১২ নভেম্বর ২০২৪, ৬:৩৩ পিএম

হাতে আছে চার মাসেরও কম সময়। আইসিসির আর দশটা টুর্নামেন্ট হলে এমন সময়ে আয়োজক দেশ ব্যস্ত থাকে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে, সূচিও প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় বা হওয়ার পথে থাকে। ভেন্যুগুলোতে চলে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। তবে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পাকিস্তানে হওয়ার এই সময়েও রয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা। ভারত কোনোভাবেই যাবে না প্রতিবেশী দেশে খেলতে, আর ছাড় দিতে নারাজ পাকিস্তানও। তাদের দাবি, হয় ভারতকে তাদের দেশে আসতে হবে বা রোহিত-কোহলিকে ছাড়াই আয়োজন হবে এবারের আসরের।
সবকিছু ঠিক থাকলে, গত সোমবার থেকে ১০০ দিনের কাউন্টডাউন শুরু হতো আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫-এর। লাহোরে হত বিশাল আয়োজন। জানানো হতো টুর্নামেন্টের সূচি। কিন্তু তা আর হলো কই। এর পেছনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের অনড় অবস্থানও কম দায়ী নয়।
আরও পড়ুন
| ‘ভারত-পাকিস্তান আছে বলেই আইসিসি টিকে আছে’ |
|
পাকিস্তানে হিয়ে খেলার ক্ষেত্রে গোড়ামি যে শুধু ভারতেরই নয়। পাকিস্তানও যেন পণ করেছে, একচুল ছাড় ভয় ভারত ক্রিকেট বোর্ডকে। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপের হাইব্রিড মডেলকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তারা কিছুতেই মানবে না। গেল বছর এশিয়া কাপে ভারত ছাড়া বাকি দলগুলো খেলেছে পাকিস্তানের মাঠে। শুধু ভারতের জন্যে শ্রীলঙ্কাতেও বসাতে হয়েছিল ভেন্যু। তবে এবার পাকিস্তান তাতেও রাজী না।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আইসিসিকে ই-মেইলে জানিয়েছে, তারা পাকিস্তানে খেলতে যেতে অপারগ। ভারত সরকার তাদের পাঠাবেন না। প্রস্তাব দিয়েছে হাইব্রিড মডেলে তাদের ম্যাচগুলো অন্য আরেকটি দেশের রাখার জন্য। সেটা আবার আইসিসি পাকিস্তানকে মেইল করে জানিয়েছে।
পাকিস্তানের বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, ভারত যদি এবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে না আসে, তবে মাইনাস ইন্ডিয়া বা বয়কট ইন্ডিয়া নীতিতে এগোতে পারে পাকিস্তান। অর্থাৎ, ভারতকে ছাড়াই টুর্নামেনট আয়োজনের কথা ভাবছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। গণমাধ্যমগুলো এমনও বলছে, ভারত পাকিস্তানে না খেলা অব্দি পাকিস্তানও কোন টুর্নামেন্টেই ভারতের সঙ্গে আর খেলবে না। পিসিবিও নাকি এগোচ্ছে এমন পরিকলল্পনার দিকেই।
আরও পড়ুন
| রউফের ফাইফারে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিল পাকিস্তান |
|
ভারত-পাকিস্তানের বৈরিতা তো নতুন কিছু না। তবে এরপরেও দুই দলের মধ্যে সফর ছিল প্রায় নিয়মিত। মাঝে শুধু ১৯৬২ থেকে ১৯৭৭ সাল দুবার যুদ্ধে জড়িয়ে আসা যাওয়া বন্ধ ছিল দুই দেশ। এর আগে-পরেও একাধিকবার সফর বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। তবে একুশ শতকে কোনো যুদ্ধ না লাগলেও এক যুগ ধরে ভারত-পাকিস্তান একে অপরের দেশে সফর করে না।
পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে সবশেষ ভারতে গেছে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। আর ভারতীয় দলের সর্বশেষ পাকিস্তান সফর ২০০৭ সালে। এর পরের বছরও ভারতের একটি দল পাকিস্তানে গেছে, তবে সেটা এশিয়া কাপের জন্য। এর পর থেকে চলছে লম্বা বিরতি। আর গত ৮ বছরে দুই ফরম্যাটের দুটি বিশ্বকাপ খেলতে দুইবার ভারতে গেছে পাকিস্তান।
গত বছর এশিয়া কাপের জন্য ভারতীয় দলের পাকিস্তানে যাওয়া না–যাওয়া নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা, তখন জাভেদ মিয়াঁদাদের একটি মন্তব্য ভারতীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। মিয়াঁদাদ বলেছিলেন, “ভারত জানে পাকিস্তানের কাছে হারলে তাদের দেশের মানুষ ছেড়ে কথা বলবে না। এমনকি নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত উধাও হয়ে যাবেন, ভারতের জনগণ তাঁকেও ছাড়বে না। এই ভয়ৈই ভারত আসে না। পাকিস্তানে যদি তারা খেলতে না আসে, তাহলে তারা জাহান্নামে যাক।”
পাকিস্তানে না যাওয়া নিয়ে বিসিসিআই সব সময়ই সরকারের অনুমোদন না থাকার কথা বলে। কিন্তু ভারত সরকারের কেউ কখনোই স্পষ্ট করে বলেন না ঠিক কী কারণে অনুমতি দেওয়া হয় না। আর এ ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমে ভারতের ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একটা শব্দই নিয়মিত উচ্চারণ করে থাকেন—‘নিরাপত্তা’।
আরও পড়ুন
| ভারতের অংশগ্রহণে পাকিস্তানেই হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, আশা পিসিবির |
|
পাকিস্তানে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে কিন্তু শঙ্কা কমবেশি সব দেশেরই থাকে। ২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর হামলার ঘটনায় তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনেই চলে গিয়েছিল পাকিস্তানের ভেন্যু। এমনকি ২০১১ বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক হলেও পাকিস্তানে শেষ পর্যন্ত কোনো ম্যাচই হয়নি।
পাকিস্তানে ভারত ক্রিকেট দলের সফর বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে লাহোরের ঘটনা ছিল সবার জন্য ‘কমন ফ্যাক্টর’। লাহোর হামলার পরবর্তী ছয় বছর কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশই আর পাকিস্তানে সফর করেনি। তবে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের মাধ্যমে আবার দরজা খোলার পর গত কয়েক বছরে প্রায সব দেশই পাকিস্তানে খেলতে গেছে। বাকি কেবল ভারতই।
এর পেছনে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর টানা চার দিন মুম্বাইয়ে দফায় দফায় সন্ত্রাসী হামলার কারণটিও জড়িত। ওই হামলায় প্রায় পৌনে দুই শ মানুষ নিহত হয়। মুম্বাইয়ে সেই সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে ভারত। এতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠেকে তলানিতে । সঙ্গে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর হামলার ঘটনা মিলিয়ে ভারত, পাকিস্তানে ক্রিকেট দল পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
২০১৫ সালের শেষে সম্ভাবনা দেখা দেয় পিসিবি আর বিসিসিআইয়ের মধ্যকার এক বৈঠকের আহবানে। বৈঠকের দিন ওয়াংখেড়েতে হানা দেন শিবসেনার কর্মীরা। প্রায় দুই শর মতো শিবসেনা বিসিসিআই প্রধান শশাঙ্ক মনোহরসহ অন্যদের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখলে পিসিবি-বিসিসিআই বৈঠক পণ্ড হয়ে যায়।
বিসিসিআইয়ের তখনকার সচিব অনুরাগ ঠাকুর বলেছিলেন, “আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা নিয়ে আলোচনা করতে পারি তিনটি শর্তে। ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা, ভারতীয় ক্রিকেটারদের স্বার্থ এবং ভারতীয় জনগণের অনুভূতিকে প্রাধান্য দিয়ে।”
তবে সেই শর্ত পূরণ হয়েছে নাকি হয়নি, আজ অব্দি তা নিয়ে কোনো পক্ষ থেকেই আসেনি পরিস্কার কোন বক্তব্য। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপ এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপ ঘিরে দুই দেশের ক্রিকেট সম্পর্ক পুনরায় চালু নিয়ে আবার ব্যাপক মাত্রায় আলোচনা তৈরি হয়েছিল। পাকিস্তান সব ভুলে কিন্তু বিশ্বকাপেও খেলেছে ভারতে গিয়ে। আবার ভারতের ইচ্ছেনুযায়ী হাইব্রিড মডেলও দিয়েছে এশিয়া কাপে। তবে পাকিস্তানে গিয়ে খেলার ব্যাপারে অতীতের অবস্থান পরিবর্তন এখন ও নিকট ভবিষ্যতেও হয়ত করবে না ভারত।
আর সেই কারণেই উঠছে প্রশ্ন, অল্প সময়ের মধ্যে আয়োজক দেশ ও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও ক্ষমতাধর ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই - দুই পক্ষকে খুশি রেখে আইসিসি কী পারবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঠিক সময়ে আয়োজনে এগিয়ে যেতে? বাস্তবতা বলছে, খুব জটিল সময় অপেক্ষা করছে ৫০ ওভারের এই টুর্নামেন্টের জন্য।
No posts available.
৭ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩২ পিএম

রান তাড়ায় এবারও ব্যর্থ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ হারল বাংলাদেশের যুবারা। বৃথা গেল পেসার ইকবাল হোসেনের ৬ উইকেট আর মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ৯৫ রানের ইনিংস।
রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে আজ চতুর্থ যুব ওয়ানডেতে ৪৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সবক’টি উইকেট তুলে নিলেও ২৫৮ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় তারা। রান তাড়ায় বাংলাদেশের যুবারা থামে ২১১ রানে।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে আফগানিস্তান এখন ২–১ ব্যবধানে এগিয়ে। বগুড়ায় প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ যুবারা ডিএলএস পদ্ধতিতে জেতার পর দ্বিতীয়টি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাড়িয়ে টানা দুই জয় তুলে নিল সফরকারীরা।
আগামী রোববার রাজশাহীতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। সিরিজ নিশ্চিতের সুযোগ শেষ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে এখন আফগানিস্তানেরই সিরিজ জয় ঠেকাকে হবে। আজিজুল হাকিমের দল শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ ড্র করতে পারে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
২৫৯ রানের লক্ষ্যে নেমে ৪০ রানেই ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের ইনিংস মূলত টেনেছেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও দেবাশীষ সরকার। দুজনের ১০৮ রানের জুটিতে বাংলাদেশ কিছুটা লড়াই করে। কিন্তু আবদুল্লাহ–দেবাশীষ জুটিতে রান তোলার গতি ছিল কম, প্রয়োজনীয় রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেননি তাঁরা।
৬১ বলে ৫১ রান করে নুরিস্তানি ওমরজাইয়ের বলে ক্যাচ তুলে দেবাশীষ আউট হয়ে যান। ম্যাচ জয়ের আশা শেষ হয়ে গেলেও সেঞ্চুরি পেতেই পারতেন আবদুল্লাহ। তবে যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরিটি পাওয়া হয়নি তাঁর। ১৬০ বলে৬ চার ও ২ ছক্কায় ৯৫ রান করে থামেন তিনি।
এর আগে আফগানিস্তানের ইনিংসে দাপট দেখান বাংলাদেশি পেসার ইকবাল হোসেন। ক্যারিয়ারসেরা বল করে ৫১ রানে নেন ৬ উইকেট। তবে ফয়সাল খানের ১১২ ও উজাইরউল্লাহ নিয়াজাইয়ের ৭২ রানের ইনিংসে ভর করে ম্যাচ জেতার মতো সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে ফেলে আফগান যুবারা।

নারীদের ক্রিকেট নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ এখন পূর্বের তুলনায় বেশ বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত নারী বিশ্বকাপ তো দর্শক সংখ্যার একের পর এক রেকর্ড গড়েছে। ভারতের নারী বিশ্বকাপ জয়ের পর নারী ক্রিকেটে আসছে বড় পরিবর্তনও।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৯ সালের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশ নেবে ১০টি দল। ২০২৫ আসরের অংশগ্রহনকারী দলের সংখ্যা ছিল আট। আইসিসির এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সব আসরের তুলনায় সবচেয়ে বড় পরিসরের টুর্নামেন্ট হতে যাচ্ছে আসন্ন বিশ্বকাপ।
আইসিসি অফিসিয়াল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইভেন্টের বিপুল সাফল্যের পর বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরবর্তী আসরকে আরও বড় পরিসরে আয়োজনের। ২০২৯ সালে ৮ দলের বদলে ১০ দল অংশ নেবে।’
২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের মূল পর্বে অংশ নিয়েছে সর্বোচ্চ ৮ দল। ২০২৯ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়াবে ১০-এ, আর ম্যাচ হবে ৩১ থেকে বেড়ে ৪৮টি।
এছাড়া আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাড়ছে দলের সংখ্যা। আগের ১০ দলের বদলে এবার খেলবে ১২টি দল।
নারী বিশ্বকাপের এবারের আসর ছিল সত্যিকারের এক উৎসব। ভারতের ঐতিহাসিক জয় নারীদের ক্রিকেটে নতুন যুগের সূচনা করেছে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪৪.৬ কোটি মানুষ এই টুর্নামেন্ট দেখেছে। আর ২.১ কোটি দর্শক সরাসরি দেখেছেন ফাইনাল। গ্যালারিগুলো ছিল উপচে পড়া দর্শক। নারীদের ক্রিকেটও এখন বিশ্বমঞ্চে সমানভাবে আলো ছড়াতে পারে সেটাই প্রমাণ হয়েছে।
নারী বিশ্বকাপ আয়োজনের সাফল্য নিয়ে আইসিসি বিবৃতিতে আরও লিখেছে, ‘প্রায় তিন লাখ দর্শক মাঠে উপস্থিত থেকে ম্যাচ উপভোগ করেছেন—যা নারীদের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক। টেলিভিশনে ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দর্শকসংখ্যা ছুঁয়েছে নতুন উচ্চতা, শুধু ভারতে দেখা গেছে প্রায় ৫০ কোটি দর্শক।’
আইসিসি জানায়, নারীদের ক্রিকেটকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলা এবং নতুন দেশগুলিকে বিশ্বমঞ্চে সুযোগ দেওয়াই এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য। নতুন দল যোগ হলে শুধু ম্যাচ বাড়বে না, বাড়বে রোমাঞ্চ, চমক আর প্রতিভার ঝলক।

যাবেন কি যাবেন না ? দুবাইয়ে আজ আইসিসির ত্রৈমাসিক সভায় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির উপস্থিত হওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছিল না সভায় হাজির হবেন কিনা তিনি।
শেষ পর্যন্ত সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আইসিসির সভায় হাজির হয়েছেন নাকভি। নাকভির হঠাৎ উপস্থিতি নাকি আইসিসির অনেক কর্মকর্তাকেই চমকে দিয়েছে। মূলত পিসিবির সিইও সুমায়ের সায়েদ পাকিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করার কথা ছিল। বৈঠক শুরুর মাত্র কয়েক মিনিট আগেই নাকি তিনি দুবাইয়ে পৌঁছান।
প্রথমে খবর ছিল যে দেশের রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে বৈঠকে উপস্থিত হবেন না নাকভি। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আইসিসির সভাও এড়িয়ে চলছিলেন তিনি। গত জুলাই মাসে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সম্মেলনও অনুপস্থিত ছিলেন পিসিবি চেয়ারম্যান।
এশিয়া কাপ ট্রফি নিয়ে চলমান বিতর্ক এবারের সভার আলোচনার মূল কেন্দ্রে। ট্রফি সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিতর্ক আবারও আলোচনায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতীয় দল নাকভির হাত থেকে শিরোপা নিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর তিনি পরবর্তীতে জোর দিয়ে বলেছেন সূর্যকুমার যাদবদের অবশ্যই ট্রফি তার কাছ থেকে গ্রহণ করতে হবে। এরপর এসিসির কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, তার অনুমোদন ছাড়া ট্রফি সরানো যাবে না।
বিপরীতে বিসিসিআই ট্রফি মুম্বাই পাঠানোর জন্য নাকভিকে চিঠি লিখে। তবে নাকভি জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি শুধুমাত্র তার উপস্থিতিতে, দুবাইয়ে ১০ নভেম্বর একটি অনুষ্ঠানে বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি ও ভারতীয় দলের একজন সদস্যকে দেওয়া হবে।
তবে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটুট বিসিসিআই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় দলকে তাদের প্রাপ্য ট্রফি থেকে এত দিন বঞ্চিত রাখা তারা মেনে নেবে না। বোর্ডের সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া বলেছেন, ‘বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ব্যাপারটি সামলাতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। ভারতের জনগণকে আমি নিশ্চিত করছি যে ট্রফি ভারতে ফিরবেই—শুধু সময়টা চূড়ান্ত হয়নি। একদিন না একদিন (ট্রফি) ফিরবেই।’
ক্রিকেটভিত্তিক সাইট ক্রিকবাজ জানিয়েছে, আজ রাতে বৈঠক শেষে এশিয়া কাপ ট্রফি হস্তান্তর নিয়ে কোনো না কোনো সিদ্ধান্ত বা সমাধান আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন ভারতের ব্যাটার প্রাতিকা রাওয়াল। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে চোট পান তিনি। এরপর আর খেলতে পারেননি টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।
ভারত বিশ্বকাপ জিতলেও আইসিসির নিয়মের কারণে মেডেল পাননি প্রতিকা। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে তাঁর গলায় চ্যাম্পিয়নের পদক দেখা গিয়েছিল। তবে সেটি দলের অন্য কোন সদস্য তাঁকে দিয়েছিল বলে জানা যায়।
অবশেষে বিশ্বকাপের মেডেল পাচ্ছেন ২৫ বছর বয়সী প্রাতিকা। আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ এই ব্যাটারকে মেডেল দেওয়ার উদ্যেগ নিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রতিকা হাতে পাবেন সেটি।
মেডেলের বিষয়ে প্রতিকা জানান, ' অবশেষে আমার নিজের পদক পেতে চলেছি। জয় শাহ আমাদের ম্যানেজারকে জানিয়েছেন যে তিনি নিজেই বন্দোবস্ত করছেন যাতে আমি পদক পাই। প্রথমবার আমি যখন মেডেলটা দেখি, আমার চোখে প্রায় জল চলে এসেছিল। আমি খুব একটা আবেগঘন হয়ে পড়ি না, তবে সেটা ছিল বিশেষ অনুভূতি।‘
প্রাতিকার পরিবর্তে ভারত দলে সুযোগ পান শেফালি ভার্মা। ফাইনালে ম্যাচসেরার পুরুষ্কার জেতেন শেফালি। তাঁর উপর সম্পূর্ণ ভরসা রেখেছিলেন বলে জানান প্রাতিকা, ‘শেফালি ফাইনালের আগে আমার কাছে এসে বলেছিল, ‘তুমি খেলতে পারছ না বলে খুব খারাপ লাগছে।’ আমি বলেছিলাম, ‘ঠিক আছে, এমনটা হয়।’ আমার মনে হচ্ছিল সে সেদিন বিশেষ কিছু করবে।‘
বিশ্বকাপে ৩০৮ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে ছিলেন প্রাতিকা। তার আগে ছিলেন কেবল দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট (৫৭১), ভারতের স্মৃতি মন্ধানা (৪৩৪) এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশলি গার্ডনার (৩২৮)।
বাংলাদেশের বিপক্ষে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ফিল্ডিং করার গোড়ালি ও হাঁটুতে চোট পান প্রাতিকা। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষে দ্রত ফিরে আসতে আশাবাদী এই ব্যাটার, ‘কয়েক দিনের মধ্যে এক্স-রে হবে, প্রায় সব কিছু নিজে করতে পারছি। হালকা ব্যায়ামও শুরু করেছি। ডাক্তাররা ছাড় দিলে আবার ব্যাটিং শুরু করব।‘
২০২৪ সালে ভারতের জার্সিতে অভিষেক করেন প্রাতিকা। দেশটির হয়ে ২৪ ওয়ানডে খেলে করেছেন ১১১০ রান।

এশিয়া কাপে গ্রুপপর্ব পেরোলেও সুপার ফোরে একটিও ম্যাচ জিততে পারেনি শ্রীলঙ্কা। পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থেকেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় লঙ্কারা। তাতে চলতি মাসে পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে দলে বড় পরিবর্তন এনেছে তারা।
পাকিস্তান সফরের জন্য আজ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের পর জিম্বাবুয়েকে নিয়ে হবে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
কুডি ওভারের স্কোয়াডে এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়েছেন চার ক্রিকেটার নুয়ানিদু ফার্নান্দো, দুনিথ ওয়েলালাগে, চামিকা করুণারত্নে ও বিনুরা ফার্নান্দো। তাদের জায়গায় দলে ফিরেছেন ভানুকা রাজাপাকসে, জানিথ লিয়ানাগে, দুশান হেমান্থা ও ঈশন মালিঙ্গা।
শ্বাসনালীর সংক্রমণের কারণে টি-টোয়েন্টি দলে নেই মাথিশা পাথিরানা। সবশেষ এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন এই পেসার। তার জায়গায় নেওয়া হয়েছে আসিথা ফার্নান্দোকে।
ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েছেন নুয়ানিদু ফার্নান্দো, মিলন প্রিয়ানাথ রথনায়েকে, নিশান মাদুশকা ও দুনিথ ওয়েলালাগে। তাদের জায়গায় ফিরেছেন লহিরু উদারা, কামিল মিশারা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও প্রমোদ মাদুশান।
হাঁটুর চোটের কারণে ওয়ানডে দলে জায়গা পাননি পেসার দিলশান মাদুশঙ্কা। তার বদলে দলে ডাক পেয়েছেন ঈশান মালিঙ্গা।
রাওয়ালপিন্ডিতে ১১ নভেম্বর শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। একই মাঠে ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হবে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
ওয়ানডে দল:
চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), পাঠুম নিসাঙ্কা, লহিরু উদারা, কামিল মিশারা, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সমারাবিক্রমা, কামিন্দু মেন্ডিস, জানিথ লিয়ানাগে, পাভান রথনায়েকে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহিশ থিকশানা, জেফরি ভ্যান্ডারসে, দুশমান্থা চামিরা, আসিথা ফার্নান্দো, প্রমোদ মাদুশান, ঈশান মালিঙ্গা।
টি-টোয়েন্টি দল:
চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), পাঠুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, কামিল মিশারা, দাসুন শানাকা, কামিন্দু মেন্ডিস, ভানুকা রাজাপাকসে, জানিথ লিয়ানাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহিশ থিকশানা, দুশান হেমান্থা, দুশমান্থা চামিরা, নুয়ান তুষারা, আসিথা ফার্নান্দো, ঈশান মালিঙ্গা।