“আমি টনির অনু্শীলন দেখতে পছন্দ করি। তার অনুশীলন সেশনে থাকতে আমার ভালো লাগে। সেটা একেবারেই ব্যতিক্রমী সেশন হয়। আমি এটার শুধু বলার জন্য বলছি না। এটাই সত্য। আমি তাকে কখনোই বল হারাতে দেখিনি। ঠিক আছে, হয়তো একবার। তবে তার কোনো খারাপ দিন যায় না।” রিয়াল মাদ্রিদের কোচ থাকা অবস্থায় কথাগুলো বলেছিলেন ফরাসি কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। ইতিহাসের সেরা মিডফিল্ডারদের একজনের কাছ থেকে এমন স্বীকৃতিই তো যথেষ্ট টনি ক্রুসকে চেনার জন্য। এরপর ফুটবলকেন্দ্রীক আলোচনায় যাওয়াটাই আসল বৃথা। তার চেয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ও জার্মানির এই তারকা মিডফিল্ডারকে বরং একটু দেখা যাক মাঠের জগতে ছাপিয়ে বাইরে থেকেই৷ যা তাকে করেছে সবার চেয়ে আলাদা, নাহ, একটু বেশিই আলাদা।
জনপ্রিয় একটা প্রবাদ আছে, ‘যার বিয়ে তার খবর নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই’। টনি ক্রুসকে নিয়েও যদি এটা বলা হয়, খুব কী ভুল হয়ে যাবে? গত মঙ্গলবার পুরো ফুটবল বিশ্বে হইচই ফেলে দিয়ে আচমকাই অবসরের ঘোষণা দিয়ে দেন তিনি। সেটাও খুব সাদামাটা একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে। ব্যস, এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদের ভক্তদের মাতম যেন আর থামবারই নয়। বিস্ময় নিয়ে আক্ষেপের সুরে তাকে নিয়ে নানা পোস্ট দিয়ে যাচ্ছেন সাবেক ও বর্তমান সতীর্থরা। জার্মান হলেও ১০ বছরের অধ্যায়ে রিয়ালে এমনই এক মায়ার বন্ধন গড়ে তুলেছেন নিপাট ভদ্রলোক ক্রুস, তাতে তার অবসর নিয়ে জার্মানির চেয়ে স্পেনে, বিশেষ করে রিয়ালের প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চ্যানেল, পেজ ও গ্রুপে শুধুই হাহাকার বয়ে যাচ্ছে কাল থেকে আজ অবধি। এমন একটা মুহূর্তে একজন খেলোয়াড় কী করতে পারেন?
আবেগ সামলে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা? চোখের কোনে জল নিয়ে তাকে নিয়ে সবার পোস্টগুলো দেখা? নাহ, ক্রুস তো আর দশজন ‘সাধারণ’ ফুটবলার নন। বলা যায়, সাধারণ মানুষই যে নন তিনি। অন্যরা যাই করুন না কেন, ওই ঘোষণার পর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ক্লিপসে ক্রুসকে তাই দেখা গেল রিয়ালের অনুশীলন মাঠে বসে বসে অরেঞ্জ জুস খেতে। সামনে অলস চাহনি দেখে মনে হতেই পারে, এই বুঝি সানডে লিগ খেলে এসেছেন এক তরুণ ফুটবলার। বিস্ময়ের শেষটা এখানে হলেও ভালোই ছিল। নিরাবেগ থেকে এরপর একে একে সবার পোস্টের রিপ্লাই দিচ্ছিলেন। এর মাঝেও করে বসেন এক টুইট, “আমি অন্তত ট্রেন্ডিংয়ে আছি তো?"
অবশ্য রিয়াল ও জার্মানির ভক্ত এবং ইউরোপিয়ান ফুটবল যারা নিবেদিতভাবে অনুসরণ করেন, তাদের কাছে ক্রুসের এই ধরণের কর্মকান্ড খুব একটা অবাক করার নয়। তিনি তো এমনই। তার বিয়ে (অবসর) নিয়ে চারদিকে হুলস্থুল, আর তিনি কিনা ব্যস্ত আছেন জুস খেতে আর ট্রেন্ডিংয়ে আসতে পারলেন কিনা, তা নিয়ে! এও সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব। ক্রুস যে সাধারণের মাঝেও অতি অসাধারণ এক মানব। কেবল তার পক্ষেই তো এমন কাণ্ড ঘটানো সম্ভব।
খেলোয়াড় হিসেবে ক্রুস কেমন, সেটার জন্য পরিসংখ্যানের ডালি সাজিয়ে বসতে হবে আপনাকে। ‘সাইড পাসার’, ‘ওল্ড স্কুল’ খেতাব পাওয়া ক্রুস যে আসলে আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডারদেরই একজন, সেই বিষয়ে বোধকরি তার নিন্দুকেরাও এখন আর কিছু বলেন না। আসলে, তাদের বোলার সুযোগই দেননি ‘জার্মান স্নাইপার’। একটি বিশ্বকাপ, চারটি চ্যাম্পিয়স লিগ (১ জুন যোগ হতে পারে আরও একটি), লা লিগা, বুন্দেসলিগা সহ আরও অনেক শিরোপা রয়েছে তার ঝুলিতে। আর বছরের পর বছর ধরে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে সর্বোচ্চ নিখুঁত পাস দেওয়ার মত ‘মামুলি’ কিছু তথ্য-উপাত্ত তো আছেই।
তবে ক্রুস সবার চেয়ে আলাদা ফুটবল ছাপিয়ে আরও অনেক কারণে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রিয়াল তো বটেই, সমসাময়িক ফুটবলারদের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে ‘সারকাস্টিক’ পোস্ট, কমেন্ট তিনিই করে থাকেন। জার্মান হলেও এসব ক্ষেত্রে ৩৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার একেবারেই বেমানান। অনেকেই বরং তার সাথে মিল পান ইংলিশদের। খেলা নিয়ে ক্রুসের চিন্তাভাবনাও অবশ্য অনেকটা তেমনই। এই যেমন, ফুটবলকে খুব বেশি সিরিয়াসলি না নেওয়া বা অবসরের বয়সের প্রসঙ্গ।
বরাবরই বলেছেন, ৩২ বছরের পরই নিজেকে ফুটবলে বেশিদিন চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তিনি দেখেন না। যতদিন খেলবেন, শীর্ষ ফর্মে খেলবেন, এরপর মধ্য ত্রিশে নেবেন অবসর। এরপর অফুরন্ত বেকার সময় কাটিয়ে পরিবার নিয়ে জীবন উপভোগ করার চেষ্টা। ঠিক এভাবেই জীবনটাকে দেখেন বলেই এমন অবিশ্বাস্য একটা মৌসুম কাটানোর পরই নিয়ে নিলেন অবসর। যেখানে তার প্রিয় বন্ধু লুকা মদ্রিচ ৩৮ বছর বয়সে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মাঠ। তবে অন্যরা যা ভাবেন, করেন, ক্রুস তো সেই পথ মাড়াবেন না।
২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালই যেমন। ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় এবং চাপের ম্যাচ তো এটিই। লিভারপুলের বিপক্ষে সেই ফাইনালের বিরতিতে দুই দল যায় গোলশূন্য সমতায়। সেই ম্যাচের পর একটি ভিডিও বেশ ছড়িয়ে পড়েছিল, যেখানে দেখা যায় ড্রেসিংরুপে হেয়ার কাট ঠিকঠাক করায় ব্যস্ত ক্রুস। প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতির ম্যাচেও তো খেলোয়াড়দের এতটা গাছাড়া ভাব দেখা যায় না। কিন্তু হায়, তিনি তো ক্রুস!
চার বছর পর আরেকটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল, প্রতিপক্ষ সেই লিভারপুল। টিকেট নিয়ে ঝামেলার কারণে ম্যাচ শুরু পিছিয়ে যায় ত্রিশ মিনিটের বেশি। ড্রেসিং রুমে এসে এই ব্যাপারটি খেলোয়াড়দের জানান রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। দলের সবাইকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে একজন বলে উঠলেন, “সমস্যা নেই, আমরা একটু দেরিতে চ্যাম্পিয়ন হব।” আন্দাজ করুন তো কে হতে পারেন সেই খেলোয়াড়টি!
মাঠের বাইরের মত মাঠেও ক্রুস বরাবরই নিরাবেগ এক চরিত্র। নিজে দারুণ একটি গোল করুন বা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা হোক, বিশ্বকাপ জয়ী এই মিডফিল্ডার কখনই বাধভাঙ্গা উল্লাসে মেতে ওঠেননি। তবে এই মৌসুমে বারবার তাকে দেখা গেছে বুনো উদযাপন করতে। যে দেখে বিস্ময় জেগেছে বেশ। এটা কি সেই চেনা ক্রুস? তিনি কেন অন্যদের মত এত আনন্দ উৎসব করছেন ‘সামান্য’ অর্জনে? হয়ত এই কারণেই যে, বেশ আগে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। ফলে পেশাদার ফুটবলে নিজের শেষ মৌসুমে হয়ত চেয়েছেন নিজেকে মুক্ত পাখির মত ছেড়ে দিতে।
ক্রুস আসলে ফুটবলের এমন এক শিল্পী, যাকে গোল, শিরোপা, ব্যালন ডি'অর এসব দিয়ে আপনি মাপতে পারবেন না। তুলির আঁচড়ে মাঝমাঠে নীরবে তিনি একে যান মায়াবী একেকটি শিল্পকর্ম, যা কোনো পরিসংখ্যানের মানদণ্ড দিয়ে বিচার করা যায় না। এমনকি অনেক সময় গোটা একটা ম্যাচ দেখার পরও আপনার প্রশ্ন জাগতেই পারে, ক্রুস আসলে করল টা কী? এই প্রশ্নটাই তার সতীর্থদের করলেই শুনবেন একেকটি রচনা। মাঠে তার প্রভাবটা তো এমনই। স্পটলাইট তিনি কখনও চাননি, কারণ ওসব বয়ে বেড়ানোর জন্য যেমন ব্যক্তিত্ব বয়ে বেড়াতে হয়, তিনি তিনি তেমন নন।
ক্রস তাহলে কেমন? উত্তরটা দেবে তার বুট। নাহ, চমকে যাবেন না। ক্রুসের বুটের যে আছে বিরল এক গল্প। এখন এমন একটি প্রজন্ম চলছে ফুটবলে, যেখানে খেলোয়াড়রা বিভিন্ন রঙ, ডিজাইন ও আকৃতির বুট বেছে নেয় বার্তা এবং নিজের ব্র্যান্ডের প্রচারণার জন্য।
সেখানে ক্রুস পরে আছেন সেই ‘মান্ধাতার আমলের’ বুট নিয়ে। নতুন নতুন ডিজাইন আসছে প্রতিনিয়ত, তবে ক্রুস এখনও খেলছেন এক যুগের বেশি পুরনো ‘এডিডাস এডিপিউর ১১প্রো বুট’ নিয়েই। পেশাদার ফুটবলারদের বুট সরবরাহের বিশেষজ্ঞ বেন ওয়ারেন দ্য অ্যাথলেটিককে একবার ক্রুসের বুটপ্রীতি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “সে এটা নিয়ে যা করে তা স্রেফ পাগলামি।”
এডিডাস অনেকবার চেষ্টা করেছে নতুন মডেল গছিয়ে দিতে। বাহারি ডিজাইন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কত টোপ দেওয়া হল, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ক্রুসের সাফ কথা, স্রেফ এই মডেলের বুট পরেই তিনি খেলবেন। ফলে হারিয়ে যাওয়া এই মডেলের বুট এখনও শুধুমাত্র তার জন্যই আলাদাভাবে তৈরি করে যাচ্ছে এডিডাস, যা এখন একটা ভিন্ন ট্রেন্ডই হয়ে গেছে। তার অবসরের সাথে সাথে এখানেও একটা যুগের অবসান হতে যাচ্ছে।
খেলোয়াড় হিসেবেও ক্রুসের বিদায়ে একটা যুগেরই তো অবসান হতে যাচ্ছে। ফুটবলে মিডফিল্ডারদের গুরুত্ব নিয়ে ক্রুস একবার বলেছিলেন, “মিডফিল্ডে আধিপত্য বিস্তার করা আধুনিক ফুটবলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সফল হতে হলে সব কিছুতেই ভালো হতে হবে।”
শেষের এই লাইনটাই যথেষ্ট ক্রুসকে তুলে ধরতে। তিনি সফল, কারণ তিনি তো সব কিছুতেই ভালো। আর কথায় আছে, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। যেভাবে সেরা ফর্মে থেকে অবসরে যাচ্ছেন, তাতে শেষটা তো সবদিক থেকেই ভালো ক্রুসের। রিয়াল মাদ্রিদে খেলে অবসরে যেতে পারাটা ক্লাব ফুটবলের অন্যতম কঠিন কাজ। অনেক কিংবদন্তিরাও তা পারেননি৷ ক্রুসের আগে কাজটা শেষ করতে পেরেছেন একজন, তিনি হলেন জিদান। ক্রুস নিজেকে কোন কাতারে নিয়ে গেছেন, সেটা বোঝার জন্য এটুকুই তো যথেষ্ট। আর স্বয়ং জিদানের চোখে ক্রুস কেমন ফুটবলার, তাতো আগেই জানলাম আমরা। তো আর বাকি রইলো কী? অবশ্যই ক্রুস-নামা, যা চলবে যুগ যুগ ধরে।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩:০৯ এম
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ পিএম
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই আলোচনায় ফুটবলারদের ঠাঁসা সূচি। এরই মধ্যে রদ্রি তো ধর্মঘটের ইঙ্গিতও দিয়েছেন। তার কথার সাথে আবার একাত্মতা প্রকাশ করেছে থিবো কোর্তোয়া। এসবের মাঝেই চমক জাগানিয়া খবরই দিলেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তার মতে, ম্যাচের সংখ্যা কমাতে রিয়াল ফুটবলাররা নিজেদের বেতনে কমাতেও নাকি প্রস্তুত।
গত মঙ্গলবার রাতে রিয়াল মাঠে নেমেছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচ খেলতে। দুই দিন বিরতি দিয়ে শনিবার তাদের আবার মাঠে নামতে হবে লা লিগায় এস্পানিয়লের সাথে। এমনিতেই চোটের হানায় মৌসুমে শুরু থেকেই জর্জারিত রিয়াল। তার মধ্যে এমন টানা খেলার সূচি বিপাকে ফেলছে ফুটবলারদের। বাড়ছে চোটের সংখ্যা।
যা থেকে বাঁচতে নতুন পথ বাতলে দিয়েছেন আনচেলত্তি। বেতন কমিয়ে ফুটবলারদের এমন খেলার ধকল কমানোর কথাই বলছেন ইতালিয়ান এই কোচ। “এই মৌসুমের সূচি বদলানো সম্ভব না, তবে ফুটবলাররা ভবিষ্যৎ বদলানোর কথা চিন্তা করছে। কম খেলার মূল কারণ হচ্ছে ফুটবলারদের চোটে পড়ার ঝুঁকি এড়ানো। ফুটবলাররা কম খেলতে নিজেদের বেতন কমাতেও সমস্যা নেই।”
এরপর অবশ্য আনচেলত্তি কথা বলেছেন দলের পারফরম্যান্স নিয়ে। চলতি মৌসুমে সাত ম্যাচ খেলে ফেললেও রিয়াল এখনো নিজেদের সেরা ফুটবলটা উপহার দিতে পারেনি। বিশেষ করে কিলিয়ান এমবাপে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগোর মতো আক্রমণভাগ নিয়েও অগোছালো ফুটবল খেলছে লসব্লাঙ্কোরা। যা নিয়ে কিছুটা সমালোচনাও শুনতে হচ্ছে রিয়াল কোচকে।
তবে সেটা নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না আনচেলত্তি, বরং তার ভাবনায় দলের উন্নতি। “আপনি কতটা সুন্দর ফুটবল খেলবেন তা নির্ভর করে আপনার দলে কেমন ধাচের ফুটবলার আছে। রক্ষণ আর আক্রমণভাগে ভালো করা মানেই সুন্দর ফুটবল। এটা শুধুই একটা ব্যাপারের ওপর নির্ভর করে না। এই নিয়ে একেকজনের একেকটা মত আছে। সুন্দর ফুটবল কোনটা ব্যাখ্যা করা কঠিন, তবে আমার দল রক্ষণে ভালো করুক আর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখুক সেটাই চাই।”
লা লিগায় এখন পর্যন্ত রিয়াল ম্যাচ খেলেছে পাঁচটি। তিন জয় আর দুই ড্র তে ১১ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে।
টানা খেলার ধকল নিয়ে দিন দুয়েক আগেই কড়া হুশিয়ারি দিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার রদ্রি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফুটবলাররা ধর্মঘাটের যাওয়ার কাছাকাছি আছে বলেও জানিয়েছিলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। এবার তার সাথে সুর মিলিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াও। এমন চলতে থাকলে খেলার মান কমবে বলেই ধারণা করছেন তিনি।
রিয়াল ও সিটি দুই দলই এবার খেলছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই চলতি মৌসুমে আয়োজন হচ্ছে নতুন ফরম্যাটে। তাতে বেড়েছে ম্যাচের সংখ্যা। ফিফাও আগামী বছর থেকে ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে। সেখানেও রিয়াল ও সিটি দু’দলই থাকছে। তার মধ্যে একের পর এক আন্তর্জাতিক ম্যাচের ধকল তো আছেই। সব মিলিয়ে ফুটবলারদের এখন মৌসুমে ৭০ এর বেশি ম্যাচ খেলতে হবে। যা ভীতিকর হিসেবেই দেখছেন কর্তোয়া।
সম্প্রতি জনপ্রিয় স্প্যানিশ স্ট্রিমার ইবাই ল্লানোসের সাথে কথা বলার সময় রদ্রির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন কোর্তোয়া। “রদ্রি ঠিক কথাই বলেছে। প্রচুর ম্যাচ খেলতে হচ্ছে। সমর্থকরা সেরা খেলাটাই দেখতে চায়। আমাদের ভারসাম্য খুঁজে বের করতে হবে, বেশি ম্যাচ খেলার কারণে চোটের সংখ্যাটাও বাড়ছে।”
ম্যাচ যত বেশি, ক্লাব বা আয়োজক, সবারই আয় তত বেশি। যা বুঝতে পারছেন কোর্তোয়া। বেলজিয়ান তারকার আশা একটু সঠিক সমাধানের। “নেশন্স লিগ, ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচ যুক্ত হয়েছে নতুন করে। মানুষ বলে আমরা অনেক আয় করি, তাই অভিযোগ করতে পারবো না, যেটা সত্য। তাই আমাদের ভারসাম্য খুঁজে নিতে হবে। কারণ এভাবে খেলোয়াড়দের পক্ষে সেরা ফুটবল খেলা সম্ভব নয়।”
এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরুর আগেই অতিরিক্ত ম্যাচ নিয়ে আলিসন বেকার, ম্যানুয়েল আকাঞ্জিরা সমালোচনা করেছিলেন। তাদের সাথে তাল মিলিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তিও। অবশ্য খেলোয়াড়রা এ নিয়ে অপত্তি তুললেও ফিফা কিংবা ইউয়েফা এখনও নীরব ভূমিকাতেই আছে।
আন্তর্জাতিক বিরতিতে ভুটানের সাথে চলতি মাসেই দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। উদ্দেশ্য ছিল ভুটানকে দুই ম্যাচে হারিয়ে নিজেদের র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করা। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টোটা। ভুটানের সাথে প্রথম ম্যাচ জয় পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচ হার দেখেছিল হাভিয়ের কাবরেরার দল। এতে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিংয়েও পড়েছে প্রভাব। দুই ধাপ পিছিয়ে ফিফার সেপ্টেম্বর মাসের র্যাঙ্কিংয়ে ১৮৪ থেকে ১৮৬ তে নেমে গেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের এমন উল্টোপথে যাত্রা হলেও খুব একটা নড়াচড়া নেই র্যাঙ্কিংয়ের সেরা দশে। যথারীতি সবার ওপরের এক নম্বর জায়গাটা পাকাপোক্ত রেখেছে আর্জেন্টিনা। তবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কলম্বিয়ার সাথে ম্যাচ হেরে যাওয়ার খেসারত আলবিসেলেস্তেদের দিতে হয়েছে পয়েন্ট হারিয়ে । ১৯০১ থেকে ১৮৮৯ তে নেমে এসেছে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট।
দুই নম্বর অবস্থান ফ্রান্সের, তিন ও চার নম্বরে আছে যথাক্রমে স্পেন ও ইংল্যান্ড। আর পাঁচ নম্বরে অবস্থান ব্রাজিলের। প্যারাগুয়ের সাথে হারায় র্যাঙ্কিংয়ে পেছনে না গেলেও ব্রাজিলকেও হারাতে হয়েছে পয়েন্ট। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল আছে ৮ নম্বরে।
সেপ্টেম্বর মাসের হালনাগাদে সবচেয়ে বড় লাফটা দিয়েছে ব্রুনেই। ১০ ধাপ এগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বর্তমান অবস্থান ১৮৩ তে। আর সবচেয়ে বেশি পিছিয়েছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতার। ১০ ধাপ পিছিয়ে কাতারের অবস্থান ৪৪ নম্বরে।
এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে সবার ওপরে আছে জাপান। দুই ধাপ এগিয়ে তাদের অবস্থান ১৬-তে।
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে