বিশ্বকাপের ইতিহাসে সফলতম দল অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ফাইনালে দলটির ব্যাটাররা খেলেছেন দারুণ কিছু ইনিংস। তার মধ্যে ভারত বিশ্বকাপের আগে ফাইনালে সেঞ্চুরি ছিল কেবল দুই অজি কিংবদন্তি রিকি পন্টিং ও এডাম গিলক্রিস্টের। ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে দুর্দান্ত এক শতকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি এলিট সেই ক্লাবে এবার নাম লিখিয়েছেন ট্রাভিস হেডও। এমন কীর্তির পর নিজেকে নিয়ে ভীষণ গর্ব হচ্ছে এই বাঁহাতি ব্যাটারের।
আরও পড়ুনঃ হেড বীরত্বে ভারতকে ‘চুপ করিয়ে’ অজিদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়
চোটের কারণে বিশ্বকাপের প্রথম কয়েকটি ম্যাচ মিস করেন হেড। এরপর নিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নেমেই করেন সেঞ্চুরি। শুরুর পর আসরের শেষটাও রাঙিয়েছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে। তার ১২০ বলে ১৩৭ রানের ইনিংস ভর করেই ভারতের দেওয়া ২৪১ রানের টার্গেট ৬ উইকেট হারিয়েই ছুঁয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।
অমন একটি ইনিংসের জন্য ম্যাচ সেরার খেতাবও জিতেছেন হেড। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তুলে ধরলেন নিজের উচ্ছ্বাস। “এমন কিছু কখনই আশা করিনি, এক মিলিয়ন বছরেও নয়, সত্যিই একটা অসাধারণ দিন। অবশ্যই এই তালিকায় (বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় সেঞ্চুরিয়ান) তৃতীয় হয়েছি, এখানে নাম লেখানোটা দারুণ ব্যাপার। এখানে থাকতে পেরে এবং অবদান রাখতে পেরে ভালো লাগছে।”
আরও পড়ুনঃ কোহলি,রোহিতদের সমর্থন দিতে গ্যালারিতে তারকাদের মেলা
ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আগে অসাধারণ এক ডাইভিং ক্যাচে উড়তে থাকা রোহিত শর্মাকে ফেরান হেড। এর আগে মাত্র ৩১ বলে ৪৭ রান করে ফেলেছিলেন ভারত অধিনায়ক। সেই ক্যাচ এবং পরে ৪৭ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর ম্যাচ জেতানো একটি ইনিংস খেলা, সবটাই যেন স্বপ্নময় মনে হচ্ছে হেডের কাছে।
“সে (রোহিত শর্মা) সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে দুর্ভাগা ব্যক্তি। আমি সেঞ্চুরি করার কথা কল্পনাও করতে পারিনি, সম্ভবত (রোহিতের) ক্যাচটা ধরে রাখার ব্যাপারটা ভাবতেও পারিনি। দলের জন্য অবদান রাখতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। আমি প্রথম যে বিশটি বল খেলেছি, সেটাই আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে এবং হ্যাঁ আমি সে ছন্দটা ধরে রাখতে পেরেছি।”
আরও পড়ুনঃ এবার পাকিস্তানের বোলিং কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন মরনে মরকেল
অস্ট্রেলিয়া শুরুতেই ৩ উইকেট হারানোর পর শুরুটা আগ্রাসী করলেও কিছুটা খোলসবন্দী হয়ে যান হেড। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় শটে চাপ আলগা করে নেন। শেষ পর্যন্ত দুই দলের মাঝে পার্থক্য হয়ে যায় তার ওই ইনিংসই। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে হেড গড়েন ১৯২ রানের জুটি, যা ৪২ বল বাকি থাকতেই নিশ্চিত করে দেয় অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জয়।
No posts available.
ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের কোনটি বেশি প্রিয় বাংলাদেশের? এমন প্রশ্নের সমর্থকদের প্রায় সবাই বলবেন- ওয়ানডে ফরম্যাট। ৫০ ওভারের ক্রিকেটটা বাংলাদেশ খুব ভালোভাবেই রপ্ত করা। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশকে সমীহ করত যে কোনো প্রতিপক্ষ। কিন্তু সেই ‘প্রিয়’ সংস্করণেই খেই হারিয়েছে তারা। যেন জিততে ভুলে গেছে একদিনের ম্যাচ।
রাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানদের কাছে ৫ উইকেটের হার। আবুধাবিতে আজ হারলেই সিরিজ হাতছাড়া হয়ে যাবে মেহেদী হাসান মিরাজদের।
ম্যাচের আগে ভাবাচ্ছে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। গত এক বছরে ১২ টি ওয়ানডে খেলেছেন মিরাজ-লিটনরা দাসরা। তার মধ্যে জয় কেবল দুটিতে। যার একটি ছিলো গত বছর শারজায় এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই।
আরও পড়ুন
অধিনায়কত্ব করলেই চ্যাম্পিয়ন, যা বললেন আকবর |
![]() |
গত নভেম্বর-ডিসেম্বর হওয়া দুটি সিরিজে হেরেছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারের আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ পরাজয় ২-১ ব্যাবধানে।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে হওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দুটি ম্যাচ খেলে একটিতেও জেতেনি বাংলাদেশ। জুলাইয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে চলতি বছর ওয়ানডেতে প্রথম জয় পায় তারা। তবে সিরিজ হারতে হয়েছিল ২-১ ব্যবধানে।
এমন হতাশাজনক পারফরম্যান্সের জন্য অনেকাংশেই দায়ী ব্যাটিং পারফরম্যান্স। চলতি বছর খেলা ৬টি ওয়ানডের একটিতেও বাংলাদেশ পেরুতে পারেনি আড়াইশোর ঘর। সব মিলিয়ে গত একবছরে ১২ ম্যাচে আড়াইশ’ পেরোয় মাত্র তিনবার। গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে আড়াইশ’ পেরোয় দুইবার; আর নভেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে একবার। এর মধ্যে উইন্ডিজের বিপক্ষে দলীয় স্কোর একবার তিনশ’ পেরোয়।
চলতি ওয়ানডে সিরিজের আগেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়ন্টি সিরিজে সবকটি ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। তবে সাদা বলের লঙার ভার্সনে এসেই টাইগারদের হার দেখতে হয়েছে প্রথম ম্যাচে। আবুধাবিতে ২২১ রানেই অলআউট হয়ে যায় ফিল সিমন্সের দল। সে ম্যাচে পাঁচ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় আফগানরা। সিরিজ বাঁচাতে এই ম্যাচে তাই জিততে হবে বাংলাদেশকে; যার দায়িত্ব নিতে হবে ব্যাটারদেরকেই।
১১ অক্টোবর ২০২৫, ৩:২১ পিএম
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে তার নাম ‘আকবর দ্য গ্রেট’, কেউ কেউ আবার তাকে ডাকেন ‘আকবর দ্য চ্যাম্পিয়ন’ নামে। এর পেছনে কারণ আছে যথেষ্টই। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে আকবর আলির অধিনায়কত্ব মানেই যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা।
তবে আকবর নিজে এমন কিছু মানতে চান না। এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালের আগে তরুণ এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার বললেন, অত সহজে জেতেননি কোনো শিরোপা। তাই একই এপ্রোচ নিয়ে আরেকটি ফাইনালে নামবে তার দল।
বাংলাদেশকে ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতিয়ে অধিনায়ক হিসেবে আকবরের উত্থান। এরপর ২০২২ সালে জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণে রংপুরের শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি। তার অধিনায়কত্ব ২০২৩ সালে বিসিএলের ওয়ানডে সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয় নর্থ জোন।
আরও পড়ুন
খুলনাকে ট্রফি উপহার দিতে চান মিঠুন-সৌম্যরা |
![]() |
এমনকি গত বছর এনসিএল টি-টোয়েন্টির প্রথম আসরেও অধিনায়কত্ব করে রংপুরকে শিরোপা জেতান আকবর। এবার তার সামনে শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এনসিএলের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে রোববার বিকেলে খুলনার মুখোমুখি হবে রংপুর। ম্যাচের আগের দিন দুই অধিনায়কের ট্রফি নিয়ে ফটোসেশনের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন আকবর ও মোহাম্মদ মিঠুন।
অনেক প্রশ্নের মাঝে আকবরের কাছে জানতে চাওয়া হয়, অধিনায়কত্ব করলেই চ্যাম্পিয়ন হন আকবর, এই বিষয়টি কীভাবে দেখেন তিনি। উত্তরে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আরেকটি ফাইনাল খেলার কথা বলেন রংপুর অধিনায়ক।
“আমি এরকম কিছু (আকবর অধিনায়কত্ব করলে চ্যাম্পিয়ন) বলব না। যেভাবে যাচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ ভালো। এটা বলার জন্য বলতে গেলে বা শুনতে গেলে ভালো লাগে (হাসি)। তবে ব্যাপারটা এত সহজও না।”
“গ্রুপ পর্বের ম্যাচ আমরা যেমন পরিকল্পনা নিয়ে খেলেছি, একই এপ্রোচ নিয়ে আসব। অবশ্যই উইনিং মেন্টালিটি নিয়ে মাঠে নামব।”
গ্রুপ পর্ব শেষে নেট রান রেটের হিসেবে চতুর্থ হয়ে কোনোমতে প্লে-অফের টিকেট পায় রংপুর। এরপর অবশ্য স্বরুপে তারা। এলিমিনেটর ম্যাচে ঢাকা ও পরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারকে টেবিল টপার চট্টগ্রামকে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট পেয়েছে আকবরের দল।
এই মোমেন্টাম ধরে রেখে ফাইনালেও বাজিমাত করতে চান আকবর।
“যখন একটা টুর্নামেন্ট শুরু করবেন, আল্টিমেট লক্ষ্য তো থাকবে অবশ্যই চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই করা। একইসময়ে আমার মনে হয়, এটা একটু কঠিনও। তাই প্রতিটি ম্যাচ ধরে ধরে এগোনো ভালো।”
আরও পড়ুন
১০০ রানে হারের ব্যাখ্যায় অনভিজ্ঞতাকেই দুষলেন জ্যোতি |
![]() |
“আমাদেরও প্রথম লক্ষ্য ছিল, গ্রুপের যে ম্যাচগুলো ছিল, আমরা যেন সেরা দুইয়ে থেকে শেষ করতে পারি। সেটা হয়নি। তবে আমরা সঠিক সময়ে মোমেন্টাম পেয়েছি। যেটা কাজে লাগছে। একই চেষ্টা থাকবে। জাস্ট নরমাল ম্যাচের মতো পরিকল্পনা করা ও কাজে লাগানো।”
ফাইনালের তাৎপর্য একটু ভিন্ন হলেও অন্য স্বাভাবিক ম্যাচের মতো ধরেই খেলতে চান রংপুর অধিনায়ক।
“ইনশাআল্লাহ্ আমরা চেষ্টা করব। মাঠে যখন নামব, তখন অবশ্যই চেষ্টা থাকবে জেতার। ফাইনাল ম্যাচ যদিও, তবু আমি বলব এটা ৮-১০টা ম্যাচের মতোই। এটার সিগনিফিকেন্সটা হয়তো একটু বেশি। আমরা যেমন গেম প্ল্যান নিয়ে নামি, তেমন পরিকল্পনা নিয়েই নামব। চেষ্টা থাকবে ম্যাচ জেতার।”
১১ অক্টোবর ২০২৫, ২:৩৩ পিএম
ঘরোয়া ক্রিকেটে খুলনার একসময়ের দাপট এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। বেশ কয়েক বছর ধরেই জাতীয় ক্রিকেট লিগের চার দিনের সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হতে পারছে না তারা। তবে এবার সুযোগ এসেছে এনসিএল টি-টোয়েন্টির শিরোপা জেতার।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুরকে হারিয়ে খুলনাকে এনসিএলের ট্রফি উপহার দিতে চান অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেছেন জাতীয় দলের সাবেক এই ব্যাটার।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার বিকেল ৫টায় হবে এনসিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনাল। যেখানে আকবর আলির রংপুরের মোকাবিলা করবে মিঠুনের খুলনা। ম্যাচের আগের দিন ট্রফি নিয়ে ফটোশুট করেন দুই অধিনায়ক।
পরে সংবাদ সম্মেলনে শিরোপা জেতার প্রত্যয় জানান তিনি।
“সত্যি বলতে, রংপুর গত কিছু ম্যাচে খুব ভালো ক্রিকেট খেলছে। ওরা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। অবশ্যই ওরা খুব ভালো দল। ওদের প্রতি অবশ্যই সেই সম্মান থাকবে।”
“একইসঙ্গে আমরাও খুব ভালো খেলছি। দলটা বেশ অভিজ্ঞ। খুব ভারসাম্যপূর্ণ দল। আমরা আশাবাদী। অনেক লম্বা সময় খুলনায় ট্রফি যায়নি। তাই আমরা ক্রিকেটাররা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম যে, এই ট্রফিটা আমরা নিতে চাই। অবশ্যই এটা নতুন ম্যাচ। আমাদের চেষ্টা থাকবে সেরাটা দেওয়ার।”
সবশেষ বিপিএলে চিটাগং কিংসের অধিনায়ক ছিলেন মিঠুন। তার নেতৃত্বে রানার্স-আপ হয় দীর্ঘ দিন পর বিপিএলে ফেরা ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। মিঠুন জানালেন, তার দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে প্রথম দিন থেকেই শিরোপা জেতার প্রেরণা কাজ করছে।
“গত বিপিএলে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফল পেয়েছি। আগামীকাল অবশ্যই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে... প্রথম দিন থেকেই আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে মোটিভ কাজ করছে যে, এই বছরের ট্রফি আমরা চাই। তো আমরা খুলনাকে এই ট্রফি উপহার দিতে চাই।”
এনসিএলে এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সেরা পাঁচে নেই খুলনার কেউ। আর উইকেট শিকারিদের মধ্যে সেরা পাঁচে আছেন শুধু শেখ পারভেজ রহমান জীবন, ৬ ইনিংসে ১০ উইকেট নিয়ে চার নম্বরে।
মিঠুনের মতে, একক পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর না করে দলীয়ভাবে খেলাই তার দলের শক্তি।
“আমাদের দল যদি দেখেন, কারও একার পারফরম্যান্সে এখানে আসিনি। পুরো দলের পারফরম্যান্সে এখানে এসেছে। সর্বোচ্চ রান বা উইকেটের যদি হিসেব করেন, আমাদের দলের একটাও নেই। তবে আমাদের দলে যখন যেখানে যাকে দরকার, সে অবদান রাখছে।”
“এটাই আমাদের মূল শক্তি। আমরা এক-দুজনের ওপর নির্ভরশীল নই। পুরো স্কোয়াডের ওপর আমাদের ভরসা আছে। জানি না, কালকের ম্যাচে কে ম্যাচ উইনিং নক খেলবে। যার ব্যাট থেকেই আসবে, আমরা খুশি।”
১১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৪ পিএম
পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ জয়, নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা। তার পরের গল্পটা আর এমন হয়নি। পরপর দুই ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই জমিয়ে তুললেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি টাইগ্রেসরা। শুক্রবার রাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পরাজয়ের ব্যবধান ১০০ রানে। এই হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেছেন তার দল অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে।
অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে না থাকলে অথবা ভাগ্যও কিছুটা সহায় হলে চলমান বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নামের পাশে দুটি জয় লেখা থাকতেই পারত। কেননা একশ রানের আশেপাসে ইংলিশ মেয়েদের ৬ উইকেট ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তারপরও ম্যাচটা ৪ উইকেট হাতে রেখেই জেতে ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন
সাকিব বিশ্বে একজন, মনে করেন তানজিম |
![]() |
শুক্রবার রাতেও নিউজিল্যান্ডকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। ১১ ওভারে ৩৪ রানের মধ্যেই কিউই মেয়েদের ৩ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে কিউইরা স্কোরবোর্ডে জমা করে ২২২ রান। যদিও লক্ষ্যটা খুব বেশি বড় ছিল না। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় লড়াইটুকু জমাতে পারেনি জ্যোতির দল।
ম্যাচ শেষের প্রেজেন্টেশনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা আগের ম্যাচে (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে) ভালো কিছু করেছিলাম। একই কাজ এই ম্যাচেও করতে চেয়েছি। তবে ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা ধারাবাহিক নই। ২০০ রানের বেশি তাড়া করতে হলে অবশ্যই টপ অর্ডারদের ভালো করতে হবে। তা না হলে লক্ষ্যে পৌঁছানো কঠিন।’
টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটারের কেউ-ই ব্যক্তিগত রান দুই অঙ্কের কোটায় নিতে পারেননি। ছয়ে নামা ফাহিমা খাতুনের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৩৪ রান। ৪০ ওভারের আগে ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় বাঘিনীরা।
অভিজ্ঞতার ঘাটতির কথা উল্লেখ করে জ্যোতি বলেন, ‘আইসিসি ইভেন্টে আমাদের সেরা পারফর্ম করতে হবে। অন্যথায় তাদের (বড় দল) বিপক্ষে আমরা লড়তে পারব না। আমাদের অভিজ্ঞতারও কমতি আছে।’
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ পরের ম্যাচটি খেলবে সোমবার, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। তার আগে ভুল শুধরে জয়ে ফিরতে চায় বাংলাদেশ। তিন খেলায় দুই পরাজয় এবং এক জয়ে দুই পয়েন্ট পেয়ে তালিকার ছয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের নীচে আছে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মেয়েরা। টেবিলের শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে একাই হারিয়ে দেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই! বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়া এই পেসার ব্যাট হাতেও ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ৪০ রানের বেশ ইফেক্টিভ ইনিংস খেলেছেন সেদিন। দলকে চাপমুক্ত রাখার পাশাপাশি জিতে নিয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
ঠিক এই জায়গায় অর্থাৎ অলরাউন্ডার নৈপুণ্য দেখিয়ে দেশের কঠিন সব ম্যাচ অনুকূলে নিয়ে আসতেন সাকিব আল হাসান। দেশ সেরা অলরাউন্ডারের অনুপস্থিতিতে এই জায়গায় বিশাল একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে। শূন্যস্থান পূরণে টিম ম্যানেজম্যান্ট থেকে কোনো আশু পরিকল্পনা আছে কিনা, দ্বিতীয় ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে আজ এমনই প্রশ্নের মুখে পড়েন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
সাকিব বলেছেন,
‘সাকিব ভাই বিশ্বে একজন। উনি টিমে থাকা মানে একজন বোলার নিয়ে টেনশন করতে হয় না, একজন ব্যাটার নিয়েও টেনশন করতে হয় না।’
তিনি আরও বলেছেন,
‘সাকিব ভাইয়ের মতো একজন অলরাউন্ডার পাওয়া দুষ্কর। বাংলাদেশে উনার ব্যাক আপ তৈরি করা কঠিন। এই স্থান পূরণে যথাসম্ভব চেষ্টা আমরা করবো। যারা বোলার আছেন, ব্যাটার আছেন তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাহলে এই অভাটা পূরণ করতে পারবো।’
এ সময় সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সাকিব। প্রথম ম্যাচে বল হাত ৩ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ১৭ রান করা ২২ বর্ষী এই পেসার বলেছেন,
‘জয় ছাড়া আমাদের আর কোনো অপশন নেই। দ্বিতীয় ম্যাচে ১০০ পার্সেন্ট নিয়ে নামতে হবে। আগের ম্যাচে যে ভুল করেছি, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি, কিভাবে ভুল শুধরে খেলা যায়। এই ম্যাচ না জিততে পারলে সিরিজ থেকে বাদ পড়ে যাব আমরা।’