার্তুরা এবং ক্লাউসুরা টুর্নামেন্টের পয়েন্টগুলো যোগ করে যে দল সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট অর্জন করবে তাদের লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করবে।
রোসারিও সেন্ট্রাল ২০২৫ সালের দুটি টুর্নামেন্টের পয়েন্ট যোগ করে মোট ৬৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে। এই পয়েন্টের ভিত্তিতে তারা পয়েন্ট টেবিলে প্রথম স্থানে ছিল, তাই ডি মারিয়ার ক্লাবই চ্যাম্পিয়ন হয়। দুই নম্বরে থাকা বোকা জুনিয়র্স থেকে ৪ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল তারা।
রোসারিও সেন্ট্রাল সামাজিক মাধ্যমে লিখেছে, ‘আমরা বছরের সেরা দল।’ পেশাদার যুগে এ নিয়ে আটটি বড় শিরোপা জিতল তারা। রোসারিও সেন্ট্রালের সভাপতি আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টসকে’ বলেছেন, ‘এই পরিকল্পনা গত কয়েক বছর ধরে চলমান, যাতে ভবিষ্যতে বার্ষিক চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করা যায়। এই টুর্নামেন্ট অ্পার্তুরা, ক্লাউসুরা এবং কোপা দে ক্যাম্পিয়োনেসের সঙ্গে যুক্ত হবে। বার্ষিক চ্যাম্পিয়ন ফিরবে, বর্তমান চ্যাম্পিয়নকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে
তিনি আরো যোগ করেন, ‘এটি আমাদের মতো একটি ক্লাবের জন্য পুরোপুরি প্রাপ্য, যারা প্রথম ম্যাচ থেকেই শেষ পর্যন্ত শীর্ষে ছিল, সবার থেকে বেশি পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে, এবং পুরো বছর শুধু দুটি ম্যাচ হেরেছি আমরা। আমরা খুব খুশি এবং গর্বিত। এই একটি ট্রফিরই অভাব ছিল আমাদের।’
আরও পড়ুন
| সান্তোসের হয়ে গোল করেও নেইমারের ক্ষমা প্রার্থনা |
|
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ডি মারিয়া রোসারিওতে ফিরেই ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘এখানে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, এটি আমার একমাত্র লক্ষ্য। ফিরে আসার স্বপ্ন ছিল, তা পূর্ণ করেছি। এখন পরবর্তী লক্ষ্য হল সেন্ট্রালকে চ্যাম্পিয়ন করা, এবং এটিই আমার এবং আমার পরিবারের আকাঙ্ক্ষা।’
২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর, রোসারিও সেন্ট্রালের ব্লু অ্যান্ড ইয়েলো জার্সিতে অভিষেক হয় ‘এল ফিদিও’ নামে পরিচিত ডি মারিয়ার। ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার আগে ৩৯ ম্যাচে ছয়টি গোল করেন। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে পুরো ইউরোপ চষে বেড়িয়ে সেন্ট্রালে ফিরে এসে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্লাউসুরা টুর্নামেন্টে ১৫ ম্যাচে ৭টি গোল ও ৬টি অ্যাসিস্ট করেন।