শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিনটা ম্যাচই খেলেছেন সিলেটে। সেখান থেকে একদিন বাদেই আবার মাঠে নেমেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে। আবাহনীর হয়ে দুই ম্যাচ খেলতেই ডাক পড়েছে ওয়ানডে দলে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম উড়ে এসে আবার অনুশীলনে নেমেছেন। জাকের আলী অনিক তো সত্যিই দৌড়ের ওপর আছেন।
জাকেরের এই ব্যস্ততা নজর কেড়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদেরও। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচের আগের দিন নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করছিলেন রিয়াদ। একটু পরেই পাশের নেটে এসে যোগ দেন জাকের।
আরও পড়ুন: শেষ ওয়ানডের দলে জাকের, বাদ লিটন
কয়েকটা বল খেলার পরই জাকেরকে রিয়াদের প্রশ্ন,” কী জাকের? ন্যাশনাল টিম, আবাহনী আবার ন্যাশনাল টিম।“ এরপরই জাকের কথাটা বললেন,” ভাই আমি তো দৌড়ের ওপর আছি।“
জাকেরের এই ব্যস্ততা অবশ্য শুরু হয়েছে বিপিএল থেকেই। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ভালো করার পরই নতুন করে নজর কাড়েন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। শেষ দিকে নেমে তার ছোট ছোট ইনিংস গুলোই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল।
সে কারণেই আলিস আল ইসলামের ইনজুরিতে ডাক পান টি-টোয়েন্টি দলে। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ৩৪ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এরপর ডিপিএলে গিয়েও নিজের ফর্ম ধরে রেখেছেন জাকের।
ওয়ানডে সিরিজের দলে না থাকায় তিনি চলে যান ডিপিএল খেলতে। সেখানে আবাহনীর হয়ে খেলা শেষ ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। এরপর তৃতীয় ওয়ানডের আগে হঠাতই লিটন দাস বাদ পড়ায় তার জায়গায় দলে নেয়া হয় জাকেরকে।
ম্যাচের আগের দিন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলনও করেছেন তিনি। তবে শেষ ওয়ানডেতে একাদশে জায়গা পাওয়াটা বেশ কঠিন এই ব্যাটারের জন্য। কেননা ওপেনিং পজিশন নিয়ে একটা কিন্তু থাকলে মিডল অর্ডারে প্রায় সবাই ছন্দে আছেন।
ফলে সে জায়গায় সিরিজ নিশ্চিত করার ম্যাচে কোনো পরিবর্তন করতে চাইবে না বাংলাদেশ দল। ম্যাচ না খেলতে পারলে জাতীয় দলে নিজের একটা জায়গা করে নিচ্ছেন এই ক্রিকেটার। তার বন্ধুরা অনেক আগেই জাতীয় দলে আসলেও তার জন্য পথটা যে ছিল বেশ লম্বা।
আরও পড়ুন: ‘বিশ্বাস ছিল, জাকের একদিন পরিশ্রমের ফল পাবেই’
২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছিলেন এই ব্যাটার। মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে, সেই দলে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তও। তিনিই আবার এখন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। সেই ব্যাচের আরেক সদস্য জাকেরও এবার যোগ হলেন ওয়ানডে দলে।
বন্ধুকে অবশ্য নতুন করে কিছু বলার আছে বলে মনে করেন না মিরাজ। কেননা জাকের যেখানেই খেলেছে সবসময়ই খোঁজ রেখেছেন তিনি। যোগাযোগটাও ছিল নিয়মিত। ওয়ানডে দলেও জাকেরের চলে আসা প্রসঙ্গে এসব কথা বলছিলেন মিরাজ।
“অনিকে সাথে তো শুধু এখন না, সবসময়ই আমার কথা হয়। বিপিএল থেকে শুরু করে, ঘরোয়া ক্রিকেট যখন খেলি আমরা। আর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও আমরা একসাথে খেলেছি। আমি মনে করি ওর ভেতর এই পর্যায়ে খেলার মত ক্যালিবার আছে। আর সে অনেক হার্ড ওয়ার্ক করে।“
জাকেরের কঠোর পরিশ্রমই আসলে তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। দেরিতে হলেও অবশেষে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে প্রবেশ করলেন এই ব্যাটার। ক্রিকেটের নতুন এক অধ্যায় তো তার জন্য কেবল শুরু।
দিন যত যাচ্ছে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসর নিয়ে উন্মাদনা বেড়েই চলেছে। নানা আয়োজনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চেষ্টা করছে এবারের আসরকে সবচেয়ে স্মরণীয় করে রাখতে। সেই ধারায় এবারের বিপিএলের মাসকটও বেছে নেওয়া হয়েছে, যার নাম রাখা হয়েছে ডানা ৩৬। শান্তির প্রতীক হিসেবে সেখানে দেখা যাবে একটি সুসজ্জিত পায়রাকে।
বিপিএলের মাসকটটিকে স্বাধীনতা এবং ক্রীড়া চেতনার স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। ডানা বিস্তৃত, আত্মবিশ্বাসী, আনন্দদায়ক হাসিতে পায়রাটি গ্রাফিতি শিল্পে সজ্জিত একটি ক্রিকেট ব্যাট ধরে আছে। এর পালকের রঙিন গ্রাফিতি প্যাটার্ন এবং ব্যাট আমাদের স্বাধীনতা, ইতিবাচক শক্তি এবং সাংস্কৃতিক গর্বের থিম উপস্থাপন করে। এই প্রাণবন্ত মাসকটটি একটি উজ্জীবিত চেতনা বহন করে, যা ক্রিকেট নিয়ে রোমাঞ্চ এবং উদযাপনকে ফুটিয়ে তোলে।
আরও পড়ুন
বিপিএলের টাইটেল স্পন্সর ডাচ-বাংলা ব্যাংক |
এই পায়রার মাসকটটিকে স্বাধীনতার চেতনার সাথে মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা খেলাধুলার একটি অপরিহার্য অংশ এবং ক্রিকেট সংস্কৃতিরও একটি মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। পায়রাকে শান্তি এবং স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, যা একটি জাতির শক্তি এবং ঐক্যকে প্রতিফলিত করে। মাসকটের গ্রাফিতিটি আধুনিক, তারুণ্যের স্পর্শময়, যা সমসাময়িক ক্রিকেট ভক্তদের প্রগতিশীল, প্রাণবন্ত প্রাণশক্তির সাথে আমাদের স্বাধীনতার ঐতিহ্যগত মূল্যবোধকে একসুতোয় গেঁথেছে।
এবারের বিপিএল শুরু হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর। টুর্নামেন্টের পর্দা উঠবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে সাতটি দল -
রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ক্যাপিটালস, চিটাগং কিংস, দুর্বার রাজশাহী, ফরচুন বরিশাল, খুলনা টাইগার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স।
দীর্ঘদিন ধরে আছেন জাতীয় দলের বাইরে। খেলে যাচ্ছিলেন কেবল ঘরোয়া ক্রিকেট। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস ঘোষণা দিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের। বুধবার নিজেই নিশ্চিত করেছেন বিষয়টি।
নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর কথা জানিয়েছেন ইমরুল। সাদা বলের ক্রিকেটে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশ দলের বাইরে থাকলেও এই দুটিতে খেলার দুয়ার খোলা রেখেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
আরও পড়ুন
‘অভাগা যেদিকে চায়, সাগর (ইমরুল) শুকিয়ে যায়’ |
২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে এই ফরম্যাটে পথচলা শুরু হয় ইমরুলের। শেষবার খেলেছেন ২০১৯ সালের নভেম্বরে, ভারতের বিপক্ষে। মাঝের এই সময়ে খেলেছেন ৩৯টি ম্যাচ। ৭৬ ইনিংসে ২৬.২৮ গড়ে রান করেছেন ১ হাজার ৭৯৭। সেঞ্চুরি তিনটি আর ফিফটি চারটি।
টেস্টে ইমরুলের সর্বোচ্চ ইনিংসটি এসেছিল ২০১৫ সালে। খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র হওয়া ম্যাচে খেলেছিলেন ১৫০ রানের দারুণ এক ইনিংস। ওই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবালের সাথে ওপেনিং জুটিতে ইমরুল যোগ করেছিলেন রেকর্ড ৩১২ রান।
আরও পড়ুন
ছয়ের রেকর্ডে তামিমের সঙ্গী ইমরুল |
চলতি এনসিএলে খেলছেন ইমরুল। শেষ ম্যাচে সিলেটের বিপক্ষে দুই ইনিংসে করেছেন যথাক্রমে শূন্য ও ৭১ রান।