টি-টোয়েন্টিতে একটা দল যখন আগে ব্যাটিং করে প্রায় ৩০০ ছুঁইছুঁই স্কোর করে ফেলে, এরপর প্রতিপক্ষ দলের আসলে করার থাকে সামান্যই। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের একটিতেও দেড়শ রান করতে ব্যর্থ হওয়া বাংলাদেশের জন্য তাই ভারতের রান পাহাড়ের জবাব দেওয়ার সম্ভাবনা শুরুতেই শেষ হয়ে গেল। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। লিটন দাস দারুণ কিছু শটে ভালো একটা ইনিংস খেললেন। আর শেষের দিকে ফিফটি করলেন তাওহীদ হৃদয়। এই দুজন বাদে বাংলাদেশের বাকি ইনিংসের চিত্রটা ছিল কেবলই ছিল যেন পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর লড়াই। এটাও অবশ্য কাজে দেয়নি। বিশাল হারের পাশাপাশি হতে হয়েছে ধবলধোলাই।
হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ভারতের কাছে ১৩৩ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। ভারতের করা রেকর্ড ৬ উইকেটে ২৯৭ রানের জবাবে ২০ ওভারে বাংলাদেশ করতে পারে মোটে ৭ উইকেটে ১৬৪ রান।
এর মধ্য দিয়ে শেষ হল বাংলাদেশের হতাশাজনক ভারত সফর। টেস্টে ২-০ তে হারের পর টি-টোয়েন্টিতে সঙ্গী হল ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারের তেতো স্বাদ।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া ভারতের ব্যাটাররা ইনিংসের প্রথম থেকেই যেন পণ করেছিলেন ৩০০ রান করার। সেই লক্ষ্যে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে প্রথম ছয় ওভারেই স্কোর দাঁড়ায় এক উইকেটে ৮৯। বেধড়ক পিটুনি খান আক্রমণে আসা প্রত্যেক বোলার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সঞ্জু স্যামসনের হাতে টানা চারটি চার খাওয়া তাসকিন আহমেদ নিজের প্রথম দুই ওভারে গুনেন ২৭ রান। ম্যাচের ধারার বিপরীতে মাঝে অভিষেক শর্মাকে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব।
আক্রমণে এসে প্রথম ওভারে স্যামসনের হাতে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান হজম করা রিশাদ হোসেন তার পরের ওভারে করে বসেন দিনের সবচেয়ে খরুচে ওভারটি। প্রথম বলটি ডট দেওয়ার টানা পাঁচ বলে তাকে পাঁচটি ছক্কা হাঁকান মারমুখী ব্যাটিং করা স্যামসন। ১০ ওভার শেষে ভারতের রান ১ উইকেটে ১৫২।
ইনিংসের ১২তম ওভারে সুরিয়াকুমার যাদব ও স্যামসনের জুটিতে পূর্ণ হয় ১৫০ রান। মাত্র ৪০ বলে এই ফরম্যাটে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন বাংলাদেশের বোলারদের রীতিমত শাসন করা স্যামসন। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৪৭ বলে ৮ ছক্কা ও ১১ চারে ১১১ রানের ইনিংস খেলে ডানহাতি এই ব্যাটার থামেন মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে।
শেষের দিকে ঝড় তোলার কাজটা সারেন হার্দিক পান্ডিয়া ও রিয়ান পরাগ। দুজনেই খেলেন দলের চাহিদা অনুযায়ী ক্যামিও ইনিংস। তাতে ভারত ভালোভাবেই চোখ রাখছিল দলীয় ৩০০ রানের দিকে। অল্পের জন্য তা আর হয়নি। তবে যা হয়েছে, সেটাও কম নয়। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর ভারতের ২৯৭। ৩১৪ রান নিয়ে সবার ওপরে নেপাল।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে এই ফরম্যাটে সর্বোচ্চ রান ছিল ২২৪। ফলে ২৯৮ রান তাড়া করার আশা করাটাও ছিল বোকামি। তবে ব্যাটিং স্বর্গে ভালো একটা স্কোর করবে সফরকারীরা, এটা তো আশা করাই যেত। তবে পুরো ভারত সফরের ধারাবাহিকতায় এই ম্যাচেও এক-দুজন বাদে সবাই উপহার দেন আরেকটি ব্যর্থতাময় পারফরম্যান্স।
মানাংক যাদবের করা ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্সারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন পারভেজ হোসেন ইমন। শান্ত ও তানজিদ হাসান এরপর আগ্রাসী কিছু শটে ভালোই রান বাড়াচ্ছিলেন। তিন ওভারেই হয়ে যায় ৩৫ রান। যদিও জয়ের জন্য সেটাও ছিল ভীষণ কম রান তোলার গতি। ১৫ রানে ফেরেন তানজিদ।
পঞ্চম ওভারে নিতিশ রেড্ডিকে বাংলাদেশ বোলারদের মতোই পিটুনি দেন ছন্দে থাকা লিটন দাস। একে একে ছয় বলে মেরে দেন চারটি বাউন্ডারি। তবে অন্যপ্রান্তে সিরিজে আরও একবার ব্যর্থ শান্ত উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন ১৪ রান করে।
এরপর জমে উঠেছিল লিটন ও তাওহীদের জুটি। ফিফটির পথে থাকা লিটন দাসকে গুগলিতে থামান রবি বিষ্ণোই। পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ৮ চারে সাজানো ৪২ রানের ইনিংস।
এরপর থেকে বাংলাদেশের ইনিংস কেবল একাই টেনেছেন তাওহীদ। ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টিতে আলো ছড়াতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ৯ বলে ৮ রান করে আউট হন বরুণ চক্রবর্তীর বলে।
তবে দুর্দান্ত কয়েকটি শটে ৩৫ বলে ফিফটি তুলে নেন তাওহীদ। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৩ রানে। ৪২ বলের ইনিংসটি সাজান ৫টি চার ও ৩ ছক্কায়।
৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার বিষ্ণোই।
১২ অক্টোবর ২০২৪, ৫:৩০ পিএম
৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম
৭ অক্টোবর ২০২৪, ১:১৩ এম
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগে তো বটেই, এরপরও একটা লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠে নামত স্রেফ লড়াই করার লক্ষ্যে। বিশেষ করে শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। বহুজাতিক টুর্নামেন্ট বা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে সব হারিয়ে শেষ ম্যাচে একটা জয়ের দিকে চোখ থাকত বাংলাদেশের। তবে এই ২০২৪ সালে এসে সেসব দিন ধূসর অতীত হয়ে গেছে বলেই মানেন অনেকেই। ভারত সফরে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের পারফরম্যান্স অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে সেই দিনগুলোকে। সব ম্যাচে স্রেফ উড়ে গিয়ে শেষ ম্যাচটা জয় দিয়ে রাঙ্গানোর একটা প্রচেষ্টা চালাতেই যে সব মনোযোগ এখন বাংলাদেশের।
অথচ পাকিস্তানকে তাদেরই মাঠে টেস্ট সিরিজের ধবলধোলাই করে উড়ন্ত ফর্মে থেকেই ভারতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাটিতে ভারত সবার জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও অন্তত আশা ছিল, ছন্দ ধরে রেখে চোখে চোখ রেখে লড়াই করবে বাংলাদেশ, হারার আগে হার মেনে নেবে না। তবে টেস্ট সিরিজে প্রথম দিনের দুটি সেশন বাদে প্রতিটিতে রোহিত শর্মার দল দেখিয়ে দেয় বাংলাদেশের সাথে তাদের পার্থক্য। দ্বিতীয় টেস্টে তো দুই দিনেরও কম সময় নিয়েই ম্যাচ জিতে যায় স্বাগতিকরা।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারত দল সাজায় একঝাক তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে। সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হার্দিক পান্ডিয়া। প্রায় দ্বিতীয় সারির সেই দলের বিপক্ষেও লড়াই জমাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রথম ম্যাচে টেনেটুনে মাত্র ১২৭ রান করার পর হেরে যায় ৭ উইকেটে, যেই রান তাড়া করতে ভারতের দরকার হয় স্রেফ ১১.৫ ওভার।
দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে রান পাহাড়ে চড়ে ভারত দাঁড় করে ২২১ রান। সিরিজের প্রথম ম্যাচের পর অধিনায়ক শান্ত স্পষ্ট বলে দেন, ১৮০ রান কীভাবে করতে হয়ে সেটা তারা জানেন না। কাপ্তান যখন এমন স্বীকারোক্তি দেন, তার মানে পুরো দলের মনোভাবও একই। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। হারার আগেই হেরে যাওয়া বাংলাদেশ ঝুঁকে সম্মানজনক পরাজয়ের দিকে। যেখানে জেতার সামান্যতম চেষ্টা না করে শুরু থেকেই চলেছে হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা। সেই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়ে এই সিরিজ দিয়ে অবসরে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ খেলেন ৩৯ বলে ৪১ রানের এক ওয়ানডে ইনিংস, যা দলের কোনো কাজেই আসেনি।
প্রথম ম্যাচে নিজেদের ইনিংস শেষের পরই বাংলাদেশ দলের শারীরিক ভাষা ছিল ভীষণ দুর্বল। ১২৭ রান ডিফেন্ড করার আশা নেই যেন তারা বোলিং করতে নেমেছিলেন। আর দ্বিতীয় ম্যাচের চিত্রটাও তো একই। দুটি টেস্টের পর দুটি টি-টোয়েন্টিতে এমন বেহাল দশা হওয়ার পর সফরের শেষ ম্যাচে জয়ের আশা করাটা তাই বাড়াবাড়ি মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। সব হারিয়ে একটা ম্যাচ জিতে বাড়ি ফেরার উপলক্ষ্য হবে তখন একটা স্বান্তনার জয়। নাকি স্বস্তিরও?
এমনটা বলার কারণ সফর জুড়ে বাংলাদেশের ভঙ্গুর ক্রিকেট প্রদর্শনী। পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রবল যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভারতে পা রেখেছিল বাংলাদেশ, তখন নজর ছিল প্রতিটি ম্যাচে জয়ের দিকে। অথচ চারটি ম্যাচে খড়কুটোর মত উড়ে গিয়ে এখন দুই ফরম্যাটেই ধবলধোলাই হওয়ার পথে শান্তর দল। চারদিক থেকে তাই ধেয়ে আসছে সমালোচনা। ফলে শেষ ভালো যার, সব ভালো তার - এই রীতি মেনে একটা জয়ের যদি দেখা মেলে, কিছুটা হলেও ক্ষত প্রলেপ দেওয়া সম্ভব হবে।
তবে বাস্তবতা বলছে, এই বাংলাদেশ দলের পক্ষে জেতাটাও যে ভীষণ কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কিলের চেয়ে যা অনেক বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে মানসিকতার ব্যাপার, যেখানে আধুনিক সময়ে এসেও ১০-১৫ বছর আগের ২০ ওভারের ক্রিকেটের মানসিকতা নিয়ে খেলতে চান খেলোয়াড়রা। ভারত সফরের শেষ ম্যাচটা তাই হতে পারে নতুন শুরুর একটা বার্তা দেওয়ার। বাংলাদেশ কী সটা করতে পারবে? জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আর কয়েকটি ঘণ্টা।
বাংলাদেশ ও ভারতের তৃতীয় ম্যাচটি দেখতে চোখ রাখুন টি-স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের ভরাডুবির মূল কারণ ছিল ব্যাটারদের ব্যর্থতা। ফরম্যাট বদলে ২০ ওভারের ক্রিকেটেও এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ হারের কারণই একই। টানা দুই ম্যাচেই ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। ভারতের বোলারদের সামনে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি লিটন-তাওহীদরা। এর থেকে উত্তরণের উপায় কী? অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত শোনালেন সেই পুরনো গান, দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে ব্যাটারদের।
চলমান সিরিজের দুটি ম্যচেই হয়েছে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে। তবে সেখানেও নিদারুণ ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটাররা। প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা, যা ভারত তাড়া করে স্রেফ ১১.৫ ওভারেই। আর বুধবারের ম্যাচে ভারতের করা ২২১ রানের জবাবে ইনিংসের অর্ধেক শেষের আগেই হেরে বসা বাংলাদেশ টেনেটুনে করতে পারে মাত্র ১৩৫।
ম্যাচের পর এমন ব্যর্থতার কারণ জানতে চাইলে শান্ত নতুন কিছু আর শোনাতে পারলেন না।
“আমি মনে করি আমরা (প্রথম ম্যাচে মতো) একই ভুল করেছি। দল হিসেবে ভালো কিছু করতে পারিনি। আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। আমি মনে করি আগে বোলিং করা একটা ভালো সিদ্ধান্ত ছিল। প্রথম ৬-৭ ওভারের পর ওরা ভালো ব্যাটিং করেছে। এরপর আমরা আমাদের পরিকল্পনা আর বাস্তবায়ন করতে পারিনি। ব্যাটসম্যান হিসেবে আমাদের দায়িত্ব নিতে হবে, আমাদের নিজেদের ওপর বিশ্বাস ধরে রাখতে হবে। আমাদের বোলাররা যেভাবে বোলিং করেছে, তারা রোমাঞ্চকর ছিল, কিন্তু আমি যা বললাম, মাঝের ওভারে আমরা উইকেট নিতে পারিনি।”
টস জিতে বোলিং নেওয়া বাংলাদেশ বল হাতে ভালোই করেছিল শুরুতে। পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারিয়ে ভারতের স্কোর ছিল পঞ্চাশের নিচেই। তবে এরপর শুরু হয় নিতিশ রেড্ডি ও রিংকু সিংহের তাণ্ডব। তাদের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ভারত পার করে দুইশ। দুজনই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পসর সাজিয়ে তুলে নেন ফিফটি। এক তাসকিন আহমেদ বাদে বোলাদের সবাই খেয়েছেন বেদম মার। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন তিন উইকেট নিলেও চার ওভারে দিয়েছেন ৫৫ রান।
তিন ম্যাচে সিরিজে ভারত এগিয়ে ২–০ তে। শেষ ম্যাচ আগামী শনিবার।
প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে যেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ, এরপর এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ হার এড়াতে দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত ক্রিকেটের বিকল্প নেই নাজমুল হোসেন শান্তর দলের। সেই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে দিল্লীর অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শান্ত।
গোয়ালিয়রের সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ৭ উইকেটের বড় হার বরণ করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। সেই ম্যাচ থেকে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে একটি পরিবর্তন এনেছে সফরকারীরা। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের জায়গায় দলে এসেছেন বোলিং অলরাউন্ডার তানজিম হাসান সাকিব। ভারত দল রয়েছে অপরিবর্তিত।
ম্যাচটি সরাসরি দেখতে চোখ রাখুন টি-স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।
বাংলাদেশ একাদশ : পারভেজ হোসেন ইমন, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলী, মেহেদি হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ।
ভারত একাদশ : অভিষেক শর্মা, সঞ্জু স্যামসন, সূর্যকুমার যাদব, নিতিশ রেড্ডি, ওয়াশিংটন সুন্দর, হার্দিক পান্ডিয়া, রিয়ান পরাগ, রিংকু সিং, বরুণ চক্রবর্তী, আর্শদীপ সিং, মায়াঙ্ক যাদব।
চোটে পড়ে প্রায় পাঁচ মাস ধরেই খেলার বাইরে ছিলেন মায়াঙ্ক যাদব। চোট মায়াঙ্ককে খেলার বাইরে রাখলেও তার ওপর ঠিকই আস্থা রেখেছিল ভারতীয় নির্বাচকরা। যার প্রতিদান গোয়ালিয়রে তিনি দিয়েছেন বাংলাদেশের সাথে। অভিষেকে তার গতির কাছে খাবি খেয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তাতে আবারও আলোচনায় মায়াঙ্কের বোলিং। যদিও ভারতীয় পেসার শুধুই গতির ওপরই ভরসা করতে চান না। টিকে থাকতে নজর দিতে চান ভ্যারিয়েশনে আর ধারাবাহিকতায়।
মূলত আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে গতির ঝড়ে সবার নজরে আসেন মায়াঙ্ক। বাংলাদেশের বিপক্ষেও দেখিয়েছেন সেই একই ভেলকি। তবে এদিন গতির সাথে সাথে লাইন লেন্থের দিকেও নজর দিয়েছেন মায়াঙ্ক। যেটিকে টিকে থাকার মূল মন্ত্র হিসেবেই দেখছেন ডানহাতি এই পেসার।
“গতিটাই সবসময় আমার মাথায় কাজ করে। কিন্তু আইপিএলের সময় আমি বুঝতে পেরেছি ধারাবাহিকতাই এই ফরম্যাটের মূল চাবিকাঠি। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। লাইন লেন্থটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ধারাবাহিকতা আপনাকে সাহায্য করে ব্যাটারদের কাছ থেকে প্রাপ্য সম্মান অর্জন করতে। তাই কিছু দিন থেকে লাইন লেন্থে ধারাবাহিকতা ধরে রাখার দিকেই নজর দিয়েছি আমি।”
২১ রানে ১ উইকেট নিয়ে ভারতীয় জার্সিতে অভিষেক হয়েছে মায়াঙ্কের। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক সুরিয়া কুমার যাদব থেকেও পেয়েছেন প্রশংসা। আচমকা এমন অভিষেকে কিছুটা নার্ভাস ছিলেন বলেও ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন মায়াঙ্ক, “আমি খুবই উচ্ছ্বসিত ছিলাম। কিন্তু সত্যি কথা বলতে আমি একটু বেশি নার্ভাস ছিলাম। কারণ ইনজুরির প্রায় তিন-চার মাস পর আমি মাঠে ফিরেছিলাম। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলার খুব একটা সুযোগ পাইনি। হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক অভিষেকের সুযোগ পেলাম। তাই একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম।”
অবসরে গেছেন তিন তারকা ক্রিকেটার, বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরও কয়েকজন শীর্ষ খেলোয়াড়দের। প্রায় দ্বিতীয় সারির ভারত দলের বিপক্ষেও প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। স্রেফ উড়ে গেছে সফরকারীরা। এমন হারের পর অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্তর মনে হচ্ছে, সামগ্রিকভাবেই দুই দলের মাঝে পার্থক্যটা বিশাল।
এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে অন্যতম শক্তিশালী বেঞ্চ ভারতেরই। দলটির মূল দলের বাইরেও যারা থাকেন, তাদের অনেকেই অন্য দেশের একাদশে অনায়াসেই জায়গা করে নেবেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) কল্যাণে প্রতি বছর উঠে আসছেন নতুন নতুন প্রতিভা। ফলে ভারতের হাতে বাড়ছে দক্ষ ক্রিকেটারের সংখ্যা। বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের, যেখানে বিশ্বকাপে ভরাডুবির পরও দলে এসেছে মাত্র তিন পরিবর্তন, যার মধ্যে একটি আবার সাকিব আল হাসানের অবসরের কারণে। অর্থাৎ, বিকল্প খেলোয়াড় খুব বেশি নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।
আরও পড়ুন
পাওয়ার প্লেতেই ব্যাকফুটে চলে গেছে বাংলাদেশ, বললেন শান্ত |
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে হেরে টি-স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ অধিনায়ক অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন নিজেদের দুর্বলতার জায়গা।
“এটা সত্য কথা যে দুই দলের অনেক পার্থক্য আছে। এবং এই জায়গায় অস্বীকার করার কিছু নেই। পার্থক্য আছে, এটা মাঠেও দেখা যায়, মাঠের বাইরেও দেখা যায়। আইপিএলের সাথে তো বিপিএলের তুলনা তো কখনই হবে না। তাই মাঠে ও মাঠের বাইরে আমাদের কীভাবে উন্নতি করতে হবে, সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। বিপিএল কীভাবে আরও ভালো করা যায়, কীভাবে আরও ক্রিকেটার এখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর আমরা যারা খেলছি, তাদেরও উন্নতি করতে হবে। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমরা এরচেয়েও ভালো দল।”
ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে ভারত ঠিক সেভাবেই খেলেছে, যেভাবে আসলে খেলা দরকার। ১২৮ রানের টার্গেট স্পর্শ করেছে ১১.৫ ওভারেই। আর এই রান করতেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন সাতে নামা মেহেদি হাসান মিরাজ। টপ অর্ডার ছিল একেবারেই ব্যর্থ, যার ফলে প্রথম ছয় ওভারে আসে মাত্র ৩৯ রান।
আরও পড়ুন
ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় হার দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের |
তবে শান্ত মনে করেন, তাদের পরিকল্পনা ঠিকই ছিল। প্রয়োজন শুধু সেটা কাজে লাগানোর।
“সবার অ্যাপ্রোচ আমার ভালো লেগেছে। তবে আমাদের এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে আমরা কোন সময়ে কোন পরিস্থিতিতে কেমন শট খেলব। আমরা যে আটজন ব্যাটসম্যান খেলেছি, আমাদের সবারই এই জায়গায় খেয়াল রাখতে হবে। আমি বিশ্বাস করি এই অ্যাপ্রোচে যদি আমরা সামনে খেলি, তাহলে অবশ্যই আমরা ভালো করব।”
সিরিজের প্রথম ম্যাচেই এই ধরনের হার একটা দলকে স্বাভাবিকভাবেই একটা বড় ধাক্কা দেয়। বুধবার সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে তাই বাংলাদেশকে খুব বিশেষ কিছুই করতে হবে। শান্ত বিশ্বাস রাখছেন নিজেদের সামর্থ্যে। “অবশ্যই বিশ্বাস করি আমরা কামব্যাক করতে পারি। যা বললাম, আমি বিশ্বাস করি না যে আমরা এমন দিল। আমরা এরচেয়েও ভালো দল। আশা করব পরবর্তী ম্যাচটা আরও বেশি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ন হবে।”
৫ দিন আগে
৮ দিন আগে
১৯ দিন আগে
১৯ দিন আগে
২০ দিন আগে
২১ দিন আগে
২২ দিন আগে