বুন্দেসলিগায় রেলিগেশন এড়ানোর লড়াইয়ে থাকা হাইডেনহিমের গোলরক্ষক কেভিন মুলার ও বোচুম ফরোয়ার্ড ফিলিপ হফম্যান চোট থেকে সেরে উঠছেন। দুই দলের মধ্যকার ম্যাচে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল দুজনকেই।
গত শনিবার হাইডেনহাইম এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বোচুমের ইব্রাহিমা সিসোসকোর সাথে সংঘর্ষে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়েছিলেন মুলার। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়ার আগে লম্বা সময় ধরে তাকে মাঠে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
আর হাইডেনহাইমের মারভিন পিয়েরিংয়ারের সাথে সংঘর্ষে পাঁজরের হাড় ভেঙেছে হাফম্যামের। বোচুম জানিয়েছে, তার চোটটি বেশ গুরুতর ছিল।
দুজনের মধ্যে এই মৌসুমে খেলার সম্ভাবনা আছে কেবল হফম্যানের। তিনি দুই ম্যাচ মিস করবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে মুলার হাইডেনহাইমের হয়ে আবার কবে খেলবেন, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।
তাদের চোট পাওয়ার ম্যাচটি ড্র হয় ০-০ স্কোরলাইনে। পয়েন্ট টেবিলে হাইডেনহাইম আছে ১৬তম স্থানে, আর বোচুম ১৮তম।
বার্সেলোনার বিপক্ষে প্রথম লেগের আগে ও পরে লামিন ইয়ামালকে সিমোনে ইনজাগি ভাসিয়েছেন প্রশংসায়। ফিরতি লেগে শেষ পর্যন্ত ইন্তার মিলান জিতলেও কঠিন লড়াই উপহার দেন ইয়ামাল-পেদ্রি-রাফিনিয়ারা। তাদের পারফরম্যান্স মনে ধরলেও নিজ দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত ইন্তার কোচ। স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, সুযোগ থাকলেও বার্সেলোনার কাউকে এই দলে চাইবেন না তিনি।
৩-৩ গোলে প্রথম লেগ ড্রয়ের পর ইনজাগি বিস্ময় প্রকাশ করেন ইয়ামালের প্রতিভা নিয়ে। এও বলেন, ৫০ বছরে বার্সেলোনা উইঙ্গারের মত প্রতিভা একবারই আসে। ফিরতি লেগে গোল না পেলেও পুরো ১২০ মিনিট জুড়ে ইন্তারের রক্ষণভাগকে তটস্থ রাখেন ইয়ামাল। কম যাননি পেদ্রি, রাফিনিয়া, দানি ওলমো বা ফেররান তরেসরাও।
বার্সেলোনাকে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখলেও প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের জন্য তাই প্রশংসা বরাদ্ধ রেখেছেন ইনজাগি।
“ইয়ামালকে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তবে বার্সেলোনার আরেকজন অবিশ্বাস্য খেলোয়াড়কেও দেখেছি, সে হল ফ্র্যাংকি ডি জং। সেও আমাকে ইয়ামালের মতোই অবাক করেছে। প্রতিটা বল সে ক্লিয়ার করে দিচ্ছিল। বিশ্বের কোনো দলের খেলোয়াড়কেই আমি আমার দলে নিতে চাইব না। তবে ইয়ামাল ছাড়াও তাদের দলে আমি দুর্দান্ত কিছু খেলোয়াড় দেখেছি।”
সান সিরোতে ঘরের মাঠে বিরতির আগে দুই গোল দিয়ে ফাইনালের সুবাস আগেভাগেই পাচ্ছিল ইন্তার। তবে দ্বিতীয়ার্ধে একে একে তিন গোল দিয়ে তাদের প্রায় বিদায় করে দেওয়া পথেই ছিল বার্সেলোনা। সেখান থেকে ৯৩ম মিনিটে সমতা টানার পর অতিরিক্ত সময়ের গোলে ৪-৩ গোলে জিতে ও ৭-৬ স্কোরলাইনে এগিয়ে অবিশ্বাস্য এক কামব্যাকের গল্প রচনা করে ইনজাগির দল।
খেলোয়াড়দের নিবেদনে তাই বিশেষ প্রাপ্তি দেখছেন ইন্তার কোচ।
“সবার আগে আমি বার্সেলোনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। এই দলটিকে হারাতে দুই লেগ জুড়ে ইন্তারকে দানবীয় পারফরম্যান্স দেখাতে হয়েছে। তাদের কোচের হতে পেরে আমি খুশি। তারা মাঠে শতভাগ ঢেলে দিয়েছে। আমাদের কিছু সমস্যা ছিল, তবে হৃদয় দিয়ে খেলে আমরা সব বাধা উতরে গেছি।”
নিজেদের ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলের আরেক সদস্যকে হারাল আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) জানিয়েছে, দেশটির ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের ডিফেন্ডার লুইস গ্যালভান গত সোমবার ৭৭ বছর বয়সে মারা গেছেন।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গ্যালভান গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কর্ডোবার রেইনা ফ্যাবিওলা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আরও পড়ুন
ইউয়েফার তদন্ত চান ক্ষুব্ধ পেদ্রি |
![]() |
আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন গ্যালভান। বুয়েন্স আইরেসের ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে তিনি সেন্টার-ব্যাক হিসেবে খেলেছিলেন।
এরপর ১৯৮২ বিশ্বকাপেও তিনি আর্জেন্টিনার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। গ্যালভান জাতীয় দলের হয়ে মোট ৩৪টি ম্যাচ খেলেছিলেন। আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেন ১৯৮৩ সালে।
এরপর ক্লাব পর্যায়ে গ্যালভান তার শৈশবের ক্লাব ট্যালেরেস ডি কর্ডোবার হয়ে খেলা চালিয়ে যান। ১৯৭০ থেকে ১৯৮২ এবং ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ক্লাবটির হয়ে মোট ১৭টি মৌসুমে খেলেন ক্লাব রেকর্ড ৫০৩টি ম্যাচে।
ইন্তার মিলানের সাথে ফিরতি লেগের লড়াইয়ে শুরুতে দুই গোল হজম করলেও এক পর্যায়ে জয়ের আশা জেগেছিল বেশ। তবে শেষ সময়ে দুটি গোল খেয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজেছে বার্সেলোনার। এই ম্যাচের রেফারিং নিয়ে মাঠে ও মাঠের বাইরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কোচ হান্সি ফ্লিক। তাতে সুর মিলিয়ে মিডফিল্ডার পেদ্রি বলেছেন, ইউয়েফার তদন্ত করা উচিত বিষয়টি।
বিরতির আগে ইন্তার নিজেদের দ্বিতীয় গোলটি করে পেনাল্টি থেকে, যা প্রথমে দেননি রেফারি সাইমন মার্সিনিয়াচ। এরপর বিরতির আগে পেদ্রির একটি শট বক্সের ভেতর ইন্তারের একজনের হাতে লাগলে জোরাল আবেদন হয় পেনাল্টির, তবে রেফারি তা নাকচ করেন। এর সাথে যোগ হতে পারে বার্সেলোনার পেনাল্টির একটি সিদ্ধান্ত, যেখানে লামিন ইয়ামালকে বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ফাউল করেন হেনরিখ মিখারতারিয়ান। প্রথমে পেনাল্টি দিলেও পরে তা বাতিল করেন রেফারি।
আরও পড়ুন
হার ছাপিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ রেফারিংয়ে হতাশ ফ্লিক |
![]() |
ম্যাচ শেষে এসব নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন পেদ্রি।
“এই রেফারি এবারই যে প্রথম এমন কিছু করলেন, তা কিন্তু না। ইউয়েফার এটা তদন্ত করা উচিত। প্রতিটি ৫০-৫০ সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষেই গেছে। লামিন ইয়ামালের ফাউলে স্পষ্ট পেনাল্টি ছিল, আর মিখারতারিয়ানকেও তার দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেওয়া উচিত ছিল। এর একটিও হয়নি।”
এই ম্যাচে হেরে শেষ হয়ে গেছে বার্সেলোনার ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন। অথচ সান সিরোতে বিরতির পর ঘুরে দাঁড়িয়ে এক একে একে তিন গোল দিয়ে ৯২তম মিনিট পর্যন্ত ৬-৫ স্কোরলাইনে ফাইনালের পথেই ছিল ফ্লিকের দল। সেখান থেকে ইনজুরি ও অতিরিক্ত সময়ে দুই গোল দিয়ে বাজিমাত করে ইন্তার। ফলে কোপা দেল রে জয়ী বার্সেলোনার সামনে এখন কেবল টিকে আছে লা লিগা জয়ের আশা, যেখানে ৪ পয়েন্টে এগিয়ে আগামী রোববার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলবে বার্সেলোনা।
ইন্তারের কাছে হারের হতাশা তাই দ্রুতই ভুলতে চান পেদ্রি।
“আমরা একদম শেষ হয়ে গেছি। তবে কাল থেকে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। আমাদের এখন রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হবে, কারন এটা লিগ জয়ের ব্যাপার।”
চলতি মৌসুমে কয়েকবারই বলেছেন, রেফারিং নিয়ে বাড়তি কথা বলতে চান না। তবে ইন্তার মিলানের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ের পর অনাকাঙ্ক্ষিত সেই কাজটাই করলেন বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক। কিছু সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে না আসায় ভীষণ হতাশ তিনি। জার্মান এই কোচ মনে করেন, রেফারি শতভাগ ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
প্রথম লেগে ৩-৩ গোলে ড্র করা বার্সেলোনার সামনে দ্বিতীয় লেগের কাজটা কঠিন ছিল ম্যাচটা ইন্তারের মাঠে হওয়ায়। তবে দুই গোলে পিছিয়ে তিন গোল দিয়ে জয়ের আশা জাগিয়ে তুলেছিল ফ্লিকের দল। নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে ৪-৩ গোলে জিতে ইন্তার, ফাইনালে পা রাখে ৭-৬ ব্যবধানে এগিয়ে। এই লেগে পেনাল্টি, হ্যান্ডবল সহ কিছু টাইট কল রেফারি দিয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাবটির পক্ষে।
আরও পড়ুন
মিলান কাব্যে ধরাশায়ী বার্সা, ফাইনালে ইন্তার |
![]() |
এর ম্যাচ শেষে এটা নিয়েই হতাশা প্রকাশ করলেন ফ্লিক।
“আমি রেফারিকে নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে চাই না, কিন্তু আমার মনে হয় তার প্রতিটি ৫০-৫০ সিদ্ধান্তই তাদের পক্ষে গেছে। তবে এটাই ফুটবল, আপনাকে এটা মেনে নিতে হবে। ব্যাপারটা নিয়ে আমি যা ভাবি… রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার যা অবস্থান, এটা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। এটা আমার দলের সাথে অন্যায় হবে, যারা অসাধারণ কাজ করেছে। আমি রেফারিং নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না। যা মনে হয়েছে সেটা আমি তাকে বলে দিয়েছি, কিন্তু আমি এখানে তা বলব না।”
বার্সেলোনা দ্বিতীয় গোলটি হজম করে পেনাল্টি থেকে, যা প্রথমে রেফারি দেননি। বিরতির আগে পেদ্রির একটি শট বক্সের ভেতর ইন্তারের একজনের হাতে লাগলে জোরাল আবেদন হয় পেনাল্টির, তবে রেফারি তা নাকচ করেন। বড় নাটকটা হয় অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে, যখন বার্সেলোনা আক্রমণে থাকা অবস্থায় বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন ফ্লিক।
এসব কারণেই রেফারিং নিয়ে খুশি নন বার্সেলোনা কোচ। তবে দল যেভাবে লড়েছে, তাতে গর্বিত তিনি।
“আমি হতাশ, তবে সেটা খেলোয়াড়দের বা তাদের পারফরম্যান্স নিয়ে নয়। তারা সবকিছু দিয়েই শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছে। আমরা এবার বিদায় নিয়েছি, তবে পরের বছর আমরা আবার চেষ্টা করব এবং পুরো ক্লাব এবং ভক্তদের খুশি করার চেষ্টা করব। ইন্তারও ভালো খেলেছে এবং তারা একটি দুর্দান্ত দল। তাদের রক্ষণভাগে খুব ভালো কিছু খেলোয়াড় আছে এবং ভালো কিছু ফরোয়ার্ডও। তারা বল দখল করে রেখে আমাদের চাপে ফেলেছে।”
প্রথম লেগে বার্সেলোনা তিন গোল হজম করায় রক্ষণভাগ নিয়ে একটা চিন্তা ছিলই। ঘরের মাঠে উজ্জীবিত ইন্তার মিলান কাউন্টার এটাকে শুরুটা করল দুর্দান্ত। বিরতির আগেই দুই গোল খেয়ে কোনঠাসা হয়ে গেল হান্সি ফ্লিকের দল। দারুণ এক কামব্যাকে একে একে তিন গোল দিয়ে এক পর্যায়ে বার্সেলোনাই পাচ্ছিল জয়ের সুবাস। তবে এই ইন্তার যে হার মানার নয়। ইনজুরি ও অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে শেষ হাসি হাসল সিমোনে ইনজাগির দল।
সান সিরোতে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে ইন্তার। দুই লেগ মিলিয়ে ইতালিয়ান ক্লাবটি জিতেছে ৭-৬ ব্যবধানে। ২০২৩ সালের পর আবারও দলটি খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ থাকবে আর্সেনাল বা পিএসজি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোলের ভালো একটি সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সেলোনা। ডান দিক থেকে গতিতে ইন্তার ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল, অপেক্ষায় ছিলেন ট্যাপ-ইনের। তবে পাস না বাড়িয়ে গোলের জন্য শট নিয়ে ব্যর্থ হন ফেররান তরেস।
আরও পড়ুন
পর্তুগাল দলে ডাক পেলেন ছেলে, ‘গর্বিত’ বাবা রোনালদো |
![]() |
ম্যাচের প্রথম দিকে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ এড়িয়ে আক্রমণে যেতে বেশ সংগ্রাম করতে হচ্ছিল ইন্তারকে। এই ম্যাচের আগে চলতি মৌসুমে এই ম্যাচের আগে ৭৪ বার প্রতিপক্ষকে অফসাইডে ফেলেছে দলটি।
১৭তম মিনিটে আলেসান্দ্রো বাস্তোনি ইন্তারের বক্স থেকে বলের দখল নিয়ে লম্ব ক্রস বাড়ান, বার্সেলোনার হাই লাইন ডিফেন্সকে বিপদে ফেলে বল নিয়ে ফেদেরিকো দিমার্কো পাস দেন লাউতারোকে। তবে তার শট লক্ষ্যে থাকেনি আর, এর আগে ক্লিয়ার হয়ে যায়।
মিনিট তিনেক বাদে ডান দিক থেকে কাট করে বক্সে প্রবেশ করে নিকোলা বারেল্লার নেওয়া জোরাল শট কোনোমতে সেভ করে ওয়েচেজ সেজনি। তবে বার্সেলোনার অফসাইড ট্র্যাপ পার করে শেষ পর্যন্ত ইন্তারের লিড নেওয়ায় ভূমিকা রাখেন প্রথম লেগে জোড়া গোল করা ডেনজেল ডামফ্রিস।
পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে তড়িৎ গতিতে বল পেয়ে ডান দিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করেন তিনি। বার্সেলোনার রক্ষণভাগের চেয়ে বক্সে ইন্তারের খেলোয়াড়ই বেশি। সেজনি এগিয়ে এসে ক্লিয়ার করতে গেলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ফাঁকায় থাকা লাউতারোকে পাস দেন ডামফ্রিস, যেখান থেকে জাল খুঁজে নিতে ভুল করেননি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩ ম্যাচে এটি লাউতারোর ৯ নম্বর গোল। এই গোলটি ইন্তারের জন্য গুরুত্বছিলপূর্ণ ছিল, কারণ এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগে গোল দিয়ে এই লড়াইয়ের আগে ১০ ম্যাচের একটিতেও হারেনি সেরি আর ক্লাবটি। আর সব মিলিয়ে এই প্রতিযোগিতায় নিজেদের শেষ ৪৯টি হোম ম্যাচে মাত্র একটিতে আগে গোল করে হারের রেকর্ড ছিল ইন্তারের।
আরও পড়ুন
মিলান কাব্যে ধরাশায়ী বার্সা, ফাইনালে ইন্তার |
![]() |
ওই গোলের খানিক বাদে ইন্তারের বক্সের ভেতর পেদ্রির শট প্রতিপক্ষের একজনের হাতে লাগলে ওঠে পেনাল্টির দাবি। তবে রেফারি তা নাকোচ করে দেন।
৩৬তম মিনিটে বিরতির আগে নিজেদের সেরা সুযোগটা পায় বার্সেলোনা। বক্সের বাইরে থেকে ইন্তারের কয়েকজন খেলোয়াড়কে ড্রিবল করে পেছনে ফেলে ডান দিক থেকে একটা শট নেন, যা শেষ চলে যায় অল্পের জন্য পোষ্টের বাইরে দিয়ে। অল্পের জন্য ট্যাপ-ইন করতে ব্যর্থ হন তরেস।
তবে একের পর এক আক্রমণে ইন্তারকে ব্যতিব্যস্ত রাখেন ইয়ামাল, যাকে নিয়ে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সতর্ক বার্তা দিয়েছিলেন দলটির কোচ সিমোনে ইনজাগি। ডাবল মার্কিং করে তার পরিকল্পনা ছিল ইয়ামালকে আটকানোর।
তবে কাজটা ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিন হয়ে ওঠে। ৩৯তম মিনিটে ফের গতি দিয়ে ডি-বক্সে প্রবেশ করেন ইয়ামাল। তবে ছয় গজের ভেতর শেষ সময়ে দুর্দান্ত এক স্লাইড ট্যাকেল করে সেযাত্রায় দলকে রক্ষা করেন বাস্তোনি।
এরই মাঝে ম্যাচের ধারার বিপরীতে পেনাল্টি হজম করে বসে বার্সেলোনা। লাউতারোকে আটকাতে বক্সের ভেতর ফাউল করেন পাউ কুবার্সি। ঠাণ্ডা মাথায় বাঁদিকে বল জালে পাঠান হাকান কালহানোগলু।
দুই গোল খেয়ে বেশ চাপে পড়ে যাওয়া বার্সেলোনা বিরতির আগে মাত্র ছয়টি শট থেকে একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৫১তম মিনিটে ফের ইন্তার বল জালে পাঠালেও এবার আর গোল মেলেনি অফসাইডের কারণে।
এর ঠিক দুই মিনিট পর বার্সেলোনার ক্যামব্যাকের সূচনা করেন এরিক গার্সিয়া। জটলার মধ্যে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক ভলিতে সান সিরোতে স্তব্ধতা নিয়ে আসেন তিনি। সেই গোলের রেশ না কাটতেই আরও একটি গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। তবে ছয় গজ থেকে নেওয়া তার শট পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে ফিরিয়ে দেন ইয়ান সোমের।
তবে আরেকটি রেমোনটাডার স্বপ্নের বিভর বার্সেলোনা আক্রমণের ঢেউয়ে বেসামাল ইন্তার বেশিক্ষণ পারেনি সামাল দিতে। বাঁদিক থেকে জেরার্ড মার্তিনের দারুণ এক ক্রস থেকে ডাইভিং হেডে গোল করেন দানি ওলমো।
ছন্দহীন ইন্তার ৬৮তম মিনিটে বড় বিপদেই পড়তে যাচ্ছিল। আগুয়ান ইয়ামালকে ফাউল করে শুরুতে পেনাল্টি উপহার দিয়ে ফেলেছিলেন হেনরিখ মিখিতারিয়ান। তবে রেফারি পরে নিজের সিদ্ধান্ত বদলান ভিএআরে দেখে, যেখানে দেখা যায় ফাউলটি করা হয়েছিল ঠিক বক্সের বাইরে।
৭৯তম মিনিটে কাট করে বক্সের ভেতর থেকে গতিময় এক শট নেন ইয়ামাল, তবে পোষ্টের নিয়ে আস্থার পরিচয় দেন সোমের। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ স্কোরলাইনে লড়াই যখন অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর দিকে, তখনই চিত্রে হাজির পুরো ম্যাচে প্রায় অচেনা ছন্দে থাকা রাফিনিয়া।
৮৭তম মিনিটে মিলান শিবিরকে হতাশায় ভাসিয়ে বার্সেলোনাকে ফের এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে বক্সে প্রবেশ করে তার নেওয়া প্রথম শট ফিরিয়ে দেন সোমের, তবে ফিরতি বল পেয়ে কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠাতে আর ভুল হয়নি তার।
আরও পড়ুন
অ্যানফিল্ড-রোম ‘ট্র্যাজেডি’ পেছনে ফেলতে পারবে বার্সেলোনা? |
![]() |
এই গোলের মধ্য দিয়ে দুর্দান্ত এক রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন রাফিনিয়া। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৩টি গোলের সাথে তার নামের পাশে রয়েছে ৮টি অ্যাসিস্ট। এক মৌসুমে গোলে অবদান রাখার ক্ষেত্রে তার সমান (২১টি) রয়েছে কেবল সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর, ২০১৩-১৪ মৌসুমে।
এই গোলের পর বার্সেলোনার জয় যখন ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন মিলান শিবিরে আশার আলো নিয়ে আসেন ফ্রান্সেস্কো এসেরবি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় নিজের ২০তম মৌসুমে একটি গোলও না করা অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার প্রথম গোলের জন্য বেছে নেন সেরা উপলক্ষ্য।
ডান দিক থেকে স্কিলের প্রদর্শনী দেখিয়ে বক্সের ভেতর ক্রস বাড়ান ডামফ্রিস। রক্ষণ ছেড়ে স্ট্রাইকার বনে যাওয়া এসেরবি বল রিসিভ করে কিছুটা সময় নিয়ে জায়গা বানিয়ে কোনাকুনি এক শটে বল পাঠান জালে, যা চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না সেজনির।
ম্যাচের এমন সময়ে গোল, স্বাভাবিকভাবে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে দলের সাথে মেতে ওঠেন এসেরবিও। উদযাপন করার সময় তিনি জার্সি খুলে ফেলেন এবং এজন্য তাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়। তবে তাতে আর কীইবা আসে যায়!
এই গোলের মধ্য দিয়ে ২০১১ সালের এপ্রিলে শালকের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে রায়ান গিগসের পর এসেরবি (৩৭ বছর ৮৫ দিন) চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে দ্বিতীয় বয়স্ক খেলোয়াড় (৩৭ বছর ১৪৮ দিন) হিসেবে জালের দেখে পেয়েছেন।
জয়ের সুবাস পেতে পেতে এমন একটা গোল খেয়ে বসলে একটা দলের মানসিকতায় তাতে আসতে পারে বড়সড় আঘাত। বার্সেলোনার ক্ষেত্রেও হয় ঠিক তাই। তার ফলশ্রুতিতে অতিরিক্ত সময়ের নবম মিনিটে ফের গোল পেয়ে যায় ইন্তার।
ডান দিক থেকে উঠে মার্কাস থুরাম দাভিদ ফ্রাত্তেসিকে পাস বাড়ান। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার বক্সের ভেতরে মেহেদি তারেমির সাথে ওয়ান-টু খেলে এরপর প্লেসিং শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
এটি ছিল এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বার্সেলোনার হজম করা ২৪তম গোল, যা এক আসরে ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল খাওয়ার রেকর্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের জন্য মরিয়া বার্সেলোনা খেলে অল আউট ফুটবল। ইয়ামালের ক্রস থেকে বদলি নামা রবার্ট লেভানদভস্কির হেড অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।
পাল্টা আক্রমণ থেকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে ফ্রাত্তেসির শট ঠেকান সেজনি। ১১৪তম মিনিটে গোলের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন ইয়ামাল। অনেকটা নিচে নেমে বলের দখল নিয়ে লেভানদভস্কি পাস দেন ইয়ামালকে। গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে তরুণ এই উইঙ্গার নেন শট, যা এক হাতে কোনোমতে আটকে ইন্তার শিবিরে প্রাণ ফিরিয়ে আনেন সমের।
বাকি সময়ে বার্সেলোনার একের পর আক্রমণ সামাল দেওয়ার মাঝে সুযোগ তৈরি করে ইন্তারও। তবে লক্ষ্যে রাখতে পারেনি শট কোনো দলই। তাতে দুই বছরে মধ্যে নিজেদের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইন্তার।
৬ দিন আগে
৯ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৭ দিন আগে
১৮ দিন আগে
১৮ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২০ দিন আগে
২০ দিন আগে