
একটা সিরিজের আগে নির্দিষ্ট ব্যাটারকে টার্গেট করে শিকার করার ব্যাপারটিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ার পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রাথ। সেই ধারা এখনও চলছে কমবেশি। বাংলাদেশ পেসার শরিফুল ইসলামের কাছে যেমন পরম আরাধ্য ছিল বাবর আজমের উইকেট। পাকিস্তানের সাথে টেস্ট সিরিজে দেখে পেয়েছেন সেই স্বপ্নের উইকেটের। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে বিরাট কোহলির মাপের ব্যাটার থাকলেও বাঁহাতি পেসার বলেছেন, তার কাছে প্রতিটি উইকেটই পাবে সমান গুরুত্ব।
আরও পড়ুন: ৫ বলেই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতল সিঙ্গাপুর!
ব্যাটসম্যানশিপের মানদণ্ড বিচারে বাবরের চেয়ে বেশ এগিয়েই আছেন কোহলি। তবে সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার বাবরও তো কম যান না। এই কারণেই পাকিস্তান দলে তার উইকেটই এখনও সবচেয়ে বড় উইকেট। আগেই শরিফুল বলেছিলেন, ডানহাতি এই ব্যাটারকে আউট করার স্বপ্ন আছে তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই সেই স্বাদ পেয়েছেন তিনি। এই মাসেই ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তার সামনে থাকবেন কোহলি, যার উইকেট অনেক বড় বড় বোলারের কাছেই আরাধ্যের বিষয়।
তবে টি-স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শরিফুল বললেন ভিন্ন কিছু। “ড্রিম উইকেট বলতে প্রতিটা উইকেটই এখন চিন্তা করি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সে (বিরাট কোহলি) ভালো ব্যাটার, আমাদের কোয়ালিটি বোলার আছে। সেদিক থেকে চেষ্টা করব আমরা যেন একটু এগিয়ে থাকি। যদি সুযোগ থাকে, চেষ্টা করব তার উইকেট নেওয়ার।”

শরিফুলের বাংলাদেশ জাতীয় দলের সময়টা এখনও খুব বড় নয়। তবে এর মধ্যেই বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা কয়েকটি জয়ের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তরুণ এই পেসার সেসব জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদানও। পাকিস্তানের সাথে প্রথম টেস্ট ছাড়াও যেখানে রয়েছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ও।
এই বড় বড় জয়ের অংশ হওয়ার অনুভূতিতে কেমন শরিফুলের কাছে? “অভ্যাস কিনা জানিনা, তবে ভালো লাগে বড় বড় জয়ের অংশ হতে পেরে। কারণ সবাই চায় বড় দলের সাথে জয়ে কিছু অবদান রাখতে, এদিক থেকে খুব ভালো লাগে।”
এই বছর স্বীকৃত উইকেটে ৩০০ উইকেট পূর্ণ হয়েছে শরিফুলের। বয়স মাত্র ২৩, ফলে ক্যারিয়ার লম্বা হলে তিনি অনায়াসেই এক ফরম্যাটে ৪০০-৫০০ বা সব মিলিয়ে ১ হাজার বা তার বেশি উইকেত নিতেই পারবেন। তবে দীর্ঘদেহী এই পেসার এতদূর ভাবছেন না এখনই। “১ হাজার উইকেট বা এমন কিছুর ড্রিম নেই আসলে। আমি যতদিন ফিট থাকব, ভালো কিছু করার চেষ্টা করব। দেখা যায় ক্যারিয়ার শেষে কয়টি উইকেট থাকে।”
No posts available.
১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৯ পিএম
১ নভেম্বর ২০২৫, ৭:২৬ পিএম

আগামী ফেব্রুয়ারিতে শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দশম সংস্করণ। তার আগে দল গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে দলগুলো। বিশ্বকাপের আগে শেষ সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড।
১৪ সদস্যের এই দলে জায়গা পেয়েছেন অলরাউন্ডার নাথান স্মিথ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজে ভালো করলে বিশ্বকাপের জন্য কপাল খুলে যেতে পারে ওয়েলিংটনের এই অলরাউন্ডারের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শেষে বিশ্বকাপের জন্য প্রাথমিক দল ঘোষণা করবেন নিউজিল্যান্ডের হেড কোচ রব ওয়াল্টার। কিউইদের হয়ে ওয়ানডেতে এরই মধ্যে অভিষেক হয়েছে স্মিথের। দলটির হয়ে ১৩ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন
| কোহলিকে ছাড়িয়ে বাবরের রেকর্ড, সিরিজ পাকিস্তানের |
|
স্মিথের প্রশংসা করে নিউ জিল্যান্ড কোচ ওয়াল্টার বলেন, ‘নাথান টেস্ট ও ওয়ানডেতে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা শক্তিশালী করেছে। আশা করি, এই সিরিজে সে কাজটা সুন্দরভাবে করবে।’
চোট কাটিয়ে নিউ জিল্যান্ড দলে ফিরেছেন আরেক পেস বোলিং অলরাউন্ডার কাইল জেমিসন। সাইড স্ট্রেইনের কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে খেলতে পারেননি তিনি।
এছাড়া অক্টোবরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার পর আবার টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন লেগ স্পিনার ইশ সোধি।
পেসার ম্যাট হেনরিকে বিশ্রাম দিয়েছেন কোচ। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে শুরু হওয়া ওয়ানডে ও টেস্টের জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য এই সিদ্বান্ত।
চোটের কারণে ফিন অ্যালেন (পা), লকি ফার্গুসন (হ্যামস্ট্রিং), অ্যাডাম মিলন (হাঁটু), গ্লেন ফিলিপস (গ্রোইন) ও বেন শিয়ার্স (হ্যামস্ট্রিং) দলে জায়গা পাননি।
অকল্যান্ডে বুধবার ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলবে নিউ জিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টি দল
মিচেল স্যান্টনার (ক্যাপ্টেন), মাইকেল ব্রেসওয়েল, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, জ্যাকব ডাফি, জ্যাক ফোকস, কাইল জেমিসন, ড্যারেল মিচেল, জিমি নেশাম, রচিন রবীন্দ্র, টিম রবার্টসন, টিম সেইফার্ট (উইকেটকিপার), নাথান স্মিথ, ইশ সোধি।

বিশ্বকাপের বাকি আছে আর ৪ মাসেরও কম সময়। এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিলেন কেন উইলিয়ামসন। নিউ জিল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে আর ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটে দেখা যাবে না অভিজ্ঞ ব্যাটারকে।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৯৩ ম্যাচে ২৫৭৫ রান করে এই ফরম্যাটে নিউ জিল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হিসেবে বিদায় নিচ্ছেন ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটার। তার ব্যাট থেকে আসে ১৮টি ফিফটি, সর্বোচ্চ ইনিংস ৯৫ রানের।
২০১১ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অভিষেকের পর নিজের ৯৩ ম্যাচে মধ্যে ৭৫টিতে দলকে নেতৃত্ব দেন উইলিয়ামসন। তার অধিনায়কত্বে ২০২১ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে নিউ জিল্যান্ড। এছাড়া ২০১৬ ও ২০২২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও দলের নেতৃত্ব দেন তিনি।
আরও পড়ুন
| কোহলিকে ছাড়িয়ে বাবরের রেকর্ড, সিরিজ পাকিস্তানের |
|
অবসরের ঘোষণা দেওয়া বিবৃতিতে নিউ জিল্যান্ড জাতীয় দলের সামনের সময়ের জন্য শুভকামনা জানান উইলিয়ামসন।
“এই দলের অংশ হতে পারা জীবনের বিশেষ অভিজ্ঞতা। এখন সময় এসেছে নতুনদের সুযোগ দেওয়ার। দলে এখন অনেক তরুণ প্রতিভা আছে। মিচ স্যান্টনার দারুণ নেতৃত্ব দিচ্ছে, আমি দূর থেকে তাদের সাফল্য কামনা করব।”
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর স্যান্টনারের হাতে নেতৃত্ব ছেড়ে দেন উইলিয়ামসন। এরপর থেকে বেছে বেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন তিনি। চোট ও বিশ্রামের কারণে তিনি সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড সিরিজেও খেলেননি।
ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে নিউ জিল্যান্ড। সেটি দিয়ে আবার জাতীয় দলে দেখা যেতে পারে উইলিয়ামসনকে।
ওয়ানডে ও টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যাপারে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
“ব্ল্যাকক্যাপস আমার হৃদয়ের খুব কাছের জায়গা। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট আমাকে যে সমর্থন দিয়েছে, তার জন্য কৃতজ্ঞ। আমি টেস্ট ও ওয়ানডে নিয়ে এখনও খোলা মনে সিদ্ধান্ত নিতে চাই।”
নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী স্কট উইনিংক নিশ্চিত করেছেন, উইলিয়ামসন নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন কবে ওয়ানডে ও টেস্ট থেকে বিদায় নেবেন।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিলেও উইলিয়ামসন এখনও ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলবেন। তিন সংস্করণ মিলিয়ে তিনি নিউ জিল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক।

জেতা ম্যাচ হেরে যাওয়ার কিংবা সহজ জয়কে কঠিন করে জেতা পুরোনো অভ্যাস পাকিস্তানের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আজও তেমনটাই করার পথে ছিল তারা। তবে টপ অর্ডারের ব্যাটাররা আসল কাজ করে দেওয়ায় পথ হারায়নি পাকিস্তান।
শেষের সেই শঙ্কা বাদ দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে শেষ হেসেখেলেই জিতেছে সালমান আলি আগার দল।
আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকে চার উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। প্রোটিয়াদের ১৩৯ রানে বেধে ফেলার পর বাবর আজমের ফিফটিতে এক ওভার বাকি রেখেই জিতেছে পাকিস্তান। তাতে প্রথম ম্যাচ হারের পরও দারুণ প্রত্যাবর্তনে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল স্বাগতিকরা। ৪৭ বলে ৬৮ রান করা বাবর আজম হন ম্যাচসেরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের নায়ক বাবর আগের ম্যাচে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়েছিলেন রোহিত শর্মাকে ছাড়িয়ে। আজ আরেক ভারতীয় ব্যাটার বিরাট কোহলিকে ছাড়িয়ে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ফিফটি প্লাস ইনিংসের রেকর্ড গড়লেন বাবর। টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটার আজ করেছেন ৩৭তম ফিফটি। এই সংস্করণে ৩টি সেঞ্চুরিও রয়েছে তাঁর। সব মিলিয়ে ৪০টি ফিফটি কিংবা তার বেশি ইনিংস খেলেছেন তিনি। ছাড়িয়ে গেছেন বিরাটনকোহলির ৩৯ ফিফটি প্লাস ইনিংস। তিনে থাকা রোহিত শর্মার ৩৭টি।
লাহোরে ছোটো লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে হোঁচট খায় পাকিস্তান। ‘ডাক’ মেরে ফেরেন সায়েম আইয়ুব। পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ডাকের মালিক এখন এই ওপেনার। ৪৯ ইনিংসে ১০ ম্যাচে শূন্য রান করা সায়েম বিব্রতকর এই রেকর্ডে ছুঁয়েছেন উমর আকমলকে। পাশাপাশি আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলের ব্যাটারদের মধ্যে এক বছরে সর্বোচ্চ ডাকও এখন সায়েম আয়ুবের। ২০২৫ সালে সাতবার শূন্য রানে আউট হয়ে পাকিস্তানের ব্যাটার ছাড়িয়ে গেছেন জিম্বাবুয়ের রিচার্ড এনগারাভাকে।
শুরুতে উইকেট হারালেও পথ হারায়নি পাকিস্তান। দলীয় ৪৪ রানে শাহিবজাদা ফারহান আউট হওয়ার পর বাবর আজম-সালমান আলি আগার ৭৬ রানের জুটিতে সহজ জয়ের দিকে ছুটে স্বাগতিকরা।
দলের রান যখন ১২০ অধিনায়ক আগা তখন লিজাড উইলিয়ামসের বলে আউট হন। সাজঘরে ফেরার আগে ২৬ বলে ৩৩ রান করেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। স্কোরবোর্ডে ৫ রান যোগ হতে অধিনায়কের পথ ধরেন দারুণ এক ফিফটি করা বাবর। বশের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ৯ চারে ৪৭ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রানের মালিক।
দ্রুত দুই উইকেট হারালেও জয় থেকে তখন অল্প দূরত্বে পাকিস্তান। দলীয় ১৩৩ ও ১৩৪ রানে পাকিস্তানের আরও দুটি উইকেট তুলে ম্যাচ খানিকটা জমিয়ে তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে ততক্ষণে যে অনেক দেরি হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত আর কোনো ভুল না করে জয়ের বন্দরে নোঙর করে স্বাগতিকরা।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরবোর্ডে শূন্য রান থাকতেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটার। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুইন্টন ডি ককের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। পাকিস্তানের পেসারের পরের ডেলিভারিতেই উসমান তারিকের ক্যাচ হয়ে ফেরেন লুহান ড্রে প্রেটোরিয়াস।
তৃতীয় উইকেটে ডিওয়াল্ড ব্রিভিসকে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়েন রেজা হেনড্রিকস। এই জুটি ভাঙতেই আবার ব্যাটিং ধসের শঙ্কায় পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২২ বলে ২১ রান করা ব্রিভিস আউট হওয়ার পর এক রান করে ফেরেন ম্যাথু ব্রিটজ।
এরপর ৩৪ রানের আরেকটি জুটির পর আবারও পরপর দুই উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। অধিনায়ক ডোনোভান ফেরেইরার পর আউট হন র্জজ লিন্ডা। ১৪ বলে ২৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ফাহিম আশরাফের বলে ক্যাচ তুলেন ফেরেইরা।
৭৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর করবিন বশের ২৩ বলে ৩০ ও আন্দিলে সিমিলেনের ১৩ রানে ধুঁকতে ধুঁকতে ১৩৯ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বল হাতে পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল ছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। দুটি করে শিকার ফাহিম আশরাফ ও উসমান তারিকের। এক উইকেট নিয়েছেন সালমান মির্যা ও মোহাম্মদ নেওয়াজ।

ঘরের মাঠে গ্যালারিভর্তি সমর্থকদের সামনে বিশ্বসেরা হওয়ার স্বপ্ন কে না দেখে? এমন মুহূর্তের জন্য হাজার রাত অপেক্ষা করতেও তো কারও দ্বিধা থাকার কথা নয়। কত চড়াই-উতরাই পার হয়েই যে বিশ্বসেরার সেরার তকমা মেলে, সেটা কার না জানা।
নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ইতিহাস গড়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় পাওয়া ভারত এখন বিশ্বসেরা হতে মাত্র এক কদম দূরে আছে। আগামীকাল নভে মুম্বাইয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালেই প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে হারমানপ্রীত কৌরের দল। বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ফাইনাল।
ফাইনালের মহারণের আগে সংবাদ সম্মেলনে ভারতের অধিনায়কের কণ্ঠে ছিল আবেগ, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চের মিশ্রণ। তবে সবকিছু একপাশে রেখে উপভোগের মন্ত্রকেই বেছে নিলেন হারমানপ্রীত কৌর,
‘আমার মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা এই মুহূর্তটা উপভোগ করি। একজন ক্রিকেটার এবং একজন অধিনায়ক হিসেবে জীবনে এর চেয়ে বড় আর কিছু নেই। তাই আমাদের ফোকাস হলো এই মুহূর্তটা উপভোগ করা এবং বড় লক্ষ্য নিয়ে চিন্তা করার পরিবর্তে ছোট ছোট লক্ষ্য অর্জনের দিকে মন দেওয়া। কারণ ছোট লক্ষ্যগুলো পূরণ করলে বড় লক্ষ্যও সম্ভব।’
নারী বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মতো ফাইনাল খেলছে ভারত। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এটি প্রথম অভিজ্ঞতা। ফাইনাল হারের তেতো অভিজ্ঞতা কেমন সেটা ভালো করেই জানা আছে ভারতের অধিনায়কের। তবে এবার শিরোপা তুলে ধরতে মুখিয়ে আছেন ভারতের অধিনায়ক,
‘আমরা ভালোভাবেই জানি যে ( বিশ্বকাপ ফাইনাল হারার) অনুভূতি কেমন। আমরা সত্যিই ফাইনাল জেতার অনুভূতির জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। আশা করি আগামীকাল আমাদের জন্য বিশেষ দিন হবে। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি, এবং এখন শুধু সবকিছু এক করে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।’
লিগ পর্বটা অবশ্য ভালো যায়নি ভারতের। সেমিফাইনালও হয়ে পড়েছিল অনিশ্চিত। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হার শঙ্কার মুখে ফেলে দিয়েছিল ভারতের শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ। তবে হারপ্রীতের দল সবসময় ইতিবাচক থেকেই শেষ পর্যন্ত ফাইনালে পৌঁছে গেছে,
‘তিনটি বড় হারের কারণে আমাদের দল একবারও চাপে পড়েনি। সবাই একসঙ্গে ছিল এবং ফাইনালে পৌঁছানোর উপায় নিয়ে কথা বলছিল। আমাদের ইতিবাচক মনোভাব ছিল, যা সত্যিই সাহায্য করেছে। যখন দলের সবাই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে থাকে এবং অন্তর থেকে দেশের জন্য খেলার আবেগ অনুভব করে…।’
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য গত দুই বছর কঠোর পরিশ্রম আর পরিকল্পনা করেছে ভারত। এখন শুধু সেটার ফসল ঘরে তোলার কথা বললেন হারমানপ্রীত,
‘পুরো দল এখন রোমাঞ্চিত, আমরা একে অপরের পাশে আছি এবং একে অপরের জন্য প্রার্থনা করছি। এটা দেখায় এই দল কতটা ঘনিষ্ঠ এবং আমরা কতটা প্রস্তুত। শেষ দুই বছরে সমস্ত কৌশল ও পরিকল্পনার পর এখন শুধু নিজেদের সর্বোচ্চ দেওয়া বাকি। আমরা ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের জন্য পরিকল্পনা করছিলাম, কী ধরনের কন্ডিশন পাবো, তাই এখন শুধু শতভাগ দেওয়ার সময়।’

হংকং সিক্সেসের জন্য দল ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। সাত সদস্যের অজি দলের অধিনায়কত্ব করবেন অ্যালেক্স রস। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক না হলেও বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বেশ পরিচিত তিনি। ২০২৪ বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকা এবং ২০২৫ বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলেছেন রস।
আগামী ৭ থেকে ৯ নভেম্বর হংকংয়ের টিন কুয়ং রোড রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ডে হবে হংকং সিক্সেস। ৩৩ বছর বয়সী অ্যালেস মিডল-অর্ডার ব্যাটার পাশাপাশি, অফস্পিনে সহায়তা করবেন দলকে। তিনি দলের অভিজ্ঞতা ও স্থিতিশীলতা যোগ করবেন। স্কোয়াডে আছেন টপ-অর্ডার ব্যাটার ও উইকেটকিপার বেন ম্যাকডারমট, স্পিন অলরাউন্ডার ক্রিস গ্রিন, ডেথ বোলিংয়ে দারুণ দক্ষ অ্যান্ড্রু টাই, টপ-অর্ডার ব্যাটার নিক হবসন।
আরিভা স্পোর্টসের কো-ফাউন্ডার রাজনিশ চোপড়া বলেছেন,
‘অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণ হংকং সিক্সেসকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলেছে। তাদের জয়ের মানসিকতা এবং খেলাধুলার দৃষ্টিভঙ্গি এই ফরম্যাটের সঠিক চিত্র।’
টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ১২টি দল। যার মধ্যে আছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও হংকং। তিন দিনে মোট ২৯টি ম্যাচ হবে। প্রতিটি ম্যাচে ৬ জন খেলবে, ৬ ওভার খেলা হবে, এবং একজন বোলার সর্বোচ্চ দুই ওভার করতে পারবেন।
অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াড: অ্যালেক্স রস (অধিনায়ক), বেন ম্যাকডারমট, জ্যাক উড, নিক হবসন, ক্রিস গ্রিন, উইল বোসিস্টো ও অ্যান্ড্রু টাই।