বছরের শেষটা খুব একটা মন্দ হয়নি, লা লিগা বিরতিতে যাওয়ার আগে রিয়াল মাদ্রিদের প্রেক্ষিতে এমনটা বললে খুব একটা ভুল বলা হবে না। আর প্রেক্ষাপটে যদি বার্সেলোনার তুলনা আনা হয়, তাহলে তো কথাই নেই! বার্সেলোনা যেখানে সাত ম্যাচে সর্বহারা হয়ে নেমে গেছে পয়েন্ট টেবিলের তিনে, সেখানে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা আতলেতিকোর পয়েন্ট ব্যবধান মাত্র এক, দুই দল খেলেছেও একটি করে ম্যাচ কম। কিন্তু নতুন বছর ২০২৫ এ পা রাখার আগ মুহূর্তে আবার ঘুরে ফিরে আসছে পুরোনো আলাপ–শীতে নতুন কোনো মুখ আসবে কী?
আগের মৌসুমে পুরো বছরজুড়ে জোড়াতালি দিয়ে ব্যাকলাইন সাজিয়েছিলেন আনচেলত্তি। ছিলেন না কোর্তোয়া, মিলিতাও, আলাবার কেউই। ভিনিসিয়ুস ভুগেছেন একটা লম্বা সময়ের ইনজুরিতে। তারপরও লা লিগা, সুপারকোপা আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা কেউ আটকাতে পারেনি। এবারের ক্যাম্পেইনের গল্পটা ভিন্ন। টনি ক্রুস অবসর নেওয়ায় সেন্ট্রাল মিডফিল্ডের হোল্ডিং রোলটাতে কাউকে সাইন করায়নি মাদ্রিদ বোর্ড। তার ওপর উলটো আবার এসিএল ইনজুরিতে পড়েছেন মিলিতাও, এসিএল ইনজুরিতে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে চমৎকার এক মৌসুম কাটানো দানি কারভাহালেরও। চ্যাম্পিয়নস লিগে ছয় ম্যাচে তিন হার, লিগে বার্সার কাছে পর্যদুস্ত হওয়ার আর বিলবাওর কাছে নতি স্বীকার–এসব ঘটনার পর আনচেলত্তি যেমন চাপ বোধ করেছেন, তেমনি মাদ্রিদের ইনজুরিপ্রবণ স্কোয়াডে নতুন সাইনিং ভেড়ানোর ব্যাপারে একটা তোরজোড় শোনা গেছে। কিন্তু স্প্যানিশ গণমাধ্যম এএস জানাচ্ছে, মাদ্রিদ ভক্তরা শীতকালে নতুন কোনো সাইনিংয়ের ব্যাপারে আশা করে বসে থাকলে বরং হতাশই হবেন।
আরও পড়ুন
রিয়ালের হয়ে শিরোপা জেতা সবচেয়ে সহজ কাজ: আনচেলত্তি |
![]() |
মাদ্রিদ সবশেষ শীতকালের দলবদলে ভিড়িয়েছিল ব্রাহিম দিয়াজকে, সেটা ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ এর জানুয়ারিতে সেটা ছয় বছরের পুরোনো ঘটনা হয়ে দাঁড়াবে। শীতের সময়ে ট্রান্সফার মার্কেট বোঝাটাও কঠিন, তাই দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের কথা ভেবে মাদ্রিদের সর্বেসর্বা ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ নতুন সাইনিংয়ের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ দেখাননি। এবারও একের পর এক ইনজুরির ভিড়ে দলবদলে সক্রিয় হওয়ার গুঞ্জন উঠলে তিনিই সাফ জানিয়ে দেন, জানুয়ারিতে নতুন কোনো মুখ দেখা যাবে না মাদ্রিদ শিবিরে।
তবে এর পেছনে যৌক্তিক কারণও আছে রিয়াল মাদ্রিদের। ডেভিড আলাবার সেরে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছে রিয়াল মাদ্রিদ এবং স্প্যানিশ গণমাধ্যম রেলেভোর ভাষ্যনুযায়ী, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকেই পূর্ণ দমে ম্যাচ খেলতে পারবেন তিনি। মাদ্রিদের জন্য তাদের ব্যাকলাইনে অবশ্য বড় স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে এসেছেন তাদের কাসতিয়া গ্র্যাজুয়েট রাউল আসেনসিও। তার উপস্থিতি, ইমপ্যাক্ট বিচার করে জানুয়ারিতে নতুন কোনো সেন্টার ব্যাকের দিকে ঝোঁকার ইচ্ছা নেই লস মেরেঙ্গেসদের, জানাচ্ছে এএস। তাছাড়াও আলফনসো ডেভিসকে পরবর্তী মৌসুমের গ্রীষ্ম থেকে পাওয়ার ব্যাপারে মাদ্রিদের আশার পারদ অনেক তুঙ্গে। বোর্ডের ধারণা, মাদ্রিদকে দেওয়া ‘জেন্টলম্যানস এগ্রিমেন্ট’ রক্ষা করবেন তিনি।
মাদ্রিদের এখন সকল মনোযোগ তাই পরবর্তী মৌসুম, অর্থাৎ ২০২৫-২৬ এর গ্রীষ্মের ট্রান্সফার উইন্ডোকে ঘিরে। এবং সেখানে মাদ্রিদের চিন্তা, ধ্যান ধারণা দুটো পজিশন ঘিরে। একজন নতুন রাইট ব্যাক ও সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার সাইন করানো।
নতুন রাইট ব্যাক রোলে এক ট্রেন্ট-আলেক্সান্ডার আরনল্ডকে ছাড়া আর কারো কথা ভাবতে পারছে না মাদ্রিদ বোর্ড। ২৬ বছর বয়সী এই লিভারপুল রাইট ব্যাককে এরই মধ্যে কয়েকবার নতুন চুক্তি সই করার প্রস্তাব দিয়েছে লিভারপুল, যার সবগুলোই প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রেন্ট। আর জুড বেলিংহামের সঙ্গে ভালো সখ্যতা আছে ট্রেন্টের, সেটাও রিয়ালের জন্য বড় অ্যাডভানটেজ। সবকিছু ঠিক থাকলে অল রেডদের লাল ছেড়ে লস মেরেঙ্গেসদের সাদা কালোতে ট্রেন্টকে দেখাটা অসম্ভব কিছু নয়।
আরও পড়ুন
ভিনিসিয়ুস জাদুতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের শিরোপা রিয়ালের |
![]() |
সেন্ট্রাল মিডফিল্ডের রোলের জন্য মাদ্রিদের রাডারে আছেন সান সেবাস্তিয়ানের মার্টিন জুবিমেন্দি, যিনি গত গ্রীষ্মেই লিভারপুলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে থেকে গেছেন রিয়াল সোসিয়েদাদে। আছেন পিএসজির পর্তুগিজ তারকা ভিতিনিয়াও, তবে এখনো কারো প্রতি মনস্থির করেনি মাদ্রিদ বোর্ড। আলেইক্স গার্সিয়ার নামও শোনা গেছে কয়েকবার, কিন্তু মিডফিল্ডের ঘাটতি মেটাতে কার দিকে নজর দিবে রিয়াল মাদ্রিদ, সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো বেশ কয়েকদিন, কিংবা মাস
No posts available.
ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ও বার্সেলোনার সাবেক তারকা ডিফেন্ডার সামুয়েল উমতিতি ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ৩১ বছর বয়সী এই সেন্টার-ব্যাক নিজেই অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন।
উমতিতি সবশেষ ফ্রান্সের লিগ ওয়ানের ক্লাব লিলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। তবে গত দুই মৌসুমে চোটের কারণে মাত্র ১৩ ম্যাচ খেলতে পেরেছেন তিনি। হাঁটুর কার্টিলেজ ক্ষতির কারণে ক্যারিয়ারের শেষভাগটা কাটাতে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে।
অবসর প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উমতিতি লিখেছেন, ‘উত্থান-পতনে ভরা এক ক্যারিয়ারের পর বিদায় বলার সময় এসেছে। আমি সর্বোচ্চটা দিয়েছি আবেগ দিয়ে, কোনো আক্ষেপ নেই।’
আরও পড়ুন
আমোরিমের ওপর আরও আস্থা রাখতে চায় ইউনাইটেড |
![]() |
২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে শিরোপা জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন বাঁ-পায়ের ডিফেন্ডার উমতিতি। বেলজিয়ামের বিপক্ষে সেমিফাইনালে একমাত্র গোলটি করেছিলেন তিনি, যা ফাইনালের পথ খুলে দেয় দিদিয়ের দেশমের দলের সামনে। টুর্নামেন্টে ছয় ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ৩১ ম্যাচ।
ক্লাব ফুটবলে ২০১৬ সালে লিওঁ থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেন উমতিতি। কাতালান ক্লাবের হয়ে সাত মৌসুমে ১৩৩ ম্যাচ খেলেছেন, জিতেছেন দুই লা লিগাসহ সাতটি শিরোপা। তবে ২০১৭-১৮ মৌসুমেই শুরু হয় হাঁটুর সমস্যা। অস্ত্রোপচার না করে খেলে যান তিনি, সেই বছরই লা লিগা জেতার পর ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন। পরে এক সাক্ষাৎকারে উমতিতি বলেছিলেন, ‘আমি দাঁতে দাঁত চেপে খেলেছি, যতটুকু সম্ভব নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
বিশ্বকাপের পর আর কোনো মৌসুমে ১৮ ম্যাচের বেশি খেলতে পারেননি উমতিতি। চিকিৎসা, প্লাজমা থেরাপি নিয়েও চোটের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যান। সীমিত খেলার সুযোগ আর ক্লাবের আর্থিক সমস্যার কারণে ২০২২-২৩ মৌসুমে ইতালিয়ান ক্লাব লেচেতে ধারে পাঠায় বার্সেলোনা। ২০২৩ সালে পারস্পরিক সম্মতিতে চুক্তি বাতিল করে বার্সেলোনা, তখনো উমতিতির তিন বছরের চুক্তি বাকি ছিল কাতালানদের সঙ্গে।
তারপর ফ্রান্সের হয়ে মাত্র ছয় ম্যাচ খেলতে পারেন উমতিতি। গত বছর কোচ দিদিয়ের দেশম তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি, তার জন্য উমতিতিকে ধন্যবাদ জানাতেই হবে। এরপর তার ক্যারিয়ার কঠিন সময়ের মধ্যে গেছে, কিন্তু জাতীয় দলে তিনি অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন।’
আরও পড়ুন
'আমি বেঁচে আছি', মৃত্যুর গুজবের জবাবে আবিদাল |
![]() |
লিওঁর একাডেমি থেকে উঠে আসা উমতিতি ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ১৭০ ম্যাচ খেলেন। সেখান থেকেই বার্সেলোনায় যোগ দেন ২২ বছর বয়সে। ফ্রান্সের হয়ে অভিষেক হয়েছিল ২০১৬ ইউরোয় কোয়ার্টার ফাইনালে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে।
৩১ বছর বয়সেই বাধ্য হয়ে বিদায় নিতে হলো সামুয়েল উমতিতিকে, তবে বিশ্বকাপ জয় আর বার্সেলোনার সোনালি সময়ে অবদান রেখে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন ফুটবল ইতিহাসে।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ডার্বি হারের পরও রুবেন আমোরিমের ওপর আস্থা রাখছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বোর্ড। ইএসপিএনকে ইউনাইটেডের একটি সূত্র জানিয়েছে, আপাতত পর্তুগিজ এই কোচকে আরও কিছুটা সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
গত রোববার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে সিটিজেনদের কাছে ৩-০ গোলে হেরে মৌসুমের সবচেয়ে বাজে শুরুর মুখ দেখেছে ইউনাইটেড। চলতি মৌসুমে এ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে ৪ ম্যাচ খেলে দুটি হার, এক জয় ও এক ড্র করেছে তারা। ৩৩ বছরে লিগে এমন হতাশাজনক শুরু আর হয়নি তাদের। স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ছে ৪০ বছর বয়সী আমোরিমের ওপর।
গত নভেম্বরে এরিক টেন হাগের জায়গায় দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমোরিমের অধীনে ইউনাইটেড ৩১ ম্যাচে ৮টিতে জিততে পেরেছে। তবে বোর্ড এখনও ভরসা হারায়নি তাঁর ওপর থেকে। আগামী শনিবার ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে চেলসির বিপক্ষে ম্যাচেও তাঁকে ডাগআউটে দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
‘আর্সেনাল চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অন্যতম ফেবারিট’ |
![]() |
এনজো মারেসকার চেলসির পর আন্তর্জাতিক বিরতির আগে ব্রেন্টফোর্ড ও সান্ডারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ইউনাইটেড। যদিও আমোরিমের ওপর বোর্ডের সমর্থন কতদিন থাকবে, সে ব্যাপারে এখনই স্পষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।
সূত্র জানাচ্ছে, বোর্ড স্বীকার করছে ফলাফল উন্নত করা জরুরি, তবে আগের মৌসুমের তুলনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে বলেও তাদের বিশ্বাস। পরিসংখ্যানে ইউনাইটেডের অগ্রগতি স্পষ্ট—প্রত্যাশিত গোল, মোট শট, প্রতিপক্ষের বক্সে বল স্পর্শ—বেশ কয়েকটি সূচকেই শীর্ষে ছিল তারা।
ডার্বি হারের দিনও সিটির বিপক্ষে বল দখলে এগিয়ে ছিল ইউনাইটেড। শটের সংখ্যাও প্রায় সমান ছিল দুই দলের। এতে বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার বিশ্বাস তৈরি হয়েছে, মৌসুমের শুরুতে কয়েকটি ম্যাচ খুব অল্প ব্যবধানেই হারতে হয়েছে দলকে।
তবুও বাস্তবতা হলো, প্রথম চার ম্যাচে মাত্র চার পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলে ১৪ নম্বরে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আগামী কয়েক সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে নির্ধারণ করে দেবে, আমোরিমের প্রতি বোর্ডের আস্থা কতটা দীর্ঘ হবে।
চ্যাম্পিয়নস লিগে আর্সেনালকে অন্যতম ফেভারিট মনে করছেন আথলেটিক ক্লাবের ম্যানেজার এরনেস্তো ভালভার্দে। আজ রাতে সান মামেস স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই মিকেল আর্তেতার শিষ্যদের মুখোমুখি হবে স্প্যানিশ ক্লাবটি।
গত মৌসুমে সেমিফাইনালে পিএসজির কাছে হেরে বিদায় নেয় আর্সেনাল। তবে এবার তাদের নিয়ে ভিন্ন রকম বিশ্বাস ভালভার্দের। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আথলেটিক কোচ বলেন, ‘আর্সেনাল এখন পুরোপুরি মনোযোগী। টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল দিক দিয়ে তারা অসাধারণ, আর্তেতা খেলোয়াড়দের মধ্যে জয়ের মানসিকতা ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাই আমার কাছে তারা চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অন্যতম ফেভারিট।’
২০০৫ সালের পর আর কখনো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠতে পারেনি আর্সেনাল। কখনো ইউরোপসেরা হওয়ার স্বাদও পায়নি তারা। তবুও ভালভার্দে সতর্ক হয়ে বলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগে উচ্চমানের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে আমরা সব সময় ভালোবাসি। তবে আমাদের সাবধানে খেলতে হবে এবং সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। কারণ আর্সেনাল কোনো ভুল ক্ষমা করবে না।’
আরও পড়ুন
নতুন ফরম্যাটে অভিযানে নামছে নতুন রিয়াল |
![]() |
দশ বছরের অপেক্ষার পর চ্যাম্পিয়নস লিগে ফিরেছে আথলেটিক। গত মৌসুমে লা লিগায় চতুর্থ হয়ে তারা জায়গা করে নেয় ইউরোপের সেরার মঞ্চে। এর আগে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে থেমে যায় তাদের যাত্রা, যেখানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরে ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভেঙে যায়।
নতুন মৌসুমে টানা তিন জয়ে দুর্দান্ত শুরু করলেও গত শনিবার লিগে আলাভেসের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায় আথলেটিক। এবার ইউরোপীয় মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া তারা।
ম্যাচের আগে দলকে উজ্জীবিত করেছেন ইনিয়াকি উইলিয়ামস। ভাই নিকো উইলিয়ামস চোটের কারণে না খেললেও তিনি আশাবাদী, ‘আমরা বছরের পর বছর লড়াই করেছি এই জায়গায় পৌঁছাতে। এখন স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই। আর্সেনালের মতো দারুণ প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হচ্ছি, যারা কোনো দয়া করে না। তাই সুযোগগুলো কাজে লাগাতেই হবে। ভয় নেই আমাদের, যতদূর সম্ভব যেতে চাই। কঠিন জানি, কিন্তু আড়ালে থেকে লড়াই করতেই আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’
বার্সেলোনা ও ফ্রান্সের সাবেক ডিফেন্ডার এরিক আবিদালকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল মৃত্যুর গুজব। সোমবার একাধিক ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়, দ্বিতীয়বার লিভার প্রতিস্থাপনের জটিলতায় ৪৬ বছর বয়সী এই ফুটবলারের মৃত্যু হয়েছে।
খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় সমর্থক ও ফুটবল বিশ্বে নেমে আসে দুশ্চিন্তার ছায়া। অবশেষে নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরির মাধ্যমে ভুয়া গুজবের জবাব দিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী এই কিংবদন্তি।
ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে এরিক আবিদাল লেখেন,
'কিছু গুজব কখনোই ছড়ানো উচিত না। আমি আমার পরিবারের সাথে আছি, এবং সবকিছু ঠিকঠাক আছে। সম্মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই গুজবের পেছনে আমার পরিবার এবং সন্তানরাও আছে। স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমি ভালো আছি, জীবিত এবং সুস্থ আছি। আপনাদের সহানুভূতির জন্য ধন্যবাদ। আসুন আমরা আসল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দিই।'
মৃত্যুর এই ভুয়া খবর ছড়ানো হয় আবিদালের পুরোনো অসুস্থতাকে ঘিরে। ২০১১ সালে বার্সেলোনায় খেলার সময় তাঁর লিভারে টিউমার ধরা পড়ে। প্রথমে অস্ত্রোপচার করা হয়, তারপর ২০১২ সালে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়।
জীবনের কঠিন সময় পার করার পর ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে আবারও মাঠে ফেরেন আবিদাল। এরপর তিনি মোনাকো ও অলিম্পিয়াকসের হয়ে খেলেন। তবে শারীরিক অবস্থার কারণে ২০১৪ সালে পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানান।
খেলোয়াড় জীবন শেষে বার্সেলোনার ফুটবল ডিরেক্টরের দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন আবিদাল।
ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। কয়েক সপ্তাহ আগে লিগ মৌসুমের পর্দা উঠলেও আজ থেকে শুরু হচ্ছে মহাদেশীয় ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। মাঠে নামছে ইউরোপের নামি-দামি ক্লাবগুলো। নতুন ফরম্যাট, নতুন রোমাঞ্চ আর বাড়তি উত্তেজনা নিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের মৌসুম।
নতুন ফরম্যাট, নতুন রোমাঞ্চ
চ্যাম্পিয়নস লিগের এ মৌসুমে প্রতিটি ক্লাব খেলবে মোট আটটি ম্যাচ— ঘরের মাঠে চারটি, প্রতিপক্ষের মাঠে চারটি। লিগ পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ আট দল সরাসরি জায়গা করে নেবে নকআউট পর্বে। অন্যদিকে নবম থেকে ২৪তম স্থানে থাকা ১৬ দল খেলবে দুই লেগের প্লে-অফ। এখান থেকে আসবে শেষ ষোলোর বাকি আটটি দল। ফলে নকআউটে ওঠার লড়াই এবার আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। লিগ পর্বে ভালো অবস্থানে থাকা দলগুলো পাবে ড্রয়ে বাড়তি সুবিধা।
আরও পড়ুন
ইয়ামালকে নিয়ে বৈঠকে বসছে স্পেন-বার্সা |
![]() |
ইংল্যান্ডের রেকর্ড অংশগ্রহণ
বর্ধিত কলেবরের দ্বিতীয় আসরে অংশ নিচ্ছে মোট ৩৬টি দল। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ছয়টি দল এসেছে ইংল্যান্ড থেকে। চ্যাম্পিয়নস লিগে এক দেশের ছয় ক্লাবের অংশ নেওয়ার নজির এই প্রথম। এতে প্রতিযোগিতায় বাড়ছে উত্তাপ এবং ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে পারস্পরিক লড়াইও হতে পারে দেখার মতো।
শিরোপা জয়ের পুরস্কার
যে দল শিরোপা জিতবে, তারা পাবে হান্ড্রেড মিলিয়ন ডলারের প্রাইজ মানি। এর পাশাপাশি নিশ্চিত হবে পরবর্তী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ লিগ পর্বে সরাসরি খেলার সুযোগ। শুধু তাই নয়, তারা জায়গা করে নেবে ২০২৬ সালের ফিফা ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ এবং ২০২৯ সালের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে। ফলে এবারের ট্রফি জয়ের পুরস্কার কেবল অর্থ নয়, ভবিষ্যতের বড় বড় আসরে সরাসরি খেলার সুযোগও এনে দেবে।
রিয়ালের অভিযান শুরু
চ্যাম্পিয়নস লিগ মানেই আলাদা করে আলোচনায় থাকে রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। এবারের মৌসুমে তারা প্রথম ম্যাচেই নামছে মাঠে। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফরাসি ক্লাব মার্শেইয়ের বিপক্ষে শুরু হবে লস ব্লাঙ্কোসদের শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযান। নতুন মৌসুমে নতুন কোচ জাবি আলোনসো, নতুন খেলোয়াড়ও অনেক।
অন্যদিকে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে আগামী বৃহস্পতিবার। প্রতিপক্ষ নিউক্যাসল ইউনাইটেড, আর ভেন্যু হবে ইংল্যান্ডের সেন্ট জেমস পার্ক।
আরও পড়ুন
লেভানদোভস্কি যেন ফুটবলের ‘জোকোভিচ’ |
![]() |
এবারও পিএসজির স্বপ্ন?
আগামী বছরের ৩০ মে হাঙ্গেরির পুসকাস অ্যারেনা প্রথমবার আয়োজন করবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল। গত মৌসুমের শিরোপা জিততে প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি) খেলেছিল ১৭টি ম্যাচ। তবে এবার ফরম্যাটের কারণে সেরা আটে থাকতে পারলে দুই ম্যাচ কম খেলেই ট্রফি জেতার সুযোগ রয়েছে। ইতালিয়ান গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুমাকে ছেড়ে দিলেও নতুন মৌসুমে শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যেই মাঠে নামছে ফরাসি জায়ান্টরা।
ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে এবার মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড, স্পেন, জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্সের শক্তিশালী ক্লাবগুলো। নতুন ফরম্যাটে ম্যাচের সংখ্যা বেড়েছে, বাড়ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও। তাই ফুটবলপ্রেমীদের জন্য শুরু হতে যাচ্ছে আরও এক রোমাঞ্চকর মৌসুম।