জিতলেই ইতিহাস। প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের উৎসব। কলম্বোর প্রেমাদাসায় প্রথম দুই ম্যাচের ফল ১-১এ অমিমাংসিত থাকায় ক্যান্ডির পাল্লেকেলেতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি রূপ পেয়েছে ফাইনাল। পাল্লেকেলেতে অতীত সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশ দলের। শ্রীলঙ্কার মাটিতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়টা সূচিত হয়েছে এই মাঠেই। ২০১৩ সালে ৩ উইকেটে জয় থেকে সিরিজ জয়ের সেই টনিক নিয়ে শ্রীলঙ্কার মাঠে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের উৎসবে ফেটে পড়বে মিরাজের দল, এমন স্বপ্নই দেখেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।তবে ১৯ মাস আগে দিল্লীতে ২৮২ রান তাড়া করে ৫৩ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ে শান্ত, মিরাজ, তানজিদ, তানজিমদের সেই গৌরবগাঁথা পাল্লেকেলের মাঠে পুনরাবৃত্তি হয়নি। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জটা নিতেই পারেনি বাংলাদেশ দল। ৯৯ রানে হেরে সিরিজের শেষের ছবিটা হয়েছে হতাশার।
প্রেমাদাসার উইকেট অনেকটা মিরপুরের মতো। রান করতে হয় কষ্ট করে। প্রথমে ব্যাট করে আড়াইশ স্কোরকে যথেষ্ট মনে হয়েছে। কিন্তু পাল্লেকেলের উইকেটের বৈশিষ্ট্য একটু আলাদা। উইকেটে বল পড়ে ব্যাটে ঠিকঠাক মতো এসেছে। এমন সুবিধাজনক ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি পিচ পেয়ে কুশল মেন্ডিজের ব্যাট উঠেছে জ্বলে। তার সেঞ্চুরিতে (১১৪ বলে ১৮ বাউন্ডারিতে ১২৪) ভর করে ২৮৫/৭ স্কোর করেছে শ্রীলঙ্কা।
ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ স্পিনারদের সাপুড়ে নৃত্য দেখে ভয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। হয়তবা সে কারণেই স্লো উইকেট প্রস্তুত করার আইডিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়ে ব্যাটারদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন পাল্লেকেলের কিউরেটর।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ম্যাচে রেকর্ডটা দারুণ কুশল মেন্ডিজ-আসালাঙ্কার। দু'জনেই ছিল ইতোপূর্বে সেঞ্চুরি-আসালাঙ্কার দুটি, কুশল মেন্ডিজের ১টি। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ম্যাচ উইনিং সেঞ্চুরির তরতাজা স্মৃতি নিয়ে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নেমেছেন অধিনায়ক আসালাঙ্কা। ২০১৭ সালে ডাম্বুলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে কুশল মেন্ডিজের সেঞ্চুরির অতীত সুখস্মৃতি তো আছেই, চলমান সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি থেকেও নিয়েছেন টনিক। চতুর্থ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশ বোলারদের নাভিশ্বাস উঠিয়ে ছেড়েছে এই জুটি। ১১৭ বলে যোগ করেছে তারা ১২৪ রান।
গত বছর ডাম্বুলায় নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের সর্বোচ্চ ১৪৫ রানের ইনিংস ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ডের নেশায় বিভোর কুশল মেন্ডিজ এদিন শুরু থেকে করেছেন ইতিবাচক ব্যাটিং। তানজিম হাসান সাকিবকে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারির চুমোয় ইনিংস শুরু করে ৫৮ বলে ফিফটি এবং ৯৫ বলে ওডিআই ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরি উদযাপন করেছেন কুশল মেন্ডিজ। দ্বিতীয় ফিফটিতে লেগেছে তার মাত্র্র ৩৭টি বল। ৯০'র ঘরে এসে রানের জন্য ধুঁকতে হয়নি তাকে। শেষ ১০ রান নিতে লেগেছে তার মাত্র ৬টি বল। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি ইনিংসকে টেনে নিয়েছেন ১২৪ পর্যন্ত। ওডিআই ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসে ১০৮.৭৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন রান। যে ইনিংসে মেরেছেন তিনি ১৮টি বাউন্ডারি। ব্রেক থ্রু দিয়েছেন অকেশনাল স্পিনার শামীম পাটোয়ারী। তার চতুর্থ ওভারে পুল করতে যেয়ে রিটার্ন ক্যাচে থেমেছেন কুশল মেন্ডিজ। শেষ পাওয়ার প্লে'র প্রথম ওভারে আসালাঙ্কাকে (৬৮ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৫৮) পুল শটে খেলার ফাঁদে ফেলে দিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচে থামিয়েছেন তাসকিন।
তিনশ ছাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস ছিল যে ইনিংসে, সেই ইনিংসটা থেমেছে ২৮৫/৭-এ। শেষ পাওয়ার প্লে'র ৬০ বলে বাংলাদেশ বোলাররা ৬২ রানের বেশি শ্রীলঙ্কার স্কোরশিটে যোগ করতে দেননি। ওই ১০ ওভারে শ্রীলঙ্কার ৪ উইকেট ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ বোলাররা।
মিরাজ এদিন ছিলেন সবচেয়ে মিতব্যয়ী (১০-০-৪৮-২)। পেসার তাসকিনও ছিলেন সফল (২/৫২)। আগের ম্যাচের ফাইফার বাঁ হাতি স্পিনার তানভির এদিন মার খেয়েছেন (৬-০-৪১-১)। তবে অকেশনাল স্পিনার শামীম পাটোয়ারী সিক্সথ বোলারের অভাব ঠিকই পূরণ করেছেন (৪-০-৩০-১)।
তবে যে পিচে প্রথম ইনিংসে লঙ্কান অধিনায়ক আসালাঙ্কা, টপ অর্ডার কুশল মেন্ডিজের ব্যাটে ফুলকি উঠেছে, সেই পিচই বাংলাদেশের ইনিংসে দেখিয়েছে উল্টা চরিত্র। স্পিনারদের বল কখনো থেমে, কখনো অপ্রত্যাশিত লো বাউন্স করে বাংলাদেশ ব্যাটারদের কাজটা কঠিন করে দিয়েছে। ইনিংসের মাঝপথে বাঁ হাতি স্পিনার ওয়েল্লালাগে (২/৩৩), লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গার (২/৩৩) বল স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারেনি বাংলাদেশের মিডল এবং লোয়ার অর্ডাররা। পুরো ইনিংসে পার্টনারশিপ বলতে দুটি-৪২ ও ৪৩ রানের!
বাংলাদেশের ইনিংসে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছেন লঙ্কান পেসার আসিথা। তার ইনসুইংয়ে বোল্ড তানজিদ হাসান তামিম (১৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৭)। আর এক পেসার চামিরার বলে প্লেড অন শান্ত (৩ বলে ০)। ৪২ রানের জুটিটা লম্বা করতে পারেননি পারভেজ ইমন। ওয়েল্লালাগেকে সুইপ করতে যেয়ে ফাইন লেগে দিয়েছেন ক্যাচ (৪৪ বলে ৪ বা্উন্ডারিতে ২৮)। অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলবেন বলে পন করেও দলের উপকারে আসতে পারেননি মিরাজ। ওয়েল্লালাগেকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে লং অনে দিয়েছেন ক্যাচ (২৫ বলে ৪ চার, ১ ছক্কায় ২৮)। শামীম পাটোয়ারিও ভরসা দিতে পারেননি। হাসারাঙ্গাকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে স্ট্যাম্পিংয়ে কাটা পড়েছেন (১৮ বলে ১ বাউন্ডারিতে ১২)।
টাইগারদের বিপক্ষে আসিথা ফার্নান্দর ৩ উইকেট শিকার
এক এন্ডে টিমমেটদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখেও হতোদ্যম হননি হৃদয়। তবে ফিফটি পূর্ন করে থেমেছেন তিনি। চামিরার অন এন্ড অফ পিচিং ডেলিভারিতে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে মিডল স্ট্যাম্প উড়ে গেছে তার (৭৮ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৫১)। শেষ স্পেলে সেই চামিরার ১৪৬ কিলোমিটার গতির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব (৮ বলে ৫)। হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্ঠা থেমেছে জাকের আলী অনিকের ২৭ রানের মাথায় এসে। আসিথার বলে ক্রস খেলতে যেয়ে হয়েছেন বোল্ড। এক ইনিংসে ৪টি বোল্ড! কৃতিত্ব যতোটা না লঙ্কান বোলারদের, তার চেয়ে ঢের বেশি অপরাধী বাংলাদেশ ব্যাটাররা। এমন এক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার দুই পেসার আসিথা (৩/৩৩)-চামিরা (৩/৫১) দিয়েছেন টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান। তবে ব্যবধানটা গড়ে দিয়েছেন কুশল মেন্ডিজের সেঞ্চুরি।
৩০ জুলাই ২০২৫, ৮:৫৭ পিএম
৩০ জুলাই ২০২৫, ৩:০১ পিএম
২৯ জুলাই ২০২৫, ৭:৪১ পিএম
গ্রুপ পর্বের ম্যাচ বাতিল হয়েছিল ভারতের ম্যাচ বয়কটে। তবে এরপর এশিয়া কাপে ভারতের সাথে পাকিস্তানের ম্যাচ নিশ্চিত হওয়ায়, আশা ছিল লেজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের মধ্যকার ম্যাচ খেলবে দুই দেশ। তবে সেমিফাইনালেও প্রতিবেশী দেশের সাথে ম্যাচ বয়কট করেছে ভারত। ফলে ম্যাচ না খেলেই ফাইনালে চলে গেছে পাকিস্তান।
আগামী বৃহস্পতিবার বার্মিংহ্যামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণে গ্রুপ পর্বের পর সেমিতেও পাকিস্তানের সাথে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারত। ফলে সরাসরি ফাইনালে উঠে গেছে পাকিস্তান, যেখানে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নস বা দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নসকে।
টুর্নামেন্টে ভারত চ্যাম্পিয়নস দলে ছিলেন শিখর ধাওয়ান, সুরেশ রায়না, হরভজন সিং, পিয়ুষ চাওলা, ইরফান পাঠান, ইউসুফ পাঠান ও রবিন উথাপ্পার মতো সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। শুরুতে রাজি হলেও গত ২০ জুলাই শেষ সময়ে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানান কয়েকজন ক্রিকেটার। এরপর বাতিল হয় ম্যাচটি।
সেই ম্যাচ থেকে উভয় দলই পয়েন্ট ভাগ করে নেয়। গ্রুপ পর্বে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। অন্যদিকে মাত্র ৩ পয়েন্ট পাওয়া ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়নস হয় চতুর্থ।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলা ও পরবর্তী সামরিক উত্তেজনার পর দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে গেছে। যার প্রভাব পড়ছে ক্রীড়াঙ্গনে।
ওই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় দল এখনও মুখোমুখি হয়নি। সদ্য ঘোষিত এশিয়া কাপের সূচিতে একই গ্রুপে থাকা এই দুই দলের সব মিলিয়ে তিনটি ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা রাখা হয়েছে। তবে লেজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল ম্যাচও বাতিল হওয়ায় নতুন করে শঙ্কা জাগতে পারে ভারত-পাকিস্তান মহারণ নিয়ে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই ব্রেন্ডন টেলরের জন্য খুলে যাচ্ছে জাতীয় দলের দরজা। আগামী ৭ আগস্ট বুলাওয়েতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে তাকে যুক্ত করেছে জিম্বাবুয়ে।
২০২১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে হঠাৎ করেই অবসরের ঘোষণা দেন টেলর। এরপর আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা ভাঙার কারণে ৩৯ বছর বয়সী এই কিপার-ব্যাটারকে নিষিদ্ধ করা হয়। তিন বছর ছয় মাসের সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৫ জুলাই।
নিষেধাজ্ঞার সময় জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক টেলর কোনো জাতীয় দল বা ঘরোয়া ক্লাবের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারেননি। তবে হারারের একটি বেসরকারি স্কুলের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে এই সময়ে তিনি নিজেকে ফিট রাখেন ফের ক্রিকেটে ফেরার আশা নিয়ে।
নিষেধাজ্ঞা শেষের আগে টেলর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাদক ও মদাসক্তি কাটিয়ে তিনি আগের চেয়ে অনেক বেশি ফিট অনুভব করছেন।
জিম্বাবুয়ে এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে, যেখানে আছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার তাফাদজওয়া সিগা। বুধবার থেকে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টের একাদশে আছেন তিনি, প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং অর্ডারে তার অবস্থান সাত।
ফলে দ্বিতীয় টেস্টে টেলর যদি দলে আসেন, আর নিজের পুরনো চার নম্বর ব্যাটিং পজিশনে ফেরেন, তাহলে শন উইলিয়ামসসহ অন্যদের এক ধাপ করে নিচে নেমে যেতে হতে পারে।
২০০৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩৪টি টেস্ট খেলা টেলর নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ছিলেন সাদা পোশাকে জিম্বাবুয়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ৩৬.২৫ গড়ে ৬ সেঞ্চুরি ও ১২ ফিফটিতে করেছেন ২ হাজার ৩২০ রান। শেষবার টেস্ট খেলেছিলেন ২০২১ সালে, ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের আগে বড় ধাক্কাই খেল ইংল্যান্ড। চোটের কারণে শেষ পর্যন্ত ওভাল টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন ব্যাটে-বলে দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক বেন স্টোকস। তার পরিবর্তে ওলি পোপ ইংলিশদের নেতৃত্ব দেবেন।
সব মিলিয়ে ম্যানচেস্টারে ড্র হওয়া চতুর্থ টেস্ট থেকে একাদশে মোট চারটি পরিবর্তন এনেছে ইংল্যান্ড। দলে ফিরেছেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার জ্যাকব বেথেল এবং তিন পেসার গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাং। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে দুই পেসার জোফরা আর্চার ও ব্রাইডন কার্সকে। আর এক ম্যাচ খেলেই বাদ পড়েছেন জিম্বাবুয়ের বাঁহাতি স্পিনার লিয়াম ডসন।
সিরিজ জুড়ে ইংল্যান্ডের সেরা খেলোয়াড় স্টোকস বল হাতে পার করেছেন দুর্দান্ত সময়। এক সিরিজে করে ফেলেছেন নিজের সর্বোচ্চ ওভার বোলিংয়ের রেকর্ড। ম্যানচেস্টার টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফাইফার নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেন শতক। তবে চোট সামলে দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারেন মাত্র ১১ ওভার। সেখানেও কয়েকবার তাকে ব্যাথায় ডান কাঁধ ধরতে দেখা গেছে।
ম্যাচ শেষে অবশ্য জানিয়েছিলেন, ডান হাতের বাইসেপ টেন্ডনে সমস্যা থাকলেও টেস্ট মিস করার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু পরে জানা যায়, স্টোকসের চোট গ্রেড থ্রি মাত্রার হওয়ায় পঞ্চম টেস্টে স্পেশালিষ্ট ব্যাটার হিসেবেও খেলা সম্ভব হবে না তার।
স্টোকসের অনুপস্থিতি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ডকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে দেবে। সিরিজে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। ম্যানচেস্টারে গত দুই বছরে তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পাওয়ার পাশাপাশি শেষ দুটি টেস্টেই হয়েছেন ম্যাচ সেরাও। ফলে তাকে ছাড়া একাদশ সাজানো কঠিনই হবে স্বাগতিকদের জন্য।
ডসন বাদ পড়ায় স্টোকসের জায়গায় দলে আসা বেথেল হবেন দলের মূল স্পিনার। আর তার সঙ্গে স্পিন অপশন হিসেবে থাকছেন আরেক ব্যাটার জো রুট। আর পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞ ক্রিস ওকস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেলেন মাইকেল ওয়েন। তরুণ এই ব্যাটার প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে দলে। আগামী আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০ ওভারের সিরিজের দলে রাখা হয়েছে তাকে।
তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজে আরও একবার মূল অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ছাড়াই খেলবে অস্ট্রেলিয়া। তিনি ছাড়াও এই সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরেক অভিজ্ঞ পেসার মিচেল স্টার্ককে। ফলে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করবেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ।
চলতি মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে নজর কাড়েন ওয়েন। সিরিজে তিনি ১৯২.৩০ স্ট্রাইক রেটে করেন ১২৫ রান। এর মধ্যে রয়েছে রয়েছে এই ফরম্যাটে নিজের অভিষেক ম্যাচেই হাফ-সেঞ্চুরি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও যে তিনি তিনি কার্যকর হতে পারেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। গত মৌসুমে তাসমানিয়ার হয়ে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন মাত্র ৬৯ বলে ১৪৯ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস।
কামিন্স ও স্টার্ক না থাকলেও ক্যারিবিয়ানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম কাটিয়ে ওয়ানডে দলে ফিরেছেন দুই অভিজ্ঞ জশ হ্যাজলউড ও ট্রাভিস হেড। ২০ ওভারের সিরিজের দলেও আছেন তারা। আর সাইড স্ট্রেইনের চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে খেলতে না পারা ব্যাটার ম্যাট শর্টও ফিরেছেন দলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়লেও ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মার্নাস লাবুশেন। টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছেন জেক ফ্রেজার-মার্কার্ক, অ্যারন হার্ডি, কুপার কনলি ও জেভিয়ার বার্টলেট। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকা দুই ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল অবসর নেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই নেই ওয়ানডের দলে।
অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচগুলো হবে যথাক্রমে আগামী ১০ ও ১২ ও ১৬ আগস্ট। ওয়ানডে সিরিজ চলবে ১৯ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত।
প্রায় এক যুগ ধরে দেশে বা দেশের বাইরে যেখানেই অস্ট্রেলিয়া টেস্ট খেলুক না কেন, সেখানে অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্টে সেই নাথান লায়নকে বাদ দিয়েই একাদশ সাজায় অস্ট্রেলিয়া। পেস সহায়ক উইকেটে বাড়তি পেসার নিয়ে খেলে অজিরা অবশ্য পায় বড় জয়ই। দলীয় দিক থেকে সিদ্ধান্তটি সমর্থন করলেও লায়নের হতাশা, এই কন্ডিশনে কেন নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পেলেন না তিনি।
ক্যারিবিয়ানের মাটিতে শেষ টেস্ট দিয়ে ২০১৩ সালের পর চোট সমস্যা ছাড়া প্রথমবার টেস্ট একাদশের বাইরে থাকেন লায়নকে। তবে এখানে বড় ভূমিকা ছিল তার ক্রিকেটীয় সামর্থ্য থেকে কন্ডিশনের চাহিদার দিকটি। তৃতীয় টেস্টটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল জ্যামাইকার সাবিনা পার্কে, যা ছিল আবার গোলাপি বলের ম্যাচ। আর তাই অস্ট্রেলিয়া অফ স্পিনার লায়নকে বসিয়ে চারজন পেসার নিয়ে খেলতে নামে।
সম্প্রতি মেলবোর্নে নিজের বিগ ব্যাশ লিগ দল মেলবোর্ন রেনেগেডসের এক কর্পোরেট অনুষ্ঠানে লায়ন জানান, বাস্তবতা মেনে নিলেও বাদ পড়াটা তাকে কষ্ট দিয়েছে।
“এটা তো লুকানোর কিছু নেই। আমি এই সিদ্ধান্তে বেশ হতাশ হয়েছিলাম। আমার যেটা মনে হয়, আমি বিশ্বের যেকোনো কন্ডিশনে অবদান রাখতে পারি, বলতে পারেন এটা আমার বিশ্বাস। আর মিচেল স্টার্কের সাথে মাঠে নামতে না পারাটাও আমার জন্য সত্যিই কষ্টদায়ক ছিল। আমি তার সাথে ৯০টির মতো টেস্ট খেলেছি। তার ১০০তম টেস্টে একসঙ্গে মাঠে নামতে পারলে সেটা দারুণ হত।”
গোলাপি বল আর পেস সহায়ক উইকেটে ওয়েস্ট ইন্দিজকে নাকানি-চুবানি খাইয়ে হারায় অস্ট্রেলিয়ার। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে আগুন ঝড়ান স্টার্ক, নিজের ১০০তম টেস্টে বাঁহাতি এই পেসার শিকার করেন ৫ উইকেট। আর লায়নের জায়গায় খেলা স্কট বোল্যান্ড দ্বিতীয় ম্যাচে উপহার দেন হ্যাটট্রিকও। টেস্টে ৫৬২ উইকেট পাওয়া একজন বোলারকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত তাই খুব বেশি আলোচনার জন্ম দেয়নি।
ব্যক্তিগতভাবে হতাশা থাকলেও তাই নির্বাচকদের সিদ্ধান্তের সাথে শতভাগ একমত লায়ন।
“নির্বাচকদের বাহবা দিতেই হবে। তারা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। তাদের যদি আমাকে কোনো ম্যাচে বাদ দিতেই হত, তাহলে সেটা স্কট বোল্যান্ডের মতো কাউকে খেলানোর জন্যই হওয়া উচিত। সে যেভাবে বল করেছে, হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছে, সেটা অসাধারণ ছিল। প্রতিপক্ষকে ২৭ রানে অলআউট হতে দেখাটাও চমৎকার ব্যাপার ছিল।”
৭ দিন আগে
১৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে