২৬ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫৫ এম
পঞ্চম দিনের সকালের সেশনে একের পর এক উইকেট তুলে প্রায় নিশ্চিত ড্র হতে যাওয়া ম্যাচে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ঠিক সেভাবে, যেভাবে ২১ বছর আগে এই পাকিস্তানেই বাংলাদেশের মুঠো থেকে এমনই পরিস্থিতি থেকে একাই জয় ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ইনজামাম-উল-হক। তবে এবার তার উত্তরসূরি তার পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি। মুলতানে খালেদ মাহমুদ সুজন, মোহাম্মদ রফিকদের কান্নাভেজা স্মৃতি রাওয়ালপিন্ডিতে মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজরা ভুলিয়ে দিলেন বিজয়ের হাসিতে। এই জয়টা তাই সবদিক থেকেই অনেক হিসেব মেলানোর এক মেলবন্ধনই।
শুরুটা করা যাক ২০০৩ সালের মুলতান টেস্টের ‘জিরো টু হিরো’ ইনজামামকে দিয়েই। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে থেকেই দলে জায়গা নিয়ে প্রবল চাপের মুখে ছিলেন তিনি। চারদিকে তীব্র সমালোচনার মুখে তাকে ক্যারিয়ার বাঁচানোর শেষ সুযোগ দেওয়া হয় বাংলাদেশের বিপক্ষে। ব্যর্থ হলেই ছুড়ে ফেলা নিশ্চিত। প্রথম দুই টেস্টে মোটামুটি ভালো করলেও চাপটা ছিলোই তার ওপর। এমন সমীকরণে তৃতীয় টেস্টের চতুর্থ ইনিংস ‘ইনজি’ যখন ব্যাট করতে নামলেন, তখন ২৬১ রানের টার্গেটে পাকিস্তানের স্কোর ২ উইকেটে ৬২…
তবে মুলতান কাব্য রচনার মঞ্চ তৈরি করার মন্ত্রে একের পর এক উইকেট নিয়ে জয়ের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে ফেলে বাংলাদেশ। ১৩২ রানে পাকিস্তান হারায় ৬ উইকেট। আর অষ্টম উইকেটের পতন ঘটে ২০৫ রান। জয় আর বাংলাদেশের মাঝে তখন ব্যবধান সেই ইনজামাম। উমর গুলকে নিয়ে তিনি এরপর গড়েন ৫২ রানের জুটি, যা জয় নিশ্চিত করে ফেলে। তবে এই জুটি ভাঙার সুবর্ণ সুযোগ ছিল রফিকের সামনে।
রান চুরির জন্য বোলার বল ডেলিভারির আগেই নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন গুল। তবে স্পোর্টস্ম্যানশিপের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত দেখিয়ে গুলকে ‘মানকাড’ না করে তাকে সতর্ক করেন রফিক। গুল শেষ পর্যন্ত দলীয় ২৫৭ রানে আউট হন। তবে বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে অপরাজিত ১৩৮ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংসে পাকিস্তানকে জেতান ইনজামাম। পরাজয়ের কষ্টে সেদিন রুমাল দিয়ে অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের চোখ মোছার দৃশ্য গোটা দেশকেই কাঁদিয়েছিল।
রফিক যদি গুলকে ‘মানকাড’ করতেন, তাহলে ম্যাচের ফলাফল একই থাকত না বাংলাদেশ জিতে যেত, তা নিয়ে তর্কের অবকাশ আছে বেশ। তবে সেই টেস্টে বল হাতে দলকে জয়ের বন্দরে প্রায় নিয়ে যাওয়ার কাজটা তিনি তো করেছিলেন বেশ ভালোভাবেই। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে এই বাঁহাতি স্পিনার প্রতিপক্ষকে ১৭৬ রানে অলআউট করায় রাখেন বড় ভূমিকা। দ্বিতীয় ইনিংসেও নিয়েছিলেন দুই উইকেট, তবে সেটাও আর যথেষ্ট হয়নি। তবে ২০২৪ সালে এসে আরেক স্পিনার মিরাজ বাংলাদেশের জয়ে রাখলেন প্রায় একই ভূমিকা।
দুই দল মিলিয়ে এই টেস্টের একমাত্র স্পেশালিষ্ট স্পিনার ছিলেন মিরাজ। পেস সহায়ক উইকেটে প্রথম ইনিংসে এক উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ এক স্পেলে শিকার করেন চাড় উইকেট। পাকিস্তানকে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে দেওয়ায় মিরাজের স্পেল ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তবে ব্যাট হাতেও তো তার অবদান কম নয়। মুশফিকুর রহিমের সাথে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের সপ্তম উইকেটে গড়েন রেকর্ড ১৯৬ রানের জুটি। খেলেন ৭৭ রানের এক ইনিংস। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ায় মিরাজের ব্যাটিং বড় একটা পার্থক্যই গড়ে দেয়।
মিরাজের এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের কারণেই ইনজামামের মত ‘হিরো’ হওয়ার সুযোগ আর হয়নি রিজওয়ানের। তিনি অবশ্য কোনো চাপ ছাড়াই এই টেস্ট খেলেছেন। প্রথম ইনিংসে নট আউট থাকেন ১৭১ রানে। আচমকা পাকিস্তান ইনিংস ঘোষণা না করলে ডাবল সেঞ্চুরিতা হয়ত পেয়েও যেতেন। দ্বিতীয় ইনিংসে একের পর উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান যখন খাদের কিনারায়, তখন দেয়াল হয়ে পাল্টা আক্রমণে দারুণ সব শটে একটু একটু করে লিড বাড়ানোর কাজটা করছিলেন এই কিপার-ব্যাটার। মুলতানে ইনজামামও ঠিক একই প্রক্রিয়ায় তার ইনিংসটা বড় করেছিলেন।
তবে মিরাজের বলে অহেতুক সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে শেষ হয় তার প্রতিরোধ আর পাকিস্তানের ড্র করার আশা। আউট হয়ে অনেকটা সময় ক্রিজেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রিজওয়ান। কী ভাবছিলেন? তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে সেই মুলতান টেস্টে বাংলাদেশের প্রতিটি খেলোয়াড় মাঠ ছেড়েছিলেন এমনই এক বুক হতাশাকে সঙ্গী করে।
তবে সেই টেস্টে বাংলাদেশকে হতাশায় নিমজ্জিত করার পেছনে একজনের অবদানও কম নয়। তিনি পাকিস্তানের সেই সময়ের অধিনায়ক রশিদ লতিফ। খেলোয়াড় হিসেবে তিনি কেমন, সেসব ছাপিয়ে সেই ম্যাচের পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি ‘ভিলেন’ হিসেবেই পরিচিতি পান। একই টেস্টে যেখানে নিশ্চিত আউট করার সুযোগ পেয়েও রফিক যেখানে দেখান স্পোর্টসম্যানশিপ, সেখানে রশিদ কিনা প্রতারণা করে ক্যাচ ফেলেও সেটা থেকে উইকেট আদায় করে নিয়েছেন!
বিতর্কিত সেই ঘটনাটি ছিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে। ২২ রানে ব্যাট করছিলেন অলোক কাপালি। পেসার ইয়াসির আলির একটি ডেলিভারি ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে। ঝাঁপিয়ে সেটা তালুবন্দি করার চেষ্টা করেন রশিদ, তবে কয়েক দফার চেষ্টায় তিনি সেটা আর পারেননি। তবে শেষ মুহূর্তে বল মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর চোখের পলকে তা তুলে নিয়ে ক্যাচের আবেদনে কাপালিকে আউটই করে দেন পাকিস্তান অধিনায়ক। রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায়, বল মাটিতে স্পর্শ করেছিল। কাপালি সেই সময়ে যদি আউট না হতেন, বাংলাদেশের লিড আরও বাড়তে পারত। যা ম্যাচের ফলাফলও হয়ত বদলে দিতে পারত। তবে রশিদ প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় সেটা আর হয়নি।
রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের জয়ের পথে আরেকজন উইকেটরক্ষকও ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন, তবে সেটা রশিদের মত চতুরতা নয়, স্রেফ স্কিলের প্রদর্শনী দিয়েই। তিনি লিটন দাস। দ্বিতীয় ইনিংসে একটি ক্যাচ ড্রপ ছাড়া পুরো ম্যাচে অসাধারণ কিপিং করেছেন তিনি। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে সাউদ শাকিল তখন ১৪১ রানে, বোলাররা কোনোভাবেই পারছেন না তাকে ফাঁদে ফেলতে। শেষ পর্যন্ত কাজের কাজটা করে দেন লিটন।
মিরাজের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ক্ষনিকের জন্য ক্রিজের বাইরে পা চলে যায় শাকিলের। চিলের মত ছো মেরে বলটা ধরে সেই সময়ের মধ্যেই তাকে স্টাম্পড করে ফেলেন লিটন। রিপ্লেতে যা দেখে গেছে, তাতে শাকিলের পা আর লাইনের মাঝে ব্যবধান ছিল সবচেয়ে সূক্ষ্ম। একটু এদিক-ওদিক হলেই বেঁচে যেতেন শাকিল। এই আউটে ভাঙে শাকিল ও রিজওয়ানের ২৪০ রানের জুটি। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই লিটনের করা এই দুর্দান্ত স্ট্যাম্পিংও ম্যাচের গতিপথ বদলে রাখে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
পাকিস্তানের মাটিতে সব ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের ক্ষণে তাই সমর্থকদের মুলতান টেস্ট ফিরে আসাটা অবধারিত। সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে পাওয়া এই জয়টি অন্তত আনন্দের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেকটাই। অনেক হিসেব যে মেলানো গেছে এই জয়ের মধ্য দিয়েই।
নাজমুল হাসান শান্তর দল তাই একটা কুর্নিশ তো পেতেই পারেন, মুলতান দুঃখ ভোলানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ ২.০ কে সব ধরণের খেলা মিলিয়ে একটা জয় উপহার দেওয়ার জন্যও।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩:০২ এম
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১:৫২ এম
প্রথম দিনের প্রথম দুই সেশনে ভারতকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ, তাতে এক পর্যায়ে আশা জেগেছিল দলটিকে ২০০ রানের মধ্যেই আটকে দেওয়ার। তবে শেষের দিকের ব্যাটারদের নৈপুণ্যে সেটা আর সম্ভব হয়নি। ভারত পেয়ে যায় বেশ ভালো একটা স্কোর। দ্বিতীয় দিন শেষে ব্যাকফুটে গিয়ে তাসকিন আহমেদের তাই আক্ষেপ, যদি ভারতকে আরও কমে গুটিয়ে দেওয়া যেত।
হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত স্পেলে চা বিরতির আগে ভারতের স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ১৪৪। তবে সেই আগ্রাসন আর ধরে রাখতে পারেনি তাসকিন-হাসান-নাহিদরা। আটে নেমে সেঞ্চুরি করে বসেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। রবীন্দ্র জাদেজা নিয়ে গড়েন ১৯৯ রানের জুটি। যা ভারতকে এনে দেয় ৩৭৬ রানের স্কোর, যা এই উইকেটে বেশ শক্তিশালী রান বলেই প্রমাণিত হচ্ছে।
দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন অকপটে স্বীকার করে নেন প্রথম ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগে তাদের ব্যর্থতা। “হোম বা অ্যাওয়ে, ভারত কিন্তু সবসময় শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। ঘরের মাঠে সবাই এডভান্টেজ নেয়। সামনে আমাদের হোম সিরিজ আছে, আমরাও হয়ত তখন এভাবে আধিপাত্য দেখাব ইনশাআল্লাহ। আমাদের (প্রথম ইনিংসে) আরও আগে ওদের অলআউট করা উচিৎ ছিল। আমরাও আপ টু দ্যা মার্ক বল করতে পারিনি, বিশেষ করে (প্রথম দিন) চা বিরতির পর। সাড়ে তিনশতে (৩৭৬) আটকে দিয়েছি, আড়াইশতে অলআউট করা উচিৎ ছিল। আমরা মেনে নিচ্ছি, সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো করতে পারিনি।”
ভারতের বিপক্ষে এই সিরিজের আগে থেকেই বাংলাদেশ দলে আলোচনায় ছিল এসজি বলে খেলার বিষয়টি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অবশ্য স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, তারা এসজি বলে যে প্রস্তুতি নিয়েছেন সেটাই যথেষ্ট এবং তারা প্রস্তুত। তবে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ দল ভারতের বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। ৪০ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর টেনেটুনে করতে পারে মোটে ১৪৯ রান।
তাসকিন বলেছেন, এসজি বলে নিয়মিত খেলার বাড়তি একটা সুবিধা পেয়েছে ভারত। “পাকিস্তান সিরিজে কিন্তু আমরা ব্যাটিং-বোলিং সব জায়গাতেই ভালো করেই জিতেছি। আসলে টেস্ট ক্রিকেটটাই এমন, সেশন বাই সেশন ভালো করতে হয়। এখানে একটু চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশন, আবার এসজি বলে খেলা। বলের কারণে এখানে ওরা একটু বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। ছোট বেলা থেকে এসজি বলে খেলছে, এই বল নিয়ে তাই ওরা আমাদের চেয়ে ভালো জানে। আমরা প্রথমে সংগ্রাম করেছি, তাও ভালো ব্যাটিং করতে পারতাম। ব্যাটাররাও সেটা মানে। নতুন বলে একটু ভালো খেললে এতগুলো উইকেট যেত না। মিডল অর্ডারের জন্য নতুন বল চ্যালেঞ্জিং এখানে।”
দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত করেছে ৩ উইকেটে ৮১ রান, আর লিড ৩০৮ রানের।
প্রথন দিন এক পর্যায়ে বেশ চাপে থাকা ভারত দিনের শেষেই বসেছিল চালকের আসনে। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় দ্বিতীয় দিন শেষেই বড় জয়ের সুবাস পাচ্ছে স্বাগতিকরা। এখনও তিন দিন বাকি থাকায় দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সামনে রয়েছে লম্বা সময় ব্যাট করার সুযোগ। তবে জাদেজা মনে করেছেন, আরও ১২০ থেকে ১৫০ রান যোগ করতে পারলেই সেটা তাদের জয়ের জন্য যথেষ্ট হবে।
প্রথম দিনে ১৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারতকে পথে ফেরান জাদেজা ও রবীচন্দ্রন অশ্বিন জুটি। রেকর্ড গড়ে তারা সপ্তম উইকেটে যোগ করেন ১৯৯ রান। এতে ভর করে ভারত প্রথম ইনিংস পায় ৩৭৬ রানের স্কোর। জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪৯ রানে। দ্বিতীয় দিন শেষে সাত উইকেট হাতে নিয়ে ৮১ করা ভারতের লিড এখন ৩০৮ রানের। প্রথম দুই দিনেই রাজত্ব করেছেন পেসাররা।
দিনের খেলা শেষে জাদেজা বলেছেন, টেস্টের বাকি অংশেও চিত্রটা একই থাকবে। “এখন আমাদের দ্বিতীয় ইনিংসে বোর্ডে ভালো রান রাখতে হবে। প্রথমে আমাদের খুব ভালো ব্যাট করতে হবে, এখান থেকে আর ১২০ থেকে ১৫০ রান করতে হবে। সেটা হলেই আমরা ভালো অবস্থানে থাকব। এরপর বল করব এবং চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের আউট করার। (উইকেট) ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো, কিন্তু ফাস্ট বোলারদের জন্য উইকেটে এখনও অনেক কিছুই আছে। ব্যাটারদের জন্য কাজটা এতোটা সহজ নয়। ফাস্ট বোলাররা যদি তাদের সেরাটা উজাড় করে দেয়, তাহলে তারা উইকেটে থেকে কিছু আদায় করে নিতে পারে।”
জাদেজা এই টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন ২৯৪ উইকেট নিয়ে। প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন দুই উইকেট। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার দ্বিতীয় ইনিংসেই ৩০০ উইকেটে শিকার করার ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। “আমি আজ যেভাবে বোলিং করেছি, আমি আমার বোলিং নিয়ে খুব খুশি। এই মাঠে ৩০০তম উইকেট নেওয়ার এটি একটি ভালো সুযোগ।”
সেই গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে একটা লম্বা সময় সাকিব আল হাসানকে যেতে হয়েছে চোখের সমস্যা নিয়ে। সেটার প্রভাবে নানা সময়েই তাকে ব্যাটিং করতে দেখা গেছে নানা রকম পজিশনে দাঁড়িয়ে। হেড পজিশন ঠিক রাখতেই মূলত সাকিবকে নিতে হয়েছে নানা পদক্ষেপ। চলমান চেন্নাই টেস্টেও দেখা মিলেছে অভিনব এক ঘটনা। হেলমেটের ভেতর একটি স্ট্র্যাপ কামড়ে ব্যাটিং করেন সাকিব। স্বাভাবিকভাবেই তা জন্ম দিচ্ছে নানা প্রশ্নের।
সাকিবের চোখের সমস্যা অনেক আগেই সেরে গেছে বলে তিনি নিজেই জানিয়েছেন। তবে হেড পজিশন নিয়ে সংগ্রাম যেন কোনোভাবেই শেষ হচ্ছে না। অনেকবারই দেখা গেছে, ব্যাটিংয়ের সময় সাকিবের মাথা থাকছে এক জায়গায়, বলের দিকে তাকাচ্ছেন আড়চোখে আর বল আবার পিচ করছে অন্যদিকে। এসবের প্রভাবে গত এক বছর ধরে ব্যাট হাতে সব ফরম্যাটেই সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে যেতে হচ্ছে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে।
চেন্নাই টেস্টে সেটা কাটানোর চেষ্টায় সাকিব ব্যাট করতে নামেন নতুন উপায় অবলম্বন করে। হেলমেটের ভেতর থাকা একটি স্ট্র্যাপ কামড়ে পুরো ইনিংস জুড়েই ব্যাটিং চালিয়ে যান তিনি৷ বিস্ময়কর এই ব্যাটিং টেকনিক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভালোই আলোচনা হচ্ছে। এটা নিছকই সাজিবের অভ্যাস নাকি চাপের পরিস্থিতিতে ফোকাসের ধরে রাখার প্রচেষ্টা, তা নিয়েও চলছে চর্চা।
ধারাভাষ্যকারদের মধ্যেও সাকিবের এই স্ট্র্যাপ কামড়ে ব্যাটিং নিয়ে মনে জেগেছে প্রশ্ন। এই সিরিজে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা তামিম ইকবালের কাছে এই ব্যাপারে তাই জানতে চেয়েছিলেন সাবেক ভারত উইকেটরক্ষক-ব্যাটার দিনেশ কার্তিক। নিজের জায়গা থেকে তামিম ধারণা দিয়েছেন এই ব্যাপারে।
কার্তিকের মতে, তামিম তাকে বলেছেন এই স্ট্র্যাপটি সাকিবের হেড পজিশন ঠিক রাখতে সাহায্য করছে। এটা সাকিবকে নিশ্চিত করতে সাহায্য করে যে, তার হেড পজিশন ও শটের সময় তার মাথা লেগ সাইডের দিকে না চলে যায়। স্ট্র্যাপটির টান, যা তার হেলমেটে বাঁধা, সাকিবকে একটা ধারণা দেয় যে মাথা খুব বেশি কাত হতে যাচ্ছে। আর এটা তাকে ক্রিজে আরও ভালো ভারসাম্য এবং নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
সাকিবের অভিনব এই কৌশল বেশ কিছুটা কাজে লেগেছিল তার ব্যাটিংয়েও। ৩৬ রানে চার উইকেট হারানোর পর নেমে চাপের মুখে কয়েকটি ভালো শটে খেলেন ৩২ রানের ইনিংস, যা ১৪৯ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোর।
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে