২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৭ পিএম
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নিয়মিতই ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছেন। ফারভিজ মাহরুফ বাংলাদেশে তাই বেশ চেনা এক মুখই। সাবেক শ্রীলঙ্কান এই অলরাউন্ডার এসেছিলেন এবারের বিপিএলে ধারাভাষ্য দিতে। দেশে ফেরার আগে যতটুকু দেখেছেন কাজ থেকে, সেই অভিজ্ঞতায় তার কাছে বেশ উপভোগ্যই লেগেছে ব্যাটে-বলের লড়াই। তবে সেখানে নাহিদ রানার মত কয়েকজন বিশেষ নজর কেড়েছে মাহরুফের।
বাংলাদেশ ছাডার আগে টি-স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাহরুফ কথা বলেছেন নাহিদ রানাকে নিয়ে তার সম্ভাবনার কথা। নানা প্রসঙ্গে এসেছে সাকিব আল হাসান সহ বাংলাদেশের ক্রিকেটের নানা দিকও।
প্রশ্ন : টুর্নামেন্টের যখন জমে উঠেছে, প্লে-অফও কড়া নাড়ছে দরজায়, এমন সময়ে বিপিএল ছেড়ে যেতে নিশ্চয়ই খারাপ লাগছে?
মাহরুফ : অবশ্যই। দেখুন, আমি আগেও বাংলাদেশ, বিপিএলে কাজ করেছি। এখানে আমার অনেক বন্ধু আছে, কাজের পরিবেশও এখন অনেক চেনা লাগে। ফলে এখানে প্রতিবার কাজ করতে আসলে সেটা আমি উপভোগই করি। এবার যখন চুক্তি হল, তখনই জানতাম টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত থাকা হবে না আমার। তবে হ্যাঁ, কিছুটা খারাপ তো লাগবেই, কারণ মাঠের ক্রিকেটটা এবার অসাধারণ হচ্ছে বিপিএলে।
প্রশ্ন : মাঠের ক্রিকেটের কথা বললেন, এর আগেও বিপিএলে ধারাভাষ্য দিয়েছেন। উইকেট, বিশেষ করে মিরপুরে লো-স্কোরিং ম্যাচের কারণে খেলোয়াড়দের মাঝেও অতীতে হতাশা দেখে গেছে। তবে এবার শুরু থেকে সব ভেন্যুতেই বড় স্কোর হচ্ছে। এই পরিবর্তনটা কীভাবে দেখছেন?
মাহরুফ : এটা একটা ভালো প্রশ্ন, কারণ আপনি মাঠের ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ আছেন। এবার তো সবার আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে মাঠের বাইরের বিষয়গুলো (হাসি)। নাহ, বলতেই হবে এবারের উইকেটের আচরণ খুবই ভালো হচ্ছে। আসলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মজা এখানেই। রান হবে, চার-ছক্কার মার হবে, দর্শকরা তো এসবই দেখতে চায়। সেদিক থেকে চিন্তা করলে, এবারের বিপিএলটা আসলেই উপভোগ্য হচ্ছে। তবে স্রেফ বড় রানই যে হচ্ছে, তাও না। বোলারদের জন্যও উইকেটে অনেক কিছু আছে। তাসকিন এক আসরের সবচেয়ে বেশি উইকেটের রেকর্ড করে ফেলল, এটা বলে দেয় বোলাররাও বেশ সাহায্য পাচ্ছে।
প্রশ্ন : নিজে একজন পেসার ছিলেন বলেই হয়ত তাসকিনের নামটা আগে নিলেন?
মাহরুফ : না না (হাসি)। এমন কিছু না। বাংলাদেশের অন্য পেসারদেরও আমি যথেষ্ট সম্মান করি। তবে তাসকিনের কথা আলাদা করে বলতেই হয়, কারণ দেখতেই পাচ্ছেন কি বোলিংটাই না করছে! এক ম্যাচে সাত উইকেট তো চাট্টিখানি কথা না। যদি তাই হত, তাহলে হরমেশাই আমরা এমন কীর্তি দেখতে পেতাম। এটার অর্থ হল সে আসলেই দুর্দান্ত ছন্দে আছে। সম্ভবত ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা পার করছে ও। বাংলাদেশের একজন পেসার এভাবে পারফর্ম করছে সব কন্ডিশনে, এটা দেখাটাও আনন্দের ব্যাপার।
প্রশ্ন : তাসকিনের কোন দিকটি দেখে মনে হচ্ছে যেখানে তিনি উন্নতি করেছেন?
মাহরুফ : এটা এক বাক্যে বলা আসলে কঠিন। তবে যদি বলতেই হয়, আমি বলব উইকেটের আচরণ বুঝে সেভাবে বল করার স্কিলটা সে খুব খুব ভালো রপ্ত করেছে। আপনি অনেক ভালো বোলার তখনই হবেন, যখন আপনি উইকেটের আচরণ, প্রতিপক্ষ এবং ব্যাটারদের শক্তিমত্তা বা দুর্বলতা বুঝে বোলিং করতে পারবেন। এই তাসকিনকে দেখে মনে হয়, ও প্রতিটা ডেলিভারি নিয়ে আলাদা করে চিন্তা করে। আর এটাই ওকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখছে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের পেস বোলিং আর তাসকিনের কথার প্রসঙ্গে আপনার কাছে জানতে চাইব আরেকজনের ব্যাপারে। নিশ্চয়ই আন্দাজ করতে পারছেন নামটা?
মাহরুফ : আমার জীবনে কুইজের সবচেয়ে সহজ উত্তর হয়ত এটাই। অবশ্যই আমি জানি আপনি নাহিদ রানার কথাই বলবেন। আর সেটাই যৌক্তিক। পুরো বিশ্বেই টেস্ট ক্রিকেটে ঘণ্টায় ১৫০ কি.মি. গতিতে বল করা বোলার খুব বেশি পাবেন না। সেখানে বাংলাদেশ, যারা একটা সময় স্পিনের জন্যই বেশি পরিচিত ছিল, তাদের এখন তরুণ পেসার এমন গতিতে বল করছে, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দারুণ এক বিজ্ঞাপন। তার মাঝে অপার সম্ভাবনা আছে। বিপিএলেও দেখলাম তার বোলিং। সাদা বলের ক্রিকেটেও ও বাংলাদেশের জন্য বড় সম্পদ হতে যাচ্ছে। তবে তার ওয়ার্কলোড ম্যানেজ করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই যুগে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের ডাকও আপনি উপেক্ষা করতে পারবেন না। বিসিবিকে তাই নাহিদের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে, যাতে টানা না খেলে ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়।
প্রশ্ন : এবার জানতে চাইবা আরেক বাংলাদেশির ব্যাপারে, যিনি না চাইতেও এখন আছেন বিশ্রামে। বোলিং অ্যাকশন নিয়ে জটিলতায় সাকিব আল হাসান এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল করা থেকে নিষিদ্ধ। রাজনৈতিক ও নানা বাস্তবতায় জাতীয় দলেও নেই অনেকদিন ধরেই। বিপিএলেও নেই সাকিব। কতোটা মিস করছেন তার উপস্থিতি?
মাহরুফ : অনেক। দেখুন, সাকিব তো বাংলাদেশের একজন আইকন। খেলোয়াড় হিসেবে তার অর্জন কী, সেটা বিশ্ব জানে। দেশের মাটিতে খেলে অবসর নিতে চেয়েও সেটা সে পারেনি, এটা একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই হতাশার। আমি জানি না এখানে তার খেলতে মানার আসল কারণ কি, তবে এটা মেনে নেওয়ার ওর জন্য কঠিনই।
প্রশ্ন : বোলিং অ্যাকশন শুধরে সাকিবের পক্ষে কি ফিরে আসা সম্ভব মনে করছেন?
মাহরুফ : আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে বলব কেন নয়! লঙ্কা টি-টেন খেলার সময় বোলিংয়ের নিষেধাজ্ঞাটা পেল। এরপর ব্যাটার হিসেবে খুব ভালো করল। তবে কাছ থেকে দেখেছি সে বোলিং নিয়েও অনেক কাজ করেছে। আমার কাছে মনে হয়, এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ওর বেশি সময় লাগবে না।
প্রশ্ন : বিপিএলে ফেরা যাক। তাসকিন, নাহিদের কথা বললেন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে নতুন কেউ আপনার নজর কাড়তে পেরেছে?
মাহরুফ : কঠিন প্রশ্ন। কারণ, এবার বাংলাদেশের অনেক তরুণ ক্রিকেটার ভালো করছে। যদি আলাদা করে বলতে হয়, তাহলে বলব মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের কথা। গত বছরও ওকে দেখেছিলাম, তখন হাতে এত বড় বড় শট ছিল না। তবে বোঝাই যাচ্ছে, টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং নিয়ে সে অনেক কাজ করেছে। শেষের দিকে নেমে নিয়মিতভাবে বড় শট খেলার স্কিল রপ্ত করাটা বিশেষ কিছুই। এছাড়া ইয়াসির (আলি), আবু হায়দার, মৃত্যুঞ্জয়রা (চৌধুরী) ভালো করছে।
প্রশ্ন : এবার আসি একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের মধ্যে মাঠের বাইরে দারুণ বন্ধুত্ব থাকলেও মাঠে নামলেও কয়েক বছর ধরেই এটা পেয়ে গেছে ভিন্ন মাত্রা। নানা রকমের উদযাপনের পর গত বিশ্বকাপের সেই টাইমড আউটের ব্যাপারটা মিলিয়ে এই দুই দলের ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। কীভাবে দেখেন বিষয়টি?
মাহরুফ : দেখুন, আমি এগুলো নিয়ে খুব বেশি চর্চার পক্ষে না। শ্রীলঙ্কান অনেকেই কোচ হিসেবে বা অন্য ভূমিকায় বাংলাদেশে কাজ করছেন। আবার বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা শ্রীলঙ্কায় গিয়ে সম্প্রতি খেলে এলেন। ক্রিকেট সম্পর্কটা তাই দারুণ রয়েছে দুই দেশের মধ্যে। যেসব বিষয় টেনে আনলেন, সেটা স্রেফ সমর্থকদের জন্যই হচ্ছে আর সেটা খুব একটা মন্দও নয়। ভারত-পাকিস্তান বা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মত একটা নতুন দ্বৈরথ তো দেখতে পাচ্ছি আমরা।
প্রশ্ন : কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চাপে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো ক্রমেই এর আবেদন হারিয়ে ফেলছে। তিন ফরম্যাটে ভবিষ্যৎ নিয়ে কি আপনি চিন্তিত?
মাহরুফ : সত্যি বলতে, একেবারেই না। টেস্ট ক্রিকেট আমার তো মনে হয় ইতিহাসের সেরা সময় পার করছে। সব দল এখন ফলাফলের জন্য খেলছে। ওয়ানডে ক্রিকেট কিছুটা জৌলুস হারিয়েছে, তবে বিশ্বকাপ বলতে কিন্তু লোকেরা ৫০ ওভারের বিশ্বকাপই চিন্তা করে। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট তো খেলাটির ভবিষ্যৎ। সব মিলিয়ে যদি বলেন, খুব বেশি চিন্তার নেই।
প্রশ্ন : চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শ্রীলঙ্কাকে টপকেই জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে কেমন করতে পারে বাংলাদেশ?
মাহরুফ : আমি তো বাংলাদেশ দলের বেশ সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছি। দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে সুযোগ বেশিই থাকবে। যদি আগে ব্যাট করে ২৫০ রানের বেশি করে ফেলতে পারে, তাহলে ভারতকে চমকে দিতেও পারে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মাটিতে অন্য দুটি ম্যাচ একটু কঠিন হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে দলে ভারসাম্য আছে বেশ। সাকিব, তামিমের মত অভিজ্ঞদের পেলে আরও ভালো হত দলটা। তবে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, তাসকিনরা তো আছেই। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে জায়গা করে নিলে আমি অবাক হবো না।
৩০ জুলাই ২০২৫, ৮:৫৭ পিএম
৩০ জুলাই ২০২৫, ৩:০১ পিএম
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয় জিম্বাবুয়ে। কালে-ভদ্রে পরাশক্তিদের সাথে টেস্ট খেলার সুযোগ পায় দলটি। এতেই বড়দের সাথে ব্যবধান তৈরি হয়ে গেছে। এ মাসের শুরুতে টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ঘরের মাঠে কুলিয়ে উঠতে পারেনি। বুলাওয়েতে দুই টেস্টের দুটিতেই বড় ব্যবধানে হেরেছে। বুলাওয়েতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বুধবার শুরু হওয়া টেস্টের প্রথম দিনেও শিক্ষানবীশ জিম্বাবুয়েকে দেখেছে দর্শক। টেস্টের প্রথম দিনটি পার করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। টি-ব্রেকের আধ ঘন্টা পর মাত্র ১৪৯ রানে গুটিয়ে নিয়েছে ইনিংস। জবাব দিতে এসে প্রথম দিন শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৯২/০। সব কটি উইকেট হাতে রেখে পিছিয়ে আছে সফরকারী দলটি মাত্র ৫৭ রানে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে বুলাওয়ে টেস্টের প্রথম দিন কিউই পেসার ম্যাট হেনরির তোপের মুখে মাত্র ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটির ৫৪ রানে স্কোরটা তিন অঙ্কে টেনে নিতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরিয়ান শিন উইলিয়ামস এদিন মাত্র ২ রানের মাথায় পেসার স্মিথের অ্যাঙ্গেল ডেলিভারিতে বোল্ড আউট হলে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং বিপর্যয় ঘনীভূত হয়। ক্রেইগ আরভিন ১০১ মিনিট ব্যাটিং করে ৬টি বাউন্ডারির সাহােয্যে করেছেন সর্বোচ্চ ৩৯ রান। তাফাজা সিগা করেছেন ১১০ মিনিট স্থায়ীত্ব পাওয়া ব্যাটিংয়ে ৩০ রান। যে ইনিংসে মেরেছেন তিনি ৫টি চার।
কিউই পেসার ম্যাট হেনরি ছড়িয়েছেন আতঙ্ক। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো অবতীর্ন হয়ে পেয়েছেন ৬ উইকেট (৬/৩৯)। আর এক পেসার নাথান স্মিথ পেয়েছেন ৩ উইকেট (৩/২০)।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচ বাতিল হয়েছিল ভারতের ম্যাচ বয়কটে। তবে এরপর এশিয়া কাপে ভারতের সাথে পাকিস্তানের ম্যাচ নিশ্চিত হওয়ায়, আশা ছিল লেজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের মধ্যকার ম্যাচ খেলবে দুই দেশ। তবে সেমিফাইনালেও প্রতিবেশী দেশের সাথে ম্যাচ বয়কট করেছে ভারত। ফলে ম্যাচ না খেলেই ফাইনালে চলে গেছে পাকিস্তান।
আগামী বৃহস্পতিবার বার্মিংহ্যামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণে গ্রুপ পর্বের পর সেমিতেও পাকিস্তানের সাথে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারত। ফলে সরাসরি ফাইনালে উঠে গেছে পাকিস্তান, যেখানে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নস বা দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নসকে।
টুর্নামেন্টে ভারত চ্যাম্পিয়নস দলে ছিলেন শিখর ধাওয়ান, সুরেশ রায়না, হরভজন সিং, পিয়ুষ চাওলা, ইরফান পাঠান, ইউসুফ পাঠান ও রবিন উথাপ্পার মতো সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। শুরুতে রাজি হলেও গত ২০ জুলাই শেষ সময়ে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানান কয়েকজন ক্রিকেটার। এরপর বাতিল হয় ম্যাচটি।
সেই ম্যাচ থেকে উভয় দলই পয়েন্ট ভাগ করে নেয়। গ্রুপ পর্বে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। অন্যদিকে মাত্র ৩ পয়েন্ট পাওয়া ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়নস হয় চতুর্থ।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলা ও পরবর্তী সামরিক উত্তেজনার পর দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে গেছে। যার প্রভাব পড়ছে ক্রীড়াঙ্গনে।
ওই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় দল এখনও মুখোমুখি হয়নি। সদ্য ঘোষিত এশিয়া কাপের সূচিতে একই গ্রুপে থাকা এই দুই দলের সব মিলিয়ে তিনটি ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা রাখা হয়েছে। তবে লেজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল ম্যাচও বাতিল হওয়ায় নতুন করে শঙ্কা জাগতে পারে ভারত-পাকিস্তান মহারণ নিয়ে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই ব্রেন্ডন টেলরের জন্য খুলে যাচ্ছে জাতীয় দলের দরজা। আগামী ৭ আগস্ট বুলাওয়েতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে তাকে যুক্ত করেছে জিম্বাবুয়ে।
২০২১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে হঠাৎ করেই অবসরের ঘোষণা দেন টেলর। এরপর আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা ভাঙার কারণে ৩৯ বছর বয়সী এই কিপার-ব্যাটারকে নিষিদ্ধ করা হয়। তিন বছর ছয় মাসের সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৫ জুলাই।
নিষেধাজ্ঞার সময় জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক টেলর কোনো জাতীয় দল বা ঘরোয়া ক্লাবের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারেননি। তবে হারারের একটি বেসরকারি স্কুলের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে এই সময়ে তিনি নিজেকে ফিট রাখেন ফের ক্রিকেটে ফেরার আশা নিয়ে।
নিষেধাজ্ঞা শেষের আগে টেলর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাদক ও মদাসক্তি কাটিয়ে তিনি আগের চেয়ে অনেক বেশি ফিট অনুভব করছেন।
জিম্বাবুয়ে এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে, যেখানে আছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার তাফাদজওয়া সিগা। বুধবার থেকে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টের একাদশে আছেন তিনি, প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং অর্ডারে তার অবস্থান সাত।
ফলে দ্বিতীয় টেস্টে টেলর যদি দলে আসেন, আর নিজের পুরনো চার নম্বর ব্যাটিং পজিশনে ফেরেন, তাহলে শন উইলিয়ামসসহ অন্যদের এক ধাপ করে নিচে নেমে যেতে হতে পারে।
২০০৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩৪টি টেস্ট খেলা টেলর নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ছিলেন সাদা পোশাকে জিম্বাবুয়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ৩৬.২৫ গড়ে ৬ সেঞ্চুরি ও ১২ ফিফটিতে করেছেন ২ হাজার ৩২০ রান। শেষবার টেস্ট খেলেছিলেন ২০২১ সালে, ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের আগে বড় ধাক্কাই খেল ইংল্যান্ড। চোটের কারণে শেষ পর্যন্ত ওভাল টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন ব্যাটে-বলে দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক বেন স্টোকস। তার পরিবর্তে ওলি পোপ ইংলিশদের নেতৃত্ব দেবেন।
সব মিলিয়ে ম্যানচেস্টারে ড্র হওয়া চতুর্থ টেস্ট থেকে একাদশে মোট চারটি পরিবর্তন এনেছে ইংল্যান্ড। দলে ফিরেছেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার জ্যাকব বেথেল এবং তিন পেসার গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাং। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে দুই পেসার জোফরা আর্চার ও ব্রাইডন কার্সকে। আর এক ম্যাচ খেলেই বাদ পড়েছেন জিম্বাবুয়ের বাঁহাতি স্পিনার লিয়াম ডসন।
সিরিজ জুড়ে ইংল্যান্ডের সেরা খেলোয়াড় স্টোকস বল হাতে পার করেছেন দুর্দান্ত সময়। এক সিরিজে করে ফেলেছেন নিজের সর্বোচ্চ ওভার বোলিংয়ের রেকর্ড। ম্যানচেস্টার টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফাইফার নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেন শতক। তবে চোট সামলে দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারেন মাত্র ১১ ওভার। সেখানেও কয়েকবার তাকে ব্যাথায় ডান কাঁধ ধরতে দেখা গেছে।
ম্যাচ শেষে অবশ্য জানিয়েছিলেন, ডান হাতের বাইসেপ টেন্ডনে সমস্যা থাকলেও টেস্ট মিস করার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু পরে জানা যায়, স্টোকসের চোট গ্রেড থ্রি মাত্রার হওয়ায় পঞ্চম টেস্টে স্পেশালিষ্ট ব্যাটার হিসেবেও খেলা সম্ভব হবে না তার।
স্টোকসের অনুপস্থিতি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ডকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে দেবে। সিরিজে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। ম্যানচেস্টারে গত দুই বছরে তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পাওয়ার পাশাপাশি শেষ দুটি টেস্টেই হয়েছেন ম্যাচ সেরাও। ফলে তাকে ছাড়া একাদশ সাজানো কঠিনই হবে স্বাগতিকদের জন্য।
ডসন বাদ পড়ায় স্টোকসের জায়গায় দলে আসা বেথেল হবেন দলের মূল স্পিনার। আর তার সঙ্গে স্পিন অপশন হিসেবে থাকছেন আরেক ব্যাটার জো রুট। আর পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞ ক্রিস ওকস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেলেন মাইকেল ওয়েন। তরুণ এই ব্যাটার প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে দলে। আগামী আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০ ওভারের সিরিজের দলে রাখা হয়েছে তাকে।
তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজে আরও একবার মূল অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ছাড়াই খেলবে অস্ট্রেলিয়া। তিনি ছাড়াও এই সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরেক অভিজ্ঞ পেসার মিচেল স্টার্ককে। ফলে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করবেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ।
চলতি মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে নজর কাড়েন ওয়েন। সিরিজে তিনি ১৯২.৩০ স্ট্রাইক রেটে করেন ১২৫ রান। এর মধ্যে রয়েছে রয়েছে এই ফরম্যাটে নিজের অভিষেক ম্যাচেই হাফ-সেঞ্চুরি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও যে তিনি তিনি কার্যকর হতে পারেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। গত মৌসুমে তাসমানিয়ার হয়ে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন মাত্র ৬৯ বলে ১৪৯ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস।
কামিন্স ও স্টার্ক না থাকলেও ক্যারিবিয়ানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম কাটিয়ে ওয়ানডে দলে ফিরেছেন দুই অভিজ্ঞ জশ হ্যাজলউড ও ট্রাভিস হেড। ২০ ওভারের সিরিজের দলেও আছেন তারা। আর সাইড স্ট্রেইনের চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে খেলতে না পারা ব্যাটার ম্যাট শর্টও ফিরেছেন দলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়লেও ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মার্নাস লাবুশেন। টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছেন জেক ফ্রেজার-মার্কার্ক, অ্যারন হার্ডি, কুপার কনলি ও জেভিয়ার বার্টলেট। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকা দুই ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল অবসর নেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই নেই ওয়ানডের দলে।
অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচগুলো হবে যথাক্রমে আগামী ১০ ও ১২ ও ১৬ আগস্ট। ওয়ানডে সিরিজ চলবে ১৯ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত।
৮ দিন আগে
১৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৬ দিন আগে