লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে অনুশীলনে শন টেইটের ক্লাসের মনযোগী ছাত্র হিসেবেই দেখা গেল হাসান মাহমুদকে। বাংলাদেশের পেসাররা মানের দিক থেকে এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। তবে শারজার ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যে আত্মবিশ্বাস নড়ে গেছে অনেকটাই, পাকিস্তান সফরে তা ফেরাতে হবে হাসানদেরই। সেই অভিযানে পাশে পাচ্ছেন সাবেক অজি স্পিড স্টারকে, পেস বোলিং কোচ হিসেবে!
অনুশীলনে একইরকম মনযোগী ছিলেন তানজিম হাসান সাকিবও। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে সিরিজটা কেটেছে যাচ্ছেতাই। তাই কেবল প্র্যাকটিসেই নয়, পেসারদের টেইটের তালি আদায় করতে হবে লাহোরের মূল ম্যাচেও।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের জেগে ওঠার সিরিজ |
![]() |
সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের চ্যালেঞ্জটা আরো বেশি। ব্যাটিং নিয়ে কাজ বেশি, সেই ব্যাটিংটাই দলের হচ্ছে না ঠিকঠাক। টেইটের সাথে তার আলাপ চলেছে কী দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়েও?
প্র্যাকটিসে ফুটবলে চোটের সমস্যা বেড়ে যায়, তাই অনুশীলনে ফুটবল বাদ দিয়ে আপাতত ভলিবল ভরসা টাইগারদের। মাঠেও একই রকম নানান সমস্যাও এড়াইতে চাইবে লিটন দাসের দল। শিশিরের দোহাই দিলেও কাজের কাজ ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতার উত্তর নেই বাংলাদেশের। আরব আমিরাতের সাথে সিরিজ হারে আত্মবিশ্বাস ঠেকেছে তলানিতে। লিটনের সামনে চ্যালেঞ্জের কমতি নেই পাকিস্তানেও।
প্রধান কোচ ফিল সিমন্স অবশ্য আশা করছেন শারজার হার দলকে করবে চাঙা।
“আরব আমিরাতে সিরিজ হেরে যাওয়া কঠিন। কিন্তু কখনো কখনো এমন কিছু আপনাকে চাঙা করে তোলে, আশা করি আমাদের দলকেও তা করবে।”
পাকিস্তানের সাথে অতীত রেকর্ডও সায় দিবে না বাংলাদেশকে। ১৯ ম্যাচের মোটে তিনটে জয়, যার একটা আবার এশিয়ান গেমসে। অন্য দুটোই মিরপুরে। পাকিস্তানে আর লাহোরেও তাই নিজেদের আক্ষেপের দিনই দেখেছে টাইগাররা। এবারই তিন টি-টোয়েন্টি যে সেই লাহোরেই।
আরও পড়ুন
‘সাকিবের সাথে বিসিবির সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়নি’ |
![]() |
সিমন্স অপেক্ষায় নিজেদের সেরা খেলার।
“আমি জানি না পাকিস্তানকে টি–টোয়েন্টিতে হারানোর জন্য এটাই সেরা সময় কিনা। আমার মনে হয়, এটা আমাদের সেরাটা খেলার সময় এটাই। যেকোনো সময়ই পাকিস্তান ভয়ংকর দল। তারা আজ খারাপ খেলতে পারে, কাল আবার আলাদা হয় যাবে। আপনারা বলছেন পাকিস্তান ভালো খেলছে না, কিন্তু পাকিস্তান তো পাকিস্তানই।”
কোচ বলছেন বটে তবে দল কী পারবে আদৌ নিজেদের সেরাটা শক্তিশালী পাকিস্তানের সাথে খেলতে?
এই সিরিজ দিয়ে কোচ হিসেবে মাইক হেসনের নতুন শুরু পাকিস্তানে দলে। স্কোয়াডে নেই শাহিন শা-বাবর আজম-রিজওয়ানের মতো বড় নাম। তবে চমক হতে পারেন ঘরোয়া ক্রিকেটে ৯ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি করা সাহিবজাদাও। অবিশ্বাস্যভাবে, নিউ জিল্যান্ডের সাথে সবশেষ সিরিজের স্কোয়াডের ৮ জন জায়গা পাননি এবারের দলে।
আগামী বুধবার রাত ৯টায় শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সিরিজ।
২৮ মে ২০২৫, ৯:২০ পিএম
লাহোরে সদ্য সমাপ্ত পিএসএলে পাঁচটি দল আগে ব্যাটিং করে বোর্ড জমা করেছে দুইশ বা তার বেশি রান। সেটা মাথায় রেখেই শুরু থেকে ইতিবাচক ব্যাটিং করল পাকিস্তান। মাঝের দিকে কিছুটা ছন্দপতন হলেও শাদাব আলির দারুণ এক ইনিংসে স্বাগতিকরা পেল বড় স্কোরই। তানজিদ হাসান তামিন আরও একবার দারুণ শুরু পেলেন। লিটন দাসও চেষ্টা করলেন কিছুটা। তবে দলীয়ভাবে এমন একটা রান তাড়ায় যেমন পারফরম্যান্স দরকার, সেটার আর দেখা মিলল না। তাতে সঙ্গী হল বড় হারই।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৭ রানে জিতেছে পাকিস্তান। দলটির করা ৭ উইকেটে ২০১ রানের জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেছে ১৬৪ রানেই।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ একই ভেন্যুতে, আগামী শুক্রবার।
বল হাতে বাংলাদেশের শুরুটা হয় স্বপ্নের মতই। সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে ছন্দহীন শেখ মাহেদি হাসান প্রথম ওভারেই পান সাফল্য। অফস্ট্যাম্প লাইনের বল কাট করতে গিয়ে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন সাইয়ুম আয়ুব।
পরের ওভারে ফের উইকেটের পতন। এবার ফখর জামানকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন শরিফুল ইসলাম। এর মধ্য দিয়ে মাত্র চতুর্থ বাংলাদেশী বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৫০ উইকেট পূর্ণ হয় বাঁহাতি এই পেসারের।
শুরুর এই চাপ অবশ্য দ্রুতই কাটিয়ে ওঠে পাকিস্তান। মাহেদির করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারে তিন বাউন্ডারি আসে সালমান আঘার ব্যাট থেকে। তবে পাওয়ার প্লেতে মূল ঝড়টা তোলেন মূলত মোহাম্মদ হারিস।
তবে বিপজ্জনক হওয়ার আগে তাকে থামাতে সমর্থ হন তানজিম হাসান সাকিব। লং অনে তানজিদ হাসান তামিমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে খেলেন ১৮ বলে ৩১ রানের ইনিংস।
এরপর দুই প্রান্ত থেকেই পেসার বা স্পিনাররা কেউই পারছিলব্যাটারদের চাপে ফেলতে। মাঝের ওভারে যিনি দলের অন্যতম ভরসা, সেই রিশাদ রান গুনেন ওভার প্রতি ১০ করে। ফিফটি করার পর শেষ পর্যন্ত সালমানকে সাজঘরের পথ দেখান হাসান (৩৪ বলে ৫৬)।
রিশাদের বলে আউট হওয়ার আগে এরপর একটি মিনি ঝড় বইয়ে দেন হাসান নাওয়াজ। টানা তিন বলে মারেন ছক্কা ও দুটি চার। ১৪ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ১৩৯।
নিয়মিত বোলারদের কঠিন এক দিনে সেই সময়ে আক্রমণে আসেন পার্টটাইম স্পিনার শামিম হোসেন। এরপর খুশদিলকেও ফিরিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম উইকেট পান তিনি। মাহেদিও অন্যপ্রান্তে শেষটা করেন ভালো। তবে খরুচে রিশাদ তার শেষ ওভারেও রান দেন অকাতরে। তরুণ এই লেগ স্পিনার চার ওভারের স্পেলে দেন ৫৫ রান।
শেষের দিকে শাদাব খানের মাত্র ২৬ বলে ৪৮ রানের ক্যামিওতে ২০০ রান পার করে ফেলে পাকিস্তান। এই রান তাড়া করতে শুরুটা যেমন দরকার ছিল, মোটেও তা পায়নি বাংলাদেশ।
ফাহিম আশরাফের প্রথম ওভারে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে অবশ্য ভালো কিছুরই আভাস দিচ্ছিলেন দুই ওপেনার। তানজিদ সেই ছন্দটা ধরে রাখলেও পারভেজ হোসেন ইমন আউট হয়ে যান মাত্র চার রানেই।
দারুণ ফর্মে থাকা তানজিদ আরও একবার পাওয়ার প্লেতে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরেন। আবরার আহমেদকে ওড়ান টানা দুই ছক্কায়। এরপর হাসান আলিকে টানা দুই বাউন্ডারি মারার পর অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ডেকে আনেন বিপদ। বোল্ড হয়ে শেষ হয় ১৭ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে সাজানো ৩১ রানের ইনিংস।
এরপর বড় এক রানের পেছনে ছোটার সময় যেমন ব্যাটিং দরকার, তার ঠিক বিপরীত ব্যাটিং করে ক্রমেই চাপ বাড়ান লিটন ও তাওহীদ হৃদয় মিলে। পাওয়ার প্লের শেষ তিন ওভারে আসেনি একটি বাউন্ডারি বা ছক্কার মার!
এই দুই ব্যাটার বিশের ঘরে যখন যান, তখনও ব্যাট করছিলেন একশ বা তার কম স্ট্রাইক রেটে। হারিস রউফকে দুই ছক্কা মেরে লিটন কিছুটা চাপ সরালেও খোলসবন্দী হয়ে থাকেন তাওহীদ। প্রথম ২০ বলে করেন মাত্র ১৬ রান!
ফলে চাপ সরাতে গিয়ে বড় শটের দিকেই ঝুঁকতে হয় লিটনকে। শাদাবকে ছক্কার মারার পরে বলে ফের আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে থামেন ৩০ বলে ৪৮ করে।
বাঁহাতি স্পিনার খুশদিল এরপরই তাওহীদের সংগ্রামী ইনিংসের ইতি টানেন। তরুণ এই ব্যাটার ২২ বল খেলে করতে পারেন মোটে ১৭ রান। চার মেরে রানের খাতা খোলা শামিম আউট হন এক ডিজিটেই। তাকে অনুসরণ করেন রিশাদও। বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের সামান্যতম আশাও সেখানেই শেষ।
এরপর বাকি ছিল কেবলই বাংলাদেশের পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর লড়াই। প্রায় ১৭২ স্ট্রাইক রেটে ৩৬ রান আসে জাকের আলি অনিকের ব্যাট থেকে। বাকিরা এরপর টিকতে পারেননি বেশি। ৩.২ ওভারে ৩০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানে সেরা বোলার পেসার হাসান।
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৩৪ জন ক্রিকেটারের সাথে চুক্তি করল স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান এইস স্পোর্টস নেটওয়ার্ক। ধানমন্ডি স্পোর্টস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী চলা ট্রায়ালের মাধ্যমে এই ক্রিকেটারদের বাছাই করা হয়। এই ক্রিকেটাররা এইসের ১৩টি সহযোগী ক্লাবে খেলার সুযোগ পাবেন।
এভাবে ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে খেলোয়াড় বাছাই এবং চুক্তির প্রক্রিয়া দেশের ক্রিকেটে এই প্রথম। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতেই এই আয়োজন। এইস স্পোর্টস নেটওয়ার্কের অন্যতম কর্ণধার শানিয়ান তানিম বলেন,
"ছেলেদের প্রতিভা এবং আগ্রহ দেখে আমরা অভিভূত। আমাদের বিশ্বাস এখান থেকে কোন একজন ক্রিকেটার একদিন জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করবে। আমরা এই আয়োজন ভবিষ্যতে আবার করবো।"
ক্রিকেটারদের সাথে চুক্তির ব্যাপারে শানিয়ান তানিম আরও বলেন,
"আমরা এই খেলোয়াড়দের গ্রুমিং করতে চাই। শুধু খেলা না, খেলার বাইরে তাদের জীবনযাত্রা, কমিউনিকেশন স্কিলস, নৈতিকতা এসব নিয়েও কাজ করা হবে।"
‘স্বপ্নযাত্রা’ নামের এই ট্যালেন্ট হান্টের প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৭,০০০-এরও বেশি প্রতিযোগী তাদের খেলার ভিডিও জমা দেন। দীর্ঘ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার পর অভিজ্ঞ কোচরা সেই ভিডিওগুলো থেকে বেছে নেন ৪০০-এর বেশি প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে, যারা সরাসরি এই ট্রায়ালে অংশ নেন। এদের মধ্য থেকে ২৭ মে ৯৬ জন ফাইনাল রাউন্ডের জন্য মনোনীত হন। ২৮ মে বিশেষ ট্রায়ালের মাধ্যমে ৩৪ ক্রিকেটারকে বাছাই করা হয়।
আরও পড়ুন
ঢাকায় পা রাখলেন ফাহামিদুল, অপেক্ষা জাতীয় দলে অভিষেকের |
![]() |
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। এছাড়াও ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীস, হান্নান সরকার এবং জাভেদ ওমর বেলিম। তাদের উপস্থিতি তরুণ ক্রিকেটারদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সঞ্চার করেছে।
বুধবার অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ আশিম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধানমন্ডি সোসাইটির ক্রীড়া সম্পাদক তায়েব আফজাল; অফিস সম্পাদক শরীফ সজল; এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল খান অলোক।
এইস স্পোর্টস নেটওয়ার্কের কর্ণধার ইশতিয়াক সাদেক, শানিয়ান তানিম, মেহরাব আলম চৌধুরীসহ দেশের স্বনামধন্য ক্রিকেট ব্যক্তিত্বরা ট্রায়ালে উপস্থিত থেকে তরুণ প্রতিভাদের উৎসাহ দিয়েছেন।
তাদের উপস্থিতি ও বক্তব্য তরুণ ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত পিএসএলের শেষের অংশের ধারাবাহিকতা বজায় থাকছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) ছাড়াই হবে এই সিরিজটি।
পিএসএলের শুরু থেকে অবশ্য ছিল ডিআরএস প্রযুক্তির ব্যবহার। তবে বিপত্তি বাধে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে টুর্নামেন্ট স্থগিতের পরই। সাময়িক বিরতি দিয়ে পিএসএল আবার শুরু হওয়ার পর ফাইনাল পর্যন্ত আর দেখা যায়নি ডিআরএসের ব্যবহার।
আরও পড়ুন
বার্সায় দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি নবায়ন করতে যাচ্ছেন ‘নম্বর টেন’ ইয়ামাল |
![]() |
এর মূল কারণ এই ডিআরএস প্রযুক্তির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা টেকনিক্যাল স্টাফের আর পাকিস্তানে না ফেরা। পিএসএল শেষের পরও তারা আর পাকিস্তানে ফেরেননি বলেই খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের।
ফলে বুধবার রাত থেকে শুরু হতে যাওয়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের তিন ম্যাচের সিরিজেও দেখা যাবে না ডিআরএস প্রযুক্তির ব্যবহার। বাংলাদেশ দলকে নাকি ইতোমধ্যেই এই ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে।
ফলে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এই সিরিজটি হতে যাচ্ছে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার। কারণ, দুটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যকার সিরিজে আজকাল ডিআরএস এক অপরিহার্য অংশ। এমনকি ঘরোয়া লিগেও দেখা মেলে এর ব্যবহার। সেখানে একটি আন্তর্জাতিক সিরিজে ডিআরএস না থাকাটা প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে আম্পায়ারদের অনেক সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে এলবিডব্লিউ আউট নিয়ে।
বাংলাদেশ দলের জন্য অবশ্য এটি হতে যাচ্ছে টানা দ্বিতীয় সিরিজ, যেখানে থাকবে না ডিআরএস প্রযুক্তির ব্যবহার। এর আগে চলতি মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে সিরিজেও ছিল একই চিত্র। সেই সিরিজে আম্পায়ারদের কয়েকটি সিদ্ধান্তই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ দলে ফাহামিদুল-সামিত, জায়গা হলো না কিউবা মিচেলের |
![]() |
পাকিস্তান সিরিজে পরিস্থিতি কেমন হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তিনটি ম্যাচই হবে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। পরের দুটি ম্যাচ আগামী ৩০ মে ও ১ জুন।
ফুটবল মাঠে এমন দৃশ্য অহরহই দেখা মেলে। তবে ক্রিকেটে খেলোয়াড়রা বড়জোর তর্কে লিপ্ত হন। সেই সীমানা অবশ্য অতিক্রম হল বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের ম্যাচে, যেখানে হাতাহাতিতে জড়ালেন রিপন মন্ডল ও টিপেসু এনটুলি।
ঘটনাটি মিরপুরে চারদিনের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের ১০৫তম ওভারের। প্রথম বলে ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে ছক্কা মারেন রিপন। এতেই যেন মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এনটুলি। দুই ব্যাটার যখন ক্রিজের মাঝে, তখন কিছু একটা বলতে বলতে এগিয়ে আসেন রিপনের দিকে। কাছাকাছি এসে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের মধ্যেই আগ বাড়িয়ে ধাক্কা দিতে চান এনটুলি, যা কয়েক দফায় হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেন রিপন।
এরপরই এক পর্যায়ে রিপনের হেলমেট ধরে টানাটানি শুরু করেন সফরকারী দলের এনটুলি। আম্পায়ারের হস্তক্ষেপে একবার হেলমেট ছেড়ে দিলেও খানিক বাদে তারই সামনে রীতিমতো রিপনের হেলমেট ধরে জোরেশোরেই টানাটানি শুরু করেন এনটুলি। আম্পায়ার আরও এক দফায় দুজনকে সরিয়ে নেন।
তবে সেখানেই থেমে যাননি এনটুলি। এক হাত উঁচিয়ে কিছু একটা ক্রমাগত বলতে থাকেন রিপনকে। দুই আম্পায়ার ও অন্য ক্রিকেটাররা মিলে এরপর এই দুজনকে আলাদা করেন। এনটুলি অবশ্য তখনও মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না।
এই ধরনের ঘটনার পর খেলোয়াড়রা স্থির থাকতে পারেন না প্রায়ই। তবে রিপন এক্ষেত্রে ঠান্ডা মাথায় এনটুলির মুখোমুখি পরের বলেই করেন দারুণ এক ব্লক।
লাঞ্চ বিরতিতে রিপন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ৪২ রানে। মাহেদির রান ১৭। ১১৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৮ উইকেটে ৩৪৩।
আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এখনও ঢের বাকি। অন্য দলগুলো বাকি দুই ফরম্যাটে খেলে গেলেও বাংলাদেশ দলের আপাতত ব্যস্ততা স্রেফ ২০ ওভারের ক্রিকেটেই। পাকিস্তান সফরে তাই বাদ পড়েছে ওয়ানডে সিরিজ। তবে এই প্রস্তুতিতে বড় ধাক্কা এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হেরে। সেটা পেছনে ফেলে ইতিবাচকই আছেন লিটন দাস। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, পাকিস্তান সফরে তাদের নজর থাকবে বিস্বকাপের প্রস্তুতির দিকে।
পাকিস্তানের সাথে শুরুতে বাংলাদেশের কথা ছিল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলার। তবে সেটা বাতিল করে পরে ঘোষণা দেওয়া হয় কেবল ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার। সফরের কয়েকদিন আগে এটিও নেমে আসে তিন ম্যাচে। অন্যদিকে আরব আমিরাতের সাথে একটি ম্যাচ বাড়িয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলে বাংলাদেশ, যেখানে তারা হেরে যায় ২-১ ব্যবধানে।
আরও পড়ুন
পাকিস্তান সিরিজে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির দিকে চোখ লিটনের |
![]() |
এবার পাকিস্তান সিরিজ শুরুর আগে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে লিটন গাইলেন ইতিবাচকতার গান।
“এখানে আমাদের একটা ভালো অনুশীলন সেশন হয়েছে, আর এখানকার কন্ডিশনের সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। খেলোয়াড়রা এই সিরিজটির জন্য অপেক্ষা করছে। সবাই মনোযোগী। আমরা জানি পাকিস্তান নিজেদের মাঠে কেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারে। এটা প্রতিটি খেলোয়াড়ের জন্য নিজেদের মেলে ধরার দুর্দান্ত সুযোগ। আমরা টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে কিছু কৌশল চেষ্টা করছি, আর এই সফর সেই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।”
লিটন বিশ্বকাপের প্রস্তুতির দিকে নজর রাখলেও আপাতত বাংলাদেশ দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে লড়াই জমিয়ে তোলাই। কারণ, অপেক্ষাকৃত দুর্বল আমিরাতের কাছে যেভাবে সিরিজ হেরে গেছেন তারা, তাতে পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের চ্যালেঞ্জ সামলানো হবে কঠিন মিশনই। তার সাথে যোগ হবে চোটের কারণে তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকারকে হারানো। সাথে রয়েছে ব্যক্তিগত কারণে পেসার নাহিদ রানার সিরিজ থেকে সরে যাওয়ার।
আরও পড়ুন
ম্যান পাওয়ার ক্রিকেট লিগের শিরোপা সাবা ইন্টারন্যাশনালের |
![]() |
সিরিজের প্রথম ম্যাচ হবে আগামী বুধবার, রাত ৯টায়। পরের দুটি ম্যাচ যথাক্রমে ৩০ মে ও ১ জুন। সবগুলো ম্যাচই হবে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে।
১ দিন আগে
২ দিন আগে
৩ দিন আগে
৭ দিন আগে
৮ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১০ দিন আগে
১০ দিন আগে
২৭ দিন আগে