আইসিসি টেস্ট ফান্ডের রেভিনিউ শেয়ারিং মডেল প্রবর্তিত হওয়ায় ২০১৯ সালের মে থেকে বদলে গেছে আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) সূচি। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে থাকা শীর্ষ ৯টি দেশকে নিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ প্রবর্তনের পরিকল্পনা গৃহিত হওয়ায় পর পর দুটি ৪ বছর মেয়াদী এফটিপি চক্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে থাকা তিনটি দল জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ডের সাথে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ৯ টি দলের দ্বি-পাক্ষিক টেস্ট সিরিজ খেলা বাধ্যতামূলক নয়।
মূলত সেই কারণেই এফটিপির সর্বশেষ চক্রে (২০১৯-২০২৩ সালের এপ্রিল) জিম্বাবুয়ে এবং টেস্ট ক্রিকেটের নবাগত আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডকে টেস্টে এড়িয়ে চলেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষস্থানীয় দলগুলো। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রেও (২০২৩-২৭) একই পথে হাঁটছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হয়ে থাকা দলগুলোর অধিকাংশই।
আইসিসির এফটিপি এখন দ্বি-পাক্ষিক সূচিতে পরিণত হওয়ায়, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জিম্বাবুয়ে,আয়ারল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে আগ্রহী নয় অধিকাংশ টেস্ট দল। অথচ, আইসিসির এফটিপির বিগত চক্রের মত চলমান এফটিপিতেও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তিন ফরম্যাটের ম্যাচের সিরিজ খেলতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিসিবি। চলমান চক্রে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্ট খেলা থেকে বিরত থেকেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে জিম্বাবুয়ের টেস্ট উন্নতিতে সহায়কের ভুমিকায় নিউ জিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এফটিপির চলমান চক্রের চার বছরে জিম্বাবুয়ে ১৮টি টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে। সেই তালিকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪টি। এর বাইরে এফটিপির বর্তমান চক্রে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ৮টি ওডিআই এবং ৮টি টি-টোয়েন্টিও খেলার সুযোগ পাচ্ছে।
তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড তুলনামূলক ভালো। চলমান সিরিজের আগে ১৮টি টেস্টে ৮-৭-এ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। মুখোমুখি ৮১টি ওডিআই ম্যাচে ৫১টি জয়ের বিপরীতে ৩০টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই দলের ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচে ১৮-৭-এ এগিয়ে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এক সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে অবদান রাখা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সেই কারণেই জিম্বাবুয়ে দলকে আতিথ্য দেয়াকে একটা রেওয়াজে পরিণত করেছে বিসিবি।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্টে জয়-পরাজয় আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান নড়চড় করবে না। শুধু তা-ই নয়, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। হোমে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ৩টি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজনে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিসিবি।
অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ২ টেস্ট এবং ৩ ওডিআই ম্যাচের সিরিজ আয়োজন করে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ৩২৫ টাকা ভর্তুকী দিয়েছে বিসিবি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ২ টেস্ট, ৩ ওডিআই এবং ২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ আয়োজনে অবশ্য ভর্তুকী গুনতে হয়নি। সেই দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৫৬৭ টাকা মুনাফা করতে পেরেছে বিসিবি। তবে যুক্তরাষ্ট্র-ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ২০২৪ সালের এপ্রিলে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড বড় অঙ্ক ভর্তুকী দিয়েছে। প্রচারসত্ব থেকে প্রত্যাশিত অর্থ আয়ের পরও ভর্তুকীর অঙ্ক ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫৫ টাকা!
এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রচারসত্ব বিক্রি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ভর্তুকীর অঙ্কটা কোথায় দাঁড়ায়, সেই হিসাবটা জানা যাবে সিরিজ শেষেই।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে শুধু আর্থিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না বিসিবি, টেস্টে নীচের সারির দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরমেন্স নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেককে স্মরণীয় করতে চেয়ে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে চরম শিক্ষা পেয়েছিল বিসিবি। পূর্ণশক্তির বাংলাদেশ দল ১৫১ রানে হেরেছে সেই টেস্ট। সাড়ে ছয় বছর পর সেই সিলেটে ফিরতি টেস্টেও লজ্জা দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ৩ উইকেটে।
আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) চলমান চক্রের (২০২৩-২৭) সূচি চূড়ান্ত হয়েছে অনেক আগে। বিসিবির পদচ্যুত সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আমলে। সে কারণেই এফটিপির পরবর্তী সূচি (২০২৭-৩১) চূড়ান্ত হওয়ার আগে সতর্ক হওয়ার পক্ষে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম, “ওদের সাথে খেলে উন্নতি হবে কিংবা সিরিজ আয়োজন করা লাভজনক হবে, এমন তো নয়। জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট সিরিজ এড়াতে পারলে ভালো হতো। আইসিসির পরবর্তী এফটিপির আগে কীভাবে প্লান করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে।”
No posts available.
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:৪৪ এম
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১:১৭ এম
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩০ এম
মাঠে বসে বাংলাদেশের খেলা দেখতে গিয়ে অভিজ্ঞতা তেমন সুখকর হলো না আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একদমই লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ।
তবে আশা হারাতে চান না আসিফ। বরং সবাইকে আশাবাদী হয়ে সামনের ম্যাচে ভালো কিছু করার কথা বলেছেন তিনি।
আবু ধাবির জায়েদ স্টেডিয়ামে শনিবার গ্যালারিতে বসে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার খেলা দেখেছেন আসিফ। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ মঞ্চেও ছিলেন তিনি। পরে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় দলের পারফরম্যান্স নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখন বাঁচা-মরার লড়াই: লিটন |
![]() |
“হতাশার কিছু নেই। আমি মনে করি, আশাবাদী থাকা উচিত। আমাদের আরও একটি ম্যাচ বাকি আছে। যদিও আজকের খেলা আরও ভালো হতে পারত।”
“আমাদের দলের শুরু থেকেই ধারাবাহিকতা নিয়ে একটা সমস্যা আছে। আশা করি, পরের ম্যাচে আমাদের ছেলেরা ভালো খেলবে।”
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটির আগে শনিবার বাংলাদেশ দলের সকল সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আসিফ। সেখানে কী কথাবার্তা হয়েছিল, জানতে চাইলে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
আরও পড়ুন
পাওয়ার প্লেতেই আমরা হেরে গেছি: লিটন |
![]() |
“খেলার আগে তো বেশি কথা বলার সুযোগ নেই। দলকে শুধু বেস্ট অব লাক জানিয়েছি আর তাদের কথা শুনেছি।”
পরে আসিফ যখন মাঠে প্রবেশ করেন, ততক্ষণে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি লিটনের দল। আসিফ মনে করেন, পাওয়ার প্লেতেই শেষ হয়েছে বাংলাদেশের জয়ে আশার।
“আমাদের পাওয়ার প্লেতে খারাপ হয়েছে। পাওয়ার প্লেতে যদি আমরা ভালো একটা পুশ দিতে পারতাম। তাহলে পুরো ম্যাচটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা যেত।”
আরও পড়ুন
পাওয়ার হিটিং কোচের তত্ত্ব ভুলে গেছে টপ অর্ডাররা |
![]() |
শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে কঠিন হয়ে গেছে বাংলাদেশের সুপার ফোরে খেলার আশা। আসিফ তাই সামনের ম্যাচে তাকিয়ে।
“এটা পুরোপুরি আমাদের পারফরম্যান্সের ওপর ডিপেন্ড করছে। পরের ম্যাচ দেখলেই বোঝা যাবে।”
এশিয়া কাপের গ্রুপ নির্ধারণের পরই বোঝা গিয়েছিল, মৃত্যুকুপে পড়েছে বাংলাদেশ। যেখানে এক ম্যাচ খারাপ করলেই দেখা দেবে বাদ পড়ে যাওয়ার শঙ্কা। হয়েছেও তাই। শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এখন বিপদে বাংলাদেশ। তাই আফগানিস্তান ম্যাচটিকে বাঁচা-মরার লড়াই হিসেবে দেখছেন লিটন কুমার দাস।
হংকংয়ের বিপক্ষে সহজ জয়ে এশিয়া কাপের ইতিবাচক শুরুই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওই ম্যাচ জিতে পাওয়া আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিং-বোলিংয়ে বাংলাদেশকে একদমই লড়াই করতে দেয়নি লঙ্কানরা।
আরও পড়ুন
পাওয়ার প্লেতেই আমরা হেরে গেছি: লিটন |
![]() |
আবু ধাবিতে আগে ব্যাট করে মাত্র ১৩৯ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। পরে ১৪.৪ ওভারে ম্যাচ জিতে যায় এশিয়া কাপের ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। এমন পরাজয়ের পর পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ।
টুর্নামেন্টের সুপার ফোর খেলতে এখন শেষ ম্যাচে বড় জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। একই মাঠে মঙ্গলবার গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। যারা প্রথম ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে বিশাল জয়ে টেবিলের এক নম্বরে বসে আছে।
আরও পড়ুন
পাওয়ার হিটিং কোচের তত্ত্ব ভুলে গেছে টপ অর্ডাররা |
![]() |
গ্রুপ 'বি'তে এখন তিন দলেরই সমান ২টি করে পয়েন্ট। তবে বাংলাদেশ দুই ম্যাচ খেলে ফেলায় বাকিদের চেয়ে একটু পিছিয়ে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের পর তাই লিটন বলেছেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিই তাদের কাছে ফাইনালের মতো।
“হ্যাঁ অবশ্যই (আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি আমাদের জন্য ফাইনালের মতো)। ডু অর ডাই ম্যাচ। দেখা যাক।”
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব’দেখাবে ভারত |
![]() |
শনিবারের ম্যাচ হারলেও, গ্যালারি থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচ জুড়ে লাল সবুজের পতাকা উড়িয়েছেন বাংলাদেশের সমর্থকরা। সামনের ম্যাচেও এমন সমর্থনের আশার কথা বলেছেন লিটন।
“সমর্থকদের অনেক ধন্যবাদ। কারণ আমরা যখনই দেশের বাইরে খেলি, তারা মাঠে এসে আমাদের সমর্থন দেয়। আমি আশা করব, তারা আবারও মাঠে আসবে, আবার সমর্থন করবে।”
টসের সময় লিটন কুমার দাস বলেছিলেন, ভালো উইকেটে বড় সংগ্রহ গড়তে চান তারা। কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা লাগে সেই আশায়। প্রথম দুই ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন দুই ওপেনার। বাজেভাবে ম্যাচ হারের পর গোলমেলে ওই শুরুকেই দায় দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
আবু ধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করে মাত্র ১৩৯ রান করতে পেরেছিল তারা। যা তাড়া করতে লঙ্কানদের লেগেছে মাত্র ১৪.৪ ওভার।
ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য এগিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। প্রথম ওভারে নুয়ান থুশারার বলে টানা পাঁচ ডট খেলার পর শেষ বলে বোল্ড হয়ে যান তানজিদ হাসান তামিম। পরের ওভারে দুশমন্থ চামিরার বলে কট বিহাইন্ড হন পারভেজ হোসেন ইমন।
আরও পড়ুন
পাওয়ার হিটিং কোচের তত্ত্ব ভুলে গেছে টপ অর্ডাররা |
![]() |
দুই ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে শূন্য রানে ২ উইকেট। এবারই প্রথম কোনো ম্যাচে শূন্য রানে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ। আর প্রথম দুই ওভার মেডেন হওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেই মাত্র ষষ্ঠবারের মতো দেখা গেল।
এমন শুরুর পর দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে রান আউট হন তাওহিদ হৃদয়। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে লিটন ৩টি চার মারলেও ৬ ওভারে ৩০ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। যে কারণে শেষ দিকে শামীম হোসেন পাটোয়ারী ও জাকের আলি অনিক ৮৬ রানের জুটি গড়লেও বড় হয়নি পুঁজি।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ মঞ্চে তাই পাওয়ার প্লেতে বাজে ব্যাটিংকেই দায় দেন লিটন।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব’দেখাবে ভারত |
![]() |
“অবশ্যই (প্রথম দুই উইকেট আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে)। আমার মতে, পাওয়ার প্লেতে আমরা ম্যাচটা অনেকটাই হেরে গেছি। কারণ ব্যাটিংয়ের জন্য উইকেট বেশ ভালো ছিল। আমরা যদি ১৭০ বা ১৮০ রান করতে পারতাম, খেলাটা ভিন্ন হতো। কিন্তু ১৪০ রান একদম যথেষ্ট নয়।”
স্বাভাবিকভাবেই লিটনের ঠিক বিপরীত অবস্থা শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কার। তিনি স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, প্রথম দুই ওভার তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
“আমার মতে, সেটিই আমাদের জন্য বড় মুহূর্ত ছিল। মঞ্চটা সাজিয়ে দিয়েছে। স্বপ্নের মতো শুরু ছিল। দুই ওভার, দুই মেডেন, দুই উইকেট।”
আরও পড়ুন
মুস্তাফিজের ‘প্রথম’ পরাজয় |
![]() |
মাত্র ১৩৯ রানের পুঁজি নিয়ে জেতার জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিং। দ্বিতীয় ওভারে কুশল মেন্ডিসকে আউট করে তেমনই আভাস দেন মুস্তাফিজুর রহমান।
কিন্তু পঞ্চম ওভারে কামিল মিশারার ক্যাচ ছেড়ে দেন শেখ মেহেদি হাসান। এরপর আর কিছু নিজেদের পক্ষে পায়নি বাংলাদেশ। তাই বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ঘাটতির কথাও বলেন লিটন।
“অবশ্যই, আপনি যদি ভালো উইকেটে ১৪০ রান করেন, তখন আপনাকে বোলিং-ফিল্ডিং ভালো করতে হবে। কিন্তু এই ম্যাচে আমরা ভালো বোলিং করিনি, ভালো ফিল্ডিংও করিনি।”
একই মাঠে আগামী মঙ্গলবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
দলে মোটা মাইনের হেড কোচ, ব্যাটিং কোচ থাকার পরও সংক্ষিপ্ত মেয়াদে পাওয়ার হিটিং কোচ উড়িয়ে এনেছিল বিসিবি। পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের তত্ব হোমে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ভালই প্রয়োগ করেছে বাংলাদেশ টপ অর্ডাররা। তবে ঘরের মাঠে অনূকুল কন্ডিশনে বাঘ্ররূপী বাংলাদেশ দল আবুধাবিতে পাওয়ার হিটিং কোচের ফর্মূলা প্রয়োগে যেনো নিরূপায়।
এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ হংকংয়ের বিপক্ষে ১৪৪ রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ ১৪ বল হাতে রেখে। সেই ম্যাচে লিটন ছাড়া অন্য কারো স্ট্রাইক রেট ছিল না বলার মতো। ৪৮ঘন্টা পর একই মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নেমেও ব্যাটিংয়ে একই দূর্দশা! টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওভারপ্রতি ৬.৯৫ স্ট্রাইক রেটে বাংলাদেশের স্কোর ১৩৯/৫! এমন ব্যাটিং প্রদর্শনীর ম্যাচে ৩২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতে শ্রীলঙ্কা জানিয়ে দিয়েছেন, তারা প্রকৃতই জয়সুরিয়ার উত্তরসূরী।
আরও পড়ুন
মুস্তাফিজের ‘প্রথম’ পরাজয় |
![]() |
৪৮ ঘন্টা আগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০ ওভারে ইংল্যান্ড ৩০৪ করে নিজেদের ইনিংসের পুরোটা হাইলাইটস বানিয়ে দিয়েছে। সেই খবরটা নিশ্চয়ই অজানা নয় বাংলাদেশ ব্যাটারদের। ফিল সল্ট, বাটলারদের সেই ব্যাটিং ঝড়টা পারস্য উপসাগরে আছড়ে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ মানে রণাঙ্গনের উত্তাপ। ২০১৮ সাল থেকে শুরু হওয়া সেই উত্তাপের শুরুতে নাগিণ নৃত্য করেছে বাংলাদেশ দল। সেই ড্যান্সটা শনিবার শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলকে উদ্দেশ্য করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা সমর্থকরা।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে দু'দলকে। বাংলাদেশ দলের স্কোর যেখানে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৩০/৩, সেখানে শ্রীলঙ্কার ৫৫/১। ইনিংসের প্রথম ২৭ বলের মধ্যে স্কোরশিটে ১১ রান উঠতে তিন টপ অর্ডারকে হারিয়ে আরও বড় ব্যাটিং ধসের শঙ্কা দেখেছে বাংলাদেশ সমর্থকরা। ইনিংসের ৬ষ্ঠ বলে পেসার তুষারার ইনসুইং ডেলিভারীতে তানজিদ হাসান তামিম বোল্ড আউট হয়ে (৬ বলে ০) বাজে আলামত দিয়েছেন। তৃতীয় ওভারে পেসার চামিরার ৪র্থ ডেলিভারিটি ছিল ব্যাক অব লেন্থ। পারভেজ হোসেন ইমন সেই বলে দিয়েছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ।
আরও পড়ুন
পাকিস্তানের বিপক্ষে ‘সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব’দেখাবে ভারত |
![]() |
স্ট্রাইক রেট টি-টোয়েন্টির জন্য মোটেও মানানসই নয়, এই অপবাদ থেকে মুক্তি পেতে ২ রানকে ৩ রানে পরিণত করতে বিফল চেষ্টায় রান আউট হৃদয় (৯ বলে ৮)। লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা বল হাতে নিয়ে পর পর দুই ওভারে ফিরিয়ে দিয়েছেন শেখ মেহেদী এবং লিটন দাসকে। শেখ মেহেদী ডিফেন্স করতে যেয়ে এলবিডাব্লুউ (৭ বলে ৯), রিভার্স সুইপ করতে যেয়ে লিটনের গ্লাভসে বলের স্পর্শ পেয়ে উইকেট কিপারের সহজ ক্যাচে পরিণত (২৬ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৮)।
৫৩ রানের মাথায় ৫ম উইকেট পতনের পর চ্যালেঞ্জিং পুঁজি নিয়েই ছিল শঙ্কার আলামত। তবে ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে জাকের আলী অনিক-শামীম পাটোয়ারীর ৬১ বলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপের কারণে শ্রীলঙ্কাকে ১৪০ রানের টার্গেট দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। ভাগ্যটা ভাল জাকের আলী অনিকের। হাসারাঙ্গার বল স্ট্যাম্পে আলতো ছোঁয়া লেগে লাল বাতি জ্বলে ওঠার পরও জাকের নট আউট। বেলস মাটিতে না পড়ায় সে যাত্রায় বেঁচে গেছেন জাকের আলী। প্রাণ ফিরে পাওয়া জাকের আলী শেষ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন ছিলেন ৪১ রানে। ৩৪ বলের ইনিংসে মেরেছেন ২টি বাউন্ডারি। শামীম পাটোয়ারী ৩৪ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১২০টি ডেলিভারির মধ্যে ৪৬টি ডট। ছক্কা মারা যে কতোটা কঠিন, তা জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। পুরো ইনিংসে ১০টি চার-এর পাশে মাত্র ১টি ছক্কা! যে ছক্কাটি এসেছে শামীম পাটোয়ারীর ব্যাট থেকে।
উইকেট টেকিং বোলিং করেছেণ হাসারাঙ্গা (২/২৫)। তবে লঙ্কান দুই পেসার তুষারা (৪-১-১৭-১), চামিরা (৪-১-১৭-১) এদিন ভালই ভুগিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটারদের।
আরও পড়ুন
মেহেদির ক্যাচ মিসের পর বাংলাদেশের বড় পরাজয় |
![]() |
নতুন বলে দীর্ঘদিন পর দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে কুশল মেন্ডিজকে (৬ বলে ৩) উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেণ মোস্তাফিজ। তবে ৫ম ওভারে শরিফুলের বলে শেখ মেহেদী মিড অনে মিশারার ক্যাচ ফেলে দেয়ার পর ছিন্ন-ভিন্ন হয়েছে বাংলাদেশ দলের বোলিং! ওই ক্যাচ ড্রপের ওভারের শেষ ৩ বলে মিশারার ২ চার, ১ ছক্কায় আগাম জয়োধ্বনী শুনতে পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। পাথুম নিশাঙ্কা-মিশারা ২য় উইকেট জুটিতে ৫২ বলে ৯৫ রান যোগ করে দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে। পাথুম ৩১ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ফিফটি উদযাপনের পর থেমেছেন শেখ মেহেদীর বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে (৩৪ বলে ৬ চার, ১ ছক্কায় ৫০)। কামিল মিশারা ছিলেন ৩২ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৪৬রানে অপরাজিত।
পুঁচকে হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ বোলারদের বোলিং ছিল না আপ টু দ্য মার্ক। সমমানের দল শ্রীলঙ্কাকে ১৪০ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ বোলাররা। অফ স্পিনার শেখ মেহেদী (৪-০-২৯-২) এবং পেসার তানজিম হাসান সাকিব (৩-০-২৩-১) ছাড়া অন্য কারো বোলিং প্রত্যাশার ধারে কাছেও ছিল না। শ্রীলঙ্কার হার্ডল পেরুতে না পারা বাংলাদেশের সামনে এখন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়াচ্ছে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ।
বলা হয়ে থাকে ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। সর্বোচ্চে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে প্রতিপক্ষকে সম্মান দেখানোর রেওয়াজ আছে এই খেলায়। তবে এরপরও ক্রিকেটে অপ্রত্যাশিত অনেক ঘটনার নজিরও আছে।
এই যেমন ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের কথাই ধরুন। নিজেদের ইতিহাসে এই দুই দল মুখোমুখি হয়ে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিয়েছে। বিতর্কিত মন্তব্য কিংবা অখেলোয়াড় সুলভ আচারণ সহ খেলায় তাদের হাড্ডহাড্ডি লড়াই অবশ্য সমর্থকদের বিনোদন হিসেবও নিয়েছেন। তবে মাঝেমধ্যে রাজনৈতিক রেশারেশির উত্তাপ মাঠে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে ভঙ্গ হয় ক্রিকেটের পেশদারিত্ব।
আরও পড়ুন
মুস্তাফিজের ‘প্রথম’ পরাজয় |
![]() |
আগামীকাল এশিয়া কাপে দেখা হচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের। দুই দেশের সম্পর্ক এখন মোটেও স্বাভাবিক নেই। ভারতের অনেক সমর্থক তো পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি বর্জনের ঘোষণাও দিয়ে রেখেছে। তবে এমন পরিস্থিতিতেও ভারত সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখবে বলছেন ভারতের সহকারী কোচ রায়ান টেন ডোয়েসচাতে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে স্বাভাবিকভাবেই উঠে এসেছে সমর্থকদের সংবেদশীল অনূভুতির কথা। ভারতের সহকারী কোচ বলেন, ‘মানুষের অনুভুতি আমরা জানি, একই সঙ্গে আমাদের সামনে একটি কাজ আছে, খেলোয়াড়রা সুযোগ পাচ্ছে দেশের জন্য মাঠে নামার, এবং পরিস্থিতি যাই হোক না কেন তারা যতটা সম্ভব পেশাদার এবং খেলায় মনোযোগি হবে।’
আরও পড়ুন
মেহেদির ক্যাচ মিসের পর বাংলাদেশের বড় পরাজয় |
![]() |
পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো ধরনের আবেগকে প্রশ্রয় দিতে নারাজ,
‘এটা স্পষ্ট একটি সংবেদনশীল বিষয়, এবং কোনো সন্দেহ নেই যে ক্রিকেটাররা ভারতের অনুভূতির সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। দেখুন, এশিয়া কাপ অনেক দিন ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যেই ছিল, আমরা শুধু অপেক্ষা করছিলাম। এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল হয়ত আমরা আসবই না। কিন্তু স্পষ্টভাবে, আপনি জানেন ভারতের সরকারের অবস্থান কি, আর এখন দল, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের, ওই অনুভূতি ও আবেগগুলো পেছনে রেখে আগে যেতে হবে।’
পাহালগাম সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে খেলোয়াড়রা কোনো বিবৃতি দিবে কি না এমন প্রশ্নে ভারতের সহকারী কোচ কেবল ভারত সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার কথাই বলেন।
আরও পড়ুন
বিব্রতকর শুরুর পর অনিক-শামীমের রেকর্ড, বাংলাদেশের ১৩৯ |
![]() |
‘আমি বলব, এটার অন্য একটা দিকও আছে। আপনি খেলাকে রাজনীতি থেকে আলাদা করে দিতে পারেন, এবং অনেকে মানুষেই আছেন যাদের ভিন্ন ভিন্ন মত আছে সে বিষয়ে। আশাকরি আমাদের খেলার ধরন দিয়ে খেলোয়াড়রা দেশের প্রতি তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারবেন। আমি অবস্থাটি বুঝি, এবং অনুভূতির বিষয়টা যেমন বলেছি। আমরা বিসিসিআই ও ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলছি। এই মুহূর্তে সেটা দেশের জন্য ঠিক সেই সিদ্ধান্তই মেনে চলছি।’