
আইসিসি টেস্ট ফান্ডের রেভিনিউ শেয়ারিং মডেল প্রবর্তিত হওয়ায় ২০১৯ সালের মে থেকে বদলে গেছে আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) সূচি। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে থাকা শীর্ষ ৯টি দেশকে নিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ প্রবর্তনের পরিকল্পনা গৃহিত হওয়ায় পর পর দুটি ৪ বছর মেয়াদী এফটিপি চক্রে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বাইরে থাকা তিনটি দল জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ডের সাথে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ৯ টি দলের দ্বি-পাক্ষিক টেস্ট সিরিজ খেলা বাধ্যতামূলক নয়।
মূলত সেই কারণেই এফটিপির সর্বশেষ চক্রে (২০১৯-২০২৩ সালের এপ্রিল) জিম্বাবুয়ে এবং টেস্ট ক্রিকেটের নবাগত আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডকে টেস্টে এড়িয়ে চলেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষস্থানীয় দলগুলো। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রেও (২০২৩-২৭) একই পথে হাঁটছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হয়ে থাকা দলগুলোর অধিকাংশই।
আইসিসির এফটিপি এখন দ্বি-পাক্ষিক সূচিতে পরিণত হওয়ায়, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জিম্বাবুয়ে,আয়ারল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে আগ্রহী নয় অধিকাংশ টেস্ট দল। অথচ, আইসিসির এফটিপির বিগত চক্রের মত চলমান এফটিপিতেও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তিন ফরম্যাটের ম্যাচের সিরিজ খেলতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিসিবি। চলমান চক্রে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্ট খেলা থেকে বিরত থেকেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে জিম্বাবুয়ের টেস্ট উন্নতিতে সহায়কের ভুমিকায় নিউ জিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। এফটিপির চলমান চক্রের চার বছরে জিম্বাবুয়ে ১৮টি টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে। সেই তালিকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪টি। এর বাইরে এফটিপির বর্তমান চক্রে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে ৮টি ওডিআই এবং ৮টি টি-টোয়েন্টিও খেলার সুযোগ পাচ্ছে।
তিন ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড তুলনামূলক ভালো। চলমান সিরিজের আগে ১৮টি টেস্টে ৮-৭-এ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। মুখোমুখি ৮১টি ওডিআই ম্যাচে ৫১টি জয়ের বিপরীতে ৩০টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই দলের ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচে ১৮-৭-এ এগিয়ে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এক সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে অবদান রাখা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সেই কারণেই জিম্বাবুয়ে দলকে আতিথ্য দেয়াকে একটা রেওয়াজে পরিণত করেছে বিসিবি।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে টেস্টে জয়-পরাজয় আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান নড়চড় করবে না। শুধু তা-ই নয়, জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। হোমে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ৩টি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজনে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে বিসিবি।
অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ২ টেস্ট এবং ৩ ওডিআই  ম্যাচের সিরিজ আয়োজন করে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ৩২৫ টাকা ভর্তুকী দিয়েছে বিসিবি।  ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ২ টেস্ট, ৩ ওডিআই এবং ২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ আয়োজনে অবশ্য ভর্তুকী গুনতে হয়নি। সেই দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৫৬৭ টাকা মুনাফা করতে পেরেছে বিসিবি। তবে যুক্তরাষ্ট্র-ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে  ২০২৪ সালের এপ্রিলে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড বড় অঙ্ক ভর্তুকী দিয়েছে। প্রচারসত্ব থেকে প্রত্যাশিত অর্থ আয়ের পরও ভর্তুকীর অঙ্ক ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫৫ টাকা! 
এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রচারসত্ব বিক্রি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ভর্তুকীর অঙ্কটা কোথায় দাঁড়ায়, সেই হিসাবটা জানা যাবে সিরিজ শেষেই।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে আতিথ্য দিয়ে শুধু আর্থিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না বিসিবি, টেস্টে নীচের সারির দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরমেন্স নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভিষেককে স্মরণীয় করতে চেয়ে জিম্বাবুয়েকে আতিথ্য দিয়ে চরম শিক্ষা পেয়েছিল বিসিবি। পূর্ণশক্তির বাংলাদেশ দল ১৫১ রানে হেরেছে সেই টেস্ট। সাড়ে ছয় বছর পর সেই সিলেটে ফিরতি টেস্টেও লজ্জা দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ৩ উইকেটে।
আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের (এফটিপি) চলমান চক্রের (২০২৩-২৭) সূচি চূড়ান্ত হয়েছে অনেক আগে। বিসিবির পদচ্যুত সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আমলে। সে কারণেই এফটিপির পরবর্তী সূচি (২০২৭-৩১) চূড়ান্ত হওয়ার আগে সতর্ক হওয়ার পক্ষে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম, “ওদের সাথে খেলে উন্নতি হবে কিংবা সিরিজ আয়োজন করা লাভজনক হবে, এমন তো নয়। জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট সিরিজ এড়াতে পারলে ভালো হতো। আইসিসির পরবর্তী এফটিপির আগে কীভাবে প্লান করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে।”
No posts available.



৩১ অক্টোবর ২০২৫, ৬:০৮ পিএম


৩১ অক্টোবর ২০২৫, ৫:১৪ পিএম



৩১ অক্টোবর ২০২৫, ৩:৫১ পিএম


অক্টোবর সদ্য বিদায় নিয়েছে। নভেম্বরের শুরু—শীতের নিঃশ্বাসে জমে গেছে শহর। মাসের প্রথম সপ্তাহ। ছেলেটার ঠিক মনে নেই দিন-তারিখ, এমনকি বারও। শুধু এটুকু জানে—সেদিনের রাতটা ছিল হিমশীতল, নিঃশব্দ, জমে যাওয়া এক শহরের বুকের মতো নিস্তব্ধ।
পায়রা, সীগাল, রবিন—সবাই ঘুমিয়ে গভীর শীতনিদ্রায়। কাতালানদের এই নগর এখন বরফে মোড়া স্বপ্নপুরী।
হঠাৎ একটুখানি শব্দ—একটা ছোট্ট ইঁদুরের পায়চারি। ছেলেটার ঘুম ভাঙে তাতে। অন্ধকার ঘরের কোণে তাকিয়ে ভাবতে থাকে—ও ইঁদুরটাও কি তার মতোই বাঁচার লড়াইয়ে, খাবারের খোঁজে, টিকে থাকার সংগ্রামে? ভাবতে ভাবতে কেমন যেন ভারী হয়ে ওঠে বুকটা।
রাতের এই নিস্তব্ধতায় জেগে ওঠা মানেই এক অনিবার্য বিপদ—চিন্তা। চিন্তার দল মিছিল নামায় ধ্যানের রাজপথে। কৈফিয়ত চায়—আজ কোথায় দাঁড়িয়ে তুমি? কেন এসেছে এত দূরে? কোথায় হারিয়েছে পুরোনো পরিচিত মুখগুলো? অতীত আর বর্তমানের হিসাব মিলাতে মিলাতে হারিয়ে যায় সে এক অদ্ভুত মোহে।
জীবনের এ ধারা-ওধারা ভাবতে ছেলেটার চোখ পড়ে দূরের পাইন গাছে। পাতায় জমেছে বরফ, ভারে নুয়ে পড়েছে শাখা। একসময় যে পাতাগুলো ছিল চিরসবুজ, আজ তারা হারিয়েছে প্রাকৃতিক রূপ। ছেলেটা ভাবে—তার জীবনও কি এমনই হয়ে গেছে? বরফে ঢেকে যাওয়া, রঙহীন, পরিচয়হীন এক অস্তিত্ব?
 
                        নতুন দেশ। অচেনা ভাষা। অপরিচিত মানুষ। দিনের শেষে একাকীত্ব তাকে চেপে ধরে। সুযোগ পেলেই সে আড়াল খোঁজে—ওয়াশরুমে গিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে কাঁদে। চোখের জল যেন ভাষাহীন যন্ত্রণা। রাতের ঘুমও আজকাল বড় অপরিচিত।
আর আজ—যে ইঁদুরটা হঠাৎ ঘুম ভাঙিয়ে দিল, যে পাইন পাতায় বরফ জমেছে—তারা যেন টাইম ট্রাভেলের দরজা খুলে দিল তার সামনে।
শান্ত ছবির মতো রোজারিও শহরটা কেমন আছে? মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিটিনি এখনও তার জন্য প্রিয় ‘এমপানাদা’ নিয়ে অপেক্ষা করেন। কেমন আছে আন্তোনেলা রোকুজ্জো। ড্রিভলিং কিংবা গোলের পর উচ্ছ্বাসে হারিয়ে যাওয়া মানুষটাকে যে তার ভীষণ মনে পড়ে।
চিন্তার জগত অস্তমিত হতেই চোখের পাতাজোড়া এক হয়। শুরু হয় নতুন ভোর, নতুন জীবন। তিনি জানেন, যে কাতালুনিয়া শহরে তার আগমন, সেখানে ফুটবল শুধু খেলা নয়, জীবনযাপন। বার্সেলোনার লা মাসিয়া নামের এক জাদুঘরে ঠাঁই হয়েছে তার, যেখানে স্বপ্নকে বাস্তবে গড়া হয়।
সেই স্বপ্নের পথে পা বাড়িয়ে, লিওনেল মেসি হয়ে ওঠেন বিশ্ব সমাধৃত। লা মাসিয়া থেকে মূল দলে, লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগ—আরও কতশত শিরোপা ট্রফি ধরা দিয়েছে তার হাতে। আর্জেন্টিনার জার্সিতেও হয়েছে দুঃখ মোচন। ২০০৬ থেকে ২০১৮-এ সময়ে চারটি বিশ্বকাপে ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ ট্রফিতে চুমু আঁকেন মেসি। ৮ বার ব্যালন ডি’অর, ক্লাব ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ৮৭২ গোল—সবকিছু মিলিয়ে লিওনেল মেসি যেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি, ফুটবলের দূত।
মেসির মতো যাপিত জীবন বয়ে বেড়ানো একজন আছেন ক্রিকেটে। যার গল্পটা একই রকম না হলেও একপ্রান্তে গিয়ে ঠেকেছেন দু’জন। তিনি ভারত নারী দলের ব্যাটসম্যান জেমিমাহ রদ্রিগেজ। পরিশ্রমের বিপরীতে হতাশা-গ্লানি হয়ে ওঠেছিল সম্ভল। কান্নায় ভিজে যেত তার বালিশ। একেকটি রাত হয়ে ওঠেছিল হাজার রজনীর সমান। সেই জেমিমাহ সফল হয়েছেন। সৃষ্টিকর্তা যেভাবে মেসিকে ভাঙ্গা-গড়া থেকে উঠিয়ে সম্মান দিয়েছেন, ভারতীয় ব্যাটারও তাঁরই দেখানো পথে।
 
                        বৃহস্পতিবার নাভি মুম্বাইয়ে অনিন্দ্য সুন্দর ইনিংস উপহার দিয়েছেন জেমিমাহ। অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। পুরো বিশ্বকাপে জোয়ার-ভাটার মধ্য দিয়ে থাকা জেমিমাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, পরিশ্রম, একাগ্রতা, নিবেদন, সততা থাকলে সৃষ্টিকর্তা একদিন মুখ তুলে তাকাবেন, বিজয় মালা পরাবেন।
সেটি হয়েছে গতকাল। ২২ গজে সুনিপুণ দক্ষতায় তুলির আঁচড় চালিয়েছেন। একটু দ্রুতই চলেছে তাঁর তুলিটি। তবে জেমিমাহকে চিনতে মোটেও ভুল করেননি দর্শকরা। তিনি মাঠে নামলেন, খেললেন, হাসলেন, ভুল করলেন। আবার জেগে উঠলেন। চক্রের মতো ঘুরতে থাকলেন। শেষপর্যন্ত শিরদাঁড়া উচু করে মাঠ ছাড়লেন।
জেমিমাহর এই গল্পের আদোপ্রান্তে রয়েছে নিরবতা, রয়েছে দুঃখ, গ্লানি, হতাশা ও বাদ পড়ার বিচ্ছিরি কাহিনি। তবে তিনি দমে যাননি। নিরবে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন মেসির মতো।
মেসির যেখানে শেষ, জেমিমাহর সেখানে শুরু:
আর্জেন্টাইন মহাতারকা ক্যারিয়ারের অন্তিমলগ্নে। বয়স ৩৮। হয়তো ২০২৬ বিশ্বকাপের পর বুট জোড়া তুলে রাখবেন। সেখানে ভারতের নারী দলের ব্যাটসম্যান জেমিমাহর কেবল শুরু। বয়স সবে ২৫। ক্যারিয়ারের দাপুটে সকাল। ভারতকে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলেছেন মিডল-অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। বৃহস্পতিবার তাঁর ইনিংসে ফাইনালে ভারত।
এদিন রদ্রিগেজ তিনে ব্যাটিংয়ে নেমে টিকে থাকেন শেষ পর্যন্ত। বার দুয়েক বিপদে পড়লেও শান্ত-ক্ষুরদার মেধায় সবই সামাল দেন। দলকে নিয়ে যান জয় বন্দরে। তার ব্যাটে ভর করে ছেলে-মেয়েদের ওয়ানডের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে ভারত। ওয়ানডেতে ৩৩৮ রান তাড়া করে জয় তোলার কথা বিশ্বের কেউ যেখানে কল্পনা করতে পারতো না, সেটা করে দেখান জেমিমাহ।
 
                        নীরব প্রার্থনা:
পুরো পৃথিবী একদিকে রেখে স্পেনে পাড়ি জমিয়েছিলেন মেসি। শারীরিক অসুস্থতা—গ্রোথ হরমোনের ঘাটতি—যা আর্জেন্টাইন সুপারস্টারকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছিল। সেখান থেকে উৎরাতে প্রতিরাতে ঈশ্বরের শরনাপন্ন হতেন মেসি। কান্নাভেজা কন্ঠে ফরিয়াদ করতেন—“ঈশ্বর, সব সহজ করে দাও।” চুপ থেকে চেষ্টা চালিয়ে যেতেন। একা থাকা, সবার চেয়ে আলাদা থাকা ছেলেটা একদিন মন জয় করলেন বিশ্বের।
জেমিমাহর জীবনে যেমনটা হয়েছে, তার কণ্ঠে—
‘আমি প্রতিদিন কেঁদেছি, উদ্বেগে ভুগেছি। প্রতিদিন নিজেকে সামলাতে হয়েছে, ঈশ্বরই আমাকে এগিয়ে নিয়েছেন। গত বছর আমাকে বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তখনো আমি ফর্মে ছিলাম, কিন্তু নানা কিছু ঘটছিল। আমার চারপাশে অসাধারণ মানুষ ছিল, যারা আমাকে সহায়তা করেছে।’
স্থির থাকো, ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করবেন:
লিওনেল মেসি যেমন বলেছিলেন, ‘সফলতা সহজে আসে না। প্রতিদিন ছোট ছোট কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই বড় লক্ষ্য অর্জন করা যায়।’ যে আর্জেন্টাইন জাদুকর হেঁটেছিলেন, তা ছিল কন্টকময়। পা ফসকালেই ছিল হারিয়ে যাওয়ার ভয়। জীবনের প্রতিটি সিঁড়ি তিনি ডিঙিয়েছেন সতর্কতার সঙ্গে। ঈশ্বরও তার সঙ্গে ছিলেন।
গতকাল নিজের ইনিংসের সময় বাইবেলের একটি বাণী মনে করে সাহস পেয়েছেন জেমিমাহ।
‘শেষের দিকে আমি শুধু একটি বাণী বলছিলাম—“স্থির থাকো, ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করবেন।” আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করছিলাম।’
জেমিমাহ স্থির থেকেছেন। আঙুলের কড়ায় গুণে খারাপ সময় পার করেছেন। কখনও বাসে-ট্রামে-ট্রেনে, গভীর রাতে ধ্যানে বসেছেন। একাগ্রতা তাঁকে সাফল্য দিয়েছে।
পরিবার, প্রিয়জন, আস্থাভাজন:
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির পর নভি মুম্বাইয়ের ভিআইপি স্ট্যান্ডে বসে থাকা পরিবারের দিকে একটি উড়ন্ত চুম্বন ছুঁড়ে বাবা এবং কোচ ইভানকে ধন্যবাদ জানাতে দেখা যায় জেমিমাহকে। যারা তাঁর পথপ্রদর্শক ও শক্তি। জেমিমাহ বলেছিলেন,
‘আমি আমার মা, বাবা, কোচ এবং আমার উপর বিশ্বাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। গত মাসে এটি সত্যিই কঠিন ছিল, এটি একটি স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।’
 
                        লিওনেল মেসির জীবন বদলে দেওয়ার পেছনে পরিবারের ভূমিকা ছিল অনন্য। তড়িৎ এক সিদ্ধান্তে বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তি। বাবা জর্জ মেসি, মা কুচ্চিটিনি থেকে শুরু করে স্ত্রী রোকুজ্জো—সবাই তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ অংশ। তিনি প্রায়শঃ বলেন, পরিবার ছাড়া কোনো কিছুই সম্ভব হতো না।
পারিবারিক পাশে থাকায় মেসি ফুটবল বিশ্বের আইডল, জেমিমাহ হারিয়ে যাওয়ার পর নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন।
মেসির স্বপ্ন পূরণ, জেমিমাহর অপেক্ষা:
চারবার স্বপ্নভঙ্গ। অপেক্ষা যে কত দীর্ঘ তা লিওনেল মেসির চেয়ে বেশি কে জানে। একটি সময় মনে হচ্ছিল, চাঁদের নিখুঁত দাগ হারিয়েছিল মেসির জীবনে—বিশ্বকাপ না পাওয়া।
সেটি পূরণ হয়েছে ২০২২ সালে। ফ্রান্সকে হারিয়ে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ ট্রফি উপহার দেন মেসি। স্বপ্ন তাঁর পূরণ হয়েছে। এক জীবনে নিশ্চয়ই তার আর কিছু পাওয়ার থাকার কথা নয়।
জেমিমাহও এমন একটি স্বপ্ন উপাখ্যানের অপেক্ষায়। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে ভারত। আগের দু’বার কূলে গিয়ে ডুবে গিয়েছিল। এবার দারুণ ছন্দে থাকা দলটির প্রতিপক্ষ চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকা। দেখার বিষয়, স্বপ্নের পথে নিজেকে কতটা জলাঞ্জলি দিতে পারেন জেমিমাহ। তবেই দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানো যাবে, সার্থক হবে মেসির পথ ধরে হাঁটা।

অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে গতকাল নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত। তবে পুরুষ দল জয়ের পুনরাবৃত্তি করতে পারল না। মেলবোর্নে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দাপুটে জয় পেয়েছে অজিরা। ৮০ বল বাকি থাকতে ভারতকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় ভারত। তবে শুরু থেকে জশ হ্যাজলউডের বোলিং তোপে ১৮.৪ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় অতিথিরা। দলের বিপর্যয়ে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ঝোড়ো ফিফটি করেন অভিষেক। ১৩.২ ওভারে ১২৬ রানের লক্ষ্য অনায়াসে তাড়া করেছে অজিরা।
এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে ভারত। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে সফরকারীরা। শুভমান গিল, সঞ্জু স্যামসন, সূর্যকুমার যাদব, তিলক ভার্মা, অক্ষর প্যাটেল দ্রুত ফিরে যান। প্রথম ছয় ব্যাটারের মধ্যে অভিষেক ছাড়া বাকিরা দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন।
আরেকপ্রান্তে ২০০-এর ওপরে স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করতে থাকেন অভিষেক। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ভারত। সেখান থেকে হার্ষিত রানাকে সঙ্গে নিয়ে ৫৬ রানের জুটি গড়েন অভিষেক। ২২ বলে তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি । রানা ৩৩ বলে ৩৫ রান করে আউট হন। নবম ব্যাটার হিসেবে ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে ৩৭ বলে ৬৮ রান করেন অভিষেক। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ২টি ছক্কা। ১৮.৪ ওভারে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।
অভিষেক ও রানা ছাড়া ভারতের আর কেউই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। এই দুজন বাদে ভারতের বাকি ৮ ব্যাটার মিলে তোলেন মাত্র ১৯ রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হ্যাজেলউড ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।
১২৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে পঞ্চম ওভারেই দলীয় পঞ্চাশ পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৪.৩ ওভারে বরুণ চক্রবর্তীর বলে দলের ৫১ রানে আউট হন হেড। ১৫ বলে ২৮ রান করেন এই ওপেনার। এরপর মিচেল মার্শ ২৬ বলে ৪৬ রানের দাপুটে ইনিংস খেলে আউট হন। তার ইনিংসে ছিল দুইটি চার ও চারটি ছক্কা। তারপর জশ ইংলিসের ২০, মিচেল ওয়েনের ১৪ রানে সহজ জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। আগামী রোববার হোবার্টে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।

সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্বাগতিকের ১৫১ রানের জবাবে মাত্র ১৬.৫ ওভারেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে সফরকারীরা।
ক্যারিবিয়ানদের সহজ জয়ে মাত্র ২৫ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন আকিম অগাস্ত। আর রস্টোন চেজের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৫০ রান। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেটে গড়েন ৪৬ বলে ৯৩ রানের জুটি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ৩ উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। ৪ ওভারে খরচ করেন ৪৩ রান। তাসকিন আহমেদ ৩.৫ ওভারে দেন ৫০ রান।
একাদশে ফেরা শেখ মেহেদি হাসান ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচ করে নেন ১ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫১ (তামিম ৮৯, ইমন ৯, লিটন ৬, সাইফ ২৩, রিশাদ ৩, সোহান ১, নাসুম ১, জাকের ৫, মেহেদি ০*, শরিফুল ০, তাসকিন ৯; হোল্ডার ৪-০-৩২-২, আকিল ৪-০-২৬-১, শেফার্ড ৪-০-৩৬-৩, চেজ ৪-০-২৩-১, পিয়ের ৩-০-২৩-২, মোটি ১-০-১১-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬.৫ ওভারে ১৫২/৫ (আথানেজ ১, জাঙ্গু ৩৪, কিং ৮, চেজ ৫০, অগাস্ত ৫০, পাওয়েল ৫, মোতি ৩; মেহেদি ৪-০-১৮-১, শরিফুল ২-০-১২-০, তাসকিন ৩.৫-০-৫০-০, নাসুম ৩-০-২৯-১, রিশাদ ৪-০-৪৩-৩)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী

মেলবোর্নে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ- ৩৩৯ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করে রীতিমতো ইতিহাস গড়ে হরমনপ্রীত কৌরের দল।
এই অবিশ্বাস্য জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন টপ অর্ডার ব্যাটার জেমিমাহ রদ্রিগেজ। ১৩৪ বলে অপরাজিত ১২৭ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে ভারতকে ফাইনালে তুলেছেন। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ শেষে করে আসা একদমই সহজ ছিল না। তবে জেমিমাহর দৃঢ় মানসিকতা মনে করিয়ে দিয়েছে ‘চেজ মাস্টার’ বিরাট কোহলির কথা।
ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক ম্যাচে জিতিয়েছেন কোহলি। ভারতের মেয়েদের ফাইনাল নিশ্চিতের পর পুরুষ ক্রিকেটের চেজ মাস্টার কোহলিও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জেমিমাহ ও ভারত দলকে।
কোহলি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে অসাধারণ জয়। মেয়েদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, আর জেমিমাহর ইনিংস—এক কথায় অসাধারণ। এই জয় বিশ্বাস, অধ্যবসায় আর আবেগের প্রতীক। গর্বিত টিম ইন্ডিয়া!’
কোহলির এই বার্তা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। হাজারো ক্রিকেটপ্রেমী তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে অভিনন্দন জানায় জেমিমাহকে—যার ইনিংস এখন অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে পুরো ভারতবর্ষের মেয়েদের জন্য।
এক অবিশ্বাস্য জয়, এক নতুন যুগ। এই জয় ভেঙে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার টানা জয়রথ। নারী বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবার ভারত ৩৩৯ রান তাড়া করে জয় পেল, আর পা রাখল তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে নেটে অনুশীলনের সময় প্রাণ হারালেন অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ক্রিকেটার বেন অস্টিন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়, এরপরই স্তব্ধ হয়ে পড়ে মেলবোর্নের ক্রিকেট।
ফার্নট্রি ক্রিকেট ক্লাবের নেটে সাইডআর্ম থেকে আসা একটি বল অস্টিনের ঘাড়ে আঘাত করে। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। অস্টিন হেলমেট পরে ছিলেন, তবে তাতে ছিল না ‘স্টেম গার্ড’—যা পেশাদার পর্যায়ে বাধ্যতামূলক হলেও ক্লাব ক্রিকেটে কেবল পরামর্শস্বরূপ ব্যবহৃত।
অস্টিনের মৃত্যুর পর পুরো ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া। আজ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) ভারত-অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শুরুর আগে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। দুই দলের ক্রিকেটার ও কর্মকর্তারা কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামেন।
আরও পড়ুন
    
| দুশ্চিন্তায় পুরো বিশ্বকাপেই কেঁদেছেন ভারতকে ফাইনালে তোলা জেমিমাহ |   | 
স্টেডিয়ামের বিশাল স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয় বেন অস্টিনের ছবি, মাঠের এক পাশে রাখা হয় তাঁর ক্যাপ—এক তরুণ স্বপ্নবাজের শেষ প্রতীক হিসেবে। নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও একই দৃশ্য—কালো আর্মব্যান্ডে শ্রদ্ধা জানায় ভারত ও অস্ট্রেলিয়া নারী দল।
দেশজুড়ে ক্লাব ও রাজ্য দলের খেলোয়াড়েরা ব্যাট তুলে শ্রদ্ধা জানান অস্টিনকে। শেফিল্ড শিল্ডে ভিক্টোরিয়া ও তাসমানিয়ার খেলোয়াড়রা এক মিনিট নীরবতায় স্মরণ করেন তাঁকে। ফার্নট্রি ক্লাবের সামনে গড়ে উঠেছে স্বতঃস্ফূর্ত স্মৃতিসৌধ—ফুল, নোট, চকোলেট আর ব্যাটে ভরে গেছে জায়গাটা।
বেনের বাবা জেস অস্টিন বলেন, ‘এই দুর্ঘটনা আমাদের ভেঙে দিয়েছে। তবে কিছুটা শান্তি পাই এই ভেবে যে, সে যা সবচেয়ে ভালোবাসত, ঠিক সেটাই করছিল—বন্ধুদের সঙ্গে নেটে নেমে ক্রিকেট খেলা।’
ক্রিকেট ভিক্টোরিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক কামিন্স বলেন, ‘বেন ছিল সেই রকম তরুণ, যেভাবে আমরা আমাদের সন্তানদের দেখতে চাই—শীতকালে ফুটবল, গ্রীষ্মে ক্রিকেট খেলত। সে ছিল প্রাণবন্ত, ভদ্র, আর ক্রিকেটে মগ্ন এক খাঁটি অজি ছেলেটি।’
এই দুর্ঘটনার পর নেট অনুশীলনে সাইডআর্ম ব্যবহারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, এখনই সমাধান নয়—প্রথমে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তদের মানসিক সহায়তায়। অস্টিনের সতীর্থ লিয়াম ভার্টিগান বলেন, ‘সে ছিল প্রাণবন্ত, ভদ্র, সবসময় হাসিখুশি। ক্রিকেট ছিল তার নিঃশ্বাস।’
আরও পড়ুন
    
| বাংলাদেশ 'এ' দলের সফর থেকে কিউই দলে ক্লার্ক |   | 
এ যেন ফিলিপ হিউজের মৃত্যুর প্রতিধ্বনি। ২০১৪ সালের মর্মন্তুদ স্মৃতি—যখন মাঠে বাউন্সারের আঘাতে প্রাণ হারান হিউজ। তাঁর পরিবারও শোক জানিয়েছে বেনের পরিবারকে, জানিয়েছে প্রার্থনা ও সহমর্মিতা।
ইতিমধ্যেই অস্টিনের পরিবারের জন্য খোলা ‘গোফান্ডমি’ তহবিলে দান এসেছে এক লাখ বিশ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বেশি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া জানিয়েছে, এই কঠিন সময়ে বেনের পরিবার ও সতীর্থদের পাশে থাকবে তারা—যেভাবে পুরো ক্রিকেট পরিবার পাশে দাঁড়ায় নিজের একজনকে হারানোর বেদনাতেও।