দিনের হিসেবে একদিন, তারপরেই বেজে যাবে ইউরো শুরুর ঘণ্টা। ইউরোর উদ্দেশ্যে জার্মিনিও সেজেছে নতুন রূপে। ২০০৬ বিশ্বকাপের পর আবারও দেশটিতে শুরু হতে যাচ্ছে ফুটবলীয় মহরণ। তার আগে কাঁটাছেড়া করে নেওয়া যাক গ্রুপ গুলোর।
দ্বিতীয় পর্বে থাকছে গ্রুপ ‘বি’ :
স্পেন
গ্রুপ ‘বি’-কে ধরা হচ্ছে এই ইউরোর ‘গ্রুপ অব ডেথ’ হিসেবে। যেখানে ফেভারিটের তকমাটা থাকছে স্পেনের গায়ে।
তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশলে গড়া স্পেন দল। একদিকে লামিন ইয়ামালের মতো তরুণ, আরেক দিকে রদ্রি কিংবা দানি কারভাহালের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার আছেন দলে। দলটির মিডিফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার নেই সুযোগ। লুই দে লা ফন্তের অধীনে তারা খেলছেও স্পেনের চিরচেনা পাসিং ফুটবল। তবে তাদের মূল ভয়ের জায়গা স্ট্রাইকিং পজিশন। আলভারো মোরাতা, ফেররান তোরেস বা হেসেলুদের দিয়েই কাজটা সারতে হবে ফন্তেকে। তবে ফর্ম বিবেচনায় স্পেনেরই গ্রুপ সেরা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
আরও পড়ুন: ইউরো ২০২৪ : দল বিশ্লেষণ (গ্রুপ ‘এ’)
ক্রোয়েশিয়া
বয়সের হিসেব টানলে ইউরোর এবারের আসরের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল ক্রোয়েশিয়ারই। লুকা মদ্রিচ, ইভান পেরেসিচদের বয়স ছাড়িয়েছে ৩৫। মিডফিল্ডে তাদের অভিজ্ঞতার ছড়াছড়ি। ডিফেন্সে নেতৃত্ব দিবেন ম্যানচেস্টার সিটি ডিফেন্ডার জসকো গাভরিদিওলের ওপর। স্কোয়াড ও শক্তিমত্তা বিবেচনায় গ্রুফের দ্বিতীয় হয়েই পরের পর্বে যাওয়া সম্ভাবনা বেশি ২০১৮ বিশ্বকাপ রানার্সআপ ক্রোয়াটদের।
ইতালি
ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইতালি, তবে পারফরম্যান্সের বিচারে শিরোপাধারীদের অবস্থা এবার খুব একটা আশা জাগানিয়া না। নতুন কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তি এখনো দলটাকে ঘুছিয়ে নিতে পারেননি। ফরমেশন নিয়েও এখনো আছেন দ্বিধা দ্বন্দে। বাছাই পর্বে নিজেদের গ্রুপে রানার্সহয়ে মূল পর্বে এসেছে ২০০৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
তার মাঝে স্কোয়াডেও নেই তেমন বড় নাম। ডিফেন্স লাইনটা বরবরের মতোই ঠিকঠাক, তবে মিডফিল্ড কিংবা ফরোয়ার্ড সবখানেই দলটার আছে দূর্বলতা। তাই গ্রুপ পর্ব পার হওয়া নিয়েই শঙ্কা দলটাকে নিয়ে। যদিও সংশয়ের মেঘ সরিয়েই ইউরোতে বারবরই তারা চমকে দেয় অন্য দলগুলোকে। গেলো ইউরোই যার বড় প্রমাণ।
আলবেনিয়া
দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোতে জায়গা মিলেছে আলবেনিয়ার। অবশ্য তারা নিজেদের কিছুটা অভাগা ভাবতেই পারে। পড়েছে একেবারে গ্রপ আব ডেথে। ব্রাজিলিয়ান কোচ সিলভিনহির অধীনে দলটা গুছিয়েও নিয়েছে নিজেদের বেশ। তবে এই গ্রুপ থেকে পরের পর্বে যাওয়া তাদের জন্য কঠিনই বটে।
বার্সেলোনা রীতিমত উড়ছে। বার্সাকে থামাতে গিয়ে কেউ বাধা পড়ছেন অফসাইডের ফাঁদে, আর তা না হলে বিপরীত পোস্টে ইয়ামাল-লেভানডফস্কি-রাফিনিয়ার মুহুর্মুহু আক্রমণে প্রতিপক্ষ ভেসে যাচ্ছে গোলবন্যায়। শেষ পাঁচ ম্যাচে রিয়াল-বায়ার্নসহ বার্সা গোল করেছে ২১ টা, সব প্রতিযোগিতা মিলে সেটা ৫০ ছুঁয়েছিল রেড স্টারের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই। বার্সেলোনার এই ‘গোলমেশিন’ যেন অটো মোডে এভাবেই গোল করে যায়, সেটাই প্রত্যাশা বার্সেলোনার জার্মান কোচ হান্স দিতার ফ্লিকের।
রেড স্টারের বিপক্ষে এক পর্যায়ে ১-১ এ সমতা থাকলেও বার্সেলোনা ম্যাচটা শেষ করেছে ২-৫ স্কোরলাইনে। সে সঙ্গে ৭৪ বছরের পুরোনো একটা রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে ফেলেছে ফ্লিকের দল। এই মুহূর্তে সব কম্পিটিশন মিলে ১৬ ম্যাচ খেলেছে বার্সেলোনা, তাতে ম্যাচপ্রতি ৩.৪ গোল হারে তারা গোল করেছে ৫৫ টি। এর আগে স্লোভাক কোচ ফার্দিনান্দ দাউচিকের অধীনে ১৯৫০-৫১ সালে বার্সেলোনা প্রথম ১৬ ম্যাচে করেছিল ৫৪ গোল। এবারের ভয়ঙ্কর বার্সেলোনার কাছে ভেঙে গেল এত বছরের পুরোনো রেকর্ডটাও, যা কি না অক্ষত ছিল লিওনেল মেসি, ইব্রাহিমোভিচ, সুয়ারেজ, নেইমারদের সময় যাবার পরও। ওসাসুসানের কাছে ৪-২ গোলে হারার পর প্রতি ম্যাচেই তিনের অধিক গোল করেছে কাতালান ক্লাবটি। এই ১৬ ম্যাচের মধ্যে তারা তিন বা এর অধিক গোল করেছে ১০ ম্যাচে।
আরও পড়ুন
জিতেও যে কারণে দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নন ফ্লিক |
কিন্তু এরকম ভয়াবহ গোলক্ষুধার পেছনে রহস্যটা কী? হান্সি ফ্লিক কী এমন জাদু করলেন যে খেলোয়াড়রা গোলমুখে এত ধারাবাহিক হয়ে উঠেছে? উত্তরটা স্মিত হেসে ফ্লিক নিজেই দিয়েছেন, বলছেন তার ফুটবলারদের মধ্যে ‘প্রতিযোগিতার মানসিকতা’ থাকার কারণেই বার্সায় চলছে সুসময়-
“আমরা প্রতিটা ম্যাচে আলাদা করে নজর দিচ্ছি, সেটা আপনারাও হয়তো দেখছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ম্যাচে খেলোয়াড়রা ওদের সেরাটা দিচ্ছে। মাঠে সেটা ওরা ভালো বোঝে এবং তাদের সফল হতে দেখাটা আনন্দদায়ক।”
বার্সেলোনার এই গোলের ধারা অব্যাহত রাখার ব্যাপারেও জোর দিচ্ছেন ফ্লিক, বলছেন মৌসুমের এখনো অনেক সময় বাকি-
“আশা রাখছি ওরা এমনটা ধরে রাখতে পারবে। আমাদের সেই আত্মবিশ্বাসটা আছে। এটা শুধু একটা ম্যাচে ভালো করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং আমরা মৌসুমে এখন পর্যন্ত যে কয়টা ম্যাচ খেলেছি– সেটা মাথায় রেখেই আমরা এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই।”
চ্যাম্পিয়নস লিগে এরকম ম্যাচের পর ম্যাচে গোল করা অতীত বার্সেলোনার সন্ধান পেতে চাইলে আপনাকে ফিরে যেতে হবে ২০১১-১২ সালে। সেবার টানা তিন ম্যাচে তিন বা তার অধিক গোল করেছিল বার্সেলোনা, ১২ বছর পর সেটা বার্সেলোনা আবারো করে দেখালো ইয়াং বয়েজ আর রেড স্টারের জালে পাঁচ এবং বায়ার্নের জালে ৪ গোল দিয়ে।
আরও পড়ুন
এল ক্লাসিকোর জয়ে গর্বিত ফ্লিক |
চ্যাম্পিয়নস লিগে ৪ ম্যাচ শেষে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে আছে বার্সেলোনা। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার পরবর্তী অ্যাসাইনমেন্ট এবারের চমক ফ্রেঞ্চ ক্লাব ব্রেঁস। তবে তার আগে লা লিগাতে রিয়াল সোসিয়েদাদ ও সেলতা ভিগোর সঙ্গে ম্যাচ খেলবে তারা।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসির পর ৩য় ফুটবলার হিসেবে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে শততম গোলদাতার তালিকায় ঢুকতে যাচ্ছেন রবার্ট লেভানদোভস্কি। এখন পর্যন্ত উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে এই স্ট্রাইকারের গোল সংখ্যা ৯৯।
চ্যাম্পিয়নস লিগে গেল রাতে রেড স্টারের বিপক্ষে জোড়া গোল করে নিজেকে ৯৯’র ঘরে নিয়েছেন বার্সেলোনার এই স্ট্রাইকার। তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ব্রেস্টের বিপক্ষে পরের ম্যাচের জন্য। রেড স্টারের বিপক্ষে মাঠে ছিলেন ৭৮ মিনিট পর্যন্ত, পুরো সময় পেলে হয়তো চ্যাম্পিয়নস লিগে শততম গোলের অপেক্ষাটা ফুরিয়ে ফেলতে পারতেন এই স্ট্রাইকার। ম্যাচ শেষে বার্সেলোনা কোচ হ্যান্সি ফ্লিকও রসিকতা করে সেই আফসোসটাই করেছেন-
“এটা আমি জানতাম না, জানলে হয়তো পুরো ম্যাচ না খেলিয়ে আমি তাকে বদল করতাম না।”
এর আগে বায়ার্ন মিউনিখ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলেছেন লেভানদোভস্কি। ৯৯ চ্যাম্পিয়নস লিগ গোলের ৬৯টাই করেছেন বাভারিয়ানদের হয়ে। যা একক কোন ক্লাবের হয়ে গোলের হিসেবে রয়েছে ৪র্থ স্থানে। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে মেসির গোল ১২০, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গোল ১০৫, কারিম বেনজেমাও রিয়ালের হয়ে করেছেন ৭৮টি গোল।
আরও পড়ুন
ভিনির মন খারাপ, তবে সেটা ভ্যালেন্সিয়ার বন্যার্তদের জন্য : আনচেলত্তি |
২০১৯/২০ চ্যাম্পিয়নস লিগে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল করেছিলেন রবার্ট লেভানদোভস্কি। সেবার বায়ার্ন মিউনিখকে ইউরোপ সেরার মুকুট এনে দিয়েছিলেন এই পোলিশ স্ট্রাইকারই। গোল করেছিলেন পুরো আসর জুড়ে ১৫টা।
বার্সেলোনার হয়ে এই মৌসুমে ৪ ম্যাচে গোল করেছেন ৫টি। সব মিলিয়ে বার্সার জার্সিতে চ্যাম্পিয়নস লিগ গোল হলো ১৩টি।
১ দিন আগে
২ দিন আগে
২ দিন আগে
৫ দিন আগে
৬ দিন আগে
৭ দিন আগে
১৯ দিন আগে