কবে, কখন
ভুটান-বাংলাদেশ
ফিফা ফ্রেন্ডলি
চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়াম
সন্ধ্যা ৬.০০
আন্তজার্তিক ফুটবলে কোন দেশের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশিবার জিতেছে বাংলাদেশ? প্রশ্নের উত্তর, ভুটান। বাংলাদেশ জিতেছে ১১ বার, হেরেছে একবার, ২০১৬ তে এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে। কিন্তু বাংলাদেশ-ভুটান ফুটবল ম্যাচের নাম এলেই সেই একটা হারই আলোচনায় আসে বেশি। যে স্মৃতি ভূটানের জন্য যত গৌরবের ততোটা অস্বস্তির বাংলাদেশের জন্য। একটা হার মেনে না নিতে পেরে দেড় বছর আর কোনো আন্তজার্তিক ম্যাচই খেলেনি বাংলাদেশ দল। এরপর গল্প পালটেছে, ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ চারবার খেলে জিতেছে প্রতিবারই। ওই ‘বিখ্যাত’ (নাকি কুখ্যাত?) হারের ৮ বছর পর ভুটান গেছে বাংলাদেশ দল। ফ্রেন্ডলি ম্যাচ, তাই শোধ বা প্রতিশোধের গল্প নেই এবার।
তাহলে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী? ভালো খেলা, নতুন সিস্টেম রপ্ত করা নাকি সাফ জেতা অ-২০ ফুটবলারদের সুযোগ করে দেওয়া? ভূটানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা এসব প্রশ্নই শুনতে হলো বেশি। জবাবে সম্ভাব্য সবগুলোর কথাই বলেছেন কোচ। তবে আড়ালে বাংলাদেশের আসল লক্ষ্য র্যাংকিং-এর উন্নতি। গেল বছর অক্টোবরে বিশ্বকাপ প্রাক বাছাইপর্বের ম্যাচে শেষ মালদ্বীপকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর বাছাইপর্বের ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য লেবাননের সঙ্গে একটা ম্যাচ ড্র করা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বনেদি অস্ট্রেলিয়া, ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনের মতো দলের সঙ্গে বাংলাদেশের পেরে না ওঠার কারণ ছিল। সেই পর্ব চুকেছে, এখন বাংলাদেশের সামনে ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাই। সেই বাছাইয়ের ড্র আগামী বছর। ড্র-তে তুলনামূলক সুবিধাজনক জায়গায় নিজেদের খুঁজে পেতেই বাংলাদেশ চায় ভুটানকে হারাতে, ফিফা র্যাঙ্কিং এ উন্নতি করতে।
ফিফা র্যাঙ্কিং এ বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৪ তম। দুই ধাপ ওপরে ভুটান। এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাই বাংলাদেশের মূল লক্ষ্যই ভুটানকে টপকে যাওয়া।
র্যাংকিং- এ ভুটান এগিয়ে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার ফিট ওপরের মাঠটাও স্বাগতিকদের শক্তি- এসব বাংলাদেশের জন্য অযুহাত হিসেবে দাঁড় করানোর সুযোগ তাই নেই। এ বছর ৪টা আন্তজার্তিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, জয়ের মুখ দেখা হয়নি এখনও। বাংলাদেশে যখন পরিবর্তনের হাওয়া, ফুটবল মাঠে তখন চলছে ফল পালটানোর জোর চেষ্টা। সে খবরটা অজানা নয় ভুটান কোচেরও। ম্যাচের আগে প্রেস কনফারেন্সে অউতুসি নাকামুরা নিজের দলকে সেই সতর্ক বার্তাও পৌঁছে দিয়েছেন, “বাংলাদেশে পরিবর্তন হয়েছে। এরপর থেকে ওরা সবকিছুতেই মোটিভেটেড দেখছি। আর মাঠের খেলায় ওরা কঠিন প্রতিপক্ষ। ফুটবলারদের বলছি আগেই নেগেটিভ ভাবলে চলবে না, ভেঙে পড়া যাবে না।“
ভুটানের ভেঙে পড়ার শঙ্কা কম থাকারই কথা ছিল। খেলোয়াড়রা লিগে নিয়মিত খেলছেন, ফিটনেস নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকার কথা নয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিপরীত চিত্র। অনুকূল পরিবেশ-পরিস্থিতির অভাবে মৌসুম পিছিয়ে গেছে। মে মাসে মৌসুম শেষ হওয়ার পর থেকে এক বসুন্ধরা কিংস বাদে বাকি ক্লাবগুলো ফুটবলারদের ক্যাম্প শুরু করতে পারেনি। সেই ডামাডোলে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া হয়ে গেছেন ‘ফ্রি এজেন্ট’। বাস্তবতা মেনে জামাল এই দুই ম্যাচকে বড় চ্যালেঞ্জ মানছেন, “আমার ধারণা, দুটি ম্যাচই ভীষণ কঠিন হবে। কেননা, আমরা তিন মাস কোনও ম্যাচ খেলি না। আমরা ক্যাম্প করেছি, কিন্তু ভুটানের খেলোয়াড়দের মতো একই পর্যায়ে নেই। আমার ধারণা দুটি ম্যাচ কঠিন ও দারুণ হবে।“
কোচ কাবরেরাও কথা বলেছেন প্রায় একই সুরে, ‘আমরা জানি, আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। ভুটানের খেলোয়াড়দের মতো আমরা মৌসুমের মাঝামাঝি পর্যায়ে নেই, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিতেও আমাদের সময় লেগেছে। তবে আগামী মার্চে যেটা আসছে, পরের বছরের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে, এগুলোর জন্য এই উইন্ডো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খুবই চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।“
বাংলাদেশ কোচ ভবিষ্যত ভাবনায় রাখছেন। তাতে আছেন সাফ অ-২০ জেতা চার ফুটবলাররাও। ভূটানের সঙ্গে বাংলাদেশের দুই ম্যাচে তাই আলো অনেকটাই মিরাজুল ইসলাম ও রাব্বি হোসেন রাহুলের ওপর। মিরাজুল হয়েছেন টপস্কোরার ও সেরা খেলোয়াড়, রাহুলের সঙ্গে তার বোঝাপড়া সাফে ছিল দেখার মতো। রাহুল জাতীয় দলে এর আগেও ডাক পেয়েছেন, কিন্তু খেলা হয়নি। এই দুইজনের এবার অভিষেক না হলেই বরং প্রশ্ন উঠবে বেশি।
সামনে অক্টোবর, নভেম্বরের ফিফা উইন্ডোতেও প্রীতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশের। বাফুফের চেষ্টা এই বছরের ভেতরই লেস্টার সিটির ফুটবলার হামজা চৌধুরির গায়ে বাংলাদেশের জার্সি ওঠানোর। ভবিষ্যতের ভাবনার প্রাথমিক ধাপ তাই ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের এই দুই ম্যাচ।
হেড টু হেড
ভুটানের বিপক্ষে ১৪ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ১১ টা, আর দুই ম্যাচ ড্র। শেষ ৩ দেখায় ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশ গোল করেছে ৯টি। সবশেষ ২০২৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানকে ৩-১ এ হারিয়ে বাংলাদেশ উঠেছিল সেমিফাইনালে।
দলের খবর
ইনজুরির কারণে স্কোয়াডে ছিলেন না ডিফেন্ডার তারিক কাজী। পরে মিডফিল্ডার কাজেম শাহকেও হারিয়েছেন কাবরেরা। স্প্যানিশ কোচের দলে বরাবরের মতোই নাই কোনো জাত স্ট্রাইকার। তবে ফরোয়ার্ড পজিশনে রাকিব হোসেন, ফয়সাল ফাহিম, শাহরিয়ার ইমন, শেখ মোরসালিনদের সুঙ্গে মিরাজুল-রাহুলদের থাকাটা বাংলাদেশকে স্বস্তিই দেওয়ার কথা।
ভূটান স্কোয়াডে নেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড চেনচো।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ
মিতুল মারমা, বিশ্বনাথ ঘোষ, তপু বর্মণ, মেহেদী হাসান, সাদ উদ্দিন, জামাল ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হৃদয়, সোহেল রানা, শেখ মোরসালিন, ফয়সাল ফাহিম, রাকিব হোসেন।
২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৪:০৬ পিএম
২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের আসরের আরেকটি নাটকীয় রাতে বিরতির আগেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বার্সেলোনা। তিন গোল হজমের পর দ্বিতীয়ার্ধে স্কোরলাইন হয়ে গিয়েছিল ৪-২। তবে ক্লাবের ইতিহাসের আরেকটি অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানোর ইতিহাস রচনা করে কাতালান ক্লাবটি বেনফিকাকে হারিয়ে দেয় ৫-৪ গোলে! বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক তাই বলেই ফেললেন, এমন ম্যাচ তিনি আগে দেখেননি কখনই।
বার্সেলোনার জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের প্রথম ম্যাচে গড়বড় করা গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি দুটি ভুল করে বসেন। তাতে বিরতির আগেই হ্যাটট্রিক করে ফেলেন বেনফিকার ভাজলিস পাভলিদিস। এরপর আরেকটি গোল হজমে হারের দিকেই যাচ্ছিল বার্সেলোনা। তবে হার না মানার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে রবার্ট লেভানদোভস্কির দ্বিতীয় গোলের পর এরিক গার্সিয়া সমতা টানেন বার্সেলোনার। আর ইনজুরি টাইমে জয় এনে দেওয়া গোলটি করেন রাফিনিয়া।
ফ্লিকের কাছেও তাই ম্যাচটি হয়ে আছে খুব বিশেষ কিছুই।
“এটা একটা পাগলাটে ম্যাচ ছিল। সবচেয়ে ইতিবাচক দিক ছিল আমাদের মানসিকতা। আমরা কামব্যাক করেছি, এটা দুর্দান্ত ব্যাপার। এটাই ফুটবল, আর এটাই আমরা ভালোবাসি। আমার মনে হয় না এর আগে এমন একটা কামব্যাক দেখার অভিজ্ঞতা ছিল আমার।”
এই চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই বার্সেলোনার আছে পিএসজির বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ক্লাসিক এক জয়ের রেকর্ড। সেটা ছাপিয়ে না গেলেও, কাছাকাছিই থাকবে এখন বেনফিকা ম্যাচটি। ৭৮তম মিনিটে লেভানদোভস্কির যখন দলীয় তৃতীয় গোল করেন, তখনও যথেষ্ট ভালো খেলছিল বেনফিকা। তবে যেভাবেই হোক জিততে হবে, পুরো বার্সেলোনা দলের এমন এক দুর্দমনীয় মানসিকতা শেষ পর্যন্ত তাদের এনে দেয় জয়।
এই কারণেই জয়ের জন্য শিষ্যদের বাড়তি প্রশংসাই করেছেন ফ্লিক।
“আমরা বিরতির আগে ভালো ছিলাম না। তারা ভালো খেলে আগে গোলটাও পেয়ে যায়। তারা আমাদের অনেক নিচে নেমে ডিফেন্ড করতে বাধ্য করেছিল। আমরা ঠিক জায়গায় ছিলাম না। বিরতির পর আমরা ভালো খেলেছি এবং বদলি খেলোয়াড়রা সবাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।”
ম্যাচে দুটি ভুল করে সেজনির সমালোচনা হলেও তার কাঁধে আস্থার হাতই রাখলেন ফ্লিক।
“এমন কোন খেলোয়াড় আছে, যে ভুল করে না? এটা স্বাভাবিক। সেজনি কিছু ভুল করেছে, তবে বিরতির আগে সব খেলোয়াড়ই কিছু না কিছু ভুল করেছে।”
স্প্যানিশ রেডিও ওন্দা সেরো সোমবার দাবি তুলেছিল মৌসুম শেষেই রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তবে তাদের সেই দাবি ২৪ ঘণ্টাও ধোপে টেকেনি। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি খোলসা করেছেন রিয়ালে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। নিজ ইচ্ছায় রিয়াল যে তিনি ছাড়তে চান না সে ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন ইতালিয়ান এই কোচ।
রিয়ালের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখেই পড়েছেন আনচেলত্তি। ফলে চলতি মৌসুমে যাই হোক, লস ব্লাঙ্কোসদের ডেরা আনচেলত্তি ছাড়তে চান বলেই জানিয়েছিল ওন্দা সেরো। তাতে রিয়াল সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান আবেগি ভিডিও বানিয়ে ফেলেছিল আনচেলত্তিকে নিয়ে। অনেকে আবার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছিল রিয়াল কোচের বিদায়ের খবরে। যার কারণ অবশ্য রিয়ালের সাম্প্রতিক ফর্ম।
তবে মঙ্গলবার সালজবুর্গের বিপক্ষে ম্যাচের আগে আনচেলত্তি জানালেন ভিন্ন কথা। নিজ ইচ্ছায় রিয়াল ছাড়তে চান না বলেই দিয়ে রাখলেন ইঙ্গিত, “ব্যাপারটা আমি পরিষ্কার করে দিতে চাই। এই ক্লাব আমি কবে ছাড়বো সেটা আমার উপর নির্ভর করছে না। জানি সেটা আসবে একদিন। তবে কবে সেটা তা মোটেও আমার সিদ্ধান্ত হবে না।”
রিয়ালের সাথে আনচেলত্তির চুক্তির মেয়াদ আছে ২০২৬ পর্যন্ত। তবে ৬৫ বছর বয়সী এই কোচ রিয়ালের ডেরায় থাকতে চান কমপক্ষে ২০২৯ সাল পর্যন্ত। ততদিন পর্যন্ত রিয়ালে সভাপতি হিসেবে থাকবেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। একসাথে দুজন বিদায় নিতে পারলে দারুণ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন আনচেলত্তি।
“এটা যে কোনো সময়ই হতে পারে। কালকে, পরের সপ্তাহে, এক বছর কিংবা পাঁচ বছর। ফ্লোরেন্তিনো এখানে আরও চার বছর আছে, আমার ইচ্ছে এখানে আরও চার বছর থাকা, যাতে দুজন একসাথে বিদায় জানাতে পারি ক্লাবকে।”
গেল মৌসুমে রিয়ালকে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতালেও চলতি মৌসুমে রিয়ালের পারফরম্যান্সে দেখা মিলেছে অধারাবাহিকতার ছাপ। যা নিয়েই মূলত সমালোচনার মুখে পড়েছেন আনচেলত্তি। তবে মৌসুমের মাঝপথে এসে তার দলের অবস্থান লা লিগার শীর্ষে। চ্যাম্পিয়নস লিগে টেবিলের ২০ নম্বরে থাকলেও ভালোভাবেই সুযোগ আছে নকআউট পর্বে যাওয়ার। এছাড়া তারা জায়গা করে নিয়েছে কোপা দেল রের কোয়ার্টার ফাইনালেও।
প্রথমার্ধে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাব বেশ কঠিন পরীক্ষাই নিয়েছিল আবাহনীর। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর তারা আটকে রাখতে পারেনি আকাশী-নীলদের। শেষ মুহূর্তের ঝলকে তারা শেষ পর্যন্ত ৩-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। দিনের অন্য ম্যাচে জয় পেয়েছে রহমতগঞ্জ। চট্টগ্রাম আবাহনীকে তারা উড়িয়ে দিয়েছে ৩-০ গোলে।
দুই দল জয় তুলে নেওয়ায় জমে উঠেছে ফেডারেশন কাপের গ্রুপ ‘বি’-এর শীর্ষস্থানের লড়াই। তিন ম্যাচ খেলে তিনটাতেই জয় পেয়েছে দুই দলই। সমান নয় পয়েন্ট হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় টেবিল টপার রহমতগঞ্জ। তাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কে হবে সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। যে ম্যাচে আবার লড়বে দুই দল। ম্যাচ ড্র হলে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে গ্রুপ সেরা হয়ে পরের পর্বে যাবে রহমতগঞ্জ।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে এদিন দুই দল শুরুটা করেছে ধীরগতির। তবে সময়ের সাথে সাথে জমে উঠে ম্যাচ। দুই দলই পেয়েছিল বেশ কিছু সুযোগ, তবে কাজের কাজ গোলের দেখাই মেলেনি কারও। তাতে গোল ছাড়াই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধেও খেলা চলে একই তালে। তবে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে ঝিন্টু মিয়ার এক ভুলে কপাল খোলে আবাহনীর। এনামুল গাজিকে আটকাতে গিয়ে বক্সে ট্যাকেল করে বসেন ঝিন্টু। রেফারি সাথে সাথেই বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পট কিক থেকে আবাহনীকে এগিয়ে দেন ইয়াসিন।
এই গোলটাই যেন পাল্টে দেয় ম্যাচের চিত্র। তিন মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা। আগের পেনাল্টি আদায় করা সেই এনামুল গাজীর নাম জড়িয়ে এখানেও। তার দেওয়া পাস দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুর্দান্ত এক শটে জাল খুঁজে নেন মুরাদ। ৭১ তম মিনিটে তিন নম্বর গোলটা আসে মাহাদি ইউসুফের বাঁ পায়ের চমৎকার ফিনিশিংয়ে।
দিনের অন্য ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে পাত্তাই দেয়নি রহমতগঞ্জ। প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করে তারা নিয়ন্ত্রণ নেয় ম্যাচের। ৩২ মিনিটে প্রথম গোলটা করেন রহমতগঞ্জ অধিনায়ক মোস্তফা আব্দুল খালিক। ৩৮ মিনিটে স্যামুয়েল বোয়াটেংকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন সাজন মিয়া। মিনিট তিনেক বাদে কর্নার থেকে ভেসে আসা বল বুলেট গতির এক শটে জালে জড়ান বোয়াটেং।
দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ ধরে রাখে রহমতগঞ্জ। ৭১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান তোহা। তাতে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রহমতগঞ্জ।
লিওনেল মেসিকে নিয়ে কটু মন্তব্য করতে সাবেক ফুটবলারদের সচারাচর দেখা যায় না। আর্জেন্টাইন অধিনায়কও খুব একটা মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে বিতর্কে জড়ান না। সোমবার মেক্সিকান ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে দেখা মিলেছে অন্য এক মেসির। মেজাজ হারিয়ে করেন ভিন্ন রকম এক উদযাপন। যা মোটেও ভালোভাবে নেয়নি দেশটির সাবেক ফুটবলার আদোলফো বাউতিস্তা। প্রশ্ন তুলেছেন মেসির পেশাদারিত্ব নিয়েও।
ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে লম্বা বিরতি কাটিয়ে মাঠে ফেরেন মেসি। ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিক সমর্থকরা মেসিকে দুয়ো দিতে থাকেন। লম্বা ক্যারিয়ারে প্রতিপক্ষের মাঠে মেসির এমন অভিজ্ঞতা নতুন না। তবে এদিন নিজের মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি সাবেক বার্সেলোনা তারকা।
৩৫ মিনিটে গোল করে ক্লাব আমেরিকান সমর্থকদের জবাবটা দেন ভিন্ন এক উদযাপনে। বিশ্বকাপের তুলনা টেনে খোঁচা দেন তাদের। ইঙ্গিত দিয়ে বোঝান আর্জেন্টিনার আছে তিনটা বিশ্বকাপ, মেক্সিকোর নেই একটাও। মেসির এমন উদযাপন যে বিতর্ক তৈরি করবে তা অনুমিতই ছিল। ম্যাচ শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে তো চলতে থাকে পক্ষে বিপক্ষে মতামতও।
যেখানে নাম লেখান সাবেক মেক্সিকান মিডফিল্ডার আদোলফো বাউতিস্তা। ইনস্টাগ্রামে মেসির সাথে খেলার একটা ছবি দিয়ে বাউতিস্তা লিখেন, “তোমার প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান রয়েছে। তবে আমার দেশকে এভাবে অসম্মান করা তোমার পেশাদারিত্বের ও শিক্ষার অভাবের দিকেই ইঙ্গিত দেয়।”
মাঠের বাইরের এমন সব কাণ্ডে খুব একটা গা ভাসাতে দেখা যায় না মেসিকে। বাউতিস্তার সমালোচনার জবাব মেসি দেন কিনা, সেদিকেই নজর এখন।
লা লিগায় রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু না। প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন ক্লাব থেকে মেলে নানা সব অভিযোগ। ব্যতিক্রম ঘটেনি চলতি মৌসুমেও। তবে কার্লো আনচেলত্তি ও দিয়েগো সিমিওনের মধ্যে চলা বাক-বিতণ্ডা এবার বেশ জমে উঠেছে। গেল কিছু দিন ধরে সংবাদ সম্মেলনে সুযোগ পেলেই দুই কোচ যেন একে অপরকে ঢিল ছুড়ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আনচেলত্তির স্মৃতিশক্তি নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন আতলেতিকো মাদ্রিদ কোচ।
গেল সপ্তাহে সেলতা ভিগোর বিপক্ষে কোপা দেল রের শেষ ষোলোতে ৫-২ গোলে জয় তুলে নিয়েছিল রিয়াল। সেই ম্যাচে শেষে রেফারির বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল সেলতা ভিগোর পক্ষ থেকে। এই ঘটনা যেন সিমিওনেকে সুযোগ করে দেয় রিয়ালকে খোঁচা দেওয়ার। সংবাদ সম্মেলনে এই নিয়ে কথা উঠতেই তিনি বলেছিলেন, ‘ এ আর নতুন কি! গেল ১০০ বছর ধরেই তো এমনটা হয়ে আসছে’।
সিমিওনের এমন উত্তরে যে কার্লো আনচেলত্তি বসে থাকবেন না তাও জানা ছিল। রিয়াল কোচ জবাবটা দিয়েছেন কড়া ভাষায়, “১২৫ ধরে রিয়াল মাদ্রিদ কেমন দাপট দেখিয়েছে তা গোটা দুনিয়াই জানে। যা হয়তো অনেকেরই গায়ে লাগে।” হেতাফে ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচের সাথে একই সুরে তাল মিলিয়েছিলেন রিয়াল মিডফিল্ডার দানি সেবায়োস, “মাদ্রিদের কাছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে দুইবার হারের বেদনা হয়তো ভুলতে পারছেন না তিনি। তাই এমনসব বলছেন তিনি।”
রিয়ালের থেকে ছোঁড়া এমন মন্তব্যের জবাবে সিমিওনে মনে করিয়ে দিয়েছেন আগের কথা। প্রশ্ন তুলেছেন আনচেলত্তির স্মৃতিশক্তি নিয়েও, “সহকর্মীদের নিয়ে উল্টা-পাল্টা মন্তব্য করার মতো লোক আমি না। তাদের আগের কিছু কথা মনে করিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। যখন তিনি(আনচেলত্তি) বায়ার্নের কোচ হিসেবে রিয়ালের বিপক্ষে খেলেছিলেন তখন তো মাঠে যা ঘটেছিল তা নিয়ে ঠিকই প্রশ্ন তুলেছিলেন। ভুলে গেলে চলবে না, সেবায়োসও কিন্তু বেতিসে থাকতে রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।”
দুই কোচের কথার লড়াইয়ের মাঝে অবশ্য আতলেতিকোকে টপকে রিয়াল দখল করেছে লা লিগার শীর্ষস্থান। ২০ ম্যাচে রিয়ালের পয়েন্ট ৪৬, সমান ম্যাচে আতলেতিকোর পয়েন্ট ৪৪।