৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৪:০৮ পিএম
কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সাথে সাকিব আল হাসানের সম্পর্ক যে স্রেফ কোচ-ছাত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তা সবারই কমবেশি জানা। এই বিপিএলে দুজন আছেন দুই দলে। মাঝেমধ্যে দেখাসাক্ষাৎ হলে কথাবার্তা টুকটাক হচ্ছে তাদের। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে ক্রিকেট চলে আসারই কথা। তবে আদতে কিন্তু তা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটের ময়দানে ‘ফুটবল কোচ’ সালাউদ্দিনের ‘১-২টা’ ইনফরমেশন
পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে সাকিবের পদচারণা কম নয়। তবুও খারাপ সময় বা বিশেষ কোনো স্কিল নিয়ে কাজ করায় রংপুর রাইডার্স অলরাউন্ডারের প্রথম পছন্দ সালাউদ্দিনই। দেশের বাইরেও তাকে উড়িয়ে নিয়ে অনুশীলনের ঘটনা রয়েছে।
বিপিএলে সালাউদ্দিন সামলান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দল। চট্রগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে তার দলের জয়ের পর অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে চলে আসল সাকিবের প্রসঙ্গও। কি কি কথা হয় তাদের মধ্যে, এই প্রশ্নের জবাবে অভিজ্ঞ এই কোচ বলেন, “সাকিব আর আমি কথা বললে বেশিরভাগ কথা ক্রিকেটের বাইরেই বলি। খুব কমই আমরা ক্রিকেট নিয়ে কথা বলি। আমরা আমাদের সমস্যা কী, আমাদের সমাধান কি, সেটা নিয়ে বেশি চিন্তা করি বেশি। ক্রিকেট নিয়ে খুব কম কথা হয় আমাদের। আর যেসব কথা আমাদের মধ্যে হয়, সেটা আসলে আমার এখানে বলাটা ঠিক না।”
চোখের সমস্যার কারণে চলতি বিপিএলে শেষ কয়েকটি ম্যাচে ব্যাটিংটা সেভাবে করছেন না সাকিব। সালাউদ্দিন অবশ্য মনে করছেন, সমস্যাটা সাময়িক। “যদি সে ব্যাটিংই না ফিরতে পারে, তাহলে তো সে খেলতে পারবে না। সে ফিরতে পারবে বলেই এখনও মাঠে আছে বলেই আমি মনে করি।”
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সর্বশেষ খেলার আপডেট জানতে চোখ রাখুন টি স্পোর্টসে এছাড়া ফেসবুকে আমাদের ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন ও ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
৪ জুলাই ২০২৫, ২:১৯ পিএম
ওয়ানডে সিরিজে টিকে থাকার লড়াইয়ের আগে বাংলাদেশ স্কোয়াড ছেড়েছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। লন্ডনে চিকিৎসার জন্য পূর্ব নির্ধারিত একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকায় ক্যারিবিয়ান এই কোচ সিরিজের মাঝপথেঅ শ্রীলঙ্কা ত্যাগ করছেন।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সিমন্স শুক্রবারই লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। চিকিৎসা শেষে আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় দলের সঙ্গে ফের যোগ দেবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর সেটা হলে তিনি কেবল মিস করবেন আগামী শনিবারের দ্বিতীয় ম্যাচটি। তৃতীয় ওয়ানডে মাঠে গড়াবে আগামী ৮ জুলাই।
তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ পিছিয়ে ১-০ ব্যবধানে৷ ব্যাটারদের ব্যর্থতায় প্রথম ওয়ানডেতে হারতে হয় ৭৭ রানে, যেখানে বড় অবদান ছিল মাত্র ৫ রানে ৭ উইকেটের পতন। দ্বিতীয় ম্যাচে তাই সিরিজে টিকে থাকতে জয় ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন
হাসারাঙ্গা গুগলিতে ম্লান তাসকিনের বোলিং |
![]() |
ডাগআউটে প্রধান কোচের অনুপস্থিতি কাজটা কঠিন করে তুলতে পারে বাংলাদেশের জন্য৷ এই সিরিজ দিয়েই ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব শুরু করা মেহেদি হাসান মিরাজ শেষ ম্যাচে ছিলেন উইকেটহীন। এই ফরম্যাটে বল হাতে অনেকটা সময় ধরেই তিনি সাদামাটা ফর্মে আছেন। আর ব্যাট হাতে একই চিত্র কিপার-ব্যাটার লিটন দাসেরও, যিনি প্রথম ম্যাচে আউট হন এক ডিজিটেই।
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় শনিবার দুপুর ৩টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস।
প্রত্যাবর্তন ম্যাচে তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিবের তোপে শ্রীলঙ্কাকে ২৪৪ রানে অল আউট করেও লাভ হয়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ ৪ ম্যাচের তিনটিতে জয়ের নিকট অতীত আছে বলেই ছিল ভরসা। প্রিয় ফরম্যাটে হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজেছে বাংলাদেশ দল। তবে ওয়ানডেতে সর্বশেষ ৬ ম্যাচের সব ক'টিতে হেরে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়া বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কা সফরের শুরু করেছে হার দিয়ে।
হাসারাঙ্গার গুগলিতে (৭.৫-২-১০-৪) ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৭৭ রানে হেরে বড় লজ্জা পেতে হয়েছে। মিরাজের নেতৃত্বে নতুন শুরু হয়েছে ম্লান। ২৪৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৬১/১ স্কোরে হারের বৃত্ত ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশের। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে নাজমুল হোসেন শান্ত-তানজিদ হাসান তামিম ৭১ বলে ৭১ রান যোগ করে বড় জয়ের আবহ তৈরি করেছিলেন।
স্ট্রাইক রেটে মনযোগী এই জুটির ব্যাটিং দেখে কপালে হাত উঠেছিল শ্রীলঙ্কার ড্রেসিংরুম এবং ডাগ আউটে। তবে এমন একটা পরিস্থিতি থেকে শান্ত'র রান আউটে কাটা পড়াটা অশুভ লক্ষণ হয়েছে।দুই স্পিনার হাসারাঙ্গা-কামিন্দু মেন্ডিজের ছোবলে স্কোরশিটের চেহারা হয়ে গেছে ১০১/২ থেকে ১০৫/৮! প্রেমাদাসায় এক দমকা হাওয়ায় মাত্র ৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বড় হারের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেমেছে ১৬৭/১০-এ। লেট অর্ডারে জাকের আলী অনিকের ফিফটি (৪ চার, ৪ ছক্কায় ৫১) শুধু সান্ত্বনার উপলক্ষ্য হয়েছে।
আরও পড়ুন
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রধান কোচ সিমন্সকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ |
![]() |
অথচ আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কাকে শুরুতে ভালই চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। ৪ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে নিজেকে ভালোই উপস্থাপন করেন তাসকিন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৬ষ্ঠ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয়বারের মতো ৪ উইকেট শিকারে (১০-২-৪৭-৪) দিয়েছেন তাসকিন স্বাগতিক দলকে ঝাঁকুনি।
তার পেস বোলিং পার্টনার তানজিম হাসান সাকিবও দেন যোগ্য সমর্থন (৯.২-০-৪৬-৩)। এই পেস জুটির বোলিংয়ে ২৪৪/১০-এ থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। বাংলাদেশ পেসারদের বিপক্ষে একাই লড়ে যাওয়া আসালাঙ্কার সেঞ্চুরিতে (১২৩ বলে ৬ চার, ৪ ছক্কায় ১০৬) চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা।
তাসকিন আহমেদ-তানজিম হাসান সাকিবের দারুণ ওপেনিং স্পেলে স্কোরশিটে প্রথম রানের মুখ দেখতে অপেক্ষা করতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে ১১টি বল। ৫ ওভার শেষে স্কোর ১৫/২। সেখান থেকে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-তে ৩ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কার স্কোর হয় ৫০/৩।
স্কোরশিটে ২৯ উঠতে ৩ উইকেট ফেলে দিয়ে শ্রীলঙ্কার উপরে চাপ অব্যাহত রাখতে পারেনি বাংলাদেশ বোলাররা। চতুর্থ উইকেট জুটিতে আসালাঙ্কা-কুশল মেন্ডিস ৭৭ বলে ৬০, পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসালাঙ্কা-লিয়াঙ্গে ৭৬ বলে ৬৪ যোগ করলে চ্যালেঞ্জিং পুঁজির আবহ পায় শ্রীলঙ্কা। কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অভিষেকে উইকেট পান বাঁহাতি স্পিনার তানভির।
অকেশনাল বোলার শান্ত দিয়েছেন আর একটি ব্রেক থ্রু। ইতোপূর্বে ওডিআই ক্যারিয়ারে একটি উইকেটের মালিক ছিলেন শান্ত। আর এবার প্রেমাদাসায় লিয়াঙ্গেকে (৪০ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৯) ডাউন দ্য উইকেটে খেলার টোপ ফেলে লং অনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন শান্ত।
ইনিংসের শেষ ১০ ওভারে সেভাবে রান বাড়াতে দেননি তাসকিন-তানজিমরা। পায়ের পেশীতে টান পড়ে মোস্তাফিজকে বাইরে রেখে বোলিং করাটা যখন শঙ্কায় ফেলে দেয়ার কথা, তখন অন্যদের ভালো বোলিংয়ে শেষ ৪ উইকেট হারানোর বিপরীতে শ্রীলঙ্কা যোগ করতে পেরেছে মাত্র ৫১ রান।
ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে সেঞ্চুরিয়ান আসালাঙ্কাকে (১২৩ বলে ৬ চার, ৪ ছক্কায় ১০৬) মিড উইকেটের উপর দিয়ে খেলতে প্রলুব্ধ করে করে তাকে শিকার বানান তানজিম। ২০২৩ বিশ্বকাপে দিল্লীতে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে আসালাঙ্কা করেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি (১০৮)।
আসালাঙ্কার এই সেঞ্চুরিই শেষ পর্যন্ত দুই দলের মধ্যে তৈরি করেছে ব্যবধান। কঠিন সময়ে এক প্রান্ত আগলে রেখে কীভাবে দৃঢ় প্রত্যয়ে ব্যাট করতে হয়, আসালাঙ্কাকে দেখে তা শেখেনি বাংলাদেশ ব্যাটারদের কেউ। ইনিংসের ৫ম ওভারে আসিথা ফার্নান্ডোর শর্ট বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আনলাকি থারটিনে থেমেছেন ওয়ানডে অভিষিক্ত পারভেজ হোসেন ইমন (১৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৩)।
৭১ বলে ৭১ রানের পার্টনারশিপে তানজিদ হাসান তামিমকে দারুণ সঙ্গ দেয়া শান্ত করেছেন মারাত্মক অপরাধ। রান আউট নামক বিপদ নিজেই ডেকে এনেছেন (২৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৩)।
আরও পড়ুন
নাটকীয় ব্যাটিং ধসে বিশাল হার বাংলাদেশের |
![]() |
১৬.৩ ওভারে ওই আউটটাই অলুক্ষুনে ছিল। সেই থেকে মাত্র ২৬ বলে নেই ৭ উইকেট! লেগ স্পিনার হাসারাঙ্কার দ্বিতীয় বলটি ছিল গুগলি, তা আন্দাজ করতে না পেরে আউট হন লিটন (৪ বলে ০)। ওই ওভারের ৫ম ডেলিভারিতে মিড অফে তানজিদ হাসান তামিম লিয়াঙ্গের দারুণ ফ্লাইং ক্যাচে পরিণত (৬১ বলে ৯ চার, ১ ছক্কায় ৬২)।
কামিন্দু মেন্ডিসের পরের ওভারের তৃতীয় বলে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হৃদয়। হাসারাঙ্গার পরের ওভারে গুগলিতে মিরাজও ফেরেন সাজঘরে। ক্যাপ্টেনসির নতুন অধ্যায়ে উইকেটহীন কাটিয়ে ব্যাটিংয়েও ব্যর্থ মিরাজ। কামিন্দু মেন্ডিসের পরের ওভারের ২য় বলে তানজিম হাসান সাকিব (৬ বলে ১) শর্ট মিড উইকেটে খিকসানার ডাইভিং ক্যাচে পরিনত। ওই ওভারের ৫ম বলে তাসকিন রং লাইনে ডিফেন্স করতে যেয়ে আউট হয়ে যান (৩ বলে ০)।
প্রথম স্পেলে গুগলি ভেল্কিতে বাংলাদেশ ব্যাটারদের নিয়ে ছেলেখেলা উৎসবে মেতে ওঠা লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গা দ্বিতীয় স্পেলেও দারুণ বোলিং করেন। সেটা সামলে ফিফটি করে হারের ব্যবধান কমানোর লড়াই করা জাকের আলী অনিককেও পর্যুদস্ত করেছেন হাসারাঙ্গা গুগলিতে। আর সেই উইকেটটিও যথারীতি এলবিডব্লিউ থেকে।
শুরুতে উইকেট গেলেও রান তাড়ায় শুরুটা হল ইতিবাচক। তানজিদ হাসান তামিমের ফিফটিতে এক উইকেটেই হয়ে গেল শতক। তবে এরপরই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ল বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার। শক্ত অবস্থানে থাকার পর মাত্র ৫ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলল মেহেদি হাসান মিরাজের দল। নাগালের মধ্যে থাকা টার্গেট তাতে হয়ে গেল পাহাড়সম, যা চলে গেল ধরাছোঁয়ার বাইরে। জাকের আলি অনিক ফিফটি করলেও তাই চারিথ আসালাঙ্কার সেঞ্চুরির ম্যাচে শ্রীলঙ্কা পেল বড় জয়।
কলম্বোতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৭৭ রানে। দলটির ২৪৫ রানের টার্গেটে ভালো একটা শুরুর পর ৩৫.৫ ওভারে মাত্র ১৬৭ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
অথচ মাঝারি টার্গেটের পেছনে ছুটে ওপেনিং জুটি ভালো কিছুরই আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। অভিষিক্ত পারভেজ হোসেন ইমন তিন বাউন্ডারিতে দুই অঙ্কের ঘরে পা রাখেন। তবে পারেননি সেটা কাজে লাগাতে। তবে অন্য ওপেনার তানজিদ ছন্দ ধরে রাখেন। মাহিশ থিকসানাকে টানা দুই চার মেরে করেন শুরু।
এরপর মিলন রত্নায়েককে পরপর দুই বলে হাঁকান চার ও ছক্কা। অন্যপ্রান্তে আসিথা ফার্নান্দোকে টানা দুই চার মারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৫তম ওভারে মাত্র ৫১ বলে ফিফটি তুলে নেন তানজিদ। তাদের দুজনের জুটি যেভাবে জমে উঠেছিল, তাতে ক্রমেই ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছিল শ্রীলঙ্কা।
আর তখনই সর্বনাশের শুরু শান্তর রান-আউট দিয়ে। খানিক আগে একটি দুই রানের কলে তানজিদ সাড়া না দেওয়ায় কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। থিকসানার বলে ব্যাকফুটে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে বল ঠেলে তার দুই রানের ডাকে এবার সাড়া দেন তানজিদ, তবে ঝাঁপিয়েও ক্রিজে ফিরতে পারেননি শান্ত।
তার ২৩ রানের ইনিংস যখন থামে, তখন বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ১০০। কে ভেবেছিল, এরপরের কয়েকটি ওভার একটা ঝড় বয়ে যাবে আর রান করতেই খাবি খাবেন ব্যাটাররা? যাওয়া-আসার মিছিলে চোখের পলকেই স্কোর দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১০৫! দুই প্রান্ত থেকে ত্রাস ছড়ান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও কামিন্দু মেন্দিস। দুর্দান্ত স্পেলে দুজন ভাগ করেন পাঁচ উইকেট।
সেই সময়ে প্রতিটি বলেই মনে হচ্ছিল যেন আউট হয়ে যেতে পারেন বাংলাদেশ ব্যাটাররা। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে একাই লড়ে যাওয়া তানজিদও ঝরে যান সেই ঝড়ে। তার আগে খেলেন ৯ চার ও এক ছক্কায় ৬২ রানের ইনিংস।
উইকেটের এই বৃষ্টির মধ্যে খুব দ্রুতই ম্যাচ জয়ের সমীকরণ থেকে বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর। সেই কাজটা কিছুটা করেন জাকের আলি অনিক। নিশ্চিত হারের মুখে বড় কিছু শট খেলে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার করেন ৬৪ বলে ৫১।
এর আগে বল হাতে অবশ্য বাংলাদেশ দল দেখায় ভালো ধারাবাহিকতা। চোট কাটিয়ে চার মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা তাসকিন আহমেদ প্রথম স্পেলেই জানিয়ে দেন, ছন্দ পেতে বেশি সময় লাগেনি তার। একে একে ফেরান নিশান মাদুশকা ও কামিন্দুকে।
শ্রীলঙ্কার চাপ বাড়িয়ে অন্যপ্রান্তে পাথুম নিশাংকাকে শিকার বানান তানজিম। ২৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলা শ্রীলঙ্কার ইনিংস মেরামতের কাজ এরপর শুরু করেন আসালাঙ্কা ও কুসাল মেন্দিস মিলে। তাদের ৬০ রানের জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত তানভীর, শিকার বানান ৪৫ রান করা কুসালকে।
এরপর শ্রীলঙ্কার আরেকটি ফিফটি জুটির ইতি টানতে মিরাজ আক্রমণে আনেন অকেশনাল স্পিনার শান্তকে। প্রথম ওভারেই দেখান চমক। ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন জানিথ লিয়াঙ্গে।
এরপর ছয়, সাত ও অষ্টম উইকেটে ছোট তবে কার্যকর তিনটি জুটিতে স্বাগতিকদের ম্যাচে ধরে রাখেন আসালাঙ্কা। ইনিংসের শেষ দিকে গিয়ে দেখা পান শতকের। তবে তার বিরুদ্ধে বাড়তি পরিকল্পনা নিয়ে সেই সময়ে বল করে বাংলাদেশ, ফলে খুব বেশি বড় শট খেলতে পারেননি তিনি।
শেষ পর্যন্ত থামেন ১০৬ রানে, যা তার দলকে এনে দেয় লড়াই করার মত একটা পুঁজি। ৪৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন তাসকিন। ৪৬ রানে তিন উইকেট নেন আরেক পেসার তানজিম।
চোট যেন পিছু ছাড়ছেই না দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়কদের। জিম্বাবুয়ে সিরিজে টেম্বা বাভুমার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া কেশভ মহারাজও ছিটকে গেছেন চোট পেয়ে। ফলে এক মাসের মধ্যে তৃতীয়বার লাল বলের নেতৃত্ব বদল করতে বাধ্য হয়েছে দলটি৷ দ্বিতীয় টেস্টে দল সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছেন অলরাউন্ডার উইয়ান মুলডার।
নিয়মিত অধিনায়ক বাভুমা গত মাসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে চোট পেয়ে ছিটকে গেছেন এই সিরিজ থেকে। তার জায়গায় চলতি সপ্তাহেই শেষ হওয়া প্রথম টেস্টে মহারাজ প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দেন।
আরও পড়ুন
শর্ত মেনেই স্মিথকে দলে ফেরাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া |
![]() |
ব্যক্তিগতভাবে দারুণ এক অর্জনের এই ম্যাচে ব্যাটে-বলে পারফর্ম করেন মহারাজ। হাত ঘুরিয়ে দুই ইনিংস মিলে চার উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি প্রথম ইনিংসে করেন ফিফটিও। তবে তৃতীয় দিন ব্যাটিং করার সময়ই চোটের শিকার হন তিনি। ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা জেতে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে।
মহারাজ না থাকায় এবার অধিনায়কত্ব করতে যাওয়া মুল্ডার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন মুলডার। এখন পর্যন্ত ২০টি টেস্টসহ মোট ৮৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ক্যারিয়ারে তার একমাত্র নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা এসেছিল কাউন্টি দল লেস্টারশায়ারের হয়ে, ২০২২ সালের ওয়ানডে কাপে।
টেস্ট চ্যাম্পিয়শিপের ফাইনালে ব্যাট হাতে দুই ইনিংসে ব্যর্থ মুল্ডার ছন্দ পান জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে উপহার দেন ক্যারিয়ারের সেরা ১৪৭ রানের ইনিংস।
দ্বিতীয় টেস্টের মহারাজের জায়গায় দলে ডাক পেয়েছেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার সেনুরান মুথুসামি। পেসার লুঙ্গি এনগিডির দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও, তাকে দলের বাইরেই রাখা হয়েছে। বুলাওয়েতে আগামী ৬ জুলাই শুরু হচ্ছে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পাওয়া চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরার জন্য প্রস্তুত স্টিভেন স্মিথ। আঙুলে চোট পাওয়া অস্ট্রেলিয়ার এই তারকা ব্যাটার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টেই মাঠে ফিরছেন, এটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। তবে এজন্য একটা শর্ত মানতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে, আর তা হল স্লিপে ফিল্ডিং করতে পারবেন না স্মিথ।
চলতি মাসে লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালের তৃতীয় দিন ফিল্ডিংয়ের সময় আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন স্মিথ। এরপর চোট কাটানোর প্রক্রিয়া চলে নিউ ইয়র্কে, যেখানে রয়েছে তার নিজের অ্যাপার্টমেন্ট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে প্রথম টেস্ট চলাকালীন বার্বাডোজে দলের সাথে যোগ দেন। এরপরই আঙুলের সেলাই কাটানো হয় সাবেক অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের। স্মিথকে আরও ছয় সপ্তাহ তার ডান হাতের আঙুলে স্প্লিন্ট পরে থাকতে হবে। তবে অজি প্রধান কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড জানিয়েছেন, এতে ব্যাটিংয়ে তার কোনো প্রভাব পড়বে না।
তবে ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে এর প্রভাব থাকবে। আর এই কারণেই চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত নিজের পছন্দের স্লিপ পজিশনে ফিল্ডিং করতে পারবেন না তিনি। আগে থেকেই বিষয়টি নিতে অবগত থাকায় প্রথম টেস্টেই এর প্রস্তুতি নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্টে স্মিথের পজিশন, দ্বিতীয় স্লিপে ছিলেন অলরাউন্ডার বিউ ওয়েবস্টার। অনুশীলনেও তিনি সেখানেই ছিলেন। আর প্রথম ম্যাচ্র তৃতীয় স্লিপে দেখা গেছে ওপেনার স্যাম কনস্টাসকে। আবার অনুশীলনে আরেক অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিনও স্লিপে ফিল্ডিং করেছেন।
অফ স্পিনার নাথান লায়ন যখন বল করেন, তখন সাধারণত স্লিপে দেখা যায় স্মিথকেই। দ্বিতীয় টেস্টে এই জায়গায় দেখার জোর সম্ভাবনা রয়েছে ওপেনার উসমান খাজার। সাথে স্মিথ দলে আসায় বাদ পড়তে যাচ্ছেন প্রথম টেস্টে তার জায়গায় চারে ব্যাট জস ইংলিসকে, যিনি কিপার হলেও স্লিপে ফিল্ডিং করতে পারেন।
গত মঙ্গলবার প্রথমবাত গ্রেনাডার ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুশীলনে ব্যাট করেন স্মিথ। প্রথমে সহকারী কোচ ম্যাথিউ ওয়েডের থ্রোডাউনে ব্যাটিং করেন তিনি। এরপর মূল উইকেটে তিনি পালাক্রমে মোকাবেলা করেন লায়ন ও পেসারদের। দুই গতিময় পেসার জশ হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্কের বিপক্ষে ব্যাট করলেও তারা দুজনই তারা পুরো গতিতে বল করেননি স্মিথের জন্য।
প্রথম টেস্ট তিনদিনেই জিতলেই অস্ট্রেলিয়ার জন্য স্মিথের ফেরাটা গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের টেস্ট গড় ১২৪.৫৭! ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ২০২২ সালে পার্থে করেছিলেন অপরাজিত ২০০। এর আগে ২০১৫ সালে স্যাবাইনা পার্কে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ১৯৯ রানের ইনিংস। আর শেষবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে স্মিথ ওপেন করেছিলেন গাবায়। ওই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া হেরে গেলেও রান তাড়ায় তিনি অপরাজিত ছিলেন ৯১ রানে।
১০ দিন আগে
১০ দিন আগে
১১ দিন আগে
১৩ দিন আগে
১৩ দিন আগে
২০ দিন আগে
২০ দিন আগে
২৩ দিন আগে