৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ৩:২৮ পিএম
ওপরে যে মন্তব্যটি পড়লেন, সেটা এই রিপোর্টারের নিজস্ব মত নয়। তবে ইমরুল কায়েসের ডাকনামের সাথে জড়িয়ে জনপ্রিয় এই প্রবাদটি যেভাবে ব্যবহার করেছেন সিলেটের এক দর্শক, তাতে সেটা কিছুটা হলেও গুরুত্বের দাবি তো রাখেই। কারণ প্রেক্ষাপট বলছে, খুব তো ভুল নন সেই ব্যক্তি!
অতীত ভুলে আমরা যদি স্রেফ এই বিপিএলের দিকেই তাকাই, তাহলে ইমরুল তো নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক তিনি, গেল আসরেও দারুণভাবে দলকে আগলে রেখে জিতিয়েছেন শিরোপা। এবার আসর শুরুর আগেই অধিনায়কত্ব হারালেন। একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি সেই সিদ্ধান্ত নিতেই পারে ভবিষ্যৎ মাথায় রেখে, কারণ ইমরুলের বয়স যে হয়ে গেছে ৩৭।
তবে ব্যাটার এবং ফিল্ডার ইমরুলের মধ্যে কিন্তু বয়সের সেই ছাপ পড়েনি এখনও। ঢাকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে খেলেন দলীয় সর্বোচ্চ ৫৬ রানের ইনিংস। পরের ম্যাচে রান তাড়ায় লিটন দাস, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও তাওহীদ হ্রদয়ের ব্যর্থতার পর চারে নেমে করেন ৫২, যা দলকে এক বল বাকি থাকতে জয় এনে দেয়।
আরও পড়ুন: ছয়ের রেকর্ডে তামিমের সঙ্গী ইমরুল
নিজের শেষ ম্যাচেও ইমরুল ছিলেন উজ্জ্বল। অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে তিনে নেমে করেন ৩০, যা আগের দুই ম্যাচের মত দলীয় সর্বোচ্চ। সেই ম্যাচে কুমিল্লা জিতলেও পরের ম্যাচে একাদশে জায়গা হারান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। এরপর থেকে বেঞ্চে বসেই সময় কাটছে তার।
হ্যাঁ, টিম কম্বিনেশন, লেফট-রাইট কম্বিনেশনের কথা হয়ত আনা যেতে পেরে, তবে সেটাও তো ধোপে যে টিকছে না। সেদিক থেকে চিন্তা করলে তো ইমরুলের দলে থাকাটাই সেরা পছন্দ। কারণ, টপ অর্ডারের প্রথম তিন ব্যাটার লিটন-রিজওয়ান-তাওহীদ তিনজনই ডানহাতি। আর ইমরুল ফিল্ডিংয়ে দুর্বল, সেটাও তো নয়। এখনও দারুণ ফিটনেস বজায় রেখেছেন এবং মাঠে বেশ সপ্রভিত থাকেন। এক্ষেত্রে তরুণ অন্য একজনকে বাজিয়ে দেখাটাই হতে পারেন শক্ত কারণ।
ইমরুলের জায়গায় নেমে প্রথম ম্যাচেই ফিফটি করেছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, স্বাভাবিকভাবেই তাই কয়েকটা ম্যাচে তিনিই সুযোগ পাবেন। আর এই তরুণ ব্যাটার যদি দুই-একটা ভালো ইনিংস খেলে ফেলেন, তাহলে ইমরুলের দলে ফেরার পথ প্রায় বন্ধই যে হওয়ার যোগাড় হবে। শুরুতে যে বলা হচ্ছিল, সাগর শুকিয়ে যাওয়ার কথা, ইমরুল তো নিজেকে সেই জায়গায় দেখতেই পারেন। প্রথমে হারালেন অধিনায়কত্ব, এখন একাদশেও হয়ে পড়েছেন ব্রাত্য।
ইমরুলের এভাবে ছিটকে যাওয়াটা তার ফ্যানবেজে ভালোই আঘাত হেনেছে। সিলেট রাউন্ডে কুমিল্লার শেষ ম্যাচ ছিল চট্রগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে। সেই ম্যাচ চলাকালীন সিলেটে বিপিএল নিয়ে অন্য এক দর্শকের প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় এগিয়ে এসে এক যুবকের আকুতি, “ভাই, ইমরুল ভাইকে নিয়ে কিছু কথা শুনবেন?” একটু চমকে তাকিয়ে সম্মতি জানাতেই শ্যামল নামের সেই ব্যক্তি বললেন, “আপনারা তো মিডিয়া, চাইলেই তো আমাদের কথাগুলো একটু তুলে ধরতে পারেন। এই যে ইমরুল ভাইকে এত রান করার পরও বাদ দেওয়া হল, এই অন্যায় নিয়ে আপনারা কিছু বলেন না কেন?” ইমরুলকে কৌশলগত কারণে দল থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে বা বিশ্রামও দিতে পারে শুনে যেন মেজাজই হারিয়ে ফেললেন তিনি। “জাতীয় দলেও তার সাথে ঠিক হয়নাই। অন্যরা দশটা সুযোগ পায়, আর ইমরুল ভাইয়ের বেলায় দুইটা। এখন বিপিএলেও তার সাথে একই ঘটনা করা হচ্ছে। কুমিল্লায় তো রিজওয়ানই রান পায়না, সব দোষ খালি ইমরুল ভাইয়ের।”
আরও পড়ুন: ১০ রানের আক্ষেপে পুড়ছেন অঙ্কন
এই কথা শেষ হওয়ার পর পাশেই থাকা এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, “আসলে হয়েছে কি জানেন, অভাগা যেদিকে তাকায়, সেদিকেই সাগর শুকিয়ে যায়। ইমরুলের হয়েছে সেই দশা। তাকে বাদ দিলে ফেসবুকে হাউকাউ হয়না বলেই আজ এই অবস্থা।”
প্রসঙ্গ বদলে তাই আরও একজনের কাছে ইমরুল বিষয়ক মতামত জানার আগ্রহ হল। ব্যাংকার পারভেজ তুলে ধরলেন ভিন্ন একটি দিক। “ইমরুলের সমস্যাটা হল সে অনেক ক্রিকেটারের মত আমি এখানে খেলব না, আমি নিচে ব্যাট করব না, এসব কথা বলেনা। তার ইগো নেই। আমার মনে হয় এটাই তার কাল হয়েছে।”
ফর্মে থেকেও ইমরুলের বিপিএলে দর্শক বনে যাওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি আসতেই পারে, তবে সবকিছু ছাপিয়ে ইমরুল আসলেই নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। আর হয়ত একটু আফসোসও করতে পারেন, ফেসবুকে কেন তাকে দলের নেওয়ার জন্য কেউ ইভেন্ট খুলছে না। অবশ্য পুরো ক্যারিয়ারই যিনি পার করে দিলেন অন্যের ছায়ায় আড়াল হয়ে, তার বাদ পড়ায় সোশ্যাল মিডিয়াতে শোরগোল পড়ে যাওয়ার আশা করাটাও যে বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে যায়!
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সর্বশেষ খেলার আপডেট জানতে চোখ রাখুন টি স্পোর্টসে এছাড়া ফেসবুকে আমাদের ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন ও ইউটিউবে সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
দিন যত যাচ্ছে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ১১তম আসর নিয়ে উন্মাদনা বেড়েই চলেছে। নানা আয়োজনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) চেষ্টা করছে এবারের আসরকে সবচেয়ে স্মরণীয় করে রাখতে। সেই ধারায় এবারের বিপিএলের মাসকটও বেছে নেওয়া হয়েছে, যার নাম রাখা হয়েছে ডানা ৩৬। শান্তির প্রতীক হিসেবে সেখানে দেখা যাবে একটি সুসজ্জিত পায়রাকে।
বিপিএলের মাসকটটিকে স্বাধীনতা এবং ক্রীড়া চেতনার স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। ডানা বিস্তৃত, আত্মবিশ্বাসী, আনন্দদায়ক হাসিতে পায়রাটি গ্রাফিতি শিল্পে সজ্জিত একটি ক্রিকেট ব্যাট ধরে আছে। এর পালকের রঙিন গ্রাফিতি প্যাটার্ন এবং ব্যাট আমাদের স্বাধীনতা, ইতিবাচক শক্তি এবং সাংস্কৃতিক গর্বের থিম উপস্থাপন করে। এই প্রাণবন্ত মাসকটটি একটি উজ্জীবিত চেতনা বহন করে, যা ক্রিকেট নিয়ে রোমাঞ্চ এবং উদযাপনকে ফুটিয়ে তোলে।
আরও পড়ুন
বিপিএলের টাইটেল স্পন্সর ডাচ-বাংলা ব্যাংক |
এই পায়রার মাসকটটিকে স্বাধীনতার চেতনার সাথে মেলবন্ধন ঘটানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা খেলাধুলার একটি অপরিহার্য অংশ এবং ক্রিকেট সংস্কৃতিরও একটি মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। পায়রাকে শান্তি এবং স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক হিসেবে দেখা হয়, যা একটি জাতির শক্তি এবং ঐক্যকে প্রতিফলিত করে। মাসকটের গ্রাফিতিটি আধুনিক, তারুণ্যের স্পর্শময়, যা সমসাময়িক ক্রিকেট ভক্তদের প্রগতিশীল, প্রাণবন্ত প্রাণশক্তির সাথে আমাদের স্বাধীনতার ঐতিহ্যগত মূল্যবোধকে একসুতোয় গেঁথেছে।
এবারের বিপিএল শুরু হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর। টুর্নামেন্টের পর্দা উঠবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে সাতটি দল -
রংপুর রাইডার্স, ঢাকা ক্যাপিটালস, চিটাগং কিংস, দুর্বার রাজশাহী, ফরচুন বরিশাল, খুলনা টাইগার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স।
দীর্ঘদিন ধরে আছেন জাতীয় দলের বাইরে। খেলে যাচ্ছিলেন কেবল ঘরোয়া ক্রিকেট। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস ঘোষণা দিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের। বুধবার নিজেই নিশ্চিত করেছেন বিষয়টি।
নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর কথা জানিয়েছেন ইমরুল। সাদা বলের ক্রিকেটে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশ দলের বাইরে থাকলেও এই দুটিতে খেলার দুয়ার খোলা রেখেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
আরও পড়ুন
‘অভাগা যেদিকে চায়, সাগর (ইমরুল) শুকিয়ে যায়’ |
২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে এই ফরম্যাটে পথচলা শুরু হয় ইমরুলের। শেষবার খেলেছেন ২০১৯ সালের নভেম্বরে, ভারতের বিপক্ষে। মাঝের এই সময়ে খেলেছেন ৩৯টি ম্যাচ। ৭৬ ইনিংসে ২৬.২৮ গড়ে রান করেছেন ১ হাজার ৭৯৭। সেঞ্চুরি তিনটি আর ফিফটি চারটি।
টেস্টে ইমরুলের সর্বোচ্চ ইনিংসটি এসেছিল ২০১৫ সালে। খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র হওয়া ম্যাচে খেলেছিলেন ১৫০ রানের দারুণ এক ইনিংস। ওই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবালের সাথে ওপেনিং জুটিতে ইমরুল যোগ করেছিলেন রেকর্ড ৩১২ রান।
আরও পড়ুন
ছয়ের রেকর্ডে তামিমের সঙ্গী ইমরুল |
চলতি এনসিএলে খেলছেন ইমরুল। শেষ ম্যাচে সিলেটের বিপক্ষে দুই ইনিংসে করেছেন যথাক্রমে শূন্য ও ৭১ রান।
১ দিন আগে
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
৭ দিন আগে
১৮ দিন আগে
২৯ দিন আগে