১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১:৪৫ এম
কয়েক বছর আগেও চিত্রটা বেশ মলিন হলেও এই মূহুর্তে বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগ বেশ ভালো অবস্থাতেই আছে। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, যেটিকে একসময় 'পিকনিক লিগ' বলা হত, সেটিও সামগ্রিকভাবে অনেক উন্নতি করেছে। তবে এই লিগকে যে তকমাটা দেওয়া হয়েছিল একটা সময়ে, তা এখনও পোড়ায় জাকের আলি অনিককে। প্রতিটি রানের জন্য সংগ্রাম করা এই প্রতিযোগিতায় ক্রিকেটারদের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা তাকে ভীষণ কষ্ট দেয় বলেও জানিয়েছেন তরুণ এই কিপার-ব্যাটার। তবে প্রশ্ন তো থেকেই যায়, ঘরোয়াতে ভালো করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তা প্রতিফলিত করতে পারবেন জাকেররা?
একটা সময় ধরে জাতীয় লিগকে পিকনিক লিগ বলার কারণ ছিল কয়েকটিই৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্রিকেটের মান, প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাব, কম পারিশ্রমিক, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও কিছু ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের নিবেদনের ঘাটতির মত গুরুতর কিছু বিষয়। একবার এমন খবরও এসেছিল যে, ম্যাচ চলাকালীন খেলোয়াড়রা নাকি বিরিয়ানি খান! স্বাভাবিকভাবেই এসব ব্যাপার যখন সামনে চলে আসে, সেই লিগকে মজা করে কেউ কেউ এটিকে পিকনিক লিগ নাম দিয়ে দেন। পরে সেটাই পেয়ে যায় ব্যাপ্তি।
এখন অবশ্য জাতীয় লিগকে নিয়ে কেউ আর এসব বলেন না। তবে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া জাকের আলি হুট করেই সেই পিকনিক লিগ নামকরণ নিয়ে একরাশ হতাশা প্রকাশ করে ফিরিয়ে এনেছেন পুরনো স্মৃতি৷ “প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার খুবই কষ্ট লাগে যখন দেখি অনেকে বলে যে, এটা পিকনিক ক্রিকেট। এই জিনিসটা খুব কষ্ট লাগে। আমরা জানি, আমরা ক্রিকেটার হিসেবে কতোটা কষ্ট করে খেলি। তাই দয়া করে এই কথাগুলো বলবেন না। আমি এই কথায় খুব দুঃখ পাই। আমি ২০১৭ সাল থেকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলি। আমি জানি, আমার কতটা কষ্ট হয়। একেকটা রান করতে আমার কতটা কষ্ট হয়েছে। সবার কাছে অনুরোধ থাকবে। ক্রিকেটার হিসেবে আমরা অনেক কষ্ট করি।”
জাকেরের হতাশ হওয়াটা অবশ্য যৌক্তিকও বটে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে রাতারাতি দেশের ক্রিকেটে সেনসেশন হয়ে গেলেও লাল বলের ক্রিকেটে তিনি বেশ সফল। ২০১৬-১৭ মৌসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। তবে আলো ছড়াচ্ছেন মূলত গত কয়েক বছর ধরে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) টানা তিন ইনিংসে সেঞ্চুরি করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন।
২০২১ সালের শুরু করে এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৮ ইনিংসে ব্যাট করেছেন জাকের। চার সেঞ্চুরি ও ১৩ ফিফটিতে ৪৬.৭৯ গড়ে করেছে ১ হাজার ৯৬৫ রান। বাংলাদেশের বাস্তবতায় একজন কিপার-ব্যাটার হিসেবে পরিসংখ্যানটা ঈর্ষণীয়ই। সেই ধারায় গত মাসে বাংলাদেশ 'এ' দলের হয়ে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা ১৭২ রানের ইনিংস খেলে এবার ডাক পেয়েছেন ভারত সিরিজের টেস্ট দলে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, সাড়ে সাড়ে সাত বছরের বেশি সময় প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলে, যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেই টেস্ট দলে এসেছেন জাকের। তবে তিনি যে বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ করলেন, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনার আগে জাকেরদের তো এটাও মনে রাখা উচিত, কেন জাতীয় লিগকে এই নাম দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে জাকেরের চেয়েও বেশি সময় খেলে, অভিজ্ঞ হয়ে, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে রানের পর রান করে জাতীয় দলে এসেছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ছিলেন ২০১৯ বিশ্বকাপের দলেও। খেলেছেন অন্য দুই ফরম্যাটেও। বিক্ষিপ্ত কিছু ইনিংস ছাড়া সেভাবে কখনই ধারাবাহিক হতে পারেননি। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সাথে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার অনেক তফাৎ। এই পর্যায়ে রান করা কঠিন, কারণ বোলাররা বাজে বল কম দেন।
মিঠুনের সেই সরল স্বীকারোক্তি নিয়ে সেই সময়ে বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তবে সাহসী সেই মন্ত্যবের জন্য তাকে বরং বাহবা দেওয়া উচিত। কারণ, মিঠুন বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের কঠিন বাস্তবতাই তুলে ধরেছেন। যা বলে দেয়, ঘরোয়াতে নিজেকে প্রমাণ করে জাতীয় দলে খেলোয়াড়দের প্রবেশের যে চর্চিত কথা আমরা বলি, সেখানে শুভঙ্করের ফাঁকি থেকেই যায়।
মিঠুন ছাড়াও বার বার তার প্রমাণ দেখিয়েছেন আরও অনেকেই। যেমন ফজলে হক রাব্বি। তিনিও ঘরোয়াতে নিজেকে প্রমাণ করেই এসেছিলেন জাতীয় দলে। তবে জিম্বাবুয়ের সাথে একটি সিরিজে তার নিদারুণ ব্যর্থতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্বলতার দিকগুলো।
জাতীয় লিগ বাদে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের কথাও যদি ধরা হয়, চিত্রটা একই। আনামুল হক বিজয় বা নাঈম শেখরা রানের ফোয়ারা বইয়ে দেন রীতিমত। তবে সেই ফর্ম দেখে জাতীয় দলে যখনই তাদের ডাকা হয়, তখন ফুটে ওঠে তাদের নানা দুর্বলতা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চতুর বোলাররা সেট-আপ করে অনায়াসেই তাদের ফেলে দেন। যেহেতু ঘরোয়াতে বোলাররা এমন কিছু করেননা, ফলে শীর্ষ বোলারদের স্কিলের পাশাপাশি মানসিক লড়াইয়েও আমাদের ঘরোয়ার পরীক্ষিত ব্যাটাররা খাবি খান।
তবে প্রসঙ্গ যেহেতু চারদিনের ম্যাচ, তাই জাকের আলি যে আক্ষেপ করেছেন সেই পিকনিক লিগ নামকরণ নিয়ে, তাই সেই কষ্ট নিজের পাশাপাশি সবাইকে ভুলিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব এখন তারই। আজ হোক বা কাল, জাকের যখনই টেস্ট খেলার সুযোগ পাবেন, তাকে মাঠের পারফরম্যান্স দিয়েই প্রমাণ করতে হবে যে তিনি ঘরোয়াতে পিকনিক লিগে রান করেননি। প্রমাণ করতে হবে তিনি শতভাগ সিরিয়াস লিগে রান করেছেন, নিজেকে নিঙরে দিয়েছেন, নিবেদনের কোনো ঘাটতি রাখেনি। সংবাদ সম্মেলনে মুখের কথা নয়, ব্যাটে রান দিয়ে তখন এক ফুঁৎকারে সব উড়িয়ে দিতে পারবেন জাকের। সুযোগ ভারত সিরিজে না এলেও পরবর্তীতে পাবেন অবশ্যই। তখন ব্যাট হাতে জাতীয় লিগের মান উজ্জ্বল করতে পারবেন তো জাকের?
৩০ জুলাই ২০২৫, ৮:৫৭ পিএম
৩০ জুলাই ২০২৫, ৩:০১ পিএম
২৯ জুলাই ২০২৫, ৭:৪১ পিএম
গ্রুপ পর্বের ম্যাচ বাতিল হয়েছিল ভারতের ম্যাচ বয়কটে। তবে এরপর এশিয়া কাপে ভারতের সাথে পাকিস্তানের ম্যাচ নিশ্চিত হওয়ায়, আশা ছিল লেজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের মধ্যকার ম্যাচ খেলবে দুই দেশ। তবে সেমিফাইনালেও প্রতিবেশী দেশের সাথে ম্যাচ বয়কট করেছে ভারত। ফলে ম্যাচ না খেলেই ফাইনালে চলে গেছে পাকিস্তান।
আগামী বৃহস্পতিবার বার্মিংহ্যামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণে গ্রুপ পর্বের পর সেমিতেও পাকিস্তানের সাথে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারত। ফলে সরাসরি ফাইনালে উঠে গেছে পাকিস্তান, যেখানে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নস বা দক্ষিণ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়নসকে।
টুর্নামেন্টে ভারত চ্যাম্পিয়নস দলে ছিলেন শিখর ধাওয়ান, সুরেশ রায়না, হরভজন সিং, পিয়ুষ চাওলা, ইরফান পাঠান, ইউসুফ পাঠান ও রবিন উথাপ্পার মতো সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। শুরুতে রাজি হলেও গত ২০ জুলাই শেষ সময়ে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানান কয়েকজন ক্রিকেটার। এরপর বাতিল হয় ম্যাচটি।
সেই ম্যাচ থেকে উভয় দলই পয়েন্ট ভাগ করে নেয়। গ্রুপ পর্বে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। অন্যদিকে মাত্র ৩ পয়েন্ট পাওয়া ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়নস হয় চতুর্থ।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলা ও পরবর্তী সামরিক উত্তেজনার পর দুই দেশের মধ্যকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে গেছে। যার প্রভাব পড়ছে ক্রীড়াঙ্গনে।
ওই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারত ও পাকিস্তানের জাতীয় দল এখনও মুখোমুখি হয়নি। সদ্য ঘোষিত এশিয়া কাপের সূচিতে একই গ্রুপে থাকা এই দুই দলের সব মিলিয়ে তিনটি ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা রাখা হয়েছে। তবে লেজেন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল ম্যাচও বাতিল হওয়ায় নতুন করে শঙ্কা জাগতে পারে ভারত-পাকিস্তান মহারণ নিয়ে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই ব্রেন্ডন টেলরের জন্য খুলে যাচ্ছে জাতীয় দলের দরজা। আগামী ৭ আগস্ট বুলাওয়েতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে তাকে যুক্ত করেছে জিম্বাবুয়ে।
২০২১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে হঠাৎ করেই অবসরের ঘোষণা দেন টেলর। এরপর আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা ভাঙার কারণে ৩৯ বছর বয়সী এই কিপার-ব্যাটারকে নিষিদ্ধ করা হয়। তিন বছর ছয় মাসের সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৫ জুলাই।
নিষেধাজ্ঞার সময় জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক টেলর কোনো জাতীয় দল বা ঘরোয়া ক্লাবের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারেননি। তবে হারারের একটি বেসরকারি স্কুলের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে এই সময়ে তিনি নিজেকে ফিট রাখেন ফের ক্রিকেটে ফেরার আশা নিয়ে।
নিষেধাজ্ঞা শেষের আগে টেলর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাদক ও মদাসক্তি কাটিয়ে তিনি আগের চেয়ে অনেক বেশি ফিট অনুভব করছেন।
জিম্বাবুয়ে এরই মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে, যেখানে আছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার তাফাদজওয়া সিগা। বুধবার থেকে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টের একাদশে আছেন তিনি, প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং অর্ডারে তার অবস্থান সাত।
ফলে দ্বিতীয় টেস্টে টেলর যদি দলে আসেন, আর নিজের পুরনো চার নম্বর ব্যাটিং পজিশনে ফেরেন, তাহলে শন উইলিয়ামসসহ অন্যদের এক ধাপ করে নিচে নেমে যেতে হতে পারে।
২০০৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩৪টি টেস্ট খেলা টেলর নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ছিলেন সাদা পোশাকে জিম্বাবুয়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ৩৬.২৫ গড়ে ৬ সেঞ্চুরি ও ১২ ফিফটিতে করেছেন ২ হাজার ৩২০ রান। শেষবার টেস্ট খেলেছিলেন ২০২১ সালে, ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের আগে বড় ধাক্কাই খেল ইংল্যান্ড। চোটের কারণে শেষ পর্যন্ত ওভাল টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন ব্যাটে-বলে দারুণ ছন্দে থাকা অধিনায়ক বেন স্টোকস। তার পরিবর্তে ওলি পোপ ইংলিশদের নেতৃত্ব দেবেন।
সব মিলিয়ে ম্যানচেস্টারে ড্র হওয়া চতুর্থ টেস্ট থেকে একাদশে মোট চারটি পরিবর্তন এনেছে ইংল্যান্ড। দলে ফিরেছেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার জ্যাকব বেথেল এবং তিন পেসার গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাং। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে দুই পেসার জোফরা আর্চার ও ব্রাইডন কার্সকে। আর এক ম্যাচ খেলেই বাদ পড়েছেন জিম্বাবুয়ের বাঁহাতি স্পিনার লিয়াম ডসন।
সিরিজ জুড়ে ইংল্যান্ডের সেরা খেলোয়াড় স্টোকস বল হাতে পার করেছেন দুর্দান্ত সময়। এক সিরিজে করে ফেলেছেন নিজের সর্বোচ্চ ওভার বোলিংয়ের রেকর্ড। ম্যানচেস্টার টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফাইফার নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেন শতক। তবে চোট সামলে দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারেন মাত্র ১১ ওভার। সেখানেও কয়েকবার তাকে ব্যাথায় ডান কাঁধ ধরতে দেখা গেছে।
ম্যাচ শেষে অবশ্য জানিয়েছিলেন, ডান হাতের বাইসেপ টেন্ডনে সমস্যা থাকলেও টেস্ট মিস করার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু পরে জানা যায়, স্টোকসের চোট গ্রেড থ্রি মাত্রার হওয়ায় পঞ্চম টেস্টে স্পেশালিষ্ট ব্যাটার হিসেবেও খেলা সম্ভব হবে না তার।
স্টোকসের অনুপস্থিতি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ডকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে দেবে। সিরিজে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট নিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার। ম্যানচেস্টারে গত দুই বছরে তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পাওয়ার পাশাপাশি শেষ দুটি টেস্টেই হয়েছেন ম্যাচ সেরাও। ফলে তাকে ছাড়া একাদশ সাজানো কঠিনই হবে স্বাগতিকদের জন্য।
ডসন বাদ পড়ায় স্টোকসের জায়গায় দলে আসা বেথেল হবেন দলের মূল স্পিনার। আর তার সঙ্গে স্পিন অপশন হিসেবে থাকছেন আরেক ব্যাটার জো রুট। আর পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন অভিজ্ঞ ক্রিস ওকস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেলেন মাইকেল ওয়েন। তরুণ এই ব্যাটার প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডে দলে। আগামী আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০ ওভারের সিরিজের দলে রাখা হয়েছে তাকে।
তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজে আরও একবার মূল অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ছাড়াই খেলবে অস্ট্রেলিয়া। তিনি ছাড়াও এই সিরিজে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরেক অভিজ্ঞ পেসার মিচেল স্টার্ককে। ফলে ওয়ানডে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করবেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ।
চলতি মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আগ্রাসী ব্যাটিং দিয়ে নজর কাড়েন ওয়েন। সিরিজে তিনি ১৯২.৩০ স্ট্রাইক রেটে করেন ১২৫ রান। এর মধ্যে রয়েছে রয়েছে এই ফরম্যাটে নিজের অভিষেক ম্যাচেই হাফ-সেঞ্চুরি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও যে তিনি তিনি কার্যকর হতে পারেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। গত মৌসুমে তাসমানিয়ার হয়ে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন মাত্র ৬৯ বলে ১৪৯ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস।
কামিন্স ও স্টার্ক না থাকলেও ক্যারিবিয়ানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম কাটিয়ে ওয়ানডে দলে ফিরেছেন দুই অভিজ্ঞ জশ হ্যাজলউড ও ট্রাভিস হেড। ২০ ওভারের সিরিজের দলেও আছেন তারা। আর সাইড স্ট্রেইনের চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে খেলতে না পারা ব্যাটার ম্যাট শর্টও ফিরেছেন দলে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়লেও ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মার্নাস লাবুশেন। টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়েছেন জেক ফ্রেজার-মার্কার্ক, অ্যারন হার্ডি, কুপার কনলি ও জেভিয়ার বার্টলেট। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকা দুই ক্রিকেটার স্টিভ স্মিথ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল অবসর নেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই নেই ওয়ানডের দলে।
অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি সিরিজের ম্যাচগুলো হবে যথাক্রমে আগামী ১০ ও ১২ ও ১৬ আগস্ট। ওয়ানডে সিরিজ চলবে ১৯ আগস্ট থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত।
প্রায় এক যুগ ধরে দেশে বা দেশের বাইরে যেখানেই অস্ট্রেলিয়া টেস্ট খেলুক না কেন, সেখানে অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। অথচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্টে সেই নাথান লায়নকে বাদ দিয়েই একাদশ সাজায় অস্ট্রেলিয়া। পেস সহায়ক উইকেটে বাড়তি পেসার নিয়ে খেলে অজিরা অবশ্য পায় বড় জয়ই। দলীয় দিক থেকে সিদ্ধান্তটি সমর্থন করলেও লায়নের হতাশা, এই কন্ডিশনে কেন নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পেলেন না তিনি।
ক্যারিবিয়ানের মাটিতে শেষ টেস্ট দিয়ে ২০১৩ সালের পর চোট সমস্যা ছাড়া প্রথমবার টেস্ট একাদশের বাইরে থাকেন লায়নকে। তবে এখানে বড় ভূমিকা ছিল তার ক্রিকেটীয় সামর্থ্য থেকে কন্ডিশনের চাহিদার দিকটি। তৃতীয় টেস্টটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল জ্যামাইকার সাবিনা পার্কে, যা ছিল আবার গোলাপি বলের ম্যাচ। আর তাই অস্ট্রেলিয়া অফ স্পিনার লায়নকে বসিয়ে চারজন পেসার নিয়ে খেলতে নামে।
সম্প্রতি মেলবোর্নে নিজের বিগ ব্যাশ লিগ দল মেলবোর্ন রেনেগেডসের এক কর্পোরেট অনুষ্ঠানে লায়ন জানান, বাস্তবতা মেনে নিলেও বাদ পড়াটা তাকে কষ্ট দিয়েছে।
“এটা তো লুকানোর কিছু নেই। আমি এই সিদ্ধান্তে বেশ হতাশ হয়েছিলাম। আমার যেটা মনে হয়, আমি বিশ্বের যেকোনো কন্ডিশনে অবদান রাখতে পারি, বলতে পারেন এটা আমার বিশ্বাস। আর মিচেল স্টার্কের সাথে মাঠে নামতে না পারাটাও আমার জন্য সত্যিই কষ্টদায়ক ছিল। আমি তার সাথে ৯০টির মতো টেস্ট খেলেছি। তার ১০০তম টেস্টে একসঙ্গে মাঠে নামতে পারলে সেটা দারুণ হত।”
গোলাপি বল আর পেস সহায়ক উইকেটে ওয়েস্ট ইন্দিজকে নাকানি-চুবানি খাইয়ে হারায় অস্ট্রেলিয়ার। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে আগুন ঝড়ান স্টার্ক, নিজের ১০০তম টেস্টে বাঁহাতি এই পেসার শিকার করেন ৫ উইকেট। আর লায়নের জায়গায় খেলা স্কট বোল্যান্ড দ্বিতীয় ম্যাচে উপহার দেন হ্যাটট্রিকও। টেস্টে ৫৬২ উইকেট পাওয়া একজন বোলারকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত তাই খুব বেশি আলোচনার জন্ম দেয়নি।
ব্যক্তিগতভাবে হতাশা থাকলেও তাই নির্বাচকদের সিদ্ধান্তের সাথে শতভাগ একমত লায়ন।
“নির্বাচকদের বাহবা দিতেই হবে। তারা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। তাদের যদি আমাকে কোনো ম্যাচে বাদ দিতেই হত, তাহলে সেটা স্কট বোল্যান্ডের মতো কাউকে খেলানোর জন্যই হওয়া উচিত। সে যেভাবে বল করেছে, হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছে, সেটা অসাধারণ ছিল। প্রতিপক্ষকে ২৭ রানে অলআউট হতে দেখাটাও চমৎকার ব্যাপার ছিল।”
৭ দিন আগে
১৪ দিন আগে
২৪ দিন আগে
২৫ দিন আগে
২৫ দিন আগে