১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫:৫৯ পিএম
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র কিছুটা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েই ঘোষণা দেন, ২০২৬ বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলবে তার দল। তবে বাছাইয়ে ধুঁকতে থাকা দলটির মাঠের খেলায় এর নেই কোনো প্রভাব। প্যারাগুয়ের কাছেও হেরে যাওয়ার পর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার মারকুইনহোস বলেছেন, দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন কোচ আর সেটার প্রভাবই দেখা যাচ্ছে তাদের খেলায়।
সেই কাতার বিশ্বকাপ থেকেই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল। বিশ্ব ফুটবলের সমীহ জাগানিয়ে দলটি ক্রমেই যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। নেই কোনো ধারাভিকতা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শুরু থেকে বাজে পারফরম্যান্স উপহার দেওয়া দলটি কোপা আমেরিকায় বিদায় নেয় শেষ আট থেকে। বাছাইয়ে কয়েকদিন আগে ইকুয়েডরকে হারালেও প্যারাগুয়ের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেছে দরিভালের দল।
আরও পড়ুন: ১৬ বছর পর প্যারাগুয়ের কাছে হারলো ব্রাজিল
ম্যাচের পর ব্রাজিলিয়ান টিভি গ্লোবোর সাথে আলাপচারিতায় মারকুইনহোস চাপে থাকা কোচের পক্ষে ঢাল ধরেন। “কোচ এখনও আমাদের সেরা ফুটবল খেলার উপায় খুঁজে বের করছেন। ফলাফলে সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে। দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় আছে, আমাদের মাঝে আত্মবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। (বিশ্বকাপে খেলার) যোগ্যতা অর্জন করা সহজ কাজ নয়, এটা একটা কঠিন সময় এবং কীভাবে এটা পার করতে হবে আমাদের তা জানতে হবে। এটি একটি উত্তরণের সময়, আমরা মোটেও আত্মবিশ্বাসী নই। আমরা কঠোর পরিশ্রম করতে যাচ্ছি, যাতে মাঠের ফলাফল দিয়ে সবকিছুর উত্তর দেওয়ার যায়।”
ম্যাচের ২০তম মিনিটে একমাত্র গোলটি করেন দিয়েগো গোমেজ, যা প্যারাগুয়েকে এনে দেয় ১৪ বছর পর ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রথম জয়। আর বাছাইয়ে টেনেটুনে এগিয়ে যাওয়া পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের এটি নিজেদের শেষ চার ম্যাচে তৃতীয় পরাজয়। ম্যাচে হতশ্রী ফুটবল খেলা ব্রাজিল প্রথমার্ধে গোলের জন্য একটি শটও নিতে পারেনি।
এই ম্যাচের পর সাত ম্যাচে তিন জয়, এক ড্র ও তিন হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে বাছাইয়ের শীর্ষ ছয়টি দল সরাসরি জায়গা পাবে ২০২৬ বিশ্বকাপে।
২৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪:৫৩ এম
এফএ কাপের সেমিফাইনালের আগে বলেছিলেন, এটি জিতলে ম্যানচেস্টার সিটি বড় ক্ষতি এড়াতে পারবে। নটিংহাম ফরেস্টকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার পর অবশ্য তেমন উচ্ছ্বাসে ভাসছেন না পেপ গার্দিওলা। অভিজ্ঞ এই কোচ বলেছেন, এই শিরোপা জয় করলেও তারা নিজেদের মানের কাছাকাছি যেতে পারবেন না।
গত রোববার ওয়েম্বলিতে ফরেস্টকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করে টানা তৃতীয়বারের মত এফএ কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে সিটি, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ক্রিস্টাল প্যালেস। প্রিমিয়ার লিগে খোয়ানো সিটি আগেই বাদ পড়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও কারাবাও কাপ থেকেও। ফলে এফএ কাপই তাদের একমাত্র ভরসা এখন।
আরও পড়ুন
ব্রাজিলের কোচ হওয়ার ‘খুব কাছাকাছি’ আনচেলত্তি |
![]() |
সংবাদ সম্মেলনে সিটির লিগে শীর্ষ পাঁচে থেকে শেষ করা এবং এফএ কাপ জয় একটি সফল মৌসুমে পরিণত করবে কিনা, প্রশ্ন করা হলে গার্দিওলা বলেন, “একেবারেই না।”
সাবেক বার্সেলোনা কোচ এরপর তুলে ধরেন এটা বলার কারণটাও।
“আমাদের জন্য এই মৌসুমটা ভালো যায়নি। আমরা লিভারপুলের চেয়ে এক হাজার মিলিয়ন পয়েন্ট পিছিয়ে আছি। এটা ভালো নয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দিকে তাকান। আমরা কয়টা ম্যাচ জিতেছি? একটি বা দুটি ম্যাচ? আমরা সবসময় একটা মেশিনের মত ছিলাম এবং আমরা দল হিসেবে ভালো ছিলাম না। পরের মৌসুম যাতে ভালো হয়, সেজন্য ক্লাবকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
ফরেস্টের বিপক্ষে সিটির জয়ের দিন একই সময়ে টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৫-১ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় লিভারপুল। আর আর্নে স্লটের দল কাজটা করেছে চার ম্যাচ হাতে রেখেই। ৮২ পয়েন্ট নিয়ে তারা যখন শিরোপা উৎসব করছে, তখন গার্দিওলার দলকে লড়তে হচ্ছে সেরা চারে থাকার জন্য৷ আপাতত অবস্থান তৃতীয় (৬১ পয়েন্ট)।
লিভারপুলের জার্সিতে এর আগে একবার স্বাদ পেয়েছিলেন প্রিমিয়ার লিগ জয়ের। তবে কোভিড-১৯ এর কারণে সেই জয়ের মঞ্চ ও উদযাপন দুটিই ছিল একেবারেই অন্যরকম। এই মৌসুমে ফের লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে মোহামেদ সালাহ তাই অনুভব করছেন আবেগের ভিন্নতা। মিশরীয় তারকা মনে করেন, তাদের এবারের জয়টি আগের চেয়ে বেশি স্পেশাল।
এবারের আগে ২০১৯-২০ মৌসুমে শেষবার লিগ জিতেছিল লিভারপুল। তবে বিশ্বজুড়ে কোভিড মহামারী ছড়িয়ে পড়ার কারণে টানা না খেলে বিরতি দিয়ে মৌসুমের নির্ধারিত সময়ের পর চলেছিল লিগের লড়াই। নানা বাধ্যবাধকতার সাথে দর্শকহীন স্টেডিয়ামে খেলেই শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। ফলে ছিল না বাড়তি আনন্দময় আবহ। তবে এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। অ্যানফিল্ডে দর্শকদের উপস্থিতিতে টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৫-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেছে দলটি।
আরও পড়ুন
রেফারিকে আক্রমণের পর ক্ষমা চাইলেন রুডিগার |
![]() |
ম্যাচের পরে স্কাই স্পোর্টসকে সালাহ তাই শুনিয়েছেন বাড়তি ভালো লাগার কথা।
“আমাদের ভক্তদের সাথে শিরোপার আনন্দ ভাগাভাগি করা এক অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা। এটা গতবারের তুলনায় (২০২০ সাল) বিশেষ করে ভক্তদের কথা চিন্তা করর শতভাগ ভালো। আর্সেনাল-ক্রিস্টাল প্যালেসের ম্যাচটি দেখার সময় আমি চাইনি খেলেই আমাদের শিরোপা নিশ্চিত হোক। আমি এমন একটি অভিজ্ঞতা চেয়েছি, যা আমাদের আগে ছিল না।”
ম্যাচের পর লিভারপুল কোচ আর্ন স্লট এবং খেলোয়াড়রা প্রায় এক ঘন্টা মাঠে অবস্থান করেন অ্যানফিল্ডের হাউজফুল দর্শকদের সাথে। সালাহকে দেখা যায় হাসি মুখে ঘুরে ঘুরে সমর্থকদের সাথে ছবি তুলতে।
পারফরম্যান্স নিয়েও এই মৌসুমে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন সালাহ। টটেনহ্যাম ম্যাচে একটি গোল করেন এই তারকা ফরোয়ার্ড, যা ছিল লিগে তার ২৮তম গোল। এর মাধ্যমে ম্যানচেস্টার সিটির কিংবদন্তি সার্জিও আগুয়েরোকে ছাড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে বিদেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
কোপা দেল রের ফাইনালে ‘অনিশ্চিত’ লেভানদভস্কি |
![]() |
এই মৌসুমে নিজের ও ক্লাবের দারুণ ফর্মের জন্য কোচ স্লটের প্রশংসা করেছেন সালাহ।
“কাজের ব্যাপারেতিনি খুব সৎ। ডাচরা বেশ শক্ত স্বভাবের হয়ে থাকে। তবে তিনি আমাদের জীবনকে আরও সহজ করেছেন। আমি আনন্দিত যে আমরা এখানে (অ্যানফিল্ডে) লিগ জিতেছি।”
দরকার ছিল কেবল একটা ড্র, তবে অ্যানফিল্ডে প্রথম মিনিট থেকেই টটেনহ্যাম হটস্পারকে চাপে রাখল লিভারপুল। শুরুতে গোল খেলেও আক্রমণের ঢেউ তুলে বিরতির আগেই হল তিন গোল। উৎসবের আমেজে এরপর নিশ্চিত হল বড় জয়, সাথে পাঁচ বছর পর প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ। লিভারপুলের কোচ হিসেবে প্রথম মৌসুমেই লিগ শিরোপার স্বাদ পেলেন আর্নে স্লট।
অ্যানফিল্ডে রোববারের ম্যাচে লিভারপুল জিতেছে ৫-১ গোলে। ২০১৯-২০ মৌসুমের পর এটি দলটির প্রথম লিগ শিরোপা। ৩৪ ম্যাচে স্লটের দলের ২৫ জয়ে পয়েন্ট ৮২। দুইয়ে থাকা আর্সেনালের পয়েন্ট ৬৭।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টটেনহ্যামের বিপক্ষে শেষ ১৬টি হোম ম্যাচে এটি লিভারপুলের ১২তম জয়। এর মধ্যে এই ম্যাচের আগের তিনটিতেও ছিল চার গোলের ব্যবধানে জয়।
আরও পড়ুন
ব্রাজিলের কোচ হওয়ার ‘খুব কাছাকাছি’ আনচেলত্তি |
![]() |
লিভারপুলের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের শেষ ২৫ ম্যাচে এটি টটেনহ্যামের ১৭তম হার। লিগে দলটির বিপক্ষে ১৯ ম্যাচ ধরে ক্লিন শিট ধরে রাখতে ব্যর্থ হল স্পার্সরা।
সব মিলিয়ে টটেনহ্যাম এই মৌসুমে লিভারপুলের বিপক্ষে ১৫ টি গোল হজম করেছে। প্রিমিয়ার লিগে প্রথম দেখায় ৬-৩ গোলের পর লিগ কাপের সেমিফাইনাল দ্বিতীয় লেগে ৪-০ গোলে হেরে যায়।
এই জয়ে চার ম্যাচ হাতে রেখেই গত মৌসুমের চেয়ে লিগে বেশি ম্যাচ জিতল লিভারপুল (২৫)। এরই মধ্যে দলটি অর্জন করে ফেলেছে গত মৌসুমের সমান সংখ্যক পয়েন্ট।
তৃতীয় মিনিটে ডান দিক দিয়ে কাট করে সতীর্থের সাথে পাস দেওয়া-নেওয়া করে শট নিয়েছিলেন, তবে থাকেনি লক্ষ্যে। সাত মিনিট পর ভার্জিল ফন ডাইকের ক্রস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়ে কোডি গাকপোর শট ফিরিয়ে দেন টটেনহ্যাম গোলরক্ষক।
নিজেদের বলার মত প্রথম আক্রমণেই লিভারপুলকে চমকে দেয় টটেনহ্যাম। ১২তম মিনিটে ডান দিক থেকে মেডিনসনের ক্রস বক্সের ভেতর খুঁজে নেয় ডমিনিকো সোলানকেকে। নিখুঁত এক হেডারে সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল করতে ভুল হয়নি তার।
এর খানিক বাদেই সমতা টানে লিভারপুল। ডান দিক থেকে আক্রমণে উঠে ডমিনিক সিজোবস্লাই বাড়ানো বল থেকে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন লুইস দিয়াস, তবে অফসাইডের পতাকা উঠে যায়।
আরও পড়ুন
ফাইনালে গিয়েও খুশি হতে পারছেন না গার্দিওলা |
![]() |
এরপর সেমি অটোমেটেড অফসাইড টেকনোলজির সাহায্য নিয়ে দেখা যায়, সিজোবস্লাই অফসাইড ছিলেন না। ফলে গোল পেয়ে যান দিয়াস, আর লিভারপুল পায় ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ।
১৯তম মিনিটে ডান দিক থেকে মোহামেদ সালাহর পাস থেকে বল জালে পাঠিয়েও হতাশ হতে হয় গাকপোকে, কারণ অফসাইড ছিলেন মিশরীয় তারকা। দ্বিতীয় গোলের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি স্লটের দলকে।
২৪তম মিনিটে বক্সের বাইরে রায়ান গ্রাভেনবার্চের কাছ থেকে বল পেয়ে জায়গা বানিয়ে বাঁ পায়ের জোড়াল শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার।
৩৪তম মিনিটে লিভারপুল শিবিরে আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে গোলের দেখা পান গাকপো। এখানেও জড়িয়ে ম্যাক অ্যালিস্টারের নাম। তার কর্নার থেকে বল পেয়ে ১৫ গজ দূর থেকে দারুণ ফিনিশিং দেন এই ডাচ ফরোয়ার্ড৷ সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১০ ম্যাচের মধ্যে এটি তার প্রথম গোল।
বিরতির পরও একচেটিয়া আক্রমণ চালিয়ে যায় লিভারপুল৷ সেই ধারায় ৬৩তম মিনিটে স্কোরলাইন ৪-১ করেন সালাহ। এরপর ডেসটিনি উদোগুয়ের আত্মঘাতী গোলে বিশাল হার নিশ্চিত হয় টটেনহ্যামের।
গত সেপ্টেম্বরে নটিংহাম ফরেস্টের কাছে ১-০ ব্যবধানে হারার পর থেকে লিভারপুল তাদের শেষ ২৯টি প্রিমিয়ার লিগের প্রতিটি খেলায় কমপক্ষে একবার স্কোর করেছিল। এবার সেটা তারা নিয়ে গেল ৩০ ম্যাচে। ২০০১-০২ মৌসুমে আর্সেনালের ৩৮ ম্যাচে টানা গোলের পর এটাই সবচেয়ে বেশি এক টানা গোলের রেকর্ড।
কোপা দেল রের ফাইনাল শেষ হওয়ার ঠিক আগে আন্টোনিও রুডিগার যেভাবে আক্রমণ করেছিলেন রেফারিকে, তা ছিল বিস্ময়কর। রীতিমতো একটা বস্তু ছুঁড়ে মারেন রেফারিকে উদ্দেশ্য করে। এরপরও থেমে না থেকে তেড়ে যেতেও উদ্যত হয়েছিলেন রেফারির দিকে। কাজটা যে ঠিক করেননি, বুঝতে পেরেছেন রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডার। তাই চাইলেন ক্ষমাও।
ঘটনার সূত্রপাত ফাইনালের ১১৮তম মিনিটে। বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালের আগে থেকেই আলোচনায় থাকা রেফারি রিকার্ডো ডি বার্গোস বেনগোয়েটেক্সিয়ার একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে রিয়ালের ডাগআউটে। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আগেই বদলি হিসেবে উঠে যাওয়া রুডিগার মাটি থেকে কিছু একটা কুড়িয়ে মাঠে ছুঁড়ে মারেন রেফারির দিকে, যা অল্পের জন্য তাকে আঘাত করেনি।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়ে, গোল উৎসবে শিরোপার মুকুট লিভারপুলের |
![]() |
সাথে সাথেই রুডিগারকে লাল কার্ড দেন রেফারি। তাতে যেন আরও মেজাজ হারান তিনি। রিয়ালের খেলোয়াড় ও স্টাফদের বাধা উপেক্ষা করে পা থেকে আইস ব্যাগ খুলে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেন রেফারির দিকে, আর কিছু বলতেও দেখা যায় তাকে। অনেক কষ্টে তাকে থামানো সম্ভব হয়।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে নিজের এমন কাণ্ডের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেছেন রুডিগার। “এই ধরনের আচরণের কোনো অজুহাত নেই। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমরা দ্বিতীয়ার্ধে খুব ভালো একটা ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু আমি আমার দলকে সাহায্য করতে পারিনি, আর শেষ বাঁশির আগে একটা ভুল করে ফেলি। রেফারি এবং অন্য যাদের আমি হতাশ করেছি, তাদের সবার কাছে আবারও ক্ষমা চাচ্ছি।”
শেষ সময়ের ওই ঘটনার আগে ও পরে রেফারির সাথে তর্কে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেছেন অধিনায়ক লুকাস ভাসকেস ও মিডফিল্ডার জুড বেলিংহামও।
ঘটনাবহুল ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে রিয়াল হেরে যায় ৩-২ গোলে। পেদ্রির গোলে হান্সি ফ্লিকের দল এগিয়ে যাওয়ার পর কিলিয়ান এমবাপে ও অহেলিয়া চুয়ামেনির গোলে লিড নিয়েছিল রিয়াল। তবে ফেররান তরেস সমতা টানার পর অতিরিক্ত সময়ে জুলস কুন্দের গোলে শিরোপা উঁচিয়ে ধরে বার্সেলোনা।
চলতি মৌসুমে দুটি এল ক্লাসিকোতে ছিল না কোনো প্রাণ। হেসেখেলেই জেতে বার্সেলোনা। কোপা দেল রের ফাইনালের প্রথমার্ধে এক গোল হজম করে যেন সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুই গোল দিয়ে জয়ের আশা জাগাল লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলা হান্সি ফ্লিকের দল সমতা টানল শুরুতে, এরপর জুলস কুন্দের শেষ সময়ের গোলে নিশ্চিত করল মৌসুমে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা।
সেভিয়ায় রোববার কোপা দেল রের এল ক্লাসিকো ফাইনালে রিয়ালকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ সমতায় শেষের পর অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান গড়ে দেন কুন্দে। এই মৌসুমে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে এটি ফ্লিকের দলের হ্যাটট্রিক জয়। এই ফাইনালের আগে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালেও রিয়ালকে হারিয়েছিল বার্সেলোনা।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে কোপা দেল রের শিরোপার জয়ীদের তালিকায় নিজেদের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে বার্সেলোনা। তারা এই প্রতিযোগিতা জিতেছে এই নিয়ে ৩২ বার। রিয়ালের নামের পাশে রয়েছে ২০টি, তারা আছে তিনে। দুইয়ে থাকা আথলেতিক বিলবাও জিতেছে ২৪ বার।
আরও পড়ুন
ফাইনাল উপভোগ করতে চান বার্সা কোচ |
![]() |
চলতি মৌসুমে এর আগে লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে খেলেছিল দুই দল। দুটিতেই ফ্লিকের দলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল। উভয় ম্যাচেই বার্সেলোনার আক্রমণাত্মক ফুটবলের কাছে মার খায় লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। এই ম্যাচেও হয়নি তার ব্যতিক্রম।
প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখে বার্সেলোনা। তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে জুলস কুন্দের হেড চলে যায় পোষ্টের ওপর দিয়ে। ম্যাচের আগে রেফারি রিকার্ডো ডি বার্গোস বেনগোয়েটেক্সিয়াকে নিয়ে বিতর্কের কারণে বাড়তি চোখ ছিল তার দিকে। তবে সেই চাপ সামলে ম্যাচের প্রথম দিকে ভালো কিছু সিদ্ধান্তই নেন তিনি।
প্রথম দশ মিনিটে সেভাবে আক্রমণ শানাতে না পারা রিয়াল বড় ধাক্কা খায় ফেরলন্ড মন্ডির চোটে। ভঙ্গুর রক্ষণভাগে তার বদলি হিসেবে অনভিজ্ঞ ফ্রাঙ্ক গার্সিয়াকে নামান আনচেলত্তি। তবে তাতেও চিত্রে আসেনি কোনো বদল। বারবার উইং ধরে আক্রমণে উঠছিলেন ইয়ামাল, আর গতিতে হার মানাচ্ছিলেন রিয়ালের ডিফেন্ডারদের।
১৬তম মিনিটে রাফিনিয়ার ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের বক্সের ভেতর পড়ে যান ফেদেরিকো ভালভের্দে, তখন বল তার হাতে লাগলে পেনাল্টির আবেদন জানায় বার্সেলোনা। তবে রেফারি তাতে সাড়া দেননি।
২১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে পাওয়া ক্রসে দারুণ এক হেডার লক্ষ্যেই রেখেছিলেন কুন্দে, তবে শেষ মুহূর্তে বাম হাতে ফিস্ট করে ক্লিয়ার করে রিয়ালকে বাঁচান থিবো কোর্তোয়া।
আরও পড়ুন
এফএ কাপ জিতে ‘বড় ক্ষতি’ এড়াতে চান গার্দিওলা |
![]() |
তবে এর ৭ মিনিট পর আর শেষ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বাঁদিক থেকে গতিতে রিয়ালের খেলোয়াড়দের নিয়ে ছেলেখেলা করা ইয়ামাল বল বাড়ান বক্সের একটু বাইরে ফাঁকায় থাকা পেদ্রির দিকে। স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার সময় নিয়ে খুঁজে নেন ঠিকানা।
প্রথমার্ধে রিয়ালের সেরা খেলোয়াড় জুড বেলিংহাম ৩৫তম মিনিটে দানি সেবায়োসের পাস থেকে বল জালে পাঠালেও অফসাইডে থাকায় আর মেলেনি গোল।
৪৩তম মিনিটে রাফিনিয়ার কর্নার জটলার মধ্যে ডিফ্লেকশনের পর ফিরে আসে পোস্টে লেগে। এর এক মিনিট বাদে আরেকটি কর্নার থেকেও বার্সেলোনা পেয়েছিল ভালো সুযোগ, তবে কাজে লাগাতে পারেনি।
একতরফা প্রথম ৪৫ মিনিটে রিয়াল গোলের জন্য নিতে পারে মাত্র একটি শট, সেটাও থাকেনি লক্ষ্যে। আর আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া বার্সেলোনা ৭টি শটের চারটিই রাখে লক্ষ্যে।
বিরতিতে রদ্রিগোর জায়গায় কিলিয়ান এমবাপেকে নামায় রিয়াল। এই অর্ধের শুরুতেই ভিন্ন ছন্দে হাজির হয় দলটি। ৪৮তম মিনিটে বার্সেলোনার একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বলের দখল নিয়ে ডান দিকে ক্রস বাড়ান বেলিংহাম। প্রথম টাচে শট না নিয়ে কিছুটা কঠিন এঙ্গেল থেকে শট নেন ভিনিসিয়ুস, যা ফেরান ওজসিচ সেজেনি। ফিরতি বল পেয়ে ফের ব্রাজিল তারকা শট নিলে কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক।
এমবাপে মাঠে নামার পর থেকেই বেড়ে যায় রিয়ালের আক্রমণের ধার। ৫৫তম মিনিটে ড্রিবলিং করে বক্সে প্রবেশ করে বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসের দিকে। তবে আরও একবার প্রথম টাচে শট না করে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ফিফার বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
বিরতির আগে টানা আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা এই অর্ধের শুরু থেকে কিছুটা ব্যস্ত সময় কাটায়। আর সেটা হচ্ছিল যার কারণে, সেই এমবাপেই শেষ পর্যন্ত রিয়ালকে ম্যাচ ফেরান। বক্সের বাইরে বল নিয়ে আগুয়ান গতিতে এগিয়ে যাওয়া ফরাসি তারকাকে টেনে ফেলে দেন পেদ্রি। রিয়ালের তীব্র প্রতিবাদের মুখে স্রেফ হলুদ কার্ড পান তিনি।
এরপর ফ্রি-কিক থেকে বার্সেলোনা খেলোয়াড়দের দেয়ালের মধ্য দিয়ে বুলেট গতির এক শটে বল জালে পাঠান এমবাপেই। এই প্রথম পেশাদার ক্যারিয়ারে সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে গোলের দেখা পেয়েছেন সাবেক পিএসজি ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন
রেফারি পরিবর্তন না হলেও ফাইনালে অংশ নেবে রিয়াল |
![]() |
একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া রিয়াল খানিক বাদে পেয়েছিল দারুণ সুযোগ। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে ভিনিসিয়ুস পাস দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ছয় গজে ফাঁকায় থাকা এমবাপের দিকে। তবে সেযাত্রায় বার্সেলোনা ক্লিয়ার করতে সমর্থ হয়।
প্রথমার্ধের ঠিক বিপরীত ফুটবল খেলা বার্সেলোনাকে এই দ্বিতীয়ার্ধে চেনাই ছিল দায়। একটা গোল হজমের পরও গুছিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিডও নিয়ে ফেলে রিয়াল। ৭৭তম মিনিটে আর্দা গুলেরের কর্নার থেকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত এক হেডারে গোল করেন ফরাসি মিডফিল্ডার অহেলিয়া চুয়ামেনি।
৮২তম মিনিটে পেদ্রির পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে বাঁ পায়ের কার্লিং শট নেন ইয়ামাল, যা দারুণ ক্ষিপ্রতায় থামান কোর্তোয়া। তবে এর একটু পর তার ভুলে গোল হজম করে বসে রিয়াল। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো বলের দখল নিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন স্রেফ ফেররান তরেস। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ব্যর্থ হন কোর্তোয়া, আর ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার পারেননি ক্লিয়ারেন্স করতে।
ম্যাচের ধারার বিপরীতে গোল করে যেন প্রাণ ফিরে পায় বার্সেলোনা শিবির। নব্বই মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার একটু আগে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ভিনিসিয়ুস।
ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, ঠিক তখন ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে রিয়ালকে প্রায় বিপদে ফেলেই দিচ্ছিলেন রাউল আসেন্সিও। রাফিনিয়াকে ডি-বক্সের মধ্যে ফাউল করে হজম করেন পেনাল্টি। তবে ভিএআর চেকের পর ডাইভ দেওয়ার কারণে পেনাল্টি বাতিল করে রাফিনিয়াকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম দশ মিনিট চলে আক্রমণ ও পাল্টা-আক্রমণের মধ্য দিয়ে। ১০৩তম মিনিটে বক্সের ভেতর সতীর্থের পাস পেয়ে বাঁদিক থেকে জটলার মধ্যে শট নেন তরেস, যা অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। যদি থাকত, খুঁজে নিত জালের ঠিকানা। কারণ, কোর্তোয়ারও চেয়ে দেখা ছাড়া আর করার ছিল না কিছুই।
১০৭তম মিনিটে আরও একবার রিয়ালের জালে বল পাঠান তরেস। তবে তিনি অফসাইডে থাকাই এই দফায় হতাশই হতে হয় বার্সেলোনাকে। এর মিনিট পাঁচেক পর দুর্দান্ত একটি সুযোগ তৈরি করেন রিয়াল মিডফিল্ডার গুলের। তার ক্রসে ঝাঁপিয়েও হেডার দিতে পারেননি বেলিংহাম।
১১৬তম মিনিটে রিয়ালের সর্বনাশ করেন লুকা মদ্রিচ। নিজেদের অর্ধে অভিজ্ঞ এই মিডফিল্ডারের ভুল পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান কুন্দে। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে প্লেসিং শটে পরাস্ত করেন কোর্তোয়া। এর মিনিট খানেক বাদেই বার্সেলোনার বক্সে ফাউলের শিকার হন এমবাপে। শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজলেও তিনি নিজেই অফসাইড থাকায় সেটা বাতিল হয়ে যায়।
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজার ঠিক আগে উত্তেজনা দেখা দেয় রিয়ালের ডাগআউটে। বদলি হিসেবে আগেই উঠে যাওয়া রুডিগার রেফারিকে উদ্দেশ্য করে একটা বস্তু ছুড়ে মারেন। শাস্তি হিসেবে তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়। এরপর যোগ হয় রিয়ালের হারের দুঃখ।
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
২১ দিন আগে
২১ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৬ দিন আগে