
নিউ ইয়র্কের কার্ড কোর্টে আবারও রাজত্ব দেখালেন কার্লোস আলকারাজ। ২২ বছর বয়সেই দ্বিতীয়বারের মতো জিতলেন ইউএস ওপেনের ট্রফি। ফাইনালে চার সেটের লড়াইয়ে হারালেন ইতালির ইয়ানিক সিনারকে। এ জয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা নিজের করে নেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরের আসনও পুনরুদ্ধার করলেন এই স্প্যানিশ তারকা।
জয়ের পর টেনিস বিশ্লেষক ও সাবেক গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী ম্যাটস ভিলান্ডার আলকারাজকে ভাসালেন প্রশংসায়। তাঁর মতে, আলকারাজের খেলায় কোনো দুর্বলতা নেই। বরং বয়স, ফিটনেস ও খেলার মান বিবেচনায় ভবিষ্যতে রজার ফেদেরারের ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড ছোঁয়ার মতো সামর্থ্য রাখেন তিনি।
আলকারাজ প্রসঙ্গে ভিলান্ডার বলেন, ‘আমি মনে করি ও আরও অনেক জিতবে। প্রশ্ন হলো- সেটা কি ফেদেরার, নোভাক জোকোভিচ বা রাফায়েল নাদালের সমান হবে? ২০টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারবে? আমার মনে হয় এর যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।’
বর্তমানে পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জিতেছেন জোকোভিচ (২৪)। এরপর আছেন নাদাল (২২) ও ফেদেরার (২০)। আলকারাজ এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়টি শিরোপা জিতেছেন। তবে তাঁর বয়স ও ধারাবাহিকতা বিবেচনায় টেনিস বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সময়টা কেবল তাঁরই।
২০২৫ সালে এ পর্যন্ত চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে দুটি জিতেছেন আলকারাজ- ফ্রেঞ্চ ওপেন ও ইউএস ওপেন। অন্য দুটি জিতেছেন তাঁরই সমসাময়িক প্রতিদ্বন্দ্বী সিনার, যিনি ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত চারটি শিরোপা জিতেছেন। মৌসুমজুড়ে দুজনই বাকি সবার চেয়ে অনেক এগিয়ে। তবে ফ্লাশিং মিডোর ফাইনালে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও, সেদিন স্পষ্টতই এগিয়ে ছিলেন আলকারাজ।
ভিলান্ডার বলেন, ‘সে এতটাই মনোযোগী ছিল, ভুল প্রায় করেনি বললেই চলে। সার্ভ যেমন ছিল, তাতে কোনো দুর্বলতা চোখে পড়েনি। ভয়ংকর ব্যাপার হলো- সে এখনো এত তরুণ। সিনারকেও আমি এগিয়ে ভাবছিলাম, কিন্তু আলকারাজ যখন ফর্মে থাকে, তখনই সে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়।’
এই জয়ে আলকারাজ আবারও শুরু করলেন বিশ্ব এক নম্বর হিসেবে তাঁর পঞ্চম মেয়াদ। সব মিলিয়ে ৩৭ সপ্তাহ ধরে তিনি শীর্ষে অবস্থান করছেন। ভিলান্ডারের মতে, আলকারাজ শুধু অসাধারণ টেনিস খেলোয়াড়ই নন, তিনি ভদ্র, বিনয়ী ও প্রাণবন্ত একজন প্রতিনিধি, যিনি টেনিসকে আরও জনপ্রিয় করে তুলছেন।
আলকারাজকে দারুণ এক অ্যাম্বাসেডর উল্লেখ করে ভিলান্ডার বলেন, ‘সে সব জায়গায় দারুণ। স্থির, নম্র, তরুণ এবং খেলায় আনন্দ খুঁজে নেয়। ছোটবেলা থেকেই একই কোচিং টিমের সঙ্গে আছে। এ কারণেই সে টেনিসের জন্য এক অসাধারণ দূত।’
ভিলান্ডারের মতে, সিনার ও আলকারাজের দ্বৈরথ টেনিসকে আগামী দিনে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। তিন যোগ করেন, ‘তারা দুজনেই জানে টেনিস দুনিয়া এখন তাদের হাতে। অনেক বছর ধরে তারা গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা ভাগাভাগি করবে।’
No posts available.
২২ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১৩ পিএম

প্রায় ৩ ঘণ্টার দীর্ঘ লড়াইয়ে লরেন্সো মুসেত্তিকে হারিয়ে হেলেনিক চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন নোভাক জোকোভিচ। যার সৌজন্যে এটিপি ট্যুরের উন্মুক্ত যুগের ইতিহাসে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ডও গড়েছেন সার্বিয়ান তারকা।
অ্যাথেন্সে শনিবারের ফাইনালে মুসেত্তিকে ৪-৬, ৬-৩ ও ৭-৫ গেমে হারান জোকোভিচ। দুই শীর্ষ বাছাই খেলোয়াড়ের মধ্যে লড়াইটি চলে ২ ঘণ্টা ৫৯ মিনিট ধরে।
এটিপি ট্যুর ক্যারিয়ারে জোকোভিচের এটি ১০১তম শিরোপা। এই তালিকায় রজার ফেদেরারের চেয়ে মাত্র ২ শিরোপা দূরে জোকোভিচ। আর ১০৯ শিরোপা নিয়ে সবার ওপরে জিমি কনরস।
হার্ড কোর্টের রেকর্ডে ফেদেরারকে এরই মধ্যে পেছনে ফেলে দিয়েছেন জোকোভিচ। এটি তার ৭২তম শিরোপা। এতদিন ৭১ শিরোপা নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন ফেদেরার ও জোকোভিচ।
প্রথম সেটে জোকোভিচকে ৪-৬ গেমে হারিয়ে লিড নেন মুসেত্তি। তবে ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেননি শীর্ষ বাছাই এই তারকা। দ্বিতীয় সেটে ৬-৩ গেমে জেতেন। পরে টাইব্রেকারে যাওয়া তৃতীয় সেট ৭-৫ গেমে নিজের করে নেন তিনি।
তবে এথেন্সে চ্যাম্পিয়ন হলেও তুরিনের এটিপি ফাইনালসে খেলবেন না জোকোভিচ। কাঁধের চোটের কারণে নিজ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সার্বিয়ান তারকা। ফলে তার জায়গায় সুযোগ পাচ্ছেন রানার্স-আপ হওয়া মুসেত্তি।

গত সেপ্টেবরে ইউএস ওপেনের ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের কাছে হেরে যান ইয়ানিক সিনার। সেই ম্যাচ হারের ফলে ৬৫ সপ্তাহ পর র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান হারিয়ে ফেলেন ইতালিয়ান তারকা। দুই মাস পর আবারও শীর্ষে ওঠার হাতছানি দুই নম্বর বাছাই সিনারের।
সোমবার প্যারিস মাস্টার্সের ফাইনালে জয় পেলেই শীর্ষে উঠবেন এই তারকা।
প্যারিস মাস্টার্স শুরুর আগে চলতি বছর র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ফেরাকে অসম্ভব বলেছিলেন সিনার। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে ক্যামেরন নরির কাছে হেরে যান শীর্ষ বাছাই আলকারাজ। ফলে আবারও শীর্ষে ওঠার রাস্তা তৈরি হয় সিনারের।
আরও পড়ুন
| আলকারাজকে হারিয়ে চমক নরির |
|
শনিবার রাতে সেমিফাইনালে আলেকজান্ডার জেভারেভকে ৬-০, ৬-১ সেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছান সিনার। ইনডোরে সিনারের এটি টানা ২৫ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড। এই জয়ে প্রথমবারের মতো প্যারিস মাস্টার্সের ফাইনালে উঠলেন সিনার।
প্যারিসের লা ডিফেন্স এরিনায় কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারেননি তৃতীয় বাছাই জেভারেভ। তিনটি ব্রেক পয়েন্ট জিতে ৬-০ তে প্রথম সেট জিতে নেন সিনার। প্রথম সেট মাত্র ৩০ মিনিটে জেতেন তিনি।
দ্বিতীয় সেটেও ধরে রাখেন আধিপত্য। দুটি ব্রেক পয়েন্ট নিজের করে নিয়ে ৬-১ ব্যবধানে জিতে নেন সেট।
ফাইনালে ফ্রান্সের ফ্লেক্স অগার-আলিয়াসিমের বিপক্ষে নামবেন সিনার। সেমিফাইনালে আলেকজান্ডার বুবলিককে ৭-৬(৭-৩), ৬-৪ সেটে হারিয়ে ফাইনালে ওঠেন এই ফরাসি তারকা।

ক্যামেরন নরির কাছে প্যারিস মাস্টার্সের দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে বিদায় নিয়েছিলেন শীর্ষ বাছাই কার্লোস আলকারাজ। তাঁর প্রতিদ্বন্দী দুই নম্বর বাছাই ইয়ানিক সিনার অবশ্য হতে দেননি কোন অঘটন। বেন শেলটনকে সহজে হারিয়ে প্রথমবার প্যারিস মাস্টার্সের সেমিফাইনালে পৌঁছালেন ইতালিয়ান এই তারকা। ইনডোরে সিনারের এটি টানা ২৪ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড।
প্যারিসের লা ডিফেন্স এরিনায় শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম বাছাই শেলটনকে সরাসরি ৬-৩, ৬-৩ সেটে হারান সিনার। এই জয়ে বিশ্ব র্যাংকিংয়ের আবারো শীর্ষস্থান দখলের কাছাকাছি এগিয়ে গেলেন এই তারকা। সোমবার প্যারিস মাস্টার্সের শিরোপা জিতলে চলতি বছর প্রথম মাস্টার্স শিরোপা ঘরে তুলবেন সিনার। সেইসাথে বিশ্ব র্যাংকিংয়ের এক নম্বর স্থান আবারো পুনরুদ্ধার করবেন। ম্যাচ শেষে সিনার জানালেন, তিনি এই মুহূর্তে র্যাংকিং নিয়ে ভাবছেন না।
এদিন দ্রত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মাত্র ৭০ মিনিটে জয় নিশ্চিত করেন সিনার। শেলটনের বিপক্ষে এটি টানা সপ্তম জয় ২৪ বছর বয়সি এই তারকার। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত সিনার বলেন,
‘খুবই খুশি। আজকের ম্যাচ খুব কঠিন ছিল। তাঁর সার্ভিং অসাধারণ, তবে আমি ভালো খেলতে পেরেছি।’
সেমিফাইনাল সিনারের প্রতিপক্ষ জার্মান তৃতীয় বাছাই অ্যালেক্সান্ডার জভারেভ। জভারেভ দুই ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ডানিয়েল মেদভেদভকে ২-৬, ৬-৩, ৭-৬ (৭-৫) সেটে হারিয়েছেন।

প্যারিস মাস্টার্সের কোর্ট বড় অঘটনের সাক্ষী হলো! উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে কার্লোস আলকারাজের কাছে হারের শোধ নিলেন ক্যামেরন নরি। বিশ্বের এক নম্বর বাছাইকে ৪-৬, ৬-৩, ৬-৪ সেটে হারিয়ে দিলেন ৩০ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ তারকা।
আলকারাজের বিপক্ষে এটাই নরির ক্যারিয়ারের প্রথম জয়। টুর্নামেন্টে টানা ১৭ ম্যাচ জয়ের পরে তিনি শেষ ষোলোতে পৌঁছালেন।
আলকারাজকে হারানোকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় জয় উল্লেখ করে নরি বলেন,
‘এটা আমার জন্য বিশাল কিছু। চোট থেকে ফিরে এসেছি, গত বছর এখানে প্রথম রাউন্ডের বাছাই পর্বেই হেরেছিলাম। এবার সেই জায়গা থেকে ফিরে ক্যারিয়ারের বড় জয়টা পেয়েছি। বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড়ের বিপক্ষে প্রথম জয়, এমন আত্মবিশ্বাসী একজনের বিপক্ষে জেতা দারুণ অনুভূতি।’
শেষ ষোলোর ম্যাচে আগামীকাল নরি খেলবেন মোনাকোর ভ্যালেন্টিন ভ্যাচেরটের বিপক্ষে।

প্যারিস মাস্টার্স থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেন নোভাক জোকোভিচ। আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে এই ঘোষণা দেন সার্বিয়ান তারকা। টানা দ্বিতীয়বারের মতো মৌসুমের শেষ এটিপি মাস্টার্সে খেলবেন না জোকোভিচ। প্যারিসের লা ডিফেন্স অ্যারেনায় ২৫ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই টুর্নামেন্ট।
এক্সে জোকোভিচ ঘোষণা দেন,
‘প্রিয় প্যারিস, দুর্ভাগ্যবশত আমি এই বছরের প্যারিস মাস্টার্সে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। এখানে অসাধারণ স্মৃতি এবং দুর্দান্ত সাফল্য রয়েছে, বিশেষ করে সাতবার শিরোপা জয় করতে পেরেছি। আশা করি পরের বছর সঙ্গে দেখা হবে।’
চলতি মৌসুমে খুব কম সংখ্যক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন ২৪ বারের গ্র্যান্ড স্লামজয়ী জোকোভিচ। চারটি গ্র্যান্ড স্লামের বাইরে তিনি মাত্র আটটি এটিপি ট্যুরে খেলেছেন। এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন এবং ইউএস ওপেন সব গ্রান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছান এই তারকা।
সবশেষ অফিশিয়াল টুর্নামেন্ট হিসেবে সাংহাই মাস্টার্স খেলেন জোকোভিচ। তবে সেখানে ভালো করতে পারেননি তিনি। বিদায় নেন সেমিফাইনাল থেকে। গত সপ্তাহে সৌদি আরবে সিক্স কিংস স্ল্যামে আমন্ত্রিত ছয়জন খেলোয়াড়ের একজন ছিলেন জোকোভিচ। তবে হেরে যান ইয়ানিক সিনারের কাছে। তারপর তৃতীয় স্থানের জন্য টেলর ফ্রিটজের বিপক্ষে নামেন। কিন্তু এক সেট খেলার পরই কোমরের অস্বস্তিতে খেলা ছেড়ে উঠে যান।