লেগানেসের বিপক্ষে কোপা দেল রের কোয়ার্টার ফাইনালের আগে চোটের যেন মিছিল রিয়াল মাদ্রিদ শিবিরে। দিনের শুরুতে ডেভিড আলাবা ছিটকে যাওয়ার পর কার্লো আনচেলত্তি দিয়েছেন আরও বড় দুঃসংবাদ। ভিন্ন ভিন্ন চোটে এই ম্যাচ খেলতে পারবেন না ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে ও মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম।
রিয়ালের জন্য এই দুজনের চোট বিশাল এক ধাক্কাই। কারণ, উভয়ই চলতি মৌসুমে আছেন দারুণ ছন্দে। ৩৩ ম্যাচে ২১ গোল করেছেন এমবাপে। আর ২১ বছর বয়সী বেলিংহাম ৩০ ম্যাচে জালের দেখা পেয়েছেন ১০ বার। আগে থেকেই মূল দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় মাঠের বাইরে থাকায় তাদের দুজনের না থাকাটা লেগানেসের বিপক্ষে সমস্যায় ফেলতে পারে রিয়ালকে।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি অবশ্য বলেছেন, এমবাপে বা বেলিংহামের চোট খুব গুরুতর নয়। “বেলিংহামের শেষ ম্যাচে আঘাত পেয়েছে, তাকে পাওয়া যাবে না। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে সেরে ওঠার জন্য অতিরিক্ত একটা দিন দেওয়া হয়েছে, তবে আগামীকালের জন্য সে প্রস্তুত থাকবে। এমবাপে আজকে অনুশীলনে অংশ নিয়েছে। তার পায়ে চোট রয়েছে। আজ স্বাভাবিকভাবে অনুশীলন করলেও আগামীকাল খেলার মত অবস্থায় নেই সে।”
এমবাপে ও বেলিংহামের চোটের ফলে লেগানেসের বিপক্ষে খর্বশক্তির দল নিয়েই মাঠে নামতে হবে রিয়ালকে। আলাবা বাম পায়ে অ্যাডাক্টর চোটের শিকার হয়েছে কমপক্ষে দুই থেকে তিন সপ্তাহের জন্য ছিটকে গেছেন।
আর আগে থেকেই চোটের লম্বা তালিকায় আছেন তিন ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার, দানি কারভাহাল, এদের মিলিতাও ও মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
১৩ মার্চ ২০২৫, ৭:৪৮ পিএম
১৩ মার্চ ২০২৫, ২:১৪ পিএম
শেষ দুই আন্তর্জাতিক বিরতিতে ফ্রান্স দলে ছিলেন না কিলিয়ান এমবাপে। প্রায় মাস ছয়েক পর আবারও ফরাসি অধিনায়ক ফিরেছেন স্কোয়াডে। এমবাপে ছাড়াও চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন তার ক্লাব সতীর্থ আরেলিয়েঁ চুয়ামেনি। নতুন মুখ পিএসজি স্ট্রাইকার দিজিরে দুয়ে।
এমবাপের ফ্রান্স দলে ফেরা নিয়ে ছিল নানা গুঞ্জন। ক্লাবের জার্সিতে নিয়মিত খেলে গেলেও শেষ দুই আন্তর্জাতিক বিরতিতে ছিলেন না ফ্রান্স দলে। গুঞ্জন উঠেছিল ক্লাবের জার্সিতে সাফল্য পেতে জাতীয় দলের জার্সিতে কেবল গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোই খেলতে চান তিনি। তবে দিন কয়েক আগেই ফ্রান্স কোচ দিদিয়ে দেশঁ জানিয়েছিলেন তেমন কিছুই না, চলতি আন্তর্জাতিক বিরতিতেই ফ্রান্স দলে ফিরবেন এমবাপে।
আরও পড়ুন
শেষ আটে রিয়ালের প্রতিপক্ষ আর্সেনাল, বার্সেলোনা খেলবে কার বিপক্ষে? |
![]() |
যেই কথা সেই কাজ। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দুই লেগের জন্যই এমবাপেকে রাখা হয়েছে স্কোয়াডে।
এমবাপে ছাড়া রিয়াল থেকে ডাক পড়েছে দুই মিডফিল্ডার চুয়ামেনি ও কামাভিঙ্গার। এছাড়া পিএসজিতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ওসমান দেম্বেলেকেও দেখা যাবে আক্রমণভাগে এমবাপের সঙ্গে জুটি বাঁধতে। দারুণ ছন্দে থাকার পুরস্কার হিসেবে প্রথমবারের মতো স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন তরুণ স্ট্রাইকার দিজিরে দুয়ে।
২১ মার্চ নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগ গড়াবে ক্রোয়াশিয়ার মাঠে। ২৪ তারিখ দ্বিতীয় লিগ ফ্রান্স খেলবে নিজেদের ঘরের মাঠে।
বেনফিকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা। প্রথম লেগে দশ জনের দল নিয়েও জয় পেয়েছিল হান্সি ফ্লিকের বার্সা। কঠিন কাজটা মাঠে করে দেখানোর পুরস্কারও অবশ্য পেয়েছিল তারা। প্রথম লেগ শেষ হওয়ার বেশ লম্বা সময় পরই কাতালান রেডিও জানিয়েছে সে ম্যাচ শেষে দল থেকে মিলেছিল যা খুশি তা খাবার সুযোগ। যেখানে ফুটবলাররা বেছে নিয়েছে বার্গারকে। যার দাম আবার চোখ কপালে তোলার মতই।
সাধারণত ম্যাচ ডে-তে ফুটবলারদের থাকে আলাদা রুটিন। তবে বেনফিকাকে দশ জনের দল নিয়ে হারিয়ে সেই রুটিন ভাঙার সুযোগ দেন বার্সা নিউট্রেশনিস্ট। কাতালুনিয়ান রেডিওর তথ্য মতে, ‘সেদিন বার্সা পুষ্টিবিদ ফুটবলারদের যা খুশি তা খাওয়ার সুযোগ দেন।”
আরও পড়ুন
আলভারেজের ‘ডাবল টাচ’ রেফারির নজরে এনেছেন কোর্তোয়া |
![]() |
আর ফুটবলারদের সেখানে নাকি প্রথম পছন্দ ছিল বার্গার। রাফিনিয়া-ইয়ামালরা নাকি লিসবনের বিখ্যাত হ্যামবার্গার অর্ডার করেছিলেন। যার দামই ৭০০ ইউরো। বাংলা টাকায় ৯২ হাজার টাকারও বেশি।
প্রথম লেগের পর দ্বিতীয় লেগেও জয় পেয়েছে বার্সা। ব্যবধানটা ৩-১। জোড়া গোল করেছিলেন রাফিনিয়া আর একটা গোল করেছেন লামিন ইয়ামাল। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলে কাতালান ক্লাবটা নিশ্চিত করে শেষ আট।
দ্বিতীয় লেগ শেষে বার্সা পাচ্ছে পাঁচ দিনের বিশ্রামও। দলের নজর কাড়া পারফরম্যান্সে কোচ হান্সি ফ্লিক ফুটবলারদের সেই সুযোগটাও করে দিয়েছেন।
“কেউ কিছু দেখেছেন? হাত তুলুন যদি আপনি আলভারেজকে দুই বার বলে পা ছোঁয়াতে দেখে থাকেন।” ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের ঠিক এইভাবেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন আতলেতিকো মাদ্রিদ কোচ দিয়েগো সিমিওনে। সাংবাদিকরা অবশ্য তার উত্তরটা না দিতে পারলেও রিয়াল মাদ্রিদ গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া দিয়েছেন ঠিকই। জানিয়েছেন তিনি প্রথম দেখেছেন আলভারেজকে ‘ডাবল টাচ’ নিতে।
আলভারেজ শট নিতে গিয়ে কিছুটা পা পিছলে গিয়েছিলেন। যা রেফারির নজরে খুব একটা আসেনি। তবে গোলপোস্টে থাকা কোর্তোয়ার চোখ এড়ায়নি। আলভারেজ দুইবার বলে পা লাগিয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত না হলেও খটকা জাগে কোর্তোয়ার মনে। যা তিনি দেরি না করেই জানান রেফারিকে। এরপর ভিএআর তো কোর্তোয়ার খটকা দূর করে রায় দিয়েছে তার পক্ষেই।
আরও পড়ুন
শেষ আটে রিয়ালের প্রতিপক্ষ আর্সেনাল, বার্সেলোনা খেলবে কার বিপক্ষে? |
![]() |
ম্যাচ শেষে এই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। আচমকা ভিএআরের এমন পেনাল্টি চেকের শুরুটা কীভাবে তা নিয়েও উঠেছে কথা। যার জবাব দিয়েছেন রিয়াল গোলকিপার। জানিয়েছেন তিনি মূলত এই ব্যাপারে জানিয়েছেন রেফারিকে,
“আমার মনে হয়েছে সে দুইবার বলে পা ছুঁইয়েছে। তাই আমি গিয়ে রেফারিকে জানাই। যদিও দূর থেকে এমন দেখাটা মোটেও সহজ কাজ না। সত্যি বলতে তাদের কপালটা খারাপ।”
এই পেনাল্টিই মূলত গড়ে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। যদিও লুকাস ভাসকেজ মিস করে সুযোগটা এনে দিয়েছিল তাদের সামনে। তবে সেটা কাজে লাগাতে পারেনি তারা মার্কোস ইউরেন্তের মিসে। তাতে আরও একবার রিয়ালের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগে হৃদয় ভাঙলো আতলেতিকোর।
শেষ হয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর হিসেব-নিকেশ। আতলেতিকো মাদ্রিদকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শেষ দল হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। তাতে প্রতিপক্ষ হিসেবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা পেয়েছে আর্সেনালকে। যারা দুই লেগ মিলিয়ে ডাচ ক্লাব পিএসভিকে উড়িয়ে দিয়েছে ৯-৩ গোলের ব্যবধানে।
উনাই এমরির অ্যাস্টন ভিলা ক্লাব ব্রুজকে দুই লেগ মিলিয়ে হারিয়েছে ৬-১ গোলে। তাদের প্রতিপক্ষ পিএসজি। যারা আবার টাইব্রেকারে বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়েছিল ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের।
বেনফিকাকে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ গোলে হারিয়ে বার্সেলোনা সবার আগে কেটেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট। তাদের প্রতিপক্ষ গেলবারের রানার্সআপ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। জার্মান ক্লাবটা দুই লেগ মিলিয়ে ফরাসি ক্লাব লিঁলকে হারিয়েছে ৩-২ গোলে।
আরও পড়ুন
শেষ আটে রিয়ালের প্রতিপক্ষ আর্সেনাল, বার্সেলোনা খেলবে কার বিপক্ষে? |
![]() |
অন্যদিকে জার্মান ডার্বিতে লেভারকুসেনকে পাত্তাই দেয়নি বায়ার্ন মিউনিখ। দুই লেগ মিলিয়ে তারা জয় পেয়েছে ৫-০ গোলে। আর প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ইন্তার মিলানকে। সিমন ইনজাগির দল দুই লেগ মিলিয়ে ফেইনুর্দকে ২-১ গোলে হারিয়ে পা রেখেছে কোয়ার্টার ফাইনালে।
চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল:
পিএসজি- অ্যাস্টন ভিল
রিয়াল মাদ্রিদ- আর্সেনাল
ইন্তার মিলান- বায়ার্ন মিউনিখ
বরুসিয়া ডর্টমুন্ড- বার্সেলোনা
বুলেট গতির শটে হুলিয়ান আলভারেজ বোকা বানিয়েছিলেন থিবো কোর্তোয়াকে। টাইব্রেকারে সমতায় ফেরে দুই দল। ফেদেরিকো ভালভের্দে তিন নম্বর শটটা নিতে প্রবেশ করেন বক্সে। তখনই রেফারি ইশারা করেন ভালভের্দেকে অপেক্ষা করতে। যদিও টিভি সেটে সমর্থকদের মনে তখন ধোঁয়াশা কী চেক করছে ভিএআর। যার জবাব মিলেছে এক মিনিট বাদেই। বাতিল করা হয় আলভারেজের গোল।
যার কারণ অবশ্য চোখ কপালে তোলার মতই। আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার শটটা নিয়েছে ডান পায়ে, তবে শট নেওয়ার সময় তার বাঁ পায়ের ছোঁয়া লাগে বলে। যা নজরে পড়ে ভিএআরের। নিয়ম অনুযায়ী ‘ডাবল টাচের’ কারণে রেফারি বাতিল করেন আলভারেজের সেই গোল।
আরও পড়ুন
আলভারেজের ‘ডাবল টাচ’ রেফারির নজরে এনেছেন কোর্তোয়া |
![]() |
এরপর অবশ্য লুকাস ভাসকেজের মিসে আবারও সমতায় ফেরে আতলেতিকো। তবে মার্কোস লরেন্তে মিস করে রিয়ালকে এনে দেয় সুযোগ। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি আন্টোনিও রুডিগার। আরও একবার পেনাল্টি থেকে গোল করে রিয়ালকে জয় এনে দেন জার্মান ডিফেন্ডার। গেল মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের টাইব্রেকারে রুডিগারের গোলেই জয় পায় কার্লো আনচেলত্তির দল।
প্রথম লেগে রিয়ালের কাছে ২-১ গোলে হার দেখে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগে ম্যাচে ফিরতে তারা সময় নেয় ২৮ সেকেন্ড। কনর গ্যালাগারের গোলে সমতায় ফেরে তারা। এরপর অবশ্য ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের পেনাল্টি মিসে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও কোনো দল করতে পারেনি গোল। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে রিয়াল।