১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬:৩৬ পিএম
লাল মাটির উইকেটে টস জিতে নাজমুল হোসেন শান্ত দিলেন সাহসীকতার পরিচয়। সকালের মুভমেন্ট কাজে লাগাতে প্রতিপক্ষকে পাঠালেন আগে ব্যাটিংয়ে। ১৯৮২ সালে ইংল্যান্ডের পর ভারতের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে কোন দল আগে নিলো ফিল্ডিং। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত কাজে লাগিয়ে প্রথম সেশনে ভারত শিবিরে কাঁপন ধরালেন হাসান মাহমুদ। এক পর্যায়ে ১৪৪ রানে ছয় উইকেট তুলে ভারতকে ব্যাকফুটেও ঠেলে দিল বাংলাদেশ বোলাররা। তবে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা রেকর্ড গড়া এক জুটি ভারতকে নিয়ে গেল চালকের আসনে। এই দুজন অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করলেন ভারতকে শক্ত অবস্থানে রেখে।
চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে ভারতের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৮০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩৯। জন্মদিনে শতক হাঁকানো অশ্বিন অপরাজিত আছেন ১০২ রানে, আর জাদেজার নামের পাশে রয়েছে ৮৬ রান।
অথচ দিনের শুরুটা দেখে কে ভেবেছিল, এভাবে বাংলাদেশ দল ছন্দ হারিয়ে ফেলবে? প্রথম ঘণ্টায় নিখুঁত লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বোলিং করা হাসান শুরুতেই রোহিত শর্মাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে প্রায় ফেলেই দিয়েছিলেন। সেযাত্রায়ায় ভারত অধিনায়ক বেঁচে যান আম্পায়ারস কলে। তবে এই লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসেন হাসানই।
দিনের ষষ্ঠ ওভারে হাসানের অফস্ট্যাম্পের একটু বাইরে পিচ করা ডেলিভারিতে ব্যাটের কানায় লেগে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন রোহিত। নিচু হয়ে আসা ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শান্ত। পরের ওভারেই ফের হাসানের আঘাত।
এবার তার শিকার শুবমান গিল। লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে। চাপে থাকা ভারতকে নিজের করা পরবর্তী ওভারে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন হাসান।
সকালের উইকেটে মুভমেন্ট ছিল। সেটা কাজে লাগিয়ে দুর্দান্ত সেই স্পেলে নতুন বলটাকে কথা বলাচ্ছিলেন হাসান। সাজিয়ে বসেছিলেন ইনসুইং আউটসুইংয়ের পসরা। বিরাট কোহলিকে শিকার বানান ফাঁদে ফেলে। অফস্ট্যাম্পের বেশ বাইরের বল তাড়া করায় দুর্বলতা রয়েছে ভারতের এই তারকা ব্যাটারের। তার আরেকটি নজির দেখিয়ে কোহলি সাজঘরে ফেরেন মাত্র ছয় রানে। এর মধ্য দিয়ে নিজের সবশেষ ২৯ ইনিংসে মাত্র তিন বার এক অঙ্কের ঘরে আউট হলেন তিনি, আর প্রতিবারই প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ।
৩৪ রানে তিন উইকেট হারানো ভারতকে একপ্রান্ত আগলে আশা দেখান ইয়াশাশভি জয়সওয়াল। সাথে পান এই টেস্ট দিয়ে প্রায় দুই বছর পর লাল বলের ক্রিকেটে ফেরা কিপার-ব্যাটার রিশাভ পান্তকে।
আর দলের হাল ধরতে দুজনই পাল্টা আক্রমণের সূচনা করেন। ফলে ভালো বোলিং করলেও রান আটকাতে পারছিলেন না বোলাররা। সেই প্রক্রিয়ায় কিছু সুযোগও এসেছিল। লাঞ্চ বিরতির তাসকিন আহমেদের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান জয়সওয়াল। তবে সেটা তালুবন্দী করতে পারেননি শাদমান ইসলাম।
বিরতির পরই কাঙ্ক্ষিত ব্রেকথ্রু এনে দেন সেই হাসানই। অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করে।
দুপুরের খাবার শেষে ফিরেই আউট পান্ত। অ্যাটাকিং হতে গিয়েই ডেকে আনলেন বিপদ। স্ল্যাশ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন লিটনকে। চার উইকেটের চারটাই হাসানের। এরপর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে এগিয়ে যান জয়সওয়াল। অন্যপ্রান্তে রাহুল কিছুটা দেখেশুনে খেললেও রানের চাকা সচল রাখেন তরুণ এই বাঁহাতি ওপেনার। তুলে নেন ফিফটি। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্টের সবগুলোতেই অন্তত এক ইনিংসে ফিফটি বা তার চেয়ে বেশি রানের কীর্তি গড়েছেন ভারত ওপেনার।
তবে এরপর বেশিক্ষন টিকতে পারেননি জয়সওয়াল। গতিময় পেসার নাহিদ রানার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ইনিংস। ক্যাচ নেন শাদমান। এর পরের ওভারেই আবারও উইকেট। এবার ১৬ রান করা রাহুলকে শর্ট লেগে ক্যাচ বানান মিরাজ।
দেড়শোর আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত তখন বিপদে। চা বিরতির আগে জুটি বাঁধা অশ্বিন ও জাদেজার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু সেখান থেকেই। শুরুর দিকে দুজনই খোলসবন্দী থাকলেও ক্রমেই রানের চাকা সচল করেন দুজনই।
বাংলাদেশ বোলারদের চাপে ফেলে কিছুটা ফ্ল্যাট হয়ে আসা পিচ, পুরনো বল সাথে বোলারদের ক্লান্তি কাজটা করেছে সহজ। ঘরের মাঠে অশ্বিন ব্যাট করেছেন যেন ওয়ানডে মেজাজে। ৫৩ ওভারে প্রথম বোলিংয়ে আসা সাকিবকে দুজনই টার্গেট করেছেন শুরু থেকে। প্রথম দুই ওভারেই সাকিব দেন ২১ রান। যার মধ্যে জাদেজা একাই মারেন তিনটি চার ও একটি ছক্কা।
উইকেটে দুই সেট ব্যাটসম্যান। পিচে মুভমেন্ট নেই বললেই চলে। পেসাররা হয়ে পড়েছেন ক্লান্ত, স্পিনাররা সুবিধা করতে পারছেন না মোটেও। এসবের ফলে দিনের শেষের দিকে অনায়াসে রান বাড়ান দুই ব্যাটার। শেষ সেশনে ৩২ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ভারত তুলেছে ১৬৩। অন্তিম সময়ে সেঞ্চুরির দেখা পান অশ্বিন।
১৮ ওভারে চার মেডেনে ৫৮ রানে চার উইকেট নিয়ে হাসানই বাংলাদেশের সেরা বোলার।
১ দিন আগে
৪ দিন আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
১০ দিন আগে
১০ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১১ দিন আগে
১৪ দিন আগে
১৫ দিন আগে
১৬ দিন আগে
১৬ দিন আগে
২৮ দিন আগে