আইসিসি টেস্ট ফান্ডের রেভিনিউ শেয়ারিং মডেল প্রবর্তিত হওয়ায় ২০১৯ সালের মে থেকে বদলে গেছে আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) সূচি। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে থাকা শীর্ষ ৯টি দেশকে নিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ প্রবর্তনের পরিকল্পনা গৃহিত হওয়ায় পর পর দুটি ৪ বছর মেয়াদী এফটিপি চক্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে থাকা তিনটি দল জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ডের সাথে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ৯ টি দলের দ্বি-পাক্ষিক টেস্ট সিরিজ খেলা বাধ্যতামূলক নয়।
মূলত সেই কারণেই এফটিপির সর্বশেষ চক্রে (২০১৯-২০২৩ সালের এপ্রিল) জিম্বাবুয়ে এবং টেস্ট ক্রিকেটের নবাগত আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডকে টেস্টে এড়িয়ে চলেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষস্থানীয় দলগুলো। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রেও (২০২৩-২৭) একই পথে হাঁটছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হয়ে থাকা দলগুলোর অধিকাংশই।
আইসিসির এফটিপি এখন দ্বি-পাক্ষিক সূচিতে পরিণত হওয়ায়, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জিম্বাবুয়ে,আয়ারল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে আগ্রহী নয় অধিকাংশ টেস্ট দল। অথচ, আইসিসির এফটিপির বিগত চক্রের মত চলমান এফটিপিতেও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তিন ফরম্যাটের ম্যাচের সিরিজ খেলতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিসিবি। চলমান চক্রে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্ট খেলা থেকে বিরত থেকেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে জিম্বাবুয়ের টেস্ট উন্নতিতে সহায়কের ভুমিকায় নিউ জিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এফটিপির চলমান চক্রের চার বছরে জিম্বাবুয়ে ১৮টি টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে। সেই তালিকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪টি। এর বাইরে এফটিপির বর্তমান চক্রে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ৮টি ওডিআই এবং ৮টি টি-টোয়েন্টিও খেলার সুযোগ পাচ্ছে।
তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড তুলনামূলক ভালো। চলমান সিরিজের আগে ১৮টি টেস্টে ৮-৭-এ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। মুখোমুখি ৮১টি ওডিআই ম্যাচে ৫১টি জয়ের বিপরীতে ৩০টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই দলের ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচে ১৮-৭-এ এগিয়ে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এক সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে অবদান রাখা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সেই কারণেই জিম্বাবুয়ে দলকে আতিথ্য দেয়াকে একটা রেওয়াজে পরিণত করেছে বিসিবি।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্টে জয়-পরাজয় আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান নড়চড় করবে না। শুধু তা-ই নয়, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। হোমে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ৩টি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজনে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিসিবি।
অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ২ টেস্ট এবং ৩ ওডিআই ম্যাচের সিরিজ আয়োজন করে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ৩২৫ টাকা ভর্তুকী দিয়েছে বিসিবি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ২ টেস্ট, ৩ ওডিআই এবং ২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ আয়োজনে অবশ্য ভর্তুকী গুনতে হয়নি। সেই দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৫৬৭ টাকা মুনাফা করতে পেরেছে বিসিবি। তবে যুক্তরাষ্ট্র-ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ২০২৪ সালের এপ্রিলে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড বড় অঙ্ক ভর্তুকী দিয়েছে। প্রচারসত্ব থেকে প্রত্যাশিত অর্থ আয়ের পরও ভর্তুকীর অঙ্ক ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫৫ টাকা!
এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রচারসত্ব বিক্রি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ভর্তুকীর অঙ্কটা কোথায় দাঁড়ায়, সেই হিসাবটা জানা যাবে সিরিজ শেষেই।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে শুধু আর্থিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না বিসিবি, টেস্টে নীচের সারির দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরমেন্স নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেককে স্মরণীয় করতে চেয়ে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে চরম শিক্ষা পেয়েছিল বিসিবি। পূর্ণশক্তির বাংলাদেশ দল ১৫১ রানে হেরেছে সেই টেস্ট। সাড়ে ছয় বছর পর সেই সিলেটে ফিরতি টেস্টেও লজ্জা দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ৩ উইকেটে।
আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) চলমান চক্রের (২০২৩-২৭) সূচি চূড়ান্ত হয়েছে অনেক আগে। বিসিবির পদচ্যুত সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আমলে। সে কারণেই এফটিপির পরবর্তী সূচি (২০২৭-৩১) চূড়ান্ত হওয়ার আগে সতর্ক হওয়ার পক্ষে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম, “ওদের সাথে খেলে উন্নতি হবে কিংবা সিরিজ আয়োজন করা লাভজনক হবে, এমন তো নয়। জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট সিরিজ এড়াতে পারলে ভালো হতো। আইসিসির পরবর্তী এফটিপির আগে কীভাবে প্লান করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে।”
১১ জুন ২০২৫, ৬:০১ পিএম
৯ জুন ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
এক সপ্তাহও হয়নি আচমকাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণার। এর মাঝেই নতুন দায়িত্ব পেলেন নিকোলাস পুরান। সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারকে অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে মেজর লিগ সকারের (এমএলসি) দল এমআই নিউ ইয়র্ক। তিনি স্থলাভিষিক্ত হলেন আরেক ক্যারিবিয়ান কিরন পোলার্ডেড়, যিনি আগের আসরে দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন।
পুরান ২০২৩ সালে এমএলসিতে নিউ ইয়র্ক দলে যোগ দেন। সেবার তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজিটির শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সিয়াটেল অর্কাস-এর বিপক্ষে ফাইনালে খেলেন মাত্র ৫৫ বলে ১৩৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। টুর্নামেন্ট শেষ করেন আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে।
এমআই, তথা মুম্বাই ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে পুরানের রয়েছে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ আইপিএলের আগে তাকে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তাকে দলে টানে। তবে তখন তাকে কোন ম্যাচে খেলানো হয়নি। পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দেয় তারা। এরপর বাঁহাতি এই ব্যাটার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব (বর্তমানে পাঞ্জাব কিংস), সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এবং বর্তমানে লখনউ সুপার জায়ান্টস দলের হয়ে আইপিএলে খেলেছেন। আইপিএলে মুম্বাই দলে সুবিধা না করলেও তাদের নিউ ইয়র্ক ছাড়াও আইএলটি২০ ফ্রাঞ্চাইজির সাথেও যুক্ত আছেন পুরান।
এমএলসির আসছে আসরে পুরানই একমাত্র নতুন অধিনায়ক নন। সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর অজি তারকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ওয়াশিংটন ফ্রিডম দলের নতুন অধিনায়ক করা হয়েছে। তিনি আরেক অস্ট্রেলিয়ান স্টিভেন স্মিথের জায়গায় নেতৃত্বে এসেছেন।
অন্যদিকে কোরি অ্যান্ডারসন সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নস এর অধিনায়ক হিসেবে তার দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটার হাইনরিখ ক্লাসেন সিয়াটেল অর্কাসের অধিনায়ক হিসেবে তার দায়িত্বে রয়েছেন এবং তিনি নেতৃত্ব অব্যাহত রাখবেন।
আর অন্য দুটি দল, লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্স এবং টেক্সাস সুপার কিংস, এখনও তাদের অধিনায়ক কে হবেন, তা জানায়নি। গেল আসরে তাদের নেতৃত্ব ছিল যথাক্রমে সুনীল নারাইন ও ফাফ দু প্লেসিসের কাঁধে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের মাত্র দুই দিন আগে আইসিসি ঘোষণা করল নতুন হল অব ফেম সদস্যদের তালিকা। এবার সেখানে জায়গা করে নিয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন দেশের সাতজন কিংবদন্তি ক্রিকেটার। ছেলেদের মধ্যে আছেন মাহেন্দ্রা সিং ধোনি, হাশিম আমলা, গ্রায়েম স্মিথ, ম্যাথু হেইডেন, ড্যানিয়েল ভেট্টোর।
আর মেয়েদের মধ্য থেকে এই সম্মান পেয়েছেন ইংল্যান্ডের সারা টেইলর এবং পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সানা মির, যিনি পাকিস্তানের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক ধোনি ইতিহাসের একমাত্র অধিনায়ক, যিনি তিনটি আইসিসি সাদা বলের শিরোপা জিতেছেন। সেগুলো হল ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
আরও পড়ুন
২৯ বছরেই আন্তর্জাতিক অবসরেও আক্ষেপ নেই পুরানের |
![]() |
তিন ফরম্যাটেই দুর্দান্ত সব অর্জন থাকলেও ধোনি তার সেরা ক্রিকেটটা খেলেছেন ওয়ানডেতে। ৩৫০ ওয়ানডেতে ১০ হাজারের বেশি রান এবং ৫০-এর বেশি গড় নিয়ে অবসর নেন ২০১৯ বিশ্বকাপের পর। এছাড়াও তার নেতৃত্বেই ভারত টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক টপ অর্ডার ব্যাটার আমলা ছিলেন তার সময়ের অন্যতম সেড়া ব্যাটারদের একজন। নিখুঁত টেকনিকের কারণে তিনি ছিলেন বিশেষভাবে পরিচিত। দক্ষিণ আফ্রিকান প্রথম ব্যাটার হিসেবে তিনি যিনি টেস্টে ত্রিশতক (৩১১*) করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০১২ সালে। সব প্রতিযোগিতা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ক্যারিয়ারে ৫৫টির বেশি সেঞ্চুরি রয়েছে।
মাত্র ২২ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কত্ব পান স্মিথ। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে এই ভূমিকা পালন করেন সফলতার সাথে। প্রোটিয়াদের তিনি ১০৯টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার মধ্যে ৫৩টি জিতেছেন, দুটিই বিশ্বরেকর্ড। এছাড়া ১৫০টি ওয়ানডেতে অধিনায়কত্ব করেছেন সাবেক এই বাঁহাতি ওপেনার, যা দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন
ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের ট্রফিতে নিজের নাম দেখে আবেগাপ্লুত অ্যান্ডারসন |
![]() |
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ী সাবেক ওপেনার হেইডেন তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে সাহায্য করেন। তিনি অজিদের ২০০৩ বিশ্বকাপ জয়ী দলেরও সদস্য ছিলেন। ৫০-এর বেশি গড়ে তার ঝুলিতে রয়েছে ৩০টি টেস্ট সেঞ্চুরি।
নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সহকারী কোচ ভেট্টোরি বিশ্বের মাত্র তিনজন ক্রিকেটারের একজন, যিনি টেস্টে ৪ হাজার রান ও ৩০০ উইকেট নিয়েছেন। ফার অধিনায়কত্বে ২০০৯ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ড ফাইনালে খেলেছিল।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, ছিলেন সাদা বলের দলের নিয়মিত সদস্য। তবে বিস্ময়করভাবে গত সোমবার নিকোলাস পুরান ২৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সময়ে কেন এমন সিদ্ধান্ত, সেটা না জানালেও বলেছেন, কোনো আক্ষেপ নেই তার।
পুরান সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। আর ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারে দল বাদ পড়ার পর থেকে আর ওয়ানডে খেলেননি। তবে আচমকাই তার জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। কারণ গত বছরের নভেম্বরে নিজের ১০০তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর তিনি বলেছিলেন, আরও ১০০ ম্যাচ খেলতে চান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে পুরান তুলে ধরেন তার অবসরের পেছনের ভাবনা।
“অনেক চিন্তা-ভাবনার পর আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই খেলা আমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে এবং এখনও দিচ্ছে। সেই মেরুন জার্সিতে খেলা, জাতীয় সঙ্গীতের সময় দাঁড়িয়ে থাকা, মাঠে নিজের সবটুকু উজাড় করে দেওয়া - এসব অনুভূতি বর্ণনা করা কঠিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অধিনায়কত্ব করা আমার জীবনের অন্যতম সেরা এক গর্বের বিষয় হয়ে থাকবে।”
পাকিস্তানের বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় পুরানের। আর ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন প্রথম ওয়ানডে। ২০২২ সালে তাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাদা বলের অধিনায়ক করা হয়। তবে সেই বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার পর তিনি অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করলেন ওয়ানডেতে ৬১ ম্যাচে ১ হাজার ৯৮৩ রান এবং টি-টোয়েন্টিতে ১০৬ ম্যাচে ২ হাজার ২৭৫ রান করে।
নিজে সরে গেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে থাকবেন পুরান।
“ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, আপনারা কঠিন সময়ে আমাকে সাহস যুগিয়েছেন, আর ভালো সময়ে প্রাণ খুলে উল্লাস করেছেন। আমার আন্তর্জাতিক অধ্যায় শেষ হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালোবাসা কখনই শেষ হয়ে যাবে না। আমি আগামীতেও দলের এবং গোটা অঞ্চলের ক্রিকেটের সাফল্য প্রার্থনা করি।”
পুরান শেষবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, বাংলাদেশের বিপক্ষে কিংস্টাউনে হওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজে। ব্যক্তিগতভাবে ২০২৪ সালটি ছিল তার ক্যারিয়ারের সেরা বছর। গেল বছর তিনি এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ ছক্কা (১৭০টি) মারার রেকর্ড গড়েন। চলতি বছরের আইপিএলেও ছিলেন ছন্দে। পাঁচটি হাফ-সেঞ্চুরিতে ১৯৬.২৫ স্ট্রাইক রেটে করেন ৫২৪ রান।
ইংল্যান্ড তো বটেই, টেস্ট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা বোলারদের একজন তিনি। সেই জেমস অ্যান্ডারসনকে সম্মানিত করে তাই ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার ঐতিহাসিক টেস্ট দ্বৈরথের নতুন নামকরণ করা হয়েছে অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি। এই সম্মান পেয়ে আবেগাপ্লুত ইংলিশ কিংবদন্তি পেসার। বললেন, বিষয়টি বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছে তার।
এতদিন ইংল্যান্ড-ভারতের টেস্ট সিরিজটি পাতৌদি ট্রফি নামে পরিচিত ছিল। তবে সম্প্রতি ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তি অ্যান্ডারসন এবং ভারতীয় ব্যাটিং আইকন শচীন টেন্ডুলকারের নামে এই ট্রফির নামকরণ করার ঘোষণা আসে। আগামী ২০ জুন হেডিংলিতে শুরু হতে যাওয়া পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে এর সূচনা হবে। ১১ জুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল চলাকালীন লর্ডসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নতুন ট্রফি উন্মোচন করা হবে, যেখানে অ্যান্ডারসন ও টেন্ডুলকর দুজনেই উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
বিশাল এই সম্মান ছুয়ে গেছে অ্যান্ডারসনকে। “এটা আমার জন্য অনেক বড় এক সম্মান। আমি এখনও বিশ্বাসই করতে পারছি না। শচীন এমন একজন খেলোয়াড়, যাকে আমি ছোটবেলায় আইডল হিসেবে দেখতাম। তার সঙ্গে একাধিকবার খেলেছি এবং তার নামে হওয়া ট্রফির অংশ হওয়া আমার জন্য গর্বের ব্যাপার।”
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা দুজন হলেন টেন্ডুলকার (২০০ ম্যাচ) ও অ্যান্ডারসন (১৮৮ ম্যাচ)। ভারত কিংবদন্তি ১৫ হাজার ৯২১ রান করে এখনও লাল বলের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। অন্যদিকে অ্যান্ডারসন ৭০৪টি উইকেট নিয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী পেসার।
১৯৮৯ সালে টেন্ডুলকারের আন্তর্জাতিক অভিষেক থেকে শুরু করে ২০২৪ সালে অ্যান্ডারসনের অবসর পর্যন্ত দুজন ক্যারিয়ার জুড়ে গড়েছেন অজস্র রেকর্ড। ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এই দুজন ১৪ বার টেস্টে মুখোমুখি হন, যেখানে টেন্ডুলকরকে ৯ বার আউট করেন অ্যান্ডারসন।
ভারতের বিপক্ষে অ্যান্ডারসনের রেকর্ডও নজরকাড়া। ৩৯ টেস্টে নিয়েছেন ১৪৯ উইকেট, গড় ২৫.৪৭। তবে ভারতের মাটিতে পরিসংখ্যান খুব একটা ভালো নয় ডানহাতি এই পেসারের। ভারতে খেলেছেন পাঁচটি সিরিজ, যার মধ্যে চারটিতেই হেরেছে ইংল্যান্ড।
আভাসটা আগেই ছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চলতি মাসের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দল ঘোষণার সাথে নিশ্চিত করল নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্বের মেয়াদও। আরও এক বছর তিনিই থাকছেন লাল বলের অধিনায়ক।
বুধবার শ্রীলঙ্কা সফরের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি। বাদ পড়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হওয়া তানজিম হাসান সাকিব। দলে ফিরেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। স্কোয়াডে আছেন অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ।
আরও পড়ুন
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে শেষ হলো গ্যারি স্টিড অধ্যায় |
![]() |
২০২৪ সালে তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হন শান্ত। এই বছর ছেড়ে দিয়েছেন টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব। আরও এক বছরের জন্য তাকে টেস্টের অধিনায়ক হিসেবে বহাল রেখেছে বিসিবি।
আর শান্তর ডেপুটি হিসেবে থাকছেন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ, যিনি সহ-অধিনায়কের ভূমিকায় পালন করছেন গত বছর থেকেই।
দুই ম্যাচের এই সিরিজের প্রথমটি ১৭ জুন গল-এ শুরু হবে। দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ২৫ জুন, যা হবে কলম্বোতে। বাংলাদেশ জাতীয় দল ১৩ জুন শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে দেশ ছাড়বে।
এই সিরিজটি দিয়ে ২০২৫-২০২৭ আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে বাংলাদেশ দল তাদের যাত্রা শুরু করবে।
শ্রীলঙ্কা সফরের বাংলাদেশ টেস্ট স্কোয়াড: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), শাদমান ইসলাম, এনামুল হক বিজয়, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, মাহিদুল ইসলাম, জাকের আলি অনিক, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, খালেদ আহমেদ, *হাসান মুরাদ, ইবাদত হোসেন।
১ দিন আগে
১০ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২২ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৪ দিন আগে