টেনিসে ‘বিগ থ্রি’র অধ্যায় প্রায় শেষ। রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদাল বিদায় নিয়েছেন আগেই। আরেক প্রতিনিধি নোভাক জোকোভিচ শুধু গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলছেন। স্পষ্টই, সার্বিয়ান তারকাও ক্যারিয়ারের সেরা সময় পেছনে ফেলে এসেছেন। গগনে নতুন তারা ইয়ানিক সিনার-কার্লোস আলকারাজ। দুজনই র্যাঙ্কিংয়ে ১-২ নম্বরে আছেন।
শীর্ষ বাছাই সিনারের কাছে নিজের এই উত্থান যেন স্বপ্নের মতো। আর্থিক টানাপোড়েনে ক্যারিয়ার থিতু হওয়ার আগেই যিনি শেষের কথা ভেবেছিলেন, তাঁর কাছে এমন মনে হওয়াটা স্বভাবিক ব্যাপারই। একদিন মা-বাবাকে কথা দিয়েছিলেন, নিজের ২৩-২৪ বয়সে যদি ২০০ র্যাঙ্কিং বাছাইয়ের বাইরে থাকেন, তবে খেলা ছেড়ে দেবেন।
আজ ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডে দাপুটে জয় পেয়েছেন সিনার। হার্ড কোর্ট মাত্র এক ঘণ্টা ৩৮ মিনিটে উড়িয়ে দিয়েছেন চেক প্রতিদ্বন্দ্বী ভিত কপ্রিভাকে।
আরও পড়ুন
আমরা ইউরোপের জন্য প্রস্তুত নই: ইউনাইটেড কোচ |
![]() |
এই টুর্নামেন্টের আগে আলকারাজকে হারিয়ে উইম্বলডনের ট্রফি ক্যাবিনেটে তোলেন সিনার। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা, ইতালিয়ান টেনিস তারকার নামের পাশে এখন চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা।
কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরুর দিকটা এত মসৃণ ছিল না সিনারের। সেই বাস্তবতা তুলে ধরে বলেন,
'আমি যখন বাড়ি ছেড়ে বের হয়েছিলাম, তখন বাবা মাকে বলেছিলাম, যদি ২৩ বা ২৪ বছর বয়সে শীর্ষ ২০০ বাছাইয়ের বাইরে থাকি, তবে খেলা ছেড়ে দেব। কারণ আমাদের তখন টাকার অভাব ছিল। টুর্নামেন্টে ভ্রমণ করা, কোচ রাখা, এসব অনেক ব্যয়সাপেক্ষ।’
নিজের বর্তমান অবস্থাকে অবিশ্বাস্য মনে হয় সিনারের,
‘আমি ভাগ্যবান, ১৮ বছর বয়সেই উপার্জন শুরু করি। তখন থেকেই কিছুটা নিরাপদ বোধ করি। ছোট বেলায় অনেক স্বপ্ন দেখতাম। আমি বলতাম হয়তো একদিন নাম্বার ওয়ান হব বা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতব। কিন্তু সেটা কেবল স্বপ্নই ছিল। আজ আমি যে অবস্থানে আছি, তা আমার কল্পনারও বাইরে।'
ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত ২০টি শিরোপা জিতেছেনে সিনার। পুরস্কারের অর্থ ৪ কোটি ৬২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮৭ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪০০ কোটিরও বেশি।
আরও পড়ুন
ক্যারিয়ার সেরা র্যাঙ্কিংয়ে গ্রিন, হেড-মার্শের লাফ |
![]() |
এক সময় সিনার মনে করতেন, শীর্ষ ১০০ বাছাইয়ের মধ্যে ঢুকতে পারলে এটাই তাঁর সেরা অর্জন হবে। কিন্তু এখন তাঁর লক্ষ্য বড় বড় টুর্নামেন্টে জেতা,
'এখন আমি বুঝি, যদি ভালো খেলি তবে টুর্নামেন্ট জিততে পারি। দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। তবে ছোটবেলায় আমার স্বপ্ন ছিল একদিন যদি শীর্ষ ১০০ বাছাইয়ের মধ্যে ঢুকতে পারি, সেটাই হবে সবচেয়ে বড় সাফল্য। এখন যা পেয়েছি, সবই আমার কাছে বাড়তি প্রাপ্তি।'
সিনারের চারটি গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপার দুটি এসেছে এই বছর— অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আর উইম্বলডনে। এর মাঝেই দুর্ঘটনাক্রমে নিষিদ্ধ পদার্থ গ্রহণের কারণে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। কাল ইউএস ওপেনে দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্সেই পপিরিনের বিপক্ষে কোর্টে নামবেন সিনার।
২৫ আগস্ট ২০২৫, ৭:১৬ পিএম
ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডে দাপুটে জয়ে যাত্রা শুরু করেছেন বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা ইয়ানিক সিনার। নিউইয়র্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে চেক প্রতিদ্বন্দ্বী ভিত কপ্রিভাকে সরাসরি সেটে ৬-১, ৬-১, ৬-২ গেমে হারান এই ইতালীয় তারকা।
ম্যাচটি শেষ হয় মাত্র এক ঘণ্টা ৩৮ মিনিটে। এ জয়ে হার্ড কোর্ট গ্র্যান্ড স্ল্যামে টানা ২২তম জয় পেলেন সিনার।
সাম্প্রতিক অসুস্থতা কাটিয়ে কোর্টে ফিরেছেন সিনার। সিনসিনাটি ওপেনের ফাইনালে অসুস্থতার কারণে আলকারাজের বিপক্ষে ম্যাচ ছেড়ে দিতে হয়েছিল। তবে ইউএস ওপেনে তার খেলায় কোনো দুর্বলতা দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন
নতুন লুকে দাপুটে জয়ে আলকারাজের শুরু |
![]() |
ম্যাচ শেষে সিনার বলেন,
“আমি খুব খুশি যে আবার সুস্থ হয়েছি এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সেরা অবস্থায় খেলতে।”
ফ্লাশিং মিডোতে ফিরে নিজের অনুভূতির কথা জানিয়ে সিনার বলেন,
“এখানে আসা সব সময়ই বিশেষ লাগে। প্রতি বছর পরিস্থিতি ভিন্ন হলেও লক্ষ্য থাকে একই, ভালোভাবে শুরু করা। আবার ফিরে এসে সেরাদের সঙ্গে খেলতে পারা সত্যিই দারুণ অভিজ্ঞতা।”
২৪ বছর বয়সী এই ইতালীয় তারকা বর্তমানে ইউএস ওপেনে শিরোপা রক্ষার লড়াইয়ে আছেন। গত এক বছরে সিনার তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। ২০২৪ সালের ইউএস ওপেন, এ বছরের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং গত মাসের উইম্বলডন। একমাত্র হারের স্বাদ পেয়েছেন ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের বিপক্ষে।
দ্বিতীয় রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্সেই পপিরিনের বিপক্ষে কোর্টে নামবেন সিনার।
ইউএস ওপেনের নতুন আসরে দারুণ সূচনা করলেন স্প্যানিশ স্পেনের তারকা কার্লোস আলকারাজ। নিউইয়র্কের ফ্লাশিং মিডোতে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রেইলি ওপেলকাকে সরাসরি সেটে ৬-৪, ৭-৫ ও ৬-৪ গেমে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছেন বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের ২ নম্বর খেলোয়াড় আরকারাজ।
২০২২ সালের ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন আরকারাজ। তিন বছর আগে জেতা সেই শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে এগোচ্ছেন তিনি।
শক্তিশালী সার্ভিসের জন্য খ্যাত ওপেলকার বিপক্ষে এদিন আলকারাজ ছিলেন নিখুঁত। আনফোর্সড এরর ছিল মাত্র ১৭টি। প্রথম সার্ভে ৫৮টির মধ্যে ৫০টিতে পয়েন্ট জিতেছেন। তিনটি ব্রেক পয়েন্ট বাঁচানোর পাশাপাশি তিনি ওপেলকার সার্ভ ভেঙেছেন তিনবার। গ্র্যান্ড স্ল্যামের প্রথম রাউন্ডে তার রেকর্ড এখন ১৯-০।
আরও পড়ুন
বিতর্ক-খেলা বন্ধ, প্রথম রাউন্ডে বিদায় সাবেক চ্যাম্পিয়নের |
![]() |
তবে শুধু কোর্টের পারফরম্যান্স নয়, ফ্লাশিং মিডোতে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল আলকারাজের নতুন বাজ কাট হেয়ারস্টাইল। ২২ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ তারকা এবার হাজির হয়েছেন একেবারে নতুন লুকে, মাথা শেভ করা অবস্থায়।
গত সপ্তাহে ইউএস ওপেনের মিক্সড ডাবলসে মাথাভর্তি চুলে দেখা গিয়েছিল আলকারাজকে। সিঙ্গেলসে কোর্টে নামার আগে তার নতুন চেহারা নিয়ে তাই বেশ কৌতূহল তৈরি হয় দর্শকদের মধ্যে। এমনকি গলফ তারকা ররি ম্যাকইলরয়ও মজা করে তার মাথা ছুঁয়ে দেখেন।
টেনিস কিংবদন্তি জন ম্যাকেনরো ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে আলকারাজের নতুন লুক নিয়ে রসিকতা করেন।
“প্রথমেই বলি, তার হেয়ারকাটটা। এটা কি স্পেনে তার হেয়ার স্টাইলিস্ট দিয়েছেন? যাকে উইম্বলডনেও এনেছিলেন। নাকি নিউইয়র্কেই করিয়েছেন? কারণ শহরে তো এই বাজ কাট মাত্র ২০ ডলারে করানো যায়।”
ম্যাচ শেষে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে দর্শকদের উদ্দেশ্যে হেয়ারকাট নিয়ে রসিকতা করেন আলকারাজ নিজেও।
“আমাকে দর্শকদের জিজ্ঞাসা করতে হবে, নতুন হেয়ারকাটটা ভালো লেগেছে কি না। ভালো লেগেছে, তাই তো?”
উত্তরে উল্লাস ভেসে ওঠে গ্যালারিতে। তাই তো আলকারাজ বলেন, 'আমার মনে হচ্ছে, ওরা পছন্দ করেছে।'
ইউএস ওপেনে প্রথম রাউন্ডেই থেমে গেল দানিয়েল মেদভেদেভের যাত্রা। ফরাসি বেঞ্জামিন বনজির কাছে ৬-৩, ৭-৫, ৬-৭ (৫-৭), ০-৬, ৬-৪ গেমে হেরে গেছেন টুর্নামেন্টের ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়ন। হারের হতাশায় মেজাজ হারিয়ে নিজের র্যাকেট ভেঙে ফেলেন ১৩ নম্বর বাছাই মেদভেদেভ।
এই ম্যাচে ঘটে যায় এক নাটকীয় ঘটনা। ম্যাচ চলাকালীন কোর্টে ঢুকে পড়েন এক ফটোগ্রাফার। এ ঘটনায় প্রায় সাত মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। ফরাসি খেলোয়াড় বনজি তখন ম্যাচ জয়ের জন্য সার্ভ করছিলেন (৬-৩, ৭-৫, ৫-৪)।
চেয়ার আম্পায়ার গ্রেগ অ্যালেনসওর্থ ঘোষণা দেন, বিলম্বের কারণে বনজি আবার প্রথম সার্ভ পাবেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ার আম্পায়ারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান মেদভেদেভ। এরপর দর্শকদের উসকে দেন তিনি, এতে উত্তেজনা আরো বেড়ে যায়। পরে বনজি ডাবল ফল্ট করলে মেদভেদেভ সেই সেট উদ্ধার করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ নিজের করে নেন ফরাসি তারকাই।
এই হারে দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ হলো মেদভেদেভের ২০২৫ সালের গ্র্যান্ড স্লাম মৌসুম। টানা তৃতীয়বার প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিলেন তিনি। এ বছর কেবল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেই প্রথম রাউন্ড জিতেছিলেন রাশিয়ান তারকা, তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে যান লার্নার টিয়েনের কাছে।
ম্যাচ শেষে বনজি বলেন, 'এমন অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি। পরিবেশ ছিল ভীষণ উত্তপ্ত, কিন্তু মনোযোগ ধরে রেখে শেষ পর্যন্ত জিততে পেরেছি।'
মেদভেদেভ বললেন, 'আমি ফটোগ্রাফারের ওপর রাগ করিনি, আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের ওপর বিরক্ত হয়েছিলাম। দর্শকসারিতে শব্দ হলে কখনও দ্বিতীয় সার্ভ দেওয়া হয় না। কিন্তু এবার আম্পায়ার আবার প্রথম সার্ভ দিলেন। এ কারণেই আমি ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম।'
এদিকে মাঠে ঢুকে পড়ায় কপাল পুড়েছে সেই ফটোগ্রাফারের। কোর্ট থেকে তাঁকে বের করে দেওয়া হয় এবং তার অনুমতিপত্র বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড স্টেটস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (ইইউএসটিএ)।
বয়স ৩৮ পেরোলেও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নোভাক জোকোভিচ। তবে ম্যাচ ফিটনেসের কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে কোর্টে। ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডেই যেমন ১৯ বছর বয়সী আমেরিকান তরুণ লার্নার টিয়েনের বিপক্ষে জিতলেও, ম্যাচজুড়ে শারীরিকভাবে ভুগেছেন সার্বিয়ান এই কিংবদন্তি।
টিয়েনকে ৬-১, ৭-৬ (৭-৩), ৬-২ গেমে হারিয়েছেন জোকোভিচ। তবে দ্বিতীয় সেটে ছন্দ হারিয়ে ফেলেন তিনি । আর্দ্র আবহাওয়ায় কোর্টে টিকে থাকতেই কষ্ট হচ্ছিল তার। টাইব্রেকারে সেট জয়ের পর পায়ে সমস্যার কারণে চিকিৎসাও নিতে হয় তাকে।
তবে ম্যাচ শেষে জোকোভিচ বলেন,
“কোনো ইনজুরি নেই। তবে দীর্ঘ র্যালি চালিয়ে যেতে, পয়েন্টের পর দ্রুত রিকভারি করতে কষ্ট হচ্ছিল। ছয় সপ্তাহ কোনো ম্যাচ খেলিনি। প্রথম সেটে ভালো খেলেছি, কিন্তু দ্বিতীয় সেটে কোর্টে টিকে থাকার লড়াই করতে হয়েছে।”
গ্র্যান্ড স্ল্যাম টেনিসে জোকোভিচের এটি টানা ৭৫তম প্রথম রাউন্ড জয়, যা ওপেন যুগে রেকর্ড। উইম্বলডনের সেমিফাইনাল হারের পর এটি ছিলো জোকোভিচের প্রথম অফিসিয়াল ম্যাচ।
আরও পড়ুন
ইউএস ওপেনেও আলকারাজ-সিনারের ধ্রুপদী দ্বৈরথ |
![]() |
২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী এই কিংবদন্তি সপ্তম বাছাই হিসেবে খেলছেন এবারের ইউএস ওপেনে। বর্তমানে জোকোভিচ শুধুই গ্র্যান্ড স্ল্যামে মনোযোগ দিচ্ছেন, এড়িয়ে যাচ্ছেন ছোট টুর্নামেন্টগুলো। এবারের ইউএস ওপেনের আগে টরন্টো ও সিনসিনাটির মাস্টার্স খেলেননি তিনি।
দর্শকদের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জোকোভিচ বলেন,
“লার্নারের বয়সটা যদি আমার থাকত! ত্রিশের শেষ ভাগে এসে আসল ব্যাপার হলো এনার্জি বাঁচিয়ে রাখা। এখনও আমার ড্রাইভ আছে, ফ্লেয়ার আছে। আর তোমরা (দর্শকরা) আমাকে এনার্জি দাও। আশা করি এভাবে চালিয়ে যেতে পারব।”
বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্লাম শুরু হচ্ছে আজ। ইউএস ওপেন শুরুর আগে আলোচনাটা চলছেই- এবারও কি আলকারাজ-সিনারের ধ্রুপদী লড়াই? টেনিসের ‘বিগ থ্রি’ এখন অতীত। হার্ড কোর্ট, ক্লে কোর্ট, ঘাসের কোর্ট-সবখানেই এখন আলকারাজ-সিনারের দ্বৈরথ।
আলোচনা হওয়াটাও তাই স্বাভাবিক। শুধু চলতি বছরে এ পর্যন্ত চারটি ফাইনালে দেখা হয়েছে কার্লোস আলকারাজ ও ইয়ানিক সিনারের। এর মধ্যে দুই গ্র্যান্ড স্লাম- ফ্রেঞ্চ ওপেন ও উইম্বলডনে কাব্যিক দুই ফাইনাল দেখেছে ভক্তরা। তবে চার ফাইনালের মধ্যে ফ্রেঞ্চ ওপেন, এটিপি মাস্টার্স সিনিসিটি ও রোমে সিনারকে হারিয়ে ট্রফি জেতেন স্প্যানিশ তারকা আলকারাজ। তাঁকে হারিয়ে উইম্বলডন জেতেন ইতালিয়ান তারকা সিনার।
রাফায়েল নাদাল ও রজার ফেদেরার প্রতিযোগিতা ছেড়ে দিয়েছেন। বড় তিনের শেষ সদস্য নোভাক জোকোভিচ খেলা চালিয়ে গেলেও তাঁর ক্যারিয়ার এখন সায়াহ্নে। গগনে নতুন তারা এখন আলকারাজ-সিনার। র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই তারকার সম্প্রতি পারফরম্যান্স যেন সেই প্রশ্নই রাখছে, চোটমুক্ত ও ফিটনেস ঠিক থাকলে ইউএস ওপেনে ‘সিনকারাস’ ফাইনাল হবে না কেন?
ইউএস ওপেনের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সিনার। ২০২২ সালে আলাকারাজও জিতেছেনে একবার। মজার ব্যাপার, সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে চারটি গ্র্যান্ড স্লামের মধ্যে ইউএস ওপেনে নতুন কেউ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রবণতা বেশি!
তুলনামূলক ধীরগতির হার্ড কোর্ট, আর্দ্র আবহাওয়া এবং ব্যস্ত মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ড স্লাম হওয়ায় টানা সাত বছরে ছয়জন ভিন্ন ভিন্ন চ্যাম্পিয়ন পাওয়া গেছে। শুধু জোকোভিচই এ সময়ে দুবার শিরোপা জিতেছেন। যদিও এখন তাঁর বয়স ৩৮, তবুও এই সার্বিয়ান কিংবদন্তিই রয়ে গেছেন সিনার ও আলকারাজকে থামানোর দাবিদার হিসেবে।
জার্মানির তৃতীয় বাছাই আলেকজান্ডার জভেরেভ এখনও কোনো গ্র্যান্ড স্লাম জিততে পারেননি। তাঁর সামর্থ্য থাকলেও সেরা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যায়। এই বাধা কাটাতে তিনবারের গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালিস্ট জভেরেভ সম্প্রতি টনি নাদালের শরণাপন্ন হয়েছেন—যিনি রাফায়েল নাদালের চাচা ও কোচ ছিলেন।
আরও পড়ুন
ফতুল্লা মাঠ দেখে আমার খুব কান্না পাচ্ছিল: বুলবুল |
![]() |
ভাতিজা রাফায়েল নাদাল ২২টি গ্র্যান্ড স্লামের মধ্যে ১৬টিতে চ্যাম্পিয়ন হয় টনির অধীনে। উইম্বলডনের প্রথম রাউন্ড থেকে ছিটকে যাওয়ার পর জভেরেভ গিয়েছিলেন মায়োর্কায় নাদালের একাডেমিতে। সেখানেই তিনি জানান, মানসিকভাবে কঠিন সময় থেকে বেরিয়ে আসতে তিনি মনোবিজ্ঞানীর সহায়তা নিচ্ছেন।
টনি নাদাল বিবিসি স্পোর্টকে টনি বলেন,
‘অবশ্যই আলকারাজ ও সিনারকে হারানো সহজ নয়। কিন্তু অন্য অনেকের চেয়ে তার (জভেরেভ) তাদের হারানোর সম্ভাবনা বেশি। এটাই আমি তাকে বুঝিয়েছি।’
আলকারাজ ও সিনারকে হারানো কঠিন হলেও সম্ভব বলছেন টনি,
‘সবাই ভাবে আলকারাজ ও সিনারকে হারানো কঠিন। কিন্তু আমি তাকে বলেছি, রাফায়েল, রজার ফেদেরার ও জকোভিচও অন্তত সিনার বা আলকারাজের মতোই শক্তিশালী ছিলেন। তবুও সেই সময়ে ওয়ারিঙ্কা ও মারে তিনটি করে গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছিল। সব সময় সুযোগ থাকবে, তবে প্রতিটি সুযোগেই তাকে মানসিকভাবে বিশাল লড়াই চালাতে হবে।’
আমেরিকানদের মধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চতুর্থ বাছাই টেলর ফ্রিটজ, যিনি গত বছর ফাইনালে সিনারের কাছে হেরেছিলেন। এ ছাড়া ২০২৩ সালের সেমিফাইনালিস্ট বেন শেল্টনও আছেন আলোচনায়।
যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকেরা অপেক্ষায় আছেন ২০০৩ সালে অ্যান্ডি রডিকের পর প্রথম কোনো মার্কিন পুরুষ চ্যাম্পিয়ন দেখার জন্য। ব্রিটিশ নাম্বার ওয়ান জ্যাক ড্রেপারের কাছ থেকেও অনেক প্রত্যাশা। গত বছর তিনি দুর্দান্ত এক গ্র্যান্ড স্লামে সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন। তবে ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতি এই খেলোয়াড় হাতেরে চোটের কারণে ভুগছেন এবং জুলাইয়ে উইম্বলডনের শুরুতেই বিদায় নেওয়ার পর আর সিঙ্গেলস খেলেননি।
আজ প্রথম রাউন্ডে কোর্টে নামছেন শেল্টন, ফ্রিটজ, শেভচেঙ্কোরা। কাল জোকোভিচ. পরশু আলকারাজ-সিনারদের ইউএস ওপেনের অভিযান শুরু হবে।
১ দিন আগে
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৪ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৬ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৮ দিন আগে