আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের ইচ্ছা থাকলেও দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান দ্বিতীয় টেস্ট দিয়েই যে সেটা হবে, ভাবতেও পারেননি। দলে চোটের হানায় পেয়েছেন সেই সুযোগ। তবে অভিষেক টেস্টের প্রথম দিনটা বাংলাদেশ দলের মত কঠিন গেছে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনেরও। এরই মধ্যে রান পাহাড়ে চড়ার শক্ত ভিত যে পেয়ে গেছে সিরিজে এগিয়ে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তরুণ এই কিপার-ব্যাটার মনে করেন, এখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ইতিবাচক ফল বের করবেন তারা।
প্রথম দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ২ উইকেটে ৩০৭। এক সেঞ্চুরিয়ান ট্রিস্টান স্টাবস বিদায় নিলেও ১৪১ রানে অপরাজিত আছেন ওপেনার টনি ডি জর্জি। উইকেটের যে অবস্থা, তাতে এখানে বড় ধস না নামলে অনায়াসেই ৪৫০-৫০০ রান করতে পারবে দলটি। আর সেটা হলে ভারত সফর থেকেই ব্যাটিং ব্যর্থতায় থাকা বাংলাদেশের জন্য ম্যাচে ফেরাটা ভীষণ কঠিন হয়ে যাবে।
তবে দিনের শেষে টি-স্পোর্টসের সাথে আলাপচারিতায় অঙ্কন শোনালেন ইতিবাচক কথা। “আমরা যদি আর কয়েকটা উইকেট নিতে পারতাম, তাহলে এটা ৫০-৫০ অবস্থা থাকত। তাই এখন হয়ত তারা একটু ড্রাইভিং সিটে আছে। আমরা যদি কালকে শুরুতে কিছু উইকেট নিতে পারি, তাদের দ্রুত গুটিয়ে দিতে পারি, সেটাই লক্ষ্য। আমাদের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি আমরা ঘুরে দাঁড়াবো এবং সিরিজ ১-১ ড্র হবে।”
দুই পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে খেলা বাংলাদেশ প্রথম দিনে সেভাব দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের চাপে ফেলতে পারেননি। দুটি উইকেটই নিয়েছেন প্রথম টেস্টের সেরা বোলার তাইজুল ইসলাম। অন্য তিন বোলাররা পারেননি তাকে সমর্থন যোগাতে। আর উইকেটের পেছনে একবার কিপার অঙ্কন ও আর একবার স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচ মিসে বাড়ে হতাশা।
ফিল্ডিংয়ে এমন চিত্র বাংলাদেশের নতুন নয়। উন্নতি সম্ভব এই টেস্টে? অঙ্কন এখানেও বেশ ইতিবাচক। “অবশ্যই ফিল্ডিংয়ে আমাদের আরও ভালো করা উচিত। সেই চেষ্টাই করছি, সবাই চাচ্ছি ভালো করতে। ফিল্ডিং ভালো করতে ফিটনেসটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করি আগামীতে সবাই এটার প্রতিফলন দেখতে পারবে।”
অঙ্কন এই টেস্ট খেলছেন মূলত দুজনের চোট ও অসুস্থতার কারণে। স্কোয়াডে আসেন জাকের আলি অনিক চোট পাওয়ায়। আর ম্যাচের আগে লিটন দাস অসুস্থ বোধ করা দলের একমাত্র কিপার হওয়া একাদশে কিপার-ব্যাটার হিসেবেই চলে আসেন তরুণ এই ব্যাটার। স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার আগে খেলছিলেন চলমান জাতীয় ক্রিকেট। একমাত্র ইনিংসে করেছেন সেঞ্চুরিও।
অভিষেক টেস্ট আচমকাই হয়ে গেলেও তাই রোমাঞ্চ খেলে যাচ্ছে অঙ্কনের মনে। “যখন থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখন থেকেই মূল স্বপ্ন ছিল যেন একদিন বাংলাদেশের হয়ে একদিন তিন ফরম্যাটেই খেলতে পারি। তাই টেস্ট দলে খেলতে পেরে ভালো লাগছে। এই ম্যাচটা জেতা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে খেলতে হুট করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চলে আসায় প্রথম ম্যাচে নিজের ওপর প্রত্যাশার বাড়তি চাপ দিচ্ছেন না অঙ্কন। “আশা বলতে, আমি খুব বেশি কিছু ভাবার সুযোগ পাইনি। গতকালই দলের সাথে যোগ দিলাম। ইতিবাচকভাবেই তাই নিচ্ছি যে হুট করে যেহেতু হয়েছে, তাই এত কিছু ভাবার দরকার নেই। কারণ তার আগেই মাঠে নেমে পড়েছি।”
৩১ অক্টোবর ২০২৪, ৭:৩১ পিএম
৩১ অক্টোবর ২০২৪, ৭:০৩ পিএম
গেল কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় নাজমুল হাসান শান্তর অধিনায়কত্ব। আলোচনায় ছিল সাউথ আফ্রিকা সিরিজ শেষে শান্ত আর অধিনায়কত্ব করতে চান না। যদিও এই নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কিংবা শান্ত কেউই মুখ খুলেননি। দ্বিতীয় টেস্ট শেষে শান্ত জানিয়েছেন বোর্ড থেকেই খুব শীঘ্রই এই নিয়ে আসবে সিদ্ধান্ত।
এ বছরের শুরুতে তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে শান্তকে। তার অধীনে পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। তবে শেষ দুই সিরিজে সাউথ আফ্রিকা ও ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি টাইগাররা। শান্ত নিজেও নেই রানের মধ্যে। তাতেও পড়ছেন সমালোচনায়।
আরও পড়ুন
‘হঠাৎ করে স্টিভ ওয়াহ-ইমরান খান-ধোনি হওয়া যায় না’, অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে বললেন ফাহিম |
চটটগ্রাম টেস্ট শেষে সাংবাদ সম্মেলনে তাই ঘুরেফিরে এসেছে সেই প্রসঙ্গ। যার জবাবে শান্ত ছিলেন চুপ, “অধিনায়কত্বের ব্যাপারে সভাপতি কথা বলেছেন আপনাদের সঙ্গে। এ ব্যাপারে এখানে আমি আর কোনো মন্তব্য না করি। হয়তো ক্রিকেট বোর্ড থেকেই এই নিয়ে একটা কিছু জানতে পাবেন।”
বয়সভিত্তিক দল থেকেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলে আসছেন শান্ত। কাজটা যে তিনি উপভোগ করেন সেটাও জানিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার, “বয়সভিত্তিক থেকেই অনেক জায়গায় বলে আসছি, ক্যাপ্টেন্সি আমি সবসময় উপভোগ করি। গত কয়েকটা সিরিজও মাঠের ভেতরে আমি উপভোগ করেছি। এটা সবসময়ই আমার ভালো লাগার জায়গা।”
গেল কিছু দিন থেকে দলের ব্যর্থতার সাথে তার ব্যাটেও রান নেই। অধিনায়কত্বের চাপে এমনটা হচ্ছে কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে সংবাদ সম্মেলনে। তবে সেটা উড়িয়ে দিয়েছেন শান্ত, “আমার কাছে একবারও মনে হয়নি আমি ক্যাপ্টেন। ক্যাপ্টেন তাই সব আমাকে একা করতে হবে এমন মনে হয় না। বল দেখি ব্যাটিং করি, ব্যাটিং উপভোগ করি। ব্যাটিং করতে সবারই ভালো লাগে। চিন্তা থাকে একটাই কীভাবে বড় রান করতে পারব। এখন পর্যন্ত (চাপ) হয়নি আলহামদুলিল্লাহ।”
একেবারে 'নাস্তানাবুদ' যাকে বলে ঠিক তাই হয়েছে বাংলাদেশ দল। সাউথ আফ্রিকার সাথে দুই ম্যাচেই হেরেছে টাইগাররা। মিরপুরে সাত উইকেটের হারের পর চট্টগ্রামে ইনিংস ব্যবধানে হার। দলের সাথে তাই কথা উঠছে নাজমুল হোসেন শান্তর বড় রানে না থাকাও। ৭, ২৩, ৯ আর ৩৬ রান করা শান্ত ভুগছেন রান খরায়।
নিজের সবশেষ ১০ ইনিংসে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাটে কেবল একটাই ফিফটি। চেন্নাইয়ে ৮২ রান করেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। তার আগের ১০ টেস্ট ইনিংসেও ছিলনা একটা ফিফটি।
আরও পড়ুন
নাসুমকে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানেন না শান্ত |
রানে না থাকা অধিনায়ক আজ গণমাধ্যমে এসে জানান, 'হ্যাঁ অবশ্যই। যেহেতু ওপরের দিকে ব্যাট করি, গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রান করা। যেটা হচ্ছে না। গত বেশ কয়েকটা ইনিংসে ২০ থেকে ৪০ এর মধ্যে আউট হচ্ছি। সেট হয়ে আউট হচ্ছি যা দলের জন্য ক্ষতির কারণ। এ জায়গায় আরও মনোযোগ রেখে করা উচিৎ। আমার কাছে মনে হয় আমার ব্যাটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ।'
আলোচনায় আসছে শান্ত সামনে বাংলাদেশের অধিনায়ক থাকবেন কিনা, তবে আপাতত এসবে মুখ খুলতে রাজি নয় এই ২৬ বছর বয়সী।