ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুব দ্রুতই এর প্রভাব পড়েছে দুই দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। একই সময়ে চলা পিএসএলের পর স্থগিত হয়ে গেছে আইপিএলও। এই দুই টুর্নামেন্টের মধ্যে পিএসএলে খেলছেন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ মনে করেন, বিকল্প ভেন্যুতে নিরাপদেই খেলতে পারবেন রিশাদ-নাহিদরা।
গত কয়েকদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও পাল্টাপাল্টি আক্রমণের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার কারনে শুক্রবার ঘোষণা আসে পিএসএল স্থগিতের। সাথে এও জানানো হয়, বাকি অংশ হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ফলে শুরুতে রিশাদ ও নাহিদরা দেশে ফিরতে চাইলেও তাদের এখন সেখানে গিয়ে খেলার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন
অবসরে যাওয়া রোহিতের কাছে টেস্ট খেলাটাই ‘সর্বোচ্চ সম্মান’ |
![]() |
শুক্রবার বিসিবির পক্ষ থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ফারুক জানালেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন তারা।
“গত মঙ্গলবার থেকে আমাদের প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক আমাদের বোর্ডের জন্যও। আপনারা জানেন আমাদের জাতীয় দলের দুজন ক্রিকেটার পাকিস্তানে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলছেন। সেখানে যখন থেকে পরিস্থিতি প্রতিকূল, তখন থেকেই ক্রিকেট বোর্ড, ক্রিকেট অপারেশনন্স থেকে শাহরিয়ার নাফীস নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আমি ব্যক্তিগত উদ্যেগে পিএসএলের সিএও-এর সাথে যোগাযোগ করেছি। আমি পিসিবি সভাপতিকেও বার্তা দিয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেছিলাম।”
গত বৃহস্পতিবার পিএসএলে করাচি কিংস এবং পেশোয়ার জালমি রাওয়ালপিন্ডিতে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। তবে স্টেডিয়ামের কাছে একটি ড্রোন পড়ার পর ম্যাচটি বাতিল করা হয়। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এরপর খেলোয়াড়দের ওপর হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান ও বিদেশি ক্রিকেটারদের লক্ষ্য করে এটি ছিল প্রতিবেশী দেশ ভারতের ইচ্ছাকৃত এক হামলা।
স্বাভাবিকভাবেই দুই দেশের চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিদেশী ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা নাকি এরই মধ্যে তাদের বোর্ডকে জানিয়েছে দেশে ফিরে যাওয়ার কথা। এমন অবস্থায় বিসিবিকে ভাবতে হচ্ছে পাকিস্তানে অবস্থান করা বাংলাদেশের দুই সাংবাদিকের নিরাপত্তার দিকটিও।
ফারুক জানিয়েছেন, তারা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দিকটিও দেখবেন।
“আপনারা জানেন তারা বাংলাদেশের দুজন সব সব বিদেশী খেলোয়াড়দেড় একত্র করেছিল এজন্য যাতে তারা তাদের নিরাপদে একটা জায়গায় সরিয়ে নিতে পারে। তার সাথে সাথে আমাদের বোর্ড থেকে পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের দুজন ক্রীড়া সাংবাদিক সেখানে আছে, আমি তাদের সাথে কথা বলেছি। আমরা তাদের বলেছি যাতে খেলোয়াড়দের সাথে এই দুজনের দিকটিও দেখা হয়। তারা পেশাগত দায়িতে পালনে সেখান গেছে। তাই আমরা মনে করি তাদের প্রতি আমাদের একটা দায়িত্ব আছে।”
গত কয়েকদিন ধরেই খবর আসছিল যে, নিরাপত্তার চিন্তায় বাংলাদেশে ফিরে আসতে চাচ্ছেন রিশাদ ও নাহিদ। সেই সাথে যোগ হয় বাংলাদেশের এই মাসের পাকিস্তানের সম্ভাব্য সাদা বলের সিরিজ নিয়েও, যেখানে দলের অনেকেই যেতে অনাগ্রহী নিরাপত্তা নিয়ে।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানে হচ্ছে না পিএসএল, ধোঁয়াশায় বাংলাদেশ সিরিজ |
![]() |
সেই সিরিজ নিয়ে কিছু না বললেও বিসিবি প্রধান বললেন, রিশাদ ও নাহিদ আপাতত দেশে ফিরেছেন না।
“গত তিন দিন ধরে আমরা সারাক্ষণ পিসিবি, পিএসএলের সাথে যোগাযোগ রেখেছি। আশা করি তারা আজকে বিকালের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত নেবে। এরই মধ্যে টুর্নামেন্ট অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে তারা। আমি জানতে পেরেছি সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা খেলোয়াড়দের সেখানে নিয়ে যাবে। এই ব্যাপারটা বোর্ড সভাপতি হিসেবে প্রথম থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি আমি। আমি আশা করি এটার একটা সুন্দর সমাধান হবে।”
No posts available.
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫১ এম
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ এম
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৬ পিএম
টসের সময় হাত মেলালেন না দুই অধিনায়ক। কোনোরকম কথাও বললেন না সালমান আলি আগা ও সুর্যকুমার যাদব। ম্যাচ শেষেও অভিন্ন চিত্র। দুই দলের ক্রিকেটারদের হাত মেলাতে দেখা গেল না। এর পেছনে কারণ স্পষ্ট- সাম্প্রতিক সময়ে দুই দলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি।
ম্যাচ শেষে সেটি আরও স্পষ্ট হলো সুর্যকুমার যাদবের কথায়। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ম্যাচ সম্পর্কিত সব প্রশ্নোত্তরের পর তিনি নিজ থেকেই আনেন পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ। একইসঙ্গে নিজেদের জয়টি উৎসর্গ করেন বীর সেনাদের উদ্দেশ্যে।
গত এপ্রিলে কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ভারতের অন্তত ২৬ জন নাগরিক। একই ঘটনায় আহত হন আরও অনেকে। শুরু থেকেই পাকিস্তানকে দায় দিয়ে আসছে ভারত। এমনকি তাদের বিপক্ষে কোনোরকম খেলাও না খেলার আওয়াজ তুলেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন
৮ উইকেটে উড়ে গেল ভারত |
![]() |
সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে করা টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল ম্যাচ পর্যন্ত খেলেনি ভারত। এশিয়া কাপেও তাদের সঙ্গে ম্যাচটি বয়কটের ডাক দিয়েছেন ভারতের অনেকে। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
তবে সাম্প্রতিক ঘটনার রেষ দেখা গেল ম্যাচ শুরুর আগে-পরে। যেখানে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কোনো বন্ধুত্বসুলভ সৌজন্যতা করতে দেখা যায়নি ভারতের ক্রিকেটারদের। মাঠের লড়াইয়েও পাকিস্তানকে পাত্তা দেয়নি সুর্যকুমারের দল।
কুলদিপ যাদব ও অক্ষর প্যাটেলের দারুণ বোলিংয়ে পাকিস্তানকে মাত্র ১২৭ রানে আটকে রাখে ভারত। পরে অভিষেক শর্মা, তিলক ভার্মা ও সুর্যকুমারের নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৫.৫ ওভারেই ম্যাচ জিতে যায় এশিয়া কাপের ৮ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
আরও পড়ুন
ক্রিকেট রণাঙ্গনে ভারতের কাছে এতটা কাবু পাকিস্তান |
![]() |
ম্যাচ শেষে জয়টি উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত জানান সুর্যকুমার।
“আমি একটা জিনিস বলতে চাই। আমি মনে করি, এটিই সবচেয়ে সঠিক সময়। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত পরিবারগুলোর পাশে আছি এবং তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।”
“একইসঙ্গে আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমরা এই জয়টি আমাদের আর্মড ফোর্সকে উৎসর্গ করতে চাই, যারা সবসময় সাহসিকতা দেখিয়ে এসেছে। আশা করি, তারা এটি চলমান রাখবে এবং আমরা মাঠে যখনই সুযোগ পাব, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করব।”
এশিয়া কাপে ভারত ক্রিকেট দলের দাপট অব্যাহত। আজ রবিবার আবুধাবিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয় পেয়েছে তারা। আসরে টানা দুই জয়ে ‘এ’ গ্রুপে শীর্ষে সূর্যকুমার যাদবের দল।
সূর্য কুমারদের জয়ের দিনে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার নারী ক্রিকেট দলের কাছে ৮ উইকেটে হেরেছেন হরমনপ্রীত কৌররা। আজ বিকেলে ভারতের পাঞ্জাবের চণ্ডীগড়ে স্বাগতিকদের ২৮১ রান টপকাতে মাত্র দুটি উইকেট হারিয়েছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।
এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক হরমনপ্রীত। প্রতিকা রাওয়াল, স্মৃতি মান্দানা হারলিন দিওলের অর্ধশতকের ওপর ভর করে ২৮১ রানের পুঁজি দাঁড় করায় ভারত। টপঅর্ডার ছাড়াও দলটির মিডল ও লোয়ার এন্ডের ব্যাটাররা ধারাবাহিকতা দেখান। দলের ৮ ব্যাটার দুই অঙ্কের রান স্পর্শ করেন।
আরও পড়ুন
ক্রিকেট রণাঙ্গনে ভারতের কাছে এতটা কাবু পাকিস্তান |
![]() |
জবাবে ৪৫ রানে অ্যালিসা হিলিকে হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। ফিবি লিচফিল্ড-অ্যালেসা পেরি মিলে দলীয় শতক পার করেন। তবে লিচফিল্ড থামেন তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারের ধারে কাছে। ৮৮ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৪টি বাউন্ডারিতে সাজান ইনিংস। ৩০ রানের মাথায় পেরি রিটায়ার্ড হার্ট হন।
অস্ট্রেলিয়ার শেষটা করেন বেথানি লুইস মুনি ও অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড। মুনি ৭৭ এবং সাদারল্যান্ড ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন। এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ ১-০ গোলে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর।
পহেলগাঁও-এ সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ পর্যটকের নিহতের ঘটনা্কে কেন্দ্র করে পাকিস্তান-ভারতের আকাশযুদ্ধ খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। ৫ মাস আগের সেই আকাশযুদ্ধ থামাতে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্যাম্পকে। সে কারণেই এশিয়া কাপে 'এ' গ্রুপে ভারত-পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যুদ্ধের আঁচ লাগাটাই ছিল স্বাভাবিক। তবে দুবাইয়ের ক্রিকেট রণক্ষেত্র পায়নি সে উত্তাপ। ২৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে পাকিস্তানকে হারিয়ে ম্যাচটা একপেশে করেছে সূর্যকুমারের দল ভারত।
দুবাইয়ে রোববার ভারতের বিপক্ষে অবতীর্ন হওয়ার আগে টি-টোয়েন্টিতে এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে রেকর্ডটা মোটেও ভাল ছিল না। ১৩ ম্যাচের ৯টিতে হার, একটি 'টাই'। তবে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ ৩ ম্যাচের দুটিতে জিতেছে পাকিস্তান, দুটির ভেন্যুই দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১০ উইকেটে এবং ২০২২ সালের এশিয়া কাপে ৫ উইকেটে জয়ের সেই অতীত থেকে টনিক পাবে সালমান আগার দল, সে বিশ্বাসই বদ্ধমূল ছিল।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানকে উড়িয়ে ভারতের সহজ জয় |
![]() |
দুবাইয়ের উইকেট কিছুটা স্লো, তা আঁচ করতে পেরে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তকে যথার্থ মনে করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা। তবে ভারতের মতো বিশ্বসেরা ব্যাটিং সাইডকে চ্যালেঞ্জে ফেলতে হলে চাই চ্যালেঞ্জিং টোটাল। তা জেনেও কোচ মাইক হেসনের নির্দেশিত ফর্মূলায় ব্যাটিং করতে পারেনি পাকিস্তানের টপ এবং মিডল অর্ডাররা।
২৪ ঘন্টা আগে আবুধাবিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দুই ওভারে ২ ব্যাটার হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ। দুবাইয়েও সেই দুর্দশায় পড়তে হয়েছে পাকিস্তানকে। হার্দিক পান্ডিয়ার ওয়াইড দিয়ে শুরু হওয়া ইনিংসের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে পয়েন্টে ক্যাচ প্র্যাকটিস করে ফিরেছেন সাইম আইয়ুব। পরের ওভারে বুমরাহ'র দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে হার্দিকের রানিং ক্যাচে থেমেছেন মোহাম্মদ হারিস।
শুরুর ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৮ বলে ৩৯ রান কিছুটা স্বপ্ন দেখালেও কুলদ্বীপ যাদবের এক স্পেলে (৪-০-১৮-৩) স্কোরটা যখন ৬৪/৬, তখন তিন অঙ্কের নাগাল পাওয়া নিয়েই সন্দিহান ছিল পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট।
আরও পড়ুন
কুলদিপ-অক্ষরের স্পিন বিষে নীল পাকিস্তান |
![]() |
ভারতের তিন স্পিনার এদিন পাকিস্তান ব্যাটারদের ফেলেছে গোলক ধাঁধায়। লেগ স্পিনার বরুন চক্রবর্তী (৪-০-২৪-১), বাঁ হাতি স্পিনার অক্ষয় প্যাটেল (৪-০-১৮-২) এবং চায়নাম্যান কুলদ্বীপ যাদব ( ৪-০-১৮-৩) মিলে পেয়েছেন ৬ উইকেট। এই ৩ জন ৭২টি ডেলিভারির মধ্যে ডট দিয়েছেন ৪০টি! পাল্লা দিয়ে ডট বলের প্রতিযোগিতা করেছেন এই তিন স্পিনার।
এক এন্ডে দাঁড়িয়ে অন্য এন্ডের ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলের মধ্যে ব্যতিক্রম ছিলেন পাকিস্তান ওপেনার শাহিবজাদা ফারহান (৪৪ বলে ১ চার, ৩ ছক্কা)। তবে পাকিস্তানের চ্যালেঞ্জি স্কোরের কৃতিত্ব দিতে হবে টেল এন্ডার শাহীন শাহ আফ্রিদিকে। তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে (১৬ বলে ৪ ছক্কায় ৩৩*) ইনিংসটা পাকিস্তান টেনে নিতে পেরেছে ১২৭/৯ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন
বৃষ্টিতে ভেসে গেল ইংল্যান্ড-দ. আফ্রিকা ম্যাচ |
![]() |
টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে পর্বটা ভাইটাল। রোববার রাতে এই পর্বে দু'দলের ব্যবধান সুস্পষ্ঠ। প্রথম ৬ ওভারে পাকিস্তানের স্কোর যেখানে ৪২/২, সেখানে ভারতের ৬১/২। পাকিস্তানের ব্যাটারদের বাউন্ডারি শটের সে কী দুর্গতি। পুরো ইনিংসে ৭টি মাত্র বাউন্ডারি। সেখানে ভারতের বাউন্ডারি সংখ্যা ১৩টি। ভারত বোলারদের একটু বেশিই সমীহ করেছে পাকিস্তান ব্যাটাররা। ১২০টি ডেলিভারির মধ্যে ৬১টি ডট করে প্রকারান্তরে তা জানিয়ে দিয়েছে সালমান আগার দল। অথচ, ৯৫ বলে বিজয়ের হাসিতে ফেটে পড়া ভারত ব্যাটাররা ডট করেছে ৩৭টি বল।
ভয়-ডরহীন ব্যাটিংয়ের শিক্ষাটা পাকিস্তান ব্যাটারদের দিয়েছেন তরুণ ওপেনার অভিষেক শর্মা (১৩ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৩১)। ফিনিশার চরিত্র উপস্থাপন করেছেন অধিনায়ক সূর্যকুমার (৩৭ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৪৭*)। দুবাইয়ের উইকেট যে স্পিন বোলিং ফ্রেন্ডলি পাকিস্তানের অকেশনাল অফ স্পিনার সাইম আইয়ুবের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে (৪-০-৩৫-৩) তা জেনে গেছে দর্শক।
এনসিএল দিয়ে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ক্রিকেট ফিরবে, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল সকলের। তবে বৃষ্টির বাগড়ায় সিলেট ও রংপুর বিভাগের খেলা ভেস্তে গেছে।
বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেন,
‘‘বগুড়ার মাঠ ঠিক হতে আরও দুই-তিন দিন প্রয়োজন। ওখানে আগামীকাল (সোমবার) যে ম্যাচগুলো রয়েছে, সেগুলো রাজশাহী নিয়ে আসব। এখানে দিনে দুইটা ম্যাচ আয়োজনের ব্যবস্থা করেছি। কাল ও পরের দিনের বগুড়ার খেলা এখানে হবে।’’
আরও পড়ুন
পাকিস্তানকে উড়িয়ে ভারতের সহজ জয় |
![]() |
পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বগুড়ায় এনসিএলের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ সময়ের মধ্যে মাঠ প্রস্তুত হয়ে গেলে ১৭, ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বরের খেলা সেখানে হতে পারে। আকরাম খান বলেন,
‘‘খেলোয়াড়রা ত্যাগ স্বীকার করছে। না খেলার চেয়ে তো খেলা ভালো। একটা ঘণ্টা হয়তো বেশি জার্নি করতে হবে। কিছু করার নেই।’’
রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিংবা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে না পারার কারণ এখানে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল নেই। তবে এনসিএলের জন্য যে হোটেল বিসিবি ব্যবস্থা করেছে তা বেশ ভালো বলে উল্লেখ করেন আকরাম,
‘‘এখানে কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে অনেক ভালো হতো। স্টেডিয়ামে লাইটের সবকিছু আছে কিন্তু লাইট নেই। তাছাড়া পুরো টুর্নামেন্ট এখানে করা যেত। এখানে বিনিয়োগ করাই আছে। আর কিছু টাকা খরচ করা গেলে প্রতিদিন দুই ম্যাচ করা যেত। বাকিগুলো ভালো আছে। হোটেলও ভালো। সবকিছু ভালো, শুধু কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো গেলে খুব ভালো ক্রিকেটের পরিবেশ হবে।’’
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ভারত। আর পাকিস্তানের অবস্থান অষ্টম। দুই দলের র্যাঙ্কিংয়ের বিশাল এই ব্যবধান ফুটে উঠল মাঠের খেলায়ও। ব্যাটিং-বোলিংয়ে ছন্নছাড়া পাকিস্তানকে এশিয়া কাপের ম্যাচে পাত্তাই দিলো না ভারত।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববারের ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় ভারত। মাত্র ১২৮ রানের লক্ষ্য ১৫.৫ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলে সুর্যকুমার যাদবের দল।
পরপর দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানের জয়ে সুপার ফোরের টিকেট অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলল ভারত। আর দুই ম্যাচে একটি করে জয়-পরাজয় পাওয়া পাকিস্তানকে অপেক্ষায় থাকতে হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য।
আরও পড়ুন
বৃষ্টিতে ভেসে গেল ইংল্যান্ড-দ. আফ্রিকা ম্যাচ |
![]() |
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বাউন্ডারি মারেন অভিষেক শর্মা। পরের বলে চমৎকার শটে কাভারের ওপর দিয়ে তিনি মারেন ছক্কা।
দ্বিতীয় ওভারে সাইম আইয়ুবের বলে স্টাম্পড হয়ে যান আরেক ওপেনার শুবমান গিল। তবে থামেননি অভিষেক। শাহিনের পরের ওভারে আবার তিনি মারেন ছক্কা-চার।
অভিষেককেও থামান সাইম। ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার। ৪ চারের সঙ্গে ২ ছক্কায় মাত্র ১৩ বলে ৩১ রান করেন অভিষেক।
আরও পড়ুন
কুলদিপ-অক্ষরের স্পিন বিষে নীল পাকিস্তান |
![]() |
এরপর আর তাড়াহুড়ো করেননি তিলক ভার্মা ও সুর্যকুমার যাদব। দুজন মিলে রয়েসয়েই দলকে এগিয়ে নেন জয়ের পথে। দশম ওভারে সুফিয়ান মুকিমের বলে বিশাল এক ছক্কা মারেন তিলক। এক বল পর চার মারেন সুর্যকুমার।
১৩তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে এই জুটি ভাঙেন সাইম। চমৎকার এক অফ স্পিন ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান ৩১ বলে ৩১ রান করা তিলক। তার বিদায়ে ভাঙে ৫২ বলে ৫৬ রানের জুটি।
এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি শিবাম দুবে ও সুর্যকুমার। অপরাজিত ইনিংসে দলের ৩৭ বলে দলের সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন ভারত অধিনায়ক। দুবে ৭ বলে করেন ১০ রান।
প্রথম বলে আউট হওয়ার ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩৫ রানে ৩ উইকেট নেন সাইম। উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করেন আবরার আহমেদ।
আরও পড়ুন
হাত মেলালেন না ভারত-পাকিস্তান অধিনায়ক |
![]() |
এর আগে পাকিস্তানকে অল্পে বেধে রাখার কারিগর ভারতের স্পিনাররা। দুই পেসার হার্দিক পান্ডিয়া ও জাসপ্রিত বুমরাহ শুরুতে উইকেট নিলেও, পরে জাদু দেখান কুলদিপ যাদব ও অক্ষর প্যাটেল।
প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট নেওয়া কুলদিপের এবার শিকার ৩ উইকেট। বাঁহাতি অক্ষর নেন ২ উইকেট। দুজনই ৪ ওভারে খরচ করেন ১৮ রান করে।
টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে গড়পড়তার চেয়ে বেশি রানের লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা। কিন্তু শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর আর সেটি করতে পারেনি তারা।
চার নম্বরে নেমে ফাখার জামান অবশ্য পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেছিলেন। যার সুবাদে পাওয়ার প্লেতে ৪২ রান করে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন
বিসিবি নির্বাচনে কাউন্সিলর মনোনয়নের সময় বাড়ল |
![]() |
এরপর স্পিনাররা আক্রমণে আসতেই কমতে থাকে রান রেট। পরপর দুই ওভারে ফাখার (১৫ বলে ১৭) ও সালমানকে (১২ বলে ৪) আউট করেন অক্ষর। দশ ওভারে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে মাত্র ৪৯ রান।
পরে উইকেট শিকারে যোগ দেন কুলদিপ। ১৩তম ওভারে পরপর দুই বলে হাসান নাওয়াজ ও মোহাম্মদ নাওয়াজকে আউট করেন বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার। মাত্র ৬৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে মহা বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান।
এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে একের পর এক ব্যাটারের বিদায় দেখছিলেন ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান। ১৭তম ওভারে নিজের স্পেল শেষ করতে এসে তাকে ফেরান কুলদিপ। ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ৪৪ বলে ৪০ রান করা ব্যাটার।
এরপর ক্রিজে গিয়ে রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। তার ঝড়ে শেষ ৪ ওভারে ৪৪ রান করে পাকিস্তান। কুলদিপ ও বরুণ চক্রবর্তীর বলে একটি করে ছক্কা মারেন বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
তবে অন্যপ্রান্ত থেকে সমর্থন পাননি আফ্রিদি। বরুণের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ফাহিম আশরাফ।
১৯তম ওভারে বুমরাহর বলে পরপর দুটি চার মেরে রান কিছুটা বাড়ান সুফিয়ান মুকিম। ওভারের শেষ বলে তাকে বোল্ড করে দেন অভিজ্ঞ পেসার।
আরও পড়ুন
ছিটকে গেলেন সাকিব, স্কটিশ পেসারকে নিলো ইংল্যান্ড |
![]() |
শেষ ওভারে পান্ডিয়ার বলে দুটি ছক্কা মারেন আফ্রিদি। তার ব্যাটেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় পাকিস্তান। কিন্তু সেটি জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১২৭/৯ (সাইম ০, ফারহান ৪০, হারিস ৩, ফাখার ১৭, সালমান ৩, হাসান নাওয়াজ ৫, মোহাম্মদ নাওয়াজ ০, ফাহিম ১১, আফ্রিদি ৩৩*, মুকিম ১০, আবরার ০*; পান্ডিয়া ৩-০-৩৪-১, বুমরাহ ৪-০-২৮-২, বরুণ ৪-০-২৪-১, কুলদিপ ৪-০-১৮-৩, অক্ষর ৪-০-১৮-২, অভিষেক ১-০-৫-০)
ভারত: ১৫.৫ ওভারে ১৩১/৩ (অভিষেক ৩১, গিল ১০, সুর্যকুমার ৪৭*, তিলক ৩১, দুবে ১০*; আফ্রিদি ২-০-২৩-০, সাইম ৪-০-৩৫-৩, আবরার ৪-০-১৬-০, নাওয়াজ ৩-০-২৭-০, মুকিম ২.৫-০-২৯-০)
ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী