২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪:৫২ পিএম
প্রতিকূল আবহাওয়ায় স্থগিত হওয়ার পর শুক্রবার আবার শুরু হচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় আসর। রাজশাহী ও বগুড়া বাদ দিয়ে শুধু সিলেটে হবে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো।
নতুন করে শুরুর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে 'ক্যাপ্টেন্স মিট' অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে ৮ দলের অধিনায়কই এই টুর্নামেন্টকে তরুণ ক্রিকেটারদের বিপিএলে সুযোগ পাওয়ার জন্য বড় সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ঢাকা মেট্রো অধিনায়ক ও জাতীয় দলের বাঁহাতি ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ মনে করেন, এনসিএলে ভালো করে বিপিএলেও সুযোগ পাবেন ক্রিকেটাররা।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে বাংলাদেশ |
![]() |
“আমার দলে বেশ কিছু তরুণ ক্রিকেটার আছে। ওদের জন্য বড় একটা সুযোগ। আশা করি, ওরা বুঝতে পারবে। বিপিএলের আগে এটা ভালো একটা প্ল্যাটফর্ম। এখানে ভালো করলে বিপিএলেও ওদের সুযোগ থাকবে। আশা করি, দলের সবাই অনেক ভালো ক্রিকেট খেলবে।”
একই কথা উচ্চারিত হয় আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার ও চট্টগ্রাম অধিনায়ক ইয়াসির আলি চৌধুরি রাব্বির কণ্ঠে।
“এটা আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটারদের জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ, অনেক বড় একটা প্ল্যাটফর্ম। কারণ সবাই বিপিএল খেলি না। যারা এই টুর্নামেন্ট ভালো খেলবে, তাদের জন্য হয়তো অনেক দরজা খুলবে। তাই সবার জন্য শুভকামনা।”
আরও পড়ুন
বাইশ গজে সম্পর্কের বন্ধন নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষবাষ্প? |
![]() |
বরিশালের অধিনায়ক সালমান হোসেন ইমনের মতে, বিপিএলের দরজা খোলার সুযোগ থাকাই মূলত এনসিএল টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় সুবিধা।
“এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, বিপিএল তো বড় একটা প্ল্যাটফর্ম, সেখানে সবার খেলার সুযোগ হয় না। তাই যারা নতুন আছে, এখান থেকে পারফর্ম করে (বিপিএলে খেলার জন্য) ভালো একটা প্ল্যাটফর্ম।”
এসময় রাজশাহী অধিনায়ক ও জাতীয় দলের তারকা ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে জানতে চাওয়া হয়, এনসিএল টি-টোয়েন্টি থেকে নতুন ক্রিকেটার উঠে আসার ব্যাপারে। উত্তরে সবার কাছে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান শান্ত।
আরও পড়ুন
ভারতীয় দলে গিলের ডেপুটি জাদেজা |
![]() |
“খেলোয়াড় উঠে আসার ব্যাপারে এখনই কিছু বলা খুবই আর্লি হবে যে এখান থেকে আসলে কত ক্রিকেটার উঠে আসবে। টুর্নামেন্টের স্ট্যান্ডার্ড যত ওপরের দিকে, যত ভালো উইকেটে খেলতে পারব, যত ভিন্ন কন্ডিশনে খেলতে পারব, তত ভালো খেলোয়াড় উঠে আসবে।”
“শুধু একটা ভেন্যুতে নয়, বিভিন্ন ভেন্যুতে বিভিন্ন কন্ডিশনে খেলতে পারি তাহলে ক্রিকেটাররা ওই মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা শিখবে এবং নতুন খেলোয়াড় বের হবে। তো এখনই কিছু বলা টু আর্লি যে কত বেশি ক্রিকেটার ভবিষ্যতে বের হবে।”
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবারের প্রথম ম্যাচে সকাল ১০টায় মুখোমুখি হবে রাজশাহী ও খুলনা। পরে দুপুর ২টায় লড়বে ঢাকা ও রংপুর।
টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচ দেখা যাবে টি স্পোর্টসের পর্দায়।
No posts available.
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭:০০ পিএম
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬:৪৪ পিএম
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩:২০ পিএম
অস্ট্রেলিয়ার পেশাদার টি-টোয়েন্টি লিগ বিগ ব্যাশে নাম লেখালেন ভারতের অভিজ্ঞ অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ১৫তম মৌসুমে সিডনি থান্ডারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। ভারতের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার (পুরুষ) হিসেবে বিবিএলে খেলবেন অশ্বিন। এর আগে উন্মুক্ত চাঁদ ও নিখিল চৌধুরী বিগ ব্যাশে খেললেও জাতীয় দলের জার্সি পরা হয়নি তাদের।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নিয়ম, দেশটির জাতীয় দল কিংবা ঘরোয়া অর্থাৎ যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে যুক্ত ক্রিকেটাররা বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে অংশ নিতে পারবেন না। তবে অশ্বিন এ বছর ভারতের সব ধরণের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায় বৈশ্বিক লিগে খেলতে তার বাধা রইল না।
আরও পড়ুন
ক্রিকেট বোর্ডের ইতিহাসে এত নোংরামি কখনও হয়নি: তামিম |
![]() |
অশ্বিন বলেন,
'থান্ডার শুরু থেকেই জানিয়ে দিয়েছে তারা আমাকে কীভাবে ব্যবহার করবে। ডেভিড ওয়ার্নারের মানসিকতার সঙ্গে আমার মিল রয়েছে। তার সঙ্গে কথা হয়েছে।’
বিগ ব্যাশের শুরু থেকে পাওয়া যাওয়া না অশ্বিনকে। সে সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইএলটি২০ খেলবেন তিনি। জানুয়ারির শুরুতে থান্ডারের হয়ে মাঠে নামবেন তিনি। আগামী ১৬ ডিসেম্বর হোবার্ট হারিকেনসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ সিডনি থান্ডারের।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ২৮৭ ম্যাচে ৭৬৫ উইকেট তুলেছেন অশ্বিন। টেস্টে তার উইকেট সংখ্যা ৫৩৭টি। আর আইপিএলে ১৮৭ উইকেট।
দুই দলই জিতেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। দুই দলই হেরেছে ভারতের কাছে। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে এখন পর্যন্ত সমানে-সমান বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। এবার মুখোমুখি লড়াইয়েই নির্ধারিত হবে তাদের ফাইনালের ভাগ্য।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার এশিয়া কাপের অঘোষিত সেমি-ফাইনালে লড়বে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। খেলা শুধু বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়।
টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সব দিক মিলিয়েই সাম্যাবস্থায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। গ্রুপ পর্বে নিজেদের তিন ম্যাচের মধ্যে আফগানিস্তান ও হংকংকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর মাঝে তারা হেরে গিয়েছে শ্রীলঙ্কার কাছে।
একইভাবে 'এ' গ্রুপে থাকা পাকিস্তান গ্রুপ পর্বে তাদের তিন ম্যাচের মধ্যে হারিয়েছে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। আর মাঝের ম্যাচে তাদেরকে হারিয়ে দেয় চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত।
পরে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশের। কিন্তু পরের ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে গেছে তারা। পাকিস্তান অবশ্য আগে হেরেছে ভারতের কাছে। পরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনাল খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে তারা।
এবার অঘোষিত সেমি-ফাইনালে যারা জিতবে তারাই পাবে ফাইনালের টিকেট। আর সুপার ফোরে প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে হারিয়ে এরই মধ্যে ফাইনালে উঠে গেছে ভারত।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনের আগে নোংরামির মাত্রা আগের যে কোনো সময়কে ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন তামিম ইকবাল। বোর্ডের সঙ্গে জড়িত অভিজ্ঞ ও সিনিয়র ক্রিকেট সংগঠকরা তাকে এই কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন দেশের সাবেক অধিনায়ক।
বিসিবি নির্বাচনে বৃহস্পতিবার খসড়া ভোটার তালিকার আপত্তির ওপর শুনানি করা হয়। যেখানে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৫ ক্লাবের একটির সহ-সভাপতি হিসেবে হাজির হন তামিম। পরে শুনানি শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি দেশসেরা এই ওপেনার।
আরও পড়ুন
বিপিএলে চোখ রেখে এনসিএলে নতুন শুরুর আশা অধিনায়কদের |
![]() |
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ আসরের সুপার লিগে খেলা গুলশান ক্রিকেট ক্লাবকে রাখা হয়নি বিসিবি নির্বাচনের ভোটার তালিকায়। ওই ক্লাবের সহ-সভাপতি তামিম ইকবাল। এছাড়া প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ মিলিয়ে আরও ১৫টি ক্লাবকে খসড়া তালিকায় দেওয়া হয়নি ভোটাধিকার।
এই বিষয়ে শুনানিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কী কথা হয়েছে সেটি জানান তামিম।
“আমি তাদের (নির্বাচন কমিশন) একটা জিনিস বলেছি, যেহেতু এটা ক্রিকেট বোর্ডের কথা, ক্রিকেটের কথা, অনেক সময় আইনের ওপরে গিয়েও অনেক কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয় ক্রিকেটের ক্ষেত্রে। যেহেতু এখানে ৩০০ ক্রিকেটার এবং তাদের পরিবার জড়িত, আপনারা জিনিসটা খুব বুঝে-শুনে, যেটা সঠিক, সেভাবে করেই কথাটা বলবেন।”
আরও পড়ুন
বাইশ গজে সম্পর্কের বন্ধন নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষবাষ্প? |
![]() |
“কোন ক্রিকেট ক্লাবের ঠিকানা কোন জায়গায়, এটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত যে, এই ক্রিকেট ক্লাব কি কালকে জন্ম নিয়েছে? এরা তো কালকে জন্ম নিয়ে কাউন্সিলর হয়ে আসেনি। এই ক্রিকেট ক্লাবগুলোর একটা ইতিহাস আছে, আর্থিক রেকর্ড আছে।”
এসময় তামিম অভিযোগ করেন, নির্বাচনের একটি পক্ষকে দুর্বল করার জন্যই এসব করা হচ্ছে। তাই সৎ পথে থেকে নির্বাচনটি আয়োজনের অনুরোধ করেন তিনি।
আরও পড়ুন
ভারতীয় দলে গিলের ডেপুটি জাদেজা |
![]() |
“এটা নির্বাচনের একটা পক্ষকে দুর্বল করার জন্য করা হচ্ছে, এটা সবাই জানে। এত খারাপ সময় এসে গেল যে জেতার জন্য বা নিজের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য আপনারা ৩০০ ক্রিকেটারের জীবন নিয়ে খেলা শুরু করলেন।”
“আমি সিনিয়রদের থেকে শুনেছি, ক্রিকেট বোর্ডের ইতিহাসে কোনদিন এত নোংরামি তারা দেখেনি। যে জিনিসটা আপনারা করে যাচ্ছেন, করছেন, এটা কিন্তু একটা ইতিহাস হয়ে যাবে। পরবর্তীতেও কিন্তু এই জিনিসগুলোই ফলো করা হবে। তাই আমার বিনীত অনুরোধ যে, এই জিনিসগুলো আপনারা কইরেন না। সৎ পথে নির্বাচনটা করেন।”
২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর। পরবর্তী বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনে সুদানের বিপক্ষে আইভরি কোস্টের বাঁচা-মরা ম্যাচ। এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই জয় করেন আটলান্টিক পাড়ের ফুটবলযোদ্ধারা। মুহূর্তেই মাঠ ছুঁয়ে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র দেশে। এরই মধ্যে দলনেতা দিদিয়ের দ্রগবার কমান্ডিং হাঁক, 'এসো, জড়ো হও!'
একত্র হলেন সবাই। এক কাতারে দাঁড়ালেন খেলোয়াড়-কোচিং স্টাফ। ড্রেসিংরুম নিস্তব্ধ-পিনপতন নিরবতা। পুরো আইভরি কোস্ট তখন টিভির সামনে, সরাসরি সম্প্রচারে দেখানো হচ্ছিল বিশেষ এই মুহূর্ত।
শান্ত কণ্ঠে দ্রগবা দিলেন যুদ্ধবন্ধের ডাক। আড়ষ্টতা ছাড়াই বলতে শুরু করেন, ‘নারী কিংবা পুরুষ, উত্তর কি দক্ষিণ, পূর্ব কি পশ্চিম; সব আজ এক। আজ প্রমাণ হয়েছে, একাগ্রতা ও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের বিশ্বকাপের জন্য মনোনীত করেছে। আমরা একসঙ্গে বিশ্বকাপ খেলব।’
দ্রগবার মিনিটখানেকের বক্তব্য জাতীয়ভাবে খ্যাতি এনে তো দিলই, বিশ্বব্যাপী ফলাও করে প্রচার হলো এই সংবাদ। আইভরি কোস্টে সেদিন পুরো দিন-রাত টিভিতে কেবল চলতে থাকল একই ভিডিও। এক হয়ে গেলেন বিদ্রোহী নেতা ও প্রেসিডেন্ট! সমঝোতা স্মারকে সই করলেন দুই নেতা। চিরতরে অবসান হলো যুদ্ধ।
ক্রীড়াতে এমন ঘটনা আরও আছে। আছে বিপরীত দৃশ্যও। অর্থের পেছনে ছুটতে থাকা ভোগবাদী বিশ্বের কাছে এখন বিনোদনের (খেলা) চেয়ে টাকাই মুখ্য। মেটাফরসিসের সেই কীটপতঙ্গে রূপ নিয়েছে এখনকার ক্রীড়া। যা প্রয়োজনের চেয়ে অধিকতর বিরক্তির।
বিশেষত, এখন মাঠে খেলার নামে চলে বানিজ্য—আইসিসি, এসিসির মূখ্য গৌণ লক্ষ্য অর্থের ঝনঝনানি। সম্প্রচার চ্যানেলের টিআরপি ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ, কর্পোরেট বিলাসিতা—যা অস্থিরতা তৈরিতে ভূমিকা রাখছে উপমহাদেশের ভূরাজনৈতীতেও।
এশীয় কিংবা আন্তর্জাতিক; সবশেষ ১০-১২টি বৈশ্বয়িক টুনার্মেন্টে ভারত-পাকিস্তান প্রায় একই গ্রুপে। সুডোকুর সহজ চকের মতো কায়দা করে মিলিয়ে দেওয়া হয় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। দু'পক্ষের চাওয়ার চেয়েও আয়োজক কমিটির আগ্রহটাই এখানে প্রাধান্য। এটাই বিজনেসের খেল।
ম্যাচের ফল যাই হোক, সমর্থকদের উচ্ছ্বাস পুঁজি করে অগ্রীম টিকিট বিক্রি, সম্প্রচার চ্যানেলের হাইপ, স্টেডিয়াম কেন্দ্রিক হোটেল-মোটেল মালিকদের ফুলে ফেঁপে ওঠাও এক প্রকার গোপন মিশন।
ছোট্ট একটি হিসাব—সবশেষ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এটি টেলিভিশনে ২৬ বিলিয়ন মিনিটেরও বেশি দর্শক দেখেন। এর আগে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখেছিল ১৯.৫ বিলিয়ন মিনিট। যা সম্প্রচার সত্ত্ব এবং স্পন্সরশিপ গ্রহীতাদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের কারণ। চড়ামূল্যে বিক্রি ও নিলামের অন্যতম আকর্ষণ এমন আলোচনা।
দর্শক আগ্রহের সঙ্গে সূত্রপাত আছে অর্থেরও। ক্রিকেট বিষয়ক ভারতীয় ওয়েবসাইট ক্রিক ট্যাকার তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৭তম এশিয়া কাপে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এককভাবে প্রায় ১.১ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি (প্রায় ৩৪০ মিলিয়ন ভারতীয় রুপি) আয় করবে। প্রতিটি ম্যাচ থেকে দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের আয় প্রায় ১৮৩ মিলিয়ন পিআর (প্রায় ৫৬ মিলিয়ন ভারতীয় রুপি)। ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ থেকে আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে।
ক্রিকেটের সঙ্গে যাদের সখ্যতা দীর্ঘদিনের, ক্রিকেট যারা বুঝেন বা খোঁজ রাখেন কিংবা স্মৃতিতে রাখেন ৯০ দশকের সাদা-কালো ম্যাচ, তাদের জানারই কথা-উপমহাদেশ তো বটেই, বৈশ্বিক টুনার্মেন্টেও প্রতিবেশি দু'দলকে রাখা হতো আলাদা গ্রুপে। তখন পাকিস্তান-ভারত নিয়ে আলাদা উন্মাদনা ছিল না, তা কিন্তু নয়। উচ্ছ্বাসের সব জমা থাকতো শেষ চার বা শিরোপার মঞ্চের জন্য।
১৯৯২ বলুন আর ২০০৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। কথা হতে পারে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি কিংবা এশিয়া কাপ নিয়েও—তখন মূলত খেলাটাই হতো। সম্প্রতির বন্ধন আর সম্পর্কের অটুট দৃশ্য ধরা পড়তো প্রায়শঃ। বাইরে যাই হোক, পাকিস্তান-ভারত ক্রিকেটারদের সম্পর্ক ছিল গাঢ়। খেলার বাইরেও আত্মীয় গড়ে ওঠেছিল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা কিংবা পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের মাঝে। সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুলের বাড়িতে শচীন টেন্ডুলকারদের দাওয়াত গ্রহণ কিংবা পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে রাহুল দ্রাবিড়ের সম্পর্ক। সম্পর্ক ছিল শ্রীলঙ্কার জয়সূরিয়া-জয়াবর্ধনেদের সঙ্গে হাবিবুল বাশার-খালেদ মাহমুদেরও।
সময় বদলেছে। এখন মাঠের খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে সম্পর্ক নষ্টের কারণ। ভারত-পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচ; উপমহাদেশীয় চার দেশের খেলা মানেই অলিখিত রাইভাল। যা মাঠ ছাড়িয়ে টেলিভিশনের টকশো কিংবা সাবেকদের তর্কবিতর্কের খোরাক।
এশিয়া কাপের প্রথম মুখোমুখিতে হাত মেলায়নি ভারত-পাকিস্তানের দুই অধিনায়ক সালমান আলি আগা ও সূর্যকুমার যাদব। গ্রুপ পর্বের সেই ম্যাচ নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ যুদ্ধ রব। আইসিসির দ্বারস্থ পিসিবি। রেফারিকে মাফ চাওয়ানোর বাড়াবাড়ি। দ্বিতীয় সাক্ষাতেও একই দৃশপট। ভুল শুধরানো তো দূরের ব্যাপার, তিক্ততার পারদ ছিল উর্ধ্বে।
ক্রিকেট মাঠের এই নোংরা অধ্যায়ে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার নামও। গত কয়েকবছর ধরে সিংহ-বাঘের খেলা মানেই অঘোষিত যুদ্ধ। নাগিন ড্যান্স, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, তেড়েফুঁড়ে ছুটে যাওয়া, একে অন্যকে সহ্য না করার প্রবনতা এখন বেশিই দেখা যায়।
বছর দশক আগেও এমন পরিবেশ ছিল না। একটা সুষম প্রীতির বন্ধন দেখা যেত ক্রিকেটে। বাইশ গজের লড়াই কেবল মাঠেই সীমাবদ্ধ ছিল।
ক্রমান্বয়ে ফাটল ধরা সম্পর্কগুলোকে আরও উসকে দিতেই ইচ্ছাকৃতভাবে। অহেতুক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখানোর মিডিয়া ট্রায়াল চলছে হারহামেশা। আয়োজক কমিটিরও একই প্রতিপক্ষকে বারবার মুখোমুখি করানোর অপ্রাণ চেষ্টা। মূলত টিআরপি ধরে রাখতেই একই ঘটনা বারবার দেখানো হয় মিডিয়ায়।
চলতে থাকে আলোচনা সমালোচনা। ফরম্যাটে হয় পরিবর্তন। তদুপরি সম্পর্কগুলো হয় আরো নিম্নমুখী।
অথচ ক্রিকেটে হয়ে উঠতে পারতো শান্তির পায়রা। ক্রীড়া কেবল হাসাতে আর কাঁদাতে জানে না, যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তিও ফিরিয়ে আনতে পারে। মনুষ্যত্ব লোপের সঙ্গে একথাও ভুলে গেলো সকলে।
চোট থেকে রিশাভ পান্ত পুরোপুরি সেরে না ওঠায় টেস্ট দলে বড় দায়িত্ব পেলেন রবীন্দ্র জাদেজা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সামনের টেস্ট সিরিজে ভারতের সহ-অধিনায়ক হিসেবে থাকবেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার।
ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের সিরিজের জন্য বৃহস্পতিবার ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। সবশেষ ইংল্যান্ড সফরের ধারাবাহিকতায় এবারও নেতৃত্বে থাকছেন শুবমান গিল। তার ডেপুটি হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন জাদেজা।
ইংল্যান্ড সফরের দল থেকে বাদ পড়েছেন করুন নায়ার ও অভিমন্যু ঈশ্বরন। এই দুজনের জায়গায় দলে ফিরলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার নিতিশ কুমার রেড্ডি ও বাঁহাতি ব্যাটার দেবদূত পাডিক্কাল। এছাড়া বাকি স্কোয়াড একইরকম আছে।
দলের নির্বাচক অজিত আগারকার জানিয়েছেন, সিরিজের দুই ম্যাচই খেলবেন জাসপ্রিত বুমরাহ। তার সঙ্গে পেস বিভাগে আছেন মোহাম্মদ সিরাজ ও প্রসিধ কৃষ্ণা। আর স্পিনের দায়িত্বে জাদেজার সঙ্গে থাকছেন ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদিপ যাদব ও অক্ষর প্যাটেল।
পান্তের অনুপস্থিতিতে উইকেটরক্ষক হিসেবে দলে আছেন ধ্রুব জুরেল ও নারায়ণ জাগদেসান। দুজনের মধ্যে জুরেলই হবেন দলের প্রথম পছন্দ।
আহমেদাবাদে আগামী ২ অক্টোবর শুরু হবে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ। এরপর দিল্লিতে ১০ অক্টোবর পরের ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
চলতি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রে ভারতের এটি দ্বিতীয় সিরিজ। প্রথম সিরিজ থেকে পাওয়ার ৪৬.৬৭ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে আছে তারা। শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া (১০০ শতাংশ) আর দুইয়ে শ্রীলঙ্কা (৬৬.৬৭ শতাংশ)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারত স্কোয়াড: শুবমান গিল (অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, লোকেশ রাহুল, সাই সুদর্শন, দেবদূত পাডিক্কাল, ধ্রুব জুরেল (উইকেটরক্ষক), রবীন্দ্র জাদেজা (সহ-অধিনায়ক), ওয়াশিংটন সুন্দর, জাসপ্রিত বুমরাহ, অক্ষর প্যাটেল, নিতিশ কুমার রেড্ডি, মোহাম্মদ সিরাজ, প্রসিধ কৃষ্ণা, কুলদিপ যাদব, নারায়ণ জাগদেসান (উইকেটরক্ষক)।