চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় এটিপি ফাইনাল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন নোভাক জোকোভিচ। ৩৭ বছর বয়সী এই টেনিস তারকা এই ইভেন্টে রেকর্ড সাতটি শিরোপা জিতেছেন। এবারের আসরে এটিপি ট্যুরে ষষ্ঠ সেরা খেলোয়াড় হিসেবে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন তিনি।
টুর্নামেন্টে না খেলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন। “আমি আসলেই সেখানে খেলার অপেক্ষায় ছিলাম, কিন্তু চলমান চোটের কারণে আমি আগামী সপ্তাহে খেলতে পারব না। যারা আমার খেলা দেখার পরিকল্পনা করছিলেন, তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।”
রেকর্ড ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম পুরুষদের একক শিরোপা জেতা জোকোভিচ গত মাসে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, এটিপি ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তার অগ্রাধিকারের মধ্যে ছিল না। “আমি এটিপি ফাইনালের পিছনে ছুটছি না, আমি র্যাঙ্কিং তাড়া করছি না।”
সাবেক বিশ্বের শীর্ষ টেনিস খেলোয়াড় আরও বলেছেন, তিনি গ্র্যান্ড স্ল্যামগুলোতেই এখন মনোনিবেশ করতে চান। কারণ, তিনি তার ক্যারিয়ারকে দীর্ঘায়িত করতে চান।এর মানে হল, জোকোভিচের পরবর্তী টুর্নামেন্ট হতে পারে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, যা শুরু হবে আগামী ১২ জানুয়ারি।
মেলবোর্নে জকোভিচের লক্ষ্য থাকবে রেকর্ড ২৫তম মেজর একক শিরোপা শিরোপা জয়ের, যা তাকে মার্গারেট কোর্ট থেকে এগিয়ে দেবে। এছাড়াও এটি হতে পারে তার ১০০তম ট্যুর-লেভেল ট্রফি।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭:০৬ পিএম
বিদায়ের দিনক্ষণ জানিয়ে দিয়েছিলেন আরো আগে, ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে ইনজুরি-চোট জর্জরতার কারণে শেষ ম্যাচটায় মালাগায় অনুষ্ঠিত ডেভিস কাপে কোর্টে আদৌও নামতে পারবেন কিনা– জানেন না ক্লে কোর্টের অবিসংবাদিত রাজা রাফায়েল নাদাল। কিন্তু নাদালেরই সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী এবং অন্যতম ‘বড় ভক্ত’ রজার ফেদেরার এক খোলা চিঠিতে একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন, নাদালের মতো আর কেউ তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে পারেননি।
নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে ফেদেরার তার প্রিয় বন্ধু এবং প্রতিন্দ্বন্দ্বী নাদালের জন্য লিখেছেন খোলা চিঠি। সেখানে ফেদেরার জানাচ্ছেন, নাদালের কারণেই টেনিসকে আরো উপভোগ করেছেন দ্য সুইস মায়েস্ত্রো।
নাদালের মুখোমুখি হয়েছেন অসংখ্যবার। ফেদেরার আর নাদালের লড়াই একবিংশ শতকের শুরুর টেনিসকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়। ফেদেরার তার ক্যারিয়ারের ইতিটাও টেনেছেন নাদালকে কাছে রেখে, ২০২২ সালের লেভার কাপে একসঙ্গে খেলে। সে মুহূর্তটাকে ফেদেরার বলেছেন ‘তার ক্যারিয়ারের অন্যতম বিশেষ মুহূর্ত’ হিসেবে।
ফেদেরার তার লেখা খোলা চিঠিতে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, জয়ের চাইতে হারের তেতো স্বাদটা ৪৩ বছর বয়সী সুইস বেশি পেয়েছেন, যখন তিনি নাদালের মুখোমুখি হয়েছেন, “তুমি আমায় অনেকবার হারিয়েছ, অনেকবার। আমি যতবার তোমাকে হারিয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি”, লেখেন ফেদেরার। স্মরণ করেন তাদের প্রথম সাক্ষাতের গল্পটাও, ২০০৪ সালের মার্চ মাসে মায়ামি মাস্টার্সে একেবারে স্ট্রেইট সেটে সে সময়ের বিশ্বের নাম্বার ওয়ান ফেদেরারকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন র্যাংকিংয়ের ৩৪ তম বাছাই স্প্যানিশ রাফা।
ততদিনে ফেদেরারের নামের পাশে চারটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম, আর নাদালের বয়স কেবল ১৭। ২০০৫ সালের ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে নিজের নাম ইতিহাসের বুকে লেখার আগেই ফেদেরারকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে নাদাল টেনিস জগতে রাজত্ব করতে এসেছেন। ফেদেরার-নাদাল রাইভালরিতে জয়ের সংখ্যা কিংবা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়– দুই জায়গাতেই নাদাল ছাড়িয়েছেন ফেদেরারকে। একে অপরের বিপক্ষে ৪০ দেখায় নাদাল জিতেছেন ২৪ বার, আর ফেদেরার শেষ হাসি হেসেছেন ১৬ বার। গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ডও নাদাল ভেঙেছিলেন ফেদেরারের ২০ টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড ছাড়িয়ে, থেমেছেন ২২ এ এসে।
“আমি ভেবেছিলাম আমিই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ, এবং সেটাই সত্যি ছিল ততদিন পর্যন্ত যেদিন মায়ামিতে তোমার মুখোমুখি হলাম। লাল, হাতাকাটা শার্টে বাইসেপস দেখিয়ে কোর্টে নামলে, আমাকে একদম সহজে হারিয়ে দিলে। তোমার জন্যই আমি খেলাটাকে অন্যভাবে দেখতে শিখেছি,” খোলা চিঠিতে লেখেন ফেদেরার। নাদালের তীব্র টপস্পিন সামলানোর জন্য ফেদেরার নিজের ব্যাকহ্যান্ডে আসলেই পরিবর্তন এনেছিলেন।
ক্লে কোর্টে ১৪ বার ফ্রেঞ্চ ওপেনজয়ী নাদালের উপরে আর কেউ নেই, সেই স্বীকৃতিটা ফেদেরার আরেকবার দিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী স্প্যানিয়ার্ডকে, “ক্লে কোর্টে নামলে মনে হতো তোমার রাজ্যে প্রবেশ করেছি, আর সেখানে তুমি আমার চিন্তা-সামর্থ্যের বাইরে আমাকে খাটিয়ে মেরেছো। বিশ বছর পর, ১৪ টা ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়। কী ঐতিহাসিক এক ক্যারিয়ার। স্পেনকে তুমি গৌরব এনে দিয়েছো। তোমার জন্য পুরো টেনিস বিশ্বও গর্বিত।”
ডেভিস কাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে স্পেন খেলবে মঙ্গলবার রাত ৯ টায়। ডেভিস কাপের ফাইনাল রবিবার ২৪ নভেম্বর। স্পেন তার মূল ভরসা রাখছে আরেক স্প্যানিশ সেনসেশন কার্লোস আলকারাজের উপর। তবে নাদালের ‘ওয়ান লাস্ট ডান্স’টা আদৌ কোর্টে হবে কিনা, সেটা তার শরীরের সামর্থ্যের উপর নির্ভর করবে।
বয়স ক্যালেন্ডারে ৩৮। বয়স বাড়ার সাথে বাড়ছিল চোটও। কাটছিল কঠিন সময়, আগের মতো টেনিস কোর্টে নৈপুণ্যের দ্যুতিও দেখা যাচ্ছিল না। আগেই জানিয়েছিলেন এ মাসে ডেভিস কাপ খেলে শেষবার র্যাকেট তুলে রাখবেন তিনি। রাফায়েল নাদালের সেই শেষের ম্যাচ এই শুরুটা হচ্ছে আজ।
মালাগায় ডেভিস কাপের ডাবলস কোয়ার্টার ফাইনালে ১৯ নভেম্বর রাতে স্পেনের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। নিজ দেশের হয়ে অবশ্য আজ নাদালের কোর্টে নামা নিশ্চিত নয় নাদালের। গত জুলাইয়ে অলিম্পিকে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বাদ পড়ার পর আর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি নাদাল।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শেষ নাদালের |
বিদায়ের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে আবেগাপ্লুত নাদাল বলেছেন,
‘এখানে আমি অবসরের আনুষ্ঠানিকতা সারতে আসিনি, দলকে সাহায্য করতে এসেছি। হ্যাঁ, এটাই আমার পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ সপ্তাহ। কিন্তু দিন শেষে এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসেছি। শেষ বেলায় আমার আবেগও কাজ করছে।’
আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের অনুমোদনক্রমে ও বাহরাইন টেনিস ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় ‘২০২৪ ডেভিস কাপ এশিয়া, ওশানিয়া গ্রুপ-৫’ অংশ নিতে মধ্যরাতে বাংলাদেশ দল বাহরাইনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছে।
১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ইছা টাউন, বাহরাইনে অনুষ্ঠেয় এই টুর্নামেন্টে স্বাগতিক বাহরাইন সহ বাংলাদেশ, ভূটান, ব্রুনাই, লাওস, ম্যাকাও, মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া, ইয়েমেন, নেপাল, তাজিকিস্তান, গুয়াম, তূর্কমেনিস্তান, নর্দার্ন ম্যারিনা আইল্যান্ড ও ফিলিপাইন ডেভিস কাপ দল অংশগ্রহণ করবে।
আগামী মঙ্গলবার ক্যাপ্টেনস মিটিং অনুষ্ঠিত হবে, ক্যাপ্টেনস মিটিং-এ অংশগ্রহণকারী দলসমূহকে ৪টি গ্রুপে বিভক্ত করে রাউন্ড রবীন লীগ ভিত্তিতে গ্রুপ পর্যায়ের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে খেলার মাধ্যমে দুটি দলকে গ্রুপ-৪ এ উন্নীত করা হবে এবং দল দুটি ২০২৫ ডেভিস কাপ এশিয়া/ওশানিয়া অঞ্চল গ্রুপ-৪ এর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন
ডেভিস কাপ টেনিসে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ |
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলের সদস্যদের নাম নিম্নে উল্লেখ কর হলো:
১। জারিফ আবরার - সেনানিবাস অফিসার্স ক্লাব, ঢাকা
২। মো: হানিফ মুন্না - জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্স
৩। মোহাম্মদ রুস্তম আলী, আমেরিকান ক্লাব, ঢাকা
৪। মো: দ্বীন ইসলাম - ইন্টারন্যশনাল ক্লাব, ঢাকা
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক : মো: আলমগীর হোসেন - জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্স
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশ দল ২৪ নভেম্বর ঢাকার উদ্দেশ্যে বাহরাইন ত্যাগ করবে এবং পরদিন দেশে ফিরে আসবে।
অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন টেনিস ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় রাফায়েল নাদাল। আসছে নভেম্বরে মালাগায় ডেভিস কাপ খেলে টেনিসকে বিদায় জানাবেন স্প্যানিশ এই কিংবদন্তি।
বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় নাদাল নিশ্চিত করেন তার অবসরের খবর। অবসরের কারণ হিসেবে মূলত চোটের দিকে ইঙ্গিত নাদালের,
“আমি সবাইকে জানাতে চাচ্ছি পেশাদার টেনিস খেলা থেকে অবসরে যাচ্ছি। বাস্তবতা হচ্ছে গত দুই বছর বেশ কঠিন সময়ই পার করতে হয়েছে আমাকে। সীমাবদ্ধতা ছাড়া আমার মনে হয় না খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।”
গত দুই বছর থেকেই চোটের সাথে লড়াই করে চলছেন নাদাল। খুব একটা খেলার সুযোগও পাননি। তাতে অবসর যে তিনি নিবেন তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল কিছুটা আগে থেকেই। বৃহস্পতিবার সেই ঘোষণাটাই তিনি দিয়ে দিয়েছেন।
গ্র্যান্ডস্ল্যামের দিক থেকে নাদাল পিছিয়ে আছেন কেবল নোভাক জোকোভিচের থেকে। সবমিলে ২২ গ্ল্যান্ডস্ল্যাম জিতেছেন নাদাল, এর ভেতর রেকর্ড ১৪বার জিতেছেন ফরাসি ওপেন। অস্ট্রেলিয়ান আর উইম্বলডন জিতেছেন দুইবার করে।
৪০ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) ১৩ টেবিল টেনিস খেলোয়াড় চীন থেকে দেশে ফিরেছেন। চীন ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যকার অ্যাডভান্স ট্রেনিং এর আওতায় উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন তারা।
প্রশিক্ষণ দলের সদস্যরা ছিলেন- জয় ইসলাম, নাফিজ ইসলাম, আবুল হাসেম হাসিব, মো. তাহমিদুর রহমান, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. মাহাতাবুর রহমান, মুসরাত জান্নাত সিগমা, আসমা খাতুন, নুসরাত জাহান অনন্যা, হাবিবা খাতুন, খৈ খৈ সাই মারমা ও রেশমী। আর প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিকেএসপির কোচ ইসরাত জাহান নাহিমা।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুনীরুল ইসলাম উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা টেবিল টেনিস দলের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সংস্থাটির মহাপরিচালক সবার খোঁজখবর নেন।
চীনের হুনান প্রদেশের ভোকেশনাল কলেজে গত ২৮ জুলাই থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পটি। প্রশিক্ষণের যাবতীয় ব্যয় বহন করে চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন এজেন্সি।