একটা সিরিজের আগে নির্দিষ্ট ব্যাটারকে টার্গেট করে শিকার করার ব্যাপারটিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ার পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রাথ। সেই ধারা এখনও চলছে কমবেশি। বাংলাদেশ পেসার শরিফুল ইসলামের কাছে যেমন পরম আরাধ্য ছিল বাবর আজমের উইকেট। পাকিস্তানের সাথে টেস্ট সিরিজে দেখে পেয়েছেন সেই স্বপ্নের উইকেটের। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে বিরাট কোহলির মাপের ব্যাটার থাকলেও বাঁহাতি পেসার বলেছেন, তার কাছে প্রতিটি উইকেটই পাবে সমান গুরুত্ব।
আরও পড়ুন: ৫ বলেই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতল সিঙ্গাপুর!
ব্যাটসম্যানশিপের মানদণ্ড বিচারে বাবরের চেয়ে বেশ এগিয়েই আছেন কোহলি। তবে সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটার বাবরও তো কম যান না। এই কারণেই পাকিস্তান দলে তার উইকেটই এখনও সবচেয়ে বড় উইকেট। আগেই শরিফুল বলেছিলেন, ডানহাতি এই ব্যাটারকে আউট করার স্বপ্ন আছে তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই সেই স্বাদ পেয়েছেন তিনি। এই মাসেই ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তার সামনে থাকবেন কোহলি, যার উইকেট অনেক বড় বড় বোলারের কাছেই আরাধ্যের বিষয়।
তবে টি-স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শরিফুল বললেন ভিন্ন কিছু। “ড্রিম উইকেট বলতে প্রতিটা উইকেটই এখন চিন্তা করি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সে (বিরাট কোহলি) ভালো ব্যাটার, আমাদের কোয়ালিটি বোলার আছে। সেদিক থেকে চেষ্টা করব আমরা যেন একটু এগিয়ে থাকি। যদি সুযোগ থাকে, চেষ্টা করব তার উইকেট নেওয়ার।”
শরিফুলের বাংলাদেশ জাতীয় দলের সময়টা এখনও খুব বড় নয়। তবে এর মধ্যেই বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা কয়েকটি জয়ের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, তরুণ এই পেসার সেসব জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদানও। পাকিস্তানের সাথে প্রথম টেস্ট ছাড়াও যেখানে রয়েছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ও।
এই বড় বড় জয়ের অংশ হওয়ার অনুভূতিতে কেমন শরিফুলের কাছে? “অভ্যাস কিনা জানিনা, তবে ভালো লাগে বড় বড় জয়ের অংশ হতে পেরে। কারণ সবাই চায় বড় দলের সাথে জয়ে কিছু অবদান রাখতে, এদিক থেকে খুব ভালো লাগে।”
এই বছর স্বীকৃত উইকেটে ৩০০ উইকেট পূর্ণ হয়েছে শরিফুলের। বয়স মাত্র ২৩, ফলে ক্যারিয়ার লম্বা হলে তিনি অনায়াসেই এক ফরম্যাটে ৪০০-৫০০ বা সব মিলিয়ে ১ হাজার বা তার বেশি উইকেত নিতেই পারবেন। তবে দীর্ঘদেহী এই পেসার এতদূর ভাবছেন না এখনই। “১ হাজার উইকেট বা এমন কিছুর ড্রিম নেই আসলে। আমি যতদিন ফিট থাকব, ভালো কিছু করার চেষ্টা করব। দেখা যায় ক্যারিয়ার শেষে কয়টি উইকেট থাকে।”
২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩:৫৪ পিএম
২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ইংল্যান্ডের সাদা বলের কোচ হওয়ার পর প্রথম বড় সিদ্ধান্তটা নিলেন জো রুটকে ফিরিয়ে। এক বছরেরও বেশি সময় ওয়ানডে দলে অনুপস্থিত থাকার পর ডাক পেয়েছেন ভারত সফর ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষবার ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দেখা গিয়েছিল রুটকে। তবে এই বছরটা লাল বলের ক্রিকেটে দারুণ কাটিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ছয় সেঞ্চুরিতে ৫৫.৫৭ গড়ে ১ হাজার ৫৫৬ রান করে বছর শেষ করেছেন বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট ব্যাটার হিসেবে।
তবে ওয়ানডেতে নিজের সবশেষ বছরটা একেবারেই ভালো কাটেনি রুটের। বিশেষ করে ভারতের মাটিতে হওয়া বিশ্বকাপে ছিলেন না একেবারেই ছন্দে। ৩০.৬৬ গড়ে করেন মাত্র ২৭৬ রান। অথচ তার ক্যারিয়ার গড় ৪৭.৬০। আর এর আগে ২০১৯ বিশ্বকাপের পর খেলা ২৮ ওয়ানডের হিসাব করলে পারফরম্যান্স নিম্নমুখীই। ২৮ ম্যাচে ২৮.৯৫ গড়ে করেন মোটে ৬৬৬ রান।
ম্যাককালামের ঘোষিত ওয়ানডে দলে আরও ফিরেছেন টেস্ট দলের আরও কয়েকজন নিয়মিত সদস্য। ১৫ জনের স্কোয়াডের দলে থাকা ৮ জনই এই বছর ছিলেম লাল বলের দলে। দলে প্রাধান্য পেয়েছেন গতিময় পেসাররা, যার মধ্যে জোফরা আরচার ছাড়াও আছেন মার্ক উড, গাস অ্যাটকিনসনর।
বাদ পড়েছেন দুই পেসার রিস টপলি ও ম্যাথু পটস। দলের মূল স্পিনার হিসেবে আছেন আদিল রশিদ। হাত ঘুরিয়ে তাকে সঙ্গ দেওয়ার কাজটা করতে পারেন রুট, লিয়াম লিভিংস্টোন। দলে আছেন ইংলিশ ক্রিকেটের সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত প্রতিভা জ্যাকব বেথেলও।
সম্ভাব্য ওপেনিং জুটি হতে পারেন ফিল সল্ট ও বেন ডাকেট। এই দুজন জায়গা ধরে রাখলেও বাদ পড়েছেন টপ-অর্ডার ব্যাটার উইল জ্যাকস।
অধিনায়কত্ব করবেন যথারীতি জস বাটলার, যিনি রুট সহ স্কোয়াডের আরও অনেকের মতোই প্রথম ওয়ানডে খেলবেন ভারতের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই।
ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ টেস্টের দল ঘোষণার আগেরদিনই নাথান ম্যাকসুইনি বলেছিলেন, বক্সিং-ডে টেস্ট খেলাটা হবে তার কাছে স্বপ্নপূরণের মত। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে দল থেকেই বাদ পড়তে হয়েছে তাকে। অনেক আশা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাগি গ্রিন ক্যাপ পাওয়ার পর দ্রুতই বাদ পড়াটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে তরুণ এই ব্যাটারের। সিরিজের মাঝপথে ছিটকে যাওয়াট তাকে বিধ্বস্ত করে ফেলেছে।
চলমান সিরিজে ম্যাকসুইনির ওপেনার হিসেবে দলে ডাক পাওয়াটাই ছিল চমক জাগানিয়া। মূলত তিনি মিডল অর্ডার ব্যাটার হলেও অস্ট্রেলিয়া তাকে ওপেনার হিসেবেই খেলায় তিনটি টেস্টে। ছয় ইনিংসে মাত্র ৭২ রান করার পর শেষ দুই ম্যাচের জন্য তার জায়গায় ডাক পেয়েছেন ১৯ বছর বয়সী স্যাম কনস্টাস।
বাদ পড়ার হতাশার পাশাপাশি চ্যানেল সেভেন-কে দেওয়া ম্যাকসুইনি ব্যক্ত করেন ফিরে আসার আশাবাদও।
“হ্যাঁ, আমি বিধ্বস্ত, আমি স্বপ্নটা সত্যি হয়েছিল, কিন্তু এরপর আমি যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবে তা কাজ করেনি। তবে এটাও একটা প্রক্রিয়ার অংশ এবং আমি আবার মাথা নিচু করে নেটে ফিরে যাব এবং কঠোর পরিশ্রম করব এবং আশা করি পরবর্তীতে সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকব।”
এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার আরেক ওপেনার উসমান খাজাও নেই ফর্মে। ম্যাকসুইনির ওপর তাই প্রত্যাশা ছিল কিছু ভালো ইনিংস উপহার দেওয়ার। তবে ছয়টির মধ্যে পাঁচ ইনিংসে শুন্য থেকে ১০ রানের মধ্যে আউট হয়ে যান তিনি। সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ইনিংসে অবশ্য প্রশংসা পায় তার মাটি কামড়ে পড়ে থাকার দক্ষতা। তবে আপাতত বাজে ফর্মই তাকে ছিটকে দিয়েছে।
ম্যাকসুইনির জন্য ফিরে আসার পথটা অবশ্য সহজ হবে না। ওপেনিং পজিশনে ব্যর্থ হওয়ায় আপাতত তাকে বিবেচনা করলে সেটা হবে মিডল অর্ডারে। আর সেক্ষেত্রে তাকে পড়তে হবে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যেই। কারণ, চোটের কারণে এই সিরিজ মিস করা ক্যামেরন গ্রিন দলে ফিরলে মিডল অর্ডারে তিনি চলে আসবেন নিয়মিত পছন্দ হিসেবেই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগেও জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। তবে প্রতিবারই লিটন দাস দায়িত্ব সামলেছেন অস্থায়ীভাবে। আর সেখানে ভালো করার কেউ কেউ এই ফরম্যাটে তার মাঝে দেখতে পান ভবিষ্যৎ অধিনায়কের ছায়া। তিনি নিজে কী ভাবছেন? লিটন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বোর্ডের কাছ থেকে প্রস্তাব পেলে তিনি সেটা লুফে নিতে প্রস্তুত।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এবারের সিরিজটি সবদিক থেকেই কঠিন ছিল লিটনের জন্য। ওয়ানডে সিরিজ গেছে ভীষণ বাজে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাননি দলের সেরা কিছু ক্রিকেটারকে। তার ওপর প্রতিপক্ষ দল আবার এই ফরম্যাটেই খেলে নিজেদের সেরা ক্রিকেট। ব্যাট হাতে এই সিরিজেও লিটন নিস্প্রভ থাকলেও বাজিমাত করেছে তার দল। প্রথমবারের মত ক্যারিবিয়ানদের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়েছে ৩-০ ব্যবধানে।
ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমের সাথে আলাপচারিতায় পূর্ণ মেয়াদে অধিনায়কত্ব করা নিয়ে ইতিবাচক উত্তরই দিয়েছেন লিটন। “বিসিবি যদি দায়িত্ব দেয়, আমি সেটা নিতে রাজি আছি। এখানে দ্বিমত থাকার কোনো কথা না। আমি এই কাজটা উপভোগ করছি। এতদিন খেলার অভিজ্ঞতা থেকে আমি অনেক সিদ্ধান্ত নেই, বোলাররাও স্কিল দেখাচ্ছে, তাতে মাঠে আমার কাজ সহজ হয়ে যায়।”
তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। চোটের কারণে পুরো ক্যারিবিয়ান সফরই তিনি মিস করেছেন। মাঝে গুঞ্জন ছিল, টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চান তিনি। শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। তবে তিনি যদি সামনে সরে দাঁড়ান, অন্তত এই ফরম্যাটে তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার যোগ্য দাবিদার থাকবেন লিটনই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে বোলিং পরিবর্তন থেকে শুরু করে ফিল্ডিং সাজানো, সব জায়গাতেই মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তিনি।
লিটন নিজে অবশ্য কৃতিত্ব ভাগ করে দিতে চান দলের সবার মাঝেই।
“ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের মাঠে খুব ভালো দল। বলবো না খুব বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপ, তবে আমাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যালেন্সড ব্যাটিং অর্ডার। আমরা যদি বোর্ডে প্রতিদিন কিছু রান দিতে পারি, তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যায়। আমাদের বোলারদের স্কিল বাড়ছে, প্রতি ম্যাচেই নিজে থেকে তারা দায়িত্ব নিচ্ছে, ফিল্ডিং নিজে থেকে সাজাচ্ছে, অনেক কিছু শিখছে। এটা ভালো দিক। আমার কাজ সহজ হয়ে যায়।”
ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে আগেও কাজ করেছেন, সফলতাও পেয়েছেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটন দাসের জন্য দায়িত্বটা ছিল কঠিনই। ওয়ানডে সিরিজে নিজে ছিলেন ব্যর্থ, দলও যে হেরেছিল সব ম্যাচেই। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ২০ ওভারের সিরিজে শক্তিশালী ক্যারিবিয়ানদের ধবলধোলাই করেছেন। লিটন মনে করছেন, চাপ না নিয়ে খেলার সুফল পেয়েছে দল।
চাপে অবশ্য বাংলাদেশ দল ছিল ওয়ানডে সিরিজের পারফরম্যান্সের কারণেই। নিজেদের পছন্দের এবং সেরা ফরম্যাটে তিনটি ম্যাচের দুটিতে হারতে হয়ে বড় স্কোর নিয়েই। অথচ র্যাংকিংয়ে চারে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তুলনামূলক কম শক্তিশালী দল নিয়েও বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে হারিয়েছে দাপট দেখিয়েই। তাতে ইতিহাস গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবার এই ফরম্যাটে ৩-০ তে সিরিজ জয়ও ধরা দিয়েছে।
ম্যাচের পর অধিনায়ক লিটন বলেছেন, ভারমুক্ত থেকে খেলার মন্ত্রটাই সাহায্য করেছে তাদের।
“আপনি যদি দেখেন, আমরা টেস্ট এবং ওয়ানডেতেও ভালো খেলেছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা সব ম্যাচ জিততে পারিনি। তবে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। তাই আমাদের সাথে সব সিরিজ খুব ভালো খেলার আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি সবসময় ছেলেদের বলি চাপ না নিতে, আর স্রেফ খেলাটা উপভোগ করতে। কারণ, আমরা জানি আমাদের খুব ভালো একটা বোলিং আক্রমণ আছে এবং আমরা যে কোনও স্কোরই ডিফেন্ড করতে পারি।”
তিনটি ম্যাচই হয়েছেন কিংসটাউনে এবং তিন ম্যাচেই বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করেছে। প্রথম দুই ম্যাচে বোর্ডে বড় স্কোর না থাকলেও বোলাররা কাজের কাজটা করে দেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে থাকা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সব বড় নাম থাকার পরও টানা তিন ম্যাচে তাদের আটকে দেওয়া বড় এক অর্জনই। সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৮৯ রান করা বাংলাদেশ ক্যারিবিয়ানদের গুটিয়ে দেয় মাত্র ১০৯ রানেই।
অধিনায়কের কাছ থেকে বোলাররা তাই বাহবাই পেলেন।
“আমরা দিন দিন উন্নতি করছি। আপনি যদি প্রথম এবং দ্বিতীয় ম্যাচ দেখেন, এই উইকেটটি ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো ছিল। আমাদের বোলাররা যেভাবে বল করেছে, সেটা দুর্দান্ত ছিল। কারণ, এই মুহূর্তে তাদের শ্রেয়তর ব্যাটিং অর্ডার রয়েছে। তাদের দলে পাওয়ার হিটার আছে এবং আমরা ১৮০ রান (১৮৯) ডিফেন্ড করে তাদের ১০৯ রানে আটকে দিয়ে জিতেছি। বোলিং ইউনিটের জন্য এটা একটা বড় অর্জন।”
বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স দায়িত্ব নিয়েছেন, খুব বেশিদিন হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই কোচ অল্প সময়েই পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। সাথে বাংলাদেশের স্থানীয় কোচদের মধ্য অন্যতম সফল মোহাম্মাদ সালাহউদ্দিন এই সফরে কাজ করেন ব্যাটিং কোচ হিসেবেও।
নিজেদের সাফল্যের কৃতিত্ব কোচদের সাথেও তাই ভাগাভাগি করে নিলেন লিটন।
“সে (ফিল সিমন্স) আমাদের ওপর কখনো কোনো চাপ দেননি। আমরা শুধু নির্দ্বিধায় ক্রিকেট খেলেছি। আমি শুধু তার কাছে আমাদের সিদ্ধান্ত এবং সবকিছু ব্যাখ্যা করেছি। শুধু তিনিই নন, পুরো কোচিং স্টাফ এবং ম্যানেজমেন্টের লোকরাও ভালো কাজ করেছে। তারা আমাদের জন্য খুব সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজ তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেই এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টিতে শীর্ষ ব্যাটারদেরই একজন নিকোলাস পুরান। পেসের পাশাপাশি স্পিনেও রয়েছে দারুণ দক্ষতা। তবে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে পুরো টি-টোয়েন্টি সিরিজেই তাকে নিস্ক্রিয় রেখেছেন একজন - শেখ মাহেদি হাসান। টানা তিন ম্যাচে এই বাঁহাতি ব্যাটারকে আউট করে দলকে এগিয়ে রেখেছেন অনেকটাই। পুরানের বিপক্ষে এমন সফলতার রহস্য কী? মাহেদি শুনিয়েছেন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আনন্দ।
প্রথম ম্যাচে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে স্টাম্পড হন পুরান। দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে আর্ম ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত করেন মাহেদি, স্লিপে সহজ ক্যাচ দেন এই মারমুখী ব্যাটার। আর সিরিজের শেষ ম্যাচে ব্যাকফুটে গিয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে হয়ে যান বোল্ড। এমন মাপের একজন ব্যাটারকে হ্যাটট্রিক শিকার বানানো চাট্টিখানি কথা নয়।
৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হওয়া মাহেদি বলেছেন, পুরানকে নিয়ে তাদের ভিন্ন কৌশল ছিল, যা কাজে লেগেছে।
“(রংপুর রাইডার্সের হয়ে) গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে খেলার ভালো অভিজ্ঞতা ছিল, আর সেটা এখানে সাহায্য করেছে। আমি এই ধরণের উইকেটে বোলিং করাটা উপভোগ করেছি। আমরা সিরিজ শুরুর আগে উইকেট টু উইকেটে বল করার পরিকল্পনা করেছি। আমি পুরানকে চিনি, তার সাথে বিপিএল এবং অন্যান্য লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ডানহাতি অফ স্পিনারের বিপক্ষে সে খুব কঠিন একজন ব্যাটার। কিন্তু তাকে সামলানোর জন্য আমাদের পরিকল্পনা ছিল।”
মাহেদি বাংলাদেশ দলের সাথে এই সফরের স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার ঠিক আগে অংশ নেন গায়ানায় হওয়া গ্লোবাল সুপার লিগে। রংপুর রাইডার্সের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে খেলেন প্রতিটি ম্যাচেই। এই সিরিজের প্রস্তুতি হিসেবে টুর্নামেন্টটি তাকে তাই বেশ সাহায্য করেছে, যা প্রতীয়মান হয় গোটা সিরিজ জুড়ে মাহেদির বোলিংয়েই।
প্রথম ম্যাচে চার ওভারে মাত্র ১৩ রানে নেন ৪ উইকেট, যা এই ফরম্যাটে তার সেরা বোলিং ফিগার। পরের দুই ম্যাচে নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। পাওয়ার প্লেতে নিয়মিতই উইকেট শিকার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের পাওয়ার প্লেতে চাপে ফেলার কাজটা সবগুলো ম্যাচেই করেছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
১ দিন আগে
৪ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২৬ দিন আগে