২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৭ এম
প্রথম দিনের দুর্দান্ত জুটিতে ভারতকে চালকের আসনে নিয়ে যাওয়া রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজাদের দ্রুতই ফিরিয়ে ভারতকে চারশর আগেই আটকে দিলেন বোলাররা। তবে এরপরই বাংলাদেশে শিবিরে নেমে এল দুঃস্বপ্ন। ব্যাটিং বিপর্যয়ে প্রতিপক্ষকে বিশাল লিড উপহার দিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। শেষ বেলায় ভারতের কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়েও তাই মোটেও স্বস্তিতে নেই সফরকারীরা।
চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ভারতের লিড ৩০৮ রানের। প্রথম ইনিংসে ৩৭৬ রান করা রোহিত শর্মার দল দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেটে করেছে ৮১ রান। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪৯ রানে।
চিপকে এদিন দিনজুড়েই দাপট দেখিয়েছেন বোলাররাই। তবে প্রথম দিনের দিনের ধারায় দ্বিতীয় দিনেও পেসাররাই ছিলেন এগিয়ে। এর শুরুটা করেছিলেন বাংলাদেশের পেসাররাই। ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিলো ভারত। আগের দিনের ৮৬ রানে শুরুতেই তাসকিন আহমেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাদেজা। শেষ হয় তার ও অশ্বিনের রেকর্ড গড়া ১৯৯ রানের সপ্তম উইকেট জুটির।
ক্রিজে গিয়েই অ্যাটাকিং ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেন আকাশ দ্বীপ। অন্যপ্রান্তে অশ্বিন ছিলেন ধীরস্থির। অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে তাসকিনের বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় আকাশের ক্যামিও। সকালের সেশনে দারুণ ছন্দ ধরে বোলিং করা এরপর শিকার বানান সেঞ্চুরিয়ান অশ্বিনকেও। দলীয় সর্বোচ্চ ১১৩ রান করেন অভিজ্ঞ এই স্পিনার।
আগের দিন চার উইকেট পাওয়া হাসান জানিয়েছিলেন, ভারতকে তারা আটকাতে চান চারশোর আগে। জাসপ্রিত বুমরাহকে ফিরিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণ করেন তিনি। সাথে পূর্ণ করেন তার ফাইফার। তাতে টানা দুই টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া হয়েছে তার। বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে এই কীর্তি এর আগে ছিল কেবল রবিউল আলমের, ২০১৩ সালে।
চার টেস্টের ক্যারিয়ারে হাসান পাঁচ উইকেট নিয়েছেন দুইবার। বাংলাদেশ পেসারদের মধ্যে যা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সমান দুইবার নিয়েছেন রবিউলও। আর চার বার পাঁচ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে আছেন শাহাদাত হোসেন।
বোলিংয়ের এই সাফল্য ব্যাটিংয়ে নামতেই হতাশায় ডোবায় বাংলাদেশকে।। প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন বুমরাহ। ভেতরে ঢোকা বলটি সাদমান ইসলাম বিভ্রান্ত হয়ে ছেড়ে দেন। উড়ে যায় অফ স্টাম্প।
এরপর কয়েকটি ওভার কিছুটা রয়েসয়ে ব্যাটিং করেন জাকির হাসান ও মুমিনুল হক। তবে লাঞ্চের আগে শেষ ওভারে আকাশ দ্বীপের জোড়া আঘাতে চাপ বাড়ে অনেকটাই। যথারীতি এই দুজনও রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে লাইন মিস করে বোল্ড হন পরপর দুই বলে। পাকিস্তান সিরিজেও দেখে গিয়েছিল এই চিত্র।
৩ উইকেটে ২৬ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশকে আরও বিপদে ফেলে মোহাম্মদ সিরাজের প্রথম শিকার হন শান্ত। তার আগে কাপ্তানের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। আউট হওয়ার আগে বেশ সাবলীল ছিলেন সাম্প্রতিক সময়ে রানখরায় ভোগা এই বাঁহাতি ব্যাটার। দলকে আরও চাপে ফেলে মুশফিকুর রহিমও আউট হন সিঙ্গেল ডিজিটে, বুমরাহর বলে।
৪০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ঘোর বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। উদ্ধারের চেষ্টা চালান আল হাসান ও লিটন দাস। দাঁতে দাঁত চেপে এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। ভালো বলকে সমীহ করলেও খারাপ বলে আদায় করছিলেন বাউন্ডারি। এই দুজনের ৫২ রানের জুটি ভাঙে রবীন্দ্র জাদেজার বলে লিটন (২২ রান) সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ আউটে।
হেলমেটের ভেতর স্ট্র্যাপ বেঁধে সেটা কামড়ে রেখে ব্যাটিং করা সাকিব যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, ফর্মে ফেরারই আভাস দিচ্ছিলেন। খেলেন দারুণ কিছু শটও। তবে বিপদ ডেকে আনেন অহেতুক রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে। জাদেজার বলে তার সেই প্রচেষ্টা ব্যাটের কানায় লেগে মাটিতে না স্পর্শ লেগে বুটে লেগে চলে যায় কিপারের হাতে। শেষ হয় সাকিবের ৩২ রানের ইনিংসের।
চা বিরতির আগে শেষ বলে বুমরাহর তৃতীয় শিকার হন হাসান। ১১২ রানে ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে মেহেদি হাসান মিরাজ বোলারদের নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করেন। শেষ পর্যন্ত সফরকারীরা অলআউট হয় দেড়শর আগেই। ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। ভারতের হয়ে সেরা বোলার ছিলেন বুমরাহ, অভিজ্ঞ এই পেসার নিয়েছে চার উইকেট।
ফলো অনের সুযোগ থাকলেও নিজেরা আরেক দফায় ব্যাটিংয়ে নেমে পড়ে ভারত। ইয়াশাশভি জয়সওয়াল আগ্রাসনের ইঙ্গিত দিলেও টানা দ্বিতীয় ইনিংসে সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হন রোহিত শর্মা। স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন তাসকিনের বলে।
প্রথম ইনিংসের হাফ সেঞ্চুরিয়ান জয়সওয়ালকে ১০ রানে থামান আরেক পেসার জমতে দেননি নাহিদ রানা। এই টেস্টের আগে সবশেষ আগের ২৯ টেস্ট ইনিংসে ৩ বার শুধু সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হয়েছিলেন কোহলি। আর তিনবারই প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। এবার সেই ডাবল ডিজিটে যান ঠিকই, তবে টিকতে পারেননি। মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন ১৭ তে।
দিনশেষে ৩৩ রানে অপরাজিত আছেন শুবমান গিল, সাথে আছেন রিশাভ পান্ত (১২*)।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯:০৪ পিএম
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬:৪৭ পিএম
চা বিরতির ঠিক আগে আক্রমণে ফিরলেন জাসপ্রিত বুমরাহ। মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই আউট হলেন পেসার হাসান মাহমুদ, আর তখনই চা বিরতি দিয়ে দিলেন আম্পায়াররা। আর সেটা বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়েছে আরও বিপদের মুখে। একে একে যে এই সেশনেই সাজঘরে ফিরেছেন পাঁচ ব্যাটার। তাতে এখন উঁকি দিচ্ছে ফলো-অনের শঙ্কা।
দিনের শুরুতে ভারতকে দ্রুতই ৩৭৬ রানে অলআউট করে ভালো কিছু আশা জাগাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিংয়ে নামতেই উবে যায় সব। ভারতের পেসারদের সামনে রীতিমত অসহায় আত্মসমর্পণ করেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার। তাতে ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
যেখানে শেষ, সেখান থেকেই যেন শুরু দ্বিতীয় সেশনের। বুমরাহকে এক ওভারে দুটি চার মেরে অবশ্য ইতিবাচক ক্রিকেটের আভাস ছিল মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে। তবে তাদের লড়াই বেশিদূর যেতে পারেনি। ৩ চারে ২০ রান করে মোমাম্মদ সিরাজের শিকার হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
পরের ওভারে মুশফিকুরকেও ফিরিয়ে মাত্র ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। দাঁতে দাঁত চেপে এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস।
এই দুজনের ৫২ রানের জুটি ভাঙে রবীন্দ্র জাদেজার বলে লিটন দাস সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ আউটে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে জাদেজাকেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন সাকিবও। তার আগে খেলেন ৩২ রানের ইনিংস।
এরপর হাসানের ওই উইকেট। আর তাতে ৩৬.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৮ উইকেটে ১১২। পিছিয়ে এখনও ২৬৪ রানে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টেস্টের দুর্দান্ত ফর্ম নিয়েই নেমেছিলেন ভারতের বিপক্ষে। আর সেই উপলক্ষ্যটা কী দারুণভাবেই না রাঙিয়েছেন হাসান মাহদুদ। চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পূর্ণ করেছেন পাঁচ উইকেট। ফলে টানা দুই ইনিংসে ফাইফার নেওয়ার অসাধারণ কীর্তি গড়েছেন বাংলাদেশ পেসার। তাতে রেকর্ডের পাতায়ও এনেছেন কিছু পরিবর্তন।
এই টেস্টের প্রথম ইনিংস হাসান শেষ করেছেন ৮৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে। ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের পেসারদের এটিই এখন সেরা বোলিং ফিগার। আগেরটি ছিল আবু জায়েদ রাহির (৪/১০৮)।
চার ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দুইবার ইনিংসে পাঁচ শিকার করেছেন হাসান। আর এটা তাকে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার তালিকায় তুলে এনেছে যৌথভাবে রবিউল ইসলামের (৯ ম্যাচ) পাশে। চারবার ফাইফার নিয়ে শীর্ষে আছে শাহাদাস হোসেন (৩৮ ম্যাচ)।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পঞ্চম বোলার হিসেবে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন হাসান। অন্য চারজন হলেন নাঈমুল রহমান দুর্জয়, সাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান মিরাজ ও শাহাদাত হোসেন।
বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টানা দুই ইনিংসে পাঁচ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন হাসান। এর আগে এই রবিউল এই কীর্তি গড়েন ২০১৩ সালে হারারেতে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
হাসান মাহমুদ প্রথম বাংলাদেশি বোলার যিনি ভারতে টেস্ট ম্যাচে পাঁচ উইকেট শিকার করলেন। এরআগের সফরগুলোতে সাকিব-তাইজুল-মিরাজদের মত কোন স্পিনারও এই সাফল্য দেখাতে পারেননি। একজন পেসার হিসেবে চেন্নাইয়ের উইকেটে হাসানের সাফল্যে ভারতকে ৩৭৬ রানে অলআউট করে টাইগাররা।
২০১৯ সালে ইন্দোর টেস্টে পেসার আবু জাহেদ রাহি ১০৮ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন- এটাই ছিল বাংলাদেশি কোন বোলারের সেরা সাফল্য। এবার হাসান মাহমুদ ৮৩ রান খরচায় নিলেন পাঁচ উইকেট। জাসপ্রীত বুমরাহকে জাকির হাসানের ক্যাচ বানিয়ে পাঁচ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছেন হাসান। বুমরাহ ছাড়া তার বাকি চার শিকারের সবাই প্রতিষ্ঠিত ও নামকরা ব্যাটসম্যান। রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, ভিরাট কোহলি ও রিশাভ পান্ত- প্রত্যেকেই টেস্টের প্রথমদিন তাঁর দুর্দান্ত সুইং বোলিংয়ের শিকার হন। এরমধ্যে প্রথম তিন জন আউট হন সিঙ্গেল ফিগারে, একমাত্র পান্ত খেলেছেন ৩৯ রানের ইনিংস।
রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টের শেষ ইনিংসে ৪৩ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন হাসান, যেটি ঐ টেস্ট জিততে সহায়তা করেছিল টাইগারদের। অর্থাৎ টানা দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন হাসান। মাত্র চতুর্থ টেস্ট খেলছেন তিনি, সবমিলে ১৯ উইকেট তাঁর ঝুলিতে ২২.৭৮ গড়ে। তাঁর এই দুর্দান্ত শুরু নতুন দিনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকে। এখনও ২৫ বছর না ছোঁয়া হাসান টানা দুই ইনিংসে ফাইফার পেয়ে ধারাবাহিকতার নজিরও রাখলেন।
লক্ষীপুরের লক্ষ্মী ছেলে হাসান এখন পর্যন্ত ২০টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলেছেন, কিন্তু পাঁচ উইকেটের দেখা পেয়েছেন কেবল ঐ টেস্ট ম্যাচে। দু’বারই ঘটনা ঘটেছে বিদেশের মাটিতে।
এরআগে বাংলাদেশি পেসারদের মধ্যে ইনিংসে সর্বাধিক চারবার পাঁচ উইকেট নেন শাহাদাত হোসেন। দু’বার করে নেন রবিউল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। এছাড়া একবার করে নিয়েছেন মঞ্জুরুল ইসলাম, রুবেল হোসেন, এবাদত হোসেন ও খালেদ আহমেদ। সবমিলে ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের ক্লাবে আছে ৭ বাংলাদেশি পেসারের নাম।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে