প্রথম দুই ম্যাচে অন্য ব্যাটাররা রানের জন্য সংগ্রাম করলেও নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন সাবলীল। চোটের কারণে অধিনায়ককে হারানো বাংলাদেশ তৃতীয় ম্যাচে একশর আগেই চার উইকেট হারিয়ে পড়ে গেল প্রবল চাপের মুখে। তবে বুক চিতিয়ে লড়ে দুর্দান্ত এক জুটিতে দলকে উদ্ধারে এগিয়ে এলেন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। দুজনের ফিফটিতে শুরুর চাপ কাটিয়ে বাংলাদেশ পেল লড়াই করার মত একটা পুঁজি।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের স্কোর ৮ উইকেটে ২৪৪।
ম্যাচের আগে বড় ধাক্কায় বাংলাদেশ। কুঁচকির চোটে এই ম্যাচ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে যান শান্ত, যিনি ছিলেন দারুণ ছন্দে। নিজের ১০০তম ওয়ানডেতে তাই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব বর্তায় মিরাজের কাঁধে।
আরও পড়ুন
আগে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, নাহিদ রানার অভিষেক |
![]() |
তবে আগে ব্যাটিং নেওয়ার পর তার দলের চিত্রটা সুবিধার হয়নি প্রথম ২০ ওভারে। প্রথম দুই ম্যাচে ত্রিশের ঘরে দুটি ইনিংস খেলা সৌম্য সরকার এদিনও ভালো শুরু পান। তবে সেটা বড় করতে পারেননি। আজমতউল্লাহ ওমারজাইয়ের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিন চারে করেন ২৪ রান।
৫৩ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার চার রান বাদেই সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। পুরো সিরিজেই হতাশাজনক ব্যাটিং করা তাওহীদ হৃদয় আরও একবার ব্যর্থ হন। শুরু থেকেই নড়বরে থাকার পর আউট হন রশিদ খানের বলে।
মিরাজের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে ফেরা জাকির হাসান। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে মাত্র ৭২।
আরও পড়ুন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থেকেও ছিটকে গেলেন শান্ত |
![]() |
এরপরই শুরু হয় মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহর প্রতিরোধ। একজন ব্যাট হাতে ভালো ছন্দে থাকলেও অন্যজন এই ফরম্যাটে সাম্প্রতিক সময়ে ছিলেন না একেবারেই রানের মধ্যে। মাহমুদউল্লাহ সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে শুরু থেকেই করেন ইতিবাচক ব্যাটিং। আর জুটি গড়ায় মনোযোগ দেওয়া মিরাজ ব্যাটিং করেন কিছুটা ‘টেস্ট’ মেজাজে।
ফলে মাহমুদউল্লাহ যেখানে ব্যাট করেন প্রায় ৮০-৯০ স্ট্রাইক রেটে, সেখানে মিরাজ প্রায় পুরো ইনিংসেই স্ট্রাইক রেট রাখেন ৬০-এর মধ্যে। তবে উইকেটের আচরণ ও পরিস্থিতি বিবেচনায় একটা বড় জুটির ছিল ভীষণ প্রয়োজন। আর সেই কাজটা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে করেন দুজন।
তাদের ক্রমেই জমে ওঠা জুটি ধীরে ধীরে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। আফগান বোলারদের হতাশ করে দলকে এনে দেন শক্ত ভিত। একে একে দুজনই তুলে নেন ফিফটি। শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রানের জুটির ইতি ঘটে মিরাজের বিদায়ে। তার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক ১১৯ বলে করেন ৬৬ রান।
আরও পড়ুন
নেই অধিনায়ক শান্ত, কেমন হবে বাংলাদেশে একাদশ? |
![]() |
এরপর অন্য ব্যাটাররা কেউই পারেননি বলার মত অবদান রাখতে। একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান কেবল মাহমুদউল্লাহ। যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে শতকটা প্রাপ্যই ছিল তার। তবে ইনিংসের শেষ ওভারে সেই সমীকরণ আর মেলাতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। রান আউটে কাটা পড়েন ৯৮ রানে। সেঞ্চুরি মিস করলেও খুশি হতেই পারেন দলের বিপদে দারুণ এক ইনিংস খেলতে পেরে।
No posts available.
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৬:০৯ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫:২০ পিএম
২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১৭ পিএম
দুই দলের একাদশে তিনজন
করে স্পিনার। তাঁদের সঙ্গে আছেন খণ্ডকালীন স্পিন অলরাউন্ডাররা। বোঝাই যাচ্ছিল- রাওয়ালপিন্ডি
টেস্টেও ‘ব্যাটল অব স্পিন’। প্রথম দিন ৯১ ওভারের ৬২টি করেছেন স্পিনাররা। অর্থাৎ ৬৮.১৩
শতাংশ ঘূর্ণি বল সামলাতে হয়েছে স্বাগতিক ব্যাটারদের।
এর মধ্যেও রাওয়ালপিন্ডির
অতীত পরিসংখ্যান বিবেচনায় প্রথম দিন ব্যাট হাতে ভালোই কাটল পাকিস্তানের। শান মাসুদ-আব্দুল্লাহ
শফিকের ফিফটি, সৌদ শাকিলের কার্যকর ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটে ২৫৯ রান তুলেছে তারা। শাকিল
৪২ ও সালমান আলি আগা ১০ রান থেকে আগামীকাল দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিং শুরু করবেন।
টেস্টে রাওয়ালপিন্ডির প্রথম
ইনিংসের গড় ৩৩৬ রান। উইকেট ভাঙার আগে কিছুটা ব্যাটিং সুবিধা পাওয়ার কথা ব্যাটারদের।
টস জিতে নতুন উইকেটে ব্যাটিংয়ের সুযোগ নিতে কোনো চিন্তা করতে হয়নি পাকিস্তানের অধিনায়ক
শান মাসুদকে। ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে কোনো দেরি করেননি।
দুই ওপেনার ইমাম-উল হক
ও শফিক ভালো শুরুরই ইঙ্গিত দেন। প্রথম সেশনে ১২ ওভার কাটিয়ে দেন নির্বিঘ্নে। তবে ১৩তম
ওভারে ঘটে বিপর্যয়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১০০০ উইকেটের মাইলফলকের লক্ষ্যে নেমে প্রোটিয়াদের
প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন বাঁহাতি স্পিনার সিমন হারমার। দুর্দান্ত এক ঘূর্ণিতে বোল্ড
করেন ইমামকে। ৩৫ বলে ১৭ রান আসে এই বাঁহাতির ব্যাট থেকে।
৩৫ রানে প্রথম উইকেট হারায়
পাকিস্তান। দ্বিতীয় উইকেটে শফিক-মাসুদের ১১১ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিচ্ছিল
তারা। দ্বিতীয় সেশন বিরতির আগে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট হারায় স্বাগতিকেরা। খালি
হাতে যখন সেশন করতে যাচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, তখনই সাফল্যের দেখা পেলেন হারমার। এবার
তাঁর শিকার শফিক (৫৭)।
তারপর দ্বিতীয় টেস্টে ফেরা
অভিজ্ঞ কেশভ মহারাজের জাদুতে ফেরেন বাবর আজম। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রাওয়ালপিন্ডি
টেস্টেও প্রথম ইনিংসে হলেন ব্যর্থ। ফেরেন ১৬ রানে। আরেকপ্রান্তে সাবলীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি
করেন শান। তবে সেঞ্চুরির আক্ষেপ ফেরেন মহারাজের বলে। ১৭৬ বলে আউট হন ৮৭ রানে। ইনিংসে
চিল তিনটি ছক্কা দুটি চার। তৃতীয় সেশনে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (১৯) ফেরান কাগিসো রাবাদা।
দুটি করে উইকেট নিয়েছেন হারমার ও মহারাজ।
স্পিনারদের
দাপটের আভাস নিয়েই মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের
বিপক্ষে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নামছে বাংলাদেশ দল। প্রায় দেড় বছর পর এবার দ্বিপাক্ষিক
সিরিজ জয়ের হাতছানি তাদের সামনে।
হোম অব ক্রিকেটে দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে। প্রথম ম্যাচের মতোই দ্বিতীয়টিতেও স্পিনবান্ধব উইকেট
হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। প্রথম ওয়ানডেতে মাত্র ২০৭ রান করেও ৭৪ রানের বড় জয়ে সিরিজে ১-০
ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
স্পিনের দাপট থাকা ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮৮.৪ ওভারের মধ্যে ৬২ ওভার বল করেছেন স্পিনাররা।
মাত্র ৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন রিশাদ হোসেন। এবার দ্বিতীয় ওয়ানডের দলে যোগ করা হয়েছে
আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকেও।
মঙ্গলবারের
ম্যাচে তাই ৪ স্পিনার নিয়ে খেলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রিশাদের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে
ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তানভির ইসলাম। তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন নাসুম। সেক্ষেত্রে
বিশ্রাম পেতে পারেন প্রথম ওয়ানডেতে মাত্র ২ ওভার করা তাসকিন আহমেদ।
এমনটা
হলে দুই বছর পর আবার বাংলাদেশের একাদশে দেখা যাবে দুই বাঁহাতি স্পিনার। ২০২৩ সালের
অক্টোবরে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একসঙ্গে খেলেছিলেন নাসুম
ও সাকিব আল হাসান।
এতে আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে, ওয়ানডে সিরিজের বাকি অংশে স্পিন সহায়ক উইকেটেই খেলা হবে।
তবে বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ সতর্ক করে দিয়েছেন, এমন উইকেটে আরও সাবধান
থাকতে হবে স্পিনারদের।
“আমি মনে করি, একজন স্পিনার হিসেবে যখন আপনি এমন ধরনের উইকেট দেখেন, তখন আপনি বেশি রোমাঞ্চিত হয়ে পড়েন। আর যখন রোমাঞ্চিত হন, তখন নিজের প্রক্রিয়াটা ভুলে যান। অথচ প্রক্রিয়াই সবকিছু।”
“উইকেট পেতে হলে শুধু ভালো বল করলেই হবে না, ভালো ওভার করতে হবে। টার্নিং উইকেটে মেডেন ওভার করতে হবে, ধারাবাহিকভাবে ভালো ওভার করতে হবে- তবেই উইকেট আসবে। আমার বার্তাটা খুবই সহজ- আপনি যদি নিজের প্রক্রিয়াটা মনে রাখেন, উইকেট আসবেই।”
প্রথম
ম্যাচে কালো মাটির উইকেটে দুই দলের ব্যাটাররাই রানের জন্য হিমশিম খেয়েছেন। বাংলাদেশ
যেখানে পরিকল্পনা নিয়ে ধীরে ধীরে রান তোলার চেষ্টা করেছিল, সেখানে ৫১ রানের উদ্বোধনী
জুটির পরই ভেঙে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
দ্বিতীয় ম্যাচে তাই দুই দলই প্রথম ওয়ানডের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা
সাজাতে চায়। প্রথম ম্যাচে ১৮৩টি ডট বল খেলার পর মাঝের ওভারগুলোতে স্ট্রাইক রোটেশনের
দিকে জোর দিয়েছে বাংলাদেশ।
মুশতাক বলেন,
“ফিল সিমন্স এবং মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ব্যাটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন কীভাবে মাঝের ওভারগুলোতে সিঙ্গেল নিতে হয়। স্পিনাররাও নিজেদের ফিল্ড সেট করেছিল, যাতে পুরোটা অনুশীলনে আসল ম্যাচের মতো পরিবেশ তৈরি হয়।”
অন্যদিকে, কঠিন কন্ডিশনে খাপ খাওয়ানোর দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের বাঁহাতি
স্পিনার খারে পিয়েরে বলেন, দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে ব্যাটাররা।
“আমাদের ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে মানিয়ে নিতে হবে, দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। আমাদের দলে অনেক ভালো ব্যাটার আছে। বিষয়টা কেবলই মানিয়ে নেওয়ার। আর এটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট- তাই কঠিন হবেই, চ্যালেঞ্জও থাকবে। কিন্তু আমাদের উপায় খুঁজে বের করতেই হবে।”
আর
বাংলাদেশের বোলারদের বিশেষ করে স্পিনারদের চেষ্টা থাকবে মূলত ক্যারিবিয়ানদের মানিয়ে
নিতে না দেওয়ার। সেটি করতে পারলেই ৪ সিরিজ পর আবার ওয়ানডেতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ট্রফি
ঘরে তুলতে পারবে বাংলাদেশ।
জাতীয়
দলে একসময় লেগ স্পিনারের অভাবে ভুগত বাংলাদেশ। রিশাদ হোসেনের আগমনে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছে তারা। তবে টেস্টে এখনও কব্জির মোচড়ে বল ঘোরানোর মতো কাউকে
পায়নি বাংলাদেশ।
পাকিস্তানি
স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদের বিশ্বাস, সাদা বলের দুই সংস্করণ মতো টেস্টেও ভাল করতে
পারবেন রিশাদ। তবে সেজন্য আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট
খেলে রিশাদকে টেস্টের জন্য তৈরি হওয়ার বার্তাও দিয়েছেন মুশতাক।
২০২৩
সালের মার্চে টি-টোয়েন্টি ও একই বছর ডিসেম্বরে ওয়ানডে অভিষেকের পর থেকে এখন জাতীয় দলে
দুই ফরম্যাটেই নিয়মিত মুখ রিশাদ। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে টেস্টেও খেলবেন তিনি, এমনটাই
আশা করেন মুশতাক।
ওয়েস্ট
ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন বাংলাদেশের স্পিন
কোচ।
“শতভাগ (আশা করি রিশাদ টেস্ট খেলবে)। কারণ এখন প্রায় সব দলেরই শেষ ৪ ব্যাটার ব্যাটিং করতে পারে। বিশেষ করে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। তবে রং-আন করতে পারা লেগ স্পিনারের বিরুদ্ধে, রিশাদের মতো উচ্চতা ও বাউন্স পাওয়া স্পিনারের বিপক্ষে শেষ ৪ ব্যাটারের কাজ সহজ হবে না।”
“আমরা যদি টেস্টে বা ৫০ ওভারের ক্রিকেটে লেগ স্পিনার খেলাতে পারি সেটি কাজে লাগতে পারে। যেহেতু শেষ ৪ ব্যাটার রং-আন পড়তে পারবে না, টেস্ট ক্রিকেটেও রিশাদ খুব কার্যকর হবে। তবে তার সেই জায়গাটি অর্জন করে নিতে হবে। ভালো বোলিং করতে হবে।”
একসময়
ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত জায়গা পেতেন না রিশাদ। জাতীয় দলে খেলেই নিজের জায়গা পোক্ত করতে
হয়েছে তার। এখনও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়মিত নন তরুণ এই লেগ স্পিনার।
২০১৮
সালে অভিষেক হলেও, দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণির ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত মাত্র
২১ ম্যাচ খেলেছেন রিশাদ। যেখানে তার শিকার ৩১ উইকেট।
মুশতাক
বলেছেন, জাতীয় দলের খেলা না থাকলে রিশাদের উচিত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা।
“রিশাদ টেস্ট খেলতে অনেক আগ্রহী। আমি তাকে বলব (প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে)। সে নিজেও আগ্রহী। কারণ সে জানে, লাল বলে যত বেশি খেলবে, তত ভালো হবে বোলিং।”
অনেক
সময় একটি জয়ই বদলে দিতে পারে অনেক কিছু। যেমনটা হয়েছে বাংলাদেশ দলের বেলায়ও। ওয়ানডেতে
ধুঁকতে থাকা দলটি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জেতার পর ৩-০ ব্যবধানে সিরিজের
ট্রফি ঘরে তোলার ব্যাপারে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে।
আফগানিস্তানের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর গেল গেল রব উঠে গিয়েছিল
বাংলাদেশ ক্রিকেটে। নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটে টানা ৪ সিরিজ হেরে যাওয়ার ধাক্কা ভালোভাবে
নেয়নি সমর্থকরাও। আরব আমিরাত থেকে দেশে ফেরার পর উত্তেজিত জনতার আক্রোশের মুখে পড়েন
ক্রিকেটাররা।
সেখান
থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের
মাঠে নিজেদের চেনা কন্ডিশনে ক্যারিবিয়ানদের দাঁড়াতেই দেয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
প্রথম
ম্যাচে সহজ জয়ের পর এখন আলোচনায় আসছে সিরিজ হোয়াইটওয়াশের আলোচনা। গত বছরের ডিসেম্বরে
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারের নিজেদের
দেশে সেই পরাজয়ের বদলা নেওয়া সুযোগ।
মিরপুর
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি
হবে বাংলাদেশ। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে অতিথিদের হোয়াইটওয়াশের প্রসঙ্গ।
বাংলাদেশের
স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ বলেন, ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার বিশ্বাস আছে তাদের দলের।
“ইনশাআল্লাহ্! আপনারা জানেন, আমি যখনই কথা বলি... কোচ হিসেবে আমরা চেষ্টা করি ক্রিকেটারদের মধ্যে বিশ্বাসটা জন্ম দিতে। বিশ্বাসই সব কিছু। আমার বিশ্বাস যদি দুর্বল হয়, অবশ্যই ক্রিকেটাররা সেটি গ্রহণ করবে না। তাই আমরা সেটি করার চেষ্টা করি।”
“আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মূলত টেম্পারমেন্ট ও বিশ্বাসের ব্যাপার। আমি বলতে পারি, বাংলাদেশে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। তারা যে কোনো দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। আমাদের সেটি বিশ্বাস করতে হবে।”
আগের ম্যাচে ব্যাটিংটা ঠিক মনমতো হয়নি ইংল্যান্ডের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ঝড় তুলে রানের সেই ক্ষুধা ভালোভাবেই মেটাল ইংলিশরা।
ক্রাইস্টচার্চে আজ প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৩৪ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। ফিল সল্ট ও হ্যারি ব্রুকের ঝোড়ো ফিফটির পর টম বেন্টনের ছোট্ট কেমিওতে নিজেদের কুড়ি ওভারের ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তোলে তারা। জবাবে ১৮ ওভারে ১৭১ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তাতে তিন ম্যাচের সিরিজে ৬৫ রানের জয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারীরা।
ইংল্যান্ডের রান পাহাড়ের জবাবে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। ১৮ রানে সাজঘরের পথ ধরেন দুই কিউই ব্যাটার। ব্রাইডন কার্সের বলে ক্যাচ তুলে আউট হন টিম রবিনসন (৫ বলে ৭)। তিনে নামা রাচিন রবীন্দ্র দুই চারে ৩ বলে ৮ করে কার্সের দ্বিতীয় শিকার হন।
আরও পড়ুন
‘ক্যাচিং ব্যাট’ দিয়ে কেন ব্যাটিং অনুশীলনে সৌম্য-শান্তরা |
![]() |
এরপর মার্ক চ্যাপম্যানকে নিয়ে ধস ঠেকান সাইফোর্ট। তবে দলীয় ৮৭ রানে তাদের জুটি ভাঙতেই দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে সেখানেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ১০৪ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর ইংল্যান্ড কত বড় ব্যবধানে জিতে সেটাই ছিল দেখার ।
সপ্তম উইকেটে জেমস নিশাম ও মিচেল সেন্টনার ২৩ বলে ৫৭ রানের এক জুটি কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ১৬.১ ওভারে দলীয় ১৬১ রানে এই জুটি ভাঙতেই প্রতিরোধও মেষ হয় কিউইদের।
ইংল্যান্ডের হয়ে সেরা বোলার ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে চার উইকেট নেওয়া আদিল রাশিদ। দুটি করে শিকার লুক উড, ব্রাইডন কার্স ও লিয়ান ডওসনের।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংল্যান্ডেরও শুরুটা ভালো হয়নি । দলীয় ২৪ রানে আউট হন জস বাটলার। তবে এরপর জ্যাকব বেথেলকে নিয়ে তান্ডব চালান সল্ট। পাওয়ার প্লে’তে ৬৮ রান তোলে ইংল্যান্ড। ৬ ওভারের শেষ বলেই ভাঙে তাদের ২৪ বলে ৪৪ রানের জুটি।
বেথেল ফেরার পর এবার সল্টের সঙ্গে চার-ছক্কার বৃষ্টি নামান অধিনায়ক ব্রুক। ৩৩ বলে ফিফটি করেন সল্ট। আর খুনে মেজাজে ব্যাট চালানো ব্রুক মাত্র ২২ বলেই ফিফটি করেন। একটা সময় মনে হচ্ছিল দু’জনই বুঝি তিন অঙ্ক স্পর্শ করবেন।
১৭.২ ওভারে দলের রান যখন ১৯৭, কাইল জেমিসনের বলে ক্যাচ তুলে ফেরেন ব্রুক। আউট হওয়ার আগে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ৩৫ বলে ৭৮ রান করেন ডান হাতি ব্যাটার। শেষ হয় সল্টের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তাঁর ৬৮ বলে ১২৯ রানের দুর্দান্ত জুটি। জেমিসনের একই ওভারেই ফিরেন সল্ট। ১১ চার, এক ছয়ে তিনি খেলেন ৫৬ বলে ৮৫ রানের ইনিংস। এরপর শেষ দিকে ঝড় তোলার কাজ করেন ১২ বলে ২৯ রান করা বেন্টন।
আরও পড়ুন
টেস্টে পাকিস্তানের নতুন ‘বুড়ো’ আফ্রিদি |
![]() |
চার ওভারে ৪৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন জেমিসন। একটি করে উইকেট নেন জেকব ডাফি ও মিচেল ব্রাসওয়েল।
অকল্যান্ডে সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামী বৃহস্পতিবার।