২৭ অক্টোবর ২০২৪, ৪:০৭ পিএম
ম্যাচের বয়স তখন ৩০ মিনিট। জুড বেলিংহামের পাস থেকে কিলিয়ান এমবাপে দারুণ ফিনিশিংয়ে এগিয়ে দেন রিয়াল মাদ্রিদকে। এল ক্লাসিকোতে প্রথম গোল করে কিলিয়ান এমবাপেও উদযাপনটা সেরে নিলেন। ছাদ ঢাকা সান্তিয়াগো বার্নাব্যু তখন উত্তাল। তার মধ্যেই রেফারি হাত উঁচিয়ে ঈশারা দিলেন অফ সাইডের। বার্নাব্যুর মতো এমবাপের চোখেও তখন হতাশার ছাপ স্পষ্ট। সেটা ম্যাচ যত গড়িয়েছে, ততই যেন বেড়েছে।
পুরো ম্যাচেই বার্সেলোনার ‘হাই লাইন’ ডিফেন্সের কাছে বারবারই ধরা খেয়েছেন এমবাপে, ভিনিসিয়ুসরা। ম্যাচের প্রথমার্ধেই তারা ৮ বার রিয়ালকে আটকে ফেলে নিজেরদের ছকে। ম্যাচ শেষে সেই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১২-তে। যেখানে আছে এমবাপের দুটি বাতিল হওয়া গোলও। এই পরিসংখ্যান জানান দেয়, বার্সেলোনা তাদের হোম ওয়ার্ক কতটা সেরে তারপর মাঠে নেমেছে। সেই সাথে চমকে দিয়েছে রিয়ালকে।
কালকের ম্যাচটা আর্জেন্টিনা সমর্থকরা দেখলে নিশ্চিতভাবেই তাদের স্মৃতিতে ফিরে আসার কথা কাতারে সৌদি আরবের সাথে বিশ্বকাপ ম্যাচটার কথা। যেখানে আর্জেন্টিনা বারবার সৌদির রক্ষণ ভাঙলেও অফ সাইডের ফাঁদে গোল বাতিল হয়েছে তাদের। তারকা নির্ভর আর্জেন্টিনাকে বারবার একই ফাঁদে আটকে ম্যাচটাও জিতে নিয়েছিল ‘পুঁচকে’ সৌদি আরব। যেটা পুরো ফুটবল বিশ্বকেই চমকে দিয়েছিল।
বার্সেলোনা অবশ্য শুধু কালকের ম্যাচেই নয়, মৌসুমের শুরু থেকেই হান্সি ফ্লিকের কোচিংয়ে এই কাজটা করে আসছে। আর সেটা তারা কতটা নিখুঁত ভাবে করতে পারে, তা গেল দুই ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল টের পেয়েছে ভালোভাবেই।
তাদের এই হাই লাইন ডিফেন্স কতটা কার্যকারী হতে পারে, সেটা পরীক্ষার জন্য এই দুই দলই ছিল অন্যতম সেরা। দুই দলের আক্রমণভাগে ছিল স্পিড, স্কিলফুল ফুটবলার। যাদের আটকাতে ‘পিকচার ফারফেক্ট’ হওয়াটা তাই আবশ্যক। সেকেন্ডের ভুলেই হতে পারে সর্বনাশ। তবে কঠিন সেই কাজটাই কুবরাসি, কুন্দে, ইনিগো মার্তিনিজেরা করে দেখিয়েছেন নিখুঁতভাবে।
বিশেষ করে এমবাপের গতিকে তারা বারবার যেভাবে খাবি খাইয়েছেন, বার্সেলোনা সমর্থকদের তা তৃপ্তি দেওয়ারই কথা। সব মিলিয়ে ফরাসি স্ট্রাইকার ৮ বার কাঁটা পড়েছেন বার্সার ডিফেন্সের ফাঁদে, যা তার পুরো ক্যারিয়ারেই এক ম্যাচের সর্বোচ্চ।। প্রথম ক্লাসিকোতে এমবাপের সঙ্গী হয়েছে তেতো অভিজ্ঞতাই।
শুধু রিয়াল মাদ্রিদই নয়, বার্সার এই ফাঁদে মৌসুমের শুরু থেকেই পা দিয়েছে বেশীরভাগ দল। যার প্রমাণ পরিসংখ্যান। এখন পর্যন্ত ৭৩ বার এই মৌসুমে প্রতিপক্ষকে অফসাইডের ফাঁদে ফেলেছে বার্সেলোনা। যা শীর্ষ পাঁচ লিগে সর্বোচ্চ। দুই থাকা ব্রাইটনের সাথে ব্যবধানটা দ্বিগুণের চেয়েও বেশি।
যদিও কাজটা করা মোটেও সহজ না। মাত্র এক সেকেন্ড কিংবা একটা মুভমেন্ট এলোমেলো হলেই বার্সাকে পড়তে হবে বিপাকে। তবে এখন পর্যন্ত সেই ভুল তাদের ডিফেন্ডাররা তেমন করেননি। করলেও দুই পিভট পেদ্রি ও কাসাদো সেটিকে কাভার দিয়েছেন বেশ দারুণভাবেই।
ঝুঁকি নিয়ে এখন পর্যন্ত ফ্লিকের দল দারুণ সফল। তবে এটা কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে শঙ্কা এখনো উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ কম। যদিও এই হাই লাইন ডিফেন্সের সুযোগ নিতে গিয়ে প্রতিপক্ষ বারবারই নিজেদের ডিফেন্সের জায়গাটা খুলে দিচ্ছেন। যার সুযোগ নিয়ে বার্সা মাত্র দুই একটা পাসেই প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে গোলের দেখা পাচ্ছে। শনিবার রাতে রিয়াল ম্যাচই যার প্রমাণ। কিংবা আগের ম্যাচে বায়ার্নের বিপক্ষে রাফিনিয়ার হ্যাটট্রিক, যা এসেছে সেই একই ফাঁদে।
হান্সি ফ্লিকের ট্যাকটিক্স তার দল যে নিখুঁতভাবে মাঠে বাস্তবায়ন করছে, তা হয়তো কেবল ‘এআই’ দিয়েই করানো সম্ভব। দুই মাস আগেও ছন্নছাড়া বার্সেলোনাকে, দিশা দেখানো শুরু করেছেন ফ্লিক। প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্য ধরে রাখা সেই বার্সেলোনার স্মৃতি আবারও তরতাজা করছেন। মাঠে মাঠেই বাইরে বার্সেলোনাকে রূপ দিয়েছেন সুখী পরিবারে।
২৯ এপ্রিল ২০২৫, ২:৪৬ পিএম
২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১:১৮ পিএম
মেহেদী হাসান শ্রাবণ যেন বনে গেলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, আর ভ্যালেরিউ তিতা যেন কার্লো আনচেলত্তি। ফেডারেশন কাপের ট্রফিটা জিতে তার আনন্দের নেই সীমা। মৌসুমের দ্বিতীয় ট্রফিটা জেতার উদ্যাপনে সব সমালোচনা হয়ে গেল ম্লান। ফুটবলাররাও তাকে ঘিরে আনন্দে আত্মহারা, চতুর্থবারের মত ফেডারেশন কাপের শিরোপা ঘরে তুলছে বসুন্ধরার ক্লাবটা।
তিরে এসে আরও একবার তরি ডুবলো আবাহনীর। শিরোপার খুব কাছে গিয়ে ছুঁয়ে দেখা হলো না তাদের। ২০২৩ সালে মোহামেডানের কাছে পেনাল্টি শুটআউটে হারের ক্ষতটা যেন আরও একবার ফিরে এলো। তাতে গেল তিন মৌসুমের মধ্যে দুইবারই আকাশী-নীলদের সন্তুষ্ট থাকতে হলো রানার্স আপ হয়েই।
দুই দিনে শেষ হওয়া ১২০ মিনিটের লড়াই ১-১ সমতার পর টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে আবাহনীকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের শিরোপাটা ধরে রেখেছে বসুন্ধরা কিংস। সেই সঙ্গে তারা হয়ে গেছে আবাহনী ও মোহামেডানের পর সবচেয়ে বেশি ফেডারেশন কাপ জেতা দলও। কোয়ালিফায়ারের প্রথম লেগে আবাহনীর কাছে শুটআউটে হারের তেতো স্বাদটাই যেন মারুফুল হকের দলকে ফিরিয়ে দিয়েছে তিতার কিংস।
গেল মঙ্গলবার যার শুরু, তার সমাপ্তি ঘটেছে এই মঙ্গলবারে এসে। মাঝে ঝড়ের বাগড়া, রেফারি বিতর্ক, আর কার্ডের বন্যা তো ছিলই। সাথে বদলে যায় স্টেডিয়ামের নামও। এত সব নাটকীয়তার পরও আলাদা করা যায়নি দুই দলকে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারেই দেখা মেলে সমাপ্তি। যেখানে কিংসের সুপার হিরো শ্রাবণ, আর মনে করিয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানোকে।
টেবিল বদলে এদিন ট্রফি উঠেছে পোডিয়ামে। দর্শকের সংখ্যাটা কমলেও শেষ ১৫ মিনিটে উত্তেজনার ছিল না কমতি। যেখানে দশজনের কিংস চাপ সামলে ম্যাচ নিয়ে যায় টাইব্রেকারে। আর সেখানে এমেকার শট ঠেকিয়ে মৌসুমজুড়ে সমালোচনা সঙ্গী হওয়া শ্রাবণই বনে গেছেন নায়ক।
এর আগে গেল মঙ্গলবার ১-১ এর সমতায় ১০৫ মিনিটে আলোক স্বল্পতায় মাঠ ছাড়ে দুই দল। কিংসের হয়ে গোলটা করেছিলেন লেসকানো, আর আবাহনীর হয়ে সমতা টেনেছিলেন ইব্রাহিম।
ফেডারেশন কাপের সেরা ফুটবলারের পুরষ্কারটা উঠেছে তপু বর্মনের হাতে। গোলের সাথে রক্ষণ দুটি সমান তালে সামলানোর পুরষ্কারই পেলেন কিংস অধিনায়ক। তিন গোল করে ইব্রাহিম আর তপু দু’জন আবার সেরা গোলস্কোরারের পুরস্কারটা জিতেছেন। আর দুর্দান্ত ছন্দে থাকা মিতুল মারমা হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপার।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হলেও নানা বাস্তবতায় এবারের বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) আবাহনীকে ধরা হয়নি শিরোপার ফেভারিট হিসেবে। তারকা খেলোয়াড় কয়েকজন ক্লাব ছাড়ার সাথে যোগ হয়েছিল আসর চলাকালীন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের দল ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপার। তবে সেসব ধাক্কা সামলে শেষ রাউন্ডের আগে শিরোপার লড়াই জমিয়ে তুলেছিল ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। অলিখিত ফাইনালে প্রতিপক্ষ মোহামেডানের বিপক্ষে আভাস ছিল শক্ত লড়াইয়ের। তবে সেই মহারনে সহজেই জিতে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল উঁচিয়ে ধরল শিরোপা।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে আবাহনী তুলে নিয়েছে ৬ উইকেটের জয়। ২৪১ রানের টার্গেট দলটি পাড়ি দিয়েছে ৫৬ বল হাতে রেখেই।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করা মোহামেডান শুরুতে পেয়েছিল ভালো ভিত। ওপেনিং জুটিতেই আসে ৫০ রান, যা শেষ হয় তৌফিক খান তুষারের বিদায়ে। ৯ বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করা অভিজ্ঞ রনি তালুকদারের ব্যাটে ছিল বড় ইনিংসের আভাস। তবে সেটা পারেননি তিনি। ১২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা পথ হারায় মোহামেডানের ইনিংস।
এরপরই দলটি ঘুরে দাঁড়ায় দুই অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ও আরিফুল ইসলামের ব্যাটে চেপে। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের দুজনেই করেন ফিফটি। ৯০ রানের জুটিতে তারা দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে গেলেও কেউই পারেননি একটা বড় ইনিংস খেলে স্কোরটা আরও চ্যালেঞ্জিং করতে।
দুই ব্যাটারই করেন সমান ৫০ রান। শেষের দিকের ব্যাটাররাও পারেননি ঝড় তুলতে। ফলে ৭ উইকেটে বোর্ডে জমা হয় মাত্র ২৪০ রান, যা যথেষ্ট ছিল না। দুটি করে উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও মোসাদ্দেক।
এরপরও সুযোগ ছিল বোলারদের সামনে নিজেদের মেলে ধরার, দুর্দান্ত কিছু করার। আবাহনীয় দলীয় দুই রানে প্রথম উইকেটের পতনে জেগেছিল সেই আশাও। এরপর ফর্মে থাকা পারভেজ হোসেন ইমন ও এসএম মেহেরবও অল্পে ফিরলে ক্রমেই ম্যাচে ফেরার সুবাস পায় মোহামেডান।
তিনে নেমে প্রায় ১০৪ স্ট্রাইক রেটে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৫৫ রানের ইনিংসে আবাহনীকে চাপ থেকে কিছুটা বের করেন তরুণ ব্যাটার জিসান আলম। তবে নাসুম আহমেদের বলে তার বিদায়ে ১০৮ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে আবাহনী।
এমন পরিস্থিতিতে যাদের ওপর দলের আস্থা ছিল সবচেয়ে বেশি, সেই দুজনই এরপর দাঁড়িয়ে চান সময়ের চাহিদা মিটিয়ে। মোহামেডানকে একটু একটু করে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়ে মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে অধিনায়ক মোসাদ্দেক অপরাজিত ১৩৫ রানের জুটি।
৭৭ বলে ৬৬ রান আসে মিঠুনের ব্যাট থেকে। আর ব্যাটে-বলে দারুণ এক আসর পার করা মোসাদ্দেক করেন ৬৫ বলে ৭৮, ৬টি চার ও ৫ ছক্কায়।
আন্ডারডগ হিসেবে নেমে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মাঠে প্রথম লেগে যে ফলাফল ছিল, তা অনেকের কাছেই ছিল অঘটনের শামিল। তবে ফিরতি লেগেও আর্সেনাল প্রমাণ করে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে সফল দলটির বিপক্ষে নিজেদের সেরা ফুটবল উপহার দেওয়ার সামর্থ্য তাদের আছে। ফাইনালে যাওয়ার পথে মিকেল আর্তেতার দলের বাধা এখন দুরন্ত ফর্মে থাকা পিএসজি। তবে আর্সেনাল কোচ মনে করেন, রিয়ালকে হারানোর কারণে তাদের আর কাউকে নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
শেষ আটের প্রথম লেগে ঘরে মাঠে রিয়ালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দেয় আর্সেনাল। তবে ফিরতি লেগ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হওয়ায় অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার হয়ত আর পারবে না ইংলিশ ক্লাবটি। তবে এই লড়াইয়েও ২-১ গোলে জিতে যায় আর্সেনাল। শক্তিধর রিয়ালকে যেভাবে দুই লেগে নাকানিচুবানি খাইয়েছে তারা, তাতে শিরোপার জোর দাবিদার হিসেবে নিজেদের রাখতেই পারে লন্ডনের ক্লাবটি।
এর মধ্যে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাওয়া পিএসজির সাথে সেমিফাইনালের প্রথম লেগের আগেও তাই বাড়তি অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন আর্তেতা।
“আমি মনে করি বার্নাব্যুতে যাওয়া সম্ভবত সেখানকার সামগ্রিক ইতিহাসে, সাম্প্রতিক ইতিহাস এবং সেখানে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার কারণে একটা ইউরোপিয়ান দল হিসেবে আপনার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হতে পারে। আমি মনে করি আমরা সেই ম্যাচটি (দ্বিতীয় লেগ) খুব খুব ভালোভাবে সামাল দিয়েছি। আমি মনে করি এটা একটা দলের মাঝে এমন আত্মবিশ্বাস এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে, যা আমাদের মত অধিকাংশ দলের আগে কখনই ছিল না।”
আর্সেনালের মত পিএসজিও এখনও পায়নি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ। ফরাসি ক্লাবটি ২০২০ সালে ফাইনালে খেললেও আর্সেনালের জন্য শেষ চারে আসা জায়গা করে নেওয়াটাই ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা। ২০০৯ সালের পর এই নিয়ে মাত্র তৃতীয়বার দলটি খেলছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে।
ফলে রিয়ালকে হারিয়ে উড়তে থাকা আর্সেনালের জন্য বড় পরীক্ষা হতে পারে অচেনা মঞ্চে স্নায়ুচাপ ধরে রাখা। আর সেটা ভালোভাবেই টের পাচ্ছেন আর্তেতা।
“আমি সবাইকে বলব বর্তমান নিয়েই থাকুন। আমরা খুবই ভাগ্যবান। আমরা যে অবস্থানে আছি, তা অর্জন করার জন্য আমরা অনেক কিছুই করেছি। আমরা অনেক পরিশ্রম দিয়ে, উৎসাহ দিয়ে এটা অর্জন করেছি। কারণ, এই পথচলায় আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি এবং দশ মাস ধরে সর্বোচ্চ স্তরে লড়াই করতে পেরেছি। তাই আমাদের জন্য এটা একটা সুন্দর মুহূর্ত।”
এই মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে শেষ হচ্ছে কার্লো আনচেলত্তি অধ্যায়, এই খবর পুরনো হলেও কবে আর কীভাবে সেটা হচ্ছে, তা নিয়ে আলোচনা রয়েছে চলমান। কারণ, তার এই চাকরি ছাড়ার সাথেই যে সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে ব্রাজিল জাতীয় দলের নতুন কোচ হওয়ারও। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের আগেই রিয়ালের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন অভিজ্ঞ এই কোচ।
সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানিয়েছে, ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের (সিবিএফ) আশা, আগামী জুনে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের দুটি ম্যাচ পরিচালনা করার লক্ষ্যে এর আগেই আনচেলত্তিকে যথাসময়ে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব।
আনচেলত্তি এবং ব্রাজিলের মধ্যে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক চুক্তি না হলেও সাম্প্রতিক সময়ে দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার ইতিবাচক হয়েছে বলেই খবর। ইএসপিএনের দাবি, ৬৫ বছর বয়সী এই কোচ সিবিএফকে জানিয়েছে দিয়েছেন যে, তার আগমনের ব্যাপারে এখন থেকে পরিকল্পনা শুরু করতে পারেন তারা।
আনচেলত্তির প্রতিনিধি দল ও তার ছেলে ডেভিড আনচেলত্তির সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে সিবিএফ আশাবাদী, আনচেলত্তি আগামী ২৬শে মে রিও ডি জেনিরোতে থাকবেন। উল্লেখ্য, এর দুই দিন আগে রিয়াল এই মৌসুমে তাদের শেষ ম্যাচটি খেলবে লা লিগায়।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রিয়ালের সাথে ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ আনচেলত্তি মৌসুম শেষে ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের সাথে আলোচনায় বসবেন। এও বলা হয়েছে, নিজেদের ইতিহাসের অন্যতম সেরা কোচকে রিয়াল বিদায় জানাতে চায় রাজসিকভাবে। তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি করা হতে পারে ক্লাবের এম্বাসেডরও।
ফলে আনচেলত্তির জন্য সব মিলিয়ে পরিস্থিতিটা খুব একটা মন্দ হচ্ছে না। কোচ না থাকলেও যে প্রিয় ক্লাবের সাথে যুক্ত থাকছেন তিনি। অন্যদিকে ব্রাজিল তাকে যে চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা নাকি দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে লোভনীয় অর্থের চুক্তি হতে যাচ্ছে। সাথে যোগ হচ্ছে একঝাক প্রতিভাবান ফুটবলারদের নিয়ে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল জাতীয় দলের কোচ হওয়ার দারুণ এক সুযোগ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে রিয়াল মাদ্রিদের বিদায়ের পর থেকেই বাতাসে ভাসছিল গুঞ্জন। কোপা দেল রের ফাইনালে হারের পর কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়াটা একরকম নিশ্চিতই হয়ে গেছে। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে তাকে কোচ হিসেবে পেতে চাওয়া ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ) জোরেশোরেই চালিয়ে যাচ্ছে আলোচনা। ইএসপিএন তো একধাপ এগিয়ে দাবি করছে, দুই পক্ষের আলোচনা নাকি চূড়ান্ত হওয়ার পথে। অপেক্ষা কেবল চলতি মৌসুম শেষ হওয়ার।
সূত্রের বরাত দিয়ে ইএসপিএন জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রিয়ালের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া নিয়ে প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্টিনো পেরেজের সাথে আলোচনায় বসবেন আনচেলত্তি। ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করলেও দুই পক্ষই এগিয়ে যাচ্ছে যৌথ সম্মতিতে সেটা বাতিলের।
আরও পড়ুন
ফাইনালে গিয়েও খুশি হতে পারছেন না গার্দিওলা |
![]() |
গত রোববার কোপার ফাইনালে বার্সেলোনার কাছে ৩-২ গোলে হেরে যায় রিয়াল। এর আগে আর্সেনালের কাচে ৫-১ ব্যবধানে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আট থেকে বিদায় নেয় আনচেলত্তির দল। আর লা লিগায় হাতে পাঁচ ম্যাচ রেখে বার্সেলোনার চেয়ে চার পয়েন্ট পিছিয়ে আছে দুইয়ে।
বাজে এক মৌসুমের পর আনচেলত্তিকে আর ধরে রাখার দিকে রিয়াল যেতে চাচ্ছে না বলেই খবর ইউরোপের সব শীর্ষ সংবাদমাধ্যমের। ২০২৪ সালে এক দফায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া সিবিএফ তাই ফের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অভিজ্ঞ এই কোচকে ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার। সেই লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে আনচেলত্তির সাথে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে সিবিএফ। অপেক্ষা কেবল রিয়ালের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার।
দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২১ সালে রিয়ালের কোচ হওয়া আনচেলত্তির হাত ধরে রিয়াল পেয়েছে দারুণ কিছু সাফল্য। সব মিলিয়ে দুই মেয়াদে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও দুটি লা লিগা জিতে তিনি এরই মধ্যে হয়ে গেছেন রিয়ালের ইতিহাসের অন্যতম সেরা কোচ। ইএসপিএন তাদের সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে লা লিগা রিয়ালের শেষ ম্যাচের পরই হয়ত আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেবেন আনচেলত্তি।
আরও পড়ুন
যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ |
![]() |
গত ১৯ এপ্রিল আনচেলত্তি বলেছিলেন, মৌসুম শেষে তিনি ও ক্লাব তার ভবিষ্যৎ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। ক্লাব বিশ্বকাপে তিনি রিয়ালের দায়িত্বে থাকবেন কিনা, সেটা নিয়েও তখন জানান অনিশ্চয়তার কথা।
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
৯ দিন আগে
১২ দিন আগে
২৩ দিন আগে
২৬ দিন আগে
২৭ দিন আগে
২৭ দিন আগে