তাসকিন আহমেদ ইনজুরি থেকে ফিরছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দিয়ে। এবাদত হোসেনের মাঠে ফেরা হচ্ছেনা আগস্টের আগে। টেস্ট ক্রিকেটটা এখন আর নিয়মিত খেলেন না আরেক পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এমন এক বাস্তবতায় দাঁড়িয়েই এবছর ১৪ টি টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। যার দশটাই আবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচগুলো বাদেও জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি করে টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে যে যাত্রা। এর আগে পেসারদের নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকতেই হচ্ছে বাংলাদেশকে। এতগুলো ম্যাচে স্বাভাবিক ভাবেই পাওয়া যাবে না পছন্দের পেসারদের। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ম্যাচ খেলাতে হবে তাসকিন, শরিফুলদের।
আরও পড়ুন: আইপিএলের নিলামে ফিজ-তাসকিন-শরিফুল
এতগুলো টেস্ট ম্যাচের বছরে পা দেয়ার আগে নিজেদের পরিকল্পনাটা সাজিয়ে রেখেছেন নির্বাচকরা। হাবিবুল বাশার সুমন বলছিলেন কীভাবে খেলাতে চান পেসারদের,’’ আমরা এবাদতকে মিস করবো। তাসকিনও সব টেস্ট খেলতে পারবে না, ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। তবে আমাদের কিছু নতুন বোলার তৈরি হয়েছে। এছাড়া হাসান মাহমুদ ভালো পছন্দ হতে পারে। শরিফুলও ভালো করছে। আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা সাজিয়েছি যে কাকে কিভাবে ব্যবহার করবো। আসলে আমাদের সামনে এখন এটাই বাস্তবতা। আমাদের এভাবেই এগোতে হবে।‘’
টেস্ট ক্রিকেটে এখনো অভিষেক না হলেও জাতীয় দলের সাথেই আছেন আরো দুই পেসার রেজাউর রহমান রাজা ও মুশফিক হাসান। সবশেষ নিউজিল্যান্ড সফরেও দলের সাথে রাখা হয়েছিল মুশফিককে। তাদের অগ্রগতি নিয়েও খুশি এই নির্বাচক,’’ আমরা ওদের নিয়ে বেশ খুশি। জাতীয় দলের সাথেই আছে। এছাড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও ওরা ভালো করছে। রাজা, মুশফিক দুজনই সুযোগ পেলে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করছে। ফলে ওরা প্রস্তুত আছে, তবে অভিজ্ঞতাটা নেই। আমরা চাইনা একসাথে সব নতুন মুখ খেলুক। সেটাই আমরা ম্যানেজ করে খেলাব।‘’
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের নিয়মিত পেসার ছিলেন এবাদত। তবে তার লম্বা ইনজুরিটা ভালোই ভাবাচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। তবে ফিরে আসার ব্যাপারে আশ্বাস দিচ্ছেন পেস বোলিং কোচ মাহবুব আলী জ্যাকি,’’ ওরা (তাসকিন, এবাদত) অবশ্যই ফিরবে। টপ ক্লাস প্লেয়ার তো, ওরা জানে কি করতে হয়। তবে ওদের রিকোভারিটা আমাদের বুঝতে হবে। আমরা চাইলেই এবাদতকে অনেক বেশি চাপ দিতে পারবো না। ওদের সহ্য ক্ষমতার মধ্য দিয়েই সেরাটা বের করে আনতে হবে। ওদের জন্য বোলিংটা ব্যাপার না। তবে ফিটনেস লেভেলটা রিহ্যাবের সময় ঠিক করে আসলে, পরের কাজটা সহজ হয়ে যায়।‘’
আরও পড়ুন: দুর্দান্ত ঢাকা নামের দল বিপিএলে
এসিএল ইনজুরির কারণেই লম্বা সময় মাঠের বাইরে এবাদত। এই ধরনের ইনজুরির পর অনেক সময়ই পেসাররা তাদের আগের রূপ ফিরে পাননা। এমন সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না এই কোচ,’’ একেবারে মিসিং(ধার) না হলেও কিছু জায়গায় ধারটা কমতে পারে। হয়তো স্যুইংটা আগের মত না হতে পারে। তবে একেবারেই পারবেনা এমন হওয়ার কথা না। তাকে মাশরাফির মত শক্ত হতে হবে। বাইশ গজে এসে ডমিনেট করতে হবে। বোলিংটা ওদের মাপের ক্রিকেটারদের জন্য বড় না, তবে কিভাবে উইকেট তুলে নিতে হয় সেই যে মানসিক আগ্রাসনটা সেটা আগের মত বা আরো বেশি থাকতে হবে।‘’
তিনি আরো যোগ করেন,’’আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইনজুরি থেকে আসার পর এই টিকে থাকার মানসিকতাটাই পার্থক্য গড়ে দেয়। খেলাটাই আসলে মেন্টাল। আপনি কিভাবে মাঝমাঠে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করবেন সবকিছু সেটাই বড়। কখনো কখনো একটা সোজা বলও ভালো বল হতে পারে, একটা হাফ ভলিও কঠিন হয়ে যেতে পারে। এগুলো পরিস্থিতির ওপর এবং সেই ক্রিকেটারের মানসিকতার ওপর নির্ভর করে।‘’
গতবছর এই দুজনের অভাবটা অনেকটা পুষিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। এই বাঁহাতি তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই দারুণ সময় কাটিয়েছেন। গতবছর চার টেস্ট খেলে তিনি নিয়েছেন ১২ টা উইকেট। তবে ২০২৪ সালে এই পেসারকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মাহবুব আলী জ্যাকি।
আরও পড়ুন: বিপিএলে কোন দলে কে?
তিনি বলেন,’’ আমাদের বাঁহাতি বোলারের যে ঘাটতি ছিল সেটা শরিফুল মিটিয়ে দিয়েছে। তারমানে এই না যে আমরা তাকে খেলিয়েই যাব। তার শরীরের প্রতিও আমাদের যত্ন নিতে হবে। ভালো পারফর্মেন্সের পর তাকে বিশ্রাম দিতে হবে। যেন পরের সিরিজে তাকে আমরা আবার পুরোদমে পাই।‘’
পাইপলাইনে থাকা বোলারদের নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। একই সুর এই পেস বোলিং কোচের কন্ঠেও। খালেদ আহমেদের সাথে রেজাউর রহমান রাজা ভালো পছন্দ হতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে মুশফিক হাসানকে আরেকটু সময় দেয়ার পক্ষে তিনি,’ খালেদ আর রাজা এখন বেশ ভালো করছে। পাইপলাইনটা শক্ত করেছে এই দুজন। মুশফিকও আছে, তবে তাকে বোধহয় আরেকটু সময় দেয়া প্রয়োজন। সে দলের সাথে আছে। ডাগআউট খুব গুরুত্বপূর্ণ, মুশফিক (হাসান) ওখান থেকে শিখছে কীভাবে বিভিন্ন রকম পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেলেও, সিনিয়র ক্রিকেটারদের সাথে ওর থাকা, শেখা এগুলো খুব জরুরি। এবং যা শিখছে সেগুলো অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের আয়ত্বে নিয়ে আসতে হবে। তার নিজেকেও ডাগ আউটের এই গুরুত্বটা বুঝতে হবে।‘
আরও পড়ুন: বিপিএল শুরু ১৯ জানুয়ারি, সব খেলা টি স্পোর্টসে
নির্বাচক ও কোচ দুজনের কথাতেই স্পষ্ট যে এই বছর পেসারদের নিয়ে থাকতে হবে বাড়তি সতর্ক। বিশ্রাম দিয়েই খেলাতে হবে তাসকিন, শরিফুলদের। বড় পরীক্ষায় পড়তে হবে পাইপলাইনে থাকা পেসারদেরও। কেননা ১৪ টা টেস্টের পাশাপাশি, ৯ টা ওয়ানডে ও ১৭ টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ। এসবের বাইরে এবছর আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও। চাপটা বাংলাদেশের পেসাররা কতখানি নিতে পারেন সেটাই দেখার অপেক্ষা।
১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৬:৪৩ পিএম
ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ২৯ রানে হেরেছে পাকিস্তান । ৭ ওভারের ম্যাচে প্রায় অলআউটই হয়ে যাচ্ছিল রিজওয়ানের দল। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৬৪ রানে থামে তারা।
বৃষ্টির কারণে ২০ ওভারের ম্যাচটি নেমে আসে ৭ ওভারে। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়া শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম ওভারেই তোলে ১৬ রান। পরের ওভারে নাসিম শাহর ওভারে আরও ১৭। পুরোদমে ঝড়ো ইনিংস চলছিল দলটার। তবে ৩ ওভারের মাঝেই ২ ওপেনারকে ফেরান হারিস রউফ ও নাসিম শাহ।
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে পাকিস্তান দলে বাবর-শাহিন-নাসিম |
এরপর কাজের কাজটা মূলত করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৫ টি চার ও ৩ টি ছক্কায় ১৯ বলে খেলেন ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। তাকে সঙ্গ মার্কাস স্টোইনিস। ৭ বলে করেন ২১। ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বোর্ডে ওঠে ৯৩ রান।
৪২ বলে ৯৪ রানের লক্ষ্যটা পাকিস্তানের জন্য হয়ে পড়ে কঠিন। একের পর এক উইকেট হারিয়ে রিজওয়ানরা পড়েন আরো চাপে। পাকিস্তানের ইনিংসে হাসিবুল্লাহ খানের ১২, আব্বাস আফ্রিদির ২০ ও শাহিন শাহ আফ্রিদির ১১ ছাড়া বাকি সবার রান এক অঙ্কের ঘরে।
৭ ওভারেই ৯ উইকেট হারিয়ে দল থামে ৬৪ রানে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬টি উইকেট নেন দুই পেসার জাভিয়ের বার্টলেট ও নাথান এলিস। অ্যাডাম জ্যাম্পা ২ টি ও স্পেন্সার জনসন নেন ১ টি উইকেট।
আরও পড়ুন
শাহিন-নাসিম-রউফ তোপে উড়ে গেল অস্ট্রেলিয়া, সিরিজ জয় পাকিস্তানের |
২৯ রানের এই জয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০–তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া বনাম পাকিস্তান
অস্ট্রেলিয়া: ৯৪/৪ (৭); (গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৪৩(১৯), মার্কাস স্টয়নিস ২১(৭)
আব্বাস আফ্রিদি ২/৯, হারিস রউফ ১/২১)
পাকিস্তান: ৬৪/৯ (৭); আব্বাস আফ্রিদি ২০*(১০), হাসিবউল্লাহ খান ১২(৮)
নাথান অ্যালিস ৩/৯, জাভিয়ের বার্টলেট ৩/১৩
পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। এবছরের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের অধীনে এই ট্রফি ঘুরবে একাধিক দেশ। যেখানে থাকবে বাংলাদেশও।
এর আগে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় একাধিক ট্রফি এসেছে ক্রিকেট জনপ্রিয়তার বাংলাদেশে। এবারও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি আসবে বাংলাদেশে।
১০ ডিসেম্বর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আসবে ঢাকায়। থাকার কথা তিন দিন। ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বাংলাদেশে থেকে ঘুরবে ঢাকা আর কক্সবাজার। বিসিবি সূত্র নিশ্চিত করেছে টি-স্পোর্টসকে।
৮ বছর পর মাঠে গড়াবে চ্যাম্পিয়নস লিগ। এর আগে সবশেষ ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই টুর্নামেন্ট, যেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান।